কোরান সূরা আনআম আয়াত 129 তাফসীর
﴿وَكَذَٰلِكَ نُوَلِّي بَعْضَ الظَّالِمِينَ بَعْضًا بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ﴾
[ الأنعام: 129]
এমনিভাবে আমি পাপীদেরকে একে অপরের সাথে যুক্ত করে দেব তাদের কাজকর্মের কারণে। [সূরা আনআম: 129]
Surah Al-Anam in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Anam ayat 129
আর এইভাবে আমরা কোনো-কোনো অন্যায়কারীদের অন্যদের সহায় হতে দিই যা তারা অর্জন করে থাকে সেজন্য।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১২৯. যেমনিভাবে আমি গাদ্দার জিনগুলোকে কিছু মানুষের উপর প্রভাবশালী ও তাদেরকে পথভ্রষ্ট করার জন্য তাদের পেছনে লাগিয়ে দিয়েছি তেমনিভাবে আমি প্রত্যেক যালিমকেও অন্য যালিমের পেছনে লাগিয়ে দিয়েছি যাতে তারা তাদের গুনাহের প্রতিদান স্বরূপ একে অন্যকে অকল্যাণের প্রতি উৎসাহিত ও উদ্যমী এবং কল্যাণের প্রতি নিরুৎসাহিত ও নিরুদ্যম করে তোলে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
এরূপে আমি যালেমদের কৃতকর্মের ফলে তাদের এক দলকে অন্য দলের উপর প্রবল করে থাকি।[১] [১] نُوَلّي এর একাধিক অর্থ বর্ণিত হয়েছে; অর্থাৎ, যেভাবে আমি মানুষ ও জ্বিনদেরকে একে অপরের সঙ্গী ও সাহায্যকারী বানিয়েছি, ( যেমন, পূর্বের আয়াতে উল্লিখিত হয়েছে ) অনুরূপ আচরণ আমি অত্যাচারীদের সাথেও করি। অথবা একজন যালেমকে অপর যালেমের উপর ( প্রবল করে ) চাপিয়ে দিই। আর এইভাবে একজন অত্যাচারী অপর অত্যাচারীকে ধ্বংস করে এবং এক যালিমের প্রতিশোধ অপর যালিম দ্বারা নিয়ে নিই। অথবা জাহান্নামে ওদেরকে এক অপরের কাছাকাছি রাখব।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর এভাবেই আমারা যালিমদের কতককে কতকের বন্ধু বানিয়ে দেই, তারা যা অর্জন করত তার কারণে [ ১ ]। [ ১ ] আয়াতে ( نُوَلِّيْ ) শব্দটির আভিধানিক দিক দিয়ে দুটি অর্থ হতে পারে। মুফাসসিরীন সাহাবা ও তাবেয়ীগণের কাছ থেকে উভয় প্রকার অর্থই বর্ণিত আছে। ( এক ) শাসক হিসেবে চাপিয়ে দেয়া, বন্ধু বানিয়ে দেয়া। যারা তাদেরকে তাদের কর্মের কারণে পথভ্রষ্টতার দিকে চালিত করবে। আব্দুল্লাহ ইবন যুবায়ের রাদিয়াল্লাহু আনহুমা, ইবন যায়েদ, মালেক ইবনে দীনার রাহিমাহুমুল্লাহ প্রমূখ মুফাসসিরীন থেকে এ অর্থের দিক দিয়ে আয়াতের তাফসীর এরূপ বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ তা'আলা একজন যালিমকে অপর যালিমের উপর শাসক হিসেবে চাপিয়ে দেন এবং এভাবে এক কে অপরের হাতে শাস্তি দেন। তাদের অপরাধের কারণে আল্লাহ তা'আলা তাদের উপর এমন কাউকে বসাবেন, এমন কাউকে সাথে জুড়ে দেবেন যারা তাদেরকে হক পথে চলা থেকে দূরে রাখবে, হক পথের প্রতি ঘৃণা ছড়াবে। খারাপ কাজের প্রতি উৎসাহ দেবে। এভাবেই মানুষের মধ্যে যখন ফাসাদ ও যুলমের আধিক্য হয়, আর আল্লাহর ফরয আদায়ে মানুষের মধ্যে গাফিলতি সৃষ্টি হয় তখনই আল্লাহ্ তা'আলা মানুষের উপর তাদের গোনাহের শাস্তিস্বরূপ এমন কাউকে বসিয়ে দেন যারা তাদেরকে কঠোর শাস্তি প্রদান করবে। [ বাগভী; ইবন কাসীর; সাদী ] ( দুই ) আয়াতে বর্ণিত ( نُوَلِّيْ ) শব্দের আরেক অর্থ হচ্ছে, পরস্পরকে যুক্ত করে দেয়া ও নিকটবতী করে দেয়া। সায়ীদ ইবনে যুবায়ের, কাতাদাহ রাহিমাহুমাল্লাহ প্রমূখ মুফাসসিরগণ প্রথমোক্ত অর্থে আয়াতের উদ্দেশ্য এরূপ ব্যক্ত করেছেন যে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা'আলার কাছে মানুষের দল বিভিন্ন বংশ, দেশ কিংবা ভাষার ভিত্তিতে হবে না; বরং কর্ম ও চরিত্রের ভিত্তিতে হবে। আল্লাহর আনুগত্যশীল মুসলিম যেখানেই থাকবে, সে মুসলিমদের সাথী হবে, তাদের বংশ, দেশ, ভাষা, বর্ণ ও জীবনযাপন পদ্ধতিতে যতই দূরত্ব ও পার্থক্য থেকে থাকুক না কেন। এরপর মুসলিমদের মধ্যেও সৎ ও দ্বীনী লোকেরা সৎ ও দ্বীনী লোকদের সাথে থাকবে এবং পাপী ও কুকর্মীদেরকে পাপী ও কুকর্মীদের সাথে যুক্ত করে দেয়া হবে। [ বাগভী; ইবন কাসীর ]।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
আল্লাহ তা'আলা এমন লোকদেরকে একে অপরের বন্ধু বানিয়ে দেন যাদের আমল একই রূপ হয়ে থাকে। সুতরাং এক মুমিন অপর মুমিনের বন্ধু হয়ে থাকে, সে যেমনই হাক এবং যেখানেই থাক না কেন। পক্ষান্তরে এক কাফির অন্য এক কাফিরের বন্ধু হয়ে থাকে সে যেখানেই থাক এবং যেমনই হাক না কেন। ঈমান আশা আকাঙ্ক্ষা ও বাহ্যাড়ম্বরের নাম নয়। এ মত ইবনে জারীর ( রঃ ) পোষণ করেন। মালিক ইবনে দীনার ( রঃ ) বলেন, আমি যাবৃরে পড়েছি, আল্লাহ তা'আলা বলেছেন- “ আমি মুনাফিকদের প্রতিশোধ মুনাফিকদের দ্বারাই গ্রহণ করবো, তারপর সমস্ত মুনাফিকের প্রতিশোধ গ্রহণ করবো ।” এটা কুরআন কারীমেও রয়েছে। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “ এভাবেই আমি এক যালিমকে অপর যালিমের বন্ধু বানিয়ে দেই ।” অর্থাৎ জুিনের যালিমদেরকে মানব যালিমের বন্ধু বানিয়ে দেই। “ আর যে ব্যক্তি আল্লাহর যিকির থেকে উদাসীন থাকে, আমি তার উপর শয়তানকে বিজয়ী করে দেই এবং সদা সর্বদা সে তারই সাথে অবস্থান করতে থাকে ।” হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) হতে একটি মারফু হাদীস বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যে ব্যক্তি যালিমের সাহায্য করে, আল্লাহ তাকে তার উপর বিজয়ী করে দেন ।” ( এই হাদীসটি হাফিয ইবনে আসাকির বর্ণনা করেছেন। ইবনে কাসীর (রঃ ) বলেন যে, এ হাদীসটি গারীব) কোন কবি বলেছেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ এমন কোন হাত নেই যার পরে আল্লাহর হাত থাকে না এবং এমন কোন যালিম নেই যাকে অন্য যালিমের সাথে লেনদেন বা আদান প্রদান করতে হয় না ।” আয়াতে কারীমার অর্থ এই দাঁড়ালোঃ যেভাবে আমি ঐ ক্ষতিগ্রস্ত মানবদের বন্ধু তাদেরকে পথভ্রষ্টকারী জ্বিন ও শয়তানদেরকে বানিয়েছি, তেমনিভাবে যালিমদের মধ্য হতে এককে অপরের বন্ধু বানিয়ে দেই এবং একে অপরের দ্বারা ধ্বংস হয়ে যায়। আর আমি তাদের অত্যাচার, দুষ্টামি এবং বিদ্রোহের প্রতিফল একে অপরের দ্বারা প্রদান করিয়ে থাকি।
সূরা আনআম আয়াত 129 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- কাফেররা কি মনে করে যে, তারা আমার পরিবর্তে আমার বান্দাদেরকে অভিভাবক রূপে গ্রহণ করবে? আমি
- যে লোক নিজ প্রতিজ্ঞা পূর্ন করবে এং পরহেজগার হবে, অবশ্যই আল্লাহ পরহেজগারদেরকে ভালবাসেন।
- নূহ (আঃ) বললেন-হে আমার জাতি! দেখ তো আমি যদি আমার পালনকর্তার পক্ষ হতে স্পষ্ট দলীলের
- তারা বললঃ ভয় করবেন না। আমরা আপনাকে একজন জ্ঞানবান ছেলে-সন্তানের সুসংবাদ দিচ্ছি।
- যা মানুষকে ঘিরে ফেলবে। এটা যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।
- তারা বলেঃ দয়াময় আল্লাহ সন্তান গ্রহণ করেছেন।
- আমি এই নগরীর শপথ করি
- বললঃ আমি এমন নই যে, একজন মানবকে সেজদা করব, যাকে আপনি পচা কর্দম থেকে তৈরী
- মুসলমানরা বলবেঃ এরাই কি সেসব লোক, যারা আল্লাহর নামে প্রতিজ্ঞা করত যে, আমরা তোমাদের সাথে
- তবে যে মুশরিকদের সাথে তোমরা চুক্তি বদ্ধ, অতপরঃ যারা তোমাদের ব্যাপারে কোন ত্রুটি করেনি এবং
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আনআম ডাউনলোড করুন:
সূরা Anam mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Anam শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers