কোরান সূরা আলে-ইমরান আয়াত 13 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Al Imran ayat 13 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা আলে-ইমরান আয়াত 13 আরবি পাঠে(Al Imran).
  
   

﴿قَدْ كَانَ لَكُمْ آيَةٌ فِي فِئَتَيْنِ الْتَقَتَا ۖ فِئَةٌ تُقَاتِلُ فِي سَبِيلِ اللَّهِ وَأُخْرَىٰ كَافِرَةٌ يَرَوْنَهُم مِّثْلَيْهِمْ رَأْيَ الْعَيْنِ ۚ وَاللَّهُ يُؤَيِّدُ بِنَصْرِهِ مَن يَشَاءُ ۗ إِنَّ فِي ذَٰلِكَ لَعِبْرَةً لِّأُولِي الْأَبْصَارِ﴾
[ آل عمران: 13]

নিশ্চয়ই দুটো দলের মোকাবিলার মধ্যে তোমাদের জন্য নিদর্শন ছিল। একটি দল আল্লাহর রাহে যুদ্ধ করে। আর অপর দল ছিল কাফেরদের এরা স্বচক্ষে তাদেরকে দ্বিগুন দেখছিল। আর আল্লাহ যাকে নিজের সাহায্যের মাধ্যমে শক্তি দান করেন। এরই মধ্যে শিক্ষনীয় রয়েছে দৃষ্টি সম্পন্নদের জন্য। [সূরা আলে-ইমরান: 13]

Surah Al Imran in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Imran ayat 13


ইতিপূর্বে তোমাদের জন্য একটি নিদর্শন এসেছিল দুই সৈন্যদলের মুখোমুখি হওয়ায় -- একদল যুদ্ধ করছিল আল্লাহ্‌র পথে, আর অন্য দল অবিশ্বাসী, এরা চোখের দেখায় তাদের দেখেছিল নিজেদের দ্বিগুণ। আর আল্লাহ্ তাঁর সাহায্য দিয়ে মদদ করেন যাকে তিনি ইচ্ছে করেন। নিঃসন্দেহ এতে শিক্ষণীয় বিষয় আছে দৃষ্টিবানদের জন্য।


Tafsir Mokhtasar Bangla


১৩. সে দু’টি দলের মাঝে যারা বদরের দিন যুদ্ধের জন্য পরস্পর মুখোমুখী হয়েছিলো তোমাদের জন্য বিশেষ শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। সেগুলোর একটি হলো মু’মিনদের দল। তাঁরা আল্লাহর রাসূল ও সাহাবীদের দল। যাঁরা আল্লাহর বাণীকে বিজয়ী এবং কাফিরদের মতাদর্শকে পরাজিত করার জন্য আল্লাহর দেখানো পথে যুদ্ধ করে। আর দ্বিতীয় দলটি হলো কাফিরদের দল। তারা হলো মক্কার কাফির। যারা নিজ এলাকা থেকে বংশ গৌরব ও অহঙ্কারের বশবর্তী হয়ে বের হয়েছে। যাদেরকে মু’মিনরা নিজ চর্ম চোখে নিজেদের দ্বিগুণ দেখেছে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বন্ধুদেরকে জয়ী করেছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা যাকে চান তাকেই সাহায্য করেন। এর মাঝে দূরদৃষ্টি সম্পন্ন লোকদের জন্য বিশেষ উপদেশ ও শিক্ষণীয় বিষয় রয়েছে। যাতে তারা বুঝতে পারে যে, নিশ্চয়ই আল্লাহর সাহায্য মু’মিনদের জন্য, তাদের সংখ্যা যতো কমই হোক না কেন। আর পরাজয় বাতিলপন্থীদের জন্য, তাদের সংখ্যা যতো বেশিই হোক না কেন।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


( বদর যুদ্ধে ) দুইটি দলের পরস্পর সম্মুখীন হওয়ার মধ্যে তোমাদের জন্য নিদর্শন ছিল। একদল আল্লাহর পথে সংগ্রাম করছিল এবং অন্যদল অবিশ্বাসী ছিল। তারা বাহ্যদৃষ্টিতে ওদেরকে নিজেদের দ্বিগুণ দেখছিল।[১] আর আল্লাহ যাকে ইচ্ছা নিজ সাহায্য দ্বারা শক্তিশালী করেন। নিশ্চয় এতে অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন লোকেদের জন্য উপদেশ রয়েছে। [১] অর্থাৎ, প্রত্যেক দল অপর দলকে নিজেদের থেকে দ্বিগুণ দেখছিল। কাফেরদের সংখ্যা এক হাজারের কাছাকাছি ছিল। তাদের নজরে মুসলিমদের সংখ্যা প্রায় দু' হাজার দেখাচ্ছিল। এরূপ প্রদর্শনে উদ্দেশ্য ছিল, তাদের অন্তরে মুসলিমদের ভয় প্রবেশ করানো। এ দিকে মুসলিমদের সংখ্যা ছিল তিনশ'র কিছু বেশী ( ৩১৩ জন )। তাদের নজরে কাফেরদের সংখ্যা দেখাচ্ছিল ( নিজেদের দ্বিগুণ ) ছয়শ' ও সাতশ'র মাঝামাঝি। অথচ তাদের প্রকৃত সংখ্যা ছিল প্রায় এক হাজার। এ থেকে লক্ষ্য ছিল, মুসলিমদের উৎসাহ ও উদ্দীপনাকে আরো বৃদ্ধি করা। নিজেদের সংখ্যা থেকে কাফেরদের সংখ্যা তিনগুণ দেখে মুসলিমদের ভয় পেয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল। যখন তারা দেখলো কাফেররা তাদের থেকে সংখ্যায় তিনগুণ নয়; বরং দ্বিগুণ, তখন তাদের উৎসাহ ও মনোবল দমলো না। তবে দ্বিগুণ দেখার এই ব্যাপারটা ছিল প্রাথমিক পর্যায়ে, পরে যখন উভয় দল মুখোমুখি সারিবদ্ধ হল, তখন মহান আল্লাহ উভয় দলকে একে অপরের দৃষ্টিতে কম দেখালেন। যাতে কোন দলই যেন যুদ্ধের ময়দান থেকে পশ্চাৎপদ না হয়ে প্রত্যেকেই ( আক্রমণের জন্য ) সামনে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে। ( ইবনে কাসীর ) সূরা আনফালের ৮:৪৪ নং আয়াতে এর বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। এটা বদর যুদ্ধের ঘটনা। এ যুদ্ধ হিজরতের দ্বিতীয় বছরে মুসলিম ও কাফেরদের মধ্যে সংঘটিত হয়েছিল। কয়েক দিক দিয়ে এটি ছিল বড়ই গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ। প্রথমতঃ এটি ছিল প্রথম যুদ্ধ। দ্বিতীয়তঃ পূর্বে কোন পরিকল্পনা ছাড়াই ছিল এই যুদ্ধ। সিরিয়া থেকে বাণিজ্য-সামগ্রী নিয়ে মক্কাগামী আবূ সুফিয়ানের কাফেলার পথ অবরোধ করার জন্য মুসলিমরা বের হয়েছিলেন। কিন্তু আবূ সুফিয়ান টের পেয়ে যায় এবং সে তার কাফেলা নিয়ে অন্য পথ ধরে চলে যায়। এদিকে মক্কার কাফেররা নিজেদের শক্তি ও সংখ্যার আধিক্যের দাম্ভিকতায় মুসলিমদের উপর আক্রমণ করার জন্য বদরের ময়দান পর্যন্ত যাত্রা করে এবং সেখানে সর্বপ্রথম এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। তৃতীয়তঃ এই যুদ্ধে মুসলিমরা আল্লাহর বিশেষ সাহায্য লাভে ধন্য হন। চতুর্থতঃ এতে কাফেররা এমন শিক্ষামূলক পরাজয় বরণ করে যে, আগামীর জন্য তাদের মনোবল ভেঙ্গে যায়।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


দু’টি দলের পরস্পর সম্মুখীন হওয়ার মধ্যে তোমাদের জন্য অবশ্যই নিদর্শন রয়েছে। একদল যুদ্ধ করছিল আল্লাহ্‌র পথে, অন্য দল ছিল কাফের; তারা তাদেরকে চোখের দেখায় দেখছিল তাদের দ্বিগুণ। আল্লাহ্‌ যাকে ইচ্ছা আপন সাহায্য দ্বারা শক্তিশালী করেন []। নিশ্চয়ই এতে অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন লোকদের জন্য শিক্ষা রয়েছে []। [] আলোচ্য আয়াতে বদর যুদ্ধের অবস্থা বর্ণিত হয়েছে। এ যুদ্ধে কাফেরদের সংখ্যা ছিল প্রায় এক হাজার। তাদের কাছে সাতশ উট ও একশ’ অশ্ব ছিল। অপরপক্ষে মুসলিম যোদ্ধাদের সংখ্যা ছিল তিনশ’র কিছু বেশী। তাদের কাছে সর্বমোট সত্তরটি উট, দুটি অশ্ব, ছ’টি লৌহবর্ম এবং আটটি তরবারী ছিল। মজার ব্যাপার ছিল এই যে, প্রত্যেক দলের দৃষ্টিতেই প্রতিপক্ষ দলের সংখ্যা নিজেদের চেয়ে দ্বিগুণ প্রতিভাত হচ্ছিল। এর ফলে মুসলিমদের আধিক্য কল্পনা করে কাফেরদের অন্তর উপর্যুপরি শঙ্কিত হচ্ছিল এবং মুসলিমগণও নিজেদের অপেক্ষা প্রতিপক্ষের সংখ্যা দ্বিগুণ দেখে আল্লাহ্‌ তা'আলার দিকে অধিকতর মনোনিবেশ করছিলেন। তারা পূর্ণ ভরসা ও দৃঢ়তার সাথে আল্লাহ্‌র ওয়াদা- “ যদি তোমাদের মধ্যে একশ’ ধৈর্যশীল যোদ্ধা থাকে, তবে তারা দুইশ’র বিরুদ্ধে জয়লাভ করবে । ” [ সূরা আল-আনফালঃ ৬৬ ] -এর ওপর আস্থা রেখে আল্লাহ্‌র সাহায্যের আশা করছিলেন। কাফেরদের প্রকৃত সংখ্যা ছিল তিনগুণ। তা যদি মুসলিমদের দৃষ্টিতে প্রতিভাত হয়ে যেত, তবে তাদের মনে ভয়-ভীতি সঞ্চার হওয়াটা ছিল সাধারণ। আবার কোন কোন অবস্থায় উভয় দলই প্রতিপক্ষকে কম দেখেছিল। [ সীরাতে ইবন হিশাম ] [] বদর যুদ্ধের কয়েকটি বিষয় ছিল অত্যন্ত শিক্ষণীয়ঃ এক) মুসলিম ও কাফেররা যেভাবে পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল, তাতে উভয় দলের নৈতিক ও চারিত্রিক পার্থক্য সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। তাদের একদল আল্লাহ্‌র পথে যুদ্ধ করছিল, অপরদল তাগুত, শির্ক ও শয়তানের পথে যুদ্ধ করছিল। আল্লাহ্‌ তাঁর পথে যুদ্ধকারীদের অন্যদের উপর বিজয় দিয়েছিলেন। এ থেকে ইয়াহুদীরা শিক্ষা নেয়া উচিত ছিল। [ আইসারুত তাফসীর ] ( দুই ) মুসলিমরা সংখ্যায় নগণ্য ও অস্ত্রে অপ্রতুল হওয়া সত্বেও যেভাবে কাফেরদের বিশাল সংখ্যা ও উন্নত অস্ত্র-সস্ত্রের মোকাবেলা করেছে, তাতে এ কথা সুস্পষ্ট হয়েছে যে, তারা আল্লাহ্‌র সাহায্যপুষ্ট। [ সা'দী ]। তিন) আল্লাহ্‌র প্রবল প্রতাপ ও অসাধারণ ক্ষমতা সম্পর্কে গাফেল হয়ে যারা সংখ্যাধিক্য ও সমরাস্ত্রের [ মানার ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


১২-১৩ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা হযরত মুহাম্মদ ( সঃ )-কে সম্বোধন করে বলেনঃ “ হে নবী ( সঃ )! তুমি অবিশ্বাসীদেরকে বলে দাও যে, তারা পৃথিবীতেও পরাজিত ও পর্যদস্ত হবে এবং মুসলমানদের অধীনতা স্বীকার করতে বাধ্য হবে এবং কিয়ামতের দিনও তাদেরকে জাহান্নামের দিকে সমবেত করা হবে, আর ওটা হচ্ছে জঘন্যতম স্থান । সীরাত-ই-ইবনে ইসহাক’ গ্রন্থে রয়েছে, হযরত আমর ইবনে কাতাদাহ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বদর যুদ্ধে বিজয় লাভের পর যখন মদীনায় প্রত্যাবর্তন করেন তখন তিনি বানূ কাইনুকার বাজারে ইয়াহুদীদেরকে একত্রিত করেন এবং তাদেরকে সম্বোধন করে বলেনঃ “ হে ইয়াহুদীর দল! কুরাইশদের লাঞ্ছিত ও অপদস্ত হওয়ার ন্যায় তোমরাও লাঞ্ছিত ও পর্যুদস্ত হওয়ার পূর্বে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ কর ।' এ কথা শুনে ঐ উদ্ধত ও অবাধ্য দলটি উত্তর দেয়ঃ ‘যুদ্ধবিদ্যায় অনভিজ্ঞ কয়েকজন কুরাইশকে পরাজিত করেই বুঝি আপনি অহংকারে ফেটে পড়েছেন? আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ হলে জানতে পারবেন যুদ্ধ কাকে বলে! এখনও আমাদের সাথে আপনার যুদ্ধ সংঘটিত হয়নি। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এতে বলা হয়- মক্কা বিজয়ই এটা প্রমাণ করেছে যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁর সত্য, উত্তম ও পছন্দনীয় দ্বীনকে ও ঐ দ্বীনধারীদেরকে সম্মান দানকারী। তিনি তাঁর রাসূলের ও তাঁর অনুসারীদের স্বয়ং সাহায্যকারী'। দু’টি দল যুদ্ধে পরস্পর সম্মুখীন হয়। একটি সাহাবা-ই-কিরামের দল এবং অপরটি মুশরিক কুরাইশদের দল। এটা বদর যুদ্ধের ঘটনা। সেদিন মুশরিকদের উপর এমন প্রভাব পড়ে ( মুসলমানদের ) এবং মহান আল্লাহ মুসলমানদেরকে এমনভাবে সাহায্য করেন যে, যদিও মুসলমানেরা সংখ্যায় মুশরিকদের অপেক্ষা বহু কম ছিল, কিন্তু মুশরিকরা বাহ্যিক দৃষ্টিতে মুসলমানদেরকে দ্বিগুণ দেখছিল। যুদ্ধ আরম্ভ হওয়ার পূর্বে মুশরিকরা উমায়ের ইবনে সাদকে গোয়েন্দাগিরির জন্যে প্রেরণ করেছিল। সে এসে সংবাদ দেয় যে, মুসলমানদের সংখ্যা কিছু কম বেশী তিনশ জন। আসলেও তাই ছিল। তাদের সংখ্যা ছিল তিনশ দশ এবং আর কয়েকজন বেশী। কিন্তু যুদ্ধ শুরু হওয়া মাত্রই আল্লাহ তা'আলা তাঁর বিশিষ্ট ও নির্বাচিত এক হাজার ফেরেশতা পাঠিয়ে দেন। একটি অর্থ তো এই। দ্বিতীয় ভাবার্থ এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, কাফিরদের সংখ্যা মুসলমানদের দ্বিগুণ ছিল, এটা মুসলমানেরা জানতো এবং প্রত্যক্ষও করছিল। তথাপি আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে সাহায্য করতঃ কাফিরদের উপর জয়যুক্ত করেন। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বর্ণনা করেন যে, বদরী সাহাবীরা ( রাঃ ) ছিলেন তিনশ তেরোজন এবং মুশরিকরা ছিল দু’শ ষোল জন। কিন্তু ইতিহাসের পুস্তকগুলোতে মুশরিকদের ন’শ হতে এক হাজার বর্ণনা করা হয়েছে। তাহলে সম্ভবতঃ হযরত আবদুল্লা ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) কুরআন শরীফের শব্দ দ্বারাই দলীল গ্রহণ করে থাকবেন। বানূ হাজ্জাজ গোত্রের একটি কৃষ্ণ বর্ণের ক্রীতদাস যে ধৃত হয়ে এসেছিল, তাকে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) কুরাইশদের সংখ্যা জিজ্ঞেস করলে সে বলেঃ ‘অনেক। তিনি পুনরায় জিজ্ঞেস করেনঃ “ তারা দৈনিক কতটি উট যবেহ করছে?' সে বলেঃ ‘একদিন নয়টি এবং আর একদিন দশটি তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ তাহলে মুশরিকদের সংখ্যা নয়শ এবং এক হাজারের মধ্যবর্তী।' সুতরাং জানা যাচ্ছে যে, মুশরিকরা মুসলমানদের তিনগুণ ছিল। কিন্তু এটা স্মরণ রাখবার বিষয় যে, আরববাসী বলে থাকে, আমার নিকট এক হাজার তো রয়েছে কিন্তু আমার আরও এর দ্বিগুণ প্রয়োজন এবং তার তিন হাজারের উদ্দেশ্য হয়ে থাকে। তাহলে কোন অসুবিধা থাকলো না কিন্তু প্রশ্ন আরও একটি রয়েছে, তা এই যে, কুরআন কারীমের মধ্যে অন্য জায়গায় রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ যখন তোমরা মুখোমুখী হয়ে গেলে তখন আল্লাহ তাদেরকে তোমাদের চোখে কম দেখালেন যেন আল্লাহ যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা হয়ে যায়। ( ৮:৪৪ ) সুতরাং এ পবিত্র আয়াতের দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, প্রকৃত সংখ্যার চেয়েও অল্প পরিলক্ষিত হয়। আর উপরোক্ত আয়াত দ্বারা জানা যাচ্ছে। যে, বেশী এমন কি দ্বিগুণ পরিলক্ষিত হয়। তাহলে আয়াতদ্বয়ের মধ্যে সামঞ্জস্য কিরূপে হতে পারে? উত্তর এই যে, ঐ আয়াতে অবস্থা ছিল এক রকম এবং এ আয়াতে অবস্থা ছিল অন্য রকম। হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) বলেনঃ বদরের দিন মুশরিকদের সংখ্যা আমাদের চোখে মোটেই বেশী দেখায়নি। আমরা আবার গভীরভাবে দৃষ্টিপতি করেও বুঝতে পারি যে, তাদের সংখ্যা আমাদের অপেক্ষা বেশী নয়। অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেনঃ ‘মুশরিকদের সংখ্যা আমাদের নিকট এত অল্প মনে হলো যে, আমি আমার পাশ্ববর্তী একজনকে বললাম-এরা সত্তরজন হবে। ঐ লোকটি তখন বললোঃ না না,একশজন হবে। তাদের একজন লোক ধৃত হলে আমরা তাকে মুশরিকদের সংখ্যা জিজ্ঞেস করি। সে বলেঃ এক হাজার। অতঃপর যখন উভয় পক্ষ সারিবদ্ধভাবে মুখোমুখি দাঁড়িয়ে যায় তখন মুসলমাদের মনে হয় যে, মুশরিকরা তাদের দ্বিগুণ হবে। এটা এ জন্যই যে, যেন তারা নিজেদের দুর্বলতার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতঃ মহান আল্লাহর উপর ভরসা করে, সমস্ত মনোযোগ তারই দিকে ফিরিয়ে দেয় এবং তারই নিকট সাহায্যের জন্য প্রার্থনা জানায়। অনুরূপভাবে মুশরিকদের নিকটও মুসলমানদের সংখ্যা তাদের দ্বিগুণ অনুভূত হয়, যেন তাদের অন্তরে ভয় ও সন্ত্রাসের সৃষ্টি হয় এবং তারা হতবুদ্ধি হয়ে পড়ে। অতঃপর যখন যুদ্ধ আরম্ভ হয়ে যায় তখন প্রত্যেক দলের দৃষ্টিতে নিজেদের তুলনায় অন্য দলের সংখ্যা কম পরিলক্ষিত হয় যেন উভয় দলই উদ্যমের সাথে যুদ্ধ করে এবং আল্লাহ তাআলা সত্য ও মিথ্যার স্পষ্ট মীমাংসা করে দেন। যেন কুফর ও ঔদ্ধত্যের উপর ঈমানের বিজয় লাভ ঘটে এবং যেন মুসলমানেরা সম্মানিত হয় এবং কাফিরেরা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ আল্লাহ বদরের দিন তোমাদেরকে সাহায্য করেছিলেন, অথচ তোমরা সে সময় দুর্বল ছিলে।' ( ৩:১২৩ ) এ জন্যেই এখানেও বলেছেন- আল্লাহ যাকে ইচ্ছে করেন তদীয় সাহায্যদানে শক্তিশালী করে থাকেন । অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ নিশ্চয়ই এর মধ্যে চক্ষুষ্মনদের জন্যে শিক্ষা ও উপদেশ রয়েছে । অর্থাৎ যারা স্থির মস্তিষ্ক বিশিষ্ট তারা আল্লাহ তা'আলার আদেশ পালনে উঠেপড়ে লেগে যাবে এবং বুঝে নেবে যে, আল্লাহ পাক তাঁর মনোনীত বান্দাদেরকে এ ইহলৌকিক জগতেও সাহায্য করবেন এবং কিয়ামতের দিনও তাদেরকে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি হতে রক্ষা করবেন।

সূরা আলে-ইমরান আয়াত 13 সূরা

قد كان لكم آية في فئتين التقتا فئة تقاتل في سبيل الله وأخرى كافرة يرونهم مثليهم رأي العين والله يؤيد بنصره من يشاء إن في ذلك لعبرة لأولي الأبصار

سورة: آل عمران - آية: ( 13 )  - جزء: ( 3 )  -  صفحة: ( 51 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. যারা আল্লাহ ব্যতীত অপরকে অভিভাবক হিসাবে গ্রহণ করে, আল্লাহ তাদের প্রতি লক্ষ্য রাখেন। আপনার উপর
  2. এটা এজন্যে যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা পছন্দ করে না। অতএব, আল্লাহ তাদের
  3. যারা মনোনিবেশ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর যা উত্তম, তার অনুসরণ করে। তাদেরকেই আল্লাহ সৎপথ প্রদর্শন
  4. আমি ইচ্ছা করলে প্রত্যেক জনপদে একজন ভয় প্রদর্শনকারী প্রেরণ করতে পারতাম।
  5. তারা বলতে লাগলঃ যদি সে চুরি করে থাকে, তবে তার এক ভাইও ইতিপূর্বে চুরি করেছিল।
  6. কাফেররাই কেবল আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে। কাজেই নগরীসমূহে তাদের বিচরণ যেন আপনাকে বিভ্রান্তিতে না
  7. যে ব্যক্তি আল্লাহর পরিবর্তে এমন বস্তুর পূজা করে, যে কেয়ামত পর্যন্তও তার ডাকে সাড়া দেবে
  8. এবং যিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করেছেন পরিমিত। আতঃপর তদ্দ্বারা আমি মৃত ভূ-ভাগকে পুনরুজ্জীবিত করেছি।
  9. সজোরে প্রবাহিত ঝটিকার শপথ,
  10. যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, তাদেরকে আপনি আল্লাহ ও তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণকারীদের সাথে বন্ধুত্ব

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আলে-ইমরান ডাউনলোড করুন:

সূরা Al Imran mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Imran শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Sunday, December 22, 2024

Please remember us in your sincere prayers