কোরান সূরা হাদীদ আয়াত 27 তাফসীর
﴿ثُمَّ قَفَّيْنَا عَلَىٰ آثَارِهِم بِرُسُلِنَا وَقَفَّيْنَا بِعِيسَى ابْنِ مَرْيَمَ وَآتَيْنَاهُ الْإِنجِيلَ وَجَعَلْنَا فِي قُلُوبِ الَّذِينَ اتَّبَعُوهُ رَأْفَةً وَرَحْمَةً وَرَهْبَانِيَّةً ابْتَدَعُوهَا مَا كَتَبْنَاهَا عَلَيْهِمْ إِلَّا ابْتِغَاءَ رِضْوَانِ اللَّهِ فَمَا رَعَوْهَا حَقَّ رِعَايَتِهَا ۖ فَآتَيْنَا الَّذِينَ آمَنُوا مِنْهُمْ أَجْرَهُمْ ۖ وَكَثِيرٌ مِّنْهُمْ فَاسِقُونَ﴾
[ الحديد: 27]
অতঃপর আমি তাদের পশ্চাতে প্রেরণ করেছি আমার রসূলগণকে এবং তাদের অনুগামী করেছি মরিয়ম তনয় ঈসাকে ও তাকে দিয়েছি ইঞ্জিল। আমি তার অনুসারীদের অন্তরে স্থাপন করেছি নম্রতা ও দয়া। আর বৈরাগ্য, সে তো তারা নিজেরাই উদ্ভাবন করেছে; আমি এটা তাদের উপর ফরজ করিনি; কিন্তু তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্যে এটা অবলম্বন করেছে। অতঃপর তারা যথাযথভাবে তা পালন করেনি। তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাসী ছিল, আমি তাদেরকে তাদের প্রাপ্য পুরস্কার দিয়েছি। আর তাদের অধিকাংশই পাপাচারী। [সূরা হাদীদ: 27]
Surah Al-Hadid in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Hadid ayat 27
তারপর আমাদের রসূলগণকে তাঁদের পদচিহ্নে চলতে দিয়েছিলাম, আর মরিয়ম-পুত্র ঈসাকে আমরা অনুসরণ করিয়েছিলাম ও তাঁকে আমরা ইনজীল দিয়েছিলাম, আর যারা তাঁর অনুসরণ করেছিল তাদের অন্তরে আমরা সদয়তা ও করুণা দিয়েছিলাম। কিন্ত সন্ন্যাসবাদ -- তারাই এটি আবিস্কার করেছিল, আমরা তাদের প্রতি এটি লিপিবদ্ধ করি নি, শুধু আল্লাহ্র সন্তষ্টির অনুসন্ধান করা, কিন্ত তারা এটি পালন করে নি যেমনটা এটি পালনের যোগ্য ছিল। ফলে তাদের মধ্যের যারা ঈমান এনেছিল তাদের আমরা দিয়েছিলাম তাদের প্রতিদান, কিন্ত তাদের অধিকাংশই ছিল সত্যত্যাগী।
Tafsir Mokhtasar Bangla
২৭. অতঃপর আমি আমার রাসূলগণকে প্রেরণ করি। আমি তাঁদেরকে নিজেদের জাতির নিকট একের পর এক প্রেরণ করতে থাকি। এরপর ঈসা ইবনু মারইয়ামকে প্রেরণ করি ও তাঁকে ইঞ্জিল প্রদান করি। যারা তাঁর উপর ঈমান আনয়ন করেছে ও তাঁর অনুগত হয়েছে তাদের অন্তরে আমি দয়া-মায়া ঢেলে দিয়েছি। ফলে তারা পরস্পর ভালোবাসা ও দয়া-মায়ার বন্ধনে আবদ্ধ ছিলো। তবে তারা নিজেদের দ্বীনের মধ্যে বাড়াবাড়ি উদ্ভাবন করে। ফলে তারা নিজেদের জন্য হালাল কিছু কাজ পরিত্যাগ করলো যথা বিবাহ ও যাবতীয় উপভোগ। যা আমি তাদের নিকট কামনা করি নি। বরং তারা দ্বীনের মধ্যে নব উদ্ভাবন স্বরূপ নিজেদেরকে এতে বাধ্য করলো। বস্তুতঃ আমি তাদের নিকট কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি কমনার দাবি রেখেছিলাম। কিন্তু তারা তা করলো না। তাই তাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছে তাদেরকে তাদের প্রতিদান দিয়েছি। কিন্তু তাদের মধ্যকার অনেকেই মুহাম্মাদ ( সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) যা নিয়ে আগমন করেছেন সে ব্যাপারে আল্লাহর আনুগত্যের বাইরে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অতঃপর আমি তাদের অনুগামী করেছিলাম আমার রসূলগণকে এবং অনুগামী করেছিলাম মারয়্যাম তনয় ঈসাকে, আর তাকে দিয়েছিলাম ইঞ্জীল এবং তার অনুসারীদের অন্তরে দিয়েছিলাম করুণা ও দয়া;[১] কিন্তু সন্ন্যাসবাদ এটা তো তারা নিজেরা প্রবর্তন করেছিল,[২] আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের বিধান ছাড়া[৩] আমি তাদেরকে এ ( সন্ন্যাসবাদে )র বিধান দিইনি;[৪] অথচ এটাও তারা যথাযথভাবে পালন করেনি।[৫] সুতরাং তাদের মধ্যে যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছিল, তাদেরকে আমি তাদের পুরস্কার দিয়েছিলাম।[৬] আর তাদের অনেকেই সত্যত্যাগী। [১] رَأْفَةٌএর অর্থ নম্রতা, করুণা এবং رَحْمَةٌ এর অর্থ দয়া-দাক্ষিণ্য। অনুসারীদের বলতে ঈসা ( আঃ )-এর 'হাওয়ারী' ( শিষ্যগণ )। অর্থাৎ, তাদের অন্তরে পরস্পরের জন্য প্রেম-প্রীতির প্রেরণা সৃষ্টি করে দিয়েছিলাম। যেমন, সাহাবাবায়ে কিরাম ( রাঃ ) একে অপরের প্রতি দয়াশীল ও হিতার্থী ছিলেন। رُحْمَاءُ بَيْنَهُمْ ইয়াহুদীরা আপোসে এ রকম একে অপরের জন্য হিতাকাঙ্ক্ষী ও দরদী নয়, যে রকম ঈসা ( আঃ )-এর অনুসারীরা ছিলেন। [২] رَهْبَانِيَّةٌ হল رَهْبٌ ( ভয় ) ধাতু থেকে। অথবা رُهْبَانٌ ( সন্ন্যাসী ) এর সাথে সম্বদ্ধ। এই ক্ষেত্রে 'রা' হরফটির উপর পেশ হবে। কিংবা এটাকে رهبنة এর সাথে সম্বদ্ধ ধরে নেওয়া যায়। তবে এই ক্ষেত্রে 'রা' এর উপর যবর হবে। رَهبانية এর অর্থ হল, ( বৈরাগ্যবাদ বা সন্ন্যাসবাদ ) সংসার ত্যাগ করা ( ফকীরী নেওয়া )। অর্থাৎ, দুনিয়ার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে কোন জঙ্গলে বা মরুভূমিতে গিয়ে নির্জনে আল্লাহর উপাসনা-আরাধনা করা। এর পটভূমিকা হল, ঈসা ( আঃ ) এর পর এমন রাজাদের আগমন ঘটে, যারা তাওরাত ও ইঞ্জীলের মধ্যে বহু পরিবর্তন সাধন করে। যে কাজকে একটি দল মেনে নিতে পারেনি। উক্ত দল রাজাদের ভয়ে পাহাড়ের চূড়া ও গুহায় গিয়ে আশ্রয় গ্রহণ করে। এখান থেকেই তার সূচনা হয়। যার ভিত্তি স্থাপিত হয়েছিল পরিস্থিতির চাপে পড়ে। কিন্তু তাদের পরে আগত অনেক মানুষ তাদের বড়দের অন্ধ অনুকরণে দেশ ত্যাগ করাকে ইবাদতের একটি তরীকা বানিয়ে নেয় এবং নিজেকে গির্জা ও উপাসনালয়ে আবদ্ধ করে নেয়। আর এর জন্য দুনিয়ার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করাকে অত্যাবশ্যক গণ্য করে। এটাকেই আল্লাহ ابتداع ( মনগড়া ) বলে আখ্যায়িত করেছেন। [৩] অর্থাৎ, আমি তো তাদের উপর কেবল আমার সন্তুষ্টি লাভের পথ খোঁজ করা অপরিহার্য করেছিলাম। এর দ্বিতীয় অনুবাদ হল, তারা এ কাজ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য করেছিল। কিন্তু মহান আল্লাহ পরিষ্কার করে বলে দিলেন যে, দ্বীনে নিজের পক্ষ হতে বিদআত রচনা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করা যায় না। তাতে তা ( এই বিদআত ) দেখতে যতই সুন্দর হোক না কেন। আল্লাহর সন্তুষ্টি একমাত্র তাঁর আনুগত্যেই অর্জন হতে পারে। [৪] এটা পূর্বের কথারই তাকীদ স্বরূপ বলা হচ্ছে যে, এই বৈরাগ্য তাদের নিজেরই আবিষ্কার করা, আমি এর নির্দেশ দিইনি। [৫] অর্থাৎ, যদিও তারা উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করাই বলেছিল, কিন্তু তারা যথাযথভাবে তা পালন করেনি। যথাযথ তা পালন করলে বিদআত আবিষ্কার করার পরিবর্তে অনুসরণের পথ অবলম্বন করত। ( এর দ্বিতীয় অনুবাদঃ কিন্তু সন্ন্যাসবাদ এটা তো তারা নিজেরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রবর্তন করেছিল, আমি তাদেরকে এর বিধান দিইনি অথচ এটাও তারা যথাযথভাবে পালন করেনি। ) [৬] এরা হল সেই লোক, যারা ঈসা ( আঃ )-এর ধর্মে প্রতিষ্ঠিত ছিল।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
তারপর আমরা তাদের পিছনে অনুগামী করেছিলাম আমাদের রাসূলগণকে এবং অনুগামী করেছিলাম মারইয়াম-তনয় ঈসাকে, আর তাকে আমারা দিয়েছিলাম ইঞ্জীল এবং তার অনুসারীদের অন্তরে দিয়েছিলাম করুণা ও দয়া [ ১ ]। আর সন্ন্যাসবাদ [ ২ ]--- এটা তো তারা নিজেরাই আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য প্রবর্তন করেছিল। আমরা তাদেরকে এটার বিধান দেইনি ; অথছ এটাও ওরা যথাযথভাবে পালন করেনি [ ৩ ]। অতঃপর তাদের মধ্যে যারা ঈমান এনেছিল, তাদেরকে আমারা দিয়েছিলাম তাদের পুরস্কার। আর তাদের অধিকাংশই ছিল ফাসিক। [ ১ ] এখানে ঈসা আলাইহিস সালাম-এর প্রতি ঈমান আনয়নকারী হাওয়ারীগণের বিশেষ গুণ বৰ্ণনা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, যারা ঈসা আলাইহিস সালাম অথবা ইঞ্জীলের অনুসরণ করেছে, আমি তাদের অন্তরে স্নেহ ও দয়া সৃষ্টি করে দিয়েছি। তারা একে অপরের প্রতি দয়া ও করুণাশীল কিংবা সমগ্র মানবমণ্ডলীর প্রতি তারা অনুগ্রহশীল। এখানে ঈসা আলাইহিস সালাম-এর সাহাবী তথা হাওয়ারিগণের দুটি বিশেষ গুণ উল্লেখ করা হয়েছে; তা হচ্ছে, দয়া ও করুণা। এরপর তাদের আরেকটি অভ্যাস বর্ণিত হয়েছে যা তারা আবিস্কার করে নিয়েছিল। আর যা আল্লাহ তাদের উপর আবশ্যিক করে দেন নি। আর সেটা হচ্ছে, সন্যাসবাদ। [ কুরতুবী; ফাতহুল কাদীর ] [ ২ ] رهبانية শব্দটি رهبان এর দিকে সম্বন্ধযুক্ত। এর অর্থ যে অতিশয় ভয় করে। বলা হয়ে থাকে যে, ঈসা আলাইহিস সালাম-এর পর বনী-ইসরাঈলের মধ্যে পাপাচার ব্যাপকাকারে ছড়িয়ে পড়ে বিশেষতঃ রাজন্যবৰ্গও শাসকশ্রেণী ইঞ্জীলের বিধানাবলীর প্রতি প্রকাশ্যে বিদ্রোহ শুরু করে দেয়। বনী-ইসরাঈলের মধ্যে কিছু সংখ্যক খাঁটি আলেম ও সৎ কর্মপরায়ণ ব্যক্তি ছিলেন। তারা এই প্রবণতাকে রুখে দাঁড়ালে তাদেরকে হত্যা করা হয়। যে কয়েকজন প্ৰাণে বেঁচে গেলেন তারা দেখলেন যে, মোকাবেলার শক্তি তাঁদের নেই। কিন্তু এদের সাথে মিলে-মিশে থাকলে তাঁদের দ্বীন-ঈমান বরবাদ হয়ে যাবে। তাই তাঁরা স্বতঃ প্রণোদিত হয়ে নিজেদের জন্যে জরুরি করে নিলেন যে, তারা এখন থেকে বৈধ আরাম-আয়েশও বিসর্জন দিবেন, বিবাহ করবেন না, খাওয়া-পরা এবং ভোগ্যবস্তু সংগ্ৰহ করার চিন্তা করবেন না, বসবাসের জন্য গৃহ নির্মাণে যত্নবান হবেন না, লোকালয় থেকে দূরে কোন জঙ্গলাকীর্ণ পাহাড়ে জীবন অতিবাহিত করবেন। অথবা যাযাবরদের ন্যায় ভ্ৰমণ ও পর্যটনে জীবন কাটিয়ে দিবেন যাতে দ্বীনের বিধিবিধান স্বাধীন ও মুক্ত পরিবেশে পালন করা যায়। তারা আল্লাহর ভয়ে এই কর্ম পন্থা অবলম্বন করেছিলেন, তাই তারা رهبان তথা সন্ন্যাসী নামে অভিহিত হলো এবং তাদের উদ্ভাবিত মতবাদ رهبانية তথা সন্ন্যাসবাদ নামে খ্যাতি লাভ করে। [ কুরতুবী ] আলোচ্য আয়াতে আল্লাহ তাদের এ কাজের সমালোচনা করেছে; কারণ তারা নিজেরাই নিজেদের উপর ভোগ বিলাস বিসর্জন দেয়া অপরিহার্য করে নিয়েছিল-আল্লাহর পক্ষ থেকে ফরয করা হয়নি। এভাবে তারা নিজেদেরকে শরীয়ত প্রবর্তকের ভূমিকায় অবতীর্ণ করেছিল। যা স্পষ্টত; পথভ্রষ্টতা। [ দেখুন, ফাতহুল কাদীর ] মোটকথা: সন্ন্যাসবাদ কখনও আল্লাহর নৈকট্যের মাধ্যম ছিল না। এটা এ শরীয়তেও জায়েয নেই। হাদীসে এসেছে, একবার উসমান ইবনে মাযউন রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর স্ত্রী খাওলা বিনতে হাকীম আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহার কাছে খুব খারাপ বেশে প্রবেশ করলে তিনি বললেন, তোমার এ অবস্থা কেন? তিনি বললেন, আমার স্বামী সারা রাত দাঁড়িয়ে ইবাদত করে আর সারাদিন সাওম পালন করে, ইত্যবসরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেখানে প্রবেশ করলে আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা রাসূলের কাছে এ ঘটনা বিবৃত করলেন। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উসমানের সাথে সাক্ষাত করে তাকে বললেন, হে উসমান ! আমাদের উপর সন্যাসবাদ লিখিত হয়নি। তুমি কি আমাকে আদর্শ মনে কর না? আল্লাহর শপথ আমি তোমাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী আল্লাহকে ভয় করি এবং তাঁর শরীয়তের সীমারেখার বেশী হেফাজতকারী। [ মুসনাদে আহমাদ: ৬/২২৬ ] [ ৩ ] অর্থাৎ তারা দ্বিবিধ ভ্ৰান্তিতে ডুবে আছে। একটি ভ্রান্তি হচ্ছে তারা নিজেদের ওপর এমন সব বাধ্যবাধকতা আরোপ করে নিয়েছিল যা করতে আল্লাহ কোন নির্দেশ দেননি। দ্বিতীয় ভ্ৰান্তি হচ্ছে নিজেদের ধারণা মতে যেসব বাধ্য বাধকতাকে তারা আল্লাহর সস্তুষ্টির উপায় বলে মনে করে নিজেদের ওপর আরোপ করে নিয়েছিলো তাঁর হক আদায় করেনি এবং এমন সব আচরণ করেছে যার দ্বারা আল্লাহর সস্তুষ্টির পরিবর্তে তাঁর গযব খরিদ করে নিয়েছে। [ দেখুন, ফাতহুল কাদীরঃ কুরতুবী ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
২৬-২৭ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা তাঁর নবী ও রাসূল হযরত নূহ ( আঃ ) এবং হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) সম্পর্কে খবর দিচ্ছেন যে, হযরত নূহ ( আঃ ) থেকে নিয়ে হযরত ইবরাহীম ( আঃ ) পর্যন্ত যত নবী এসেছেন সবাই হযরত নূহ ( আঃ )-এর বংশধর রূপে এসেছেন। যেমন আল্লাহ তা'আলা অন্য আয়াতে বলেছেনঃ ( আরবী )অর্থাৎ “ আমি তার বংশধরের মধ্যেই নবুওয়াত ও কিতাব রেখেছি ।” ( ২৯:২৭ ) শেষ পর্যন্ত বানী ইসরাঈলের শেষ নবী হযরত ঈসা ইবনে মারইয়াম ( আঃ ) হযরত মুহাম্মাদ ( সঃ )-এর আগমনের সুসংবাদ শুনিয়ে দেন। সুতরাং হযরত নূহ ( আঃ ) ও হযরত ইবরাহীম ( আঃ )-এর পরে বরাবরই রাসূলদের ক্রম জারী থেকেছে হযরত ঈসা ( আঃ ) পর্যন্ত, যাকে ইঞ্জীল প্রদান করা হয় এবং যার অনুসারী উম্মত কোমল হৃদয় ও নরম মিজাষরূপে পরিগণিত হয়েছে। তারা আল্লাহ ভীতি এবং সৃষ্টির প্রতি দয়া, এই পবিত্র গুণে গুণান্বিত ছিলেন।এরপর খৃষ্টানদের একটি বিদআতের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যা তাদের শরীয়তে ছিল না, কিন্তু তারা নিজেরাই নিজেদের পক্ষ থেকে ওটা আবিষ্কার করে নিয়েছিল। ওটা হলো সন্ন্যাসবাদ। এর পরবর্তী বাক্যের দুটি ভাবার্থ বর্ণনা করা হয়েছে। প্রথম এই যে, তাদের উদ্দেশ্য ভাল ছিল। আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই তারা এটা প্রবর্তন করেছিল। হযরত সাঈদ ইবনে জুবায়ের ( রঃ ), হযরত কাতাদাহ ( রঃ ) প্রমুখ গুরুজনের এটাই উক্তি। দ্বিতীয় ভাবার্থ হলোঃ আমি তাদের উপর এটা ওয়াজিব করিনি, বরং আমি তাদের উপর শুধু আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ ওয়াজিব করেছিলাম।অতঃপর আল্লাহ পাক বলেনঃ এটাও তারা যথাযথভাবে পালন করেনি। যেমনভাবে এর উপর স্থির থাকা তাদের উচিত ছিল তেমনভাবে তারা স্থির থাকেনি। সুতরাং তারা দুটি মন্দ কাজ করলো। ( এক ) তারা নিজেদের পক্ষ হতে আল্লাহর দ্বীনে নতুন পন্থা আবিষ্কার করলো। ( দুই ) তারা ওর উপর প্রতিষ্ঠিত থাকলো না। অর্থাৎ যেটাকে তারা নিজেরাই আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম মনে করে নিয়েছিল, শেষে ওর উপরও তারা পুরোপুরিভাবে প্রতিষ্ঠিত থাকলো না।হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাঁকে ডাক দেনঃ “ হে ইবনে মাসউদ ( রাঃ )!” তিনি উত্তরে বলেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! এই তো আমি হাযির আছি ।” তিনি বললেনঃ “ জেনে রেখো যে, বানী ইসরাঈলের বাহাত্তরটি দল হয়ে গেছে যাদের মধ্যে তিন দল পরিত্রাণ পেয়েছে । প্রথম দলটি বানী ইসরাঈলের পথভ্রষ্টতা দেখে তাদের হিদায়াতের জন্যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তাদের বড়দের মধ্যে তাবলীগ শুরু করে দিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ঐ লোকগুলো এই তাবলীগকারী দলটির বিরুদ্ধে যুদ্ধে অবতীর্ণ হলো এবং বাদশাহ ও আমীরগণ যারা এই তাবলীগের কারণে বড়ই হতবুদ্ধি হয়ে পড়েছিল, এই তাবলীগী দলটির বিরুদ্ধে সেনাবাহিনী প্রেরণ করলো এবং এভাবে তাদেরকে হত্যাও করলো এবং বন্দীও করলো। এই দলটিতে মুক্তি লাভ করলো। তারপর দ্বিতীয় দলটি দাঁড়িয়ে গেল। তাদের সাথে মুকাবিলা করার শক্তি তো এদের ছিল না, তথাপি নিজেদের দ্বীনী শক্তির বলে ঐ উদ্ধত লোকদের দরবারে সত্যের বক্তৃতা শুরু করে দিলো এবং হযরত ঈসা ( আঃ )-এর মূল মাযহাবের দিকে তাদেরকে দাওয়াত দিতে লাগলো। ঐ হতভাগ্যের দল এদেরকেও হত্যা করে দিলো, তাদেরকে আরী দ্বারা দ্বিখণ্ডিত করলো এবং আগুনে জ্বালিয়ে দিলো। এর সবই এই দলটি ধৈর্যের সাথে বরদাশত করলো। এভাবে এ দলটিও নাজাত পেয়ে গেল। এরপর উঠলো তৃতীয় দলটি। এরা এদের পূর্ববর্তী দলটির চেয়েও দুর্বল ছিল। এদের এ শক্তি ছিল না যে, ঐ যালিমদের মধ্যে প্রকৃত দ্বীনের আহকামের তাবলীগ করে। এজন্যে তারা নিজেদের দ্বীনকে রক্ষা করার উপায় এটাই মনে করলো যে, তারা জঙ্গলে চলে যাবে এবং পাহাড়ে পর্বতে আরোহণ করবে ও ইবাদতে মশগুল হয়ে যাবে। আর দুনিয়াকে পরিত্যাগ করবে। তাদেরই বর্ণনা ( আরবী )-এই আয়াতে রয়েছে। ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)এই হাদীসটিই অন্য সনদেও বর্ণিত আছে। তাতে তেহাত্তর দলের বর্ণনা রয়েছে। তাতে এও আছেঃ তারাই পুরস্কার লাভ করবে যারা আমার উপর ঈমান আনবে এবং আমার সত্যতা স্বীকার করবে। তাদের মধ্যে অধিকাংশই যারা ফাসেক তারা হলো ঐ সব লোকে যারা আমাকে অবিশ্বাস করবে এবং আমার বিরোধী হবে।হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, হযরত ঈসা ( আঃ )-এর পরে বানী ইসরাঈলের বাদশাহরা তাওরাত ও ইঞ্জীলের মধ্যে পরিবর্তন ঘটিয়েছিল। কিন্তু কতগুলো লোক ঈমানের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং আসল তাওরাত ও ইঞ্জীল তাদের হাতে থাকে যা তারা তিলাওয়াত করতো। একবার আল্লাহর কিতাবে রদবদলকারী লোকেরা তাদের বাদশাহর কাছে এই খাঁটি মুমিনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেঃ “ এই লোকগুলো আল্লাহর কিতাব বলে যে কিতাব পাঠ করে তাতে তো আমাদেরকে গালি দেয়া হয়েছে । তাতে লিখিত আছে যে, যে কেউই আল্লাহর নাযিলকৃত কিতাব অনুযায়ী ফায়সালা করে না তারা কাফির এবং এ ধরনের আরো বহু আয়াত রয়েছে। এ লোকগুলো আমাদের কাজের উপর দোষারোপ করে থাকে। সুতরাং আপনি এদেরকে আপনার দরবারে ডাকিয়ে নিন এবং এদেরকে বাধ্য করুন যে, হয় এরা কিতাব এভাবে পাঠ করুক যেভাবে আমরা পাঠ করি এবং ঐরূপই আকীদা ও বিশ্বাস রাখে যেরূপ বিশ্বাস আমরা রাখি, না হয় তাদেরকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করুন।”তাদের এই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই খাঁটি মুমিনদেরকে বাদশাহর দরবারে আহ্বান করা হলো। তাদেরকে বলা হলোঃ “ হয় তোমরা আমাদের সংশোধনকৃত কিতাব পাঠ কর এবং তোমাদের হাতে যে আল্লাহ প্রদত্ত কিতাব রয়েছে তা পরিত্যাগ কর, না হয় মৃত্যুর জন্যে প্রস্তুত হয়ে যাও এবং বধ্যভূমির দিকে অগ্রসর হও ।” তখন ঐ পবিত্র দলগুলোর একটি দল বললোঃ “ তোমরা আমাদের জন্যে একটি উঁচু প্রাসাদ তৈরী কর এবং আমাদেরকে সেখানে উঠিয়ে দাও । আমাদের জন্যে দড়ি ও ছড়ির ব্যবস্থা কর। অতঃপর আমাদের খাদ্য ও পানীয় দ্রব্য তাতে রেখে দেবে। আমরা উপর থেকে তা টেনে উঠিয়ে নিবো। আমরা নীচে কখনো নামবো না এবং তোমাদের লোকালয়ে আসবো না। আর একটি দল বললোঃ “ আমাদেরকে ছেড়ে দাও । আমরা এখান হতে হিজরত করে চলে যাচ্ছি। আমরা পাহাড়ে জঙ্গলে চলে যাবো। ঝরণা, নদী-নালা এবং পুকুর-পুষ্করিণী হতে আমরা জানোয়ারের মত পানি পান করবে। এরপরে যদি তোমরা আমাদেরকে তোমাদের লোকালয়ে দেখতে পাও তবে নির্ধিদায় আমাদেরকে হত্যা করে ফেলো।” তৃতীয় দলটি বললোঃ “ তোমরা আমাদেরকে তোমাদের লোকালয়ের এক প্রান্তে কিছু ভূখণ্ড দিয়ে দাও এবং সেখানে সীমারেখা টেনে দাও । আমরা সেখানেই কূপ খনন করবে এবং চাষাবাদ করবে। তোমাদের লোকালয়ে আমরা কখনো আসবই না।" এই আল্লাহভীরু লোকদের সাথে ঐ লোকগুলোর আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিল বলে তারা এদের আবেদন মঞ্জুর করলো এবং এ লোকগুলো নিজ নিজ ঠিকানায় চলে গেল। কিন্তু তাদের সাথে এমন কতগুলো লোকও গেল যাদের অন্তরে প্রকৃতপক্ষে ঈমান ছিল না। তারা শুধু অনুকরণ হিসেবে এদের সঙ্গী হয়েছিল। তাদের ব্যাপারেই আল্লাহ তা'আলা ( আরবী )-এই আয়াতটি অবতীর্ণ করেন।অতঃপর যখন আল্লাহ তা'আলা হযরত মুহাম্মাদ ( সঃ )-কে রাসূলরূপে প্রেরণ করলেন তখন তাদের মধ্যে খুব অল্প সংখ্যক লোকই বাকী ছিল। রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর রিসালাতের খবর শোন মাত্রই খানকাহবাসীরা তাদের খানকাহ হতে, জঙ্গলবাসীরা জঙ্গল হতে এবং ঘেরাও আঙ্গিনায় বসবাসকারীরা তাদের ঐ আঙ্গিনা হতে বেরিয়ে আসলো এবং তাঁর খিদমতে হাযির হয়ে তার উপর ঈমান আনয়ন করে এবং তার সত্যতা স্বীকার করে। এরই বর্ণনা নিম্নের আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে মুমিনগণ! আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রাসূল ( সঃ )-এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর, তিনি তাঁর অনুগ্রহে তোমাদেরকে দিবেন দ্বিগুণ পুরস্কার এবং তিনি তোমাদেরকে দিবেন আলো, যার সাহায্যে তোমরা চলবে ।” ( ৫৭:২৮ ) অর্থাৎ তাদের হযরত ঈসা ( আঃ )-এর উপর ঈমান আনয়ন এবং পরে হযরত মুহাম্মাদ ( সঃ )-এর উপর ঈমান আনয়ন, এ কারণেই তাদের জন্যে রয়েছে দ্বিগুণ পুরস্কার। আর নূর বা আলো হলো কুরআন ও সুন্নাহ্। মহান আল্লাহ বলেনঃ ( আরবী )অর্থাৎ “ এটা এই জন্যে যে, কিতাবীগণ যেন জানতে পারে, আল্লাহর সামান্যতম অনুগ্রহের উপরও তাদের কোন অধিকার নেই । অনুগ্রহ আল্লাহরই ইখতিয়ারে, যাকে ইচ্ছা তাকে তিনি তা দান করেন। আল্লাহ মহা অনুগ্রহশীল।” পরবর্তী এ দুটি আয়াতের তাফসীর এই আয়াতের পরেই আসছে ইনশাআল্লাহ। হযরত সাহল ইবনে আবি উমামা ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত উমার ইবনে আবদিল আযীয ( রঃ )-এর খিলাফতের যুগে তিনি এবং তাঁর পিতা মদীনায় হযরত আনাস ইবনে মালিক ( রাঃ )-এর নিকট গমন করেন। ঐ সময় তিনি মদীনার শাসনকর্তা ছিলেন। যখন তারা হযরত আনাস ( রাঃ )-এর নিকট আসেন তখন তিনি নামায পড়ছিলেন এবং নামায পড়ছিলেন প্রায় মুসাফিরের নামাযের মত হালকাভাবে। তিনি সালাম ফিরালে তাঁরা তাঁকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ আপনি ফরয নামায পড়লেন, না নফল নামায?" উত্তরে তিনি বললেন, ফরয নামায । রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নামায এরূপই ছিল। আমি আমার ধারণা ও জানামতে এতে কোন ভুল করিনি। হ্যাঁ, তবে যদি ভুল বশতঃ কিছু হয়ে থাকে তবে আমি তা বলতে পারি না। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমরা তোমাদের জীবনের উপর কঠোরতা অবলম্বন করো না । অন্যথায় তোমাদের উপর কঠোরতা অবলম্বন করা হবে। এক সম্প্রদায় নিজেদের জীবনের উপর কঠোরতা অবলম্বন করেছিল বলে তাদের উপরও কঠোরতা অবলম্বন করা হয়েছিল। তাদের অবশিষ্টাংশ তাদের খানকাতে ও তাদের ঘরসমূহে এখনো বিদ্যমান রয়েছে। এটাই ছিল ঐ কঠোরতা অর্থাৎ দুনিয়া ত্যাগ, যা আল্লাহ তা'আলা তাদের উপর ওয়াজিব করেননি। দ্বিতীয়বার তারা পিতা-পুত্র হযরত আনাস ( রাঃ )-কে বললেনঃ “ আসুন, আমরা সওয়ারীর উপর সওয়ার হয়ে চলি এবং দেখি ও শিক্ষা গ্রহণ করি ।” হযরত আনাস ( রাঃ ) বললেনঃ “ আচ্ছা, বেশ!” অতঃপর সবাই সওয়ার হয়ে চললেন । কয়েকটি বস্তী তারা দেখলেন যেগুলো একেবারে শ্মশানে পরিণত হয়েছিল এবং ঘরগুলো উল্টোমুখে পড়েছিল। এ দেখে তারা হযরত আনাস ( রাঃ )-কে জিজ্ঞেস করলেনঃ “ এ শহরগুলোর অবস্থা কি আপনার জানা আছে?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “হ্যাঁ, খুব ভাল জানা আছে । এমন কি এগুলোর অধিবাসীদের সম্পর্কেও আমি পূর্ণ ওয়াকিফহাল। তাদেরকে ঔদ্ধত্য ও হিংসা-বিদ্বেষ ধ্বংস করে দিয়েছে। হিংসা পুণ্যের জ্যোতিকে নিভিয়ে দেয়, আর ঔদ্ধত্য বা হঠকারিতা ওটাকে সত্যতায় রূপ দান করে বা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে। চক্ষুরও যেনা হয়, হাত, পা এবং জিহ্বারও যেনা হয়, আর লজ্জাস্থান ওটাকে বাস্তবে রূপায়িত করে অথবা মিথ্যা প্রতিপন্ন করে।” ( এটা হাফিয আবু ইয়ালা মুসিলী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আইয়াস ইবনে মালিক ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ প্রত্যেক নবী ( আঃ )-এর জন্যেই সন্ন্যাসবাদ ছিল এবং আমার উম্মতের সন্ন্যাসবাদ হলো মহামহিমান্বিত আল্লাহর পথে জিহাদ করা ।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। হাফিয আবুল ইয়ালাও ( রঃ ) এটা বর্ণনা। করেছেন, কিন্তু তার বর্ণনায় প্রত্যেক নবীর স্থলে প্রত্যেক উম্মত রয়েছে)হযরত আবু সাঈদ খুদরী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তাঁর কাছে একজন লোক এসে বলেঃ “ আমাকে কিছু অসিয়ত করুন ।” তিনি তাকে বলেনঃ “ তুমি আমার কাছে যে আবেদন করলে এই আবেদনই আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর কাছে করেছিলাম । আমি তোমাকে আল্লাহকে ভয় করার অসিয়ত করছি। এটাই সমস্ত পুণ্য কার্যের মূল। তুমি জিহাদকে নিজের জন্যে অবশ্যকর্তব্য করে নাও। এটাই হলো ইসলামের সন্ন্যাসবাদ। আর আল্লাহর যিক্র এবং কুরআন পাঠকে তুমি নিজের উপর অবশ্যপালনীয় করে ফেলো। এটাই আকাশে তোমার রূহ এবং পৃথিবীতে তোমার যিক্র।” ( এটা ইমাম আহমাদ (রঃ ) এককভাবে বর্ণনা করেছেন। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাইসবচেয়ে ভাল জানেন)
সূরা হাদীদ আয়াত 27 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তারা আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য ইলাহ গ্রহণ করেছে, যাতে তারা তাদের জন্যে সাহায্যকারী হয়।
- যাতে ধবংস করে দেন কোন কোন কাফেরকে অথবা লাঞ্ছিত করে দেন-যেন ওরা বঞ্চিত হয়ে ফিরে
- যদি তারা ঈমান আনত এবং খোদাভীরু হত, তবে আল্লাহর কাছ থেকে উত্তম প্রতিদান পেত। যদি
- তুমি কি তোমার পালনকর্তাকে দেখ না, তিনি কিভাবে ছায়াকে বিলম্বিত করেন? তিনি ইচ্ছা করলে একে
- তুমি বল, আমি আমার নিজের ক্ষতি কিংবা লাভেরও মালিক নই, কিন্তু আল্লাহ যা ইচ্ছা করেন।
- আল্লাহ তা’আলা জীবনোপকরণে তোমাদের একজনকে অন্যজনের চাইতে শ্রেষ্টত্ব দিয়েছেন। অতএব যাদেরকে শ্রেষ্ঠত্ব দেয়া হয়েছে, তারা
- আর আমি তোমাদের নসীহত করতে চাইলেও তা তোমাদের জন্য ফলপ্রসূ হবে না, যদি আল্লাহ তোমাদেরকে
- আমি আপনাকে সুসংবাদ ও সতর্ককারীরূপেই প্রেরণ করেছি।
- যারা আমার বান্দা, তাদের উপর তোমার কোন ক্ষমতা নেই; কিন্তু পথভ্রান্তদের মধ্য থেকে যারা তোমার
- আর যে লোক সেদিন তাদের থেকে পশ্চাদপসরণ করবে, অবশ্য যে লড়াইয়ের কৌশল পরিবর্তনকল্পে কিংবা যে
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হাদীদ ডাউনলোড করুন:
সূরা Hadid mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Hadid শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers