কোরান সূরা বাকারাহ্ আয়াত 25 তাফসীর
﴿وَبَشِّرِ الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ أَنَّ لَهُمْ جَنَّاتٍ تَجْرِي مِن تَحْتِهَا الْأَنْهَارُ ۖ كُلَّمَا رُزِقُوا مِنْهَا مِن ثَمَرَةٍ رِّزْقًا ۙ قَالُوا هَٰذَا الَّذِي رُزِقْنَا مِن قَبْلُ ۖ وَأُتُوا بِهِ مُتَشَابِهًا ۖ وَلَهُمْ فِيهَا أَزْوَاجٌ مُّطَهَّرَةٌ ۖ وَهُمْ فِيهَا خَالِدُونَ﴾
[ البقرة: 25]
আর হে নবী (সাঃ), যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজসমূহ করেছে, আপনি তাদেরকে এমন বেহেশতের সুসংবাদ দিন, যার পাদদেশে নহরসমূহ প্রবাহমান থাকবে। যখনই তারা খাবার হিসেবে কোন ফল প্রাপ্ত হবে, তখনই তারা বলবে, এতো অবিকল সে ফলই যা আমরা ইতিপূর্বেও লাভ করেছিলাম। বস্তুতঃ তাদেরকে একই প্রকৃতির ফল প্রদান করা হবে। এবং সেখানে তাদের জন্য শুদ্ধচারিনী রমণীকূল থাকবে। আর সেখানে তারা অনন্তকাল অবস্থান করবে। [সূরা বাকারাহ্: 25]
Surah Al-Baqarah in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Baqarah ayat 25
আর খুশখবর দাও তাদের যারা ঈমান এনেছে আর সৎকর্ম করে, তাদের জন্য আছে জান্নাত, যাদের নিচ দিয়ে বয়ে চলেছে ঝরনারাজি! যতবার এ থেকে ফলফসল তাদের খেতে দেয়া হয় তারা বলে -- “এ সেই যা এর আগে আমাদের খাওয়ানো হয়েছিল”, কারণ তাদের এ দেয়া হয় অনুকরণে। আর তাদের জন্য এর মধ্যে আছে পবিত্র সঙ্গিসাথী আর এতে তারা থাকবে চিরকাল।
Tafsir Mokhtasar Bangla
২৫. পূর্ববর্তী আয়াতে কাফিরদের প্রতি ধমক ও শাস্তির বর্ণনার পর এখানে মু’মিনদের পুরস্কারের ঘোষণা দিতে যেয়ে বলা হলো: হে নবী! আপনি সুসংবাদ দিন সেই মু’মিনদেরকে যারা নেক আমল করে। তাদেরকে এমন জান্নাত দিয়ে খুশি করানো হবে যার গাছ ও অট্টালিকার তলদেশ দিয়ে অনেকগুলো নদী প্রবাহিত হয়। যখন তাদেরকে সেখানকার পবিত্র ফলগুলো থেকে কিছু রিযিক হিসেবে দেয়া হবে তখন তারা দুনিয়ার ফলের সাথে অতি সাদৃশ্যের দরুন এ কথা বলে উঠবে: এগুলো তো সেগুলোর ন্যায় যেগুলো আমাদেরকে ইতোপূর্বে রিযিক হিসেবে দেয়া হয়েছে। বস্তুতঃ তাদেরকে সেই ফলগুলোই দেয়া হয়েছে যেগুলোর সাথে দুনিয়ার ফলগুলোর নাম ও বর্ণে মিল রয়েছে। যাতে তারা পূর্ব থেকে চিনেই সেগুলো গ্রহণ করতে পারে। তবে সেগুলোর স্বাদ ও মজা ভিন্ন হবে। উপরন্তু তাদের জন্য জান্নাতে রয়েছে পূতপবিত্র স্ত্রীগণ। যারা এমন সকল দোষ থেকে পবিত্র যেগুলোকে মানুষ এমনিতেই ঘৃণা করে এবং দুনিয়ার স্ত্রীদের মাঝে যেগুলোকে বিশ্রী বলেই ধারণা করা হয়। তারা সেখানে চিরস্থায়ী নিয়ামতের মাঝে থাকবে; যা কখনো শেষ হবে না। তা দুনিয়ার নিয়ামতের মতো নয়, যা একদিন ফুরিয়ে যাবে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
যারা বিশ্বাস করে ও সৎকর্ম করে( ১ ) তাদেরকে শুভ সংবাদ দাও যে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাত; যার তলদেশে নদী প্রবাহিত, যখনই তাদের ফলমূল খেতে দেওয়া হবে, তখনই তারা বলবে, ‘আমাদেরকে ( পৃথিবীতে অথবা জান্নাতে ) পূর্বে জীবিকারূপে যা দেওয়া হত, এ তো তাই।’ তাদেরকে পরস্পর একই সদৃশ ফল( ২ ) দান করা হবে এবং সেখানে তাদের জন্য পবিত্র( ৩ ) সহধর্মিণীগণ রয়েছে, অধিকন্তু তারা সেখানে চিরস্থায়ী হবে। ( ৪ ) ( ১ ) ক্বুরআন কারীম প্রত্যেক স্থানে বিশ্বাস তথা ঈমানের সাথে সাথে সৎকর্ম তথা নেক আমলের কথা উল্লেখ ক'রে এ কথা পরিষ্কার করে দিয়েছে যে, ঈমান এবং নেক আমল পরস্পর অবিচ্ছেদ্য অংশ। নেক আমল ব্যতীত ঈমান ফলপ্রসূ নয় এবং আল্লাহর নিকট ঈমান ছাড়া নেক আমলের কোন গুরুত্ব নেই। আর নেক আমল তখনই নেক আমল বলে গণ্য হবে, যখন তা সুন্নত ( নবী (সাঃ )-এর তরীকা) অনুযায়ী এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য খাঁটি নিয়তে করা হবে। সুন্নত পরিপন্থী আমল গ্রহণযোগ্য নয়। অনুরূপ খ্যাতি লাভ ও লোক দেখানোর জন্য কৃত আমলও প্রত্যাখ্যাত। ( ২ ) مُتَشَابِهًا ( সদৃশ )এর অর্থ হয়তো বা জান্নাতের সমস্ত ফলের আকার-আকৃতি এক রকম হবে অথবা তা দুনিয়ার ফলের মত দেখতে হবে। তবে এ সাদৃশ্য কেবল আকার ও নাম পর্যন্তই সীমাবদ্ধ। নচেৎ জান্নাতের ফলের সবাদের সাথে দুনিয়ার ফলের সবাদের কোন তুলনাই নেই। জান্নাতের নিয়ামতের ব্যাপারে হাদীসে এসেছে, " ( এমন নিয়ামত ) যা কোন চোখ দেখেনি, কোন কান শোনেনি এবং কোন মানুষের অন্তরে তার সঠিক ধারণা উদয় হয়নি। " ( সহীহ বুখারী, তাফসীর সূরা আলিফ-লাম-মীম সাজদাহ ) ( ৩ ) অর্থাৎ, মাসিক, নিফাস ( প্রসবোত্তর রক্ত ) এবং অন্যান্য ঘৃণিত জিনিস থেকে পবিত্রা হবে। ( ৪ ) خَالِدِين এর অর্থ চিরস্থায়ী। জান্নাতবাসীরা জান্নাতে চিরকাল থাকবে এবং তারা বড়ই প্রফুল্ল থাকবে। আর জাহান্নামীরা জাহান্নামে অনন্তকাল থাকবে এবং তারা বড় কষ্টে বাস করবে। হাদীসে এসেছে যে, জান্নাতীরা জান্নাতে ও জাহান্নামীরা জাহান্নামে চলে যাওয়ার পর একজন ফিরিশতা ঘোষণা দেবেন, " হে জাহান্নামবাসীগণ! আর মৃত্যু নেই। আর হে জান্নাতবাসীগণ! আর মৃত্যু নেই। যে দল যে অবস্থায় আছে, সব সময় ঐ অবস্থাতেই থাকবে। " ( সহীহ বুখারী, কিতাবুর রিক্বাক্ব, মুসলিম, কিতাবুল জান্নাহ )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎ কাজ করেছে তাদেরকে শুভ সংবাদ দিন যে, তা দের জন্য রয়েছে জান্নাত, জার তলদেশে নদী প্রবাহিত [ ১ ]। যখনই তাদেরকে ফলমুল খেতে দেয়া হবে তখনই তারা বলবে, ‘আমাদেরকে পূর্বে জীবিকা হিসেবে যা দেয়া হত এতো তাই’। আর তাদেরকে তা দেয়া হবে সাদৃশ্যপূর্ণ করেই [ ২ ] এবং সেখনে তাদের জন্য রয়েছে পবিত্র সঈিনী [ ৩ ]। আর তারা সেখানে স্থায়ী হবে [ ৪ ]। [ ১ ] 'জান্নাতের তলদেশে নদী প্রবাহিত' বলে এটাই বোঝানো হয়েছে যে, এর গাছের নীচ দিয়ে ও এর কামরাসমূহের নীচ দিয়ে নদীসমূহ প্রবাহিত। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, জান্নাতের নদী-নালাসমূহ মিশকের পাহাড় থেকে নির্গত। [ সহীহ ইবনে হিব্বান: ৭৪০৮ ] আনাস ও ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত যে, 'জান্নাতের নহরসমূহ খাদ হয়ে প্রবাহিত হবে না। সহীহুত তারগীব অন্য বর্ণনায় এসেছে, হাউজে কাউসারের দুই তীর লালা-মোতির গড়া বিরাট গম্বুজ বিশিষ্ট হবে। [ বুখারী: ৬৫৮১ ] আর তার মাটি হবে মিশকের সুগন্ধে ভরপুর। তার পথে বিছানো কাঁকরগুলো হলো লাল-জহরত, পান্না-চুন্নি সদৃশ। [ ইবনে কাসীর ] [ ২ ] জান্নাতবাসীদেরকে একই আকৃতি বিশিষ্ট বিভিন্ন ফলমূল পরিবেশনের উদ্দেশ্য হবে পরিতৃপ্তি ও আনন্দ সঞ্চার। কোন কোন তাফসীরকারের মতে ফলমূল পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ার অর্থ জান্নাতের ফলাদি আকৃতিগতভাবে ইহজগতে প্রাপ্ত ফলের অনুরূপই হবে। সেগুলো যখন জান্নাতবাসীদের মধ্যে পরিবেশন করা হবে, তখন তারা বলে উঠবে, অনুরূপ ফল তো আমরা দুনিয়াতেও পেতাম। কিন্তু স্বাদ ও গন্ধ হবে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরণের। অপর কোন কোন তাফসীরকারকের মতে, ফলমূল পরস্পর সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ার অর্থ, জান্নাতে পরিবেশিত ফল-মূলাদি দেখে জান্নাতিগণ বলবে যে, এটা তো গতকালও আমাদের দেয়া হয়েছে, তখন জান্নাতের খাদেমগণ তাদের বলবে যে, দেখতে একই রকম হলেও এর স্বাদ ভিন্ন। ইবনে আব্বাস বলেন, দুনিয়ার ফলের সংগে আখেরাতের ফল-মূলের কোন তুলনাই চলবে না, শুধু নামের মিল থাকবে। [ ইবনে কাসীর ] [ ৩ ] মূল আরবী বাক্যে ‘আযওয়াজ’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এটি বহুবচন। এর এক বচন হচ্ছে ‘যওজ’, অর্থ হচ্ছে জোড়া। এ শব্দটি স্বামী বা স্ত্রী অর্থে ব্যবহার করা হয়। স্বামীর জন্য স্ত্রী হচ্ছে ‘যওজ’ ! আবার স্ত্রীর জন্য স্বামী হচ্ছে ‘যওজ’। তবে আখেরাতে আযওয়াজ অর্থাৎ জোড়া হবে পবিত্রতার গুণাবলী সহকারে। জান্নাতে পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন স্ত্রী লাভের অর্থ, তারা হবে পার্থিব যাবতীয় বাহ্যিক ও গঠনগত ক্রটি-বিচ্যুতি ও চরিত্রগত কলুষতা থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত এবং প্রস্রাব-পায়খানা, রজঃস্রাব, প্রসবোত্তর স্রাব প্রভৃতি যাবতীয় ঘৃণ্য বিষয়ের উর্ধ্বে। অনুরূপভাবে নীতিভ্রষ্টতা, চরিত্রহীনতা, অবাধ্যতা প্রভৃতি আভ্যন্তরীণ ক্রটি ও কদৰ্যতার লেশমাত্রও তাদের মধ্যে পাওয়া যাবে না। তাদের গুণাগুণ সম্পর্কে বিভিন্ন আয়াতে এসেছে যে, “তাদের সংগে থাকবে আয়তনয়না, ডাগর চোখ বিশিষ্টাগুণ" [ সূরা আস-সাফফাত: ৪৮ ] আরও বলা হয়েছে, “তারা যেন পদ্মরাগ ও প্রবাল" [ সূরা আর-রহমান: ৫৮ ] আরও এসেছে, “ আর তাদের জন্য থাকবে ডাগর চক্ষুবিশিষ্টা হুর, যেন তারা সুরক্ষিত মুক্তা" [ সূরা আল-ওয়াকি'আ:২২-২৩)অনুরূপভাবে এসেছে, “আর সমবয়স্কা উদভিন্ন যৌবনা তরুণী" [সূরা আন-নাবা ৩৩ ] যদি দুনিয়ার কোন সৎকর্মশীল পুরুষের স্ত্রী সৎকর্মশীলা না হয় তাহলে আখেরাতে তাদের সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে যাবে । সে ক্ষেত্রে ঐ সৎকর্মশীল পুরুষটিকে অন্য কোন সৎকর্মশীলা স্ত্রী দান করা হবে। আর যদি দুনিয়ায় কোন স্ত্রী হয় সৎকর্মশীলা এবং তার স্বামী হয় অসৎ, তাহলে আখেরাতে ঐ অসৎ স্বামী থেকে তাকে বিচ্ছিন্ন করে কোন সৎ পুরুষকে তার স্বামী হিসেবে দেয়া হবে। তবে যদি দুনিয়ায় কোন স্বামী-স্ত্রী দুজনই সৎকর্মশীল হয়, তাহলে আখেরাতে তাদের এই সম্পর্কটি চিরন্তন ও চিরস্থায়ী সম্পর্কে পরিণত হবে। [ ৪ ] বলা হয়েছে যে, জান্নাতের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও ভোগ-বিলাসের উপকরণসমূহকে যেন দুনিয়ার পতনশীল ও ক্ষীয়মান উপকরণসমূহের ন্যায় মনে না করা হয় যাতে যেকোন মূহুর্তে ধ্বংস ও বিলুপ্তির আশংকা থাকে। বরং জান্নাতবাসীগণ অনন্তকাল সুখস্বাচ্ছন্দ্যের এই অফুরন্ত উপকরণসমূহ ভোগ করে বিমল আনন্দ-স্ফূর্তি ও চরম তৃপ্তি লাভ করতে থাকবেন। [ ইবনে কাসীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
যেহেতু এর পূর্বে কাফির ও ধর্মদ্রোহীদের শাস্তি ও লাঞ্ছনার বর্ণনা দেয়া হয়েছে, কাজেই এখানে মুমিন ও সৎলোকদের প্রতিদান, পুণ্য ও সম্মানের বর্ণনা দেয়া হয়েছে। কুরআনের ( আরবি ) হওয়ার এটাও একটা অর্থ এবং সঠিক অর্থ এটাই যে, এতে প্রত্যেক বিষয় জোড়া জোড়া রয়েছে। এর বিস্তারিত বিবরণও উপযুক্ত জায়গায় দেয়া হবে। ভাবার্থ এই যে, ঈমানের সঙ্গে কুফরের এবং কুফরের সঙ্গে ঈমানের পুণ্যের সঙ্গে পাপের ও পাপের সঙ্গে পুণ্যের বর্ণনা অবশ্যই আসে। যে জিনিসের বর্ণনা দেয়া হয় সঙ্গে সঙ্গে তার বিপরীত জিনিসেরও বর্ণনা দেয়া হয়। কোন জিনিসের বর্ণনা দিয়ে কোন জায়গায় তার দৃষ্টান্ত বর্ণনা করা হয় ( আরবি ) এরকমই।জান্নাতের তলদেশ দিয়ে নদী বয়ে যাওয়ার অর্থ হচ্ছে তার বৃক্ষরাজী ও অট্টালিকার নিম্নদেশ দিয়ে বয়ে যাওয়া। হাদীস শরীফে আছে যে, তথায় নদী প্রবাহিত হয়, কিন্তু গর্ত নেই। অন্য হাদীসে আছে যৈ, কাওসার নদীর দু'ধারে খাঁটি মুক্তার গম্বুজ আছে, তার মাটি হচ্ছে খাটি মৃগনাভি, তার কুচি পাথরগুলো হচ্ছে মণি-মুক্তা ও অতি মূল্যবান পাথর। আল্লাহ্ তা'আলা অনুগ্রহ করে যেন আমাদেরকে ঐ নিয়ামত দান করেন। তিনি বড় অনুগ্রহশীল ও দয়ালু। হাদীসে আছে যে, জান্নাতের নদীগুলো মুশকের পাহাড়ের নিম্নদেশ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ( মুসনাদ-ই-ইবনে আবি হাতিম )। হযরত আবদুল্লাহ্ ( রাঃ ) হতেও এটা বর্ণিত আছে। জান্নাতবাসীদের এই কথা “ ইতিপূর্বে আমাদেরকে দেয়া হয়েছিল ।এর ভাবার্থ এই যে, দুনিয়াতেও তাদেরকে এই ‘গুলো দেয়া হয়েছিল। তাদের এটা বলার কারণ এই যে, বাহ্যিক আকারে এটা সম্পূর্ণ সাদৃশ্যপূর্ণ হবে।ইয়াহ্ইয়া বিন কাসীর ( রঃ ) বলেন যে, এক পেয়ালা আসবে, তা সে খাবে আর এক পেয়ালা আসলে বলবেঃ “ এটা এতো এখন খেলাম ।” ফেরেশতারা বলবেনঃ “ খেতে থাকুন । বরং এক হলেও স্বাদ আলাদা। তিনি আরও বলেন যে, বেহেশতের ঘাস হচ্ছে জাফরান এবং পাহাড়গুলো হচ্ছে মুশকের। ছোট ছোট সুন্দর ছেলেরা ফল এনে হাজির করছে এবং তারা খাচ্ছে। আবার আনলে তারা বলছেঃ ওটা এখনই তো খেলাম।" তারা উত্তর দিচ্ছেঃ জনাব! রং ও রূপ তো এক, কিন্তু স্বাদ পৃথক; খেয়ে দেখুন।" খেয়েই তারা আরও সুস্বাদু অনুভব করছে। সাদৃশ্যপূর্ণ হওয়ার এটাই অর্থ। দুনিয়ার ফলের সঙ্গেও নামে ও আকারে সাদৃশ্য থাকবে, কিন্তু স্বাদ হবে পৃথক।হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, সাদৃশ্য শুধু নামে হবে, নচেৎ কোথায় এখানকার জিনিস আর কোথায় ওখানকার জিনিস। এখানে তো শুধু নামই আছে। আবদুর রহমানের ( রাঃ ) কথা এই যে, দুনিয়ার ফলের মত ফল দেখে বলবেঃ “ এটা তো খেয়েছি । কিন্তু যখন খাবে তখন বুঝবে যে, মজা অন্য কিছু। তথায় তারা যেসব স্ত্রী পাবে তারা মলিনতা, অপবিত্রতা, মাসিক ঋতু প্রস্রাব, পায়খানা, থুথু ইত্যাদি হতে সম্পূর্ণরূপে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকবে। হযরত হাওয়াও ( আঃ ) প্রথমে মাসিক ঋতু হতে পবিত্র ছিলেন। কিন্তু অবাধ্যতা প্রকাশ পাওয়া মাত্রই তার উপরেও এ বিপদ এসে যায়। কিন্তু একথাটি সনদ হিসেবে গরীব বা দুর্বল।আর একটি গরীব মারফু হাদীসে আছে যে, হায়েয, পায়খানা, থুথু হতে পাক। হাকিম ( রঃ ) এই হাদীসটিকে শায়খাইনের শর্তের উপরে সঠিক বলেছেন। কিন্তু এ দাবী সত্য নয়। এর একজন বর্ণনাকারী হচ্ছে আবদুর রাযযাক বিন উমার বাযীঈ, যার হাদীসকে আবু হাতিম বাসতী দলীলরূপে গ্রহণের যোগ্য মনে করেন না। প্রকাশ্যভাবে জানা যাচ্ছে যে, হাদীসটি মার নয়। বরং এটা হযরত কাতাদা ( রাঃ )-এর কথা। আল্লাহই সবচেয়ে বেশী জানেন।
সূরা বাকারাহ্ আয়াত 25 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে, তা পরিত্যাগ কর,
- যদি কেউ ওসীয়ত শোনার পর তাতে কোন রকম পরিবর্তন সাধন করে, তবে যারা পরিবর্তন করে
- এবং পৃথিবী ও পর্বতমালা উত্তোলিত হবে ও চুর্ণ-বিচুর্ণ করে দেয়া হবে,
- যা আছে এক গোপন কিতাবে,
- তোমরা কি এর বৃক্ষ সৃষ্টি করেছ, না আমি সৃষ্টি করেছি ?
- তারা সংঘবদ্ধভাবেও তোমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারবে না। তারা যুদ্ধ করবে কেবল সুরক্ষিত জনপদে অথবা
- আমি কি তাকে দেইনি চক্ষুদ্বয়,
- যারা মুমিন, তারা বলেঃ একটি সূরা নাযিল হয় না কেন? অতঃপর যখন কোন দ্ব্যর্থহীন সূরা
- যে লোক ইসলাম ছাড়া অন্য কোন ধর্ম তালাশ করে, কস্মিণকালেও তা গ্রহণ করা হবে না
- যখন তাদের কাছে আমার সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ তেলাওয়াত করা হয়, তখন কাফেররা মুমিনদেরকে বলেঃ দুই দলের
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা বাকারাহ্ ডাউনলোড করুন:
সূরা Baqarah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Baqarah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers