কোরান সূরা মুহাম্মদ আয়াত 31 তাফসীর
﴿وَلَنَبْلُوَنَّكُمْ حَتَّىٰ نَعْلَمَ الْمُجَاهِدِينَ مِنكُمْ وَالصَّابِرِينَ وَنَبْلُوَ أَخْبَارَكُمْ﴾
[ محمد: 31]
আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যে পর্যন্ত না ফুটিয়ে তুলি তোমাদের জেহাদকারীদেরকে এবং সবরকারীদেরকে এবং যতক্ষণ না আমি তোমাদের অবস্থান সমূহ যাচাই করি। [সূরা মুহাম্মদ: 31]
Surah Muhammad in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Muhammad ayat 31
আর আমরা নিশ্চয়ই তোমাদের যাচাই করব যতক্ষণ না আমরা জানতে পারি তোমাদের মধ্যের কঠোর সংগ্রামশীলদের ও অধ্যবসায়ীদের, আর তোমাদের খবর আমরা পরীক্ষা করেছি।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৩১. হে মুমিনরা! অচিরেই আমি তোমাদেরকে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও শত্রæদের মোকাবিলা দিয়ে পরীক্ষা করবো। যাতে করে তোমাদের মধ্যে কারা আল্লাহর পথে জিহাদকারী ও শত্রæদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ধৈর্যধারণকারী তা জানতে পারি। আমি তোমাদেরকে আরো পরীক্ষা করবো যদ্বারা আমি সত্যপরায়ণকে মিথ্যাবাদী থেকে পৃথক করবো।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যতক্ষণ না আমি তোমাদের মধ্যে মুজাহিদ ও ধৈর্যশীলদেরকে জেনে নিই এবং আমি তোমাদের অবস্থা পরীক্ষা করি। [১] [১] আল্লাহ তাআলার প্রথম থেকেই জানা আছে। এখানে জানার অর্থ, তা বাস্তবায়িত ও সংঘটিত হওয়া। যাতে অন্যরাও জেনে এবং দেখে নেয়। আর এই জন্য ইমাম ইবনে কাসীর ( রঃ ) এর অর্থ বর্ণনা করেছেন, حَتَّى نَعْلَمَ وُقُوْعَهُ যাতে আমি তার বাস্তবায়ন জেনে নিই। ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) এই ধরনের শব্দের অর্থ করতেন, لِنَرَى যাতে আমি দেখে নিই। ( ইবনে কাসীর ) আর এই অর্থই বেশী স্পষ্ট।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর আমারা অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব, যতক্ষণ না আমরা জেনে নেই তোমাদের মধ্যে জিহাদকারী ও ধৈর্যশীলদেরকে এবং আমরা তোমাদের কর্মকাণ্ড পরীক্ষা করি।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
২৯-৩১ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা বলেনঃ মুনাফিকদের ধারণা এই যে, আল্লাহ পাক তাদের অভিসন্ধি, ষড়যন্ত্র এবং প্রতারণার কথা মুসলমানদের নিকট প্রকাশ করবেন না। কিন্তু তাদের ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। আল্লাহ তাআলা তাদের ষড়যন্ত্র ও প্রতারণা এমনভাবে প্রকাশ করবেন যে, প্রত্যেক জ্ঞানী ব্যক্তি ওগুলো জানতে পারবে এবং তাদের অভ্যন্তরীণ দুক্রিয়া হতে তারা বেঁচে থাকবে। তাদের বহু কিছু অবস্থার কথা সূরায়ে বারাআতে বর্ণিত হয়েছে এবং সেখানে তাদের কপটতাপূর্ণ বহু অভ্যাসের উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি এই সূরার অপর নাম ফাযেহা' বা অপমানকারী রেখে দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ এটা হলো মুনাফিকদেরকে অপমানকারী সূরা ।( আরবী ) শব্দটি ( আরবী ) শব্দের বহুবচন। ( আরবী ) বলা হয় হিংসা ও শক্রতাকে। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ আমি ইচ্ছা করলে তোমাকে ( নবী সঃ-কে ) তাদের ( মুনাফিকদের ) পরিচয় দিতাম। তখন তুমি খোলাখুলিভাবে তাদেরকে জেনে নিতে। কিন্তু আমি এরূপ করিনি। সমস্ত মুনাফিকের পরিচয় আমি প্রদান করিনি, যাতে মাখলুকের উপর তাদের পর্দা পড়ে থাকে। মানুষের কাছে যেন তাদের দোষ ঢাকা থাকে। প্রত্যেকের নিকট যেন তারা লাঞ্ছিত রূপে ধরা না পড়ে। ইসলামী বিষয়গুলো বাহ্যিকতার উপরই বিচার্য। আভ্যন্তরীণ বিষয়ের হিসাব রয়েছে মহান আল্লাহর কাছে। তিনি প্রকাশ্য ও গোপনীয় সবকিছুই জানেন। তবে মুনাফিকদেরকে তাদের কথা বলার ধরন দেখে চেনা যাবে।আমীরুল মুমিনীন হযরত উসমান ইবনে আফফান ( রাঃ ) বলেনঃ “ যে ব্যক্তি মনের মধ্যে কোন কিছু গোপন রাখে, আল্লাহ তা'আলা তার মুখমণ্ডলে ও কথায় তা প্রকাশ করে দেন । অর্থাৎ তার চেহারায় ও কথাবার্তায় তা প্রকাশ পেয়ে যায়।” হাদীসে এসেছেঃ “ যে ব্যক্তি কোন রহস্য গোপন রাখে, আল্লাহ তা'আলা তা প্রকাশ করে দেন, ভাল হলে ভাল এবং মন্দ হলে মন্দ ।” মানুষের কাজে, কথায় ও বিশ্বাসে যে কপটতা প্রকাশ পায় তা আমরা সহীহ বুখারীর শরাহর প্রারম্ভে পূর্ণভাবে বর্ণনা করেছি। সুতরাং এখানে পুনরাবৃত্তি নিষ্প্রয়োজন। হাদীসে মুনাফিকদের একটি দলকে নির্দিষ্ট করা হয়েছে। হযরত উকবা ইবনে আমর ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একদা রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) সাহাবীদের মধ্যে ভাষণ দান করেন। আল্লাহ তাআলার হামদ ও সানার পর তিনি বলেনঃ “ তোমাদের মধ্যে কতক লোক মুনাফিক রয়েছে । আমি যাদের নাম নিবো তারা যেন দাঁড়িয়ে যায়।” অতঃপর তিনি বলেনঃ “ হে অমুক ব্যক্তি! তুমি দাঁড়াও, হে অমুক লোক! তুমি দাঁড়িয়ে যাও ।” শেষ পর্যন্ত তিনি ছত্রিশটি লোকের নাম নিলেন। তারপর বললেনঃ “ তোমাদের মধ্যে অথবা তোমাদের মধ্য হতে কতক মুনাফিক রয়েছে, সুতরাং তোমরা আল্লাহকে ভয় কর ।” এরপরে এই লোকদের মধ্যে একজনের সামনে দিয়ে হযরত উমার ( রাঃ ) গমন করেন। ঐ সময় লোকটি কাপড় দিয়ে তার মুখ ঢেকে রেখেছিল। হযরত উমার ( রাঃ ) লোকটিকে খুব ভালরূপে চিনতেন। তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “ ব্যাপার কি?” উত্তরে সে উপরোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করলো । তখন হযরত উমার ( রাঃ ) তাকে বললেনঃ “ সারা দিন তোমার জন্যে দুর্ভোগ ( অর্থাৎ তুমি ধ্বংস হও ) ।" ( এ হাদীসটি মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত হয়েছে )এরপর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ আমি হুকুম আহকাম দিয়ে বাধা-বিঘ্ন সৃষ্টি করে তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পরীক্ষা করবো এবং এভাবে জেনে নিবো যে, তোমাদের মধ্যে আল্লাহর পথে জিহাদকারী কারা এবং ধৈর্যশীল কারা? আমি তোমাদের অবস্থা পরীক্ষা করতে চাই।সমস্ত মুসলমান তো এটা জানে যে, অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা আল্লাহ প্রত্যেক জিনিস এবং প্রত্যেক মানুষ ও তার আমল প্রকাশিত হবার পূর্বেই ওগুলো সম্পর্কে পূর্ণ ওয়াকিফহাল। তাহলে এখানে তিনি জেনে নিবেন’ এর ভাবার্থ হলোঃ তিনি তা দুনিয়ার সামনে খুলে দিবেন এবং ঐ অবস্থা দেখবেন ও দেখাবেন। এজন্যেই হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) এরূপ স্থলে -এর অর্থ করতেন অর্থাৎ যাতে আমি দেখে নিই।
সূরা মুহাম্মদ আয়াত 31 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তারা জিনদেরকে আল্লাহর অংশীদার স্থির করে; অথচ তাদেরকে তিনিই সৃস্টি করেছেন। তারা অজ্ঞতাবশতঃ আল্লাহর জন্যে
- নিশ্চয় মুসলমান পুরুষ, মুসলমান নারী, ঈমানদার পুরুষ, ঈমানদার নারী, অনুগত পুরুষ, অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ,
- কত পূণ্যময় আপনার পালনকর্তার নাম, যিনি মহিমাময় ও মহানুভব।
- আল্লাহ তোমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হতে চান, এবং যারা কামনা-বাসনার অনুসারী, তারা চায় যে, তোমরা পথ
- এবং যারা যা দান করবার, তা ভীত, কম্পিত হৃদয়ে এ কারণে দান করে যে, তারা
- তারা শ্রুত কথা এনে দেয় এবং তাদের অধিকাংশই মিথ্যাবাদী।
- তাদেরকে ছেড়ে দিন সেদিন পর্যন্ত, যেদিন তাদের উপর বজ্রাঘাত পতিত হবে।
- তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে
- শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে
- আর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একেকজন রসূল রয়েছে। যখন তাদের কাছে তাদের রসূল ন্যায়দন্ডসহ উপস্থিত হল, তখন
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মুহাম্মদ ডাউনলোড করুন:
সূরা Muhammad mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Muhammad শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers