কোরান সূরা ক্বালাম আয়াত 52 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Qalam ayat 52 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা ক্বালাম আয়াত 52 আরবি পাঠে(Qalam).
  
   

﴿وَمَا هُوَ إِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعَالَمِينَ﴾
[ القلم: 52]

অথচ এই কোরআন তো বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ বৈ নয়। [সূরা ক্বালাম: 52]

Surah Al-Qalam in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Qalam ayat 52


আর এটি জগদ্বাসীর জন্য স্মারক-গ্রন্থ বৈ তো নয়।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৫২. বস্তুতঃ আপনার উপর অবতীর্ণ কুরআন তো কেবল মানব ও দানবের জন্য একটি উপদেশ ও স্মরণিকা মাত্র।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


অথচ তা তো বিশ্বজগতের জন্য উপদেশই। [১] [১] যখন প্রকৃত ব্যাপার হল এই যে, এ কুরআন মানব-দানবের জন্য হিদায়াত ও পথপ্রদর্শক স্বরূপ এসেছে, তখন তাকে যে নিয়ে এসেছে এবং তার যে বর্ণনাকারী সে পাগল কিভাবে হতে পারে?

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


অথচ তা [] তো কেবল সৃষ্টিকুলের জন্য উপদেশ। [] এখানে ‘তা’ বলে অধিকাংশ মুফাসসিরের মতে কুরআন বোঝানো হয়েছে। তবে কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে ‘তা’ বলে রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বোঝানো হয়েছে। অথচ দুটি অর্থই এখানে হতে পারে। কুরআন যেমন সমস্ত সৃষ্টিজগতের জন্য উপদেশ তেমনি রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও সমস্ত সৃষ্টিজগতের জন্য উপদেশ ও সম্মানের পাত্র। [ কুরতুবী ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


৪৮-৫২ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ হে নবী ( সঃ )! তোমার সম্প্রদায় যে তোমাকে কষ্ট দিচ্ছে এবং অবিশ্বাস করছে এর উপর তুমি ধৈর্য ধারণ কর । অচিরেই আমি ফায়সালা করে দিবো। পরিশেষে তুমি এবং তোমার অনুসারীরাই বিজয় লাভ করবে, দুনিয়াতেও এবং আখিরাতেও। তুমি মৎস্য সহচরের ন্যায় অধৈর্য হয়ো না।' এর দ্বারা হযরত ইউনুস ইবনে মাত্তা ( আঃ )-কে বুঝানো হয়েছে। তিনি তাঁর সম্প্রদায়ের উপর রাগান্বিত হয়ে বেরিয়ে পড়েছিলেন। তারপর যা হওয়ার তা-ই হয় অর্থাৎ তার নৌযানে সওয়ার হওয়া, মাছের তাঁকে গিলে ফেলা, মাছের সমুদ্রের গভীর তলদেশে চলে যাওয়া, সমুদ্রের অন্ধকারের মধ্যে তাঁর ( আরবি ) ( আপনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই, আপনি মহান ও পবিত্র, নিশ্চয়ই আমি যালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছি ) ( ২১ :৮৭ ) এই কালেমা পাঠ করা, আর তাঁর দু'আ কবুল হওয়া এবং তাঁর মুক্তি পাওয়া ইত্যাদি। এই ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ ইতিপূর্বে বর্ণিত হয়েছে। এই ঘটনা বর্ণনা করার পর মহান আল্লাহ বলেনঃ “ এভাবেই আমি ঈমানদারদেরকে মুক্তি দিয়ে থাকি ।” আরো বলেনঃ “ যদি সে তাসবীহ পাঠ না করতো । তবে কিয়ামত পর্যন্ত সে মাছের পেটেই পড়ে থাকতো।”এখানে মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ সে বিষাদ আচ্ছন্ন অবস্থায় কাতর প্রার্থনা করেছিল। পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে যে, উপরোক্ত কালেমাটি হযরত ইউনুস ( আঃ )-এর মুখ দিয়ে বের হওয়া মাত্রই তা আরশের উপর পৌঁছে যায়। তখন ফেরেশতাগণ বলেনঃ “ হে আমাদের প্রতিপালক! এ দুর্বল শব্দ তো আমাদের নিকট পরিচিত বলে মনে হচ্ছে!” আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা তাঁদেরকে বলেনঃ “এটা কার শব্দ তা কি তোমরা বুঝতে পারছো না?” ফেরেশতারা উত্তরে বললেনঃ “জ্বী, না ।আল্লাহ তা'আলা তখন বলেনঃ “ এটা ( আমার বান্দা ও নবী ) ইউনুস ( আঃ )-এর শব্দ ।” এ কথা শুনে ফেরেশতাগণ বললেনঃ “ হে আমাদের প্রতিপালক! ইনি কি আপনার ঐ বান্দা যার সৎ আমলসমূহ প্রতি দিন আসমানের উপর উঠতো এবং যার প্রার্থনা সব সময় কবূল হতো?” জবাবে আল্লাহ তা'আলা বললেনঃ “হ্যাঁ, তোমরা সত্য কথাই বলছো ।” ফেরেশতাগণ তখন বললেনঃ “ তাহলে হে পরম করুণাময় আল্লাহ! তার । সুসময়ের সৎকার্যাবলীর ভিত্তিতে তাঁকে এই কঠিন অবস্থা হতে মুক্তি দান করুন!” তখন মহান আল্লাহ মাছকে আদেশ করলেনঃ “ তুমি তাকে উগলিয়ে দাও ।” মাছ তখন তাকে সমুদ্রের ধারে নিয়ে গিয়ে উগলিয়ে দিলো।এখানে মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ পুনরায় তার প্রতিপালক তাকে মনোনীত করলেন এবং তাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করলেন।মুসনাদে আহমাদে হযরত আবদুল্লাহ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ কারো জন্যে এটা উচিত নয় যে, সে বলে ও আমি ইউনুস ইবনে মাত্তা ( আঃ ) হতে উত্তম ।( এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে আৰ দুবাইরা (রাঃ ) হতে বর্ণিত হয়েছে)আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ কাফিররা যখন কুরআন শ্রবণ করে তখন তারা যেন তাদের তীক্ষ দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়িয়ে ফেলে দিবে। অর্থাৎ হে নবী!তোমার প্রতি হিংসার বশবর্তী হয়ে এই কাফিররা তোমাকে তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দ্বারা আছড়িয়ে ফেলতে চায়। তোমার প্রতি আল্লাহর পক্ষ হতে করুণা বর্ষিত না হলে অবশ্যই তারা তোমাকে আছাড় দিয়ে ফেলে দিতো। এই আয়াতে ঐ বিষয়ের উপর দলীল রয়েছে যে, নযর লাগা এবং আল্লাহর হুকুমে ওর প্রতিক্রিয়া হওয়া সত্য। যেমন বহু হাদীসেও রয়েছে, যা কয়েকটি সনদে বর্ণিত হয়েছে। সুনানে আবী দাউদে হযরত আনাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ ঝাড়-ফুঁক করা শুধু বদ নযরের জন্যে, বিষাক্ত জন্তুর কামড়ের জন্যে এবং অনবরত প্রবাহমান রক্তের জন্যে ।” কোন কোন সনদে নযর শব্দটি নেই। ( এ হাদীসটি সুনানে ইবনে মাজাহ, সহীহ মুসলিম এবং জামে তিরমিযীতেও রয়েছে )মুসনাদে আবি ইয়ালার একটি দুর্বল হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ আল্লাহর হুকুমে ( বদ ) নযর মানুষকে পতিত করে থাকে ।”মুসনাদে আহমাদে হযরত হাবিস নামীমী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ হাম’ ও নযরের মধ্যে কোনই সত্যতা নেই । সবচেয়ে বেশী সত্যতা রয়েছে লক্ষণ দেখে শুভাশুভ নিরূপণ বা ভাল ভবিষ্যৎ কথনের মধ্যে।” ( এ হাদীসটি জামে তিরমিযীতেও বর্ণিত হয়েছে এবং ইমাম তিরমিযী (রঃ ) এটাকে গারীব বা দুর্বল বলেছেন)মুসনাদে আহমাদে হযরত আবূ হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ হাম' ও ( বদ ) নযরের মধ্যে কোন ক্ষতি নেই এবং লক্ষণ দেখে শুভাশুভ নিরূপণ বা ভাল ভবিষ্যৎ কথনই হলো সবচেয়ে সত্য । মুসনাদে আহমাদে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ ( বদ ) নযর সত্য, ( বদ ) নযর সত্য । এটা সমুন্নত ব্যক্তিকেও নীচে নামিয়ে দেয়।” ( এটা গারীব বা দুর্বল )সহীহ মুসলিমে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ নযর সত্য, তকদীরের উপর কোন কিছু জয়যুক্ত হলে তা এই নযরই হতো । তোমাদেরকে গোসল করানো হলে তোমরা গোসল করে নিবে।” মুসনাদে আবদির রাযযাকে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) নিম্ন লিখিত কালেমা দ্বারা হযরত হাসান ( রাঃ ) হযরত হুসাইন ( রাঃ )-এর জন্যে আশ্রয় প্রার্থনা করতেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ আমি তোমাদের দু'জনের জন্যে আল্লাহর পরিপূর্ণ কালেমা দ্বারা প্রত্যেক শয়তান হতে এবং প্রত্যেক বিষাক্ত জন্তু হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি । আরো আশ্রয় প্রার্থনা করছি প্রত্যেক ( বদ ) নযর হতে যা লেগে যায়।" তিনি বলতেনঃ হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) এ শব্দগুলো দ্বারা হযরত ইসহাক ( আঃ ) হযরত ইসমাঈল ( আঃ ) এর জন্যে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। ( এ হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ ) এবং আহলুস সুনানও বর্ণনা করেছেন)সুনানে ইবনে মাজাহতে বর্ণিত আছে যে, হযরত সাহল ইবনে হানীফ ( রাঃ ) গোসল করছিলেন। হযরত আমির ইবনে রাবীআহ ( রাঃ ) বলে উঠলেনঃ “ আমি তো আজ পর্যন্ত কোন পর্দানশীঠ মহিলারও এরূপ ( সুন্দর ) পদনালী দেখিনি!” একথার অল্পক্ষণ পরেই হযরত সাহল অজ্ঞান হয়ে পড়ে যান । জনগণ তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট গিয়ে বলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! সাহল ( রাঃ )-এর একটু খবর নিন, তিনি অজ্ঞান হয়ে আছেন ।রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাদেরকে বললেনঃ “ তোমাদের কারো উপর সন্দেহ আছে কি?” তারা জবাবে বললেনঃ “হ্যাঁ, আমির ইবনে রাবীআহর ( রাঃ ) উপর সন্দেহ আছে । তিনি তখন বললেনঃ “ তোমাদের মধ্যে কেউ কেন তার ভাইকে হত্যা করে? যখন তোমাদের কেউ তার ভাই এর কোন এমন জিনিস দেখবে যা তাকে খুব ভাল লাগবে তখন তার উচিত হবে তার জন্যে বরকতের দুআ করা । তারপর তিনি পানি আনতে বললেন এবং আমীর ( রাঃ )-কে বললেনঃ “ তুমি অযু কর এবং মুখমণ্ডল, কনুই পর্যন্ত হাত, হাঁটু এবং লুঙ্গীর মধ্যস্থিত দেহের অংশ ধৌত কর এবং ঐ পানি তার উপর ঢেলে দাও ।” অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ বরতনকে তার পৃষ্ঠের পিছনে উল্টিয়ে দাও।' ( এ হাদীসটি সুনানে নাসাঈতেও বর্ণিত হয়েছে ) হযরত আবূ সাঈদ খুদরী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) দানব ও মানবের বদ নযর হতে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন। যখন সূরা ফালাক ও সূরা নাস অবতীর্ণ হলো তখন এ দুটোকে গ্রহণ করে অন্যান্য সবগুলোকে ছেড়ে দিলেন। ( এ হাদীসটি সুনানে ইবনে মাজাহ, জামে তিরমিযী ও সুনানে নাসাঈতে বর্ণিত হয়েছে ) মুসনাদে আহমাদে হযরত আবূ সাঈদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত জিবরাঈল ( আঃ ) নবী ( সঃ )-এর নিকট এসে বলেনঃ “ হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! আপনি কি অসুস্থ?” তিনি উত্তরে বলেনঃ “হ্যাঁ” তখন হযরত জিবরাঈল ( আঃ ) বলেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড়-ফুঁক করছি প্রত্যেক জিনিস হতে যা আপনাকে কষ্ট দেয় এবং প্রত্যেক নফস ও চক্ষুর অনিষ্ট হতে যে আপনার ক্ষতি সাধন করে, আল্লাহ আপনাকে আরোগ্য দান করুন, আল্লাহর নামে আমি আপনাকে ঝাড় ফুঁক করছি । ( এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ ) এবং ইমাম আবূ দাউদ ( রঃ ) ছাড়া অন্যান্য আহলুস সুনানও বর্ণনা করেছেন) কোন কোন রিওয়াইয়াতে শব্দের কিছু হের ফেরও রয়েছে।সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আবূ হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ নিশ্চয়ই নযর লেগে যাওয়া সত্য ।” মুসনাদে আহমাদের একটি হাদীসে এরপরে এও রয়েছেঃ “ এর কারণ হচ্ছে শয়তান এবং ইবনে আদমের হিংসা ।" মুসনাদে আহমাদে হযরত মুহাম্মাদ ইবনে কায়েস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আবূ হুরাইরা ( রাঃ )-কে প্রশ্ন করা হয়ঃ “ ভাবী শুভাশুভের নিদর্শন ঘর, ঘোড়া ও স্ত্রীলোক এ তিনটির মধ্যে রয়েছে এটা কি আপনি রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হতে শুনেছেন?” উত্তরে হযরত আবূ হুরাইরা ( রাঃ ) বলেনঃ “আমি যদি শুনেছি বলি তবে তো আমার এমন কথা বলা হবে যা রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেননি । হ্যাঁ, তবে আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলতে শুনেছিঃ “ সর্বাপেক্ষা বড় সত্য হলো লক্ষণ দেখে শুভাশুভ নিরূপণ বা ভাল ভবিষ্যত কথন এবং নযর লেগে যাওয়াও সত্য ।”হযরত উবায়েদ ইবনে রিফাআহ যারকী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আসমা ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! জাফর ( রাঃ )-এর সন্তানদেরকে ( বদ ) নযর লেগে থাকে, সুতরাং আমি কোন ঝাড়-ফুঁক করাবো কি?” উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বললেনঃ “হ্যাঁ, যদি কোন জিনিস তকদীরের উপর জয়যুক্ত হতো তবে তা হতো এই ( বদ ) নযর ।( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ), ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এবং ইমাম ইবনে মাজাহ ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আয়েশা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁকে বদ নযর হতে ঝাড়-ফুঁক করার নির্দেশ দিয়েছেন। ( এ হাদীসটি ইবনে মাজাহ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আয়েশা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ যে নযর লাগাতো তাকে অযু করার নির্দেশ দেয়া হতো, আর যার উপর নযর লাগানো হতো তাকে ঐ পানি দ্বারা গোসল করানো হতো। ( এ হাদীসটি ইমাম আবূ দাউদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবূ হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ বিষাক্ত জন্তু ও ( বদ ) নযর সত্য । আর সবচেয়ে বড় সত্য হলো লক্ষণ দেখে শুভাশুভ নিরূপণ বা ভাল ভবিষ্যৎ কথন।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)মুসনাদে আহমাদে হযরত সাহল ( রাঃ ) হযরত আমির ( রাঃ ) সম্বলিত হাদীসটি, যা উপরে বর্ণিত হয়েছে, কিছুটা বিস্তারিতভাবেও বর্ণনা করা হয়েছে। কোন কোন রিওয়াইয়াতে এও বর্ণিত আছে যে, এ দুজন মহান ব্যক্তি গোসলের উদ্দেশ্যে গমন করেন। হযরত আমির ( রাঃ ) প্রথমে পানিতে অবতরণ করেন। তাঁর উন্মোচিত দেহের উপর হযরত সাহল ( রাঃ )-এর নযর লেগে যায়। হযরত আমির ( রাঃ ) তৎক্ষণাৎ অজ্ঞানভাবে শব্দ করতে থাকেন। এ দেখে হযরত সাহল ( রাঃ ) তাকে তিনবার ডাক দেন, কিন্তু তার কোন সাড়া না পেয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর খিদমতে হাযির হন এবং তাঁর নিকট ঘটনাটি বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন স্বয়ং সেখানে গমন করেন এবং লুঙ্গী কিছুটা উঠিয়ে নিয়ে পানিতে নেমে পড়েন, এমন কি হযরত সাহল ( রাঃ ) তাঁর পদনালীর শুভ্রাংশ দেখতে পান। অতঃপর তিনি হযরত আমির ( রাঃ )-এর বক্ষের উপর হাত মেরে দু'আ করেনঃ ( আরবি )আল্লাহ! আপনি তার উষ্ণতা, শৈত্যতা ও কষ্ট দূর করে দিন!” এরপর হযরত আমির ( রাঃ )-এর জ্ঞান ফিরে আসে এবং তিনি উঠে দাঁড়ান। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ যখন তোমাদের কেউ তার ( মুসলমান ) ভাই এর কোন কিছু দেখে চমৎকৃত হবে তখন যেন সে তার বরকতের জন্যে দু'আ করে । কেননা নযর লেগে যাওয়া সত্য।”হযরত জাবির ইবনে আবদিল্লাহ ( রাঃ ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ ফায়সালা ও তকদীরের পর আমার উম্মতের অধিকাংশ লোক ( বদ ) নযরের ফলে মারা যাবে ।( এ হাদীসটি হাফিয আবূ বকর আল বাযযার (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত জাবির ইবনে আবদিল্লাহ ( রাঃ ) হতেই বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ ( বদ ) নযর ( এর ক্রিয়া ) সত্য । এটা মানুষকে কবর পর্যন্ত পৌঁছিয়ে দেয়, আর উটকে পৌঁছিয়ে দেয় ডেগচী পর্যন্ত। আমার উম্মতের অধিকাংশের ধ্বংস এতেই রয়েছে। ( এ হাদীসটি হাফিয আবূ আবদির রহমান বর্ণনা করেছেন। আর একটি সহীহ সনদের মাধ্যমেও এ রিওয়াইয়াতটি বর্ণিত আছে )মুসনাদে আহমাদে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ একের রোগ অপরকে হয় না, ‘হাম’ এর কারণে ধ্বংস সাধিত হওয়াকে বিশ্বাস করা ঠিক নয়, আর হিংসাও কিছু নয় ( হিংসা করে কারো কোন ক্ষতি করা যায় না এবং (বদ ) নযর ( এর ক্রিয়া ) সত্য”হযরত আলী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত জিবরাঈল ( আঃ ) নবী ( সঃ )-এর নিকট আগমন করেন এবং তাঁকে চিন্তিত দেখে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেনঃ “ হাসান ( রাঃ ) ও হুসাইন ( রাঃ )-কে বদ নযর লেগে গেছে ।" একথা শুনে হযরত জিবরাঈল ( আঃ ) বলেনঃ “ এটা সত্য বটে । নযর সত্যিই লেগে থাকে। আপনি এ কালেমাগুলো পড়ে তাদের জন্যে আশ্রয় প্রার্থনা করেননি কেন?" রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) উত্তরে বললেনঃ “ ঐ কালেমাগুলো কি?” হযরত জিবরাঈল ( আঃ ) বললেন যে, কালেমাগুলো হলোঃ ( আরবি )অর্থাৎ “হে আল্লাহ! হে বড় রাজত্বের মালিক! হে যবরদস্ত ইহসানকারী । হে বুযুর্গ চেহারার অধিকারী। হে পরিপূর্ণ কালেমার মালিক! হে প্রার্থনা কবূলকারী! আপনি হাসান ( রাঃ ) ও হুসাইন ( রাঃ )-কে জ্বিনদের সমস্ত কুমন্ত্রণা হতে এবং মানুষের বদ নযর হতে আশ্রয় দান করুন।” তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এ কালেমাগুলো পাঠ করলেন। ফলে তৎক্ষণাৎ হযরত হাসান ( রাঃ ) হযরত হুসাইন ( রাঃ ) উঠে দাঁড়ালেন এবং তাঁর সামনে খেলা করতে শুরু করলেন। এ দেখে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) জনগণকে বললেনঃ “ হে লোক সকল! এই কালেমাগুলোর মাধ্যমে তোমাদের জন্তুগুলো এবং স্ত্রী ও ছেলে মেয়েদের জন্যে আশ্রয় প্রার্থনা কর । জেনে রেখো যে, আশ্রয় প্রার্থনার জন্যে এর মত দু'আ আর নেই।” ( এ হাদীসটি হাফিজ ইবনে আসাকির (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ হে নবী ( সঃ )! কাফিররা যখন কুরআন শ্রবণ করে তখন তারা যেন তাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দ্বারা তোমাকে আছড়িয়ে ফেলে দিবে এবং তারা বলেঃ এতো এক পাগল! আল্লাহ তা'আলা তাদের এ কথার জবাবে বলেনঃ “ কুরআন তো বিশ্বজগতের জন্যে উপদেশ ।

সূরা ক্বালাম আয়াত 52 সূরা

وما هو إلا ذكر للعالمين

سورة: القلم - آية: ( 52 )  - جزء: ( 29 )  -  صفحة: ( 566 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. তারা কি দেখে না যে, আমি একটি নিরাপদ আশ্রয়স্থল করেছি। অথচ এর চতুপার্শ্বে যারা আছে,
  2. সুলায়মান বললেন, হে পরিষদবর্গ, তারা আত্নসমর্পণ করে আমার কাছে আসার পূর্বে কে বিলকীসের সিংহাসন আমাকে
  3. তারা বলবে, আমরা সত্যে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। কিন্তু তারা এতদূর থেকে তার নাগাল পাবে কেমন
  4. যারা একথা খেয়াল করে যে, তাদেরকে সম্মুখীন হতে হবে স্বীয় পরওয়ারদেগারের এবং তাঁরই দিকে ফিরে
  5. আর (স্মরণ কর) সে সময়ের কথা, যখন আমি তোমাদিগকে মুক্তিদান করেছি ফেরআউনের লোকদের কবল থেকে
  6. যারা না দেখেই তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে এবং কেয়ামতের ভয়ে শঙ্কিত।
  7. এবং মিসকীনকে অন্ন দিতে উৎসাহিত করে না।
  8. আপনি কি তাদের দেখেননি, যারা কিতাবের কিছু অংশ পেয়েছে-আল্লাহর কিতাবের প্রতি তাদের আহবান করা হয়েছিল
  9. তোমরা তো আল্লাহর পরিবর্তে কেবল প্রতিমারই পূজা করছ এবং মিথ্যা উদ্ভাবন করছ। তোমরা আল্লাহর পরিবর্তে
  10. তিনিই সে মহান সত্তা, যিনি বানিয়েছেন সুর্যকে উজ্জল আলোকময়, আর চন্দ্রকে স্নিগ্ধ আলো বিতরণকারীরূপে এবং

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ক্বালাম ডাউনলোড করুন:

সূরা Qalam mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Qalam শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত ক্বালাম  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত ক্বালাম  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত ক্বালাম  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত ক্বালাম  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত ক্বালাম  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত ক্বালাম  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত ক্বালাম  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত ক্বালাম  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত ক্বালাম  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত ক্বালাম  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত ক্বালাম  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত ক্বালাম  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত ক্বালাম  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত ক্বালাম  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত ক্বালাম  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত ক্বালাম  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত ক্বালাম  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত ক্বালাম  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত ক্বালাম  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত ক্বালাম  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত ক্বালাম  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত ক্বালাম  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত ক্বালাম  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত ক্বালাম  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত ক্বালাম  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Friday, November 22, 2024

Please remember us in your sincere prayers