কোরান সূরা আনকাবূত আয়াত 27 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Ankabut ayat 27 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা আনকাবূত আয়াত 27 আরবি পাঠে(Ankabut).
  
   

﴿وَوَهَبْنَا لَهُ إِسْحَاقَ وَيَعْقُوبَ وَجَعَلْنَا فِي ذُرِّيَّتِهِ النُّبُوَّةَ وَالْكِتَابَ وَآتَيْنَاهُ أَجْرَهُ فِي الدُّنْيَا ۖ وَإِنَّهُ فِي الْآخِرَةِ لَمِنَ الصَّالِحِينَ﴾
[ العنكبوت: 27]

আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকুব, তাঁর বংশধরদের মধ্যে নবুওয়ত ও কিতাব রাখলাম এবং দুনিয়াতে তাঁকে পুরস্কৃত করলাম। নিশ্চয় পরকালে ও সে সৎলোকদর অন্তর্ভূক্ত হবে। [সূরা আনকাবূত: 27]

Surah Al-Ankabut in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Ankabut ayat 27


আর আমরা তাঁকে দিয়েছিলাম ইসহাক ও ইয়াকুবকে, আর তাঁর বংশধরদের মধ্যে আমরা প্রতিষ্ঠা করেছিলাম নবুওৎ ও ধর্মগ্রন্থ, আর আমরা তাঁর পুরস্কার দুনিয়াতেই তাঁকে প্রদান করেছিলাম, আর পরকালে তিনি আলবৎ হবেন সৎকর্মীদেরই অন্তর্ভুক্ত।


Tafsir Mokhtasar Bangla


২৭. আর আমি ইব্রাহীম ( আলাইহিস-সালাম ) কে দান করেছিলাম ইসহাকের ন্যায় একজন নেক সন্তান ও তার ছেলে ইয়া’ক‚ব। উপরন্তু আমি তাঁর সন্তানদের মাঝেই রেখেছিলাম নবুওয়াত ও আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত কিতাব। আর সুপ্রশংসা ও নেককার সন্তানদের মাধ্যমেই আমি দুনিয়াতে তাঁকে সত্যের উপর ধৈর্য ধারণের প্রতিদান দিয়েছি। উপরন্তু পরকালে তাঁকে নেককারদেরই প্রতিদান দেয়া হবে। দুনিয়ার প্রাপ্তির দরুন আল্লাহ তা‘আলা পরকালে তাঁর জন্য যে সম্মানজনক প্রতিদানের ব্যবস্থা রেখেছেন তা সামান্যও কম করা হবে না।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


আমি ইব্রাহীমকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়াকুব এবং তার বংশধরদের জন্য স্থির করলাম নবুঅত ও গ্রন্থ[১] এবং আমি তাকে পৃথিবীতে পুরস্কৃত করলাম;[২] পরকালেও সে নিশ্চয়ই সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম হবে। [৩] [১] অর্থাৎ, ইসহাক ( আঃ ) এর ঔরসে ইয়াকূব ( আঃ )-এর জন্ম হয়। ( ইয়াকূব (আঃ )-এর অপর নাম ছিল ইস্রাঈল।) যাঁর ঔরসে বানী ইস্রাঈল বংশের সূত্রপাত হয় এবং তাদের মধ্যেই সমস্ত নবী আগমন করেন ও আসমানী কিতাব অবতীর্ণ হয়। শেষ পর্যায়ে নবী মুহাম্মাদ ( সাঃ ) ইবরাহীম ( আঃ )-এর দ্বিতীয় পুত্র ইসমাঈল ( আঃ )-এর বংশে জন্মলাভ করে নবী হন এবং তাঁর উপর কুরআন অবতীর্ণ হয়। [২] এখানে পুরস্কার বা প্রতিদান বলতে পৃথিবীর জীবিকা এবং সুনাম ও সুখ্যাতিও। অর্থাৎ, পৃথিবীর সকল ধর্মের লোক ( খ্রিষ্টান, ইয়াহুদী এমনকি পৌত্তলিকরাও ) ইবরাহীম ( আঃ )-কে সম্মান ও শ্রদ্ধেয়ভাজন গণ্য করে থাকে। আর মুসলিমরা তো ইবরাহীম ( আঃ )-এর ধর্মাদর্শের অনুসারী। তিনি তাদের নিকট সম্মানের পাত্র হবেন না কেন? [৩] অর্থাৎ, পরকালেরও তিনি সুউচ্চ মর্যাদার অধিকারী এবং সৎ লোকদের দলভুক্ত হবেন। এই বিষয়টি অন্যত্র এভাবে বলা হয়েছে, {وَلَقَدِ اصْطَفَيْنَاهُ فِي الدُّنْيَا وَإِنَّهُ فِي الآخِرَةِ لَمِنَ الصَّالِحِينَ} ( ১৩০ ) سورة البقرة {وَآتَيْنَاهُ فِي الْدُّنْيَا حَسَنَةً وَإِنَّهُ فِي الآخِرَةِ لَمِنَ الصَّالِحِينَ } ( ১২২ ) سورة النحل

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আর আমরা ইবরাহীমকে দান করলাম ইসহাক ও ইয়া‘কূব [] এবং তাঁর বংশধরদের জন্য স্থির করলাম নবূওয়ত ও কিতাব। আর আমরা তাকে তার প্রতিদান দুনিয়ায় দিয়েছিলাম; এবং আখেরাতেও তিনি নিশ্চয়ই সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম হবেন []। [] ইসহাক আলাইহিস সালাম ছিলেন তাঁর পুত্র এবং ইয়াকূব ছিলেন পৌত্র। এখানে ইবরাহীম আলাইহিস সালামের অন্যান্য পুত্রদের উল্লেখ না করার কারণ হচ্ছে এই যে, ইবরাহীম সন্তানদের মাদ্‌ইয়ানী শাখায় কেবলমাত্র শু‘আইব আলাইহিস সালামই নবুওয়াত লাভ করেন এবং ইসমাঈলী শাখায় মুহাম্মাদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের নবুওয়াত লাভ পর্যন্ত আড়াই হাজার বছরে আর কোন নবী আসেননি। পক্ষান্তরে ইসহাক আলাইহিস সালাম থেকে যে শাখাটি চলে তার মধ্যে একের পর এক ঈসা আলাইহিস সালাম পর্যন্ত নবুওয়াত ও কিতাবের নেয়ামত প্রদত্ত হতে থাকে। [] অর্থাৎ আল্লাহ্‌ তা‘আলা ইবরাহীম আলাইহিস সালাম-এর আত্মত্যাগ ও অন্যান্য সৎকর্মের প্রতিদান দুনিয়াতেও দান করেছেন। তাঁকে মানুষের প্রিয় ও নেতা করেছেন। যারাই ইবরাহীম আলাইহিস সালামের দাওয়াতকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছিল তারা সবাই দুনিয়ার বুক থেকে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং এমনভাবে বিলুপ্ত হয়ে গেছে যে, আজ দুনিয়ার কোথাও তাদের কোন নাম নিশানাও নেই। কিন্তু যে ব্যাক্তিকে আল্লাহ্‌র কালেমা বুলন্দ করার অপরাধে তারা জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে দিতে চেয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত যাকে সহায়-সম্বলহীন অবস্থায় স্বদেশভূমি ত্যাগ করতে হয়েছিল তাকে আল্লাহ্‌ এমন সফলতা দান করেন যে, দুনিয়াতে তাকে উত্তম স্বচ্ছন্দ রিযিক, প্রশস্ত আবাস, উত্তম নেককার স্ত্রী, সুপ্ৰশংসা প্ৰদান করা হয়েছে। তাছাড়া চার হাজার বছর থেকে দুনিয়ার বুকে তার নাম সমুজ্জ্বল রয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত থাকবে। দুনিয়ার সকল মুসলিম, নাসারা ও ইয়াহূদী রাব্বুল আলামীনের সেই খলীল তথা বন্ধুকে একযোগে নিজেদের নেতা বলে স্বীকার করে। একমাত্র সেই ব্যাক্তি এবং তার সন্তানদের থেকেই তারা হিদায়াতের আলোকবর্তিকা লাভ করতে পেরেছে। আখেরাতে তিনি যে মহাপুরস্কার লাভ করবেন তাতো তার জন্য নির্ধারিত হয়েই আছে কিন্তু এ দুনিয়ায়ও তিনি যে মর্যাদা লাভ করেছেন তা দুনিয়ার বৈষয়িক স্বাৰ্থ উদ্ধার প্রচেষ্টায় জীবনপাতকারীদের একজনও আজ পর্যন্ত লাভ করতে পারেনি। [ দেখুন, ইবন কাসীর; সা‘দী; আদওয়াউল বায়ান ] এ থেকে জানা গেল যে, কর্মের আসল প্রতিদান তো আখেরাতে পাওয়া যাবে, কিন্তু তার কিছু অংশ দুনিয়াতেও নগদ দেয়া হয়। অনেক নির্ভরযোগ্য হাদীসে অনেক সৎকর্মের পার্থিব উপকারিতা ও অসৎকর্মের পার্থিব অনিষ্ট বর্ণিত হয়েছে।

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


২৬-২৭ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তা'আলা খবর দিচ্ছেন যে, হযরত লূত ( আঃ ) হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর উপর ঈমান আনয়ন করেন। বলা হয় যে, হযরত লূত ( আঃ ) হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর ভ্রাতুস্পুত্র ছিলেন। তিনি ছিলেন নূত ( আঃ ) ইবনে হারূন ইবনে আযর। তাঁর পুরো কওমের মধ্যে তাঁর উপর ঈমান এনেছিলেন শুধু হযরত লূত ( আঃ ) এবং তার স্ত্রী হযরত সারা ( রাঃ )।একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, ঐ যুগীয় যালিম বাদশাহ যখন তার সিপাইদের মাধ্যমে হযরত সারা ( রাঃ )-কে তার নিকট আনিয়ে নেয় তখন হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) হযরত সারা ( রাঃ )-কে বলেছিলেনঃ “ দেখো, আমি বাদশাহর সামনে বলেছি যে, তোমার সাথে আমার ভাই-বোনের সম্পর্ক রয়েছে । তুমিও একথাই বলবে যে, তুমি আমার বোন। কেননা, বর্তমানে সারা দুনিয়ায় আমি ও তুমি ছাড়া আর কোন মুমিন নেই। সম্ভবতঃ একথা দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য ছিল যে, স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মুমিন নেই। হযরত লূত ( আঃ ) তো হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর উপর ঈমান এনেছিলেন বটে, কিন্তু তখনই তিনি হিজরত করে সিরিয়া চলে গিয়েছিলেন। অতঃপর তাঁকে হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর জীবদ্দশাতেই আহলে সুয়ূমের নিকট নবী করে পাঠানো হয়, যেমন ইতিপূর্বে এর বর্ণনা গত হয়েছে এবং সামনেও আসছে।( আরবি ) ( তিনি বললেনঃ আমি আমার প্রতিপালকের উদ্দেশ্যে দেশ ত্যাগ করছি ), এখানে ( আরবি )-এর মধ্যস্থিত ( আরবি ) সর্বনামটি সম্ভবতঃ হযরত লুত ( আঃ )-এর দিকে ফিরেছে। কেননা, আলোচ্য দুই জনের মধ্যে তিনিই নিকটবর্তী। আবার এও হতে পারে যে, সর্বনামটি হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর দিকে ফিরেছে যেমন হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হযরত যহ্হাক ( রাঃ ) এটা বর্ণনা করেছেন। তাহলে হয়তো হযরত লূত ( আঃ )-এর ঈমান আনয়নের পরে হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) তার কওমের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেন এবং ইচ্ছা প্রকাশ করেন যে, তিনি সেখান হতে অন্য জায়গায় চলে যাবেন এবং হয়তো তথাকার লোকেরা আল্লাহ-ভক্ত হবে। শক্তি ও সম্মান তো আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং মুমিনদেরই। আল্লাহ তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।হযরত কাতাদা ( রঃ ) বলেন যে, হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) কফা হতে হিজরত করে সিরিয়ার দিকে গিয়েছিলেন। তিনি বলেন, আমাদের নিকট বর্ণনা করা হয়েছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ হিজরতের পরের হিজরত হবে হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর হিজরতের দিকে । ঐ সময় ভূ-পৃষ্ঠে দুষ্ট ও পাপিষ্ঠ লোকেরা অবস্থান করবে, যাদেরকে যমীন থুথু দেবে এবং আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে ঘৃণা করবেন। আগুন তাদেরকে শূকর ও বানরের সাথে হাঁকাতে থাকবে। তারা ওদের সাথেই রাত্রি যাপন করবে এবং তাদের উচ্ছিষ্ট ভক্ষণ করবে।”অন্য রিওয়াইয়াতে আছে যে, তাদের মধ্যে যারা পিছনে থাকবে, এই অগ্নি তাদেরকে খেয়ে ফেলবে। নবী ( সঃ ) আরো বলেনঃ “ আমার উম্মতের মধ্য হতে এমন লোকও বের হবে যারা কুরআন পাঠ করবে বটে, কিন্তু তা তাদের কণ্ঠের নীচে নামবে না । তাদের একটি দল শেষ হয়ে যাবার পর আর একটি দল দাঁড়িয়ে যাবে।” তিনি বিশ বারেরও অধিক এর পুনরাবৃত্তি করলেন। অতঃপর তিনি বললেনঃ “ তাদের শেষ দলটির মধ্য হতে দাজ্জাল বের হবে । হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমাদের উপর একটা যুগ এমন ছিল যে, আমরা আমাদের একটা মুসলমান ভাই-এর জন্যে দিরহাম ( রৌপ্য মুদ্রা ) ও দীনারকে ( স্বর্ণ মুদ্রা ) কিছুই মনে করতাম না। আমরা আমাদের সম্পদকে আমাদের মুসলমান ভাইদের সম্পদই মনে করতাম। তারপর এমন যুগ আসলো যে, আমাদের সম্পদ আমাদের কাছে আমাদের মুসলমান ভাইদের চেয়ে প্রিয় মনে হতে লাগলো। আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলতে শুনেছিঃ “ যদি তোমরা বলদের লেজের পিছনে লেগে থাকো এবং ব্যবসা । বাণিজ্যে লিপ্ত হয়ে পড়, আর আল্লাহর পথে জিহাদ করা পরিত্যাগ কর তবে আল্লাহ তা'আলা তোমাদের গলদেশে লাঞ্ছনার হাসুলী পরিয়ে দিবেন, যে পর্যন্ত তোমরা সেখানেই ফিরে আসবে যেখানে ছিলে এবং যে পর্যন্ত না তাওবা করবে।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) অতঃপর তিনি ঐ হাদীসটি বর্ণনা করেন যা উপরে বর্ণিত হয়েছে এবং বলেনঃ “ আমার উম্মতের মধ্যে এমন লোকও হবে যারা কুরআন পাঠ করবে বটে, কিন্তু মন্দ আমল করবে, ফলে কুরআন তাদের কণ্ঠ হতে নীচের দিকে নামবে । তাদের ইলম বা বিদ্যাবুদ্ধি দেখে তোমরা নিজেদের ইলমকে তুচ্ছ জ্ঞান করবে। তারা আহলে ইসলাম বা মুসলমানদেরকে হত্যা করে ফেলবে। সুতরাং যখন এ লোকগুলো বের হবে তখন তোমরা তাদেরকে হত্যা করে ফেলো। আবার বের হলে আবারও হত্যা করো এবং পুনরায় বের হলে পুনরায় তাদেরকে হত্যা করে ফেলবে। যারা তাদেরকে হত্যা করবে তারা কতই না ভাগ্যবান এবং যারা তাদের হাতে নিহত হবে তারাও ভাগ্যবান। যখন তাদের দল বের হবে তখন আল্লাহ তা'আলা তাদেরকে ধ্বংস করে দিবেন। আবার তারা বের হবে, আবারও তিনি তাদেরকে ধ্বংস করবেন। ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন) অনুরূপভাবে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বিশবার বা তার চেয়েও অধিকবার একথাই বলেন। এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ আমি ইবরাহীম ( আঃ )-কে দান করলাম ইসহাক ( আঃ ) ও ইয়াকূব ( আঃ )। যেমন তিনি অন্য জায়গায় বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ যখন সে তাদের হতে ও তারা আল্লাহ ব্যতীত যাদের ইবাদত করতো ঐ সব হতে পৃথক হয়ে গেল তখন আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ( আঃ ) ও ইয়াকূব ( আঃ ) এবং প্রত্যেককে নবী করলাম ।" ( ১৯:৪৯ ) এতে এরও ইঙ্গিত রয়েছে যে, তাঁর জীবদ্দশায় তাঁর পৌত্র হযরত ইয়াকূব ( আঃ ) জন্মগ্রহণ করবেন। হযরত ইসহাক ( আঃ ) ছিলেন তাঁর পুত্র এবং হযরত ইয়াকূব ( আঃ ) ছিলেন অতিরিক্ত। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ আমি তাকে দান করলাম ইসহাক ( আঃ )-কে এবং অতিরিক্ত দান করলাম ইয়াকূবকে ( আঃ )( ২১:৭২ ) যেমন আর এক জায়গায় বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ আমি তাকে ( সারাকে রাঃ ) শুভ সংবাদ দিলাম ইসহাক ( আঃ )-এর এবং তার পিছনে ( পরে ) ইয়াকূব ( আঃ )-এর ।( ১১:৭১ ) অর্থাৎ হে ইবরাহীম ( আঃ )! তোমার জীবদ্দশাতেই তোমার সন্তানের সন্তান হবে, যার ফলে তোমাদের দু'জনের চক্ষু ঠাণ্ডা হবে। এর দ্বারা সাব্যস্ত হলো যে, হযরত ইয়াকূব ( আঃ ) হযরত ইসহাক ( আঃ )-এর পুত্র ছিলেন। সুন্নাতে নববী ( সঃ ) দ্বারাও এটা প্রমাণিত। কুরআন কারীমের অন্য আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ ইয়াকূব ( আঃ )-এর নিকট যখন মৃত্যু এসেছিল তোমরা কি তখন উপস্থিত ছিলে? সে যখন পুত্রদেরকে জিজ্ঞেস করেছিলঃ আমার পরে তোমরা কিসের ইবাদত করবে? তারা উত্তরে বলেছিল ও আমরা আপনার মা’রূদের ও আপনার পিতৃপুরুষ ইবরাহীম ( আঃ ), ইসমাঈল ( আঃ ) ও ইসহাক ( আঃ )-এর মা'বুদেরই ইবাদত করবো । তিনি একমাত্র মা’দ এবং আমরা তাঁর নিকট আত্মসমর্পণকারী।” ( ২:১৩৩ )।সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে রয়েছেঃ “ কারীম ইবনুল কারীম ইবনুল কারীম ইবনুল কারীম ইউসুফ ইবনু ইয়াকূব ইবনু ইসহাক ইবনু ইবরাহীম ( আলাইহিমুসসালাম )”হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত ইসহাক ( আঃ ) হযরত ইয়াকূব ( আঃ ) হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর পুত্র ছিলেন, এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো পুত্রের পুত্র, ঔরষজাত পুত্র নয়। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) কেন, একজন নিম্ন স্তরের মানুষও এ ব্যাপারে হোঁচট খেতে পারে না।মহান আল্লাহ বলেনঃ তার বংশধরদের জন্যে আমি স্থির করলাম নবুওয়াত ও কিতাব। হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) খলীলুল্লাহ উপাধিতে ভূষিত এবং তাঁকে ইমাম বলা হয়। তার পরে তারই বংশধরের মধ্যে নবুওয়াত ও হিকমত থেকে যায়। বানী ইসরাঈলের সমস্ত নবী হযরত ইয়াকূব ( আঃ ) ইবনে ইসহাক ( আঃ ) ইবনে ইবরাহীম ( আঃ )-এর বংশধর হতেই হয়েছেন। হযরত ঈসা ( আঃ ) পর্যন্ত এই ক্রম এভাবেই চলে এসেছে। বানী ইসরাঈলের এই শেষ নবী পরিষ্কারভাবে স্বীয় উম্মতকে বলে দিয়েছিলেনঃ “ আমি তোমাদেরকে নবী আরবী, কুরায়েশী, হাশেমী, শেষ রাসূল, হযরত আদম ( আঃ )-এর সন্তানদের নেতা হযরত মুহাম্মাদ ( সঃ )-এর সুসংবাদ দিচ্ছি, যাকে আল্লাহ তা'আলা মনোনীত করেছেন । তিনি হযরত ইসমাঈল ( আঃ )-এর বংশোদ্ভূত ছিলেন। তিনি ছাড়া অন্য কোন নবী হযরত ইসমাঈল ( আঃ )-এর সন্তানদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ আমি তাকে দুনিয়ায় পুরস্কৃত করেছিলাম এবং আখিরাতেও সে নিশ্চয়ই সৎকর্মপরায়ণদের অন্যতম হবে। হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-কে আল্লাহ তাআলা দুনিয়ায় স্বচ্ছলতা দান করেছিলেন, আর দান করেছিলেন সতী-সাধ্বী স্ত্রী, পবিত্র বাসভূমি, উত্তম প্রশংসা এবং উত্তম আলোচনা। সারা দুনিয়াবাসীর অন্তরে তিনি তাঁর মহব্বত জাগিয়ে তোলেন। তাকে তিনি তাঁর আনুগত্যের তাওফীক দান করেন। পুরোমাত্রায় তিনি মহামহিমান্বিত আল্লাহর আনুগত্য করে গিয়েছিলেন। আখিরাতেও তিনি সৎকর্মশীলদের অন্যতম হবেন। যেমন আল্লাহ অন্য জায়গায় বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ নিশ্চয়ই ইবরাহীম ( আঃ ) ছিলেন এমন ব্যক্তি যিনি আল্লাহর ফরমাবর্দারী অর্থাৎ আদেশ পালনে সদা নিয়োজিত থাকতেন এবং তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না.........
নিশ্চয়ই, তিনি আখিরাতেও সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত হবেন ।
( ১৬:১২০-১২২ )

সূরা আনকাবূত আয়াত 27 সূরা

ووهبنا له إسحاق ويعقوب وجعلنا في ذريته النبوة والكتاب وآتيناه أجره في الدنيا وإنه في الآخرة لمن الصالحين

سورة: العنكبوت - آية: ( 27 )  - جزء: ( 20 )  -  صفحة: ( 399 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. যখন মূসা তাঁর পরিবারবর্গকে বললেনঃ আমি অগ্নি দেখেছি, এখন আমি সেখান থেকে তোমাদের জন্যে কোন
  2. মানুষ তো সৃজিত হয়েছে ভীরুরূপে।
  3. আর যখন তাদের কছে পৌঁছে কোন সংবাদ শান্তি-সংক্রান্ত কিংবা ভয়ের, তখন তারা সেগুলোকে রটিয়ে দেয়।
  4. সত্য যদি তাদের কাছে কামনা-বাসনার অনুসারী হত, তবে নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল এবং এগুলোর মধ্যবর্তꦣ2496; সবকিছুই
  5. মানুষের ধন-সম্পদে তোমাদের ধন-সম্পদ বৃদ্ধি পাবে, এই আশায় তোমরা সুদে যা কিছু দাও, আল্লাহর কাছে
  6. আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতাগণ নবীর প্রতি রহমত প্রেরণ করেন। হে মুমিনগণ! তোমরা নবীর জন্যে রহমতের
  7. না তাদের কোন সিঁড়ি আছে, যাতে আরোহণ করে তারা শ্রবণ করে? থাকলে তাদের শ্রোতা সুস্পষ্ট
  8. তিনি বললেনঃ অতঃপর তোমাদের প্রধান উদ্দেশ্য কি হে আল্লাহর প্রেরিতগণ ?
  9. কেবল তারাই আমার আয়াতসমূহের প্রতি ঈমান আনে, যারা আয়াতসমূহ দ্বারা উপদেশপ্রাপ্ত হয়ে সেজদায় লুটিয়ে পড়ে
  10. বাদশাহ মহিলাদেরকে বললেনঃ তোমাদের হাল-হাকিকত কি, যখন তোমরা ইউসুফকে আত্মসংবরণ থেকে ফুসলিয়েছিলে? তারা বললঃ আল্লাহ

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আনকাবূত ডাউনলোড করুন:

সূরা Ankabut mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Ankabut শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত আনকাবূত  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত আনকাবূত  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত আনকাবূত  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত আনকাবূত  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত আনকাবূত  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত আনকাবূত  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত আনকাবূত  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত আনকাবূত  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত আনকাবূত  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত আনকাবূত  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত আনকাবূত  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত আনকাবূত  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত আনকাবূত  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত আনকাবূত  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত আনকাবূত  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত আনকাবূত  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত আনকাবূত  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত আনকাবূত  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত আনকাবূত  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত আনকাবূত  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত আনকাবূত  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত আনকাবূত  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত আনকাবূত  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত আনকাবূত  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত আনকাবূত  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Thursday, May 16, 2024

لا تنسنا من دعوة صالحة بظهر الغيب