কোরান সূরা বাকারাহ্ আয়াত 269 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Baqarah ayat 269 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা বাকারাহ্ আয়াত 269 আরবি পাঠে(Baqarah).
  
   

﴿يُؤْتِي الْحِكْمَةَ مَن يَشَاءُ ۚ وَمَن يُؤْتَ الْحِكْمَةَ فَقَدْ أُوتِيَ خَيْرًا كَثِيرًا ۗ وَمَا يَذَّكَّرُ إِلَّا أُولُو الْأَلْبَابِ﴾
[ البقرة: 269]

তিনি যাকে ইচ্ছা বিশেষ জ্ঞান দান করেন এবং যাকে বিশেষ জ্ঞান দান করা হয়, সে প্রভুত কল্যাণকর বস্তু প্রাপ্ত হয়। উপদেশ তারাই গ্রহণ করে, যারা জ্ঞানবান। [সূরা বাকারাহ্: 269]

Surah Al-Baqarah in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Baqarah ayat 269


তিনি জ্ঞানদান করেন যাকে ইছে করেন, আর যাকে জ্ঞান দেওয়া হয় তাকে অবশ্যই অপার কল্যাণ দেওয়া হয়েছে। আর বোধশক্তির অধিকারী ছাড়া অন্য কেউ বুঝতে পারে না।


Tafsir Mokhtasar Bangla


২৬৯. তিনি যাকে চান তাকে সত্য কথা ও সঠিক কাজের তাওফীক দান করেন। যাকে এমন কিছু দেয়া হয়েছে তাকে নিশ্চয়ই অনেক কল্যাণই দেয়া হয়েছে। আল্লাহর আয়াতসমূহ থেকে কেবল তারাই উপদেশ গ্রহণ করে যাদের মূলতঃ পরিপূর্ণ বিবেক-বুদ্ধি রয়েছে। যারা সর্বদা আল্লাহর নূরে আলোকিত এবং তাঁর হিদায়েতে হিদায়েতপ্রাপ্ত।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


তিনি যাকে ইচ্ছা প্রজ্ঞা দান করেন, আর যাকে প্রজ্ঞা [১] প্রদান করা হয়, তাকে নিশ্চয় প্রভূত কল্যাণ দান করা হয়। বস্তুতঃ শুধু জ্ঞানীরাই উপদেশ গ্রহণ করে থাকে। [১] حِكمَة 'হিকমত'এর অর্থ কেউ করেছেন, জ্ঞান-বুদ্ধি-প্রজ্ঞা। কেউ করেছেন, সঠিক মত বা সিদ্ধান্ত, কুরআনের 'নাসেখ-মানসুখ' এর জ্ঞান এবং বিচার শক্তি। আবার কারো নিকট 'হিকমত' হল, কেবল সুন্নাতের জ্ঞান অথবা কিতাব ও সুন্নাতের জ্ঞান। অথবা উপরোক্ত সব অর্থই 'হিকমত'-এর আওতাভুক্ত। সহীহ বুখারী ও মুসলিম ও অন্যান্য হাদীস গ্রন্থে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, " দুই ব্যক্তির প্রতি ঈর্ষা করা বৈধ। এক ব্যক্তি হল সেই, যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন এবং সে তা সৎপথে ব্যয় করে। আর দ্বিতীয় ব্যক্তি হল সে, যাকে আল্লাহ হিকমত দান করেছেন যার দ্বারা সে বিচার-ফয়সালা করে এবং মানুষদেরকেও তা শিক্ষা দেয়। " ( বুখারী, অধ্যায়ঃ ইলম, মুসলিম, অধ্যায়ঃ সালাতুল মুসাফেরীন )

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


তিনি যাকে ইচ্ছে হেকমত দান করেন। আর যাকে হেকমত [] প্রদান করা হয় তাকে তো প্রভূত কল্যাণ দান করা হয়; এবং বিবেকসম্পন্নগণই শুধু উপদেশ গ্রহণ করে। [] ‘হেকমত’ শব্দটি কুরআনুল কারীমে বার বার ব্যবহৃত হয়েছে। প্রত্যেক জায়গায় এর ব্যাখ্যায় বিভিন্ন অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এগুলো প্রায় কাছাকাছি উক্তি। হেকমতের আসল অর্থ প্রত্যেক বস্তুকে যথাস্থানে স্থাপন করা। এর পূর্ণত্ব শুধুমাত্র নবুওয়াতের মাধ্যমেই সাধিত হতে পারে। তাই এখানে হেকমত বলতে নবুওয়াতকে বোঝানো হয়েছে। রাগেব ইস্পাহানী বলেনঃ হেকমত শব্দটি আল্লাহ্‌র জন্য ব্যবহার করা হলে এর অর্থ হবে সমগ্র বিষয়াদির পূর্ণ জ্ঞান এবং নিখুঁত আবিস্কার। অন্যের জন্য এ শব্দটি ব্যবহার করা হলে এর অর্থ হয় সৃষ্টি সম্পর্কিত জ্ঞান এবং তদানুযায়ী কর্ম। এ অর্থটিই বিভিন্ন শব্দের মাধ্যমে ব্যক্ত করা হয়েছে। কোথাও এর অর্থ নেয়া হয়েছে কুরআন, কোথাও হাদীস, কোথাও বিশুদ্ধ জ্ঞান, কোথাও সৎকর্ম, কোথাও সত্যকথা, কোথাও সুস্থ বুদ্ধি, কোথাও দ্বীনের বোধ, কোথাও মতামতের নির্ভুলতা এবং কোথাও আল্লাহ্‌র ভয়। কেননা, আল্লাহ্‌র ভয়ই প্রকৃত হেকমত। আয়াতে হেকমতের ব্যাখ্যা সাহাবী ও তাবে-তাবেয়ীগণ কর্তৃক হাদীস ও সুন্নাহ বলে বর্ণিত হয়েছে। কেউ কেউ বলেছেন যে, আলোচ্য আয়াতে উপরোল্লেখিত সবগুলো অর্থই বোঝানো হয়েছে। [ বাহরে মুহীত ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


আল্লাহ তা'আলা তার মুমিন বান্দাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, তারা যেন ব্যবসার মাল, যা আল্লাহ তাদেরকে দান করেছেন এবং সোনা, রূপা, শস্য ইত্যাদি যা তাদেরকে ভূমি হতে বের করে দেয়া হয়েছে তা হতে উত্তম ও পছন্দনীয় জিনিস তাঁর পথে খরচ করে। তারা যেন পঁচা, গলা ও মন্দ জিনিস আল্লাহর পথে না দেয়। আল্লাহ অত্যন্ত পবিত্র, তিনি অপবিত্র জিনিস গ্রহণ করেন না। আল্লাহ তা'আলা তাঁর বান্দাদেরকে লক্ষ্য করে বলেনঃ “ এমন জিনিস তোমরা আল্লাহর পথে ব্যয় করার ইচ্ছে করো না যা তোমাদের নিজেদেরকে দেয়া হলে তোমরাও তা গ্রহণ করতে সম্মত হতে না । সুতরাং তোমরা এই রকম জিনিস কিরূপে আল্লাহকে দিতে পারো: আর তিনি তা গ্রহণই যা করবেন কেন: তবে তোমরা যদি সম্পদ হাত ছাড়া হতে দেখে নিজের অধিকারের বিনিময়ে কোন পঁচা-গলা জিনিস বাধ্য হয়ে গ্রহণ করে নাও তাহলে অন্য কথা। কিন্তু আল্লাহ পাক তো তোমাদের মত বাধ্য ও দুর্বল নন যে, তিনি এই সব জঘন্য জিনিস গ্রহণ করবেন: তিনি কোন অবস্থাতেই এই সব জিনিস গ্রহণ করেন না। কিংবা ভাবার্থ এও হতে পারে যে, তোমরা হালাল জিনিস ছেড়ে হারাম মাল হতে দান করো না। মুসনাদ-ই-আহমাদের মধ্যে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা'আলা তোমাদের রুজী তোমাদের মধ্যে বন্টন করে দিয়েছেন তদ্রুপ চরিত্রও তোমদের বেঁটে দিয়েছেন । আল্লাহ তা'আলা দুনিয়া তার বন্ধুদেরকেও দেন এবং শক্রদেরকেও দেন। কিন্তু দ্বীন শুধু তার বন্ধুদেরকেই দান করে থাকেন। যে দ্বীন লাভ করে, সে আল্লাহ তা'আলার প্রিয় পাত্র। যে আল্লাহর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে তাঁর শপথ! কোন বান্দা মুসলমান হতে পারে না যে পর্যন্ত না তার অন্তর ও তার জিহ্বা মুসলমান হয়। কোন বান্দা মুসলমান হতে পারবে না যে পর্যন্ত না তার প্রতিবেশী তার থেকে নির্ভয় হয়। জনগণের প্রশ্নের উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ কষ্টের ভাবার্থ হচ্ছে প্রতারণা ও উৎপীড়ন। যে ব্যক্তি হারাম উপায়ে মাল উপার্জন করে, আল্লাহ তাতে বরকত দান করেন না এবং তার দান-খয়রাতও গ্রহণ করেন না। যা সে ছেড়ে যায় তার জন্যে তা দুযখে যাবার পাথেয় ও কারণ হয়ে থাকে। আল্লাহ তাআলা মন্দকে মন্দের দ্বারা দূর করেন না বরং মন্দকে ভাল দ্বারা দূর করেন! অপবিত্র জিনিস অপবিত্র জিনিস দ্বারা বিদূরিত হয় না। সুতরাং দু’টি উক্তি হলো-এক হলো মন্দ জিনিস এবং দ্বিতীয় হলো হারাম মাল।হযরত বারা' বিন আযিব ( রাঃ ) বর্ণনা করেনঃ খেজুরের মৌসুমে আনসারগণ নিজ নিজ সামর্থ অনুযায়ী খেজুরের গুচ্ছ এনে মসজিদে নব্বীর ( সঃ ) দুটি স্তম্ভের মধ্যে ঝুলানো রজ্জুতে ঝুলিয়ে দিতেন। ঐগুলো আসহাব-ই-সুফফা ও দরিদ্র মুহাজিরগণ ক্ষুধার সময় খেয়ে নিতেন। সাদকার প্রতি আগ্রহ কম ছিল এরূপ একটি লোক ওতে খারাপ খেজুরের একটি গুচ্ছ এনে ঝুলিয়ে দেয়। সেই সময়। এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয় এবং তাতে বলা হয়, যদি তোমাদেরকে এই রকমই জিনিস উপঢৌকন স্বরূপ দেয়া হয় তবে তোমরা তা কখনও গ্রহণ করবে। অবশ্য মনে না চাইলেও যদি লজ্জার খাতিরে তা গ্রহণ করে নাও সেটা অন্য কথা। এই আয়াতটি অবতীর্ণ হওয়ার পর আমাদের মধ্যে প্রত্যেকেই ভাল ভাল খেজুর নিয়ে আসতেন। ( ইবনে জারীর ) ইবনে আবি হাতিমের ( রঃ ) গ্রন্থে বর্ণিত আছে যে, মানুষ হালকা ধরনের খেজুর ও খারাপ ফল দানের জন্যে বের করতো। ফলে এই আয়াতটি অবতীর্ণ হয় এবং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এই রকম জিনিস দান করতে নিষেধ করেন। হযরত আবদুল্লাহ বিন মাগফাল ( রাঃ ) বলেন যে, মুমিনের উপার্জন কখনও জঘন্য হতে পারে না। ভাবার্থ এই যে, তোমরা। বাজে জিনিস দান করো না। মুসনাদ-ই-আহমাদের মধ্যে হাদীস রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট গো-সাপের ( গুইসাপ ) গোত আনা হলে তিনি নিজেও খেলেন না এবং কাউকে খেতে নিষেধও করলেন না। হযরত আয়েশা ( রাঃ ) বললেনঃ “ কোন মিসকীনকে দেবো কি: রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বললেনঃ তোমরা নিজেরা যা খেতে চাও না তা অপরকে খেতে দিও না । হযরত বারা ( রাঃ ) বলেনঃ “ যখন তোমাদের কারও উপর কোন দাবী থাকে এবং সে তোমাকে এমন জিনিস দেয় যা বাজে ও মূল্যহীন তবে তোমরা তা কখনও গ্রহণ করবে না, কিন্তু যখন তোমাদের হক নষ্ট হতে দেখবে তখন তোমরা চক্ষু বন্ধ করে তা নিয়ে নেবে ।হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেনঃ “ এর ভাবার্থ এই যে, তোমরা কাউকে উত্তম মাল ধার দিয়েছে, কিন্তু পরিশোধ করার সময় সে নিকৃষ্ট মাল নিয়ে আসছে, এইরূপ অবস্থায় তোমরা কখনও ঐ মাল গ্রহণ করবে না । আর যদি গ্রহণ করও তবে মূল্য কমিয়ে দিয়ে তা গ্রহণ করবে। তাহলে যে জিনিস তোমরা নিজেদের হকের বিনিময়ে গ্রহণ কর না, তা তোমরা আল্লাহর হকের বিনিময়ে কেন দেবে: সুতরাং তোমরা উত্তম ও পছন্দনীয় মাল আল্লাহর পথে খরচ কর। এই অর্থই হচ্ছেঃ ( আরবি ) এই আয়াতটির। অর্থাৎ ‘তোমরা কখনও পুণ্য লাভ করতে পার না যে পর্যন্ত না তোমাদের পছন্দনীয় মাল হতে খরচ কর( ৩:৯২ ) অতঃপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ আল্লাহ যে তোমাদেরকে তাঁর পথে উত্তম ও পছন্দনীয় মাল খরচ করার নির্দেশ প্রদান করলেন, এই জন্যে তোমরা এই কথা বুঝে নিও না যে, আল্লাহ তোমাদের ( আরবি ) মুখাপেক্ষী। না, না, তিনি তো সম্পূর্ণরূপে অভাব মুক্ত। তিনি কারও প্রত্যাশী নন। বরং তোমরা সবাই তার মুখাপেক্ষী। তাঁর নির্দেশ শুধু এই জন্যেই যে, দরিদ্র লোকেরাও যেন দুনিয়ার নিয়ামতসমূহ হতে বঞ্চিত না থাকে। যেমন অন্য জায়গায় কুরবানীর হুকুমের পরে বলেছেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ আল্লাহর নিকট কুরবানীর গোশতও পৌছে না এবং রক্তও পৌছে না; কিন্তু তাঁর নিকট তোমাদের সংযমশীলতা পৌছে থাকে ( ২২:৩৭ )।' তিনি বিপুল দাতা। তাঁর ধনভাণ্ডারে কোন কিছুর স্বল্পতা নেই। হালাল ও পবিত্র মাল হতে সাদকা বের করে আল্লাহর অনুগ্রহ ও মহাদানের প্রতি লক্ষ্য কর। এর বহুগুণ বৃদ্ধি করে তিনি তোমাদেরকে প্রতিদান প্রদান করবেন। তিনি দরিদ্রও নন, অত্যাচারীও নন। তিনি প্রশংসিত। সমস্ত কথায় ও কাজে তারই প্রশংসা করা হয়। তিনি ছাড়া কেউ উপাসনার যোগ্য নয়। তিনি সারা জগতের পালন কর্তা। তিনি ব্যতীত কেউ কারও পালন কর্তা নয়। হাদীস শরীফে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ বানী আদমের মনে শয়তান এক ধারণা জন্মিয়ে থাকে এবং ফেরেশতা এক ধারণা জন্মিয়ে থাকে। শয়তান দুষ্টামি ও সত্যকে অবিশ্বাস করার প্রতি উত্তেজিত করে এবং ফেরেশতা সৎকাজের প্রতি এবং সত্যকে স্বীকার করার প্রতি উৎসাহিত করে। যার মনে এই ধারণা আসবে সে যেন আল্লাহর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং জেনে নেয় যে, এটা আল্লাহর পক্ষ হতে হয়েছে। আর যার মনে ঐ ধারণা আসবে সে যেন আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে। শেষে ( আরবি ) ( ২:২৬৮ ) এই আয়াতটি তিনি পাঠ করেন। ( তিরমিযী ) এই হাদীসটি হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ ( রাঃ ) হতে মাওকুফ রূপেও বর্ণিত আছে। পবিত্র আয়াতটির ভাবার্থ এই যে, আল্লাহ তা'আলার পথে খরচ করতে শয়তান বাধা দেয় এবং মনে কু-ধারণা জন্মিয়ে দেয় যে, এইভাবে খরচ করলে সে দরিদ্র হয়ে যাবে। এই কাজ হতে বিরত রাখার পর তাকে পাপের কাজের প্রতি উৎসাহ প্রদান করে এবং আল্লাহর অবাধ্যতার কাজে, অবৈধ কাজে এবং সত্যের বিরুদ্ধাচরণের কাজে উত্তেজিত করে। পক্ষান্তরে আল্লাহ তা'আলা এর বিপরীত নির্দেশ দেন যে, সে যেন তাঁর পথে খরচ করা হতে বিরত না হয় এবং শয়তানের, ধমকের উল্টো বলেন যে, ঐ দানের বিনিময়ে তিনি তার পাপসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আর সে যে তাকে দরিদ্র হয়ে যাওয়ার ভয় দেখাচ্ছে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আল্লাহ তাকে তার সীমাহীন অনুগ্রহের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে বলছেন। তাঁর চেয়ে অধিক দাতা, দয়ালু ও অনুগ্রহশীল আর কে হতে পারে: আর পরিণামের জ্ঞান তার অপেক্ষা বেশী কার থাকতে পারে। এখানে ‘হিকমত’ শব্দের অর্থ হচ্ছে কুরআন কারীম ও হাদীস শরীফের পূর্ণ পারদর্শিতা লাভ, যার দ্বারা রহিতকৃত ও রহিতকারী, স্পষ্ট ও অস্পষ্ট, পূর্বের ও পরের, হালাল ও হারামের এবং উপমার আয়াতসমূহের পূর্ণ পরিচয় লাভ হয়। ভাল-মন্দ পড়তে তো সবাই পারে কিন্তু ওর ব্যাখ্যা ও অনুধাবন হচ্ছে ঐ হিকমত, যা মহান আল্লাহ যাকে ইচ্ছা দান করে থাকেন। আর যাকে এই হিকমত দান করা হয় সে প্রকৃত ভাবার্থ জানতে পারে এবং কথার প্রকৃত তাৎপর্য অনুধাবন করতে পারে। তার মুখে সঠিক ভাবার্থ উচ্চারিত হয়। সত্য জ্ঞান ও সঠিক অনুধাবন সে লাভ করে বলেই তার অন্তরে আল্লাহর ভয় প্রতিষ্ঠিত হয়। মারফু হাদীসেও রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ ‘হিকমতের মূল হচ্ছে আল্লাহর ভয়। পৃথিবীতে এইরূপ বহু লোক রয়েছে যারা ইহলৌকিক বিদ্যায় বড়ই পারদর্শী। দুনিয়ার বিষয়সমূহে তারা পূর্ণ জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে থাকে। কিন্তু তারা ধর্ম বিষয়ে একেবারেই অন্ধ। আবার পৃথিবীতে বহু লোক এমনও রয়েছেন যারা ইহলৌকিক বিদ্যায় দুর্বল বটে, কিন্তু শরীয়তের বিদ্যায় তারা বড়ই পারদর্শী। সুতরাং এটাই ঐ হিকমত যা আল্লাহ তা'আলা এঁদেরকে দিয়েছেন এবং ওরদেরকে বঞ্চিত রেখেছেন। সুদ্দী ( রঃ ) বলেন যে, এখানে হিকমতের ভাবার্থ হচ্ছে নবুওয়াত'। কিন্তু সঠিক কথা এই যে, হিকমত' শব্দটির মধ্যে এই সবগুলোই মিলিত রয়েছে। আর নবুওয়াতও হচ্ছে ওর উঁচু ও বড় অংশ এবং এটা শুধু নবীদের ( আঃ ) জন্যেই নির্দিষ্ট রয়েছে। তারা ছাড়া এটা কেউ লাভ করতে পারে না। কিন্তু যারা নবীদের অনুসারী তাদেরকেও আল্লাহ পাক হিকমতের অন্যান্য অংশ হতে বঞ্চিত রাখেননি। সত্য জ্ঞান ও সঠিক অনুধাবনরূপ সম্পদ তাদেরকেও দান করা হয়েছে। কোন কোন হাদীসে রয়েছে যে, যে ব্যক্তি কুরআন মাজীদ মুখস্থ করেছে, তার স্কন্ধদ্বয়ের মধ্যস্থলে নবুওয়াত চড়ে বসে; কিন্তু তার নিকট ওয়াহী করা হয় না। কিন্তু অপরপক্ষে বলা হয়েছে যে, হাদীসটি দুর্বল। কেননা বর্ণিত আছে যে, এটা হযরত আবদুল্লাহ বিন আমরের ( রাঃ ) নিজস্ব উক্তি। মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে। হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে তিনি বলেনঃ “ আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলতে শুনেছিঃ দুই ব্যক্তি ছাড়া কারও প্রতি হিংসা করা যায় না । এক ঐ ব্যক্তি যাকে আল্লাহ মাল-ধন দিয়েছেন। অতঃপর তাকে ঐ মাল তার পথে খরচ করার তওফীক প্রদান করেছেন। দ্বিতীয় ঐ ব্যক্তি যাকে আল্লাহ প্রজ্ঞা দান করেছেন, অতঃপর সে সেই প্রজ্ঞা অনুযায়ী মীমাংসা করে এবং তা শিক্ষা দিয়ে থাকে। উপদেশ তারাই গ্রহণ করে থাকে যারা জ্ঞান ও বিবেকের অধিকারী। অর্থাৎ যারা আল্লাহর কালাম ও রাসূলের হাদীস পড়ে বুঝবার চেষ্টা করে, কথা মনে রাখে এবং ভাবার্থের প্রতি মনোযোগ দেয় তারাই ভাবার্থ উপলব্ধি করতে পারে। সুতরাং উপদেশ দ্বারা তারাই উপকৃত হয়।

সূরা বাকারাহ্ আয়াত 269 সূরা

يؤتي الحكمة من يشاء ومن يؤت الحكمة فقد أوتي خيرا كثيرا وما يذكر إلا أولو الألباب

سورة: البقرة - آية: ( 269 )  - جزء: ( 3 )  -  صفحة: ( 45 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. আল্লাহ যেসব গৃহকে মর্যাদায় উন্নীত করার এবং সেগুলোতে তাঁর নাম উচ্চারণ করার আদেশ দিয়েছেন, সেখানে
  2. তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা
  3. যারা বলেঃ আমরা নাছারা, আমি তাদের কাছ থেকেও তাদের অঙ্গীকার নিয়েছিলাম। অতঃপর তারাও যে উপদেশ
  4. হে আমার পিতা, শয়তানের এবাদত করো না। নিশ্চয় শয়তান দয়াময়ের অবাধ্য।
  5. অতঃপর সে গ্রহে গেল এবং একটি ঘৃতেপক্ক মোটা গোবৎস নিয়ে হাযির হল।
  6. জীবিত ও মৃতদেরকে?
  7. তাদের কাহিনীতে বুদ্ধিমানদের জন্য রয়েছে প্রচুর শিক্ষণীয় বিষয়, এটা কোন মনগড়া কথা নয়, কিন্তু যারা
  8. মানুষ কি স্মরণ করে না যে, আমি তাকে ইতি পূর্বে সৃষ্টি করেছি এবং সে তখন
  9. তারপর আমি পাকড়াও করেছি-ফেরাউনের অনুসারীদেরকে দুর্ভিক্ষের মাধ্যমে এবং ফল ফসলের ক্ষয়-ক্ষতির মাধ্যমে যাতে করে তারা
  10. এবং ধন-ভান্ডার ও মনোরম স্থানসমূহ থেকে।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা বাকারাহ্ ডাউনলোড করুন:

সূরা Baqarah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Baqarah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Sunday, December 22, 2024

Please remember us in your sincere prayers