কোরান সূরা নিসা আয়াত 24 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Nisa ayat 24 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা নিসা আয়াত 24 আরবি পাঠে(Nisa).
  
   

﴿۞ وَالْمُحْصَنَاتُ مِنَ النِّسَاءِ إِلَّا مَا مَلَكَتْ أَيْمَانُكُمْ ۖ كِتَابَ اللَّهِ عَلَيْكُمْ ۚ وَأُحِلَّ لَكُم مَّا وَرَاءَ ذَٰلِكُمْ أَن تَبْتَغُوا بِأَمْوَالِكُم مُّحْصِنِينَ غَيْرَ مُسَافِحِينَ ۚ فَمَا اسْتَمْتَعْتُم بِهِ مِنْهُنَّ فَآتُوهُنَّ أُجُورَهُنَّ فَرِيضَةً ۚ وَلَا جُنَاحَ عَلَيْكُمْ فِيمَا تَرَاضَيْتُم بِهِ مِن بَعْدِ الْفَرِيضَةِ ۚ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيمًا حَكِيمًا﴾
[ النساء: 24]

এবং নারীদের মধ্যে তাদের ছাড়া সকল সধবা স্ত্রীলোক তোমাদের জন্যে নিষিদ্ধ; তোমাদের দক্ষিণ হস্ত যাদের মালিক হয়ে যায়-এটা তোমাদের জন্য আল্লাহর হুকুম। এদেরকে ছাড়া তোমাদের জন্যে সব নারী হালাল করা হয়েছে, শর্ত এই যে, তোমরা তাদেরকে স্বীয় অর্থের বিনিময়ে তলব করবে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করার জন্য-ব্যভিচারের জন্য নয়। অনন্তর তাদের মধ্যে যাকে তোমরা ভোগ করবে, তাকে তার নির্ধারিত হক দান কর। তোমাদের কোন গোনাহ হবে না যদি নির্ধারণের পর তোমরা পরস্পরে সম্মত হও। নিশ্চয় আল্লাহ সুবিজ্ঞ, রহস্যবিদ। [সূরা নিসা: 24]

Surah An-Nisa in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Nisa ayat 24


আর স্ত্রীলোকদের মধ্যের সধবা যারা, তবে তোমাদের ডান হাত যাদের ধরে রেখেছে তাদের ব্যতীত, তোমাদের প্রতি আল্লাহ্‌র বিধান। আর এদের বাইরে তোমাদের জন্য বৈধ করা গেল যদি তোমরা চাও তোমাদের ধনদৌলত দিয়ে বিবাহ -বন্ধনের মাধ্যম, ব্যভিচারের জন্য নয়। অতএব তাদের মধ্যের যাদের থেকে তোমরা সুফল পেতে চাও তাদের নির্ধারিত মহরানা তাদের প্রদান করো। আর তোমাদের জন্য দূষণীয় হবে না নির্ধারিত হবার পরে তোমরা যাতে পরস্পর সম্মত হও। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, পরমজ্ঞানী।


Tafsir Mokhtasar Bangla


২৪. তেমনিভাবে তিনি তোমাদের উপর বিবাহিতা মহিলাদেরকে বিবাহ করা হারাম করে দিয়েছেন। তবে আল্লাহর পথে জিহাদ করতে গিয়ে বন্দী করার মাধ্যমে তোমরা যাদের মালিক হয়েছো তাদের কথা অবশ্যই ভিন্ন। একটি ঋতু ্̄রাবের মাধ্যমে তাদের জরায়ুগুলো খালি প্রমাণিত হওয়ার পর তাদের সাথে সহবাস করা তোমাদের জন্য হালাল। উক্ত বিধানটি পালন করা আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর একেবারেই ফরয করে দিয়েছেন। আর এ ছাড়া অন্যান্য মেয়েদেরকে তিনি তোমাদের জন্য হালাল করে দিয়েছেন। তোমরা ব্যভিচারের ইচ্ছা ছাড়া হালালভাবে নিজেদের সম্পদের মাধ্যমে তাদেরকে বিবাহ করে নিজেদের সাধুতা ও পবিত্রতা রক্ষা করতে পারো। তোমরা বিবাহের মাধ্যমে তাদের কাউকে সম্ভোগ করলে তাদেরকে তাদের মোহরানা দিয়ে দিবে। যা আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের উপর একান্তভাবে ফরয করে দিয়েছেন। তোমরা বাধ্যতামূলক মোহরানাটুকু নির্ধারণের পর পরস্পরের সম্মতিতে তাতে কম-বেশি করাতে তোমাদের কোন পাপ নেই। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর সৃষ্টি সম্পর্কে সম্যক অবগত। তাদের কোন কিছুই তাঁর নিকট লুক্কায়িত নয়। তিনি তাঁর শরীয়ত নির্ধারণ ও পরিচালনায় অত্যন্ত প্রজ্ঞাময়।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী[১] ব্যতীত সকল সধবা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তোমাদের জন্য এ হল আল্লাহর বিধান। উল্লিখিত নারীগণ ব্যতীত আর সকলকে বিবাহ করা তোমাদের জন্য বৈধ করা হল; এই শর্তে যে, তোমরা তাদেরকে নিজ সম্পদের বিনিময়ে বিবাহের মাধ্যমে গ্রহণ করবে, অবৈধ যৌন-সম্পর্কের মাধ্যমে নয়।[২] অতঃপর তোমরা তাদের মধ্যে যাদের ( মাধ্যমে দাম্পত্যসুখ ) উপভোগ করবে, তাদেরকে নির্ধারিত মোহর অর্পণ কর।[৩] মোহর নির্ধারণের পর কোন বিষয়ে পরস্পর রাযী হলে তাতে তোমাদের কোন দোষ হবে না।[৪] নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। [১] কুরআন কারীমে إِحْصَانٌ শব্দটি চারটি অর্থে ব্যবহার হয়েছে। যথা, ( ক ) বিবাহ ( খ ) স্বাধীনতা ( গ ) সতীত্ব এবং ( ঘ ) ইসলাম। এই দিক দিয়ে مُحْصَنَات এর হবে চারটি অর্থঃ ( ক ) বিবাহিতা মহিলাগণ ( খ ) স্বাধীন মহিলাগণ ( গ ) সতী-সাধ্বী মহিলাগণ এবং ( ঘ ) মুসলিম মহিলাগণ। এখানে প্রথম অর্থকে বুঝানো হয়েছে। আয়াতের শানে নুযুল ( অবতীর্ণ হওয়ার কারণ ) সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, যখন কোন কোন যুদ্ধে কাফেরদের মহিলারা মুসলিমদের হাতে বন্দিনী হল, তখন ঐ সকল মহিলারা বিবাহিতা হওয়ার কারণে মুসলিমরা তাদের সাথে সহবাস করার ব্যাপারে ঘৃণা অনুভব করল। অতঃপর নবী করীম ( সাঃ )-কে সাহাবায়ে কেরাম ( রাঃ )-গণ এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে এই আয়াত অবতীর্ণ হল। ( ইবনে কাসীর ) এ থেকে জানা গেল যে, যুদ্ধলব্ধ কাফের মহিলারা মুসলিমদের হাতে বন্দিনী হয়ে এলে, তাদের সাথে সহবাস করা জায়েয, যদিও তারা বিবাহিতা হয়। তবে গর্ভমুক্ত কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া জরুরী। অর্থাৎ, এক মাসিক দেখার পর অথবা গর্ভবতী হলে প্রসবের পর ( নিফাস বন্ধ হলে তবেই ) তার সাথে সহবাস করা যাবে। ক্রীতদাসীদের মাসআলাঃ কুরআন অবতীর্ণ হওয়ার সময় দাস-দাসীর রাখার প্রথা ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। কুরআন এ প্রথাকে উচ্ছেদ তো করেনি, তবে তাদের ব্যাপারে এমন কৌশল ও যুক্তিময় পথ অবলম্বন করা হয়, যাতে তারা খুব বেশী বেশী সুযোগ-সুবিধা অর্জন করতে পারে এবং দাস-প্রথার প্রবণতা হ্রাস পায়। দু'টি মাধ্যমে এই প্রথা প্রচলিত ছিল। প্রথমটি হল, কোন কোন গোত্র এমন ছিল যাদের পুরুষ ও নারীকে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ক্রয়-বিক্রয় করা হত। এই ক্রীত নর-নারীকেই ক্রীতদাস ও দাসী বলা হয়। মনিবের অধিকার হত তাদের দ্বারা সর্ব প্রকার ফয়দা ও উপকার অর্জন করা। আর দ্বিতীয়টি হল, যুদ্ধে বন্দী হওয়ার মাধ্যমে। কাফেরদের বন্দী মহিলাদেরকে মুসলিম যোদ্ধাদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হত এবং তারা দাসী হয়ে তাঁদের সাথে জীবন-যাপন করত। বন্দিনীদের জন্য এটাই ছিল উত্তম ব্যবস্থা। কারণ, তাদেরকে যদি সমাজে স্বাধীনভাবে ছেড়ে দেওয়া হত, তাহলে তাদের মাধ্যমে ফিৎনা-ফাসাদ সৃষ্টি হত। ( বিস্তারিত জানার জন্য দ্রষ্টব্যঃ মৌলানা সাঈদ আহমদ আকবার আবাদী রচিত বই 'আররিক্কু ফীল ইসলাম' (ইসলামে দাসত্বের তাৎপর্য ) মোট কথা হল, ( স্বামীর বিবাহ বন্ধনে থাকা অবস্থায় ) সধবা মুসলিম মহিলাদেরকে বিবাহ করা যেমন হারাম, তেমনি সধবা কাফের মহিলারাদেরকেও বিবাহ করা হারাম, তবে যদি তারা মুসলিমদের অধিকারে এসে যায়, তাহলে তারা গর্ভমুক্ত কি না এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁদের জন্য ( যৌন-সংসর্গ ) হালাল হবে। [২] অর্থাৎ, কুরআন ও হাদীসে যে মহিলাদের সাথে বিবাহ করা হারাম বলে ঘোষিত হয়েছে, তাদেরকে ছাড়া অন্য মহিলাদেরকে বিবাহ করা জায়েয চারটি শর্তের ভিত্তিতে। ( ক ) তলব করতে হবে। অর্থাৎ, উভয় পক্ষের মধ্যে ইজাব ও কবুল ( প্রস্তাব ও গ্রহণ ) হতে হবে ( এক পক্ষ প্রস্তাব দিবে এবং অপর পক্ষ কবুল করবে )( খ ) দেনমোহর আদায় করতে হবে। ( গ ) তাকে সব সময়ের জন্য বিবাহ বন্ধনে রাখা উদ্দেশ্য হবে, কেবল কাম-প্রবৃত্তি চরিতার্থ করাই লক্ষ্য হবে না। ( যেমন, ব্যভিচারে অথবা শীয়া সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত মুতআ' তথা কেবল যৌনক্ষুধা নিবারণের লক্ষ্যে কয়েক দিন বা কয়েক ঘণ্টার জন্য সাময়িকভাবে চুক্তিবিবাহ হয়ে থাকে )( ঘ ) গোপন প্রেমের মাধ্যমে যেন না হয়, বরং সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিবাহ হবে। এই চারটি শর্ত আলোচ্য আয়াত থেকেই সংগৃহীত। এ থেকে যেমন প্রমাণিত হয় যে, শীয়া সম্প্রদায়ের প্রচলিত মুতআ' বিবাহ বাতিল, অনুরূপ প্রচলিত 'হালালা' ( রীতিমত তিন তালাকের পর অন্য এক পুরুষের সাথে বিবাহের মাধ্যমে স্বামীর জন্য স্ত্রীকে হালাল করার ) পদ্ধতিও না-জায়েয। কারণ, এতেও মহিলাকে সব সময়ের জন্য বিবাহ বন্ধনে রাখা উদ্দেশ্য হয় না, বরং প্রচলিত নিয়মানুযায়ী এই বিবাহ কেবল এক রাতের জন্য হয়। [৩] এখানে এ ব্যাপারে তাকীদ করা হচ্ছে যে, যে মহিলাদের সাথে তোমরা বৈধ বিবাহের মাধ্যমে যৌনসুখ ও স্বাদ গ্রহণ কর, তাদেরকে তাদের নির্দিষ্ট মোহর অবশ্যই আদায় করে দাও। [৪] এখানে পরস্পরের সম্মতিক্রমে মোহরের মধ্যে কম-বেশী করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। বিঃ দ্রষ্টব্যঃ استمتاع 'ইস্তিমতা' শব্দ থেকে শীয়া সম্প্রদায় মুতআ' বিবাহের বৈধতা সাব্যস্ত করে। অথচ এর অর্থ হল, বিবাহের পর সহবাসের মাধ্যমে যৌনসুখ উপভোগ করা; যেমন এ কথা পূর্বেও বলা হয়েছে। অবশ্য মুতআ' বিবাহ ইসলামের প্রাথমিক পর্যায়ে বৈধ ছিল, কিন্তু তার বৈধতা এই আয়াতের ভিত্তিতে ছিল না, বরং সেই প্রথা অনুযায়ী ছিল, যা ইসলামের পূর্বে থেকেই চলে আসছিল। অতঃপর নবী করীম ( সাঃ ) একেবারে পরিষ্কার ভাষায় কিয়ামত পর্যন্ত তা হারাম ঘোষণা করে দিলেন।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আর নারীদের মধ্যে তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসী [] ছাড়া সব সধবা তোমাদের জন্য নিষিদ্ধ, তোমাদের জন্য এগুলো আল্লাহর বিধান। উল্লেখিত নারীগণ ছাড়া অন্য নারীকে অর্থব্যয়ে বিয়ে করতে চাওয়া তোমাদের জন্য বৈধ করা হল, অবৈধ যৌন সম্পর্কের জন্য নয়। তাদের মধ্যে যাদেরকে তোমরা সম্ভোগ করেছ তাদের নির্ধারিত মাহ্‌র অর্পণ করবে []। মাহ্‌র নির্ধারণের পর কোন বিষয়ে পরস্পর রাযী হলে তাতে তোমাদের কোন দোষ নেই []। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। [] অধিকারভুক্ত দাসী বলতে ঐ সমস্ত নারীদেরকে বুঝায়, যারা কাফের ছিল। মুসলিমগণ যুদ্ধে তাদের পুরুষদের পরাজিত করে তাদেরকে নিজেদের অধিকারে নিয়ে আসে, তখন তাদেরকে মুসলিমদের জন্য বিয়ে ছাড়াই হালাল করা হয়েছে। আবু সাঈদ খুদরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেনঃ হুনাইনের যুদ্ধের দিন রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদল যোদ্ধাকে ‘আওতাস’-এর দিকে পাঠান। তারা কাফেরদের উপর জয়ী হয়ে তাদের নারীদেরকে নিয়ে আসে। কিন্তু এরা কাফের নারী হওয়ার কারণে মুসলিমগণ তাদেরকে হালাল মনে করছিল না। তখন এই আয়াত নাযিল হয়ে জানিয়ে দেয়া হয় যে, এরা তাদের জন্য হালাল, তবে শর্ত হলো এদের ইদ্দত শেষ হতে হবে। [ মুসলিমঃ ১৪৫৬ ] যুদ্ধ-বন্দিনী দাসীদের সাথে সংগম করার ব্যাপারে কিছু নিয়মনীতি রয়েছে- ( এক ) অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, এটা শুধুমাত্র মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে যুদ্ধ হলেই হতে পারে। কোন কারণে যদি মুসলিমদের মধ্যে পরস্পর যুদ্ধ হয়, কিংবা মুসলিম দুটি রাষ্ট্রে যুদ্ধের সূচনা হয়, অথবা মুসলিমদের কোন জাতিগত বা ভাষাগত বা রাজনৈতিক দাঙ্গা হয় সেখানে যে যুদ্ধ হবে সে যুদ্ধের কারণে কাউকে অধিকারভুক্ত দাস-দাসী বানানোর অধিকার ইসলাম কাউকে দেয়নি। যদি কেউ এটা করতে চায় তবে সেটা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ ও ব্যভিচার। এ ধরনের লোকদেরকে ব্যভিচারের শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। ( দুই ) যে সমস্ত মেয়ে বন্দী হয় তাদেরকে ইসলামী আইন অনুযায়ী সরকারের হাতে সোপর্দ করে দিতে হবে। সরকার চাইলে তাদেরকে বিনা শর্তে মুক্ত করে দিতে পারে, মুক্তিপণ গ্রহণ করতে পারে, শক্রর হাতে যে সমস্ত মুসলিম বন্দী রয়েছে তাদের সাথে এদের বিনিময়ও করতে পারে এবং চাইলে তাদেরকে সৈন্যদের মাঝে বন্টনও করে দিতে পারে। তাই বন্দী করার সাথে সাথেই কোন সৈনিক তাদের সাথে সংগম করার অধিকার লাভ করে না। তাছাড়া কোন ক্রমেই যুদ্ধাবস্থায় এ অধিকার কারও থাকবে না। যদি কেউ যুদ্ধাবস্থায় এ কাজ করে তবে তাকে শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে। ( তিন ) মেয়েটি গর্ভবতী নয় এতটুকু নিশ্চিত হওয়ার জন্য কমপক্ষে এক মাসিক ঋতুশ্রাব পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। গর্ভবতী হলে সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পূর্বে সংগম করা যাবে না। ( চার ) যে মেয়েকে যার ভাগে দেয়া হবে সে-ই শুধু তাকে ভোগ করতে পারবে: অন্য কেউ নয়। ( পাঁচ ) সন্তানের জননী হওয়ার পর এ মেয়েকে আর বিক্রয় করা যাবে না। মালিকের মৃত্যুর পরপরই সে স্বাধীন হয়ে যাবে। ( ছয় ) মালিক ইচ্ছে করলে তাকে অন্য কারো কাছে বিয়ে দিতে পারবে। তখন তার খেদমত মালিকের হবে কিন্তু মালিক তার সাথে যৌন সম্পর্ক রাখতে পারবে না। ( সাত ) কোন সেনাপতি যদি নিছক সাময়িকভাবে তার সৈন্যদেরকে বন্দিনী মেয়েদের মাধ্যমে নিজেদের যৌন তৃষ্ণা মেটানোর অনুমতি দেয়, তবে তা হবে সম্পূর্ণ অবৈধ। কেননা, এ কাজ ও ব্যভিচারের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। [] অধিকাংশ তাফসীরকারের মতে, এ আয়াতে মহিলাদের মধ্যে যাদের সাথে সম্ভোগ হয়েছে তাদেরকে মাহ্‌র পরিশোধ করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ হিসেবে এ আয়াত পূর্বোক্ত ২১ নং আয়াতের মতই। [ আদওয়াউল বায়ান ] কোন কোন মুফাসসিরের মতে, এখানে মুত’আ বিবাহের কথা বলা হয়েছে। ইসলামের প্রাথমিক যুগে মুত’আ ও সাময়িক বিয়ের অনুমতি ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে অসংখ্য সহীহ হাদীসে এটাকে হারাম ঘোষণা করা হয়। যেমন এক হাদীসে এসেছে, আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম খায়বার যুদ্ধের কালে মুত’আ বিয়ে ও গৃহপালিত গাধার গোস্ত হারাম করেছেন। [ বুখারী ৫১১৫, ৫৫২৩; আরও দেখুনবুখারীঃ ৪২১৬, মুসলিমঃ ১৪০৬, ১৪০৭ ] কোন কোন বর্ণনায় এসেছে যে, এরপর মক্কা বিজয়ের বছর সেটাকে আবার বৈধ করা হয়েছিল। কিন্তু সহীহ হাদীসে এসেছে যে, মক্কা থেকে বের হওয়ার আগেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা দিয়েছিলেন যে, এ জাতীয় বিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত হারাম করে দেয়া হয়েছে। [ মুসলিম: ১৪০৬ ] এ হিসেবে মুত’আ বিবাহ প্রথমে খায়বারের যুদ্ধে হারাম করা হয়। এরপর মক্কা বিজয়ের সময় হালাল করা হয়, অথবা কোন কোন সাহাবী রাসূলের অগোচরেই না জানা অবস্থায় সেটা করেন। কিন্তু মক্কা বিজয়ের বছর আওতাসের যুদ্ধের সময় তিনদিন কোন কোন সাহাবী সেটা করার পড় সেটা চিরতরে কিয়ামত পর্যন্ত হারাম করে দেয়া হয়। [ যাদুল মা’আদ ] [] ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, মাহ্‌র নির্ধারণের পর কোন বিষয়ে পরস্পর রাযী হওয়ার অর্থ হচ্ছে, ধার্যকৃত পূর্ণ মাহ্‌র প্রদান করে স্ত্রীকে তার মাহরের ব্যাপারে পূর্ণ অধিকার প্রদান করা। [ তাবারী; আত-তাফসীরুস সহীহ ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


অর্থাৎ যেসব নারীর স্বামী রয়েছে তারাও তোমাদের জন্যে হারাম। তবে হ্যাঁ, কাফিরদের যেসব স্ত্রী যুদ্ধক্ষেত্রে বন্দিনী হয়ে তোমাদের অধিকারে আসবে, এক ঋতুকাল অতিক্রান্ত হবার পর তারা তোমাদের জন্যে বৈধ হবে। মুসনাদ-ইআহমাদে হযরত আবু সাঈদ খুদরী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেন, ‘আওতাসের যুদ্ধে কতগুলো সধবা স্ত্রীলোক বন্দিনী হয়ে আসে। আমরা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে তাদের সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করলে এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় এবং তাদের সাথে মিলিত হওয়াকে বৈধ করা হয়। জামেউত্ তিরমিযী, সুনান-ই-ইবনে মাজা, সহীহ মুসলিম প্রভৃতি হাদীস গ্রন্থেও এ হাদীসটি রয়েছে। তাবরানীর হাদীসে বর্ণিত আছে যে, এটা খাইবার যুদ্ধের ঘটনা।পূর্ববর্তী মনীষীদের একটি দল এ আয়াতের সাধারণতা হতে দলীল গ্রহণ করে বলেন যে, দাসীকে বিক্রি করে দেয়াই হচ্ছে তার স্বামীর পক্ষ হতে তালাক প্রাপ্তি। হযরত ইবরাহীম ( রঃ )-কে এ মাসআলাটি জিজ্ঞেস করা হলে তিনি হযরত আবদুল্লাহ ( রাঃ )-এর ফতওয়াটিই বর্ণনা করতঃ এ আয়াতটি পাঠ করেন।অন্য সনদ দ্বারা বর্ণিত আছে যে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) বলেছেন, “ যখন কোন সধবা নারী বিক্রীতা হয় তখন তার দেহের বেশী হকদার হচ্ছে তার মনিব ।' হযরত উবাই ইবনে কা'ব ( রাঃ ) হযরত জাবির ইবনে আবদুল্লাহ ( রাঃ ) এবং হযরত ইবনে আব্বাসেরও ( রাঃ ) ফতওয়া এই যে, তার বিক্রি হওয়াই হচ্ছে তালাক প্রাপ্তি। তাফসীর-ই-ইবনে জারীরের মধ্যে রয়েছে যে, দাসীর তালাক ছয় প্রকারের। তাকে বিক্রি করাও তালাক, আযাদ করাও তালাক, দান করাও তালাক, অব্যাহতি দেয়াও তালাক এবং তার স্বামীর তালাক দেয়াও তালাক।' ( এখানে ৫ প্রকারের উদাহরণ দেয়া হয়েছে। ৬ষ্ঠ প্রকারটি মূল তাফসীরে নেই ) হযরত ইবনুল মুসাইয়াব ( রঃ ) বলেন যে, সধবা নারীদের সাথে বিয়ে হারাম। কিন্তু দাসীরা এর ব্যতিক্রম, তাদের বিক্রি হওয়াই তালাক।।হযরত মুহাম্মার ( রঃ ) এবং হযরত হাসান বসরীও ( রঃ ) এটাই বলেছেন। এ গুরুজনদের তো উক্তি এই, কিন্তু জমহ্র তাদের বিরোধীমত পোষণ করেন। তারা বলেন যে, দাসীদের বিক্রি তাদের জন্যে তালাক নয়। কেননা, ক্রেতা হচ্ছে বিক্রেতার প্রতিনিধি এবং বিক্রেতা তার সুফল স্বীয় অধিকার হতে বের করছে এবং দাসীর নিকট হতে ছিনিয়ে নিয়ে ক্রেতার নিকট বিক্রি করছে।তাদের দলীল হচ্ছে হযরত বুরাইরা ( রাঃ )-এর হাদীসটি যা সহীহ বুখারী, সহীহ মুসলিম প্রভৃতি হাদীস গ্রন্থে রয়েছে। তা হচ্ছে এই যে, উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা ( রাঃ ) হযরত বুরাইরা ( রাঃ )-কে ক্রয় করে আযাদ করে দেন। তখন কিন্তু তাঁর হযরত মুগীস ( রাঃ )-এর সঙ্গেকার বিয়ে বাতিল হয়নি। বরং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁকে সে বিয়ে বাতিল করার বা বাকী রাখার অধিকার প্রদান করেন। হযরত বুরাইরা ( রাঃ ) বিয়ে বাতিল করাকেই পছন্দ করেন। এ ঘটনাটি প্রসিদ্ধ হয়ে রয়েছে। সুতরাং ঐ গুরুজনদের কথা অনুযায়ী বিক্রি হওয়াই যদি তালাক হতো তবে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হযরত বুরাইরা ( রাঃ )-কে তাঁর বিক্রি হয়ে যাবার পর বিয়ে বাতিল করার বা ঠিক রাখার অধিকার দিতেন না। অধিকার দেয়ার দলীল হচ্ছে বিয়ে ঠিক থাকার। কাজেই আয়াতে শুধু ঐ স্ত্রীলোকদেরকে বুঝানো হয়েছে, যারা যুদ্ধে বন্দিনী হয়ে মুসলমানদের অধিকারে এসেছে। এও বলা হয়েছে যে, ( আরবী ) শব্দের ভাবার্থ হচ্ছে পুণ্যশীলা রমণীগণ। অর্থাৎ পুণ্যবতী নারীগণ তোমাদের জন্যে হারাম-যে পর্যন্ত না তোমরা বিয়ে, সাক্ষী, মোহর ও অভিভাবকের মাধ্যমে তাদের সতীত্বের অধিকারী হও, একজন হোক, দু'জন হোক, তিনজন হোক বা চারজন হোক। হযরত আবুল আলিয়া ( রঃ ) এবং হযরত তাউস ( রঃ ) এ ভাবার্থই বর্ণনা করেছেন। উমার ( রঃ ) এবং উবাইদাহ ( রঃ ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে-চারটের বেশী স্ত্রী তোমাদের জন্যে হারাম। হ্যা, তবে দাসীদের ব্যাপারে এ সংখ্যা নেই। অতপর আল্লাহ তা'আলা বলেন-এ নির্দেশ আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর লিখে দিয়েছেন, অর্থাৎ চারটের হুকুম। সুতরাং এটাই তোমাদের জন্যে অবশ্যপালনীয়, তোমারা ওর সীমা ছাড়িয়ে যেওনা। তোমরা তাঁর শরীয়ত ও ফরযগুলো মেনে চল।' এও বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা হারাম নারীদেরকে স্বীয় গ্রন্থে প্রকাশ করে দিয়েছেন। এরপরে বলা হচ্ছে-‘যেসব নারীর হারাম হবার কথা বর্ণনা করা হলো, তারা ছাড়া সমস্ত নারী তোমাদের জন্যে হালাল। একটি ভাবার্থ এও বর্ণনা করা হয়েছে যে, এ চারের কম তোমাদের জন্যে হালাল। কিন্তু এ উক্তি দূরের উক্তি। প্রথমটিই সঠিক ভাবার্থ। এটাই হযরত আতা' ( রঃ )-এর উক্তি।হযরত কাতাদা ( রঃ ) এর ভাবার্থ বর্ণনা করেন যে, এর দ্বারা দাসীদেরকে বুঝানো হয়েছে। এ আয়াতটিই ঐ লোকদের দলীল, যারা বিবাহে একই সময়ে দু' বোনকে একত্রিত করার বৈধতার সমর্থক এবং ঐ লোকদেরও দলীল যারা বলেন যে, একটি আয়াত ওকে হালাল করছে ও একটি আয়াত হারাম করছে।অতঃপর আল্লাহ পাক বলেনঃ “ তোমরা এ হালাল নারীদেরকে স্বীয় মাল দ্বারা গ্রহণ কর । আযাদ নারীদেরকে চারজন পর্যন্ত বিয়ে করতে পারবে এবং দাসীদেরকে সংখ্যা নির্ধারণ ছাড়াই বিয়ে করতে পারবে, তবে শরীয়তের পন্থায় হতে হবে। এ জন্যেই বলা হয়েছে-ব্যভিচারের উদ্দেশ্য ব্যতীত বিবাহবদ্ধ করার জন্যে। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেন-“ যেসব স্ত্রী হতে তোমরা ফল ভোগ কর, সে ফল ভোগের বিনিময়ে তাদেরকে মোহর প্রদান কর ।' যেমন অন্য আয়াতে রয়েছে ( আরবী ) অর্থাৎ ‘কিরূপে তোমরা তা ( মোহর ) গ্রহণ করবে? অথচ তোমরা পরস্পর একে অন্যের নিকট উপস্থিত হয়েছিলে।' ( ৪:২১ ) আর এক জায়গায় রয়েছে ( আরবী ) অর্থাৎ “ তোমরা খুশী মনে স্ত্রীদেরকে তাদের মোহর প্রদান কর ।' ( ৪:৪ ) অন্য স্থানে রয়েছে ( আরবী ) অর্থাৎ ‘তোমরা স্ত্রীদেরকে যা কিছু প্রদান করেছ তা হতে কিছু ফিরিয়ে নেয়া তোমাদের জন্যে বৈধ নয়।' ( ২:২২৯ ) এ আয়াত দ্বারা মুতআ’” ( মুআ' হচ্ছে অস্থায়ী বা সাময়িক বিবাহ। কোন বস্তুর বিনিময়ে কোনরূপ ফল ভোগ করলে তাকে মু্তআ' বলে ) বিবাহের উপর দলীল গ্রহণ করা হয়েছে।ইসলামের প্রাথমিক যুগে ‘মুআ' শরীয়তেরই বিধান ছিল। পরে তা রহিত হয়ে যায়। ইমাম শাফিঈ ( রঃ ) এবং উলামা-ই-কিরামের একটি দল বলেন যে, ‘মুআ’ দু’বার বৈধ করা হয়, অতঃপর রহিত করা হয়। কেউ কেউ বলেন যে, তার চেয়েও বেশীবার বৈধ হয়েছে ও রহিত হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলেন। যে, একবার মাত্র বৈধ হয়েছে, তারপরে রহিত হয়ে গেছে। এরপরে আর বৈধ হয়নি। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) এবং অন্যান্য কয়েকজন সাহাবী হতে প্রয়োজনের সময় এর বৈধতার কথা বর্ণিত আছে। হযরত ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল ( রঃ ) হতেও এরূপই একটি বর্ণনা বর্ণিত আছে। ইবনে আব্বাস ( রাঃ ), উবাই ইবনে কা'ব ( রাঃ ), সাঈদ ইবনে যুবাইর ( রঃ ) এবং সুদ্দী ( রঃ ) হতে ( আরবী ) শব্দের পরে ( আরবী )-এর পঠন বর্ণিত আছে। কিন্তু জমহুর এর উলটো।সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের হযরত আলী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত হাদীসটি এর উত্তম মীমাংসা করেছে যাতে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) খাইবারের যুদ্ধে মুতআ’র বিবাহ হতে এবং পালিত গাধার মাংস হতে নিষেধ করেছেন। এ হাদীসের শব্দগুলো আহকামের গ্রন্থসমূহে বিস্তারিতভাবে রয়েছে। সহীহ মুসলিম শরীফে হযরত সুবরা' ইবনে মা’বাদ জুহনী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, মক্কা বিজয়ের যুদ্ধে তিনি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সাথে ছিলেন। তিনি ইরশাদ করেনঃ “ হে মানবমণ্ডলী! আমি তোমাদেরকে মুতআ’র অনুমতি দিয়েছিলাম । জেনে রেখো যে, আল্লাহ তা'আলা কিয়ামত পর্যন্ত ওটাকে হারাম করে দিয়েছেন। যার নিকট এ প্রকারের স্ত্রী রয়েছে সে যেন তাকে পরিত্যাগ করে এবং তোমরা যা কিছু তাদেরকে দিয়ে রেখেছো তা হতে কিছুই গ্রহণ করো না।' সহীহ মুসলিমের অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বিদায় হজ্বে একথা বলেছিলেন। হাদীসটি বিভিন্ন শব্দে বর্ণিত আছে যার ব্যাখ্যার স্থান হচ্ছে আহকামের গ্রন্থসমূহ।অতঃপর আল্লাহ পাক বলেন-‘মোহর নির্ধারণের পর যদি তোমরা পরস্পরের সম্মতিক্রমে কিছু মীমাংসা করে নাও তবে কোন অপরাধ হবে না। যারা পূর্ববর্তী বাক্যকে ‘মুআ’র’ অর্থে নিয়েছেন, তাঁরা এর ভাবার্থ এরূপ বর্ণনা করেন যে, যখন নির্ধারিত সময় অতিক্রান্ত হয়ে যাবে তখন পুনরায় সময় বাড়িয়ে নেয়ায় এবং যা কিছু দিয়েছে তার উপর আরও কিছু দেয়ায় কোন পাপ নেই। সুদ্দী ( রঃ ) বলেন যে, ইচ্ছে করলে পূর্বে নির্ধারিত মোহরের পর সময় শেষ হবার পূর্বে যা দিয়েছে সে বলবে-“ আমি এত সময়ের জন্যে পুনরায় মুতআ করছি ।সুতরাং যদি গর্ভাশয়ের পবিত্রতার পূর্বে ঐ বেশীটা ঠিক করে নেয় তবে সময় শেষ হয়ে যাবার পর তার কোন ক্ষমতা থাকবে না। ঐ স্ত্রী পৃথক হয়ে যাবে এবং এক ঋতুকাল অপেক্ষা করে স্বীয় গর্ভাশয়কে পবিত্র করে নেবে। এ দু’ জনের মধ্যে উত্তরাধিকার নেই। স্ত্রীলোকটিও পুরুষ লোকটির উত্তরাধিকারিণী হবে না এবং পুরুষ লোকটিও স্ত্রীলোকটির উত্তরাধিকারী হবে না। আর যে মনীষীগণ বলেন যে, এটা সুন্নাত বিবাহ সম্পৰ্কীয় কথা, তাঁদের নিকটে এর ভাবার্থ তো পরিষ্কার যে, এখানে মোহর আদায়ের গুরুত্বের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে। যেমন বলা হয়েছে- ‘মোহর সহজভাবে ও খুশী মনে দিয়ে দাও। তবে মোহর নির্ধারিত হবার পর যদি স্ত্রী তার সমস্ত প্রাপ্য বা আংশিক প্রাপ্য মাফ করে দেয়। তবে স্বামী বা স্ত্রীর কারও কোন পাপ নেই।' হযরত হারামী ( রঃ ) বলেন, মানুষ মোহর নির্ধারণ করে দেয়। অতঃপর তার দরিদ্র হয়ে যাবারও সম্ভাবনা রয়েছে। সে সময় যদি স্ত্রী তার প্রাপ্য ছেড়ে দেয় তবে তা বৈধ। ইমাম ইবনে জারীরও এ উক্তিকেই পছন্দ করেছেন।হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে, তাদেরকে পূর্ণ মোহর প্রদান কর। অতঃপর তাদেরকে বসবাস করার বা পৃথক হয়ে যাবার পূর্ণ অধিকার দাও।' এরপর বলা হচ্ছে-‘আল্লাহ তা'আলা মহাজ্ঞানী বিজ্ঞানময়। এ বৈধতা বা অবৈধ সম্পর্কীয় নির্দেশাবলীর মধ্যে যে নিপুণতা ও যুক্তিযুক্ততা রয়েছে তা তিনিই খুব ভাল জানেন।

সূরা নিসা আয়াত 24 সূরা

والمحصنات من النساء إلا ما ملكت أيمانكم كتاب الله عليكم وأحل لكم ما وراء ذلكم أن تبتغوا بأموالكم محصنين غير مسافحين فما استمتعتم به منهن فآتوهن أجورهن فريضة ولا جناح عليكم فيما تراضيتم به من بعد الفريضة إن الله كان عليما حكيما

سورة: النساء - آية: ( 24 )  - جزء: ( 5 )  -  صفحة: ( 82 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. এবং তাদেরকে দেখতে থাকুন। শীঘ্রই তারাও এর পরিণাম দেখে নেবে।
  2. ইহুদীদের জন্যে আমি প্রত্যেক নখবিশিষ্ট জন্তু হারাম করেছিলাম এবং ছাগল ও গরু থেকে এতদুভয়ের চর্বি
  3. ওযর-আপত্তির অবকাশ না রাখার জন্যে অথবা সতর্ক করার জন্যে।
  4. হে বৎস, কোন বস্তু যদি সরিষার দানা পরিমাণও হয় অতঃপর তা যদি থাকে প্রস্তর গর্ভে
  5. তিনি আরও বললেনঃ নিশ্চয় আল্লাহ আমার পালনকর্তা ও তোমাদের পালনকর্তা। অতএব, তোমরা তার এবাদত কর।
  6. হে হারূণ-ভাগিনী, তোমার পিতা অসৎ ব্যক্তি ছিলেন না এবং তোমার মাতাও ছিল না ব্যভিচারিনী।
  7. প্রত্যেক সীমালংঘনকারী পাপিষ্ঠই কেবল একে মিথ্যারোপ করে।
  8. যেদিন পরিবর্তিত করা হবে এ পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে এবং পরিবর্তিত করা হবে আকাশ সমূহকে এবং
  9. অতএব, আপনি উপদেশ দান করুন। আপনার পালনকর্তার কৃপায় আপনি অতীন্দ্রিয়বাদী নন এবং উম্মাদও নন।
  10. অতঃপর অচিরেই জানতে পারবে-লাঞ্ছনাজনক আযাব কার উপর আসে এবং চিরস্থায়ী আযাব কার উপর অবতরণ করে।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নিসা ডাউনলোড করুন:

সূরা Nisa mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Nisa শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত নিসা  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত নিসা  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত নিসা  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত নিসা  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত নিসা  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত নিসা  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত নিসা  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত নিসা  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত নিসা  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত নিসা  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত নিসা  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত নিসা  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত নিসা  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত নিসা  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত নিসা  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত নিসা  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত নিসা  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত নিসা  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত নিসা  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত নিসা  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত নিসা  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত নিসা  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত নিসা  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত নিসা  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত নিসা  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Tuesday, July 16, 2024

Please remember us in your sincere prayers