কোরান সূরা ত্বা-হা আয়াত 21 তাফসীর
﴿قَالَ خُذْهَا وَلَا تَخَفْ ۖ سَنُعِيدُهَا سِيرَتَهَا الْأُولَىٰ﴾
[ طه: 21]
আল্লাহ বললেনঃ তুমি তাকে ধর এবং ভয় করো না, আমি এখনি একে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে দেব। [সূরা ত্বা-হা: 21]
Surah Ta-Ha in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah TaHa ayat 21
তিনি বললেন -- ''এটিকে ধর, আর ভয় করো না, এটিকে আমরা সঙ্গে সঙ্গে ফিরিয়ে নেব তার আগের অবস্থায়।
Tafsir Mokhtasar Bangla
২১. আল্লাহ তা‘আলা মূসা ( আলাইহিস-সালাম ) কে বললেন: আপনি লাঠি ধরুন। তা সাপে রূপান্তরিত হওয়াতে আপনি একটুও ভয় পাবেন না। আপনি তাকে ধরলেই আমি অচিরেই তাকে প্রথম অবস্থায় ফিরিয়ে দেবো।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
তিনি বললেন, ‘তুমি একে ধর এবং ভয় করো না, আমি একে এর পূর্ব রূপে ফিরিয়ে দেব। [১] [১] এটি মূসা ( আঃ )-কে মু'জিযা রূপে দান করা হয়েছিল, যা 'মূসার লাঠি' নামেই প্রসিদ্ধ।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আল্লাহ্ বললেন, ‘আপনি তাকে ধরুন, ভয় করবেন না, আমরা এটাকে তার আগের রূপে ফিরিয়ে দেব।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১৭-২১ নং আয়াতের তাফসীর: এখানে হযরত মূসার ( আঃ ) একটি খুবই বড় ওস্পষ্ট মু'জিযার বর্ণনা। দেয়া হচ্ছে, যা আল্লাহর ক্ষমতা ছাড়া অসম্ভম্ব এবং যা নবী ছাড়া অন্যের হাতেও সন্ত্র নয়। তূর পাহাড়ের উপর তাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছেঃ “ হে মূসা ( আঃ )! তোমার ডান হাতে ওটা কি? হযরত মূসার ( আঃ ) ভয়-ভীতি দূর করার জন্যেই তাঁকে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল । একথাও বলা হয়েছে যে, এটা ছিল আলোচনা মূলক প্রশ্ন। অর্থাৎ তোমার হাতে লাঠিই আছে। এটা যে কি তা তুমি ভালরূপেই জান। এখন এটা যা হতে যাচ্ছে তা তুমি দেখে নাও।এই প্রশ্নের জবাবে হযরত মূসা কালীমুল্লাহ ( আঃ ) বলেনঃ ‘এটা আমার লাঠি। এর উপর আমি ভর দিয়ে দাড়াই। অর্থাৎ চলার সময় এটা আমার একটা আশ্রয় স্থলরূপে কাজে লাগে। এর দ্বারা আমি আমার বকরীর জন্যে গাছ হতে পাতা ঝরিয়ে থাকি।' এরূপ লাঠিতে কিছু লোহা লাগানো হয়ে থাকে। এর ফলে গাছের পাতা ও ফল সহজে ঝরানো যায় এবং লাঠি ভেঙ্গেও যায় না। তিনি বললেন যে, এই লাঠি দ্বারা তিনি আরো অনেক উপকার লাভ করে থাকেন। এই উপকার সমূহের বর্ণনায় কতকগুলি লোক একথাও বলেছেন যে, ঐ লাঠিটিই রাত্রি কালে উজ্জল প্রদীপরূপে কাজ করতো। দিনের বেলায় যখন হযরত মূসা ( আঃ ) ঘুমিয়ে পড়তেন তখন ঐ লাঠিটিই তার বকরীগুলির রাখালী করতো। কোন জায়গায় ছায়া না থাকলে তিনি লাঠি মাটিতে গেড়ে দিতেন, তখন ওটা তাঁবুর মত তাঁকে ছায়া করতো, ইত্যাদি বহু উপকারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এটা স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হচ্ছে যে, এগুলো বানী ইসরাঈলের বানানো কাহিনী। তা না হলে ঐ লাঠিকে সাপ হতে দেখে। হযরত মূসা ( আঃ ) এতো ভয় পাবেন কেন? উনি তো লাঠিটির বিস্ময়কর কাজ পূর্ব হতেই দেখে আসছিলেন। কারো কারো উক্তি এই যে, প্রকৃতপক্ষে ওটা ছিল হযরত আদমের ( আঃ ) লাঠি। কেউ কেউ বলেন যে, লাঠিটি কিয়ামতের নিকটবর্তী সময়ে দাব্বাতুল আরদ রূপে প্রকাশিত হবে। বলা হয়েছে যে, ওটার নাম ছিল মাশা। এ সব উক্তির সত্যতা কতটুকু তা আল্লাহ তাআলাই জানেন। হযরত মূসাকে ( আঃ ) তাঁর লাঠিটির লাঠি হওয়ার কথা জানিয়ে দিয়ে তাকে সতর্ক করতঃ বলেনঃ “ ওটাকে যমীনের উপর নিক্ষেপ কর ।” যমীনে নিক্ষিপ্ত হওয়া মাত্র লাঠিটি বিরাট অজগর সাপে পরিণত হয় এবং এদিক ওদিক চলতে শুরু করে দেয়। ইতিপূর্বে এতো ভয়াবহ অজগর সাপ কেউ কখনোদেখে নাই। সাপটির অবস্থা তো এই ছিল যে, সামনে একটি গাছ পড়লেই তা সে খেয়ে ফেলে। পথে বড় পাথর পড়লে তা গ্রাস করে নেয়। এ অবস্থা দেখা মাত্রই হযরত মূসা ( আঃ ) পিছন ফিরে পালাতে শুরু করেন। শব্দ আসেঃ “ হে মূসা ( আঃ ) ! ওটা ধরে নাও ।” কিন্তু তার সাহস। হয় না। আবার আওয়াজ আসেঃ “ হে মূসা ( আঃ )! ভয় করো না, ধরে ফেলো ।” তখন তাঁর সংশয় থেকে যায়। তৃতীয়বার বলা হয়ঃ “ তুমি আমার নিরাপত্তার মধ্যে রয়েছে । এবার তিনি হাত বাড়িয়ে ওকে ধরে নেন।বর্ণিত আছে যে, আল্লাহ তাআলার নির্দেশের সাথে সাথেই হযরত মূসা ( আঃ ) লাঠিটি মাটিতে ফেলে দেন। তারপর তার দৃষ্টি এদিক ওদিক চলে যায়। অতঃপর দেখেন যে, লাঠির পরিবর্তে একটি ভয়াবহ অজগর সাপ রয়ে গেছে এবং তা এমনভাবে চলা ফেরা করছে যে, যেন কাউকে খুঁজছে। বড় বড় পাথরকে সে খেয়ে ফেলছে এবং আকাশচুম্বী বড় বড় গাছকেও গ্রাস করে নিচ্ছে। ওর চক্ষু দুটি আগুনের অঙ্গারের মত জ্বল জ্বল করছে। ওটা এতো ভয়াবহ অজগর যে, হযরত মূসা ( আঃ ) ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পিছন ফিরে পালিয়ে যেতে শুরু করেন। কিন্তু আল্লাহ তাআলার সাথে কথা বলার বিষয়টি স্মরণ হয়ে তিনি থমকে দাড়ান। ওখানেই শব্দ আছেঃ “ হে মূসা ( আঃ )! ফিরে গিয়ে যেখানে ছিলে সেখানেই এসে যাও ।" তিনি ফিরে আসেন, কিন্তু অত্যন্ত ভীত হয়ে পড়েছিলেন। আল্লাহ তাআলা নিদের্শ দেনঃ “ তুমি ওটা তোমার ডান হাত দ্বারা ধরে নাও এবং ভয় করো না । আমি ওকে ওর আসল অবস্থায় ফিরিয়ে দেবো।” ঐ সময় হযরত মূসা ( আঃ ) পশমের কম্বল গায়ে জড়িয়ে ছিলেন। ওটাকে তিনি ঐ কম্বলখানা হাতে জড়িয়ে ঐ ভয়াবহ সাপটিকে ধরার ইচ্ছা করেন। তখন ফেরেশতা তাঁকে বলেনঃ “ হে মূসা ( আঃ )! যদি আল্লাহ তাআলা সাপটিকে দংশন করার হুকুম দেন তবে কি এই কম্বল আপনাকে রক্ষা করতে পারবে?” তিনি জবাবে বলেনঃ “কখনো নয় । কিন্তু আমার দুর্বলতার কারণেই এ কাজ আমার দ্বারা হতে যাচ্ছিল। আমাকে খুবই দুর্বল করে সৃষ্টি করা হয়েছে।” অতঃপর তিনি কম্বল সরিয়ে দিয়ে সাহসিকতার সাথে সাপটির মাথা ধরে নেন। তৎক্ষণাৎ সাপটি আবার লাঠিতে পরিণত হয়ে যায়, যেমন পূর্বে ছিল। যখন তিনি পাহাড়ের মাটির উপর উঠছিলেন এবং তাঁর হাতে লাঠিটি ছিল,যার উপর তিনি ভর করে দাঁড়িয়েছিলেন ঐ অবস্থাতেই তিনি লাঠিটিকে পূর্বে দেখেছিলেন। ঐ অবস্থাতেই ওটা তার হাতে লাঠির আকারে বিদ্যমান ছিল।
সূরা ত্বা-হা আয়াত 21 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- এবং অন্তরে যা আছে, তা অর্জন করা হবে?
- আর সমস্ত মুমিনের অভিযানে বের হওয়া সঙ্গত নয়। তাই তাদের প্রত্যেক দলের একটি অংশ কেন
- তিনিই তোমাদের জন্য নক্ষত্রপুঞ্জ সৃজন করেছেন যাতে তোমরা স্থল ও জলের অন্ধকারে পথ প্রাপ্ত হও।
- এবং পঞ্চমবার বলে যে, যদি তার স্বামী সত্যবাদী হয় তবে তার ওপর আল্লাহর গযব নেমে
- আল্লাহই তোমাদের সৃষ্টি করেছেন, অতঃপর রিযিক দিয়েছেন, এরপর তোমাদের মৃত্যু দেবেন, এরপর তোমাদের জীবিত করবেন।
- আমি নভোমন্ডল, ভূমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সবকিছু ছয়দিনে সৃষ্টি করেছি এবং আমাকে কোনরূপ ক্লান্তি স্পর্শ
- বলুন, আমার পালনকর্তা পরওয়া করেন না যদি তোমরা তাঁকে না ডাক। তোমরা মিথ্যা বলেছ। অতএব
- নিশ্চয় এতে নিদর্শন আছে এবং তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
- নিশ্চয় যারা মুসলমান, যারা ইহুদী, ছাবেয়ী বা খ্রীষ্টান, তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে আল্লাহর
- আল্লাহর পরিবর্তে সে যার এবাদত করত, সেই তাকে ঈমান থেকে নিবৃত্ত করেছিল। নিশ্চয় সে কাফের
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ত্বা-হা ডাউনলোড করুন:
সূরা TaHa mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি TaHa শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers