কোরান সূরা ইবরাহীম আয়াত 21 তাফসীর
﴿وَبَرَزُوا لِلَّهِ جَمِيعًا فَقَالَ الضُّعَفَاءُ لِلَّذِينَ اسْتَكْبَرُوا إِنَّا كُنَّا لَكُمْ تَبَعًا فَهَلْ أَنتُم مُّغْنُونَ عَنَّا مِنْ عَذَابِ اللَّهِ مِن شَيْءٍ ۚ قَالُوا لَوْ هَدَانَا اللَّهُ لَهَدَيْنَاكُمْ ۖ سَوَاءٌ عَلَيْنَا أَجَزِعْنَا أَمْ صَبَرْنَا مَا لَنَا مِن مَّحِيصٍ﴾
[ إبراهيم: 21]
সবাই আল্লাহর সামনে দন্ডায়মান হবে এবং দুর্বলেরা বড়দেরকে বলবেঃ আমরা তো তোমাদের অনুসারী ছিলাম-অতএব, তোমরা আল্লাহর আযাব থেকে আমাদেরকে কিছুমাত্র রক্ষা করবে কি? তারা বলবেঃ যদি আল্লাহ আমাদেরকে সৎপথ দেখাতেন, তবে আমরা অবশ্যই তোমাদের কে সৎপথ দেখাতাম। এখন তো আমাদের ধৈর্য্যচ্যুত হই কিংবা সবর করি-সবই আমাদের জন্যে সমান আমাদের রেহাই নেই। [সূরা ইবরাহীম: 21]
Surah Ibrahim in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Ibrahim ayat 21
আর তারা সবাই আসবে আল্লাহ্র সামনে, তখন দুর্বলেরা বলবে যারা অহংকার করত তাদের -- ''আমরা তো নিশ্চয়ই তোমাদের অনুগামী ছিলাম, সুতরাং আল্লাহ্র শাস্তি থেকে কিছুটা আমাদের থেকে তোমরা সরিয়ে নিতে পার কি?’’ তারা বলবে -- ''আল্লাহ্ যদি আমাদের সৎপথে চালিত করতেন তবে আমরাও তোমাদের সৎপথে চালিত করতাম। আমরা অসহিষ্ণুতা দেখাই বা ধৈর্যধারণ করি আমাদের জন্য সবই সমান, আমাদের জন্য কোনো নিষ্কৃতি নেই।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
২১. কিয়ামতের দিন আল্লাহর সকল সৃষ্টি তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করতে থাকলে দুর্বল অনুসারীরা তাদের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদেরকে বলবে: হে নেতৃবর্গ! আমরা তো দুনিয়াতে তোমাদের অনুসারী ছিলাম। তোমাদের আদেশ মানতাম ও নিষেধ থেকে দূরে থাকতাম। অতএব, তোমরা কি আজ আল্লাহর কোন শাস্তি আমাদের উপর থেকে প্রতিরোধ করতে পারবে? তখন নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা বলবে: আল্লাহ যদি আমাদেরকে হিদায়েতের তাওফীক দিতেন তাহলে আমরা তোমাদেরকে সেদিকেই পথ দেখাতাম। তখন আমরা সবাই তাঁর শাস্তি থেকে মুক্তি পেতাম। কিন্তু আমরা পথভ্রষ্ট হয়েছি ফলে তোমাদেরকেও পথভ্রষ্ট করেছি। শাস্তি বহনে অক্ষমতা অথবা ধৈর্য ধারণের ব্যাপারে আমরা ও তোমরা সবাই সমান। আমাদের পক্ষে শাস্তি থেকে পালিয়ে যাওয়ার কোন সুযোগই নেই।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
সবাই আল্লাহর নিকট উপস্থিত হবে;[১] যারা অহংকার করত দুর্বলেরা তাদেরকে বলবে, ‘আমরা তো তোমাদের অনুসারী ছিলাম; এখন তোমরা কি আল্লাহর শাস্তি হতে আমাদেরকে কিছুমাত্র রক্ষা করতে পারবে?’ তারা বলবে, ‘আল্লাহ আমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করলে আমরাও তোমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করতাম; এখন আমাদের ধৈর্যচ্যুত হওয়া অথবা ধৈর্যশীল হওয়া একই কথা; আমাদের কোন নিষ্কৃতি নেই।’[২] [১] অর্থাৎ, সকলেই হাশরের ময়দানে আল্লাহর সামনে উপস্থিত হবে, কেউ কোথাও লুকাতে পারবে না।[২] কতিপয় উলামা বলেন যে, জাহান্নামীরা পরস্পর বলাবলি করবে, 'জান্নাতীরা জান্নাত এ কারণে পেয়েছে যে, তারা আল্লাহর সমীপে কাকুতি-মিনতি ও রোদন করত, এসো আমরাও আল্লাহর সমীপে কান্নাকাটি করি।' অতএব তারা অত্যধিক কান্নাকাটি করবে, কিন্তু এর কোন ফল হবে না। অতঃপর বলবে, 'জান্নাতীরা জান্নাত ধৈর্যের কারণে পেয়েছে, চলো আমরাও ধৈর্য ধারণ করি।' অতএব তারা পরিপূর্ণ ধৈর্য প্রদর্শন করবে, কিন্তু তাতেও কোন লাভ হবে না। তখন তারা বলবে, 'আমরা ধৈর্য ধারণ করি অথবা কান্নাকাটি করি, নিষ্কৃতির কোন পথ নেই।' এই পারস্পরিক কথোপকথন জাহান্নামের মধ্যে হবে। কুরআন কারীমের মধ্যে এ বিষয়টি আরো কয়েক স্থানে উল্লেখ করা হয়েছে, যেমন; সূরা মু'মিন ৪০:৪৭-৪৮, সূরা আ'রাফ ৭:৩৮-৩৯, সূরা আহযাব ৩৩:৬৬-৬৮ নং আয়াত। এ ছাড়া তারা পরস্পর ঝগড়াও করবে এবং একে অপরকে পথভ্রষ্ট করার অপবাদ দিবে। ইমাম ইবনে কাসীর বলেন, ঝগড়া হাশরের ময়দানে হবে। মহান আল্লাহ এর বিস্তারিত বিবরণ সূরা সাবা' ৩৪:৩১-৩৩ নং আয়াতে উল্লেখ করেছেন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর তারা সবাই আল্লাহ্র কাছে প্রকাশিত হবে [ ১ ]। তখন দুর্বলেরা যারা অহংকার করত তাদেরকে বলবে, ‘আমরা তো তোমাদের অনুসারী ছিলাম; এখন তোমরা আল্লাহ্র শাস্তি হতে আমাদেরকে কিছুমাত্র রক্ষা করতে পারবে [ ২ ]?’ তারা বলবে, ‘আল্লাহ্ আমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করলে আমরাও তোমাদেরকে সৎপথে পরিচালিত করতাম। এখন আমরা ধৈর্যচ্যুত হই অথবা ধৈর্যশীল হই- উভয় অবস্থাই আমাদের জন্য সমান; আমাদের কোন পালানোর জায়গা নেই। [ ৩ ]’ [ ১ ] মূল শব্দ ‘বারাযা’। ‘বারাযা’ মানে সামনে উন্মুক্ত হওয়া। প্রকাশ হয়ে যাওয়া। [ কুরতুবী ] অর্থাৎ তারা কবর থেকে উন্মুক্ত হয়ে আল্লাহ্র সামনে হাযির হবে। [ বাগভী; ফাতহুল কাদীর ] প্রকৃতপক্ষে বান্দা তো সবসময় তার রবের সামনে উন্মুক্ত রয়েছে। কিন্তু তারা যেহেতু গোনাহ করার সময় মনে করে যে, আল্লাহ্র কাছে সেটা গোপন থাকবে, তাই আল্লাহ্ তাদের সে সন্দেহ অপনোদন করে দিলেন। [ ফাতহুল কাদীর ] কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে উন্মুক্ত হওয়ার অর্থ, কিয়ামতের দিন নেককার-বদকার সমস্ত সৃষ্টির এক প্রবল প্রতাপশালী আল্লাহ্র সামনে উপস্থিত হওয়াকে বুঝানো হয়েছে। তারা সেখানে এমন এক খোলা ভূমিতে একত্রিত হবে যেখানে কেউ নিজেকে গোপন করার কোন সুযোগ পাবে না। [ ইবন কাসীর ] এ জন্য অন্য আয়াতে বলা হয়েছেঃ “ মানুষ উন্মুক্তভাবে উপস্থিত হবে আল্লাহ্র সামনে যিনি এক, প্রবল প্রতাপশালী ।” [ সূরা ইবরাহীমঃ ৪৮ ] [ ২ ] এটি এমন সব লোকের জন্য সতর্কবাণী যারা দুনিয়ায় চোখ বন্ধ করে অন্যের পেছনে চলে অথবা নিজেদের দুর্বলতাকে প্রমাণ হিসেবে পেশ করে শক্তিশালী যালেমদের আনুগত্য করে, তাদের কথামত একমাত্র আল্লাহ্র ইবাদাত করা থেকে দূরে ছিল, তাওহীদ প্রতিষ্ঠা করেনি, তাদের জানানো হচ্ছে, আজ যারা তোমাদের নেতা হয়ে আছে আগামীকাল এদের কেউই তোমাদেরকে আল্লাহ্র আযাব থেকে সামান্যতম নিস্কৃতিও দিতে পারবে না। কাজেই আজই ভেবে নাও, তোমরা যাদের পেছনে ছুটে চলছো অথবা যাদের হুকুম মেনে চলছো তারা নিজেরাই কোথায় যাচ্ছে এবং তোমাদের কোথায় নিয়ে যাবে। [ ৩ ] আয়াতদৃষ্টে মনে হয়, এ ঝগড়াটি জাহান্নামে প্রবেশের পরে হবে। যেমন, কুরআনের অন্যান্য স্থানেও এ ধরনের বর্ণনা এসেছে। বলা হয়েছে, “ যখন যাদের অনুসরণ করা হয়েছে তারা, যারা অনুসরণ করেছে তাদের থেকে নিজেদের মুক্ত করে নেবে এবং তারা শাস্তি দেখতে পাবে । আর তাদের পারস্পরিক সমস্ত সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে, আর যারা অনুসরণ করেছিল তারা বলবে, ‘হায়! যদি একবার আমাদের ফিরে যাওয়ার সুযোগ হতো তবে আমরাও তাদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করতাম যেমন তারা আমাদের থেকে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে’। এভাবে আল্লাহ্ তাদের কার্যাবলী তাদেরকে দেখাবেন, তাদের জন্য আক্ষেপস্বরূপ। আর তারা কখনো আগুন থেকে বহির্গমণকারী নয়।” [ সূরা আল-বাকারাহঃ ১৬৬-১৬৭ ] আরও এসেছে, “ আর যখন তারা জাহান্নামে পরস্পর বিতর্কে লিপ্ত হবে তখন দুর্বলেরা যারা অহংকার করেছিল তাদেরকে বলবে, ‘আমরা তো তোমাদের অনুসরণ করেছিলাম সুতরাং তোমরা কি আমাদের থেকে জাহান্নামের আগুনের কিছু অংশ গ্রহণ করবে?’ অহংকারীরা বলবে, ‘নিশ্চয় আমরা সকলেই এতে রয়েছি, নিশ্চয় আল্লাহ্ বান্দাদের বিচার করে ফেলেছেন ।” [ সূরা গাফিরঃ ৪৭-৪৮ ] আরও বলেন, “ অবশেষে যখন সবাই তাতে একত্র হবে, তখন তাদের পরবর্তীরা পূর্ববর্তীদের সম্পর্কে বলবে, ‘হে আমাদের রব! এরাই আমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিল; কাজেই এদেরকে দ্বিগুণ আগুনের শাস্তি দিন ।’ আল্লাহ্ বলবেন, ‘প্রত্যেকের জন্য দ্বিগুণ রয়েছে, কিন্তু তোমরা জান না।’ আর তাদের পূর্ববর্তীরা পরবর্তীদেরকে বলবে, ‘আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই, কাজেই তোমরা যা অর্জন করেছিলে, তার জন্য শাস্তি ভোগ কর।” [ সূরা আল-আ’রাফঃ ৩৮-৩৯ ] আরও এসেছে, “ যেদিন তাদের মুখমণ্ডল আগুনে উলট-পালট করা হবে সেদিন তারা বলবে, ‘হায়! আমরা যদি আল্লাহকে মানতাম আর রাসূলকে মানতাম!’ তারা আরো বলবে, ‘হে আমাদের রব! আমরা আমাদের নেতা ও বড় লোকদের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল; ‘হে আমাদের রব! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি দিন এবং তাদেরকে দিন মহাঅভিসম্পাত ।” [ সূরা আল-আহযাবঃ ৬৬-৬৮ ] কিন্তু বিভিন্ন আয়াতদৃষ্টে মনে হয় যে, হাশরের ময়দানেও তারা ঝগড়া করবে, যেমন কুরআনের অন্যত্র এসেছে, “ হায়! আপনি যদি দেখতেন যালিমদেরকে যখন তাদের রবের সামনে দাঁড় করানো হবে তখন তারা পরস্পর বাদ-প্রতিবাদ করতে থাকবে, যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তারা ক্ষমতাদর্পীদেরকে বলবে, ‘তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মুমিন হতাম ।’ যারা ক্ষমতাদর্পী ছিল তারা, যাদেরকে দূর্বল মনে করা হত তাদেরকে বলবে, ‘তোমাদের কাছে সৎপথের দিশা আসার পর আমরা কি তোমাদেরকে তা থেকে নিবৃত্ত করেছিলাম? বরং তোমরাই ছিলে অপরাধী।’ যাদেরকে দুর্বল মনে করা হত তারা ক্ষমতাদর্পীদেরকে বলবে, ‘প্রকৃত পক্ষে তোমরাই তো দিনরাত চক্রান্তে লিপ্ত ছিলে, যখন তোমরা আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলে যেন আমরা আল্লাহ্র সাথে কুফরী করি এবং তাঁর জন্য সমকক্ষ ( শির্ক ) স্থাপন করি।’ আর যখন তারা শাস্তি দেখতে পাবে তখন তারা অনুতাপ গোপন রাখবে এবং যারা কুফরী করেছে আমরা তাদের গলায় শৃংখল পরাব। তাদেরকে তারা যা করত তারই প্রতিফল দেয়া হবে।” [ সূরা সাবাঃ ৩১-৩৩ ] এ ঝগড়াটি হবে হাশরের মাঠে। [ ইবন কাসীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
আল্লাহ তাআলা বলেন, পরিস্কার সমতল ভূমিতে ভাল ও মন্দ এবং পূণ্যবান ও পাপী সমস্ত মাখলুককে আল্লাহর সামনে একত্রিত করা হবে। এ সময় অধীনস্থ লোকেরা নৈতৃস্থানীয় লোকদেরকে, যারা তাদেরকে আল্লাহর ইবাদত এবং রাসূলের আনুগত্য হতে বিরত রাখতো, বলবেঃ “ আমরা তোমাদের অনুগত ছিলাম । আমাদেরকে তোমরা যা হুকুম করতে তা আমরা মেনে চলতাম। সুতরাং আমাদেরকে তোমরা তো বহু কিছু আশা দিয়ে রেখেছিলে, আজ কি তাহলে আল্লাহর আযাব আমাদের থেকে সরাতে পারবে?” তাদের এই প্রশ্নের উত্তরে নেতা ও সর্দারগণ বলবেঃ “ আমরা নিজেরাই তো সুপথ প্রাপ্ত ছিলাম না । কাজেই তোমাদেরকে আমরা পথ দেখাতাম কিরূপে? বস্তুতঃ আল্লাহর শাস্তির কথা আমাদের সবারই উপর বাস্তবায়িত হয়েছে। আমরা সবাই শাস্তিরযোগ্য হয়ে গেছি। অতএব, এখন আমরা ধৈর্য হারিয়ে ফেলি অথবা ধৈর্য ধারণ করি একই কথা। শাস্তি হতে রক্ষা পাওয়ার সমস্ত উপায় এখন হাতছাড়া হয়ে গেছে।”আবদুর রহমান ইবনু যায়েদ ইবনু আসলাম ( রঃ ) বলেন জাহান্নামবাসীরা একে অপরকে বলবেঃ “ দেখো, এই জান্নাতবাসীরা জান্নাত লাভ করেছে এই কারণে যে, তারা মহামহিমান্বিত আল্লাহর সামনে অত্যন্ত কান্নাকাটি করেছে । এবং কাতর প্রার্থনা করেছে। সুতরাং এসো, আমরাও তাঁর সামনে খুবই কান্নাকাটি করি এবং আকুল আবেদন জানাই।” সুতরাং তারা কান্নায় ফেটে পড়বে এবং করজোড়ে নিবেদন করবে। কিন্তু সবই নিষ্ফল হয়ে যাবে। তখন আবার তারা পরস্পর বলাবলি করবেঃ “ জান্নাতবাসীরা ধৈর্যধারণ করেছিল বলেই আজ তারা জান্নাত লাভ করেছে । অতএব, এসো, আমরাও আজ নীরবতা ও ধৈর্য অবলম্বন করি।” এভাবে তারা এমন ধৈর্য অবলম্বন করবে যা ইতিপূর্বে কখনো দেখা যায় নাই। কিন্তু এটাও বৃথা যাবে। তখন তারা বলবেঃ “ হায়, হায়! সবরও বিফলে গেল এবং অনুনয় বিনয়ও কোন কাজে আসলো ।” আমি বলিঃ প্রকাশ্য ব্যাপার তো এই যে, নেতা ও অনুগতদের এই কথাবার্তা হবে জাহান্নামে যাওয়ার পর। যেমন অন্যত্র আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “ যখন তারা জাহান্নামে ঝগড়া ও তর্কবিতর্কে লিপ্ত হবে, তখন দুর্বল লোকেরা অহংকারী লোকদের বলবেঃ “আমরা তো তোমাদের অনুগত ও হুকুমের বাধ্য ছিলাম, সুতরাং আজ তোমরা কি আমাদের উপর হতে জাহান্নামের শাস্তির কিছু অংশ সরাতে পারবে?” এ সময় অহংকারী লোকেরা বলবেঃ “আমরা সবাই তো জাহান্নামের মধ্যে রয়েছি! নিশ্চয় আল্লাহ বান্দাদের মধ্যে ফায়সালা করে দিয়েছেন । আল্লাহ তাআলা আরো বলেছেনঃ “ আল্লাহ বলবেনঃ তোমাদের পূর্বে যে জ্বিন ও মানব দলগত হয়েছে তাদের সাথে তোমরা অগ্নিতে প্রবেশ করো; যখনই কোন দল তাতে প্রবেশ করবে তখনই অপর দলকে তারা অভিসম্পাত করবে, এমনকি যখন সকলে তাতে একত্রিত হবে তখন তাদের পরবর্তীগণ পূর্ববর্তীদের সম্পর্কে বলবেঃ “হে আমাদের প্রতিপালক! এরাই আমাদেরকে বিভ্রান্ত করেছিল; সুতরাং এদেরকে দ্বিগুণ । অগ্নিশাস্তি দিন! আল্লাহ বলবেনঃ প্রত্যেকের জন্যে দ্বিগুণ রয়েছে, কিন্তু তোমরা জ্ঞাত নও।” তাদের পূর্ববর্তীগণ পরবর্তীদেরকে বলবেঃ “ আমাদের উপর তোমাদের কোন শ্রেষ্ঠত্ব নেই, সুতরাং তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের ফল ভোগ কর ।” আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ “ জাহান্নামীদের অধীনস্থরা বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আনুগত্য করেছিলাম আমাদের নেতাদের ও বড়দের, তারাই আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল; হে আমাদের প্রতিপালক! তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি প্রদান করুন এবং তাদের উপর বড় রকমের অভিসম্পাত নাযিল করুন ।”হাশরের ময়দানে তাদের ঝগড়া ও তর্ক বিতর্কের ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “ হায়! তুমি যদি দেখতে যালিমদেরকে যখন তাদের প্রতিপালকের সামনে দণ্ডায়মান করা হবে তখন তারা পরস্পর বাদ প্রতিবাদ করতে থাকবে, যাদেরকে দুর্বল করা হতো তারা ক্ষমতাদপীদেরকে বলবেঃ “তোমরা না থাকলে আমরা অবশ্যই মুমিন হতাম ।”যারা ক্ষমতাদপী ছিল তারা, যাদেরকে দুর্বল মনে করা হতো তাদেরকে বলবেঃ “ তোমাদের কাছে সৎপথের দিশা আসবার পর আমরা কি তোমাদেরকে তা থেকে নিবৃত্ত করেছিলাম? বস্তুতঃ তোমরাই তো ছিলে অপরাধী ।”যাদেরকে দুর্বল মনে করা হতো তারা ক্ষমতাদপীদেরকে বলবেঃ “ প্রকৃতপক্ষে তোমরাই তো দিবারাত্র চক্রান্তে লিপ্ত ছিলে, আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছিলে যেন আমরা আল্লাহকে অমান্য করি এবং তাঁর শরীক স্থাপন করি; যখন তারা শাস্তি প্রত্যক্ষ করবে তখন তারা অনুতাপ গোপন রাখবে এবং আমি কাফিরদের গলদেশে শৃংখল পরিয়ে দিবো; তাদেরকে তারা যা করতো তারই প্রতিফল দেয়া হবে ।”
সূরা ইবরাহীম আয়াত 21 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- স্মরণ কর, যখন আমি ফেরেশতাদেরকে বললামঃ আদমকে সেজদা কর, তখন ইবলীস ব্যতীত সবাই সেজদায় পড়ে
- তার গলদেশে খর্জুরের রশি নিয়ে।
- তিনি ভ্রূকুঞ্চিত করলেন এবং মুখ ফিরিয়ে নিলেন।
- তোমাদের উপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয়, তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক গোনাহ
- এরূপ ক্ষেত্রে সব অধিকার সত্য আল্লাহর। তারই পুরস্কার উত্তম এবং তারই প্রদত্ত প্রতিদান শ্রেষ্ঠ।
- অতঃপর আমি তাকে ও তার বাহিনীকে পাকড়াও করলাম, তৎপর আমি তাদেরকে সমু˦#2503;দ্র নিক্ষেপ করলাম। অতএব,
- তারা বললঃ পিতাঃ আমরা দৌড় প্রতিযোগিতা করতে গিয়েছিলাম এবং ইউসুফকে আসবাব-পত্রের কাছে রেখে গিয়েছিলাম। অতঃপর
- তোমরা কি পুংমৈথুনে লিপ্ত আছ, রাহাজানি করছ এবং নিজেদের মজলিসে গর্হিত কর্ম করছ? জওয়াবে তাঁর
- সন্তান বললঃ আমি তো আল্লাহর দাস। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং আমাকে নবী করেছেন।
- নিঃসন্দেহে তারাই আল্লাহর মসজিদ আবাদ করবে যারা ঈমান এনেছে আল্লাহর প্রতি ও শেষ দিনের প্রতি
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ইবরাহীম ডাউনলোড করুন:
সূরা Ibrahim mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Ibrahim শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers