কোরান সূরা সাজ্দা আয়াত 30 তাফসীর
﴿فَأَعْرِضْ عَنْهُمْ وَانتَظِرْ إِنَّهُم مُّنتَظِرُونَ﴾
[ السجدة: 30]
অতএব আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন এবং অপেক্ষা করুন, তারাও অপেক্ষা করছে। [সূরা সাজ্দা: 30]
Surah As-Sajdah in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Sajdah ayat 30
অতএব তাদের থেকে তুমি ফিরে এস এবং ইন্তাজার কর, নিঃসন্দেহ তারাও প্রতীক্ষারত রয়েছে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৩০. অতএব হে রাসূল! আপনি তাদের থেকে তাদের ভ্রষ্টতায় অবিচল থাকার পর মুখ ফিরিয়ে নিন। আর তাদের পরিণতির অপেক্ষা করুন। আপনি তারেকে যে শাস্তির ভীতি প্রদর্শন করছেন তারা তারই অপেক্ষা করছে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অতএব তুমি ওদেরকে উপেক্ষা কর[১] এবং অপেক্ষা কর।[২] নিশ্চয় ওরাও অপেক্ষা করছে।[৩] [১] অর্থাৎ, সেই মুশরিকদের নিকট থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও এবং দাওয়াত ও তবলীগের কাজ আপন গতিতে চালাতে থাক। যে অহী তোমার প্রতি অবতীর্ণ করা হয়েছে তার অনুসরণ কর। যেমন দ্বিতীয় স্থানে বলা হয়েছে, ( اتَّبِعْ مَا أُوحِيَ إِلَيْكَ مِنْ رَبِّكَ لا إِلَهَ إِلَّا هُوَ وَأَعْرِضْ عَنِ الْمُشْرِكِينَ ) অর্থাৎ, তোমার নিকট তোমার প্রভুর পক্ষ থেকে যে প্রত্যাদেশ অবতীর্ণ করা হয়েছে, তুমি তারই অনুসরণ করে চল। তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং মুশরিকদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নাও। ( সূরা আন্আম ৬:১০৬ আয়াত ) [২] অর্থাৎ, অপেক্ষা কর যে, আল্লাহর ওয়াদা কখন পূর্ণ হবে এবং তিনি তোমার বিরোধীদের উপর তোমাকে বিজয়ী করবেন। তা নিঃসন্দেহে পূর্ণ হবেই।[৩] অর্থাৎ, এই সকল কাফেররা অপেক্ষায় আছে যে, সম্ভবতঃ পয়গম্বর ( সাঃ ) নিজেই মুসীবতের শিকার হবেন ও তাঁর দাওয়াত শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু পৃথিবী দেখে নিয়েছে যে, আল্লাহ তাআলা তাঁর নবী ( সাঃ )-এর সাথে কৃত ওয়াদা পূরণ করেছেন এবং তাঁর উপর মুসীবতের অপেক্ষমাণ বিরোধীদেরকে লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেছেন কিংবা তাদেরকে তাঁর দাস বানিয়ে দিয়েছেন।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
অতএব আপনি তাদেরকে উপেক্ষা করুন এবং অপেক্ষা করুন, তারাও তো অপেক্ষামান [ ১ ]। [ ১ ] যেমন অন্য আয়াতে এসেছে, “ নাকি তারা বলে, ‘সে একজন কবি? আমরা তার মৃত্যুর প্রতীক্ষা করছি । বলুন, ‘তোমরা প্রতীক্ষা কর, আমিও তোমাদের সাথে প্রতীক্ষাকারীদের অন্তর্ভুক্ত।” [ সূরা আত-তুর: ৩০-৩১ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
২৮-৩০ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তা'আলা কাফিরদের তাড়াহুড়ার খবর দিচ্ছেন যে, তারা তাচ্ছিল্যের সাথে বলতোঃ “ হে নবী ( সঃ )! তুমি যে বলে থাকো এবং তোমার সঙ্গীসাথীদেরকে সান্ত্বনা দিয়ে থাকো যে, তুমি আমাদের উপর বিজয় লাভ করবে এবং আমাদের থেকে প্রতিশোধ গ্রহণ করবে, সে সময় কখন আসবে? আমরা তো তোমাকে বহুদিন থেকেই পরাজিত, অধীনস্থ ও দুর্বল দেখতে পাচ্ছি । এখন তুমি আমাদেরকে আমাদের উপর তোমার বিজয় লাভের সময়টা বলে দাও।” তাদের একথার উত্তরে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ আল্লাহর আযাব যখন এসে যাবে এবং যখন তাঁর গযব ও ক্রোধ পতিত হবে, তা দুনিয়াতেই হালে বা আখিরাতেই হালে, তখন না ঈমান আনয়নে কোন উপকার হবে, না তাদেরকে কোন অবকাশ দেয়া হবে। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ যখন তাদের কাছে তাদের রাসূলগণ দলীল-প্রমাণসহ আসলো তখন তাদের কাছে যে জ্ঞান আছে তা নিয়ে তারা খুশী হয়ে গেল ( দু’টি আয়াত পর্যন্ত ) ।” ( ৪০:৮৩ )। এর দ্বারা মক্কা বিজয় উদ্দেশ্য নয়। কেননা, মক্কা বিজয়ের দিন তো রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) কাফিরদের ইসলাম গ্রহণ ককূল করে নিয়েছিলেন এবং প্রায় দু'হাজার লোক ইসলাম কবুল করেছিল। যদি এই বিজয় দ্বারা মক্কা বিজয় উদ্দেশ্য হতো তবে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাদের ইসলাম গ্রহণ ককূল করতেন না। যেমন এখানে বলা হয়েছে যে, সেই দিন কাফিরদের ঈমান আনয়ন তাদের কোন কাজে আসবে না। এখানে ( আরবি )-এর অর্থ হচ্ছে ফায়সালা। যেমন কুরআন কারীমের এক জায়গায় আছেঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ তুমি আমার ও তাদের মধ্যে ফায়সালা করে দাও ।” ( ২৬:১১৮ ) অন্য এক জায়গায় রয়েছেঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ তুমি বল- আল্লাহ আমাদেরকে একত্রিত করবেন, অতঃপর আমাদের মধ্যে তিনি ন্যায়ের সাথে ফায়সালা করবেন ।” ( ৩৪:২৬ ) আর একটি আয়াতে আছেঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ তারা ফায়সালা প্রার্থনা করছে এবং যারা উদ্ধত ও হঠকারী তারা ধ্বংস হয়ে গেছে ।” ( ১৪:১৫ ) আরো এক জায়গায় আছেঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ এর পূর্বে তারা কাফিরদের উপর বিজয় প্রার্থনা করতো ।” ( ২:৮৯ ) অন্য এক জায়গায় রয়েছেঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ যদি তোমরা ফায়সালা কামনা কর তবে ফায়সালা তো তোমাদের কাছে এসেই গেছে ।” ( ৮:১৯ )এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ ( হে নবী সঃ )! অতএব তুমি তাদেরকে উপেক্ষা কর এবং অপেক্ষা কর, তারাও অপেক্ষা করছে ।” অর্থাৎ তুমি এই মুশরিকদেরকে উপেক্ষা কর এবং তোমার প্রতি তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা জনগণের কাছে পৌঁছাতে থাকো। যেমন অন্য আয়াতে তিনি বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ তোমার প্রতি তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে যা অহী করা হয়েছে তার তুমি অনুসরণ কর, তিনি ছাড়া কোন উপাস্য নেই ।” ( ৬:১০৭ )মহান আল্লাহ বলেনঃ তুমি তোমার প্রতিপালকের ওয়াদাকে সত্য বলে মেনে নাও। তাঁর কথা অপরিবর্তনীয়, তাঁর কথা সত্য। সত্বরই তিনি তোমাকে তোমার বিরুদ্ধাচারীদের উপর বিজয় দান করবেন। তিনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না। তারাও অপেক্ষমান রয়েছে। তারা চায় যে, তোমার উপর কোন বিপদ আপতিত হালে। কিন্তু তাদের এ মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হবে না। আল্লাহ তা'আলা নিজের লোকদেরকে ভুলেন না। তাদেরকে তিনি পরিত্যাগও করেন না। যারা আল্লাহর আদেশ নিষেধ মেনে চলে এবং তাঁর ফরমান অন্যদের কাছে পৌঁছিয়ে দেয় তারা আল্লাহর সাহায্য হতে বঞ্চিত হতে পারে না। কাফির ও মুশরিকরা মুমিনদের উপর যে বিপদ-আপদ দেখতে চায় তাই তিনি তাদের উপরই নাযিল করে থাকেন। তারা আল্লাহর আযাবের শিকার হবেই। আমাদের জন্যে আল্লাহই যথেষ্ট। তিনি উত্তম কর্মবিধায়ক।
সূরা সাজ্দা আয়াত 30 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- অতঃপর যদি তোমরা পরিত্যাগ না কর, তবে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের সাথে যুদ্ধ করতে প্রস্তুত
- হে নবী, আপনার জন্য এবং যেসব মুসলমান আপনার সাথে রয়েছে তাদের সবার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট।
- সর্ববিধ প্রশংসা আল্লাহরই জন্য যিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডল সৃষ্টি করেছেন এবং অন্ধকার ও আলোর উদ্ভব
- আমি প্রত্যেক মানুষের কর্মকে তার গ্রীবলগ্ন করে রেখেছি। কেয়ামতের দিন বের করে দেখাব তাকে একটি
- এই কিতাবে ইদ্রীসের কথা আলোচনা করুন, তিনি ছিলেন সত্যবাদী নবী।
- নিশ্চয় যারা বলে, আমাদের পালনকর্তা আল্লাহ, অতঃপর তাতেই অবিচল থাকে, তাদের কাছে ফেরেশতা অবতীর্ণ হয়
- শপথ চক্রশীল আকাশের
- আমি আপনাকে দৃঢ়পদ না রাখলে আপনি তাদের প্রতি কিছুটা ঝুঁকেই পড়তেন।
- অতঃপর যাদুকররা সেজদায় পড়ে গেল। তারা বললঃ আমরা হারুন ও মূসার পালনকর্তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন
- তাদেরকে যখন বলা হয়, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন, তোমরা তার অনুসরণ কর, তখন তারা বলে,
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা সাজ্দা ডাউনলোড করুন:
সূরা Sajdah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Sajdah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers