কোরান সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত 36 তাফসীর
﴿وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهِ عِلْمٌ ۚ إِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ أُولَٰئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُولًا﴾
[ الإسراء: 36]
যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না। নিশ্চয় কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ এদের প্রত্যেকটিই জিজ্ঞাসিত হবে। [সূরা বনী ইসরাঈল: 36]
Surah Al-Isra in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Isra ayat 36
আর যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই তার অনুসরণ করো না। নিঃসন্দেহ শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তি ও অন্তঃকরণ -- এ দের প্রত্যেকটিকে তাদের সন্বন্ধে সওয়াল করা হবে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৩৬. হে আদম সন্তান! যে ব্যাপারে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেটির তুমি অনুসরণ করো না। অন্যথায় তুমি অনুমান ও ধারণারই অনুসরণ করে বসবে। নিশ্চয়ই মানুষ জিজ্ঞাসিত হবে তার কান, চোখ ও অন্তরের ব্যবহার সম্পর্কে। সে এগুলোকে ভালো কাজে ব্যবহার করলে তার সাওয়াব পাবে। আর খারাপ কাজে ব্যবহার করলে তার শাস্তি পাবে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই সেই বিষয়ে অনুমান দ্বারা পরিচালিত হয়ো না। [১] নিশ্চয় কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয় ওদের প্রত্যেকের নিকট কৈফিয়ত তলব করা হবে। [২] [১] قَفَا يَقْفُوْ এর অর্থ পিছনে পড়া। অর্থাৎ, যে বিষয়ে জ্ঞান নেই তার পিছনে পড়ো না। আন্দাজে কথা বলো না। অর্থাৎ, কারো প্রতি কুধারণা করো না। কারো ছিদ্রান্বেষণ করো না। অনুরূপ যে বিষয়ে জ্ঞান নেই তার উপর আমলও করো না। [২] অর্থাৎ, যে জিনিসের পিছনে পড়বে, সে ব্যাপারে কানকে জিজ্ঞাসা করা হবে যে, সে কি শুনেছিল? চোখকে জিজ্ঞাসা করা হবে যে, সে কি দেখেছিল? এবং অন্তরকে জিজ্ঞাসা করা হবে যে, সে কি জেনেছিল? কারণ, এই তিনটিই হল জানার মাধ্যম। অর্থাৎ, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ এই অঙ্গগুলোকে বাকশক্তি দান করবেন এবং তাদেরকে জিজ্ঞাসা করা হবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর যে বিষয়ে তোমার জ্ঞান নেই তার অনুসরণ করো না [ ১ ]; কান, চোখ, হৃদয়- এদের প্রত্যেকটি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে [ ২ ]। [ ১ ] আয়াতে উল্লেখিত وَلَاتَقفُ শব্দটির সঠিক অর্থ, পিছু নেয়া, অনুসরণ করা। [ ফাতহুল কাদীর ] সে অনুসারে আয়াতের অর্থ হবে যে বিষয়ে তুমি জাননা সে বিষয়ের পিছু নিওনা। [ ফাতহুল কাদীর ] ইবন আব্বাস বলেন, এর অর্থ হচ্ছে, বলো না। অপর বর্ণনায় তিনি বলেছেন, যে বিষয় সম্পর্কে তোমার জ্ঞান নেই সে বিষয়ে কাউকে অভিযুক্ত করো না। কাতাদাহ বলেন, যা দেখনি তা বলো না। মুহাম্মাদ ইবনুল হানফিয়া বলেন, মিথ্যা সাক্ষ্য দিও না। [ ইবন কাসীর ] মোটকথা: যে বিষয় জ্ঞান নেই সে বিষয়ে কথা বলাকে পবিত্র কুরআনের বিভিন্ন স্থানে সবচেয়ে বড় গুনাহের মধ্যে গণ্য করা হয়েছে। বলা হয়েছে, “ নিশ্চয়ই আমার প্রতিপালক হারাম করেছেন প্রকাশ্য ও গোপন অশ্লীলতা আর পাপ এবং অসংগত বিরোধিতা এবং কোন কিছুকে আল্লাহর শরীক করা---যার কোন সনদ তিনি পাঠাননি, এবং আল্লাহ সম্বন্ধে এমন কিছু বলা যা তোমরা জান না । ” [ আল-আরাফঃ ৩৩ ] অনুরূপভাবে ধারণা করে কথা বলাও এর অন্তর্ভুক্ত। কুরআন ও হাদীসের বিভিন্ন বর্ণনায় ধারনা করে কথা বলা সম্পর্কে নিষেধাজ্ঞা এসেছে। মহান আল্লাহ বলেন, “তোমরা বিবিধ ধারনা করা থেকে বেঁচে থাক; কেননা কোন কোন ধারনা করা গুনাহের পর্যায়ে পড়ে "[ সূরা আল-হুজুরাতঃ ১২ ] হাদীসে এসেছে, “তোমরা ধারনা করা থেকে বেঁচে থাক; কেননা ধারনা করে কথা বলা মিথ্যা কথা বলা ৷”[ বুখারীঃ ৫১৪৩, মুসলিমঃ ২৫৬৩ ] [ ২ ] এ আয়াতের দু'টি অর্থ করা হয়ে থাকেঃ এক, কেয়ামতের দিন কান, চক্ষু ও অন্তঃকরণ সম্পর্কে তার মালিককে প্রশ্ন করা হবেঃ প্রশ্ন করা হবেঃ তুমি সারা জীবন কি কি শুনেছ? প্রশ্ন করা হবেঃ তুমি সারা জীবন কি কি দেখেছ? প্রশ্ন করা হবেঃ সারা জীবনে মনে কি কি কল্পনা করেছ এবং কি কি বিষয়ে বিশ্বাস স্থাপন করেছ? যদি শরীআত বিরোধী কাজ কর্ম করে থাকে, তবে এর জন্য সে ব্যক্তিকে আযাব ভোগ করতে হবে। [ ফাতহুল কাদীর ] দুই, কেয়ামতের দিন প্রত্যেক ব্যক্তির অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এ ব্যাপারে স্বয়ং সাক্ষ্য দেবে। কারণ আল্লাহ সেগুলোকে প্রশ্ন করবেন। এটা হাশরের ময়দানে গুনাহগারদের জন্য অত্যন্ত লাঞ্ছনার কারণ হবে। সূরা ইয়াসীনে বলা হয়েছেঃ “ আজ ( কেয়ামতের দিন ) । আমি এদের ( অপরাধীদের ) মুখ মোহর করে দেব। ফলে, তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের চরণসমূহ সাক্ষ্য দেবে তাদের কৃতকর্মের" [ ৬৫ ]। অনুরূপভাবে সূরা আন-নূরে এসেছে, "যেদিন তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবে তাদের জিহবা, তাদের হাত ও তাদের পা তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে [ ২৪ ]।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তোমার যেটা জানা নেই সে বিষয়ে মুখ খুলো না। না জেনে কারো উপর দোষারোপ করো না এবং কাউকেও মিথ্যা অপবাদ দিয়ো না, না দেখে দেখেছি’ বলো না, না শুনে শুনেছি’ বলো না এবং না জেনে জানার কথাও বলো না। কেননা, আল্লাহ তাআলার কাছে এই সব কিছুরই জবাবদিহি করতে হবে। মোট কথা, সন্দেহ ও ধারণার বশবর্তী হয়ে কিছু বলতে নিষেধ করা হচ্ছে। মহান আল্লাহ যেমন এক জায়গায় বলেছেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ তোমরা অনেক অনুমান ও ধারণা হতে বেঁচে থাকো, কেননা, কোন কোন ধারণা পাপজনক হয়ে থাকে ।” ( ৪৯:১২ )হাদীস শরীফে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমরা ধারণা থেকে বেঁচে থাকো, ধারণা হচ্ছে জঘন্য মিথ্যা কথা ।” সুনানে আবি দাউদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ মানুষের এ ধরনের কথা খুবই খারাপ যে, মানুষ ধারণা করে থাকে । অন্য একটি হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ জঘন্যতম অপবাদ এই যে, মানুষ মিথ্যা সাজিয়ে গুছিয়ে কোন স্বপ্ন বানিয়ে নেয় ।” অন্য একটি সহীহ হাদীসে আছে যে, যে ব্যক্তি এরূপ স্বপ্ন নিজে বানিয়ে নেয়, কিয়ামতের দিন তাকে এই কষ্ট দেয়া হবে যে যেন দু’টি যবের। মধ্যে গিরা লাগিয়ে দেয়, যা তার দ্বারা কখনোই সম্ভবপরহবে না। কিয়ামতের দিন চক্ষু, কর্ণ ও হৃদয়ের কাছে কৈফিয়ত তলব করাহবে। ওষ্ঠকে জবাবদিহি করতে হবে। এখানে ( আরবি ) এর স্থলে ( আরবি ) ব্যবহার করাহয়েছে। এরূপ ব্যবহার আরবদের মধ্যে বরাবরই চলে আসছে। এই ব্যবহার কবিদের কবিতার মধ্যেও রয়েছে।
সূরা বনী ইসরাঈল আয়াত 36 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- একজন রসূল, যিনি তোমাদের কাছে আল্লাহর সুস্পষ্ট আয়াতসমূহ পাঠ করেন, যাতে বিশ্বাসী ও সৎকর্মপরায়ণদের অন্ধকার
- এরূপ করলে আমি প্রকাশ্য পথভ্রষ্টতায় পতিত হব।
- সে ধারণা করে যে, আল্লাহ কখনই ইহকালে ও পরকালে রাসূলকে সাহায্য করবেন না, সে একটি
- তিনিই তোমাদের ভ্রমন করান স্থলে ও সাগরে। এমনকি যখন তোমরা নৌকাসমূহে আরোহণ করলে আর তা
- আমি তাদেরকে সাহায্য করেছিলাম, ফলে তারাই ছিল বিজয়ী।
- সেখানে তারা আর্ত চিৎকার করে বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, বের করুন আমাদেরকে, আমরা সৎকাজ করব,
- অতএব, তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গের দরুন আমি তাদের উপর অভিসম্পাত করেছি এবং তাদের অন্তরকে কঠোর করে
- এছাড়া এমন রসূল পাঠিয়েছি যাদের ইতিবৃত্ত আমি আপনাকে শুনিয়েছি ইতিপূর্বে এবং এমন রসূল পাঠিয়েছি যাদের
- কাফেররা যেন মনে না করে যে আমি যে, অবকাশ দান করি, তা তাদের পক্ষে কল্যাণকর।
- নিশ্চয় জাহান্নাম প্রতীক্ষায় থাকবে,
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা বনী ইসরাঈল ডাউনলোড করুন:
সূরা Al Isra mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Isra শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers