কোরান সূরা নিসা আয়াত 34 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Nisa ayat 34 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা নিসা আয়াত 34 আরবি পাঠে(Nisa).
  
   

﴿الرِّجَالُ قَوَّامُونَ عَلَى النِّسَاءِ بِمَا فَضَّلَ اللَّهُ بَعْضَهُمْ عَلَىٰ بَعْضٍ وَبِمَا أَنفَقُوا مِنْ أَمْوَالِهِمْ ۚ فَالصَّالِحَاتُ قَانِتَاتٌ حَافِظَاتٌ لِّلْغَيْبِ بِمَا حَفِظَ اللَّهُ ۚ وَاللَّاتِي تَخَافُونَ نُشُوزَهُنَّ فَعِظُوهُنَّ وَاهْجُرُوهُنَّ فِي الْمَضَاجِعِ وَاضْرِبُوهُنَّ ۖ فَإِنْ أَطَعْنَكُمْ فَلَا تَبْغُوا عَلَيْهِنَّ سَبِيلًا ۗ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلِيًّا كَبِيرًا﴾
[ النساء: 34]

পুরুষেরা নারীদের উপর কৃর্তত্বশীল এ জন্য যে, আল্লাহ একের উপর অন্যের বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এ জন্য যে, তারা তাদের অর্থ ব্যয় করে। সে মতে নেককার স্ত্রীলোকগণ হয় অনুগতা এবং আল্লাহ যা হেফাযতযোগ্য করে দিয়েছেন লোক চক্ষুর অন্তরালেও তার হেফাযত করে। আর যাদের মধ্যে অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদের সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং প্রহার কর। যদি তাতে তারা বাধ্য হয়ে যায়, তবে আর তাদের জন্য অন্য কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সবার উপর শ্রেষ্ঠ। [সূরা নিসা: 34]

Surah An-Nisa in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Nisa ayat 34


পুরুষরা নারীদের অবলন্বন, যেহেতু আল্লাহ্ তাদের এক শ্রেণীকে অন্য শ্রেণীর উপরে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন, এবং যেহেতু তারা তাদের সম্পত্তি থেকে খরচ করে। কাজেই সতীসাধবী নারীরা অনুগতা, গোপনীয়তার রক্ষয়িত্রী, যেমন আল্লাহ্ রক্ষা করেছেন। আর যে নারীদের ক্ষেত্রে তাদের অবাধ্যতা আশঙ্কা করো, তাদের উপদেশ দাও, আর শয্যায় তাদের একা ফেলে রাখো, আর তাদের প্রহার করো। তারপর যদি তারা তোমাদের অনুগতা হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে অন্য পথ খুজোঁ না। নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ সর্বজ্ঞাতা, মহামহিম।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৩৪. বস্তুতঃ পুরুষরা মহিলাদের নেতৃত্ব দেয় এবং তাদের বিষয়াদির দায়িত্বভার গ্রহণ করে। কারণ, আল্লাহ তা‘আলা তাদেরকে মহিলাদের উপর বিশেষ শ্রেষ্ঠত্বের গুণে গুণান্বিত করেছেন। উপরন্তু তিনি পুরুষদের উপর ভরণপোষণ ও দায়িত্বভার গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন। তাই নেককার মহিলারা তাদের রব্ব ও তাদের স্বামীর প্রতি আনুগত্যশীল এবং তাদের প্রতি আল্লাহর তাওফীকের দরুন নিজেদের স্বামীর অনুপস্থিতিতে তাদের প্রতিও যতœশীল হবে। হে স্বামীরা! তোমরা যে স্ত্রীদের কথা ও কাজে তাদের স্বামীদের আনুগত্যের ব্যাপারে অবজ্ঞার আশঙ্কা করো তখন তোমরা তাদেরকে স্বামীদের অবদানের কথা স্মরণ করিয়ে দাও এবং আল্লাহর ভয় দেখাও। তারা এতে সাড়া না দিলে তাদের বিছানা পরিত্যাগ করো। তথা স্বামী তার স্ত্রীকে পেছনে রেখে শুবে এবং সহবাস হতে বিরত থাকবে। এতেও সাড়া না দিলে তাদেরকে যখম করা ছাড়া মারবে। এতে আনুগত্যের দিকে ফিরে আসলে তাদের প্রতি যুলুম বা তিরস্কার করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা প্রত্যেক বস্তুর উপরে ক্ষমতাবান। তিনি তাঁর সত্তা ও গুণাবলীতে মহান। তাই তোমরা তাঁকেই ভয় করো।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


পুরুষ নারীর কর্তা। কারণ, আল্লাহ তাদের এককে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন এবং এ জন্য যে পুরুষ ( তাদের জন্য ) ধন ব্যয় করে।[১] সুতরাং পুণ্যময়ী নারীরা অনুগতা এবং পুরুষের অনুপস্থিতিতে লোক-চক্ষুর অন্তরালে ( স্বামীর ধন ও নিজেদের ইজ্জত ) রক্ষাকারিণী; আল্লাহর হিফাযতে ( তওফীকে ) তারা তা হিফাযত করে। আর স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার তোমরা আশংকা কর, তাদেরকে সদুপদেশ দাও, তাদের শয্যা ত্যাগ কর এবং তাদেরকে প্রহার কর। অতঃপর যদি তারা তোমাদের অনুগতা হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোন পথ অন্বেষণ করো না। [২] নিশ্চয় আল্লাহ সুউচ্চ, সুমহান। [১] এই আয়াতে পুরুষদের কর্তৃত্ব ও দায়িত্বশীলতার দু'টি কারণ বলা হয়েছে। প্রথমটি হল, আল্লাহ প্রদত্তঃ যেমন, পুরুষোচিত শক্তি ও সাহস এবং মেধাগত যোগ্যতায় পুরুষ সৃষ্টিগতভাবেই নারীর তুলনায় অনেক বেশী। দ্বিতীয়টি হল সব-উপার্জিতঃ এই দায়িত্ব শরীয়ত পুরুষের উপর চাপিয়েছে। মহিলাদেরকে তাদের প্রাকৃতিক দুর্বলতার কারণে এবং তাদের সতীত্ব, শ্লীলতা এবং পবিত্রতার হিফাযতের জন্য ইসলাম বিশেষ করে তাদের জন্য অতীব জরুরী যে বিধি-বিধান প্রণয়ন করেছে সেই কারণেও উপার্জনের ঝামেলা থেকে তাদেরকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। মহিলাদের নেতৃত্ব দানের বিরুদ্ধে কুরআন কারীমের এটা এক অকাট্য দলীল। এর সমর্থন সহীহ বুখারীর সেই হাদীস দ্বারাও হয়, যাতে নবী করীম ( সাঃ ) বলেছেন, " এমন জাতি কখনোও সফলকাম হবে না, যে জাতি তাদের নেতৃত্বের দায়িত্বভার কোন মহিলার উপর অর্পণ করবে। " [২] স্ত্রী অবাধ্য হলে সর্বপ্রথম তাকে সদুপদেশ ও নসীহতের মাধ্যমে বুঝাতে হবে। দ্বিতীয়তঃ সাময়িকভাবে তার সংসর্গ থেকে পৃথক হতে হবে। বুদ্ধিমতী মহিলার জন্য এটা বড় সতর্কতার বিষয়। কিন্তু এতেও যদি সে না বুঝে, তাহলে হাল্কাভাবে প্রহার করার অনুমতি আছে। তবে এই প্রহার যেন হিংস্রতা ও অত্যাচারের পর্যায়ে না পৌঁছে; যেমন অনেক মূর্খ লোকের স্বভাব। মহান আল্লাহ এবং তাঁর রসূল ( সাঃ ) এই যুলমের অনুমতি কাউকে দেননি। 'অতঃপর যদি তারা তোমাদের অনুগতা হয়, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোন পথ অন্বেষণ করো না' অর্থাৎ, তাহলে আর মারধর করো না, তাদের উপর সংকীর্ণতা সৃষ্টি করো না অথবা তাদেরকে তালাক দিও না। অর্থাৎ, তালাক হল একেবারে শেষ ধাপ; যখন আর কোন উপায় থাকবে না, তখন তার প্রয়োগ হবে। কিন্তু বহু স্বামী তাদের এই অধিকারকে বড় অন্যায়ভাবে ব্যবহার করে থাকে। ফলে সামান্য ও তুচ্ছ কারণে তালাক দিয়ে নিজের, স্ত্রীর এবং সন্তানদের জীবন নষ্ট করে থাকে।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


পুরুষরা নারীদের কর্তা [], কারণ আল্লাহ তাদের এককে অপরের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং এজন্যে যে, পুরুষ তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে []। কাজেই পূণ্যশীলা স্ত্রীরা অনুগতা [] এবং লোকচক্ষুর আড়ালে আল্লাহর হেফাযতে তারা হেফাযত করে []। আর স্ত্রীদের মধ্যে যাদের অবাধ্যতার আশংকা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, তারপর তাদের শয্যা বর্জন কর এবং তাদেরকে প্রহার কর []। যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অন্বেষণ করো না []। নিশ্চয় আল্লাহ শ্রেষ্ঠ, মহান। ষষ্ট রুকূ‘ [] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ব্যতীত যদি অন্য কাউকে আমি সিজদা করার নির্দেশ দিতাম, তাহলে স্ত্রীকে তার স্বামীকে সিজদা করার অনুমতি দিতাম। [ তিরমিযীঃ ১১৫৯ ] [] পূর্ববর্তী আয়াতসমূহের বক্তব্য অনুসারে পুরুষ ও নারীদের অধিকার পরস্পর সামঞ্জস্যপূর্ণ, বরং পুরুষের তুলনায় নারীদের দুর্বলতার কারণে তাদের অধিকার আদায়ের ব্যাপারে তুলনামূলকভাবে বেশী গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কারণ নারীরা বল প্রয়োগের মাধ্যমে নিজেদের অধিকার আদায় করে নিতে পারে না। কিন্তু তথাপি এই সমতার অর্থ এই নয় যে, পুরুষ ও নারীর মধ্যে মর্যাদার কোন পার্থক্য থাকবে না; বরং দুটি ন্যায়সঙ্গত ও তাৎপর্যের প্রেক্ষিতেই পুরুষদেরকে নারীদের পরিচালক নিযুক্ত করা হয়েছে। প্রথমতঃ পুরুষকে তার জ্ঞানৈশ্বর্য ও পরিপূর্ণ কর্মক্ষমতার কারণে নারী জাতির উপর মর্যাদা দেয়া হয়েছে, যা অর্জন করা নারী জাতির পক্ষে আদৌ সম্ভব নয়। দৈবাৎ কিংবা ব্যক্তিবিশেষের কথা স্বতন্ত্র। দ্বিতীয়তঃ নারীর যাবতীয় প্রয়োজনের নিশ্চয়তা পুরুষরা নিজের উপার্জন কিংবা স্বীয় সম্পদের দ্বারা বিধান করে থাকে। মোটকথা: ইসলাম পুরুষকে নারীর নেতা বানিয়েছে। নারীর উপর কর্তব্য হচ্ছে, আল্লাহ তাকে তার স্বামীর যা আনুগত্য করার নির্দেশ দিয়েছেন তার আনুগত্য করা। আর সে আনুগত্য হচ্ছে, সে স্বামীর পরিবারের প্রতি দয়াবান থাকবে, স্বামীর সম্পদের রক্ষণাবেক্ষণ করবে। স্বামীর পক্ষ থেকে খরচ ও কষ্ট করার কারণে আল্লাহ স্বামীকে স্ত্রীর উপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন। [ তাবারী ] [] আরবী ( قٰنِتٰتٌ ) শব্দটির মূল হল ( قَانِتٌ )। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা বলেন, কুরআনের যেখানেই এ শব্দটির ব্যবহার হয়েছে, সেখানেই অনুগত থাকা অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। [ তাবারী ] [] রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ সবচেয়ে উত্তম নারী হল ঐ স্ত্রী যার দিকে তুমি তাকালে তোমাকে সে খুশী করে। তাকে নির্দেশ দিলে আনুগত্য করে। তুমি তার থেকে অনুপস্থিত থাকলে সে তার নিজেকে এবং তোমার সম্পদকে হেফাযত করে। [ মুসনাদে আহমাদঃ ২/২৫১, ৪৩২, ৪৩৮, মুস্তাদরাকে হাকেমঃ ২/১৬১ ] [] সেসব স্ত্রীলোক, যারা স্বামীদের আনুগত্য করে না কিংবা যারা এ ব্যাপারে শৈথিল্য প্রদর্শন করে। আল্লাহ্ তা’আলা সংশোধনের জন্য পুরুষদেরকে যথাক্রমে তিনটি উপায় বাতলে দিয়েছেন। অর্থাৎ স্ত্রীদের পক্ষ থেকে যদি নাফরমানী সংঘটিত হয় কিংবা এমন আশংকা দেখা দেয়, তবে প্রথম পর্যায়ে তাদের সংশোধন হল যে, নরমভাবে তাদের বোঝাবে। যদি তাতেও বিরত না হয়, তবে দ্বিতীয় পর্যায়ে তাদের বিছানা নিজের থেকে পৃথক করে দেবে। যাতে এই পৃথকতার দরুন সে স্বামীর অসন্তুষ্টি উপলব্ধি করে নিজের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হতে পারে। তারপর যদি তাতেও সংশোধন না হয়, তবে মৃদুভাবে মারবে, তিরস্কার করবে। আর তার সীমা হল এই যে, শরীরে যেন সে মারধরের প্রতিক্রিয়া কিংবা যখম না হয়। কিন্তু এই পর্যায়ের শাস্তি দানকেও রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম পছন্দ করেননি, বরং তিনি বলেছেনঃ ‘ভাল লোক এমন করে না’। [ ইবন হিব্বানঃ ৯/৪৯৯, নং- ৪১৮৯, আবু দাউদঃ ২১৪৬, ইবন মাজাহঃ ১৯৮৫ ] যাইহোক, এ সাধারণ মারধরের মাধ্যমেই যদি সমস্যার সমাধান হয়ে যায়, তবুও উদ্দেশ্য হাসিল হয়ে গেল। [] পূর্বের আয়াতাংশে যেমন স্ত্রীদের সংশোধনকল্পে পুরুষদেরকে তিনটি অধিকার দান করা হয়েছে, তেমনিভাবে আয়াতের শেষাংশে একথাও বলা হয়েছে যে, যদি এ তিনটি ব্যবস্থার ফলে তারা তোমাদের কথা মানতে আরম্ভ করে, তবে তোমরাও আর বাড়াবাড়ি করো না এবং দোষ খোঁজাখুঁজি করো না, বরং কিছু সহনশীলতা অবলম্বন কর। আর একথা খুব ভাল করে জেনে রেখো যে, আল্লাহ্ তা’আলা তোমাদেরকে নারীদের উপর তেমন কোন উচ্চ মর্যাদা দান করেননি। আল্লাহ তা’আলার মহত্ত্ব তোমাদের উপরও বিদ্যমান রয়েছে, তোমরা কোন রকম বাড়াবাড়ি করলে তার শাস্তি তোমাদেরকেও ভোগ করতে হবে। অর্থাৎ তোমরাও সহনশীলতার আশ্রয় নাও; সাধারণ কথায় কথায় দোষারোপের পস্থা খুঁজে বেড়িয়ো না। আর জেনে রেখো আল্লাহর কুদরত ও ক্ষমতা সবার উপরেই পরিব্যাপ্ত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ যেন তার স্ত্রীকে চাকর-বাকরদের মত না মারে, পরে সে দিনের শেষে তার সাথে আবার সহবাস করল। [ বুখারীঃ ৫২০৪ ] অন্য বর্ণনায় এসেছে, এক সাহাবী রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমাদের কারো উপর তার স্ত্রীর কি হক আছে? রাসূল বললেনঃ তুমি খেতে পেলে তাকেও খেতে দেবে, তুমি পরিধান করলে তাকেও পরিধেয় বস্ত্র দেবে, তার চেহারায় মারবে না এবং তাকে কুৎসিৎও বানাবে না, তাকে পরিত্যাগ করলেও ঘরের মধ্যেই রাখবে। [ আবু দাউদঃ ২১৪২ ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেন যে, পুরুষ হচ্ছে স্ত্রীর নেতা। সে স্ত্রীকে সোজা ও ঠিক-ঠাককারী। কেননা, পুরুষ স্ত্রীর উপর মর্যাদাবান। এ কারণেই নবুওয়াত পুরুষদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রয়েছে। অনুরূপভাবে শরীয়তের নির্দেশ অনুসারে খলীফা একমাত্র পুরুষই হতে পারে। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ ঐ সব লোক কখনও মুক্তি পেতে পারেন না যারা কোন নারীকে তাদের শাসনকত্রী বানিয়ে নেয় । ( সহীহ বুখারী ) এরূপভাবে বিচারপতি প্রভৃতি পদের জন্যেও শুধু পুরুষেরাই যোগ্য। নারীদের উপর পুরুষদের মর্যাদা লাভের দ্বিতীয় কারণ এই যে, পুরুষেরা নারীদের উপর তাদের মাল খরচ করে থাকে, যে খরচের দায়িত্ব কিতাব ও সুন্নাহ তাদের প্রতি অর্পণ করেছে। যেমন মোহরের খরচ, খাওয়া পরার খরচ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় খরচ। সুতরাং জন্মগতভাবেও পুরুষ স্ত্রী অপেক্ষা উত্তম এবং উপকারের দিক দিয়েও পুরুষের মর্যাদা স্ত্রীর উপরে। এ জন্যেই স্ত্রীর উপর পুরুষকে নেতা বানানো হয়েছে। অন্য জায়গা রয়েছে। ( আরবী ) অর্থাৎ তাদের উপর ( স্ত্রীদের ) পুরুষদের মর্যাদা রয়েছে।' ( ২:২২৮ ) হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন, এ আয়াতের ভাবার্থ এই যে, নারীদেরকে পুরুষদের আনুগত্য ( স্বীকার করতে হবে এবং তাদের কাজ হচ্ছে সন্তানাদির রক্ষণাবেক্ষণ করা এবং স্বামীর মালের হিফাযত করা ইত্যাদি।হযরত হাসান বসরী (রঃ ) বলেন, একটি স্ত্রীলোক নবী ( সঃ )-এর সামনে স্বীয় স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে, তার স্বামী থাকে থাপ্পড় মেরেছে। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) প্রতিশোধ নেয়ার হুকুম প্রায় দিয়েই ফেলেছিলেন, এমন সময় এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। সুতরাং প্রতিশোধ গ্রহণ হতে বিরত রাখা হয়। অন্য একটি বর্ণনায় রয়েছে যে, একজন আনসারী ( রাঃ ) তাঁর স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর খিদমতে উপস্থিত হন। তাঁর স্ত্রী রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে বলেন, “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমার স্বামী আমাকে চড় মেরেছে । ওর চিহ্ন এখনও আমার চেহারায় বিদ্যমান রয়েছে। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন বলেনঃ “ তার এ অধিকার ছিল না । সেখানেই এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ আমি চেয়েছিলাম এক রকম এবং আল্লাহ তা'আলা চাইলেন অন্য রকম ।”হযরত শা’বী ( রাঃ ) বলেন যে, মাল খরচ করার ভাবার্থ হচ্ছে মোহর আদায় করা। দেখা যায় যে, পুরুষ যদি স্ত্রীর উপর ব্যভিচারের অপবাদ দেয় তবে লেআনের ( একের অপরকে অভিশাপ দেয়াকে ‘লে আন’ বলে ) হুকুম রয়েছে। পক্ষান্তরে যদি স্ত্রী স্বামীর সম্পর্কে একথা বলে এবং প্রমাণ করতে না পারে তবে স্ত্রীকে চাবুক মারা হয়। অতএব, নারীদের মধ্যে সতী সাধ্বী হচ্ছে ঐ নারী, যে তার স্বামীর মাল রক্ষণাবেক্ষণ করে, যা রক্ষণাবেক্ষণের নির্দেশ স্বয়ং আল্লাহ তা'আলা দিয়েছেন।রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ উত্তম ঐ নারী যখন তার স্বামী তার দিকে তাকায় তখন সে তাকে সন্তুষ্ট করে, যখন কোন নির্দেশ দেয় তখন তা পালন করে এবং যখন সে বিদেশে গমন করে তখন সে নিজেকে নির্লজ্জতাপূর্ণ কাজ । হতে নিরাপদে রাখে ও স্বীয় স্বামীর মালের হিফাযত করে।”অতঃপর তিনি এ আয়াতটি পাঠ করেন। মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে, হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ ( রাঃ ) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যখন কোন নারী পাঁচ ওয়াক্ত নামায আদায় করবে, রমযানের রোযা রাখবে, স্বীয় গুপ্তাঙ্গের হিফাযত করবে এবং স্বামীকে মেনে চলবে, তাকে বলা হবে-যে কোন দরজা দিয়ে চাও জান্নাতে প্রবেশ কর ।”এরপর আল্লাহ তাআলা বলেন-যেসব নারীর দুষ্টামিকে তোমরা ভয় কর, অর্থাৎ যারা তোমাদের উপরে হতে চায়, তোমাদের অবাধ্যাচরণ করে, তোমাদেরকে কোন গুরুত্ব দেয় না এবং তোমাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ করে, তাদেরকে তোমরা প্রথমে মুখে উপদেশ প্রদান কর, নানা প্রকারে তাদের অন্তরে তাওয়া সৃষ্টি কর, স্বামীর অধিকারের কথা তাদেরকে বুঝিয়ে দাও। তাদেকে বল-দেখ, স্বামীর এত অধিকার রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ 'যদি কাউকে আমি এ নির্দেশ দিতে পারতাম যে, সে আল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে সিজদা করবে তবে নারীকে নির্দেশ দিতাম যে, সে যেন তার স্বামীকে সিজদা করে। কেননা, তার উপর সবচেয়ে বড় হক তারই রয়েছে।'সহীহ বুখারী শরীফে হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ যখন কোন লোক তার স্ত্রীকে বিছানায় আহ্বান করে এবং সে অস্বীকার করে তখন সকাল পর্যন্ত ফেরেশতাগণ তাকে অভিশাপ দিতে থাকে।' সহীহ মুসলিমে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যে রাত্রে কোন স্ত্রী রাগান্বিত হয়ে স্বামীর বিছানা পরিত্যাগ করে, সকাল পর্যন্ত আল্লাহর রহমতের ফেরেশতা তার উপর অভিসম্পাত বর্ষণ করতে থাকে ।তাই এখানে ইরশাদ হচ্ছে-এরূপ অবাধ্য নারীদেরকে প্রথমে বুঝাতে চেষ্টা কর অথবা বিছানা হতে পৃথক রাখ। হযরত ইবনে আববাস ( রাঃ ) বলেন, “ অর্থাৎ শয়ন-তো বিছানার উপরেই করাবে, কিন্তু পার্শ্ব পরিবর্তন করে থাকবে এবং সঙ্গম করবে না । তার সাথে কথা বলাও বন্ধ রাখতে পারো এবং স্ত্রীর জন্য এটাই হচ্ছে বড় শাস্তি।” কোন কোন তাফসীরকারকের মতে তাকে পার্শ্বে শুতেও দেবে না। রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে জিজ্ঞেস করা হয়ঃ “ স্ত্রীর তার স্বামীর উপর কি হক রয়েছে?” তিনি বলেনঃ “যখন তুমি খাবে তখন তাকেও খাওয়াবে, তুমি যখন পরবে তখন তাকেও পরাবে, তার মুখে মেরো না, গালি দিও না, ঘর হতে পৃথক করো না, ক্রোধের সময় যদি শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্যে কথা বন্ধ কর তথাপি তাকে ঘর হতে বের করো না ।” অতঃপর বলেনঃ “ তাতেও যদি ঠিক না হয় তবে তাকে শাসন-গর্জন করে এবং মেরে-পিটেও সরল পথে আনয়ন কর ।সহীহ মুসলিমে নবী ( সঃ )-এর বিদায় হজ্বের ভাষণে রয়েছেঃ নারীদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। তারা তোমাদের সেবিকা ও অধীনস্থা। তাদের উপর তোমাদের হক এই যে, যাদের যাতায়াতে তোমরা অসন্তুষ্ট তাদেরকে তারা আসতে দেবে না। যদি তারা এরূপ না করে তবে তোমরা তাদেরকে যেন-তেন প্রকারে সতর্ক করতে পার। কিন্তু তোমরা তাদেরকে কঠিনভাবে প্রহার করতে পার না, যে প্রহারের চিহ্ন প্রকাশ পায়। তোমাদের উপর তাদের হক এই যে, তোমরা তাদেরকে খাওয়াবে ও পরাবে এবং এমন প্রহার করা উচিত নয় যার চিহ্ন অবশিষ্ট থাকে, কোন অঙ্গ ভেঙ্গে যায় কিংবা কোন অঙ্গ আহত হয়।'হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন, “ এরপরও যদি তারা বিরত না হয় তবে ক্ষতিপূরণ নিয়ে তালাক দিয়ে দাও । একটি হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ ‘আল্লাহর দাসীদেরকে প্রহার করো না।' এরপর একদা হযরত উমার ফারূক ( রাঃ ) এসে আরয করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! নারীরা আপনার এ নির্দেশ শুনে তাদের স্বামীদের উপর বীরত্বপনা দেখানো আরম্ভ করেছে । এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাদেরকে মারার অনুমতি দেন। তখন পুরুষদের পক্ষ হতে বেদম মারপিট শুরু হয়ে যায় এবং বহু নারী অভিযোগ নিয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট আগমন করে। তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ জেনে রেখ যে, আমার নিকট নারীদের অভিযোগ পৌছেছে। মনে রেখ যে, যারা স্ত্রীদের উপর , শক্তি প্রয়োগ করে তারা ভাল মানুষ নয়।' ( সুনান-ই-আবি দাউদ )হযরত আশআস ( রঃ ) বলেন, একদা আমি হযরত উমার ( রাঃ )-এর আতিথ্য গ্রহণ করি। ঘটনাক্রমে সে দিন তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কিছু তিক্ততার সৃষ্টি হয়। হযরত উমার ( রাঃ ) স্বীয় পত্নীকে প্রহার করেন, অতঃপর আমাকে বলেন, হে আশআস ( রাঃ )! তিনটি কথা স্মরণ রেখ, যা আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হতে স্মরণ রেখেছি। এক তো এই যে, স্বামীকে জিজ্ঞেস করতে হবে না যে, তিনি স্বীয় স্ত্রীকে কেন মেরেছেন। দ্বিতীয় এই যে, বিতরের নামায না পড়ে শুতে হবে না। তৃতীয় কথাটি বর্ণনাকারীর মনে নেই। ( সুনান-ই-নাসাঈ ) অতঃপর বলেন, তখন যদি নারীরা তোমাদের বাধ্য হয়ে যায় তবে তোমরা তাদের প্রতি কোন কঠোরতা অবলম্বন করো না, মারপিট করো না এবং অসন্তুষ্টি প্রকাশও করো না।‘আল্লাহ সমুন্নত ও মহীয়ান।' অর্থাৎ যদি নারীদের পক্ষ হতে দোষত্রুটি প্রকাশ পাওয়া ছাড়াই বা দোষত্রুটি করার পর সংশোধিত হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও তোমরা তাদেরকে শাসন-গর্জন কর, তবে জেনে রেখ যে, তাদেরকে সাহায্য করা ও তাদের পক্ষ হতে প্রতিশোধ নেয়ার জন্যে স্বয়ং আল্লাহ তা'আলা রয়েছেন এবং নিশ্চয়ই তিনি অত্যন্ত ক্ষমতাবান।

সূরা নিসা আয়াত 34 সূরা

الرجال قوامون على النساء بما فضل الله بعضهم على بعض وبما أنفقوا من أموالهم فالصالحات قانتات حافظات للغيب بما حفظ الله واللاتي تخافون نشوزهن فعظوهن واهجروهن في المضاجع واضربوهن فإن أطعنكم فلا تبغوا عليهن سبيلا إن الله كان عليا كبيرا

سورة: النساء - آية: ( 34 )  - جزء: ( 5 )  -  صفحة: ( 84 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. সুস্পষ্ট মু’জেযাসহ মূসা তোমাদের কাছে এসেছেন। এরপর তার অনুপস্থিতিতে তোমরা গোবৎস বানিয়েছ। বাস্তবিকই তোমরা অত্যাচারী।
  2. এবং অন্য আরও অনেককে অধীন করে দিলাম, যারা আবদ্ধ থাকত শৃঙ্খলে।
  3. যারা নিজেদের কাছে আগত কোন দলীল ছাড়াই আল্লাহর আয়াত সম্পর্কে বিতর্ক করে, তাদের একজন আল্লাহ
  4. রসূলগণ বলল, তোমাদের অকল্যাণ তোমাদের সাথেই! এটা কি এজন্যে যে, আমরা তোমাদেরকে সদুপদেশ দিয়েছি? বস্তুতঃ
  5. মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর। তিনি নিজে অনুগ্রহের
  6. আমি তো ভালভাবেই জানি যে, তারা বলেঃ তাকে জনৈক ব্যক্তি শিক্ষা দেয়। যার দিকে তারা
  7. আর সেদিন যথার্থই ওজন হবে। অতঃপর যাদের পাল্লা ভারী হবে, তারাই সফলকাম হবে।
  8. আর মূসা বলল, হে আমার সম্প্রদায়, তোমরা যদি আল্লাহর উপর ঈমান এনে থাক, তবে তারই
  9. সব প্রশংসা আল্লাহর যিনি নিজের বান্দার প্রতি এ গ্রন্থ নাযিল করেছেন এবং তাতে কোন বক্রতা
  10. এবং মিসকীনকে অন্নদানে পরস্পরকে উৎসাহিত কর না।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নিসা ডাউনলোড করুন:

সূরা Nisa mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Nisa শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত নিসা  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত নিসা  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত নিসা  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত নিসা  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত নিসা  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত নিসা  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত নিসা  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত নিসা  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত নিসা  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত নিসা  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত নিসা  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত নিসা  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত নিসা  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত নিসা  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত নিসা  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত নিসা  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত নিসা  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত নিসা  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত নিসা  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত নিসা  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত নিসা  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত নিসা  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত নিসা  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত নিসা  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত নিসা  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Wednesday, December 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers