কোরান সূরা আনআম আয়াত 155 তাফসীর
﴿وَهَٰذَا كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ مُبَارَكٌ فَاتَّبِعُوهُ وَاتَّقُوا لَعَلَّكُمْ تُرْحَمُونَ﴾
[ الأنعام: 155]
এটি এমন একটি গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ণ করেছি, খুব মঙ্গলময়, অতএব, এর অনুসরণ কর এবং ভয় কর-যাতে তোমরা করুণাপ্রাপ্ত হও। [সূরা আনআম: 155]
Surah Al-Anam in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Anam ayat 155
আর এ এক গ্রন্থ -- আমরা এটি অবতারণ করেছি কল্যাণময় ক’রে, কাজেই এর অনুসরণ করো ও ভয়ভক্তি করো যেন তোমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা হয়, --
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৫৫. এ কুর‘আন এমন একটি কিতাব যাকে আমি অতি বরকতময় করে নাযিল করেছি। কারণ, তাতে দীন ও দুনিয়ার সমূহ ফায়েদা রয়েছে। তাই তোমরা তাতে যা নাযিল করা হয়েছে তার অনুসরণ করো এবং তার বিরোধিতার ব্যাপারে সতর্ক থাকো তাহলে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হবে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
এ কিতাব ( কুরআন ) আমি অবতরণ করেছি যা কল্যাণময়।[১] সুতরাং ওর অনুসরণ কর এবং সাবধান হও, হয়তো তোমাদের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা হবে। [১] এ থেকে বুঝানো হয়েছে কুরআন কারীমকে, যাতে দ্বীন ও দুনিয়ার যাবতীয় বরকত ও সমূহ কল্যাণ বিদ্যমান রয়েছে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর এ কিতাব , যা আমরা নাযিল করেছি – বরকতময়। কাজেই তোমারা তার অনুসরণ কর এবং তাকওয়া অবলম্বন কর, যাতে তোমরা রহমতপ্রাপ্ত হও। বিশতম রুকূ’
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৫৪-১৫৫ নং আয়াতের তাফসীর: ( আরবী ) এর অন্তর্নিহিত অর্থ হচ্ছে-হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! আমার সম্পর্কে আবার বলে দাও, আমি মূসা ( আঃ )-কে কিতাব দিয়েছিলাম। এটা ( আরবী ) -এই উক্তি দ্বারা প্রমাণিত হচ্ছে। কিন্তু এটা চিন্তা ভাবনার বিষয় বটে ( আরবী ) শব্দটি এখানে শুধুমাত্র একটি ( আরবী ) -এর পর আর একটি ( আরবী ) –এর ( আরবী ) বা সংযোগের জন্যে এসেছে। ( আরবী ) বুঝাবার জন্যে নয়। ( আরবী ) শব্দটি সাধারণতঃ বুঝাবার জন্যেই এসে থাকে) এখানে আল্লাহ তা'আলা যখন স্বীয় উক্তি ( আরবী ) -এর মাধ্যমে কুরআন সম্পর্কে খবর দিলেন, তখন তিনি ( আরবী ) -এর প্রশংসায় দ্বারা ( আরবী ) করে বললেনঃ এখন আমি তোমাকে এ সংবাদও দিচ্ছি যে, আমি মূসা ( আঃ )-কেও কিতাব দিয়েছিলাম। অধিকাংশ স্থানে আল্লাহ পাক মিলিতভাবে কুরআন ও তাওরাতের বর্ণনা দিয়েছেন। যেমন তিনি বলেছেনঃ “ এর পূর্বে মূসা ( আঃ )-এর কিতাব ইমাম ও রহমত স্বরূপ ছিল, আর এই কিতাব ( কুরআন ) আরবী ভাষায় এর সত্যতা প্রতিপাদন করছে ।” এই সূরার প্রথম দিকে তিনি বলেছেনঃ “ হে নবী ( সঃ ) তুমি জিজ্ঞেস কর-যে কিতাব আমি মূসা ( আঃ )-কে দিয়েছিলাম, যেটাকে আমি লোকদের জন্যে নূর ও হিদায়াত করে পেশ করেছিলাম সেটা কে অবতীর্ণ করেছিলেন ? যেটাকে তোমরা কাগজে লিখছো, যার মধ্য থেকে তোমরা কিছু গোপন করছে এবং কিছু ঠিক প্রকাশ করছো?”এর পরেই তিনি বলেনঃ “এই কুরআনকে আমি কল্যাণময় রূপে পেশ করেছি ।” এখন মুশরিকদের ব্যাপারে বলছেনঃ “ যখন আমার পক্ষ থেকে সত্য অর্থাৎ কুরআন তাদের কাছে পেশ করা হলো তখন তারা বলতে লাগলো -যেরূপ কিতাব মূসা ( আঃ )-কে দেয়া হয়েছিল সেরূপ কিতাব আমাদেরকে কেন দেয়া হয়নি?” তাই আল্লাহ তা'আলা এখন বলছেনঃ “মূসা ( আঃ )-এর কিতাবের সাথে কি কুফরী করা হয়নি এবং এ কথা কি বলা হয়নি যে, এ দু’জন ( মূসা আঃ ও হারূন আঃ ) তো যাদুকর, আমরা তো তাদেরকে মানবো না?” এরপর মহান আল্লাহ জ্বিনদের সম্পর্কে খবর দিচ্ছেন, তারা তাদের কওমকে বলেছিলঃ “হে আমাদের কওম! আমরা একটা কিতাব শুনেছি যা মূসা ( আঃ )-এর পরে অবতীর্ণ হয়েছে এবং তাওরাতের বিষয়বস্তুর সত্যতা প্রতিপাদন করছে; আর হকের পথ প্রদর্শন করছে ।” অতঃপর কুরআন সম্পর্কে ইরশাদ হচ্ছে- ( আরবী ) অর্থাৎ “ এতে সমস্ত কথা সুন্দর ও বিস্তারিতভাবে লিখিত আছে এবং শরীয়তের সব কিছুরই উল্লেখ আছে । যেমন তিনি বলেছেনঃ “ তাওরাতে আমি সমস্ত কথা বর্ণনা করে দিয়েছিলাম ।” অনুরূপভাবে কুরআনকে ( আরবী ) বলেছেন। যেমন তিনি বলেছেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ যখন ইবরাহীম ( আঃ )-কে তার প্রভু কতগুলো কথা দ্বারা পরীক্ষা করলেন তখন তিনি তা পূর্ণ করলেন, আল্লাহ বললেন-আমি তোমাকে লোকদের ইমাম নিযুক্তকারী ।” ( ২:১২৪ ) আর এক জায়গায় বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমি তাদের মধ্যে বহু ধর্মীয় নেতা করেছিলাম-যারা আমার নির্দেশক্রমে হিদায়াত করতো, যখন তারা ধৈর্য ধারণ করেছিল, আর তারা আমার আয়াতসমূহকে বিশ্বাস করতো ।”( আরবী ) অর্থাৎ আমি মূসা ( আঃ )কে এমন কিতাব দিয়েছিলাম যা দানসমূহের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম দান ছিল, যা দুনিয়াতেও উত্তম এবং পরকালেও কামিল বা পূর্ণ। ইবনে জারীর ( রঃ ) এর অন্তর্নিহিত ভাষা ( আরবী ) বলেছেন। তিনি যেন ( আরবী ) -কে ( আরবী ) ধরেছেন। অর্থাৎ ঐ কিতাবটি কামিল বা পূর্ণ ছিল বা উত্তম হওয়ার দিক দিয়ে। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ ( আরবী ) এখন এখানে ( আরবী ) এর ( আরবী ) হয়ে গেল। আবার কেউ কেউ বলেন যে, এখানে ( আরবী ) শব্দটি ( আরবী ) অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) ( আরবী ) এরূপ কিরআত করতেন। মুজাহিদ ( রঃ ) ( আরবী ) দ্বারা ( আরবী ) ও ( আরবী ) উদ্দেশ্য গ্রহণ করতেন। বাগাভী ( রঃ ) ( আরবী ) এবং ( আরবী ) উদ্দেশ্য নিতেন। অর্থাৎ আমি মুমিন ও মুহসিনদের উপর তাওরাতের ফযীলত প্রকাশ করে দিয়েছিলাম। যেমন তিনি বলেছেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে মূসা ( আঃ )! আমি তোমাকে স্বীয় রিসালাত ও কালামের মাধ্যমে সমস্ত লোকের উপর মনোনীত করেছি ।” ( ৭:১৪৪ ) আল্লাহ তা'আলার এ উক্তি দ্বারা এটা অবশ্যম্ভাবী হচ্ছে না যে, হযরত মূসার এই ফযীলত হযরত মুহাম্মাদ ( সঃ ) এবং হযরত ইবরাহীম খলীল ( আঃ )-এর উপরও রয়েছে। ইয়াহইয়া ইবনে ইয়ামার ( রঃ ) ( আরবী ) -কে ( আরবী ) -এর পরিবর্তে ( আরবী ) দিয়ে আহসানু পড়তেন এবং বলতেন যে, এটা ( আরবী ) এর অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। সুতরাং ( আরবী ) কে ( আরবী ) দিয়ে পড়াই যুক্তিযুক্ত। আবার কেউ এ কথাও বলেন যে, আরবী ভাষা হিসেবে এটা একটা বিশুদ্ধ রূপ হলেও এভাবে দিয়ে পড়া উচিত নয়। কেউ কেউ একথাও বলেছেন যে, এটা ( আরবী )-এই অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।ইরশাদ হচ্ছে-এতে প্রত্যেকটি বস্তুর বিশদ বিবরণ রয়েছে। আর একটা হচ্ছে হিদায়াত ও রহমত । আশা যে, তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের সাথে সাক্ষাৎ হওয়া সম্বন্ধে পূর্ণ বিশ্বাস লাভ করবে। মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি যে কিতাব অবতীর্ণ করেছি তা হচ্ছে বরকতময় ও কল্যাণময়, সুতরাং তোমরা তার অনুসরণ করে চল এবং আল্লাহকে ভয় কর। তাহলে তোমাদের প্রতি দয়া করা হবে। এতে কুরআনের অনুসরণ করার প্রতি আহ্বান করা হয়েছে। আল্লাহ তা'আলা স্বীয় বান্দাদেরকে স্বীয় কিতাবের দিকে ধাবিত হওয়ার প্রতি উৎসাহিত করেছেন এবং এতে চিন্তা ও গবেষণা করার নির্দেশ দিচ্ছেন।
সূরা আনআম আয়াত 155 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- যখন তাদের কাছে এটা পাঠ করা হয়, তখন তারা বলে, আমরা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন
- আর এটি পূর্ববর্তী কিতাব সমুহকে সত্যায়ন করে, যেমন তওরাত। আর তা এজন্য যাতে তোমাদের জন্য
- এটা এজন্যে যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তারা তা পছন্দ করে না। অতএব, আল্লাহ তাদের
- যারা পরকালের চাইতে পার্থিব জীবনকে পছন্দ করে; আল্লাহর পথে বাধা দান করে এবং তাতে বক্রতা
- আগুন তাদের মুখমন্ডল দগ্ধ করবে এবং তারা তাতে বীভৎস আকার ধারন করবে।
- এবং যাদুকররা সেজদায় পড়ে গেল।
- বলে দাও, হে মানব মন্ডলী। তোমাদের সবার প্রতি আমি আল্লাহ প্রেরিত রসূল, সমগ্র আসমান ও
- তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, যতদিন আসমান ও যমীন বর্তমান থাকবে। তবে তোমার প্রতিপালক অন্য কিছু
- কাফেররা যা করত, তার প্রতিফল পেয়েছে তো?
- অতঃপর আল্লাহ তাদেরকে পার্থিব জীবনে লাঞ্ছনার স্বাদ আস্বাদন করালেন, আর পরকালের আযাব হবে আরও গুরুতর,
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আনআম ডাউনলোড করুন:
সূরা Anam mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Anam শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers