কোরান সূরা কাহ্ফ আয়াত 41 তাফসীর
﴿أَوْ يُصْبِحَ مَاؤُهَا غَوْرًا فَلَن تَسْتَطِيعَ لَهُ طَلَبًا﴾
[ الكهف: 41]
অথবা সকালে তার পানি শুকিয়ে যাবে। অতঃপর তুমি তা তালাশ করে আনতে পারবে না। [সূরা কাহ্ফ: 41]
Surah Al-Kahf in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Kahf ayat 41
''অথবা অচিরেই এর পানি তলিয়ে যাবে ভূগর্ভে, তখন তুমি তা খুঁজে পেতে সমর্থ হবে না।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৪১. অথবা তোমার বাগানের পানি জমিনের খুব গভীরে চলে যাবে। ফলে তুমি কোন ভাবেই সে পানি পর্যন্ত পৌঁছুতে পারবে না। আর বাগানের পানি খুব গভীরে চলে গেলে সে বাগানও আর টিকে থাকবে না।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
অথবা ওর পানি ভূ-গর্ভে অন্তর্হিত হবে এবং তুমি কখনো ওকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না।’ [১] [১] অথবা মধ্যস্থলে যে নদী প্রবাহিত, যেটা হল বাগানের শস্য-শ্যামলতার উৎস, তার পানিকে এত গভীরে পাঠিয়ে দেবেন যে, সেখান হতে পানি অর্জন করা অসম্ভব হয়ে যাবে। আর যেখানে পানি অতি গভীরে চলে যায়, পুনরায় সেখান হতে পানি বের করতে বড় বড় অশ্বশক্তিসম্পন্ন পাম্প্-মেশিনও ব্যর্থ সাব্যস্ত হয়।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
‘অথবা তার পানি ভূগর্ভে হারিয়ে যাবে এবং তুমি কখনো সেটার সন্ধান লাভে সক্ষম হবে না [ ১ ]। [ ১ ] অর্থাৎ যে আল্লাহর হুকুমে তুমি এসব কিছু লাভ করেছে তাঁরই হুকুমে এসব কিছু তোমার কাছ থেকে ছিনিয়েও নেয়া যেতে পারে। তুমি যদি এখন প্রচুর পানি পাওয়ার কারণে ক্ষেত-খামার করার সুবিধা লাভ করে আল্লাহর নেয়ামতকে অস্বীকার করে কাফের হয়ে যাচ্ছে, তবে মনে রেখো। তিনি ইচ্ছে করলে তোমাদের এ পানি পুনরায় ভূগর্ভে প্রোথিত করে দিতে পারেন, তারপর তুমি কোন ভাবেই তা আনতে সক্ষম হবে না। কুরআনের অন্যত্রও এ কথা বলে মহান আল্লাহ তাঁর এ বিরাট নেয়ামত পানি নিঃশেষ করে দেয়ার হুমকি দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন: “বলুন, ‘তোমরা ভেবে দেখেছি কি যদি পানি ভূগর্ভে তোমাদের নাগালের বাইরে চলে যায়, তখন কে তোমাদেরকে এনে দেবে প্রবাহমান পানি?” [ সূরা আল-মুলক: ৩০ ] [ ইবন কাসীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৩৭-৪১ নং আয়াতের তাফসীর: ঐ সম্পদশালী কাফির ব্যক্তিকে তার বন্ধু দরিদ্র মুসলমানটি যে উত্তর দিয়েছিল, আল্লাহ তাআলা এখানে তারই বর্ণনা দিচ্ছেন। সে তাকে বহু উপদেশ দেয় এবং তাকে ঈমান ও বিশ্বাসের হিদায়াত করে এবং বিভ্রান্তি ও অহংকার হতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করে। তাকে বলেঃ “ যে আল্লাহ মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন মাটি দ্বারা এবং এরপর শুক্রের মাধ্যমে বংশ ক্রম চালু রেখেছেন, তুমি তাঁর সাথে কুফরী করছো?" যেমন আল্লাহ এক জায়গায় বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ কেমন করে তোমরা আল্লাহর না-শুকরী করছো? অথচ তোমরা ছিলে নির্জীব, তৎপর তিনি তোমাদেরকে জীবন দান করলেন ।” ( ২:২৮ ) কি করে তুমি এই মহান প্রতিপালকের সত্ত্বা ও তার নিয়ামতরাজিকে অস্বীকার করছো? তার নিয়ামতসমূহ ও তাঁর মহাশক্তির অসংখ্য নমুনা স্বয়ং তোমার মধ্যে ও তোমার উপরে বিদ্যমান রয়েছে। কোন্ অজ্ঞ এমন আছে যে, পূর্বে সে কিছুই ছিল না, আল্লাহই তাকে অস্তিত্বে আনয়ন করেছেন, এটা সে জানে না? নিজে নিজেই হয়ে যাবার ক্ষমতা তার ছিল না। আল্লাহ তাআলাই তাকে সৃষ্টি করেছেন। সে আল্লাহ অস্বীকারের যোগ্য কেমন করে হয়ে গেলেন? তার একত্ব। ও আল্লাহত্ব কে অস্বীকার করতে পারে?মুসলমানটি তাকে আরো বললোঃ “ আমি তোমার সামনে স্পষ্ট ভাষায় বলছি যে, ঐ আল্লাহই আমার প্রতিপালক । তিনি এক ও অংশী বিহীন। আমার প্রতিপালকের সাথে শরীক স্থাপন করাকে আমি অপছন্দ করি। এরপর তাকে সে কল্যাণের প্রতি উৎসাহিত করার জন্যে বলেঃ “ তুমি তোমার সবুজ শ্যামল শস্য ক্ষেত্র এবং ফল-মূলে পরিপূর্ণ বাগান দেখে মহান প্রতিপালকের কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছো না কেন? কেন তুমি ( আরবী ) বলছো না?" অর্থাৎ “আল্লাহ যা চেয়েছেন তা-ই হয়েছে, আল্লাহর সাহায্য ব্যতীত কোন শক্তি নেই ।” এই আয়াতকে সামনে রেখেই পূর্বযুগীয় কোন কোন গুরুজন বলেছেন যে, যে ব্যক্তি তার সন্তান-সন্ততি বা ধন সম্পদ অথবা অবস্থা দেখে আনন্দিত। হয়, তার এই কালেমাটি পড়ে নেয়া উচিত। বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আল্লাহ তাআলা তাঁর যে বান্দাকে কোন নিয়ামত দান করেন, পরিবারবর্গ হোক বা ধন-সম্পদ হোক অথবা পুত্র-সন্তান হোক, যদি সে উপরোক্ত কালেমাটি পাঠ করে নেয় তবে ওগুলির উপর কোন বিপদআপদ আসবে না মৃত্যু ছাড়া । ( এ হাদীসটি আবু ইয়ালা মৃসিলী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। হাফিয আবুল ফাতাহ ( রঃ ) বলেছেন যে, এই হাদীসটি বিশুদ্ধ নয়) আর একটি হাদীসে বর্ণিত আছে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতের একটি কোষাগারের কথা বলবো? ঐ কোষাগার হচ্ছে ( আরবী ) এই কালেমাটি পাঠ করা ।” ( এ হাদীসটি মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত আছে ) আর একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “ এই বান্দা আমাকে মেনেছে ও আমার উপর সমর্পণ করেছে । হযরত আবু হুরাইরাকে ( রাঃ ) আবার জিজ্ঞেস করা হলে তিনি উত্তরে বলেনঃ “ শুধমাত্র ( আরবী ) নয়, বরং ওটাই যা সূরায়ে কাফে রয়েছে । অর্থাৎ ( আরবী ) এই কালেমাটি।” এরপর মহান আল্লাহ বলেন যে, ঐ সৎ লোকটি ঐ কাফির ধনী লোকটিকে বললোঃ “ আল্লাহ তাআলার কাছে আমি আশা রাখি যে, তিনি আমাকে আখেরাতের উত্তম নিয়ামত দান করবেন । আর তোমার এই বাগানটিকে তিনি ধ্বংস করে দিবেন যা তুমি চিরস্থায়ী মনে করে নিয়েছে। তিনি আকাশ হতে ওর উপর শাস্তি পাঠিয়ে দিবেন। আকাশ হতে তিনি অগ্নি বর্ষণ করবেন যার ফলে ওটা উদ্ভিদ শূন্য মৃত্তিকায় পরিণত হয়ে যাবে। অথবা তিনি ওর পানি ভূ-গর্ভে অন্তর্হিত করবেন এবং তুমি কখনো ওকে ফিরিয়ে আনতে পারবে না। ( আরবী ) শব্দটি ( আরবী ) যা ( আরবী ) অর্থাৎ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। অর্থের আধিক্য বুঝানোর জন্যে এটাকে আনয়ন করা হয়েছে।
সূরা কাহ্ফ আয়াত 41 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তোমরা জেনে রাখ, আল্লাহই ভূ-ভাগকে তার মৃত্যুর পর পুনরুজ্জীবিত করেন। আমি পরিস্কারভাবে তোমাদের জন্যে আয়াতগুলো
- এবং আমি মনে করি না যে, কেয়ামত অনুষ্ঠিত হবে। যদি কখনও আমার পালনকর্তার কাছে আমাকে
- শপথ দশ রাত্রির, শপথ তার,
- সুলায়মান দাউদের উত্তরাধিকারী হয়েছিলেন। বলেছিলেন, ‘হে লোক সকল, আমাকে উড়ন্ত পক্ষীকূলের ভাষা শিক্ষা দেয়া হয়েছে
- তার প্রতি শান্তি-যেদিন সে জন্মগ্রহণ করে এবং যেদিন মৃত্যুবরণ করবে এবং যেদিন জীবিতাবস্থায় পুনরুত্থিত হবে।
- ফলে কেয়ামতের দিন ওরা পূর্ণমাত্রায় বহন করবে ওদের পাপভার এবং পাপভার তাদেরও যাদেরকে তারা তাদের
- যখন আল্লাহ বললেনঃ হে ঈসা ইবনে মরিয়ম! তুমি কি লোকদেরকে বলে দিয়েছিলে যে, আল্লাহকে ছেড়ে
- তারা বললঃ হে যুলকারনাইন, ইয়াজুজ ও মাজুজ দেশে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। আপনি বললে আমরা আপনার
- আল্লাহর নিকট মানুষের মর্যাদা বিভিন্ন স্তরের আর আল্লাহ দেখেন যা কিছু তারা করে।
- তাদের মধ্যে কেউ কেউ রয়েছে যারা আল্লাহ তা’আলার সাথে ওয়াদা করেছিল যে, তিনি যদি আমাদের
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা কাহ্ফ ডাউনলোড করুন:
সূরা Kahf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Kahf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers