কোরান সূরা ত্বা-হা আয়াত 16 তাফসীর
﴿فَلَا يَصُدَّنَّكَ عَنْهَا مَن لَّا يُؤْمِنُ بِهَا وَاتَّبَعَ هَوَاهُ فَتَرْدَىٰ﴾
[ طه: 16]
সুতরাং যে ব্যক্তি কেয়ামতে বিশ্বাস রাখে না এবং নিজ খাহেশের অনুসরণ করে, সে যেন তোমাকে তা থেকে নিবৃত্ত না করে। নিবৃত্ত হলে তুমি ধবংস হয়ে যাবে। [সূরা ত্বা-হা: 16]
Surah Ta-Ha in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah TaHa ayat 16
''সেজন্য তোমাকে এ থেকে সে যেন না ফেরায় যে এতে বিশ্বাস করে না আর যে তার কামনার অনুবর্তী হয়, পাছে তুমি ধ্বংস হয়ে যাও।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৬. তাই যে কাফির একে বিশ্বাস করে না এবং সে স্বেচ্ছাচারিতায় লিপ্ত হয়ে হারাম কাজের অনুসরণ করে নিজকে ধ্বংস করে দেয় সে যেন আপনাকে পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা এবং নেক আমলের মাধ্যমে তার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা থেকে ফিরিয়ে না রাখে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
সুতরাং যে ব্যক্তি কিয়ামতে বিশ্বাস করে না ও নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, সে যেন তোমাকে তাতে বিশ্বাস স্থাপনে নিবৃত্ত না করে, নিবৃত্ত হলে তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে। [১] [১] এই জন্য যে, আখেরাতের উপর বিশ্বাস করা হতে অথবা তার স্মরণ হতে বিমুখতা অবলম্বন উভয়ই ধ্বংসের কারণ।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
‘কাজেই যে ব্যক্তি কিয়ামতে ঈমান রাখে না এবং নিজ প্রবৃত্তি অনুসরণ করে, সে যেন আপনাকে তার উপর ঈমান আনা থেকে ফিরিয়ে না রাখে, নতুবা আপনি ধ্বংস হয়ে যাবেন [ ১ ]। [ ১ ] এতে মূসা আলাইহিস সালাম-কে লক্ষ্য করে সতর্ক করা হয়েছে যে, আপনি কাফের ও বেঈমানদের কথায় কেয়ামত সম্পর্কে অসাবধানতার পথ বেছে নেবেন না। তাহলে তা আপনার ধ্বংসের কারণ হয়ে যাবে। বলাবাহুল্য, নবী ও রাসূলগণ নিষ্পাপ হয়ে থাকেন। তাদের পক্ষ থেকে এরূপ অসাবধানতার সম্ভাবনা নেই। এতদসত্ত্বেও মূসা 'আলাইহিস সালাম-কে এরূপ বলার আসল উদ্দেশ্য তার উম্মত ও সাধারণ মানুষকে শেখানো। অর্থাৎ তোমরা তাদের অনুসরণ করো না যারা কিয়ামতকে অস্বীকার করে এবং দুনিয়ার চাকচিক্যের মধ্যে পড়ে তাদের রব ও মাওলার নাফরমানিতে লিপ্ত হয়েছে। আর নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করেছে। যারাই তাদের মত হবে তারাই ক্ষতিগ্রস্ত ও ধ্বংস হবে।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১১-১৬ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা বলেনঃ হযরত মূসা ( আঃ ) যখন আগুনের কাছে পৌঁছলেন তখন ঐ বরকতময় মাঠের ডান দিকের গাছগুলির নিকট থেকে শব্দ আসলোঃ হে মূসা ( আঃ )! আমি তোমার প্রতিপালক। তুমি তোমার পায়ের জুতা খুলে ফেলো। তাকে জুতা খুলে ফেলার নির্দেশ দেয়ার কারণ হয়তো এই যে, তার ঐ জুতা গাধার চামড়া দ্বারা নির্মিত ছিল, কিংবা হয়তো ঐ স্থানের সম্মানের কারণেই এই নিদের্শ দেয়া হয়েছিল যেমন কাবা গৃহে প্রবেশের সময় লোকেরা জুতা খুলে নেয়। অথবা ঐ বরকতময় জায়গায় পা পড়বে বলেই তাকে এই হুকুম দেয়া হয়। আরো কারণ বর্ণনা করা হয়েছে।ঐ উপত্যকার নাম ছিল তুওয়া। কিংবা ভাবার্থ হচ্ছেঃ তুমি তোমার পা এই যমীনের সাথে মিলিয়ে নাও। অথবা ভাবার্থ হলোঃ এই যমীনকে কয়েকবার পাক করা হয়েছে এবং তাতে বরকত পরিপূর্ণ করে দেয়া হয়েছে। এভাবে বারবার করা হয়েছে এর পুনরাবৃতি। কিন্তু প্রথম উক্তিটিই সঠিকতম। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ যখন তাঁর প্রতিপালক তাঁকে পবিত্র তুওয়া উপত্যকায় আহবান করেন । ( ৭৯:১৬ )মহান আল্লাহ বলেনঃ আমি তোমাকে ( রাসূল রূপে ) মনোনীত করেছি। এই সময়ের সমস্ত লোকের উপর আমি তোমার মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছি। বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ তাআলা হযরত মূসাকে ( আঃ ) জিজ্ঞেস করেনঃ “ আমি তোমাকে সমস্ত মানুষের উপর মর্যাদা দান করে তোমার সাথে আমি কথা বলেছি এর কারণ তুমি জান কি?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “হে আল্লাহ! এর কারণ তো আমার জানা নেই । তখন আল্লাহ তাআলা তাঁকে বলেনঃ “ এর কারণ এই যে, তোমার মত কেউ আমার দিকে ঝুঁকে পড়ে নাই ।” এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ যা ওয়াহী প্রেরণ করা হচ্ছে তুমি তা মনোযোগের সাথে শ্রবণ কর। আমিই তোমার মা'বূদ, আমি ছাড়া অন্য কোন মাবুদ নেই। এটাই হলো তোমার প্রথম কর্তব্য যে, তুমি শুধু আমারই ইবাদত করবে। আর কারো কোন প্রকারের ইবাদত করবে না। আমাকে স্মরণার্থে নামায কায়েম কর। আমাকে স্মরণ করার সর্বোত্তম পন্থা হলো এটাই। অথবা এটা ভাবার্থ হবেঃ যখন আমাকে স্মরণ হবে তখন নামায কায়েম কর। যেমন হযরত আনাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমাদের যদি কারো ঘুম এসে যায় বা গাফেল হয়ে পড়ে তবে যখন স্মরণ হয়ে যাবে তখন যেন নামায পড়ে নেয় । কেননা, আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “ আমার স্মরণাথে তোমরা নামায কায়েম কর ।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)হযরত আনাস ( রাঃ ) হতেই বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যে ব্যক্তি নামায হতে ঘুমিয়ে পড়ে বা ভুলে যায় সে যেন স্মরণ হওয়া মাত্রই তা আদায় করে নেয় । তার কাফফারা এটা ছাড়া আর কিছুই নয়।" ( এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে )মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ কিয়ামত অবশ্যম্ভাবী, আমি এটা গোপন রাখতে চাই যাতে প্রত্যেকেই নিজ কর্মানুযায়ী ফল লাভ করতে পারে। এক কিরআতে ( আরবী ) এর পরে ( আরবী ) শব্দও রয়েছে। কেননা আল্লাহ তাআলার সত্ত্বা হতে কোন কিছু গোপন নেই। সুতরাং অর্থ হবেঃ এর জ্ঞান আমি আমা ছাড়া আর কাউকেও প্রদান করবো না। কাজেই সারা ভূ-পৃষ্ঠে এমন কেউ নেই যার কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার নির্ধারিত সময় জানা আছে। এটা এমন একটা বিষয় যে, সম্ভব হলে আমি নিজ হতেও ওটাকে গোপন রাখতাম। কিন্তু আমার কাছে কোন কিছু গোপন থাকা সম্ভব নয়। এটা ফেরেশতাদের হতেও গোপন আছে এবং নবীরাও এটা জানেন না। যেমন মহান আল্লাহ বলেছেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ ( হে নবী (সঃ )! তুমি বলে দাওঃ আল্লাহ ছাড়া আসমান ও যমীনবাসীদের কেউই গায়েবের খবর জানে না।" ( ২৭:৬৫ ) অন্য আয়াতে আছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ কিয়ামত) আসমানে ও যমীনে ভারী হয়ে গেছে, ওটা তোমাদের উপর হঠাৎ এসে যাবে।” ( ৭:১৮৭ ) অর্থাৎ এর অবগতি কারো নেই। এক কিরআতে ( আরবী ) রয়েছে। অরফা ( রঃ ) বলেনঃ “ আমাকে হযরত সাঈদ ইবনু জুবাইর ( রঃ ) এভাবেই পড়িয়েছেন । এর অর্থ হলো ( আরবী ) অর্থাৎ আমি “ ওটাকে প্রকাশ করবো ।" সেইদিন প্রত্যেক আমলকারীকে তার আমলের প্রতিদান দেয়া হবে। তা অনুপরিমাণ পুণ্যই হোক অথবা পাপই হোক। ঐদিন প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের ফল ভোগ করতেই হবে।সুতরাং যে ব্যক্তি কিয়ামতে বিশ্বাস করে না এবং নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, সে যেন তোমাকে কিয়ামতে বিশ্বাস স্থাপন হতে নিবৃত্ত না করে। যদি সে তোমাকে নিবৃত্ত করতে সক্ষম হয়ে যায় তবে তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে।
সূরা ত্বা-হা আয়াত 16 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- বস্তুতঃ আমি একমাত্র এই উদ্দেশ্যেই রসূল প্রেরণ করেছি, যাতে আল্লাহর নির্দেশানুযায়ী তাঁদের আদেশ-নিষেধ মান্য করা
- তারা জাহান্নামের অগ্নি ও ফুটন্ত পানির মাঝখানে প্রদক্ষিণ করবে।
- অতএব, আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন এবং বলুন, ‘সালাম’। তারা শীঘ্রই জানতে পারবে।
- এটি এ বিষয়ের নিকটতম উপায় যে, তারা ঘটনাকে সঠিকভাবে প্রকাশ করবে অথবা আশঙ্কা করবে যে,
- স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন
- যারা কোরআনকে খন্ড খন্ড করেছে।
- অতঃপর যখন তারা সেসব বিষয় ভুলে গেল, যা তাদেরকে বোঝানো হয়েছিল, তখন আমি সেসব লোককে
- তারা আরও বলবে, আমাদের কি হল যে, আমরা যাদেরকে মন্দ লোক বলে গণ্য করতাম, তাদেরকে
- পেছনে থেকে যাওয়া লোকেরা আল্লাহর রসূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বসে থাকতে পেরে আনন্দ লাভ করেছে;
- তারা পূর্বে থেকেই বিভেদ সৃষ্টির সুযোগ সন্ধানে ছিল এবং আপনার কার্যসমূহ উল্টা-পাল্টা করে দিচ্ছিল। শেষ
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ত্বা-হা ডাউনলোড করুন:
সূরা TaHa mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি TaHa শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers