কোরান সূরা নিসা আয়াত 176 তাফসীর
﴿يَسْتَفْتُونَكَ قُلِ اللَّهُ يُفْتِيكُمْ فِي الْكَلَالَةِ ۚ إِنِ امْرُؤٌ هَلَكَ لَيْسَ لَهُ وَلَدٌ وَلَهُ أُخْتٌ فَلَهَا نِصْفُ مَا تَرَكَ ۚ وَهُوَ يَرِثُهَا إِن لَّمْ يَكُن لَّهَا وَلَدٌ ۚ فَإِن كَانَتَا اثْنَتَيْنِ فَلَهُمَا الثُّلُثَانِ مِمَّا تَرَكَ ۚ وَإِن كَانُوا إِخْوَةً رِّجَالًا وَنِسَاءً فَلِلذَّكَرِ مِثْلُ حَظِّ الْأُنثَيَيْنِ ۗ يُبَيِّنُ اللَّهُ لَكُمْ أَن تَضِلُّوا ۗ وَاللَّهُ بِكُلِّ شَيْءٍ عَلِيمٌ﴾
[ النساء: 176]
মানুষ আপনার নিকট ফতোয়া জানতে চায় অতএব, আপনি বলে দিন, আল্লাহ তোমাদিগকে কালালাহ এর মীরাস সংক্রান্ত সুস্পষ্ট নির্দেশ বাতলে দিচ্ছেন, যদি কোন পুরুষ মারা যায় এবং তার কোন সন্তানাদি না থাকে এবং এক বোন থাকে, তবে সে পাবে তার পরিত্যাক্ত সম্পত্তির অর্ধেক অংশ এবং সে যদি নিঃসন্তান হয়, তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে। তা দুই বোন থাকলে তাদের জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ। পক্ষান্তরে যদি ভাই ও বোন উভয়ই থাকে, তবে একজন পুরুষের অংশ দুজন নারীর সমান। তোমরা বিভ্রান্ত হবে আল্লাহ তোমাদিগকে সুস্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিচ্ছেন। আর আল্লাহ হচ্ছেন সর্ব বিষয়ে পরিজ্ঞাত। [সূরা নিসা: 176]
Surah An-Nisa in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Nisa ayat 176
তারা তোমাকে জিজ্ঞাসা করছে একটি বিধান সম্পর্কে। বলো -- ''আল্লাহ্ তোমাদের বিধান দিচ্ছেন মাতাপিতৃহীন তথা সন্তানসন্ততিহীনদের সন্বন্ধে।’’ যদি কোনো লোক মারা যায় -- তার কোনো সন্তান নাই কিন্তু এক বোন আছে -- তার জন্য তবে সে যা ছেড়ে যায় তার অর্ধেক, আর সে হচ্ছে তার ওয়ারিস যদি তার কোনো সন্তান না থাকে। আর যদি তারা দুজন হয় তবে তাদের দুজনের জন্য সে যা ছেড়ে যায় তার দুই-তৃতীয়াংশ। আর যদি তারা হয় ভ্রাতৃবর্গ -- পুরুষ ও স্ত্রীলোক তবে পুরুষের জন্য হচ্ছে দুইজন স্ত্রীলোকের সমান অংশ। আল্লাহ্ তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট করে দিচ্ছেন পাছে তোমরা পথভ্রষ্ট হও। আর আল্লাহ্ সব-কিছু সন্বন্ধে সর্বজ্ঞাতা।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১৭৬. হে রাসূল! তারা আপনাকে কালালার মিরাসের বিষয়ে তাদেরকে ফতোয়া চাইবে। মৃত্যুর সময় সে তার কোন পিতা ও সন্তানহীন হলো কালালা। আপনি বলুন, আল্লাহ তার ব্যাপারে বিধান বর্ণনা করছেন। যদি এমন কোন ব্যক্তি মারা যায়। যার কোন পিতা ও সন্তান নেই। তবে তার একটি আপন বা বৈমাত্রেয় বোন রয়েছে। তখন সে তার নির্ধারিত পাওনা হিসেবে মৃতের রেখে যাওয়া সম্পত্তির অর্ধেক পাবে। আর তার আপন বা বৈমাত্রেয় ভাই আসাবা হিসেবে মৃতের রেখে যাওয়া সম্পত্তির পুরোটাই পাবে যদি তার সাথে নির্ধারিত কোন পাওনাদার না থাকে। যদি তার সাথে নির্ধারিত পাওনাদার কেউ থাকে তখন তার পাওনাটুকু বাদ দিয়ে বাকিটুকু মিরাস হিসেবে পাবে। আর যদি আপন বা বৈমাত্রেয় বোন দু’ বা ততোধিক থাকে তখন তারা তাদের নির্ধারিত পাওনা হিসেবে সম্পদের দু’ তৃতীয়াংশ পাবে। আর যদি তার আপন বা বৈমাত্রেয় ভাই-বোন উভয়ই থাকে তখন তারা আসাবা হিসেবে “ ছেলে দু’ মেয়ের সমান অংশ পাবে ” সূত্রের ভিত্তিতে উত্তরাধিকারী হবে। তথা ছেলেকে মেয়ের অংশের দ্বিগুণ দেয়া হবে। আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য কালালা ইত্যাদির মিরাসের বিধান বর্ণনা করেছেন যেন তোমরা তার ব্যাপারে পথভ্রষ্ট না হও। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা সব কিছু জানেন। তাঁর নিকট কোন কিছু লুক্কায়িত নয়।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
লোকেরা তোমার নিকট বিধান জানতে চায়। বল, আল্লাহ তোমাদেরকে পিতামাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি সম্বন্ধে বিধান জানাচ্ছেন; কোন পুরুষ মারা গেলে সে যদি সন্তানহীন হয় এবং তার এক ভগিনী থাকে, তবে তার জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধাংশ[১] এবং সে ( ভগিনী ) যদি সন্তানহীনা হয়, তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে।[২] আর দুই ভগিনী থাকলে তাদের জন্য তার পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ,[৩] আর যদি ভাই-বোন উভয়ই থাকে, তবে এক পুরুষের অংশ দুই নারীর অংশের সমান।[৪] তোমরা পথভ্রষ্ট হবে এ আশংকায় আল্লাহ তোমাদেরকে পরিষ্কারভাবে জানাচ্ছেন এবং আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সবিশেষ অবহিত। [১] 'كلالة' শব্দের তাৎপর্য ( ১২নং আয়াতে ) পার হয়ে গেছে যে, ঐ মৃতব্যক্তি যার না পিতা আছে, না পুত্র। এখানে পুনরায় তার মীরাসের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। কোন কোন উলামাগণ 'কালালাহ' এর তাৎপর্যে বলেন, 'কালালাহ' ঐ ব্যক্তি যে একমাত্র পুত্রহীন, অর্থাৎ পিতা বর্তমান। কিন্তু এই তাৎপর্য সঠিক নয়; বরং প্রথম তাৎপর্যটিই সঠিক। কেননা পিতার উপস্থিতিতে বোন পরিত্যক্ত সম্পদের উত্তরাধিকারিণী ( ওয়ারিস ) হয় না। পিতা ( মৃতের বোনের ) জন্য ( মীরাসের ব্যাপারে ) অন্তরায় বা প্রতিবন্ধক হয়ে যায়। কিন্তু এখানে আল্লাহ বলেন, যদি তার বোন থাকে তাহলে সে অর্ধেক সম্পদের উত্তরাধিকারিণী হবে। সুতরাং পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারা গেল যে, 'কালালাহ' ঐ ব্যক্তিকে বলা হয়, যার পিতা ও পুত্র উভয়ই থাকবে না। কেননা পুত্র না থাকার কথা স্পষ্ট উক্তি দ্বারা প্রমাণিত। আর পিতা না থাকার প্রমাণ উক্তির ইঙ্গিত দ্বারা প্রমাণিত। বিঃদ্রঃ- পুত্র বলতে, পুত্র ও পৌত্র উভয়কেই বলা হয়। অনুরূপ বোন, সহোদরা ও বৈমাত্রেয় উভয় বোনকেই বলা হয়। ( আইসারুত তাফাসীর ) বহু হাদীস দ্বারা প্রমাণিত যে, 'কালালাহ'র কন্যার সঙ্গে তার বোন উভয়কেই অর্ধেক অর্ধেক সম্পদে শরীক করা হয়েছে। কিন্তু কন্যা ও পুতীনের বর্তমানে, কন্যা অর্ধেক, পুতীন একের ছয় অংশ ও বাকী একের তিন অংশ বোনকে দেওয়া হয়েছে। ( ফাতহুল ক্বাদীর, ইবনে কাসীর ) অতএব পরিষ্কারভাবে বুঝা গেল যে, মৃতব্যক্তির সন্তানের বর্তমানে বোন 'যাবীল ফুরুয' ( নির্ধারিত অংশের অধিকারী ) হিসাবে কিছু পাবে না। আবার ঐ সন্তান যদি পুত্র-সন্তান হয়, তাহলে বোন কোন অবস্থাতেই কিছুই পাবে না। তবে কন্যা-সন্তান হলে সে তার সাথে 'আস্বাবাহ' ( অবশিষ্টাংশের অধিকারী ) হওয়ার কারণে অবশিষ্ট সম্পদের উত্তরাধিকারিণী হবে। একটি কন্যা থাকা অবস্থায় অর্ধেক ও একের অধিক কন্যা থাকা অবস্থায় একের তিন অংশের অধিকারিণী হবে। [২] যদি বাপ না থাকে তবে। যেহেতু ভাইয়ের চেয়ে বাপ সম্পর্কের দিক দিয়ে নিকটতর। সুতরাং বাপের বর্তমানে ভাই উত্তরাধিকারী হবে না। যদি ঐ 'কালালাহ' স্ত্রীর স্বামী অথবা বৈপিত্রেয় ভাই হয়, তাহলে তাদের অংশ দেওয়ার পর অবশিষ্ট সম্পদের অধিকারী ভাই হবে। ( ইবনে কাসীর ) [৩] এই বিধানই দুই-এর অধিক বোনের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অর্থ এই দাঁড়াল যে, যদি 'কালালাহ' ব্যক্তির দুই অথবা দুই-এর অধিক বোন থাকে, তাহলে তারা সমস্ত মালের দুই তৃতীয়াংশের উত্তরাধিকারিণী হবে। [৪] অর্থাৎ, 'কালালাহ' ব্যক্তির ওয়ারিসগণ যদি পুরুষ ও মহিলা উভয়ই হয়, তাহলে সে ক্ষেত্রে 'এক পুরুষের অংশ দুই নারীর অংশের সমান' নিয়ম অনুযায়ী সম্পদ বণ্টন হবে। ( যেমন ছেলে-মেয়ের ক্ষেত্রে হয়। )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
লোকেরা আপনার কাছে ব্যবস্থা জানতে চায় [ ১ ]। বলুন, ‘পিতা-মাতাহীন নিঃসন্তান ব্যক্তি সম্বন্ধে তোমাদেরকে আল্লাহ ব্যবস্থা জানাচ্ছেন, কোন পুরুষ মারা গেলে সে যদি সন্তানহীন হয় এবং তার এক বোন থাকে [ ২ ] তবে তার জন্য পরিত্যক্ত সম্পত্তির অর্ধেক। আর সে ( মহিলা ) যদি সন্তানহীনা হয় তবে তার ভাই তার উত্তরাধিকারী হবে। অতঃপর যদি দুই বোন থাকে তবে তাদের জন্য তার পরিত্যখ্ত সম্পত্তির তিন ভাগের দু’ভাগ। আর যদি ভাই-বোন উভয়ে থাকে তবে এক পুরুষেল অংশ দুই নারীর অংশের সমান। তোমরা পথভ্রষ্ট হবে –এ আশংকায় আল্লাহ তোমাদেরকে পরিস্কারভাবে জানাচ্ছেন এবং আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সবিশেষ অবগত [ ৩ ]। [ ১ ] জাবের ইবন আবদুল্লাহ বলেন, আমি অসুস্থ হলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাকে দেখতে আসলেন। তিনি অজু করে আমার উপর পানি ছিটিয়ে দিলে আমার হুঁশ আসে। অতঃপর আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! মীরাস কারা পাবে? আমার তো ‘কালালাহ’ ছাড়া আর কোন ওয়ারিশ নেই। তখন ফারায়েযের আয়াত নাযিল হয়। [ বুখারী: ১৯৪; মুসলিম: ১৬১৬ ] [ ২ ] আল্লামা শানকীতী বলেন, এখানে এমন সব ভাই-বোনের মীরাসের কথা বলা হচ্ছে, যারা মৃতের সাথে বাবা-মা উভয়ের দিক থেকে অথবা শুধুমাত্র বাবার দিক থেকে শরীক। আবু বকর রাদিয়াল্লাহু আনহু একবার তার এক ভাষণে এ ব্যাখ্যাই করেছিলেন। কোন সাহাবা তার এই ব্যাখ্যার সাথে মতবিরোধ করেননি। ফলে এটি একটি ইজমা বা সর্বসম্মত মতে পরিণত হয়েছে। আয়াতে এক বোনের জন্য অর্ধেক। আর দুই বোনের জন্য দুই তৃতীয়াংশ ঘোষণা করা হয়েছে। যদি দুই এর অধিক বোন থাকে তবে তাদের ব্যাপারে এখানে কিছু বলা হয় নি। অন্য আয়াতে সেটাও বর্ণনা করে দেয়া হয়েছে যে, বোনদের সর্বোচ্চ অংশ হচ্ছে, দুই তৃতীয়াংশ। তারা যত বেশীই হোক না কেন এ সীমা অতিক্রম করে যাবে না। বলা হয়েছে, “ অতঃপর যদি তারা দুই এর অধিক মহিলা হয়, তবে তারা পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশের মালিক হবে” । [ সূরা আন-নিসা ১১ ] [ ৩ ] বারা ইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেনঃ সবশেষে নাযিলকৃত সূরা হল সূরা বারাআত ( তাওবাহ্ )। আর সবশেষে নাযিলকৃত আয়াত হল এই আয়াত। [ বুখারীঃ ৪৩৬৪, ৪৬০৫, ৪৬৫৬, মুসলিমঃ ১৬১৮ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
হযরত বারা' ( রাঃ ) বলেন যে, সূরাসমূহের মধ্যে সর্বশেষ অবতীর্ণ হয় সূরা-ই-বারাআত এবং আয়াতসমূহের মধ্যে সর্বশেষে অবতীর্ণ হয় ( আরবী ) -এ আয়াতটি। হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ ( রাঃ ) বলেনঃ “ আমি রোগে অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলাম । সে সময় রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাকে দেখতে আসেন। তিনি অযু করে সেই পানি আমার উপর নিক্ষেপ করেন, ফলে আমার জ্ঞান ফিরে আসে। আমি তাঁকে বলি! হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) আমিতো কালালা। আমার পরিত্যক্ত সম্পত্তি কিভাবে বন্টিত হবে? সে সময় আল্লাহ তা'আলা ফরায়েযের আয়াত অবতীর্ণ করেন।” ( সহীহ বুখারী ও মুসলিম )অন্য বর্ণনায় এ আয়াতটিই অবতীর্ণ হওয়ার কথা রয়েছে। সুতরাং আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ মানুষ তোমাকে জিজ্ঞেস করে অর্থাৎ কালালা’ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করে। প্রথমে এটা বর্ণিত হয়েছে যে, কালালা' শব্দটি শব্দ হতে নেয়া হয়েছে যা চতুর্দিক হতে মাথাকে ঘিরে থাকে। অধিকাংশ আলেমের মতে ‘কালালা’ ঐ মৃত ব্যক্তিকে বলা হয় যার পুত্র ও পৌত্র না থাকে। আবার কারও কারও উক্তি এও আছে যে, যার পুত্র না থাকে। যেমন এ আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবী ) হযরত উমার ইবনে খাত্তাব ( রাঃ )-এর সামনে যেসব জটিল প্রশ্ন এসেছিল তন্মধ্যে এটিও ছিল একটি। যেমন সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের মধ্যে রয়েছে, হযরত উমার ( রাঃ ) বলেনঃ “ তিনটি বিষয় সম্বন্ধে আমার এ আকাঙখা রয়ে গেল যে, যদি রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) ঐ সব ব্যাপারে আমাদের নিকট কোন অঙ্গীকার করতেন তাহলে আমরা ঐ দিকে প্রত্যাবর্তন করতাম । ঐগুলো হচ্ছে দাদা, কালালা এবং সুদের অধ্যায়সমূহ। অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে, হযরত উমার ( রাঃ ) বলেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে কালালা’ সম্বন্ধে যত প্রশ্ন করেছি অন্য কোন মাসআলা সম্বন্ধে ততো প্রশ্ন করিনি। অবশেষে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমার বক্ষে স্বীয় আঙ্গুলির দ্বারা আঘাত করে আমাকে বলেনঃ “ তোমার জন্যে গ্রীষ্মকালের আয়াতটিই যথেষ্ট যা সূরা-ই-নিসার শেষে রয়েছে ।”অন্য হাদীসে রয়েছে, হযরত উমার ( রাঃ ) বলেনঃ আমি যদি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট হতে আরও বেশী করে জেনে নিতাম তবে আমার জন্যে লাল উট পাওয়া অপক্ষোও উত্তম হতো। রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর এ কথার ভাবার্থ হয়তো এই হবে যে, আয়াতটি সম্ভবতঃ গ্রীষ্মকালে অবতীর্ণ হয়েছিল। আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। রাসূলল্লাহ ( সঃ ) তাকে বুঝবার উপায় বলে দিয়েছিলেন এবং ওতেই যথেষ্ট হবে একথা বলেছিলেন, তাই তিনি ওর অর্থ জিজ্ঞেস করতে ভুলে গিয়েছিলেন। তাই তিনি দুঃখ প্রকাশ করতে থাকেন। তাফসীর-ই-ইবনে জারীরে রয়েছে যে, হযরত উমার ( রাঃ ) রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে কালালা’ সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করেন এবং বলেনঃ “ আল্লাহ তা'আলা কি এটা বর্ণনা করেননি?” তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় । হযরত আবূ বকর ( রাঃ ) স্বীয় ভাষণে বলেনঃ “ সূরা-ই-নিসার প্রথম দিকে ফারায়েযের ব্যাপারে যে আয়াতটি রয়েছে তা পুত্র ও পিতার জন্যে, দ্বিতীয় আয়াতটি স্বামী-স্ত্রী, বৈপিত্রীয় ভাইদের জন্যে এবং যে আয়াত দ্বারা সূরা-ই-নিসাকে সমাপ্ত করা হয়েছে ওটা সহোদর ভাই-বোনদের জন্যে । আর যে আয়াত দ্বারা সূরা-ই-আনফালকে শেষ করা হয়েছে তা হচ্ছে আত্মীয়দের জন্যে যে আতীয়তার মধ্যে আসাবা’ চালু রয়েছে”। ( তাফসীর-ই-ইবনে জারীর ) অর্থের উপর কালামের বর্ণনাঃ এ আয়াতে ( আরবী ) শব্দের অর্থ হচ্ছে ( আরবী ) অর্থাৎ মরে গেছে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেছেন ( আরবী ) অর্থাৎ “ আল্লাহ তা'আলার সত্তা ছাড়া সমস্ত জিনিসই মরণশীল ।” ( ২৮:৮৮ ) অন্য আয়াতে রয়েছে ( আরবী ) অর্থাৎ “ এর উপর যা রয়েছে সবই মরণশীল, শুধু তোমার প্রভুর চেহারা অবশিষ্ট থাকবে যিনি প্রবল পরাক্রান্ত ও মহা সম্মানিত ।" ( ৫৫:২৬-২৭ )।এরপর বলা হচ্ছে-তার পুত্র নেই। এর দ্বারা কেউ কেউ দলীল গ্রহণ করেছেন যে, কালালার’ শর্তে পিতা না হওয়া নেই বরং যার পুত্র নেই সেই কালালা'। তাফসীর-ই-ইবনে জারীরে হযরত উমার ইবনে খাত্তাব ( রাঃ ) হতেও এটা বর্ণিত আছে।কিন্তু জমহরের উক্তিই হচ্ছে সঠিক এবং হযরত আবু বকর সিদ্দীক ( রাঃ ) -এরও সিদ্ধান্ত এটাই যে, কালালা’ হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যার পুত্র ও পিতা নেই এবং আয়াতের পরবর্তী শব্দ দ্বারাও এটাই বুঝা যাচ্ছে। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ যদি তার ভগ্নী থাকে তবে তার জন্যে সমস্ত পরিত্যক্ত সম্পদ হতে অর্ধাংশ । আর যদি বোনের সঙ্গে পিতা থাকে তবে পিতা তাকে উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত করে দেবে। সবারই মত এই যে, ( আরবী ) ঐ অবস্থায় বোন কিছুই পাবে না। সুতরাং সাব্যস্ত হচ্ছে যে, হচ্ছে ঐ ব্যক্তি যার পুত্র না থাকে এবং এটা প্রকাশ্য দলীল দ্বারা সাব্যস্ত হয়েছে। আর যদি পিতাও না থাকে এবং এটাও দলীল দ্বারাই সাব্যস্ত হচ্ছে বটে, কিন্তু কিছুক্ষণ চিন্তার পর। কেননা, পিতার বিদ্যমানতায় বোন অর্ধাংশতো পায়ই না, এমন কি সে উত্তরাধিকার হতে সম্পূর্ণরূপেই বঞ্চিতা হয়। হযরত যায়েদ ইবনে সাবিত ( রাঃ )-কে একটি মাসআলা জিজ্ঞেস করা হয় যে, একটি স্ত্রী লোক মারা গেছে। তার স্বামী ও একটি সহোদরা ভগ্নী রয়েছে। তখন তিনি বলেনঃ “ অর্ধেক স্বামীকে দাও অর্ধেক ভগ্নীকে দাও ।” তাঁকে এর দলীল জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ “ আমার উপস্থিতিতে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এরূপ অবস্থায় এ ফায়সালাই করেছিলেন” । ( মুসনাদ-ই-আহমাদ )তাফসীর-ই-ইবনে জারীরে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে নকল করা হয়েছে, যে মৃত ব্যক্তি একটি মেয়ে ও একটি বোন ছেড়ে যায় এর ব্যাপারে তাঁদের উভয়েরই ফতওয়া ছিল এই যে, ঐ অবস্থায় বোন বঞ্চিত হয়ে যাবে, সে কিছুই পাবে না। কেননা, কুরআন কারীমের এ আয়াতে বোনের অর্ধাংশ পাওয়ার অবস্থা এই বর্ণনা করা হয়েছে যে, যদি মৃত ব্যক্তির সন্তান না থাকে। আর এখানে সন্তান রয়েছে। কিন্তু জামহুর এর বিপরীত মত পোষণ করেন। তারা বলেন যে, ঐ অবস্থাতেই নির্ধারিত অংশ হিসেবে মেয়ে অর্ধেক পাবে এবং ‘আসাবা হিসেবে বোনও অর্ধেক পাবে।হযরত ইবরাহীম ইবনে আসওয়াদ ( রঃ ) বলেনঃ আমাদের মধ্যে হযরত মুআয ইবনে জাবাল ( রাঃ ) রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর যুগে এ ফায়সালা করেন যে, অর্ধেক মেয়ে পাবে ও অর্ধেক ভগ্নী পাবে। সহীহ বুখারীর আর একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, হযরত আবু মূসা আশআরী ( রাঃ )-এর মেয়ে, পৌত্রী ও বোনের ব্যাপারে মেয়েকে অর্ধেক ও বোনকে অর্ধেক দেয়ার ফতওয়া দেন, অতঃপর বলেনঃ “ হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ )-কেও একটু জিজ্ঞেস করে এসো । সম্ভবতঃ তিনি আমার মতই ফতওয়া দেবেন। কিন্তু যখন হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ )-কে প্রশ্ন করা হয় এবং সাথে সাথে হযরত আবু মূসা আশআরী ( রাঃ )-এর ফতওয়াও তাকে শুনিয়ে দেয়া হয় তখন তিনি বলেনঃ “ তাহলে তো আমি পথভ্রষ্ট হয়ে যাবো এবং সুপথ প্রাপ্ত লোকদের মধ্যে আমি গণ্য হবে না । জেনে রেখো এ ব্যাপারে আমি ঐ ফায়সালাই করবো যে ফায়সালা স্বয়ং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) করেছেন। অর্ধেক দাও মেয়েকে, এক ষষ্ঠাংশ দাও পৌত্রীকে, তাহলে দুই তৃতীয়াংশ পূর্ণ হয়ে গেল এবং যা অবশিষ্ট থাকলে তা বোনকে দিয়ে দাও।" আমরা ফিরে এসে হযরত আবূ মূসা আশআরী ( রাঃ )-কে এ সংবাদ দিলে তিনি বলেনঃ “ যে পর্যন্ত এ আল্লামা তোমাদের মধ্যে বিদ্যমান থাকেন সে পর্যন্ত তোমরা আমার নিকট এ মাসআলা জিজ্ঞেস করতে এসো না ।”অতঃপর বলা হচ্ছে-এ তার উত্তরাধিকারী হবে যদি তার সন্তান না থাকে। অর্থাৎ ভাই তার বোনের মালের উত্তরাধিকারী হবে যদি সে কালালা’ হয় অর্থাৎ যদি তার সন্তান ও পিতা না থাকে। কেননা, পিতার বর্তমানে ভাই কোন অংশ পাবে না। হ্যাঁ, তবে যদি ভাই-এর সঙ্গে অন্য কোন নির্দিষ্ট অংশ বিশিষ্ট উত্তরাধিকারী থাকে, যেমন স্বামী বা বৈপিত্রেয় ভাই, তবে তাকে তার অংশ দিয়ে দেয়া হবে এবং অবশিষ্ট মালের উত্তরাধিকারী ভাই হবে।সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমরা ফারায়েযকে ওর প্রাপকের সঙ্গে মিলিয়ে দাও । অতঃপর যা অবশিষ্ট থাকবে তা ঐ পুরুষলোকের জন্যে যে বেশী। নিকটবর্তী।”এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ‘বোন যদি দু’টো হয় তবে তারা পরিত্যক্ত সম্পত্তির দুই তৃতীয়াংশ পাবে। দু’য়ের বেশী বোনেরও একই হুকুম। এখান হতেই একটি দল দুই মেয়ের হুকুম গ্রহণ করেছেন। যেমন দু’য়ের বেশী বোনের হুকুম দু'টি মেয়ের হুকুম হতে নিয়েছেন যে আয়াতের শব্দগুলো নিম্নরূপঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ যদি তারা দু'য়ের উপর স্ত্রীলোক হয় তবে সে যা ছেড়ে যাবে তা হতে তাদের জন্যে দুই তৃতীয়াংশ ।”অতঃপর বলা হচ্ছে- যদি ভাই ও বোন উভয়ই থাকে তবে প্রত্যেক পুরুষের অংশ দু’জন নারীর সমান। আসাবা’রও এ হুকুমই। তারা ছেলেই হোক বা পৌত্রই হোক অথবা ভাই হোক যখন তাদের মধ্যে পুরুষ ও নারী উভয়েই থাকবে তখন দু’জন নারী যা পাবে একজন পুরুষও তাই পাবে। আল্লাহ স্বীয় ফারায়েয বর্ণনা করছেন, স্বীয় সীমা নির্ধারণ করছেন এবং স্বীয় শরীয়ত প্রকাশ করছেন যেন তোমরা পথভ্রষ্ট না হও।' আল্লাহ তা'আলা সমস্ত কার্যের পরিণাম অবগত রয়েছেন, বান্দাদের মঙ্গল ও অমঙ্গল সম্বন্ধে তিনি পূর্ণ জ্ঞান রাখেন। প্রাপকের প্রাপ্য কি তা তিনি খুব ভালই জানেন।তাফসীর-ই-ইবনে জারীরে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) সাহাবীগণ সমভিব্যাহারে কোন জায়গায় যাচ্ছিলেন। তাঁরা সফরে ছিলেন। হযরত হুযাইফা ( রাঃ )-এর সোয়ারীর মাথা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর পিছনে উবিষ্ট সাহাবীর নিকটে ছিল এবং হযরত উমার ( রাঃ )-এর সোয়ারীর মাথা হযরত হুযাইফা ( রাঃ )-এর সোয়ারীর দ্বিতীয় আরোহীর নিকটে ছিল। এমন সময়ে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন হযরত হুযাইফা ( রাঃ )-কে এটা শুনিয়ে দেন এবং হযরত হুযাইফা ( রাঃ ) হযরত উমার ( রাঃ )-কে শুনিয়ে দেন। এরপর আবার যখন হযরত উমার ( রাঃ ) এটা জিজ্ঞেস করেন তখন হুযাইফা ( রাঃ ) বলেনঃ “ আল্লাহর শপথ আপনি অবুঝ । কেননা, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাকে যেমনভাবে শুনিয়ে ছিলেন তেমনই আমিও আপনাকে শুনিয়েছি। আল্লাহর শপথ! আমি এর উপর কিছুই বেশী করতে পারি না। তাই হযরত উমার ফারুক ( রাঃ ) বলতেন, “ হে আল্লাহ! আপনি প্রকাশ করেছেন বটে কিন্তু আমার নিকট তা প্রকাশিত হয়নি । কিন্তু এ বর্ণনাটি মুনকাতা'। এ বর্ণনারই অন্য সনদে আছে যে, হযরত উমার ( রাঃ ) তার এ দ্বিতীয় বার প্রশ্ন তাঁর খিলাফতের যুগে করেছিলেন।অন্য হাদীসে রয়েছে, হযরত উমার ( রাঃ ) রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে জিজ্ঞেস করেছিলেনঃ “ কালালার উত্তরাধিকার কিভাবে বন্টিত হবে” । সে সময় আল্লাহ তা'আলা এ আয়াতটি অবতীর্ণ করেন। কিন্তু তিনি তাতেও পূর্ণভাবে সান্ত্বনা লাভ করতে পারেননি বলে স্বীয় কন্যা ও রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সহধর্মিণী হযরত হাফসা ( রাঃ )-কে বলেনঃ “ রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর খুশীর অবস্থায় তুমি এটা জিজ্ঞেস করে নিও ।” অতএব হযরত হাফসা ( রাঃ ) একদা এরূপ সুযোগ পেয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে এটা জিজ্ঞেস করেন। তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হযরত হাফসা ( রাঃ )-কে বলেনঃ “ সম্ভবতঃ তোমার পিতা তোমাকে এটা জিজ্ঞেস করতে বলেছেন । আমার ধারণা তিনি এটা মনে রাখতে পারবেন না।” হযরত উমার ( রাঃ ) একথা শুনতে পেয়ে বলেনঃ “ রাসূলুল্লাহই ( সঃ ) যখন এ কথা বলেছেন তখন আমি ওটা জানতে পারি না ।”অন্য বর্ণনায় রয়েছে যে, হযরত উমার ( রাঃ )-এর নির্দেশক্রমে হযরত হাফসা ( রাঃ ) যখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে জিজ্ঞেস করেন তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) ঝুঁটির উপর এ আয়াতটি লিখিয়ে দেন, অতঃপর হাফসা ( রাঃ )-কে বলেনঃ “ উমার ( রাঃ ) কি তোমাকে এটা জিজ্ঞেস করতে বলেছিলেন? আমার ধারণা যে তিনি এটা ঠিক রাখতে পারবেন না । তার জন্যে কি গ্রীষ্ম কালের ঐ আয়াতটি যথেষ্ট নয় যা সূরা-ই-নিসায় রয়েছে?” ওটা হচ্ছেঃ ( আরবী )-এ আয়াতটি। তার পরে জনগণ যখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে জিজ্ঞেস করেন তখন ঐ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় যা সূরা-ই-নিসার শেষে রয়েছে এবং ঝুঁটি নিক্ষেপ করা হয়। এ হাদীসটি মুরসাল।একদা হযরত উমার ( রাঃ ) সাহাবীগণকে একত্রিত করেন এবং ঝুঁটির একটি খণ্ড নিয়ে বলেনঃ “ আজ আমি এমন একটা ফায়সালা করবো যে, পর্দানশীন নারীরাও জানতে পারবে ।” ঐ সময়েই ঘর হতে একটি সাপ বেরিয়ে আসে এবং সমস্ত লোক ছত্রভঙ্গ হয়ে এদিক ওদিক চলে যায়। তখন হযরত উমার ( রাঃ ) বলেনঃ “ মহা সম্মানিত আল্লাহর যদি এ কাজ পূর্ণ করার ইচ্ছে থাকতো তবে তিনি অবশ্যই তা পূর্ণ করিয়ে দিতেন ।” এর ইসনাদ সহীহ।মুসতাদরিক-ই-হাকিম গ্রন্থে রয়েছে যে, হযরত উমার ( রাঃ ) বলেনঃ “ যদি আমি তিনটি জিজ্ঞাস্য বিষয় রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে জিজ্ঞেস করে নিতাম তবে তা আমার নিকট লালবর্ণের উট পাওয়া অপেক্ষাও পছন্দনীয় হতো । প্রথম হচ্ছে এই যে, তার পরে খলীফা কে হবেন? দ্বিতীয় হচ্ছে এই যে, যেসব লোক যাকাতকে স্বীকার করে বটে কিন্তু বলে-আমরা আপনার নিকট আদায় করবো না, তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হালাল কি না? তৃতীয় হচ্ছে ‘কালালা’ স্মম্বন্ধে" , অন্য হাদীসে যাকাত আদায় না করার স্থলে সুদের মাসআলার বর্ণনা রয়েছে। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেনঃ “ হযরত উমার ( রাঃ )-এর শেষ যুগে আমি তাকে বলতে শুনেছিঃ কথা ওটাই যা আমি বলেছি । আমি জিজ্ঞেস করি-ওটা কি? তিনি বলেন, ( আরবী ) তাকেই বলে যার সন্তান না থাকে।”অন্য বর্ণনায় রয়েছে, হযরত উমার ( রাঃ ) বলেনঃ ( আরবী )-এর ব্যাপারে আমার ও হযরত আবু বকর ( রাঃ )-এর মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি হয় এবং কথা ছিল ওটাই যা আমি বলছিলাম।” হযরত উমার ( রাঃ ) সহোদর ভাইদেরকেও বৈপিত্রেয় ভাইদেরকে এক তৃতীয়াংশে অংশীদার করতেন যখন তারা একত্রিত হতো। কিন্তু হযরত আবু বকর ( রাঃ ) তাঁর বিপরীত ছিলেন। তাফসীর-ইইবনে জারীরে রয়েছে যে, মুসলমানদের খলীফা হযরত উমার ( রাঃ ) একবার দাদার উত্তরাধিকার ও কালালা’র ব্যাপারে এক টুকরো কাগজে কিছু লিখেছিলেন। তারপর তিনি ইসতিখারা ( লক্ষণ দেখে শুভাশুভ বিচার ) করেন এবং অপেক্ষা করতে থাকেন। তিনি আল্লাহ তা'আলার নিকট প্রার্থনা করতে থাকেনঃ “ হে আমার প্রভু! আপনার জ্ঞানে যদি এতে মঙ্গল নিহিত থাকে তবে তা আপনি চালু করে দিন ।” অতঃপর যখন তাকে আহত করা হয় তখন তিনি ঐ কাগজ খণ্ডকে চেয়ে নিয়ে লিখা উঠিয়ে ফেলেন। জনগণ জানতে পারলো না যে, তাতে কি লিখা ছিল। অতঃপর তিনি নিজেই বলেনঃ “ আমি ওতে পিতামহ ও কালালা’র কথা লিখেছিলাম এবং আমি ইসতিখারা করেছিলাম । তারপরে আমার ধারণা হয় যে, তোমরা যার উপরে ছিলে তার উপরেই তোমাদেরকে ছেড়ে দেই।” তাফসীর-ই-ইবনে জারীরে রয়েছে, হযরত উমার ( রাঃ ) বলেনঃ “ এ ব্যাপারে আমি হযরত আবু বকর ( রাঃ ) এর বিরোধিতা করায় লজ্জাবোধ করছি ।” হযরত আবু বকর ( রাঃ )-এর উক্তি ছিলঃ ‘কালালা’ ঐ ব্যক্তি যার পিতা ও পুত্র না থাকে। এর উপরেই রয়েছেন জমহুর-ই-সাহাবা ( রাঃ ), তাবেঈন এবং আইম্মা-ই-দ্বীন। ইমাম চতুষ্টয় ও সপ্ত ধর্মশাস্ত্রবিদেরও এটাই মাযহাব। পবিত্র কুরআনেও এরই প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ আল্লাহ তা'আলা তোমাদের জন্যে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেছেন যেন তোমরা পথভ্রষ্ট না হও এবং আল্লাহ তা'আলা সর্ববিষয়ে মহাজ্ঞানী।” আল্লাহ তা'আলই সবচেয়ে ভাল জানেন।
সূরা নিসা আয়াত 176 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আপনি তাদেরকে সুপথে আনতে আগ্রহী হলেও আল্লাহ যাকে বিপথগামী করেন তিনি তাকে পথ দেখান না
- তারা নিজেদের মধ্যে ভীষণ চক্রান্ত করে নিয়েছে এবং আল্লাহর সামনে রক্ষিত আছে তাদের কু-চক্রান্ত। তাদের
- আমি কাউকে তার সাধ্যাতীত দায়িত্ব অর্পন করি না। আমার এক কিতাব আছে, যা সত্য ব্যক্ত
- তালাকে-‘রাজঈ’ হ’ল দুবার পর্যন্ত তারপর হয় নিয়মানুযায়ী রাখবে, না হয় সহৃদয়তার সঙ্গে বর্জন করবে। আর
- যারা কাফের তাদেরকে উচ্চঃস্বরে বলা হবে, তোমাদের নিজেদের প্রতি তোমাদের আজকের এ ক্ষোভ অপেক্ষা আল্লার
- তিনি বললেনঃ এখানেই আমার ও আপনার মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হল। এখন যে বিষয়ে আপনি ধৈর্য্য ধরতে
- গুরু শাস্তির পূর্বে আমি অবশ্যই তাদেরকে লঘু শাস্তি আস্বাদন করাব, যাতে তারা প্রত্যাবর্তন করে।
- এবং যখন তারা আসবাবপত্র খুলল, তখন দেখতে পেল যে, তাদেরকে তাদের পন্যমুল্য ফেরত দেয়া হয়েছে।
- যে ব্যক্তি তার পালনকর্তার সামনে পেশ হওয়ার ভয় রাখে, তার জন্যে রয়েছে দু’টি উদ্যান।
- অতএব, তোমরা উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নিসা ডাউনলোড করুন:
সূরা Nisa mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Nisa শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers