কোরান সূরা মুহাম্মদ আয়াত 15 তাফসীর
﴿مَّثَلُ الْجَنَّةِ الَّتِي وُعِدَ الْمُتَّقُونَ ۖ فِيهَا أَنْهَارٌ مِّن مَّاءٍ غَيْرِ آسِنٍ وَأَنْهَارٌ مِّن لَّبَنٍ لَّمْ يَتَغَيَّرْ طَعْمُهُ وَأَنْهَارٌ مِّنْ خَمْرٍ لَّذَّةٍ لِّلشَّارِبِينَ وَأَنْهَارٌ مِّنْ عَسَلٍ مُّصَفًّى ۖ وَلَهُمْ فِيهَا مِن كُلِّ الثَّمَرَاتِ وَمَغْفِرَةٌ مِّن رَّبِّهِمْ ۖ كَمَنْ هُوَ خَالِدٌ فِي النَّارِ وَسُقُوا مَاءً حَمِيمًا فَقَطَّعَ أَمْعَاءَهُمْ﴾
[ محمد: 15]
পরহেযগারদেরকে যে জান্নাতের ওয়াদা দেয়া হয়েছে, তার অবস্থা নিম্নরূপঃ তাতে আছে পানির নহর, নির্মল দুধের নহর যারা স্বাদ অপরিবর্তনীয়, পানকারীদের জন্যে সুস্বাদু শরাবের নহর এবং পরিশোধিত মধুর নহর। তথায় তাদের জন্যে আছে রকমারি ফল-মূল ও তাদের পালনকর্তার ক্ষমা। পরহেযগাররা কি তাদের সমান, যারা জাহান্নামে অনন্তকাল থাকবে এবং যাদেরকে পান করতে দেয়া হবে ফুটন্ত পানি অতঃপর তা তাদের নাড়িভূঁড়ি ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেবে? [সূরা মুহাম্মদ: 15]
Surah Muhammad in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Muhammad ayat 15
ধর্মভীরুদের জন্য যে জান্নাতের ওয়াদা করা হয়েছে তার উপমা হচ্ছে -- তাতে রয়েছে ঝরনারাজি এমন পানির যা পরিবর্তিত হয় না, আর দুধের নদীসমূহ যার স্বাদ বদলায় না, আর সুরার স্রোত যা পানকারীদের জন্য সুস্বাদু, আর ছাঁকা মধুর নদীগুলো। আর তাদের জন্য সে-সবে রয়েছে সব রকমের ফলফসল, আর তাদের প্রভুর কাছ থেকে রয়েছে পরিত্রাণ। তার মতো যে আগুনের মধ্যে অবস্থানকারী, অথবা যাদের পান করানো হবে ফুটন্ত পানি, ফলে তাদের নাড়িভুঁড়ি তা ছিড়ে ফেলবে?
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৫. আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্যকারী মুত্তাকীদের জন্য তিনি যে জান্নাতের অঙ্গীকার করেছেন সেটির বর্ণনা হলো তিনি তাদেরকে তথায় প্রবিষ্ট করাবেন যেথায় থাকবে পানির নদ-নদী যা অধিককাল অতিক্রম করার পরও তার স্বাদ বা গন্ধ কোনটাই পরিবর্তিত হবে না। তাতে রয়েছে অপিরবর্তিত স্বাদে ভরা দুধের নদী-নালা। তাতে আরো রয়েছে মদের নদী যা পানকারীদের নিকট সুস্বাদু। আরো থাকবে মধুর নদী যা মিশ্রণ থেকে সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার করা হয়েছে। তথায় তাদের জন্য চাহিদানুযায়ী সর্ব প্রকার ফলমূল থাকবে। এরপর রয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে পাপ মার্জনার ব্যবস্থা। ফলে তিনি তাদেরকে এর কারণে পাকড়াও করবেন না। তবে কি উক্ত ব্যক্তি ওই ব্যক্তির সমান হবে যে চিরস্থায়ীভাবে জাহান্নামে অবস্থান করবে। সেখান থেকে সে আদৗ বেরিয়ে আসতে পারবে না। যাদেরকে এমন উত্তপ্ত পানি পান করানো হবে যার তাপমাত্রার আধিক্যের ফলে তাদের পেটের নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে পড়বে?!
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
সাবধানীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত হলঃ ওতে আছে নির্মল পানির নদীমালা,[১] আছে দুধের নদীমালা যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়,[২] আছে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নদীমালা,[৩] আছে পরিশোধিত মধুর নদীমালা।[৪] আর সেখানে তাদের জন্য আছে বিবিধ ফল-মূল ও তাদের প্রতিপালকের ক্ষমা। সাবধানীরা কি তাদের মত, যারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে এবং যাদেরকে পান করতে দেওয়া হবে ফুটন্ত পানি; যা তাদের নাড়ী-ভুঁড়ি ছিন্ন-ভিন্ন করে দেবে? [৫] [১] آسِنٍ এর অর্থঃ পরিবর্তনীয়। غير آسن এর অর্থঃ অপরিবর্তনীয়। অর্থাৎ, পৃথিবীতে পানি যদি কোন এক স্থানে কিছুক্ষণের জন্য পড়ে থাকে, তবে তার রঙ পরিবর্তন হয়ে যায় এবং তার গন্ধ ও স্বাদে এমন বিকৃতি ঘটে যে, তা সবাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়ে ওঠে। কিন্তু জান্নাতের পানির এমন বৈশিষ্ট্য হবে যে, তাতে কোন পরিবর্তন ঘটবে না। অর্থাৎ, তার গন্ধ ও স্বাদ অপরিবর্তিত অবস্থায় থাকবে। যখনই পান করবে, তখনই তা টাটকা, তৃপ্তিদায়ক ও স্বাস্থ্যকর হবে। পৃথিবীর পানি যেহেতু খারাপ বা নষ্টযোগ্য, তাই এই পানির ব্যাপারে শরীয়তের বিধান হল, ততক্ষণ পর্যন্ত তা পবিত্র বলে গণ্য হবে, যতক্ষণ না তার রঙ বা গন্ধ পরিবর্তন হবে। কেননা, গন্ধ বা রঙের বিকৃতি ঘটলেই পানি নাপাক হয়ে যায়।[২] দুনিয়াতে উট, গাই, মহিষ ও ছাগলের স্তন থেকে দোহানো দুধ কিছুকাল পরে খারাপ হয়ে যায়; কিন্তু জান্নাতের দুধ যেহেতু কোন পশুর স্তন থেকে এইভাবে নির্গত হবে না, বরং তার নহর থাকবে, সেহেতু সে দুধ যেমন সুস্বাদু হবে, তেমনি তা খারাপ হওয়া থেকেও সুরক্ষিত থাকবে।[৩] পৃথিবীতে যে সুরা বা মদ পাওয়া যায়, তা সাধারণতঃ অত্যন্ত ঝাঁঝালো, বদ-মজাদার ও দুর্গন্ধময় হয়। এ ছাড়া তা পান করে মানুষ সাধারণতঃ বোধশক্তি হারিয়ে ফেলে, আবোল-তাবোল বকে এবং নিজের দেহের ব্যাপারেও কোন খেয়াল থাকে না। কিন্তু জান্নাতের সুরা দেখতে হবে সুন্দর,স্বাদে হবে অতুলনীয় এবং তা হবে অতীব সুবাসিত। তা পান করে না কোন মানুষ জ্ঞানশূন্য হবে, আর না অস্বস্তি বোধ করবে। বরং এমন তৃপ্তি ও আনন্দ বোধ করবে যে, তা এই দুনিয়াতে কল্পনা করাও সম্ভব নয়। যেমন, মহান আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন, {لا فِيهَا غَوْلٌ وَلا هُمْ عَنْهَا يُنْزَفُونَ} ( الصافات:৪৭ ) " ওতে ক্ষতিকর কিছুই থাকবে না এবং ওতে তারা নেশাগ্রস্তও হবে না। " ( সূরা সা-ফফা-ত ৩৭:৪৭ আয়াত ) ( আরো দেখুনঃ সূরা ওয়াকিআহ ৫৬:১৯ আয়াত ) [৪] অর্থাৎ, মধুতে সাধারণতঃ যে সব জিনিসের মিশ্রণ ঘটানোর সম্ভাবনা থাকে; যেমন দুনিয়াতে ব্যাপকহারে দেখা যায়, জান্নাতে এ রকম কোন আশঙ্কা থাকবে না। তা একেবারে নির্মল ও স্বচ্ছ হবে। কারণ, এ মধু দুনিয়ার মত মৌমাছি থেকে সংগৃহীত হবে না। বরং তারও খাস নহর হবে। এই জন্য হাদীসে এসেছে, নবী করীম ( সাঃ ) বলেছেন, " যখন তোমরা চাইবে, তখন জান্নাতুল ফিরদাউস চাইবে। কেননা, তা হল মধ্যবর্তী ও সর্বোচ্চ জান্নাত। সেখান থেকেই জান্নাতের নহরগুলো প্রবাহিত হয় এবং তার উপরে রয়েছে পরম দয়াময়ের আরশ। " ( বুখারী, জিহাদ অধ্যায় ) [৫] অর্থাৎ, যে জান্নাতে পূর্বে উল্লিখিত সুউচ্চ মর্যাদা লাভ করবে, সে কি এমন জাহান্নামীদের সমান, যাদের এই অবস্থা হবে? পরিষ্কার কথা যে, এমন হবে না। বরং একজন উন্নত মর্যাদায় থাকবে, আর অপরজন থাকবে জাহান্নামে। একজন জান্নাতের নিয়ামতসমূহে আমোদ-প্রমোদে মেতে থাকবে, আর অপরজন জাহান্নামের শাস্তির কঠিন কষ্ট ভোগ করবে। একজন আল্লাহর অতিথি হবে, যার সম্মানার্থে বিভিন্ন প্রকারের জিনিস প্রস্তুত থাকবে। আর অপরজন আল্লাহর বন্দী হবে, যাকে খেতে দেওয়ার জন্য যাক্কুমের মত তিক্ত ও বদ-মজাদার খাদ্য এবং পান করার জন্য ফুটন্ত পানি দেওয়া হবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
মুত্তাকীদেরকে যে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে তার দৃষ্টান্ত : তাতে আছে নির্মল পানির নহরসমূহ, আছে দুধের নহরসমূহ যার স্বাদ অপরিবর্তনীয়, আছে পানকারীদের জন্য সুস্বাদু সুরার নহরসমূহ, আছে পরিশোধিত মধুর নহরসমূহ [ ১ ] এবং সেখানে তাদের জন্য থাকবে প্রত্যেক প্রকারের ফলমূল। আর তাদের রবের পক্ষ থেকে ক্ষমা। তারা ( মুত্তাকীরা ) কি তাদের ন্যায় যারা জাহান্নামে স্থায়ী হবে এবং যাদেরকে পান করানো হবে ফুটন্ত পানি, ফলে তা তাদের নাড়ীভুঁড়ি ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন করে দিবে? [ ১ ] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, জান্নাতে রয়েছে পানির সাগর, মধুর সাগর, দুধের সাগর এবং মদের সাগর। তারপর সেগুলো থেকে আরো নালাসমূহ প্রবাহিত করা হবে। [ তিরমিয়ী: ২৫৭১ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৪-১৫ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর দ্বীনে বিশ্বাসের সোপান পর্যন্ত পৌঁছে যাবে, যে অন্তর্চক্ষু লাভ করেছে, যার মধ্যে বিশুদ্ধ প্রকৃতির সাথে সাথে হিদায়াত ও ইলমও রয়েছে সেই ব্যক্তি কি ঐ ব্যক্তির সমান যে দুষ্কর্মকে সৎকর্ম মনে করে নিয়েছে এবং নিজের কু-প্রবৃত্তির পিছনে পড়ে রয়েছে? এই দুই ব্যক্তি কখনো সমান হতে পারে না। আল্লাহ পাকের এ উক্তিটি তার নিম্নের উক্তিগুলোর মতইঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ ( হে নবী সঃ )! তোমার উপর তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে যা অবতীর্ণ হয়েছে এটাকে যে সত্য বলে জানে সে কি অন্ধের মত?”( ১৩:১৯ ) অর্থাৎ সে ও অন্ধ কখনো সমান হতে পারে না । আর এক জায়গায় আছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ জাহান্নামের অধিবাসী ও জান্নাতের অধিবাসী সমান নয় । জান্নাতবাসীরাই সফলকাম।”( ৫৯:২০ ) এরপর মহান আল্লাহ জান্নাতের গুণাবলী বর্ণনা করছেন যে, তাতে পানির প্রস্রবণ রয়েছে, যা কখনো নষ্ট হয় না এবং তাতে কোন পরিবর্তনও আসে না। এ পানি কখনো পচে দুর্গন্ধময় হয় না। এটা অত্যন্ত নির্মল পানি। মুক্তার মত স্বচ্ছ ও পরিষ্কার। এতে কোন খড়কুটা পড়ে না।হযরত আবদুল্লাহ ( রাঃ ) বলেন, জান্নাতী নদীগুলো মেশক বা মৃগনাভির পাহাড় হতে প্রবাহিত হয়। জান্নাতে পানি ছাড়া দুধের নহরও রয়েছে, যার স্বাদ কখনো পরিবর্তন হয় না। খুবই সাদা ও খুবই মিষ্ট। অত্যন্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। একটি মারফু হাদীসে আছে যে, এটা জন্তুর স্তনের দুধ নয়, বরং কুদরতী দুধ। আর তাতে রয়েছে সুস্বাদু সুরার নহর। এটা পানে মনে তৃপ্তি আসে এবং মস্তিষ্ক ঠাণ্ডা হয়। এ সুরা দুর্গন্ধময়ও নয় এবং তিক্তও নয়। এটা দেখতেও খারাপ নয়। বরং দেখতে অত্যন্ত সুন্দর। এটা পানেও সুস্বাদু এবং অতি সুগন্ধময়। এটা পানে জ্ঞানও লোপ পাবে না এবং মস্তিষ্ক বিকৃতও হবে না। যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ পাক বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তাতে ক্ষতিকর কিছুই থাকবে না এবং তাতে তারা মাতালও হবে ।”( ৩৭:৪৭ ) আর এক জায়গায় বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ সেই সুরা পানে তাদের শিরঃপীড়া হবে না, তারা জ্ঞান হারাও হবে ।” ( ৫৬:১৯ ) আরো বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ শুভ্র উজ্জ্বল যা হবে পানকারীদের জন্যে সুস্বাদু ।”( ৩৭:৪৬ ) মার’ হাদীসে এসেছে যে, ঐ সুরা মানুষের হাতের নিংড়ানো নির্যাস নয়, বরং ওটা আল্লাহর হুকুমে তৈরী। ওটা সুস্বাদু ও সুদৃশ্য। আর জান্নাতে আছে পরিশোধিত মধুর নহর, যা সুগন্ধময় ও অতি সুস্বাদু। মারফু হাদীসে এসেছে যে, এটা মধুমক্ষিকার পেট হতে বহির্ভূত নয়।হযরত হাকীম ইবনে মুআবিয়া ( রাঃ ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন যে, তাঁর পিতা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলতে শুনেছেনঃ “ জান্নাতে দুধ, পানি, মধু ও সুরার সমুদ্র রয়েছে । এগুলো হতে এসবের নহর ও ঝরণা প্রবাহিত হয়।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) ও ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এটাকে হাসান সহীহ বলেছেন)হযরত আবদুল্লাহ ইবনে কায়েস ( রাঃ ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ এই নহরগুলো জান্নাতে আদন হতে বের হয়, 'তারপর একটি হাউযে আসে এবং সেখান হতে অন্যান্য নহরগুলোর মাধ্যমে সমস্ত জান্নাতে যায় ।”সহীহ হাদীসে রয়েছেঃ “ তোমরা আল্লাহ তাআলার কাছে প্রার্থনা করলে ফিরদাউস জান্নাতের জন্যে প্রার্থনা করো । এটা সর্বাপেক্ষা উত্তম ও সর্বোচ্চ জান্নাত। ওটা হতেই জান্নাতের নহরগুলো প্রবাহিত হয়ে থাকে এবং ওর উপর রহমানের ( আল্লাহর ) আরশ রয়েছে।”হযরত লাকীত ইবনে আমির ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি প্রতিনিধি হিসেবে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট আগমন করেন এবং তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! জান্নাতে কি রয়েছে?” উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “জান্নাতে আছে পরিষ্কার ও পরিশোধিত মধুর নহর, শিরঃপীড়া হবে না ও জ্ঞান লোপ পাবে না এমন সুরার নহর, অপরিবর্তনীয় স্বাদ বিশিষ্ট দুধের নহর, নির্মল পানির নহর, বিবিধ ফলমূল এবং পবিত্র সহধর্মিণী ।” হযরত লাকীত ইবনে আমির পুনরায় জিজ্ঞেস করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! সেখানে আমাদের জন্যে কি সতী স্ত্রীরা রয়েছে?” জবাবে তিনি বলেনঃ “সৎ পুরুষরা সতী নারী লাভ করবে । দুনিয়ার উপভোগের মত সেখানে তারা তাদেরকে উপভোগ করবে, তবে সেখানে ছেলে মেয়ে জন্মগ্রহণ করবে না।” ( এ হাদীসটি হাফিয আবুল কাসিম তিবরানী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আনাস ইবনে মালিক ( রাঃ ) বলেনঃ “ তোমরা হয়তো ধারণা করছো যে, জান্নাতের নহরগুলো পৃথিবীর নহরের মত খননকৃত যমীনে বা গর্তে প্রবাহিত হচ্ছে, কিন্তু তা নয় । আল্লাহর কসম! ওগুলো পরিষ্কার সমতল ভূমির উপর প্রবাহিত হচ্ছে। ওগুলোর ধারে ধারে মণি-মুক্তার তাবু রয়েছে এবং ওর মাটি হলো খাটি মৃগনাভি।" ( এটা আবু বকর আবদুল্লাহ ইবনে মুহাম্মাদ ইবনে আবিদ দুনিয়া (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। আবু বকর ইবনে মিরদুওয়াইও ( রঃ ) এটা মার রূপে বর্ণনা করেছেন)মহান আল্লাহ বলেনঃ সেখানে তাদের জন্যে থাকবে বিবিধ ফলমূল। যেমন অন্য জায়গায় রয়েছেঃ অর্থাৎ “ সেখানে তারা শান্তি ও নিরাপত্তার সাথে সর্বপ্রকারের ফলের জন্যে ফরমায়েশ করবে ।”( ৪৪:৫৫ ) অন্য একটি আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ উভয় উদ্যানে ( জান্নাতে ) রয়েছে প্রত্যেক ফল দুই প্রকার ।” ( ৫৫:৫২ ) এসব নিয়ামতের সাথে সাথে এটা কত বড় নিয়ামত যে, তাদের প্রতিপালক তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তিনি তাদের জন্যে তার ক্ষমাকে বৈধ করেছেন। এখন তাদের কোন ভয় ও চিন্তার কারণ নেই। জান্নাতের এই ধুমধাম ও নিয়ামতরাশির বর্ণনা দেয়ার পর আল্লাহ তা'আলা জাহান্নামীদের অবস্থা বর্ণনা করছেন যে, তাদেরকে জাহান্নামে ফুটন্ত পানি পান করতে দেয়া হবে। পানি তাদের পেটের মধ্যে যাওয়া মাত্রই তাদের নাড়িভূড়ি ছিন্ন-বিছিন্ন করে দিবে। আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন! এই জাহান্নামীরা এবং ঐ জান্নাতীরা কি কখনো সমান হতে পারে? কখনো নয়। কোথায় জান্নাতী আর কোথায় জাহান্নামী! কোথায় নিয়ামত এবং কোথায় যহমত!
সূরা মুহাম্মদ আয়াত 15 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আমি নূহ (আঃ) কে তাঁর সম্প্রদায়ের কাছে প্রেরণ করেছিলাম। তিনি তাদের মধ্যে পঞ্চাশ কম এক
- নিশ্চয় যারা আমার আয়াতসমূহের ব্যাপারে বক্রতা অবলম্বন করে, তারা আমার কাছে গোপন নয়। যে ব্যক্তি
- আমি কোন আয়াত রহিত করলে অথবা বিস্মৃত করিয়ে দিলে তদপেক্ষা উত্তম অথবা তার সমপর্যায়ের আয়াত
- তারা বলবে, আমরা সত্যে বিশ্বাস স্থাপন করলাম। কিন্তু তারা এতদূর থেকে তার নাগাল পাবে কেমন
- আল্লাহ, যিনি উর্ধ্বদেশে স্থাপন করেছেন আকাশমন্ডলীকে স্তম্ভ ব্যতীত। তোমরা সেগুলো দেখ। অতঃপর তিনি আরশের উপর
- আমরা আল্লাহর রং গ্রহণ করেছি। আল্লাহর রং এর চাইতে উত্তম রং আর কার হতে পারে?আমরা
- সুতরাং তাদের ব্যাপারে আপনি তাড়াহুড়া করবেন না। আমি তো তাদের গণনা পূর্ণ করছি মাত্র।
- আপনি তাদের কাছে দু ব্যক্তির উদাহরণ বর্ণনা করুন। আমি তাদের একজনকে দুটি আঙ্গুরের বাগান দিয়েছি
- নিশ্চয় আমি এ কোরআনে মানুষকে নানাভাবে বিভিন্ন উপমার দ্বারা আমার বাণী বুঝিয়েছি। মানুষ সব বস্তু
- পেছনে থেকে যাওয়া লোকেরা আল্লাহর রসূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসে থাকতে পেরে আনন্দ লাভ করেছে;
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মুহাম্মদ ডাউনলোড করুন:
সূরা Muhammad mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Muhammad শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers