কোরান সূরা ফাতির আয়াত 37 তাফসীর
﴿وَهُمْ يَصْطَرِخُونَ فِيهَا رَبَّنَا أَخْرِجْنَا نَعْمَلْ صَالِحًا غَيْرَ الَّذِي كُنَّا نَعْمَلُ ۚ أَوَلَمْ نُعَمِّرْكُم مَّا يَتَذَكَّرُ فِيهِ مَن تَذَكَّرَ وَجَاءَكُمُ النَّذِيرُ ۖ فَذُوقُوا فَمَا لِلظَّالِمِينَ مِن نَّصِيرٍ﴾
[ فاطر: 37]
সেখানে তারা আর্ত চিৎকার করে বলবে, হে আমাদের পালনকর্তা, বের করুন আমাদেরকে, আমরা সৎকাজ করব, পূর্বে যা করতাম, তা করব না। (আল্লাহ বলবেন) আমি কি তোমাদেরকে এতটা বয়স দেইনি, যাতে যা চিন্তা করার বিষয় চিন্তা করতে পারতে? উপরন্তু তোমাদের কাছে সতর্ককারীও আগমন করেছিল। অতএব আস্বাদন কর। জালেমদের জন্যে কোন সাহায্যকারী নেই। [সূরা ফাতির: 37]
Surah Fatir in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Fatir ayat 37
আর সেখানে তারা আর্তনাদ করবে -- ''আমাদের প্রভু! আমাদের বের করে আনো, আমরা ভালো কাজ করব, -- তা ব্যতীত যা আমরা করতাম।’’ ''আমরা কি তোমাদের দীর্ঘজীবন দিই নি যেন, যে মনোযোগ দিতে চায় সে সেখানে মনোযোগ দিতে পারে, আর তোমাদের কাছে সতর্ককারীও এসেছিলেন? তাই আস্বাদন কর, আর অন্যায়কারীদের জন্য কোনো সাহায্যকারী নেই।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৩৭. তারা তথায় উচ্চ স্বরে চিৎকার করে আর্তনাদ করতে থাকবে এই বলে যে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে আগুন থেকে বের করুন। তাহলে আমরা আপনার সন্তুষ্টির লক্ষ্যে নেক আমল করবো। যা হবে দুনিয়াতে কৃত আমলের বিপরীত এবং যার মাধ্যমে আমরা শাস্তি থেকে রেহাই পাবো। তাদের জবাবে আল্লাহ বলবেন, আমি কি তোমাদেরকে এমন আয়ু দান করি নি যাতে উপদেশ গ্রহণকারী উপদেশ গ্রহণ করতে পারে। ফলে আল্লাহর প্রতি তাওবা করে নেক আমল করতে পারে। আর তোমাদের নিকট রাসূল এসেছেন তোমাদেরকে আল্লাহর শাস্তি থেকে ভীতি প্রদর্শন করার লক্ষ্যে। অতএব তোমাদের কোন প্রমাণ থাকলনা এবং এসব কিছুর পর তোমাদের আর কোন ওযর অবশিষ্ট রইল না। ফলে তোমরা জাহান্নামের শাস্তি পোহাতে থাকো। কুফরি ও পাপাচারের মাধ্যমে জুলুমকারীদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। যে তাদেরকে আল্লাহর শাস্তি থেকে রক্ষা করবে কিংবা তাদের উপর তা লাঘব করবে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
সেখানে তারা আর্তনাদ করে বলবে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে ( এখান হতে ) বের কর, আমরা সৎকাজ করব; পূর্বে যা করতাম তা করব না।’[১] আল্লাহ বলবেন, ‘আমি কি তোমাদেরকে এত আয়ু দান করিনি যে, তখন কেউ উপদেশ গ্রহণ করতে চাইলে উপদেশ গ্রহণ করতে পারত?[২] তোমাদের নিকট তো সতর্ককারীও এসেছিল।[৩] সুতরাং শাস্তি আস্বাদন কর; সীমালংঘনকারীদের কোন সাহায্যকারী নেই।’ [১] অর্থাৎ অন্যদেরকে ছেড়ে একমাত্র তোমার ইবাদত এবং অবাধ্যতা ছেড়ে আনুগত্য করব। [২] এই আয়ুর পরিমাণ কত? মুফাসসিরীনগণ বিভিন্ন রকমের সংখ্যা উল্লেখ করেছেন। কেউ কেউ কিছু হাদীস থেকে দলীল নিয়ে বলেছেন যে, এর পরিমাণ হল ষাট বছর। ( ইবনে কাসীর ) কিন্তু আমাদের মতে আয়ু নির্ধারিত করা ঠিক হবে না। কারণ তা বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। সুতরাং কেউ যুবক অবস্থায়, কেউ বৃদ্ধ হওয়ার পূর্বাবস্থায় আবার কেউ বৃদ্ধাবস্থায় মৃত্যু বরণ করে। তারপরেও এই সময় অতি অল্প সময় নয়; বরং এর মাঝের বেশ লম্বা সময় থাকে। যেমন যুবকাবস্থা সাবালক হওয়ার পর থেকে বৃদ্ধ হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত এবং বৃদ্ধ হওয়ার পূর্ব মুহূর্ত থেকে বৃদ্ধ হওয়া পর্যন্ত এবং বৃদ্ধাবস্থা মৃত্যু পর্যন্ত থাকে । চিন্তা-ভাবনা, উপদেশ গ্রহণ ইত্যাদির জন্য কেউ কয়েক বছর কেউ অনেক বছর এবং কেউ তার থেকেও বেশি সময় পেয়ে থাকে এবং সকলকে এই প্রশ্ন করা সঠিক হবে যে, আমি তোমাকে এত পরিমাণ আয়ু দিয়েছিলাম যে, যদি তুমি সত্যকে বুঝতে চাইতে, তাহলে বুঝতে পারতে। তারপরেও তুমি সত্যকে বুঝতে ও তা গ্রহণ করতে চেষ্টা করনি কেন? [৩] এখানে 'সতর্ককারী' বলে নবী ( সাঃ )-এর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। অর্থাৎ, স্মরণ করিয়ে দেওয়া ও উপদেশ দেওয়ার জন্য পয়গম্বর ( সাঃ ) এবং তাঁর মিম্বর ও মেহরাবের উত্তরাধিকারী ( নায়েব ) আলেমগণ ও দ্বীনী দাওয়াত দাতাগণ তোমাদের নিকট এসেছিল, কিন্তু তোমরা না আপন জ্ঞান দ্বারা কাজ নিয়েছিলে, আর না সত্যের আহবানকারীদের কথার প্রতি ভ্রূক্ষেপ করেছিলে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর সেখানে তার আর্তনাদ করে বলবে, 'হে আমাদের রব! আমাদেরকে বের করুন, আমরা যা করতাম তার পরিবর্তে সৎকাজ করব।' আল্লাহ বলবেন, 'আমরা কি তোমাদেরকে এতো দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, তখন কেউ উপদেশ গ্রহণ করতে চাইলে উপদেশ গ্রহণ করতে পারতো [ ১ ]? আর তোমাদের কাছে সতর্ককারীও এসেছিল [ ২ ]। কাজেই তোমরা শাস্তি আস্বাদন কর; আর যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই।' [ ১ ] অর্থাৎ জাহান্নামে যখন কাফেররা ফরিয়াদ করবে যে, হে আমাদের পালনকর্তা; আমাদেরকে এ আযাব থেকে মুক্ত করুন, আমরা সৎকর্ম করব এবং অতীত কুকর্ম ছেড়ে দেব, তখন জওয়াব দেয়া হবে যে, আমি কি তোমাদেরকে এমন বয়স দেইনি যাতে চিন্তাশীল ব্যক্তি চিন্তা করে বিশুদ্ধ পথে আসতে পারে? আলী ইবন হুসাইন যয়নুল আবেদীন রাহেমাহুল্লাহ বলেন, এর অর্থ সতের বছর বয়স। কাতাদাহ আঠার বছর বয়স বলেছেন। [ ইবন কাসীর ] এতে সতের বা আঠারোর পার্থক্য সম্ভবত এই যে, কেউ সতের বছরে এবং কেউ আঠারো বছরে সাবালক হতে পারে। শরীআতে এ বয়সটি প্রথম সীমা, যাতে প্রবেশ করার পর মানুষকে নিজের ভাল-মন্দ বোঝার জ্ঞান আল্লাহর পক্ষ থেকে দান করা হয়। এ বয়সে মানুষ সত্য ও মিথ্যা এবং ভালো ও মন্দের মধ্যে ফারাক করতে চাইলে করতে পারে এবং গোমরাহী ত্যাগ করে হিদায়াতের পথে পাড়ি দিতে চাইলেও দিতে পারে। যে ব্যক্তি সুদীর্ঘকাল বেঁচে থাকার পরও সতর্ক হয়নি এবং প্রকৃতির প্রমাণাদি দেখে ও নবী-রাসূলগণের কথাবার্তা শুনে সত্যের পরিচয় গ্রহণ করেনি সে অধিক ধিক্কারযোগ্য হবে। [ দেখুন-ইবন কাসীর, বাগভী ] একথাটিই একটি হাদীসে এসেছে এভাবে, “ যে ব্যক্তি কম বয়স পাবে তার জন্য তো ওজরের সুযোগ থাকে কিন্তু ৬০ বছর এবং এর বেশী বয়সের অধিকারীদের জন্য কোন ওযর নেই ।' [ বুখারী: ৬৪১৯ ] আলী রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আল্লাহ যে বয়সে গোনাহগার বান্দাদেরকে লজ্জা দেন, তা হচ্ছে ষাট বছর। ইবনে আব্বাসও এক বর্ণনায় চল্লিশ, আর অন্য বর্ণনায় ষাট বছর বলেছেন। এ বয়সে মানুষের উপর আল্লাহর প্রমাণ পূর্ণ হয়ে যায় এবং মানুষের জন্যে কোন ওযর আপত্তি পেশ করার অবকাশ থাকে না। কারণ, ষাট বছর এমন সুদীর্ঘ বয়স যে, এতেও কেউ সত্যের পরিচয় লাভ না করলে তার ওযর আপত্তি করার কোন অবকাশ থাকে না। এ কারণেই উম্মতে মুহাম্মদীর বয়সের গড় ষাট থেকে সত্তর বছর পর্যন্ত নির্ধারিত রয়েছে। [ দেখুন, ইবনে মাজাহ: ৪২৩৬ ] [ ২ ] এ সতর্ককারী সম্পর্কে কয়েকটি মত আছে। কারও কারও মতে, চুল শুভ্র হওয়া। বার্ধক্যের নিদর্শন প্রকাশ পাওয়া। আবার কারও কারও মতে, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম। [ ইবন কাসীর ] আবার কারও নিকট, কুরআনুল করীম। কেউ কেউ বলেছেন, জ্বর-ব্যাধি। [ ফাতহুল কাদীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৩৬-৩৭ নং আয়াতের তাফসীর: সৎ লোকদের বর্ণনা দেয়ার পর আল্লাহ্ তা'আলা এখন দুষ্ট ও পাপীদের বর্ণনা দিচ্ছেন। তারা জাহান্নামের আগুনে জ্বলতে থাকবে। তাদের আর মৃত্যু হবে না। যেমন তিনি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ সেখানে তারা মরবেও না, বাঁচবেও না ।” ( ২০:৭৪ ) সহীহ্ মুসলিমে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যারা চিরস্থায়ী জাহান্নামী তাদের সেখানে মৃত্যুও হবে না এবং তারা সেখানে বেঁচেও থাকবে না ( অর্থাৎ সুখময় জীবন লাভ করবে না ) ।” তারা বলবেঃ “ হে জাহান্নামের দারোগা! আল্লাহকে বল যে, তিনি যেন আমাদের মৃত্যু ঘটিয়ে দেন । তখন উত্তর দেয়া হবেঃ “ তোমাদেরকে তো এখানেই অবস্থান করতে হবে ।” তারা মৃত্যুকেই নিজেদের জন্যে আরাম ও শান্তিদায়ক মনে করবে। কিন্তু মৃত্যু আসবেই না এবং তাদের শাস্তিও কম করা হবে না। যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ পাপীরা চিরকাল জাহান্নামের শাস্তির মধ্যে থাকবে, যে শাস্তি কখনো সরবেও না এবং কমও হবে না ।” ( ৪৩:৭৪-৭৫ )তারা সমস্ত কল্যাণ হতে নিরাশ হয়ে যাবে। যেমন এক জায়গায় ঘোষিত হয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ জাহান্নামের আগুন সদা-সর্বদা তেজ হতেই থাকবে ।” ( ১৭:৯৭ ) আর এক জায়গায় বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ তোমরা আস্বাদ গ্রহণ কর, আমি তো তোমাদের শাস্তিই শুধু বৃদ্ধি করবো ।” ( ৭৮:৩০ ) মহা প্রতাপান্বিত আল্লাহ্ বলেন:এই ভাবেই আমি প্রত্যেক অকৃজ্ঞকে শাস্তি দিয়ে থাকি। সেখানে তারা আর্তনাদ করে বলবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদেরকে নিষ্কৃতি দিন এবং দুনিয়ায় ফিরে যেতে দিন। এবার দুনিয়ায় গিয়ে আমরা সৎ কর্ম করবো এবং পূর্বে যা করতাম তা করবো না। কিন্তু আল্লাহ্ রাব্বল আলামীন খুবই ভাল জানেন যে, তারা দুনিয়ায় ফিরে গেলে আবার অবাধ্যাচরণই করবে। সুতরাং তাদের ঐ মনের আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করা হবে না। অন্য স্থানে তাদের আকাঙ্ক্ষার জবাবে বলা হয়েছে ? তোমরা তো তারাই যে, যখন তোমাদের সম্মুখে আল্লাহর একত্রে বর্ণনা দেয়া হতো তখন তোমরা তা অস্বীকার করতে, তার সাথে শরীক স্থাপন করতে, তাতে তোমরা আনন্দ পেতে। কাজেই বেশ বুঝা যাচ্ছে যে, তোমাদেরকে যদি আবার দুনিয়ায় ফিরিয়ে দেয়া হয় তবে তোমরা তাই করবে যা করতে নিষেধ করা হতো।আল্লাহ্ তা'আলা তাদেরকে আরো বলবেনঃ তোমরা দুনিয়ায় বেশ দীর্ঘ জীবন লাভ করেছিলে। তোমরা এ দীর্ঘ সময়ে বহু কিছু করতে পারতে। যেমন কেউ সতেরো বছরের জীবন লাভ করলো। এই সতেরো বছরে সে বহু কিছু করতে পারে। হযরত কাতাদা ( রঃ ) বলেনঃ “ জেনে রেখো যে, দীর্ঘ জীবন আল্লাহর পক্ষ হতে হুজ্জত হয়ে যায় । সুতরাং দীর্ঘ জীবন হতে আমাদের আল্লাহ্ তা'আলার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করা উচিত। যখন এ আয়াত অবতীর্ণ হয় তখন কোন কোন লোকের বয়স শুধু আঠারো বছর ছিল।” অহাব ইবনে মুনাব্বাহ্ ( রঃ ) বলেন যে, ( আরবী ) আল্লাহ্ তা'আলার এই উক্তি দ্বারা বিশ বছর বয়স বুঝানো হয়েছে। হাসান ( রঃ ) বলেছেন চল্লিশ বছর। মাসরূক ( রঃ ) বলেন যে, চল্লিশ বছর বয়সে মানুষের সতর্ক হয়ে যাওয়া উচিত। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেছেন যে, চল্লিশ বছর বয়স হলে আল্লাহর পক্ষ হতে বান্দার ওযর পেশ করার সুযোগ থাকে না। তাঁর থেকে ষাট বছরের কথাও বর্ণিত আছে। আর এটাই অধিকতর সঠিকও বটে, যেমন একটি হাদীসে রয়েছে। যদিও ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ ) হাদীসটির সনদের ব্যাপারে সমালোচনা করেছেন, কিন্তু তাঁর এ সমালোচনা ঠিক নয়। হযরত আলী ( রাঃ ) হতেও ষাট বছরই বর্ণিত আছে। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেন, কিয়ামতের দিন একটি ঘোষণা এও হবেঃ 'ষাট বছরে পদার্পণ করেছে এরূপ লোক কোথায়?' এটা ঐ বয়স যে সম্পর্কে আল্লাহ্ তা'আলা বলেছেনঃ “ আমি কি তোমাদেরকে এতো দীর্ঘ জীবন দান করিনি যে, সতর্ক হতে চাইলে সতর্ক হতে পারতে?” ( এ হাদীসটি ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন । কিন্তু হাদীসটির সনদ সঠিক নয়। এসব ব্যাপারে আল্লাহই ভাল জানেন)হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আল্লাহ্ তা'আলা যে বান্দাকে এতোদিন জীবিত রেখেছেন যে, তার বয়স ষাট অথবা সত্তর বছরে পৌছে গেছে, আল্লাহর কাছে তার কোন ওযর চলবে না ।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)এ কথা তিনি তিনবার বলেন।সহীহ্ বুখারীর কিতাবুর রিকাকে আছে যে, ঐ ব্যক্তির ওযর আল্লাহ্ কেটে দিয়েছেন যাকে তিনি দুনিয়ায় ষাট বছর পর্যন্ত রেখেছেন। এই হাদীসের অন্য সনদও রয়েছে। অন্য সনদ যদি নাও থাকতো তবুও ইমাম বুখারী ( রঃ )-এর হাদীসটিকে তাঁর সহীহ্ গ্রন্থে আনয়নই ওর বিশুদ্ধতার জন্যে যথেষ্ট ছিল। ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ ) এ কথা বলেন যে, হাদীসটির সনদের সত্যাসত্য যাচাই করা জরুরী। ইমাম বুখারী ( রঃ )-এর হাদীসটিকে সহীহ বলার তুলনায় ওটার একটা যবের মূল্যের সমানও দাম নেই। এসব ব্যাপারে আল্লাহ্ তা'আলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী।ডাক্তারদের মতে মানুষের স্বাভাবিক বয়সের সীমা হলো একশ’ বিশ বছর। ষাট বছর পর্যন্ত তো মানুষ যুবক রূপেই থাকে। তারপর তার রক্তের গরম কমতে থাকে এবং শেষে অচল বৃদ্ধ হয়ে যায়। সুতরাং আয়াতের এই বয়স উদ্দেশ্য হওয়াই সমীচীন। এ উম্মতের অধিকাংশের বয়স এটাই। এক হাদীসে আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আমার উম্মতের বয়স ষাট হতে সত্তর বছর । এর চেয়ে বয়স বেশী হয় এরূপ লোকের সংখ্যা খুব কম।” ( এ হাদীসটি ইমাম তিরমিযী (রঃ ) ও ইমাম ইবনে মাজাহ ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন। ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এ হাদীসটি সম্পর্কে বলেন যে, এর আর কোন সনদ নেই। এটা বড়ই বিস্ময়কর ব্যাপার যে, ইমাম সাহেব কি করে এ কথা বলেছেন। এটা অন্য একটি সনদে ইবনে আবিদ দুনিয়া ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন। স্বয়ং ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এ হাদীসটি অন্য সনদে তার জামে' কিতাবে কিতাবুল যুহদে বর্ণনা করেছেন)একটি দুর্বল হাদীসে আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আমার উম্মতের মধ্যে সত্তর বছরের লোকও খুব হবে । অন্য একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে তাঁর উম্মতের বয়স সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ “ তাদের বয়স পঞ্চাশ হতে ষাট বছর পর্যন্ত হবে । আবার জিজ্ঞেস করা হলোঃ “ সত্তর বছর বয়স কারো হবে কি? তিনি জবাবে বলেনঃ “এটা খুব কম হবে । আল্লাহ তাদের উপর ও আশি বছর বয়সের লোকের উপর দয়া করুন!” ( এটা বাযযার (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) সহীহ হাদীসে আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর বয়স তেষট্টি বছর ছিল। একটি উক্তি আছে যে, তার বয়স ষাট বছর হয়েছিল। এ কথাও বলা হয়েছে যে, তাঁর বয়স। পঁয়ষট্টি বছরে পৌঁছেছিল। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।মহান আল্লাহ বলেনঃ তোমাদের কাছে তো সতর্ককারীও এসেছিল। অর্থাৎ তোমাদের সাদা চুল দেখা দিয়েছিল, অথবা স্বয়ং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এসেছিলেন। এই দ্বিতীয় উক্তিটি সঠিকতর। ইবনে যায়েদ ( রঃ ) ( আরবী ) অর্থাৎ প্রথম সতর্ককারীদের মধ্যে ইনি একজন সতর্ককারী। ( ৫৩:৫৬ ) সুতরাং বয়স দিয়ে, রাসূল পাঠিয়ে আল্লাহ তাআলা স্বীয় হুজ্জত পুরো করেছেন। যখন জাহান্নামীরা মত্যুর আকাক্ষা করবে তখন তাদেরকে জবাব দেয়া হবে। তোমাদের কাছে সত্য এসেছিল। অর্থাৎ আমি রাসূলদের তোমাদের কাছে সত্যসহ পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু তোমরা স্বীকার করনি। অন্য আয়াতে রয়েছেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমি রাসূল প্রেরণ না করা পর্যন্ত শাস্তি প্রদান করিনি ।”( ১৭:১৫ ) অন্য জায়গায় আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ যখনই তাতে ( জাহান্নামে ) কোন দলকে নিক্ষেপ করা হবে, তাদেরকে রক্ষীরা জিজ্ঞেস করবেঃ তোমাদের নিকট কি কোন সতর্ককারী আসেনি? তারা বলবেঃ অবশ্যই আমাদের নিকট সতর্ককারী এসেছিল, আমরা তাদেরকে মিথ্যাবাদী গণ্য করেছিলাম এবং বলেছিলামঃ আল্লাহ কিছুই অবতীর্ণ করেননি । তোমরা তো মহা বিভ্রান্তিতে রয়েছো। ( ৬৭:৮-৯ )আল্লাহ তাআলা বলেনঃ সুতরাং তোমরা শাস্তি আস্বাদন কর। অর্থাৎ তোমরা যে নবীদের বিরুদ্ধাচরণ করেছিলে তার শাস্তির স্বাদ আজ গ্রহণ কর।এরপর প্রবল প্রতাপান্বিত আল্লাহ বলেনঃ যালিমদের কোন সাহায্যকারী নেই। আজ অর্থাৎ কিয়ামতের দিন তাদের সাহায্যের জন্যে কেউই এগিয়ে আসবে না। আর তাদের কেউই আযাব থেকে বাচার কোন পথ পাবে না এবং কেউ তাদেরকে আযাব থেকে রক্ষা করতেও পারবে না।
সূরা ফাতির আয়াত 37 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- অতঃপর আমি তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিয়েছি। উভয় বস্তি প্রকাশ্য রাস্তার উপর অবস্থিত।
- যখন সে আমার কোন আয়াত অবগত হয়, তখন তাকে ঠাট্টারূপে গ্রহণ করে। এদের জন্যই রয়েছে
- সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাট রক্ত থেকে।
- সে যা বলে, মৃত্যুর পর আমি তা নিয়ে নেব এবং সে আমার কাছে আসবে একাকী।
- এবং যাদেরকে আমি গ্রন্থ দিয়েছি, তারা আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে, তজ্জন্যে আনন্দিত হয় এবং
- আপনি কি দেখেননি আপনার পালনকর্তা হস্তীবাহিনীর সাথে কিরূপ ব্যবহার করেছেন?
- যারা বিবাহে সামর্থ নয়, তারা যেন সংযম অবলম্বন করে যে পর্যন্ত না আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে
- তারা ধৈর্য্যধারণকারী, সত্যবাদী, নির্দেশ সম্পাদনকারী, সৎপথে ব্যয়কারী এবং শেষরাতে ক্ষমা প্রার্থনাকারী।
- আমি দাউদের প্রতি অনুগ্রহ করেছিলাম এই আদেশ মর্মে যে, হে পর্বতমালা, তোমরা দাউদের সাথে আমার
- আপনি কি তাকে দেখেছেন, যে নিষেধ করে
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ফাতির ডাউনলোড করুন:
সূরা Fatir mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Fatir শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers