কোরান সূরা হাজ্জ আয়াত 24 তাফসীর
﴿وَهُدُوا إِلَى الطَّيِّبِ مِنَ الْقَوْلِ وَهُدُوا إِلَىٰ صِرَاطِ الْحَمِيدِ﴾
[ الحج: 24]
তারা পথপ্রদর্শিত হয়েছিল সৎবাক্যের দিকে এবং পরিচালিত হয়েছিল প্রশংসিত আল্লাহর পথপানে। [সূরা হাজ্জ: 24]
Surah Al-Hajj in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Hajj ayat 24
আর তাদের পরিচালিত করা হয়েছে পবিত্র বাক্যালাপের প্রতি, আর তাদের চালিয়ে নেওয়া হয়েছে প্রশংসিত পথে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
২৪. আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে দুনিয়ার জীবনে পবিত্র কথামালার দিকে পথ দেখিয়েছেন। যেমন: এ কথার সাক্ষ্য দেয়া যে, আল্লাহ ছাড়া সত্য কোন মা’বূদ নেই এবং আল্লাহু মহান ও সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য ইত্যাদি বলা। উপরন্তু তিনি তাদেরকে ইসলামের প্রশংসিত পথও দেখিয়েছেন।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
তাদেরকে পবিত্র বাক্যের দিকে পথনির্দেশ করা হবে[১] এবং তারা পরিচালিত হবে পরম প্রশংসাভাজন আল্লাহর পথে। [২] [১] অর্থাৎ, জান্নাত এমন একটি স্থান; যেখানে কেবল পবিত্র ও সভ্য কথাই হবে, সেখানে অশ্লীল, পাপ ও অসভ্য কথা উচ্চারিত হবে না। [২] অর্থাৎ, তাদেরকে এমন জায়গার দিকে পথনির্দেশ করা হবে, যেখানে শুধু আল্লাহর প্রশংসা ও মহিমা-ধ্বনিই চতুর্দিকে ধ্বনিত হবে। আর যদি এর সম্পর্ক পৃথিবীর সাথে হয়, তাহলে এর অর্থ ( অতীতকালের ) হবে, অর্থাৎ দুনিয়ায় তাদেরকে কুরআন ও ইসলামের পথে পরিচালিত করা হয়েছিল।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর তাদেরকে পবিত্র বাক্যের অনুগামী করা হয়েছিল [ ১ ] এবং তারা পরিচালিত হয়েছিল পরম প্রশংসিত আল্লাহর পথে। [ ১ ] ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেনঃ এখানে কালেমা তাইয়্যেবা লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু বোঝানো হয়েছে। [ ফাতহুল কাদীর ] কোন কোন বর্ণনায় কালেমা লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ। [ কুরতুবী ] কারও কারও নিকট, আল-কুরআনের প্রতি তাদেরকে পথ দেখানো হবে। এজন্যই বলা হয় যে, এখানে দুনিয়ায় পথ দেখানো উদ্দেশ্য। সুতরাং দুনিয়াতে তাদেরকে কালেমায়ে শাহাদাত এবং কুরআন পড়ার প্রতি পথনির্দেশ করা হয়েছিল। [ কুরতুবী ] কোন কোন মুফাসসির বলেন, এখানে উত্তম বাণী বলে আখেরাতের কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ আখেরাতে তাদেরকে “ আলহামদুলিল্লাহ ।” বলার প্রতি হেদায়াত করা হবে। কেননা তারা জান্নাতে বলবে, “ যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহরই যিনি আমাদেরকে এ পথের হিদায়াত করেছেন । ” [ সূরা আল-আরাফ: ৪৩ ] “ আর তারা বলবে, "প্ৰশংসা আল্লাহর, যিনি আমাদের দুঃখ-দুৰ্দশা দূরীভূত করেছেন” । [ সূরা ফাতির: ৩৪ ] সুতরাং জান্নাতে কোন খারাপ কথা ও মিথ্যা বা অসার শোনা যাবে না। তারা যাই বলবে তা-ই ভাল কথা। আর তারা জান্নাতে আল্লাহর পথেই চলবে, কারণ সেখানে আল্লাহর নির্দেশের বিরোধী কোন কিছু থাকবে না। কারও কারও মতে, আয়াতে উত্তম কথা বলে সে সমস্ত কথা বোঝানো হয়েছে যা আল্লাহর পক্ষ থেকে তাদের কাছে উত্তম সুসংবাদ আকারে প্রদান করা হয়ে থাকে। [ কুরতুবী ] আর প্রশংসিতের পথে বলে এমন স্থানের কথা বলা হয়েছে যেখানে তারা তাদের রাবের প্রশংসা করবে। কারণ তিনি তাদের প্রতি দয়া করেছেন, নেয়ামত দিয়েছেন। অর্থাৎ জান্নাত। যেমন হাদীসে এসেছে, “ তাদের প্রতি তাসবীহ ও তাহমীদ পাঠ করার ইলহাম হবে যেমন দুনিয়াতে কেউ শ্বাস-প্ৰশ্বাস নিয়ে থাকে । ” [ মুসনাদে আহমাদ ৩/৩৮৪ ] অপর কারও মতে, এখানে দুনিয়াতে সিরাতুল মুস্তাকীম প্রাপ্তির কথা বোঝানো হয়েছে। [ ইবন কাসীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
২৩-২৪ নং আয়াতের তাফসীর: উপরে জাহান্নামীদের এবং তাদের শাস্তি, তাদের পায়ের শৃংখল, হাতের কড়া, তাদের আগুনে জ্বলে যাওয়া এবং তাদের আগুনের পোষাক হওয়া ইত্যাদি বর্ণনা করার পর আল্লাহ তাআলা এখন জান্নাতের তথাকার নিয়ামতরাজি এবং ওর অধিবাসীদের অবস্থার বর্ণনা দিচ্ছেন। আমরা তাঁর অনুগ্রহ ও দয়া প্রার্থনা করছি। তিনি বলেনঃ যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম করে, তিনি তাদেরকে জান্নাতে প্রবিষ্ট করবেন, যার প্রাসাদ ও বাগ-বাগিচার চতুর্দিকে পানির নহর প্রবাহিত রয়েছে। তারা যেদিকে চাইবেসে দিকেই ওকে ফিরাতে পারবে। সেখানে তাদেরকে অলংকৃত করা হবে স্বর্ণ কংকন ও মনি মুক্তা দ্বারা।নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ মু'মিনের অংলকার ঐ পর্যন্ত পৌঁছবে যে পর্যন্ত তার অযুর পানি পৌঁছে ।” ( এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছে ) হযরত কা'ব আহ্বার ( রঃ ) বলেনঃ “ বেহেশতে একজন ফেরেশতা রয়েছেন যার নামও আমার জানা আছে, তিনি জন্মের পর হতেই মুমিনদের জন্যে অলংকার তৈরী করতে রয়েছেন এবং কিয়ামত পর্যন্ত এ কাজেই লেগে থাকবেন । যদি ঐ কংকন গুলির মধ্যে একটি কংকনও দুনিয়ায় প্রকাশ পায় তবে সূর্যের কিরণ এমনভাবে হারিয়ে যাবে যেমন ভাবে ওর উদয়ের পর চন্দ্রের কিরণ হারিয়ে যায়।উপরে জাহান্নামীদের পোশাকের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এখানে জান্নাতীদের পোষাকের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ সেথায় তাদের পোষাক পরিচ্ছদ হবে রেশমের। যেমন অন্য জায়গায় তিনি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তাদের আবরণ হবে সূক্ষ্ম সবুজ রেশম ও স্কুল রেশম, তারা অলংকৃত হবে রৌপ্য নির্মিত কংকনে, আর তাদের প্রতিপালক তাদেরকে পান করাবেন বিশুদ্ধ পানীয় । অবশ্য, এটাই তোমাদের পুরস্কার এবং তোমাদের কর্মপ্রচেষ্টা স্বীকৃত।” ( ৭৬:২১-২২ )সহীহ্ হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমরা রেশম পরিধান করো না । যে ব্যক্তি দুনিয়ায় রেশম ( এর পোশাক ) পরিধান করবে, সে আখেরাতে এর থেকে বঞ্চিত হবে।”হযরত আবদুল্লাহ ইবনু যুবাইর ( রাঃ ) বলেনঃ “ যে ব্যক্তি ঐ দিন ( আখেরাতে ) রেশমী পোষাক থেকে বঞ্চিত থাকবে সে জান্নাতে যাবে না । কেননা, জান্নাতীদের পোষাক তো এটাই হবে।”মহান আল্লাহ বলেনঃ তাদেরকে পবিত্র বাক্যের অনুগামী করা হয়েছিল। যেমন অন্যত্র তিনি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে তাদেরকে প্রবিষ্ট করা হবে বেহেশতে যার নিম্নদেশ দিয়ে নদী প্রবাহিত থাকবে, তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে তারা তথায় চিরকাল অবস্থান করবে এবং সেখানে তাদের অভিবাদন হবে ‘সালাম ।” ( ১৪:২৩ ) আর এক জায়গায় রয়েছেঃ “ প্রত্যেক দরজা দিয়ে ফেরেশতারা তাদের কাছে প্রবেশ করবে এবং সালাম করে বলবেঃ তোমাদের ধৈর্যের পরিণাম কতই না উত্তম হলো!” অন্য এক জায়গায় আছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “সেথায় তারা শুনবে না কোন অসার অথবা পাপ বাক্য ‘সালাম’ আর সালাম ব্যতীত ।” ( ৫৬:২৫-২৬ )সুতরাং তাদেরকে এমন জায়গা দেয়া হলো যেখানে শুধু মনোমুগ্ধকর শব্দ ও সালাম’ আর ‘সালাম’ই তারা শুনতে পাবে। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ তাদেরকে সেখানে অভ্যর্থনা করা হবে অভিবাদন ও সালাম সহকারে।" ( ২৫৪ ৭৫ ) অপরপক্ষে জাহান্নামীদেরকে সদা ধমক ও শাসন গর্জন করা হবে এবং বলা হবেঃ “ আস্বাদ কর দহন যন্ত্রণা ।'মহান আল্লাহ বলেনঃ তাদেরকে পবিত্র বাক্যের অনুগামী করা হয়েছিল এবং তারা পরিচালিত হয়েছিল পরম প্রশংসাভাজন আল্লাহর পথে ।' তারা অত্যন্ত আনন্দিত হবে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাদের মুখ দিয়ে বের হবে আল্লার প্রশংসা। কেননা তথায় তারা অগণিত ও অতুলনীয় নিয়ামত লাভ করবে। সহীহ হাদীসে রয়েছেঃ “ যেমন বিনা ইচ্ছায় ও বিনা কষ্টে শ্বাস-প্রশ্বাস আসে ও যায়, অনুরূপভাবে জান্নাতীদের প্রতি তাসবীহ্ ও প্রশংসার ইলহাম হবে । কোন কোন তাফসীরকারের উক্তি এই যে, ( আরবী ) দ্বারা কুরআন কারীমকে ও লাইলাহা ইল্লাল্লাহ'কে বুঝানো হয়েছে এবং হাদীসের অন্যান্য যিকেও বুঝানো হয়েছে। আর ( আরবী ) দ্বারা উদ্দেশ্য হলো ইসলামী পথ। এই তাফসীরও প্রথম তাফসীরের বিপরীত নয়।
সূরা হাজ্জ আয়াত 24 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- অথচ পরকালের জীবন উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী।
- তুমি কি তাদেরকে দেখনি, যারা কিতাবের কিছু অংশ প্রাপ্ত হয়েছে, যারা মান্য করে প্রতিমা ও
- তিনি ক্ষমাশীল, প্রেমময়;
- সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
- কিন্তু তারা তাঁকে মিথ্যাবাদী বলল; অতঃপর তারা ভূমিকম্প দ্বারা আক্রান্ত হল এবং নিজেদের গৃহে উপুড়
- এবং কোন সহৃদয় বন্ধু ও নেই।
- আমিই চুড়ান্ত মালিকানার অধিকারী হব পৃথিবীর এবং তার উপর যারা আছে তাদের এবং আমারই কাছে
- এবং যাদের ধন-সম্পদে নির্ধারিত হক আছে
- বলে দাও-হে মানবকুল, তোমরা যদি আমার দ্বীনের ব্যাপারে সন্দিহান হয়ে থাক, তবে (জেনো) আমি তাদের
- আপনি বলে দিনঃ আমার প্রতিপালক আমাকে সরল পথ প্রদর্শন করেছেন একাগ্রচিত্ত ইব্রাহীমের বিশুদ্ধ ধর্ম। সে
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হাজ্জ ডাউনলোড করুন:
সূরা Hajj mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Hajj শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers