কোরান সূরা হিজর আয়াত 20 তাফসীর
﴿وَجَعَلْنَا لَكُمْ فِيهَا مَعَايِشَ وَمَن لَّسْتُمْ لَهُ بِرَازِقِينَ﴾
[ الحجر: 20]
আমি তোমাদের জন্যে তাতে জীবিকার উপকরন সৃষ্টি করছি এবং তাদের জন্যেও যাদের অন্নদাতা তোমরা নও। [সূরা হিজর: 20]
Surah Al-Hijr in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Hijr ayat 20
আর তোমাদের জন্য তাতে সৃষ্টি করেছি খাদ্যবস্তু, আর তোমরা যাদের জীবিকাদাতা নও তাদের জন্যেও।
Tafsir Mokhtasar Bangla
২০. হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে জমিনে বাঁচিয়ে রাখার জন্য হরেক রকমের খাদ্য ও পানীয়ের ব্যবস্থা করেছি যতোদিন তোমরা দুনিয়ার জীবনে বেঁচে থাকো। তেমনিভাবে তোমরা যাদেরকে রিযিক দিচ্ছো না সে মানুষ ও পশুর জীবন ধারণেরও ব্যবস্থা করেছি।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আর আমি ওতে জীবিকার অনেক ব্যবস্থা করেছি তোমাদের জন্য[১] আর তোমরা যাদের জীবিকাদাতা নও তাদের জন্যেও। [২] [১] معايش শব্দটি معيشة এর বহুবচন, অর্থ তোমাদের জন্য পৃথিবীতে জীবিকার অসংখ্য পথ ও উপায় সৃষ্টি করেছি। [২] অর্থাৎ, দাস-দাসী চাকর-ভৃত্য ও জীবজন্তু। অর্থাৎ, পশুকে তোমাদের অধীনস্থ করে দিয়েছি, যাকে তোমরা বাহনরূপে ব্যবহার কর, যার উপর মালপত্র বহন কর এবং কিছুকে তোমরা ভক্ষণও কর। দাস-দাসী থেকে তোমরা তোমাদের কাজ নিয়ে থাক। যদিও এরা তোমাদের অধীনস্থ, তোমরা তাদের খাবারের ব্যবস্থা করে থাক, কিন্তু তাদের আসল জীবিকা নির্বাহকারী আমিই। তোমরা এটা মনে করো না যে, তোমরাই তাদের রুযীদাতা, তোমরা তাদেরকে খেতে না দিলে তারা মারা যাবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর আমরা তাতে জীবিকার ব্যবস্থা করেছি তোমাদের জন্য এবং তোমরা যাদের রিযিকদাতা নও তাদের জন্যও [ ১ ]। [ ১ ] আর তিনি সেখানে তাদেরকেও সৃষ্টি করেছেন যাদেরকে তোমরা রিযিক দাও না। অথবা আয়াতের অর্থ, আর এ যমীনের মধ্যে আমরা তোমাদের জন্য যেমন রিযিক রেখেছি তেমনি তাদের জন্যও রিযিক রেখেছি। তখন যমীনে যেগুলো আছে সবই এর অন্তর্ভুক্ত হবে, যেমন, সমস্ত প্রাণী। [ ফাতহুল কাদীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৬-২০ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআলা খবর দিচ্ছেন যে, এই উঁচু আকাশকে তিনিই সৃষ্টি করেছেন যা স্থিতিশীল রয়েছে এবং আবর্তনকারী নক্ষত্ররাজি দ্বারা সৌন্দর্যমণ্ডিত রয়েছে। যে কেউই এটাকে চিন্তা ও গবেষণার দৃষ্টিতে দেখবে সেই মহা শক্তিশালী আল্লাহর বহু বিস্ময়কর কাজ এবং শিক্ষণীয় বহু নিদর্শন দেখতে পাবে। বুরূজ’ দ্বারা এখানে নক্ষত্ররাজিকে বুঝানো হয়েছে। যেমন অন্য আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ কত মহান তিনি যিনি নভোমণ্ডলে সৃষ্টি করেছেন তারকারাজি এবং তাতে স্থাপন করেছেন প্রদীপ ও জ্যোতিময় চন্দ্র ।” ( ২৫:৬৯ ) আবার কেউ কেউ বলেছেন যে, এর দ্বারা সূর্য ও চন্দ্রের মযিলকে বুঝানো হয়েছে। আতিয়্যা’ ( রঃ ) বলেন, বুরূজ হচ্ছে ঐ স্থানসমূহ যেখানে প্রহরী নিযুক্ত রয়েছে, যেখান থেকে দুষ্ট ও অবাধ্য শয়তানদেরকে প্রহার করা হয়, যাতে তারা ঊর্ধ্ব জগতের কোন কথা শুনতে না পারে। যে সামনে বেড়ে যায় তার দিকে জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ড বেগে ধাবিত হয়। কখনো তো নিম্নবর্তীর কানে ঐ কথা পৌছিয়ে দেয়ার পূর্বেই তাকে ধ্বংস করে দেয়া হয়। কোন কোন সময় এর বিপরীতও হয়ে থাকে। যেমন এই আয়াতের তাফসীরে হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যখন আল্লাহ তাআলা আকাশে কোন বিষয় সম্পর্কে ফায়সালা করেন তখন ফেরেশতামণ্ডলী অত্যন্ত বিনয়ের সাথে নিজেদের ডানা ঝুঁকাতে থাকেন, যেন তা পাথরের উপর যিঞ্জীর । অতঃপর যখন তাঁদের অন্তর প্রশান্ত হয়ে যায় তখন তারা ( পরম্পর ) বলাবলি করেনঃ “ তোমাদের প্রতিপালক কি বলেছেন?” উত্তরে বলা হয়ঃ “তিনি যা বলেছেন সত্য বলেছেন এবং তিনি হচ্ছেন সর্বোচ্চ ও মহান ।” ফেরেশতাদের কথাগুলি গুপ্তভাবে শুনবার উদ্দেশ্যে জ্বিনরা উপরে উঠে যায় এবং এইভাবে তারা একের উপর এক থাকে। হাদীস বর্ণনাকারী হযরত সাফওয়ান ( রাঃ ) তাঁর হাতের ইশারায় এইভাবে বলেন যে, ডান হাতের অঙ্গুলীগুলি প্রশস্ত করে একটিকে অপরটির উপর রেখে দেন। ঐ শ্রবণকারী জ্বিনটির কাজতো কখনো কখনো ঐ জ্বলন্ত উল্কাপিণ্ড খতম করে দেয় তার নীচের সঙ্গীর কানে সেই কথা পৌছানোর পূর্বেই। তৎক্ষণাৎ সে জুলে-পুড়ে যায়। আবার কোন কোন সময়। এমনও হয় যে, সে তার পরবর্তীকে এবং তার পরবর্তী তার পরবতীকে ক্রমান্বয়ে পৌঁছে থাকে এবং এইভাবে ঐ কথা যমীন পর্যন্ত পৌঁছে যায়। অতঃপর তা গণক ও যাদুকরদের কানে এসে পড়ে। তারপর তারা এর সাথে শতটা মিথ্যা কথা জুড়ে দিয়ে জনগণের মধ্যে প্রচার করে। যখন তাদের কারো দু'একটি কথা যা ঘটনাক্রমে আকাশ থেকে তার কাছে পৌঁছে গিয়েছিল, সঠিকরূপে প্রকাশিত হয় তখন লোকদের মধ্যে তার বুদ্ধি ও জ্ঞান গরিমার আলোচনা হতে থাকে। তারা বলাবলি করেঃ “ দেখো, অমুক লোক অমুক দিন এই কথা বলেছিল, তা সম্পূর্ণ সঠিক ও সত্যরূপে প্রকাশিত হয়েছে ।” ( এ হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ ) স্বীয় সহীহ' গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)এরপর আল্লাহ তাআলা যমীনের বর্ণনা দিচ্ছেন যে, তিনিই ওকে সৃষ্টি করেছেন, সম্প্রসারিত করেছেন, ওতে পাহাড় পর্বত বানিয়েছেন, বন-জঙ্গল ও মাঠ-ময়দান প্রতিষ্ঠিত করেছেন, ক্ষেতখামার ও বাগ-বাগিচা তৈরী করেছেন। এবং সমস্ত বস্তুকে সুপরিমিত ভাবে সৃষ্টি করেছেন। এগুলো হচ্ছেহাট-বাজারের সৌন্দর্য এবং মানবমণ্ডলীর জন্যে সুদৃশ্য।মহান আল্লাহ বলেনঃ “ যমীনে আমি নানা প্রকারের জীবিকার ব্যবস্থা করেছি । আর আমি ঐ সবগুলোও সৃষ্টি করেছি যাদের জীবিকার ব্যবস্থা তোমরা কর না, বরং আমিই করি। অর্থাৎ চতুষ্পদ জন্তু, দাস দাসী ইত্যাদি। সুতরাং আমি বিভিন্ন প্রকারের জিনিস, নানা প্রকারের উপকরণ এবং হরেক রকমের শান্তি ও আরামের ব্যবস্থা তোমাদের জন্যে করেছি। আমি তোমাদেরকে আয় উপার্জনের পন্থা শিখিয়েছি। জন্তুগুলিকে আমি তোমাদের সেবায় নিয়োজিত রেখেছি। তোমরা ওগুলির গোশত ভক্ষণ করে থাকো এবং পিঠে সওয়ারও হয়ে থাকো। তোমাদের সুখ শান্তির প্রতি লক্ষ্য রেখে আমি তোমাদের জন্যে দাস দাসীরও ব্যবস্থা করেছি। এদের জীবিকার ভার কিন্তু তোমাদের উপর ন্যস্ত নেই। বরং তাদের রুজী দাতাও আমি। আমি বিশ্বজগতের সবারই আহার্যদাতা। তাহলে একটু চিন্তা করে দেখো তো, লাভ ও উপকার ভোগ করছো তোমরা, আর আহার্য দিচ্ছি আমি। অতএব, তিনি ( আল্লাহ ) কতই না মহান।
সূরা হিজর আয়াত 20 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- এবং তিনি পিতা-মাতাকে সিংহাসনের উপর বসালেন এবং তারা সবাই তাঁর সামনে সেজদাবনত হল। তিনি বললেনঃ
- আর ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ এবং মন্দ পথ।
- আমি তো সুস্পষ্ট আয়াত সমূহ অবর্তীর্ণ করেছি। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সরল পথে পরিচালনা করেন।
- আল্লাহ কি বিচারকদের মধ্যে শ্রেষ্টতম বিচারক নন?
- অতএব, তোমরা উভয়ে তোমাদের পালনকর্তার কোন কোন অবদানকে অস্বীকার করবে?
- এবং যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, আমি তাদের জন্যে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করেছি।
- আমি তাদেরকে শাস্তি দ্বারা পাকড়াও করেছিলাম, কিন্তু তারা তাদের পালনকর্তার সামনে নত হল না এবং
- এবং অপর তিনজনকে যাদেরকে পেছনে রাখা হয়েছিল, যখন পৃথিবী বিস্তৃত হওয়া সত্বেও তাদের জন্য সঙ্কুচিত
- আপনি তাদের কাছে দু ব্যক্তির উদাহরণ বর্ণনা করুন। আমি তাদের একজনকে দুটি আঙ্গুরের বাগান দিয়েছি
- এবং প্রবৃত্তির তাড়নায় কথা বলেন না।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হিজর ডাউনলোড করুন:
সূরা Hijr mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Hijr শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers