কোরান সূরা শূরা আয়াত 15 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah shura ayat 15 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা শূরা আয়াত 15 আরবি পাঠে(shura).
  
   

﴿فَلِذَٰلِكَ فَادْعُ ۖ وَاسْتَقِمْ كَمَا أُمِرْتَ ۖ وَلَا تَتَّبِعْ أَهْوَاءَهُمْ ۖ وَقُلْ آمَنتُ بِمَا أَنزَلَ اللَّهُ مِن كِتَابٍ ۖ وَأُمِرْتُ لِأَعْدِلَ بَيْنَكُمُ ۖ اللَّهُ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْ ۖ لَنَا أَعْمَالُنَا وَلَكُمْ أَعْمَالُكُمْ ۖ لَا حُجَّةَ بَيْنَنَا وَبَيْنَكُمُ ۖ اللَّهُ يَجْمَعُ بَيْنَنَا ۖ وَإِلَيْهِ الْمَصِيرُ﴾
[ الشورى: 15]

সুতরাং আপনি এর প্রতিই দাওয়াত দিন এবং হুকুম অনুযায়ী অবিচল থাকুন; আপনি তাদের খেয়ালখুশীর অনুসরণ করবেন না। বলুন, আল্লাহ যে কিতাব নাযিল করেছেন, আমি তাতে বিশ্বাস স্থাপন করেছি। আমি তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করতে আদিষ্ট হয়েছি। আল্লাহ আমাদের পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তা। আমাদের জন্যে আমাদের কর্ম এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের কর্ম। আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে বিবাদ নেই। আল্লাহ আমাদেরকে সমবেত করবেন এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তণ হবে। [সূরা শূরা: 15]

Surah Ash_shuraa in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah shura ayat 15


কাজেই এর প্রতি তুমি তবে আহ্বান করতে থাকো, আর তোমাকে যেমন আদেশ করা হয়েছে তেমনিভাবে তুমি অটল থাকো, আর তাদের খেয়ালখুশির অনুগমন করো না, বরং বলো -- ''আমি বিশ্বাস করি তাতে যা আল্লাহ্ অবতারণ করেছেন এ গ্রন্থ থেকে, আর আমাকে আদেশ করা হয়েছে তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে। আল্লাহ্ আমাদের প্রভু এবং তোমাদেরও প্রভু। আমাদের কাজ হবে আমাদের জন্য এবং তোমাদের কাজ হবে তোমাদের জন্য। আমাদের মধ্যে ও তোমাদের মধ্যে কোনো বিবাদ-বিসংবাদ নেই। আল্লাহ্ আমাদের একত্রিত করবেন। আর তাঁর কাছেই তো প্রত্যাবর্তন।’’


Tafsir Mokhtasar Bangla


১৫. এই সরল দ্বীনের দাও‘য়াত দিন এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুযায়ী এর উপর অটল থাকুন। আর তাদের বাতিল মনোবৃত্তির অনুসরণ করবেন না। বরং তাদের সাথে বিতর্কের সময় বলুন: আমি আল্লাহ ও তদীয় রাসূলদের উপর অবতীর্ণ কিতাবাদির উপর ঈমান এনেছি। আল্লাহ আমাকে মানুষের মাঝে ইনসাফ সহকারে ফায়সালা করতে নির্দেশ প্রদান করেছেন। আমি যে আল্লাহর ইবাদাত করি তিনি আমার ও তোমাদের তথা সকলের রব। আর আমলের ভালো-মন্দ যা কিছু হয় তোমাদের আমল তোমাদের আর আমাদের আমল আমাদের। দলীল-প্রমাণ সুস্পষ্ট ও প্রতিভাত হয়ে যাওয়ার পর আমাদের ও তোমাদের মাঝে কোন বিবাদ নেই। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সমবেত করবেন। আর কিয়ামত দিবসে তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। তখন তিনি আমাদের সবাইকে যার যার পাওনা অনুযায়ী প্রতিদান দিবেন। তখন সত্যবাদী আর মিথ্যাবাদী এবং হকপন্থী আর বাতিলপন্থীদের মধ্যে পার্থক্য নির্ণিত হবে।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


সুতরাং এ জন্য[১] তুমি আহবান কর এবং তোমাকে যেভাবে দৃঢ়প্রতিষ্ঠিত থাকতে বলা হয়েছে, সেভাবে তুমি প্রতিষ্ঠিত থাক। আর ওদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করো না।[২] বল, ‘আল্লাহ যে গ্রন্থ অবতীর্ণ করেছেন, আমি তাতে বিশ্বাস করি এবং তোমাদের মধ্যে ন্যায়বিচার করতে আদিষ্ট হয়েছি।[৩] আল্লাহই আমাদের প্রতিপালক এবং তোমাদের প্রতিপালক। আমাদের কর্ম আমাদের জন্য এবং তোমাদের কর্ম তোমাদের জন্য। আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোন বিবাদ-বিসম্বাদ নেই।[৪] আল্লাহই আমাদেরকে একত্রিত করবেন এবং তাঁরই দিকে প্রত্যাবর্তন।’ [১] অর্থাৎ, তাদের ঐ অনৈক্য ও সন্দেহের জন্য যার কথা পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে, তুমি তাদেরকে তাওহীদের প্রতি আহবান কর এবং এর উপর অটল থাক। [২] অর্থাৎ, তারা তাদের খেয়াল-খুশী ও প্রবৃত্তির বশবর্তী হয়ে যে জিনিসগুলো গড়ে নিয়েছে যেমন, মূর্তিপূজা ইত্যাদি, তাতে তুমি তাদের অনুসরণ করো না। [৩] অর্থাৎ, যখনই তোমরা নিজেদের কোন বিবাদ নিয়ে আমার কাছে আসবে, তখনই আমি আল্লাহর বিধান অনুযায়ী ইনসাফের সাথে তার ফায়সালা করব। [৪] অর্থাৎ, কোন ঝগড়া নেই। কারণ, সত্য সুস্পষ্টরূপে বিকশিত হয়ে গেছে।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


সুতরাং আপনি আহ্বান করুন [] এবং দৃঢ় থাকুন, যেভাবে আপনি আদিষ্ট হয়েছেন। আর আপনি তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না; এবং বলুন, 'আল্লাহ্ যে কিতাব নাযিল করেছেন আমি তাতে ঈমান এনেছি এবং আমি আদিষ্ট হয়েছি তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করতে। আল্লাহ্ আমাদের রব এবং তোমাদেরও রব। আমাদের আমল আমাদের এবং তোমাদের আমল তোমাদের; আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোন বিবাদ-বিসম্বাদ নেই। আল্লাহ্ আমাদেরকে একত্র করবেন এবং ফিরে যাওয়া তারই কাছে []।' [] তাওহীদের দিকে, অথবা এ সুপ্রতিষ্ঠিত দ্বীনের দিকে। যার নির্দেশ তিনি সমস্ত নবী রাসূলদের দিয়েছেন এবং তার ওসিয়ত করেছেন। [ জালালাইন; মুয়াসসার ] [] হাফেয ইবনে কাসীর বলেন, দশটি বাক্য সম্বলিত এই আয়াতের প্রত্যেকটি বাক্যে বিশেষ বিশেষ বিধান বর্ণিত হয়েছে। সমগ্র কুরআনে আয়াতুল কুরসীই এর একমাত্র দৃষ্টান্ত। তাতেও দশটি বিধান বিধৃত হয়েছে। আলোচ্য আয়াতের প্রথম বিধান হচ্ছে فَلِذٰلِكَ فَادْعُ অর্থাৎ যদিও মুশরেকদের কাছে আপনার তাওহীদের দাওয়াত কঠিন মনে হয়, তথাপি আপনি এ দাওয়াত ত্যাগ করবেন না এবং উপর্যুপরি দাওয়াতের কাজ অব্যাহত রাখুন। দ্বিতীয় বিধান وَاسْتَقِمُ كَمَآاُمِرْتَ অর্থাৎ আপনি এ দ্বীনে নিজে অবিচল থাকুন, যেমন আপনাকে আদেশ করা হয়েছে। যাবতীয় বিশ্বাস, কর্ম, চরিত্র, অভ্যাস ও সামাজিকতার যথাযথ সমতা ও ভারসাম্য কায়েম রাখুন। কোন দিকেই যেন কোনরূপ বাড়াবাড়ি না হয়। কাফেদেরকে সন্তুষ্ট করার জন্য এই দ্বীনের মধ্যে কোন রদবদল ও হ্রাস-বৃদ্ধি করবেন না। ‘কিছু নাও এবং কিছু দাও’ নীতির ভিত্তিতে এই পথভ্রষ্ট লোকদের সাথে কোন আপোষ করবেন না। বলাবাহুল্য, এরূপ দৃঢ়তা সহজসাধ্য নয়। এ কারণেই রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সাহাবায়ে কেরামদের কেউ জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, হে আল্লাহর রাসূল! আপনাকে বৃদ্ধ দেখাচ্ছে। তখন রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন: شَيَّبَتْنِيْ هُوْد অর্থাৎ সুরা হুদ আমাকে বৃদ্ধ করে দিয়েছে। সূরা হুদের ১১২ নং আয়াতে এ আদেশ এ ভাষায়ই ব্যক্ত হয়েছে। সেখানেও দ্বীনের উপর অবিচল থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তৃতীয় বিধান- وَلَاتَتَّبِعْ اَهْوَآءَهُمْ অর্থাৎ প্রচারের দায়িত্ব পালনে আপনি কারও বিরোধিতার পরওয়া করবেন না। শুধু কোন না কোন ভাবে ইসলামের গণ্ডির মধ্যে এসে যাক, এ লোভের বশবর্তী হয়ে এদের কুসংস্কার ও গোড়ামি এবং জাহেলী আচার-আচরণের জন্য দ্বীনের মধ্যে কোন অবকাশ সৃষ্টি করবেন না। আল্লাহ তাঁর দ্বীনকে যেভাবে নাযিল করেছেন কেউ মানতে চাইলে সেই খাঁটি ও মূল দ্বীনকে যেন সরাসরি মেনে নেয়। অন্যথায় যে জাহান্নামে হুমড়ি খেয়ে পড়তে চায় পড়ুক। মানুষের ইচ্ছানুসারে আল্লাহর দ্বীনের পরিবর্তন সাধন করা যায় না। মানুষ যদি নিজের কল্যাণ চায় তাহলে যেন নিজেকেই পরিবর্তন করে দ্বীন অনুসারে গড়ে নেয়। চতুর্থ বিধান- وَقُلْ اٰمَنْتُ بِمَآ اَنْزَلَ اللهُ مِنْ كِتٰبٍ অর্থাৎ আপনি ঘোষনা করুন: আল্লাহ তা'আলা যত কিতাব নাযিল করেছেন, সবগুলোর প্রতি আমি ঈমান এনেছি। অন্য কথায় আমি সেই বিভেদ সৃষ্টিকারী লোকদের মত নই যারা আল্লাহর প্রেরিত কোন কোন কিতাব মানে আবার কোন কোনটি মানে না। আমি আল্লাহর প্রেরিত প্রতিটি কিতাবই মানি। পঞ্চম বিধান- وَاُمِرْتُ لِاَعْدِلَ بِيْنَكُمْ এই ব্যাপকার্থক আয়াতাংশের কয়েকটি অর্থ হয়ঃ একটি অর্থ হচ্ছে, আমি এসব দলাদলি থেকে দূরে থেকে নিরপেক্ষ ন্যায় নিষ্ঠা অবলম্বনের জন্য আদিষ্ট। কোন দলের স্বার্থে এবং কোন দলের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ব করা আমার কাজ নয়। সব মানুষের সাথে আমার সমান সম্পর্ক। আর সে সম্পর্ক হচ্ছে ন্যায় বিচার ও ইনসাফের সম্পর্ক। যার যে বিষয়টি ন্যায় ও সত্য সে যত দূরেরই হোক না কেন আমি তার সহযোগী। আর যার যে বিষয়টি ন্যায় ও সত্যের পরিপন্থী সে আমার ঘনিষ্ঠ আত্মীয় হলেও আমি তার বিরোধী। দ্বিতীয় অর্থ হচ্ছে, আমি তোমাদের সামনে যে সত্য পেশ করার জন্য আদিষ্ট তাতে কারো জন্য কোন বৈষম্য নেই, বরং তা সবার জন্য সমান। তাতে নিজের ও পরের, বড়র ও ছোটর, গরীবের ও ধনীর, উচ্চের ও নীচের ভিন্ন ভিন্ন সত্য নেই। যা সত্য তা সবার জন্য সত্য। যা গোনাহ তা সবার জন্য গোনাহ। যা হারাম তা সবার জন্য হারাম এবং যা অপরাধ তা সবার জন্য অপরাধ। এই নির্ভেজাল বিধানে আমার নিজের জন্যও কোন ব্যতিক্রম নেই। তৃতীয় অর্থ হচ্ছে, আমি পৃথিবীতে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য আদিষ্ট। মানুষের মধ্যে ইনসাফ কয়েম করা এবং তোমাদের জীবনে ও তোমাদের সমাজে যে ভারসাম্যহীনতা ও বে-ইনসাফী রয়েছে তার ধ্বংস সাধনের দায়িত্ব আমাকে দেয়া হয়েছে। পারস্পারিক বিবাদ-বিসংবাদের কোন মোকদ্দমা আমার কাছে আসলে তাতে ন্যায় বিচার করার নির্দেশ আমাকে দেয়া হয়েছে। চতুর্থ অর্থ এই যে, এখানে عدل এর অর্থ সাম্য। সুতরাং আয়াতের অর্থ হচ্ছে, আমি আদিষ্ট হয়েছি যে, দ্বীনের যাবতীয় বিধি-বিধান তোমাদের মধ্যে সমান সমান রাখি, প্রত্যেক নবী ও প্রত্যেক কিতাবে বিশ্বাস স্থাপন করি এবং সব বিধান পালন করি-এরূপ নয় যে, কোন বিধান মানবো আর কোনটি অমান্য করব। অথবা কোনটির প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করব ও কোনটির প্রতি করব না। ষষ্ট বিধান- اَللهُ رَبُّنَا وَرَبُّكُمْ আল্লাহকেই একমাত্র রব হিসেবে মানব। তিনি আমাদের ও তোমাদের রব। একথা তোমরা স্বীকার করে থাক। কিন্তু এ কথার কারণে একমাত্র আল্লাহরই যে ইবাদাত করতে হবে, তোমরা এটা মানতে রাজী নও। কিন্তু আমি তা মানি। আর আমার অনুসারীরা সবাই এটা মেনে একমাত্র আল্লাহরই ইবাদাত করে। সপ্তম বিধান- لَنَآاَعْمَا لُنَاوَلَكُمْ اَعْمَالُكُمْ অর্থাৎ আমাদের কর্ম আমাদের কাজে আসবে, তোমাদের তাতে কোন লাভ-লোকসান হবে না। আর তোমাদের কর্ম তোমাদের কাজে আসবে, আমার তাতে কোন লাভ ও ক্ষতি নাই। কেউ কেউ বলেন, মক্কায় যখন কাফেরদের বিরুদ্ধে জেহাদ করার আদেশ অবতীর্ণ হয়নি, তখন এ আয়াত নাযিল হয়েছিল। পরে জেহাদের আদেশ অবতীর্ণ হওয়ায় এই বিধান রহিত হয়ে যায়। কেননা, জেহাদের সারমর্ম এই যে, যারা উপদেশ ও অনুরোধে প্রভাবিত হয় না, যুদ্ধের মাধ্যমে তাদেরকে পরাভূত করতে হবে। তাদেরকে তাদের অবস্থার উপর ছেড়ে দিলে চলবে না। কেউ কেউ বলেন, আয়াতটি রহিত হয়নি এবং উদ্দেশ্য এই যে, দলীলের মাধ্যমে সত্য প্রমাণিত হওয়ার পর তোমাদের না মানা কেবল শক্রুতা ও হঠকারিতা বশত:ই হতে পারে। শত্রুতা সৃষ্টি হয়ে যাওয়ার পর এখন প্রমাণাদির আলোচনা অর্থহীন। তোমাদের কর্ম তোমাদের সামনে এবং আমার কর্ম আমার সামনে থাকবে। অষ্টম বিধান- لَاحُجَّةَ بَيْنَنَا وَبِيْنَكُمْ অর্থাৎ সত্য স্পষ্ট ও প্রমাণিত হওয়ার পরও যদি তোমরা শক্রতাকেই কাজে লাগাও, তবে তর্ক-বিতর্কের কোন অর্থ নেই। কাজেই আমাদেরও তোমাদের মধ্যে এমন কোন বিতর্ক নেই। নবম বিধান- اَللهُ يَحْبمَعُ بِيْنَنَا অর্থাৎ কেয়ামতের দিন আল্লাহ তা’আলা আমাদের সকলকে একত্রিত করবেন এবং প্রত্যেকের কর্মের প্রতিদান দেবেন। দশম বিধান- وَاِلَيْهِ الْمَصِيْرُ অর্থাৎ আমরা সকলেই তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করব। সুতরাং তোমরা চিন্তা করে দেখ কি করলে তখন তোমরা উপকৃত হবে। [ দেখুন, ইবনে কাসীর ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


কুরআন কারীমের এই আয়াতের মধ্যে দশটি স্বতন্ত্র কালেমা রয়েছে যেগুলোর প্রত্যেকটির হুকুম পৃথক পৃথক। আয়াতুল কুরসী ছাড়া এ ধরনের আয়াত কুরআন কারীমের মধ্যে আর পাওয়া যায় না। প্রথম হুকুম তো এই হচ্ছেঃ হে নবী ( সঃ )! তোমার উপর অহী অবতীর্ণ করা হয়েছে এবং অনুরূপ অহী তোমার পূর্ববর্তী নবীদের ( আঃ ) উপরও হতো। তোমার জন্যে যে শরীয়ত নির্ধারণ করা হয়েছে, তুমি সমস্ত মানুষকে ওরই দাওয়াত দাও। প্রত্যেককে ওরই দিকে আহ্বান কর এবং ওকে মানাবার এবং ছাড়াবার চেষ্টায় লেগে থাকো। দ্বিতীয় হুকুমঃ আল্লাহ তা'আলার ইবাদত ও একত্ববাদের উপর তুমি নিজে প্রতিষ্ঠিত থাকো এবং তোমার অনুসারীদেরকে ওর উপর প্রতিষ্ঠিত রাখো। তৃতীয় হুকুমঃ মুশরিকরা যে মতভেদ সৃষ্টি করে রেখেছে, মিথ্যারোপ ও অবিশ্বাস করা যে তাদের অভ্যাস, গায়রুল্লাহর ইবাদত করাই যে তাদের নীতি, সাবধান! কখনো তোমরা তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না এবং তাদের একটা কথাও স্বীকার করো না। চতুর্থ হুকুমঃ প্রকাশ্যভাবে তোমার এই আকীদার কথা প্রচার করতে থাকো, তা এই যে, তুমি বলে দাও- আল্লাহ যেসব কিতাব অবতীর্ণ করেছেন, সবগুলোর উপরই আমি ঈমান রাখি। আমার এই কাজ নয় যে, কোনটি মানবো এবং কোনটি মানবো না, একটিকে গ্রহণ করবো ও অপরটিকে ছেড়ে দিবো। পঞ্চম হুকুমঃ তুমি বলে দাও আমি আদিষ্ট হয়েছি। তোমাদের মধ্যে ন্যায় বিচার করতে। ষষ্ঠ হুকুমঃ তুমি বল, সত্য মা'বুদ একমাত্র আল্লাহ। তিনি আমাদেরও প্রতিপালক এবং তোমাদেরও প্রতিপালক। তিনি সবারই পালনকর্তা ও আহারদাতা। খুশী মনে কেউ কেউ তার দিকে ঝুঁকে না পড়লেও প্রকৃতপক্ষে সবকিছুই তার সামনে ঝুঁকে রয়েছে এবং সিজদায় পড়ে আছে। সপ্তম হুকুমঃ তুমি বলে দাও আমাদের আমল আমাদের সাথে এবং তোমাদের আমল তোমাদের সাথে। আমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোনই সম্পর্ক নেই। যেমন অন্য আয়াতে মহান আল্লাহ বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে নবী ( সঃ )! যদি তারা তোমাকে অবিশ্বাস করে তবে তুমি তাদেরকে বলে দাও আমার জন্যে আমার কর্ম এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের কর্ম । আমি যে কর্ম করি তা হতে তোমরা দায়িত্বমুক্ত এবং তোমরা যে কর্ম কর তা হতে আমিও দায়িত্বমুক্ত।”( ১০:৪১ ) অষ্টম হুকুমঃ তুমি বলে দাওআমাদের ও তোমাদের মধ্যে কোন ঝগড়া-বিবাদ নেই, নেই কোন তর্ক-বিতর্কের প্রয়োজন। হযরত সুদ্দী ( রঃ ) বলেন যে, এ হুকুম মক্কায় ছিল। মদীনায় আগমনের পর জিহাদের হুকুম নাযিল হয়। খুব সম্ভব এটাই ঠিক। কেননা এটা মক্কী আয়াত: আর জিহাদের আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয় মদীনায় হিজরতের পর। নবম হুকুমঃ বলে দাও- কিয়ামতের দিন আল্লাহ সকলকেই একত্রিত করবেন। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তুমি বলে দাও আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে একত্রিত করবেন, অতঃপর সত্যের সাথে আমাদের মধ্যে ফায়সালা করবেন, তিনিই ফায়সালাকারী এবং সর্বজ্ঞ ।( ৩৪:২৬ ) দশম হুকুমঃ বল- প্রত্যাবর্তন তারই নিকট।

সূরা শূরা আয়াত 15 সূরা

فلذلك فادع واستقم كما أمرت ولا تتبع أهواءهم وقل آمنت بما أنـزل الله من كتاب وأمرت لأعدل بينكم الله ربنا وربكم لنا أعمالنا ولكم أعمالكم لا حجة بيننا وبينكم الله يجمع بيننا وإليه المصير

سورة: الشورى - آية: ( 15 )  - جزء: ( 25 )  -  صفحة: ( 484 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. তারাই জান্নাতে সম্মানিত হবে।
  2. তোমরা যদি কল্যাণ কর প্রকাশ্যভাবে কিংবা গোপনে অথবা যদি তোমরা আপরাধ ক্ষমা করে দাও, তবে
  3. অদ্য চীৎকার করো না। তোমরা আমার কাছ থেকে নিস্কৃতি পাবে না।
  4. আল্লাহ তোমাদের সাহায্য করেছেন অনেক ক্ষেত্রে এবং হোনাইনের দিনে, যখন তোমাদের সংখ্যধিক্য তোমাদের প্রফুল্ল করেছিল,
  5. আল্লাহ অমুখাপেক্ষী,
  6. আমি ভয় করি আমার পর আমার স্বগোত্রকে এবং আমার স্ত্রী বন্ধ্যা; কাজেই আপনি নিজের পক্ষ
  7. তারা বলে, আমাদের পার্থিব জীবনই তো শেষ; আমরা মরি ও বাঁচি মহাকালই আমাদেরকে ধ্বংস করে।
  8. অতঃপর যারা মন্দ কর্ম করত, তাদের পরিণাম হয়েছে মন্দ। কারণ, তারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলত
  9. এরা যে রয়েছে, এরাই হলে শয়তান, এরা নিজেদের বন্ধুদের ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করে। সুতরাং তোমরা
  10. আহলে-কিতাব ও মুশরিকদের মধ্যে যারা কাফের, তাদের মনঃপুত নয় যে, তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা শূরা ডাউনলোড করুন:

সূরা shura mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি shura শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত শূরা  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত শূরা  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত শূরা  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত শূরা  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত শূরা  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত শূরা  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত শূরা  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত শূরা  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত শূরা  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত শূরা  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত শূরা  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত শূরা  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত শূরা  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত শূরা  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত শূরা  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত শূরা  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত শূরা  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত শূরা  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত শূরা  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত শূরা  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত শূরা  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত শূরা  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত শূরা  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত শূরা  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত শূরা  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Monday, November 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers