কোরান সূরা ক্বাসাস আয়াত 35 তাফসীর
﴿قَالَ سَنَشُدُّ عَضُدَكَ بِأَخِيكَ وَنَجْعَلُ لَكُمَا سُلْطَانًا فَلَا يَصِلُونَ إِلَيْكُمَا ۚ بِآيَاتِنَا أَنتُمَا وَمَنِ اتَّبَعَكُمَا الْغَالِبُونَ﴾
[ القصص: 35]
আল্লাহ বললেন, আমি তোমার বাহু শক্তিশালী করব তোমার ভাই দ্বারা এবং তোমাদের প্রধান্য দান করব। ফলে, তারা তোমার কাছে পৌছাতে পারবে না। আমার নিদর্শনাবলীর জোরে তোমরা এবং তোমাদের অনুসারীরা প্রবল থাকবে। [সূরা ক্বাসাস: 35]
Surah Al-Qasas in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Qasas ayat 35
তিনি বললেন -- ''আমরা শীঘ্রই তোমার বাহু শক্তিশালী করব তোমার ভাইকে দিয়ে, আর তোমাদের উভয়ের জন্য আমরা ক্ষমতা দেবো, কাজেই তারা তোমাদের নাগাল পাবে না, -- আমাদের নিদর্শনাবলী নিয়ে, -- তোমরা দুজন ও যারা তোমাদের অনুসরণ করে তারা বিজয়ী হবে।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৩৫. আল্লাহ তা‘আলা মূসা ( আলাইহিস-সালাম ) এর ডাকে সাড়া দিয়ে বললেন: হে মূসা! আমি আপনার ভাইকে আপনার সহযোগী রাসূল হিসেবে পাঠিয়ে আপনাকে অচিরেই শক্তিশালী করবো। আর আমি আপনাদের জন্য প্রমাণ ও সমর্থনের ব্যবস্থা করবো। ফলে তারা আপনাদের নিকট অপছন্দনীয় কোন অনিষ্ট নিয়ে পৌঁছাতে পারবে না। আর আমার পাঠানো নিদর্শনগুলোর কারণে আপনারা ও আপনাদের অনুসারী মু’মিনরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবেন।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আল্লাহ বললেন, ‘আমি তোমার ভাই দ্বারা তোমার বাহু শক্তিশালী করব[১] এবং তোমাদের উভয়কে আধিপত্য দান করব। ওরা তোমাদের নিকট পৌঁছতে পারবে না।[২] তোমরা এবং তোমাদের অনুসারীরা আমার নিদর্শন বলেই ওদের উপর বিজয়ী হবে।’ [৩] [১] মূসা ( আঃ )-এর দু'আ মঞ্জুর করা হল আর তার আশানুরূপ হারূন ( আঃ )-কেও নবুঅত প্রদান করে তাঁর সঙ্গী ও সহযোগী বানানো হল।[২] অর্থাৎ, আমি তোমাদের সুরক্ষা করব। ফিরআউন ও তার সাঙ্গ-পাঙ্গরা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না।[৩] এটা সেই বিষয় যা কুরআনে বিভিন্ন স্থানে বর্ণিত হয়েছে। যেমন, সূরা মায়িদাহ ৫:৬৭ নং, আহযাব ৩৩:৩৯ নং, মুজাদিলাহ ৫৮:২১ নং, মু'মিন ৪০:৫১-৫২ নং আয়াত দ্রষ্টব্য।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আল্লাহ্ বললেন, ‘অচিরেই আমরা আপনার ভাইয়ের দ্বারা আপনার বাহুকে শক্তিশালী করব এবং আপনাদের উভয়কে প্রাধান্য দান করব। ফলে তারা আপনাদের কাছে পৌঁছতে পারবে না। আপনারা এবং আপনাদের অনুসারীরা আমাদের নিদর্শন বলে তাদের উপর প্রবল হবেন।’
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৩৪-৩৫ নং আয়াতের তাফসীর
এটা গত হয়েছে যে, হযরত মূসা ( আঃ ) ফিরাউনের ভয়ে তার শহর হতে পালিয়ে গিয়েছিলেন। আল্লাহ তা'আলা যখন তাঁকে সেখানে তারই কাছে নবীরূপে যেতে বললেন তখন তার সব কিছু স্মরণ হয়ে গেল এবং তিনি আরজ করলেনঃ “ হে আমার প্রতিপালক! আমি তো তাদের একজনকে হত্যা করেছি । ফলে আমার ভয় হচ্ছে যে, না জানি হয় তো তার প্রতিশোধ হিসেবে তারা আমাকে হত্যা করে ফেলবে।শৈশবে হযরত মূসা ( আঃ )-এর পরীক্ষার জন্যে তাঁর সামনে একখণ্ড জ্বলন্ত অগ্নিকাষ্ঠ এবং একটি খেজুর বা মুক্তা রাখা হয়েছিল। তখন তিনি অগ্নিকাষ্ঠ ধরে নিয়েছিলেন এবং মুখে পুরে দিয়েছিলেন। এ কারণে তাঁর যবানে কিছুটা তোতলামি এসে গিয়েছিল। আর এ কারণেই তিনি মহান আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করেছিলেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ আমার জিহ্বার জড়তা দূর করে দিন । যাতে তারা আমার কথা বুঝতে পারে। আমার জন্যে করে দিন একজন সাহায্যকারী আমার স্বজনবর্গের মধ্য হতে; আমার ভ্রাতা হারূনকে; তার দ্বারা আমার শক্তি সুদৃঢ় করুন এবং তাকে আমার কর্মে অংশী করুন।” ( ২০:২৭-৩২ ) এখানেও তার অনুরূপ প্রার্থনা বর্ণিত হয়েছে। তিনি প্রার্থনা করেনঃ “ আমার ভ্রাতা হারূন আমা অপেক্ষা বাগ্মী । অতএব তাকে আমার সাহায্যকারী রূপে প্রেরণ করুন। সে আমাকে সমর্থন করবে। আমি আশংকা করি যে, তারা আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে। সুতরাং হারূন ( আঃ ) আমার সাথে থাকলে সে আমার কথা জনগণকে বুঝিয়ে দেবে।” মহামহিমান্বিত আল্লাহ তাকে জবাবে বললেনঃ “ আমি তোমার দু'আ । ককূল করলাম। তোমার ভ্রাতার দ্বারা আমি তোমার বাহু শক্তিশালী করবো এবং তোমাদের উভয়কে প্রাধান্য দান করবো। অর্থাৎ তাকেও তোমার সাথে নবী বানিয়ে দেবো।” যেমন আল্লাহ তা'আলা অন্য আয়াতে বলেছেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ হে মূসা ( আঃ )! তুমি যা চেয়েছে তা তোমাকে দেয়া হলো ।” ( ২০ ৩৬ ) আর এক জায়গায় বলেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ আমি নিজ অনুগ্রহে তাকে দিলাম তার ভ্রাতা হারূন ( আঃ )-কে নবীরূপে ।” ( ১৯:৫৩ ) এ জন্যেই পূর্ব যুগীয় কোন কোন গুরুজন বলেছেনঃ “ কোন ভাই তার ভাই এর উপর ঐরূপ অনুগ্রহ করেনি যেরূপ অনুগ্রহ করেছিলেন হযরত মূসা ( আঃ ) তাঁর ভাই হারূন ( আঃ )-এর উপর । তিনি আল্লাহ তা'আলার নিকট প্রার্থনা করে তাকে নবী বানিয়ে নিয়েছিলেন। হযরত মূসা ( আঃ ) যে একজন বড় মর্যাদা সম্পন্ন নবী ছিলেন তার এটাই বড় প্রমাণ যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁর এ দু'আও প্রত্যাখ্যান করেননি। বাস্তবিকই তিনি আল্লাহ তা'আলার নিকট বিশেষ মর্যাদার অধিকারী ছিলেন। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ আমি তোমাদের উভয়কে প্রাধান্য দান করবো । তারা তোমাদের নিকট পৌঁছতে পারবে না। তোমরা এবং তোমাদের অনুসারীরা আমার নিদর্শন বলে তাদের উপর প্রবল হবে। যেমন আল্লাহ তা'আলা অন্য জায়গায় বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ হে রাসূল ( সঃ )! তোমার প্রতি তোমার প্রতিপালকের পক্ষ হতে যা অবতীর্ণ করা হয় তা তুমি ( জনগণের নিকট পৌঁছিয়ে দাও......
আল্লাহ তোমাকে লোকদের অনিষ্ট হতে রক্ষা করবেন ।” (৫:৬৭ ) মহান আল্লাহ আর এক জায়গায় বলেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ যারা আল্লাহর রিসালাত পৌঁছিয়ে দেয় .....
এবং হিসাব গ্রহণকারী হিসেবে আল্লাহই যথেষ্ট ।” ( ৩৩:৩৯ ) অন্য এক জায়গায় আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ আল্লাহ লিপিবদ্ধ করে রেখেছেনঃ আমি ও আমার রাসূলরা অবশ্যই জয়যুক্ত হবো, নিশ্চয়ই আল্লাহ ক্ষমতাবান, মহাপ্রতাপশালী ।” ( ৫৮:২১ ) আর এক আয়াতে বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ নিশ্চয়ই আমি আমার রাসূলদের ও মুমিনদেরকে সাহায্য করবো পার্থিব জীবনে ( শেষপর্যন্ত ) ।” ( ৪০:৫১ )ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ )-এর মতে আয়াতটির ভাবার্থ হলো: “ আমার প্রদত্ত প্রাধান্য দানের কারণে ফিরাউন ও তার লোকেরা তোমাদেরকে কষ্ট দিতে সক্ষম । হবে না এবং আমার প্রদত্ত নিদর্শন বলে বিজয় শুধু তোমরাই লাভ করবে। কিন্তু পূর্বে যে অর্থ বর্ণনা করা হয়েছে তার দ্বারাও এটাই সাব্যস্ত হয়েছে। সুতরাং এই ভাবার্থের কোন প্রয়োজনই নেই। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী।
সূরা ক্বাসাস আয়াত 35 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আমি ইচ্ছা করলে আপনার কাছে ওহীর মাধমে যা প্রেরণ করেছি তা অবশ্যই প্রত্যাহার করতে পারতাম।
- আল্লাহ বললেনঃ আজকের দিনে সত্যবাদীদের সত্যবাদিতা তাদের উপকারে আসবে। তাদের জন্যে উদ্যান রয়েছে, যার তলদেশে
- (জিব্রাইল বললঃ) আমি আপনার পালনকর্তার আদেশ ব্যতীত অবতরণ করি না, যা আমাদের সামনে আছে, যা
- পরহেযগারদেরকে বলা হয়ঃ তোমাদের পালনকর্তা কি নাযিল করেছেন? তারা বলেঃ মহাকল্যাণ। যারা এ জগতে সৎকাজ
- আমি আপনার প্রতি এ কিতাব যথার্থরূপে নাযিল করেছি। অতএব, আপনি নিষ্ঠার সাথে আল্লাহর এবাদত করুন।
- বলুনঃ আমি ও তোমাদের মতই একজন মানুষ, আমার প্রতি প্রত্যাদেশ হয় যে, তোমাদের ইলাহই একমাত্র
- তার পত্নী ও তার সন্তানদের কাছ থেকে।
- অতঃপর সে কক্ষ থেকে বের হয়ে তার সম্প্রদায়ের কাছে এল এবং ইঙ্গিতে তাদেরকে সকাল সন্ধ্যায়
- অতএব তোমরা ফেরআউনের কাছে যাও এবং বল, আমরা বিশ্বজগতের পালনকর্তার রসূল।
- সিংহাসনে বসে অবলোকন করবে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ক্বাসাস ডাউনলোড করুন:
সূরা Qasas mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Qasas শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers