কোরান সূরা ইউনুস আয়াত 33 তাফসীর
﴿كَذَٰلِكَ حَقَّتْ كَلِمَتُ رَبِّكَ عَلَى الَّذِينَ فَسَقُوا أَنَّهُمْ لَا يُؤْمِنُونَ﴾
[ يونس: 33]
এমনিভাবে সপ্রমাণিত হয়ে গেছে তোমার পরওয়ারদেগারের বাণী সেসব নাফরমানের ব্যাপারে যে, এরা ঈমান আনবে না। [সূরা ইউনুস: 33]
Surah Yunus in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Yunus ayat 33
এইভাবে তোমার প্রভুর বাণী সত্যপ্রতিপন্ন হয় তাদের বিরুদ্ধে যারা অবাধ্যাচরণ করে -- ''নিঃসন্দেহ তারা ঈমান আনবে না’’।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৩৩. যেমনিভাবে সত্য রুবূবিয়্যাত আল্লাহর জন্য প্রমাণিত হলো তেমনিভাবে গাদ্দারী করে সত্য থেকে বেরিয়ে আসা লোকদের উপর আপনার প্রতিপালকের নির্ধারিত বাণী চ‚ড়ান্ত হলো যে, তারা কখনো ঈমান আনবে না।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
এইভাবে সত্যত্যাগীদের সম্পর্কে তোমার প্রতিপালকের এই কথা সত্য প্রতিপন্ন হয়ে গেল যে, তারা বিশ্বাস করবে না। [১] [১] অর্থাৎ, যেরূপ এই মুশরিকরা সবকিছু স্বীকার করার পরেও নিজেদের শিরকের উপর অটল আছে এবং তা বর্জন করতে প্রস্ত্ততই নয়, অনুরূপ তোমার প্রভুর এই কথাও সাব্যস্ত হয়ে গেছে যে, এরা ঈমান আনবে না। কারণ এরা ভ্রষ্টতার পথ ছেড়ে সঠিক পথ বেছে নেওয়ার জন্য প্রস্ত্ততই নয়, সুতরাং হিদায়াত ও ঈমান তাদের নসীবে জুটবে কিভাবে? এই কথা অন্য স্থানে এই ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে, ( وَلَكِنْ حَقَّتْ كَلِمَةُ الْعَذَابِ عَلَى الْكَافِرِينَ ) " কিন্তু কাফেরদের প্রতি শাস্তির হুকুমই বাস্তবায়িত হয়েছে। " ( সূরা যুমার ৩৯:৭১ আয়াত )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
যারা অবাধ্য হয়েছে এভাবেই তাদের সম্পর্কে আপনার রবের বাণী সত্য প্রতিপন্ন হয়েছে যে, তার ঈমান আনবে না [ ১ ]। [ ১ ] অর্থাৎ এ মুশরিকরা যেহেতু কুফরী করেছে এবং কুফরি চালিয়েই যাচ্ছে, আর আল্লাহর সাথে অন্যের ইবাদাত করছে, অথচ তারা জানে ও স্বীকৃতি দিচ্ছে যে, তিনিই স্রষ্টা, তাঁর রাজত্বের সবকিছুর একমাত্র নিয়ন্ত্রক, সেহেতু তাদের উপর আল্লাহর বাণী সত্য হয়ে গেছে যে, তারা হতভাগা। জাহান্নামের অধিবাসী। [ ইবন কাসীর ] অন্যত্রও আল্লাহ তা’আলা তা বলেছেন, “ তারা বলবে, অবশ্যই হ্যাঁ । কিন্তু শাস্তির বাণী কাফিরদের উপর বাস্তবায়িত হয়েছে।" [ সূরা আয-যুমার: ৭১ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৩১-৩৩ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা মুশরিকদের উপর হুজ্জত পেশ করছেন যে, তাদেরকে তাঁর প্রভুত্ব ও একত্ব স্বীকার করতেই হবে। অর্থাৎ ( হে নবী সঃ )! মুশরিকদেরকে জিজ্ঞেস কর- আকাশ হতে যিনি বৃষ্টি বর্ষণ করে থাকেন তিনি কে? যিনি নিজের ক্ষমতাবলে যমীনের মধ্য থেকে আঙ্গুর, নাশপাতি, যায়তুন, খেজুর, ঘন ঘন বাগান এবং গুচ্ছযুক্ত ফল সৃষ্টি করে থাকেন, তার সাথে অন্য কোন মাবুদ আছে। কি? উত্তরে তাদেরকে অবশ্যই বলতে হবে যে, এগুলো শুধুমাত্র আল্লাহরই কাজ। যদি তিনি তার রিযিক বন্ধ করে দেন, তবে কে এমন আছে যে তা খুলতে পারে? যিনি এই শ্রবণশক্তি ও দর্শনশক্তি দান করেছেন এবং ইচ্ছা করলে যিনি এগুলো ছিনিয়ে নিতে পারেন, তিনি কে? যিনি স্বীয় বিরাট ক্ষমতাবলে জীবন্তকে প্রাণহীন থেকে বের করেন এবং প্রাণহীনকে বের করেন জীবন্ত হতে, তিনি কে? এরূপ প্রশ্ন করলে তারা অবশ্যই জবাব দিতে বাধ্য হবে যে, এগুলো করার ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র আল্লাহর। তিনিই এসব কাজ করে থাকেন। এই আয়াতের ব্যাপারে মতভেদ পূর্বেই বর্ণিত হয়েছে এবং এটা সাধারণ ও সবকেই পরিবেষ্টনকারী। সারা বিশ্বের ব্যবস্থাপনা আল্লাহ পাকেরই দায়িত্বে রয়েছে। যা কিছু হচ্ছে সকলই তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী হচ্ছে। তিনিই সকলকে আশ্রয় দিচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে কেউ কাউকেও আশ্রয় দিতে পারে না। সবারই উপর তিনি হাকিম। তাঁর হুকুমের পর কারো হুকুমের কোনই মূল্য নেই। তিনি যাকে ইচ্ছা প্রশ্ন করেন, কিন্তু তাঁকে কেউই কোন প্রশ্ন করতে পারে না । আসমান ও যমীনের সমস্ত মাখলুক তাঁরই রক্ষণাবেক্ষণে রয়েছে। সব সময়েই তিনি একাই সব। আকাশ ও পৃথিবীর সমস্ত রাজত্ব তারই। ফিরিশতা, দানব ও মানব তাঁরই মুখাপেক্ষী এবং তাঁরই দাস। তাঁর কাছে সবারই জবাব এটাই যে, এ সমুদয় ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহ তা'আলার মধ্যেই রয়েছে। কাফির ও মুশরিকরাও এটা জানে এবং স্বীকারও করে। সুতরাং হে নবী ( সঃ )! ( তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস করঃ ) আচ্ছা! তাহলে তোমরা মহান আল্লাহকে ভয় করছো না কেন? কেন অজ্ঞতা প্রকাশ করতঃ তাঁকে ছেড়ে অন্যের উপাসনা করছো? প্রকৃত মা'বূদ তো সেই আল্লাহ যাকে তোমরাও স্বীকার করছো। অতএব, একমাত্র তিনিই তো ইবাদতের হকদার। সত্য ও সঠিক কথা বুঝে নেয়ার পরেও এরূপ ভ্রষ্টতার অর্থ কি? তিনি ছাড়া সমস্ত মাবুদই মিথ্যা ও বাতিল। প্রকৃত মাবুদের ইবাদত ছেড়ে কোন দিকে তোমরা বিভ্রান্ত হয়ে ফিরছো?আল্লাহ পাকের উক্তিঃ “ এইভাবে সমস্ত অবাধ্য লোকদের সম্পর্কে তোমার প্রতিপালকের এই কথা সাব্যস্ত হয়ে গেল ।” অর্থাৎ যেমনভাবে এই মুশরিকরা কুফরী করেছে এবং কুফরীর উপরই প্রতিষ্ঠিত রয়েছে, তেমনিভাবে তারা এ কথা স্বীকারও করে নিয়েছে যে, আল্লাহই হচ্ছেন মহান ও পবিত্র প্রতিপালক, তিনিই হচ্ছেন সৃষ্টিকর্তা ও রিযিকদাতা, সারা বিশ্বের ব্যবস্থাপক তিনি একাই এবং তিনি রাসূলদেরকে তাওহীদসহ প্রেরণ করেছেন। সুতরাং এই অবাধ্য লোকদের সম্পর্কে মহান আল্লাহর কথা সাব্যস্ত হয়ে গেল যে, তারা জাহান্নামী । যেমন আল্লাহ পাকের উক্তিঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ ( রাসূলগণ তাদের কাছে এসেছিলেন কি-না, আল্লাহ তাআলার এই প্রশ্নের উত্তরে ) তারা বলবেঃ হ্যা ( এসেছিলেন ), কিন্তু ( আমরা অমান্য করেছিলাম, ফলে ) কাফিরদের জন্যে আযাবের প্রতিশ্রুতি পূর্ণ হয়ে রইলো ।” ( ৩৯:৭১ )
সূরা ইউনুস আয়াত 33 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তোমাদের পালনকর্তা তিনিই, যিনি তোমাদের জন্যে সমুদ্রে জলযান চালনা করেন, যাতে তোমরা তার অনুগ্রহ অন্বেষন
- অবশ্য ইউসুফ ও তাঁর ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসুদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।
- মূসা বললেনঃ আমাকে আমার ভুলের জন্যে অপরাধী করবেন না এবং আমার কাজে আমার উপর কঠোরতা
- স্বাদ গ্রহণ কর, তুমি তো সম্মানিত, সম্ভ্রান্ত।
- তারা তাদের উপর পরাক্রমশালী তাদের পালনকর্তাকে ভয় করে এবং তারা যা আদেশ পায়, তা করে
- যখন আমি তাকে সুষম করব এবং তাতে আমার রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার সম্মুখে
- নিশ্চয় যারা কাফের এবং আল্লাহর পথ থেকে মানুষকে ফিরিয়ে রাখে এবং নিজেদের জন্যে সৎপথ ব্যক্ত
- যখন তাদেরকে মেঘমালা সদৃশ তরংগ আচ্ছাদিত করে নেয়, তখন তারা খাঁটি মনে আল্লাহকে ডাকতে থাকে।
- আল্লাহ যদি সন্তান গ্রহণ করার ইচ্ছা করতেন, তবে তাঁর সৃষ্টির মধ্য থেকে যা কিছু ইচ্ছা
- তারা বলল, তুমি তো জাদুগ্রস্থুরেদ একজন।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ইউনুস ডাউনলোড করুন:
সূরা Yunus mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Yunus শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
لا تنسنا من دعوة صالحة بظهر الغيب