কোরান সূরা আনফাল আয়াত 40 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Anfal ayat 40 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা আনফাল আয়াত 40 আরবি পাঠে(Anfal).
  
   

﴿وَإِن تَوَلَّوْا فَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ مَوْلَاكُمْ ۚ نِعْمَ الْمَوْلَىٰ وَنِعْمَ النَّصِيرُ﴾
[ الأنفال: 40]

আর তারা যদি না মানে, তবে জেনে রাখ, আল্লাহ তোমাদের সমর্থক; এবং কতই না চমৎকার সাহায্যকারী। [সূরা আনফাল: 40]

Surah Al-Anfal in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Anfal ayat 40


কিন্তু যদি তারা ফিরে যায় তবে জেনে রেখো যে আল্লাহ্ নিঃসন্দেহ তোমাদের অভিভাবক, -- কতো উত্তম অভিভাবক ও উত্তম সাহায্যকারী!


Tafsir Mokhtasar Bangla


৪০. আর যদি তারা তাদেরকে যে শিরক পরিহার করা ও আল্লাহর পথে বাধা না দেয়ার আদেশ অমান্য করে তাহলে হে মু’মিনরা! তোমার এ কথা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করো যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তোমাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে সাহায্য করবেন। তিনি তাঁর বন্ধুদের জন্য কতোই না উত্তম অভিভাবক। আর তাঁর দীনের সাহায্যকারীদের জন্য কতোই না উত্তম সাহায্যকারী। কারণ, যে ব্যক্তি তাঁর সাথে বন্ধুত্ব করবে সে সত্যিই সফলকাম আর যে ব্যক্তি তাঁকে সাহায্য করবে সে সত্যিই সাহায্যপ্রাপ্ত।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


আর যদি তারা মুখ ফেরায়[১] তবে জেনে রাখ যে, আল্লাহই তোমাদের অভিভাবক[২] এবং তিনি কত উত্তম অভিভাবক এবং কত উত্তম সাহায্যকারী। [৩] [১] অর্থাৎ, ইসলাম গ্রহণ না করে এবং কুফরীর ও তোমাদের বিরোধিতার উপর অবিচল থাকে। [২] তোমাদের শত্রুদের উপর তোমাদের সাহায্যকারী এবং তোমাদের রক্ষক ও হিফাযতকারী। [৩] সুতরাং সফলকাম সেই হবে, যার অভিভাবক আল্লাহ এবং বিজয় সেই লাভ করবে, যার সাহায্যকারী আল্লাহ

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আর যদি তারা মুখ ফিরায় তবে জেনে রাখ, আল্লাহই তোমাদের অভিভাবক, তিনি কতই না উত্তম অভিভাবক এবং কতই না উত্তম সাহায্যকারী!

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


৩৮-৪০ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা মুহাম্মাদ ( সঃ )-কে সম্বোধন করে বলছেন, তুমি কাফিরদেরকে বলে দাও- তোমরা যদি কুফরী ও বিরুদ্ধাচরণ হতে বিরত থেকে ইসলাম গ্রহণ করতঃ ক্ষমা প্রার্থনা কর তবে কুফরীর যুগে যেসব গুনাহ তোমরা করেছো সবই আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন। যেমন হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ যে ব্যক্তি ইসলামে ভাল কাজ করলো তাকে অজ্ঞতা যুগের কার্যাবলী সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে না । পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে আসার পরেও খারাপ কাজ করতে থাকলো তাকে দু' যুগেরই আমল সম্পর্কে জবাবদিহি করতে হবে।” সহীহ হাদীসে আরো রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ ইসলাম পূর্ববর্তী পাপরাশির জন্যে তাওবা স্বরূপ এবং এই তাওবা পূর্বের সমস্ত গুনাহ মিটিয়ে দেয় । কিন্তু হে নবী ( সঃ )! তারা যদি তাদের পূর্বের অবস্থার উপরই প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং কুফরী ও বিরোধিতা পরিত্যাগ না করে তবে পূর্ববর্তী লোকদের পরিণাম কি হয়েছিল তা কি তারা জানে না? জেনে রেখো যে, শাস্তিই হবে এর চিকিৎসা। ( আরবী ) দ্বারা মুজাহিদ ( রঃ ) এবং সুদ্দী ( রঃ ) “ বদরের দিন” উদ্দেশ্য নিয়েছেন । তাঁরা বলেছেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে- তোমরা কাফিরদের সাথে খুব বেশী যুদ্ধ কর যে পর্যন্ত না ফিত্না দূর হয় এবং দ্বীন আল্লাহর জন্যেই হয়ে যায়।হযরত নাফে' ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক হযরত ইবনে উমার ( রাঃ )-এর নিকট এসে বলেনঃ হে আবদুর রহমান ( রাঃ )! আল্লাহ তাআলা বলেছেনঃ “ যদি মুমিনদের দুটি দল পরস্পর যুদ্ধে লিপ্ত হয় ..... ।' এরূপ দুটি জামাআতের উল্লেখ যখন কুরআন কারীমে রয়েছে তখন আপনি যুদ্ধে অংশগ্রহণ। করছেন না কেন? উত্তরে হযরত ইবনে উমার ( রাঃ ) তাঁকে বলেনঃ “ হে আমার ভ্রাতুস্পুত্র! কোন মুমিনকে ইচ্ছাপূর্বক হত্যা করা অপেক্ষা যুদ্ধে অংশগ্রহণ না করার ভৎসনা সহ্য করা আমার পক্ষে অধিক সহজ । যেহেতু আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ যে ব্যক্তি কোন মুমিনকে ইচ্ছাপূর্বক হত্যা করবে ..... ।( ৪:৯৩ ) হযরত ইবনে উমার ( রাঃ ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর যুগে আমাদের অবস্থা এরূপই ছিল । ইসলামে লোকদের সংখ্যা খুবই কম ছিল। দ্বীনের ব্যাপারে লোকেরা পরীক্ষার মধ্যে পড়ে গিয়েছিল। তাদেরকে হত্যা করে দেয়া হতো অথবা বন্দী করা হতো। এভাবে তারা কঠিন বিপদের মধ্যে পতিত হয়েছিল। অতঃপর যখন ইসলামের উন্নতি লাভ হলো তখন ফিত্ন আর বাকী থাকলো না।” মোটকথা, ঐ আপত্তিকারী লোকটির মতের সাথে যখন হযরত ইবনে উমার ( রাঃ )-এর মতের মিল খেলো না তখন সে কথার মোড় ফিরিয়ে দিয়ে বললোঃ হযরত আলী ( রাঃ ) হযরত উসমান ( রাঃ ) সম্পর্কে আপনার ধারণা কি?”উত্তরে তিনি বললেনঃ “হযরত উসমান ( রাঃ ) সম্পর্কে বলতে গেলে তো এটাই বলতে হয় যে, আল্লাহ তা'আলা তাকে ক্ষমা করে দিয়েছেন, অথচ তোমরা তাঁকে ক্ষমা করে দেয়াকে অপছন্দ করছে । আর হযরত আলী ( রাঃ ) তো রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর চাচাতো ভাই ও জামাতা।" অতঃপর তিনি হাত দ্বারা ইশারা করে বললেনঃ “ আর ঐ দেখো, ওখানে রয়েছেন রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর কন্যা ( হযরত ফাতিমা রাঃ )”হযরত সাঈদ ইবনে জুবাইর ( রাঃ ) বলেন, হযরত ইবনে উমার ( রাঃ ) আমাদের কাছে আগমন করেন এবং বলেনঃ “ ফিত্নার যুদ্ধের ব্যাপারে তোমাদের অভিমত কি? আর ফিত্না কাকে বলে? নবী ( সঃ ) যেই সময় মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ করতেন সেই সময় ফিত্না আত্মপ্রকাশ করেছিল । আর তোমাদের যুদ্ধ তো শুধু আধিপত্য ও ক্ষমতা লাভের জন্যেই চলছে।” হযরত ইবনে উমার ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত সাঈদ ইবনে জুবাইর ( রাঃ )-এর ফিত্নার ব্যাপারে দু’টি লোক তার কাছে আসে এবং বলে- “ লোকেরা যেসব আমল করছে তা আপনার অজানা নয় । আপনি হযরত উমারের ছেলে এবং রাসূলুল্লাহ ( সাঃ )-এর সাহাবী। সুতরাং এ ব্যাপারে বের হতে আপনাকে কিসে বাধা দিচ্ছে?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “ আমাকে এটাই বাধা দিচ্ছে যে, আল্লাহ তা'আলা এক মুসলমানের রক্ত তার অপর মুসলমান ভাই-এর উপর হারাম করেছেন ।” তখন জনগণ জিজ্ঞেস করেঃ “ তোমরা তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিত্রার অবসান হয় এবং দ্বীন সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর জন্যে হয়ে যায়” -একথা কি আল্লাহ তা'আলা বলেননি? উত্তরে তিনি বলেনঃ “আমরা তো ফিত্নাকে মিটিয়ে দেয়ার জন্যে বহু যুদ্ধ করেছি, শেষ পর্যন্ত ফিত্না দূর হয়ে গেছে । আর তোমরা মুসলমানদের দু’টি দল এ কারণে যুদ্ধ করতে চাচ্ছ যে, যেন ফিত্না সৃষ্টি হয়ে যায় এবং দ্বীন আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্যে হয়ে যায়।” হযরত উসামা ইবনে যায়েদ ( রাঃ ) বলেনঃ “ যে ব্যক্তি ( আরবী ) বলেছে, আমি তো তাকে কখনো হত্যা করবো না ।” তখন সা’দ ইবনে মালিকও ( রাঃ ) ঐ কথাই বলেন। তখন একটি লোক ( আরবী ) আয়াতটি পাঠ করলেন। তখন তারা দু’জন বললেনঃ “ ফিতনা অবসানের জন্যে আমরা যুদ্ধ করেছি এবং ফিত্নার অবসান ঘটেছে, আর দ্বীন একমাত্র আল্লাহর জন্যে হয়ে গেছে ।( আরবী ) দ্বারা খাটি বা নির্ভেজাল তাওহীদ বুঝানো হয়েছে, যার মধ্যে শিরকের কোনই মিশ্রণ থাকবে না এবং আল্লাহর ক্ষমতায় কাউকে শরীক বানানো হবে না। হযরত যায়েদ ইবনে আসলাম ( রঃ ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে দ্বীনে ইসলামের বিদ্যমানতায় কুফরী অবশিষ্ট থাকবে না। এর সত্যতা এই হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আমি কাফিরদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার জন্যে আদিষ্ট হয়েছি যে পর্যন্ত না তারা ( আরবী ) বলে । যদি তারা তা বলে তবে তাদের জান-মালের নিরাপত্তা এসে যাবে, তবে কোন কারণে কিসাস গ্রহণ হিসেবে তাকে হত্যা করা যেতে পারে এবং তার হিসাব আল্লাহর দায়িত্বে রয়েছে। হযরত আবু মূসা আশআরী ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে। যে, একটি লোক সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে জিজ্ঞেস করা হয়, যে লোকটি স্বীয় বীরত্ব প্রকাশের উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করেছে বা গোত্র ও বংশের স্বার্থ রক্ষার্থে জিহাদ করেছে অথবা খ্যাতি লাভের উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করেছে, এগুলোর মধ্যে আল্লাহর পথে জিহাদ কোন্টি? উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ যে ব্যক্তি আল্লাহর কালেমা সমুন্নত করার উদ্দেশ্যে যুদ্ধ করে সেই শুধু আল্লাহর পথে জিহাদকারী রূপে পরিগণিত ।( আরবী ) অর্থাৎ হে মুমিনগণ! তারা ভিতরে কুফরী রেখেই তোমাদের সাথে যুদ্ধ করা হতে বিরত থাকে তবে তোমরাও হাত উঠিয়ে নাও। কেননা, তোমরা তাদের অন্তরের কথা অবগত নও। তাদের অন্তরের কথা একমাত্র আল্লাহ তা'আলাই জানেন। তিনি তাদেরকে সব সময় দেখতে রয়েছেন। যেমন আল্লাহ পাক বলেনঃ “ যদি তারা তাওবা করে, নামায প্রতিষ্ঠিত করে এবং যাকাত দেয় তবে তোমরা তাদের পথ ছেড়ে দাও ( অর্থাৎ তখন তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার কোনই প্রয়োজন নেই )” আর এক জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ “ ফিত্নার অবসান না হওয়া পর্যন্ত তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ কর যেন দ্বীন আল্লাহর জন্যে হয়ে যায়, অতঃপর তারা যদি বিরত থাকে তবে ( যুদ্ধের আর প্রয়োজন নেই ) বাড়াবাড়ি ও সীমালংঘনের অনুমতি শুধু অত্যাচারীদের ব্যাপারে রয়েছে ।” সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, হযরত উসামা ( রাঃ ) একটি লোককে তলোয়ার মারতে উদ্যত হলে লোকটি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ' পাঠ করে। তবুও হযরত উসামা ( রাঃ ) তাকে তরবারী দ্বারা হত্যা করে দেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর কাছে এ সংবাদ পৌছলে তিনি হযরত উসামা ( রাঃ )-কে বলেনঃ “ সে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ পাঠ করেছে এর পরও তুমি তাকে হত্যা করেছো কেন? কিয়ামতের দিন লা ইলাহা ইল্লাল্লাহর ব্যাপারে তুমি কি করবে?” উত্তরে হযরত উসামা ( রাঃ ) আরয করেনঃ “হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! সে শুধু প্রাণ বাঁচানোর জন্যে এ কথা বলেছিল ।” তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ তুমি কি তার অন্তর ফেডে দেখেছিলে?” অতঃপর ‘কিয়ামতের দিন তুমি কি করবে’ -এ কথা তিনি তাকে বার বার বলতে থাকেন হযরত উসামা ( রাঃ ) তখন বলেনঃ “ আমি আকাঙ্খা করতে লাগলাম যে, আমি যদি সে দিনের পূর্বে ইসলাম গ্রহণ না করে থাকতাম ( তবে ইসলামের ধারণায় তাকে হত্যা করতাম না )!”আল্লাহ পাক বলেন, তারা যদি তোমাকে না-ই মানে ও দ্বীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় তবে জেনে রেখো যে, আল্লাহই তোমাদের অভিভাবক ও বন্ধু, তিনি কতই না উত্তম অভিভাবক ও কতই না উত্তম সাহায্যকারী! অর্থাৎ যদি তাদের স্বভাবের কোন পরিবর্তন না ঘটে এবং তারা তোমাদের বিরোধিতায় লেগেই থাকে তবে জেনে রেখো যে, তাদের বিরুদ্ধে আল্লাহই তোমাদের সাহায্যকারী ।আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ান উরওয়া ( রাঃ )-কে একটি পত্র লিখেন এবং তাতে তিনি তাঁকে কতগুলো কথা জিজ্ঞেস করেন। তখন হযরত উরওয়া ( রাঃ ) তাকে উত্তরে লিখেনঃ আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হাক। প্রথমে আমি এক আল্লাহর প্রশংসা করছি। অতঃপর, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর মক্কা থেকে মদীনায় হিজরতের ঘটনাবলী আপনি আমার কাছে জানতে চেয়েছেন। আমি আপনাকে জানাচ্ছি যে, ক্ষমতা আল্লাহ ছাড়া আর কারোরই নেই। মহান আল্লাহ রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে নবুওয়াত দান করেছিলেন। তিনি কতই না ভাল নবী ও কতই না ভাল নেতা ছিলেন! আল্লাহ তাকে উত্তম পুরস্কার প্রদান করুন, জান্নাতে তাঁর চেহারা দর্শনের আমাদেরকে তাওফীক দান করুন, আমাদেরকে তারই দ্বীন ও মিল্লাতের উপর জীবিত রাখুন, তারই দ্বীনের উপর মৃত্যু দান করুন এবং তারই সাথে আমাদের পুনরুত্থান ঘটিয়ে দিন। তিনি যখন জনগণকে হিদায়াত ও ইসলামের আলোকের দিকে আহ্বান করেন তখন তারা তার সেই তাবলীগের প্রতি কোন গুরুত্ব দেয়নি। তারা তার উপর অবতারিত অহীও শুনতো। যখন তিনি তাদের মূর্তিগুলোর সমালোচনা শুরু করলেন তখন তায়েফ থেকে মক্কায় প্রত্যাবর্তনকারী ধনী কুরায়েশদের অধিকাংশ লোক তাঁর তাবলীগের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করলো এবং তার উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে উঠলো। যে কেউই মুসলমান হতো তাকেই তারা বিভ্রান্ত করতে থাকতো। সুতরাং ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট সাধারণ লোকদেরও আর আকর্ষণ থাকলো না। তথাপি কতক লোক তাদের মতের উপর দৃঢ় থাকলো এবং তাদের ধারণা ও চিন্তাধারা ইসলামের দিক থেকে বিক্ষিপ্ত হলো না। তখন কুরায়েশ নেতৃবর্গ পরস্পর পরামর্শ করলো যে, ইসলাম গ্রহণকারীদের উপর কঠোরতা অবলম্বন করা হাক। এই ফিত্রা ছিল একটা ভীষণ ভূ-কম্পন। যারা এই ফিত্যায় জড়িয়ে পড়ার ছিল তারা তাতে জড়িয়ে পড়লো এবং যাদেরকে আল্লাহ তা থেকে নিরাপদে রাখলেন তারা নিরাপদে থাকলো । মুসলমানদের উপর কুরায়েশদের অত্যাচার যখন চরমে উঠলো তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাদেরকে আবিসিনিয়ায় হিজরত করার পরামর্শ দিলেন। আবিসিনিয়ার বাদশাহ্ ছিলেন একজন সৎ লোক যার নাম ছিল নাজ্জাশী। তিনি অত্যাচারী বাদশাহ ছিলেন না। চতুর্দিকেই তাঁর প্রশংসা করা হচ্ছিল। আবিসিনিয়া ছিল কুরায়েশদের ব্যবসা কেন্দ্র এবং ব্যবসায়ী কুরায়েশদের সেখানে ঘড়বাড়ীও ছিল। সেখানে ব্যবসা বাণিজ্য করে তারা প্রচুর ধন-সম্পদ লাভ করেছিল এবং তাদের ব্যবসা ছিল বেশ জাঁকজমকপূর্ণ। সুতরাং রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নির্দেশক্রমে কুরায়েশদের অত্যাচারে জর্জরিত সাধারণ মুসলমানরা আবিসিনিয়ায় হিজরত করলেন। কেননা, মক্কায় তাদের প্রাণের ভয় ছিল। আবিসিনিয়ায় তাঁরা চিরকাল অবস্থান করেননি, বরং শুধু কয়েক বছর তারা সেখানে বসবাস করেছিলেন। সেখানেও মুসলমানরা ইসলাম ছড়িয়ে দেন। সেখানকার সম্ভ্রান্ত লোকেরাও ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হন। কুরায়েশরা যখন দেখলো যে, মুসলমানদের উপর অত্যাচার করার ফলে তারা আবিসিনিয়ায় চলে যাচ্ছে এবং তথাকার নেতৃবর্গকে নিজেদের লোক বানিয়ে নিচ্ছে তখন তারা মুসলমানদের উপর নরম ব্যবহার করাই যুক্তিসঙ্গত মনে করলো। সুতরাং তারা নবী ( সঃ ) ও সাহাবীদের সাথে নরম ব্যবহার করতে শুরু করলো। কাজেই মুসলমানদের প্রথম পরীক্ষা ছিল এটাই যা তাঁদেরকে আবিসিনিয়ায় হিজরত করতে বাধ্য করেছিল।যখন স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসলো এবং যে ফিৎনার ভূ-কম্পন মুসলমান সাহাবীদেরকে মাতৃভূমি ছেড়ে আবিসিনিয়ায় হিজরত করতে বাধ্য করেছিল, সেই ফিত্রা কিছুটা প্রশমিত হওয়ার সংবাদ আবিসিনিয়ার মুহাজির মুসলমানদেরকে পুনরায় মক্কায় ফিরে আসতে উত্তেজিত করলো। সুতরাং কম বেশী তারা যতজন আবিসিনিয়ায় হিজরত করেছিলেন সবাই মক্কায় ফিরে আসলেন।এদিকে মদীনার আনসারগণ মুসলমান হতে থাকেন এবং মদীনাতেও ইসলামের বিস্তৃতি ঘটতে থাকে। মদীনার লোকদের মক্কায় যাতায়াত শুরু হয়ে যায়। এতে মক্কাবাসী আরো চটে যায় এবং পুনরায় মুসলমানদের উপর কঠোরতা অবলম্বনের পরামর্শ গ্রহণ করে। সুতরাং মুসলমানদের উপর সাধারণভাবে অত্যাচার শুরু হয়ে যায়। মুসলমানরা ভীষণ অত্যাচারের শিকারে পরিণত হন। এটা ছিল মুসলমানদের দ্বিতীয় ফিত্ন ও পরীক্ষা। প্রথম ফিত্না তো ওটাই যে, মুসলমানদেরকে আবিসিনিয়ায় পালাতে হয়। আর দ্বিতীয় ফিত্না হচ্ছে- সেখান থেকে মুসলমানদের ফিরে আসার পর যখন মক্কাবাসী দেখলো যে, মদীনার লোক মক্কার সাথে যোগাযোগ করছে এবং মুসলমান হয়ে যাচ্ছে। একবার মদীনা থেকে সত্তরজন লোক মক্কা আসলেন, যারা ছিলেন গণ্যমান্য ও নেতৃস্থানীয় লোক। তারা সবাই মুসলমান হয়ে যান। তাঁরা হজ্ব পৰ্ব পালন করেন, ‘আকাবা’ নামক স্থানে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর হাতে দীক্ষা গ্রহণ করেন এবং অঙ্গীকার করে বলেনঃ “ আমরা আপনার হয়ে থাকবো এবং আপনি আমাদের হয়ে থাকবেন যদি আপনার সাহাবীরা আমাদের শহরে গমন করেন বা আপনি আমাদের ওখানে তাশরীফ আনয়ন করেন তবে আমরা আপনার ও আপনার সাহাবীবর্গের এমনভাবে পণ্ঠপোষকতা করবো যেমনভাবে নিজেদের লোকদের করে থাকি।” কুরায়েশরা এই অঙ্গীকারের কথা শুনতে পেয়ে মুসলমানদের উপর আরো বেশী কঠোরতা শুরু করে দিলো। সুতরাং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) সাহাবীদেরকে মদীনায় হিজরত করার নির্দেশ দিলেন। এটা ছিল দ্বিতীয় ফিত্না, যা নবী ( সঃ )-কে এবং তাঁর সহচরদেরকে মক্কা থেকে বের করে দিলো। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ “ তোমরা সদা তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে থাকবে যতক্ষণ না ফিত্নার অবসান হয় এবং দ্বীন সম্পূর্ণরূপে আল্লাহর জন্যে হয়ে যায় । হযরত উরওয়া ইবনে যুবাইর ( রাঃ ) থেকে বর্ণিত আছে যে, এই চিঠিটি তিনি আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানকে লিখেছিলেন। এসব ব্যাপারে আল্লাহ পাকই সবচেয়ে ভাল জানেন।

সূরা আনফাল আয়াত 40 সূরা

وإن تولوا فاعلموا أن الله مولاكم نعم المولى ونعم النصير

سورة: الأنفال - آية: ( 40 )  - جزء: ( 9 )  -  صفحة: ( 181 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. যেমন ফুটে পানি।
  2. অতঃপর আমি একে নিজের দিকে ধীরে ধীরে গুটিয়ে আনি।
  3. তোমরা অবশ্যই বেদনাদায়ক শাস্তি আস্বাদন করবে।
  4. তারা কি উড়ন্ত পাখীকে দেখে না? এগুলো আকাশের অন্তরীক্ষে আজ্ঞাধীন রয়েছে। আল্লাহ ছাড়া কেউ এগুলোকে
  5. তারা সেখানে চিরকাল থাকবে, যতদিন আসমান ও যমীন বর্তমান থাকবে। তবে তোমার প্রতিপালক অন্য কিছু
  6. তিনিই স্বীয় রহমতে তোমাদের জন্যে রাত ও দিন করেছেন, যাতে তোমরা তাতে বিশ্রাম গ্রহণ কর
  7. নিশ্চয়ই এতে নিদর্শন রয়েছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশই বিশ্বাসী নয়।
  8. আপনার কাছে সৈন্যবাহিনীর ইতিবৃত্ত পৌছেছে কি?
  9. আর তাদের কুফরী এবং মরিয়মের প্রতি মহা অপবাদ আরোপ করার কারণে।
  10. আমি জেনে রেখেছি তোমাদের অগ্রগামীদেরকে এবং আমি জেনে রেখেছি পশ্চাদগামীদেরকে।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আনফাল ডাউনলোড করুন:

সূরা Anfal mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Anfal শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত আনফাল  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত আনফাল  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত আনফাল  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত আনফাল  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত আনফাল  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত আনফাল  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত আনফাল  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত আনফাল  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত আনফাল  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত আনফাল  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত আনফাল  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত আনফাল  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত আনফাল  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত আনফাল  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত আনফাল  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত আনফাল  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত আনফাল  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত আনফাল  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত আনফাল  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত আনফাল  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত আনফাল  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত আনফাল  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত আনফাল  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত আনফাল  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত আনফাল  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Tuesday, June 4, 2024

لا تنسنا من دعوة صالحة بظهر الغيب