কোরান সূরা হা-মীম আস-সাজদা আয়াত 43 তাফসীর
﴿مَّا يُقَالُ لَكَ إِلَّا مَا قَدْ قِيلَ لِلرُّسُلِ مِن قَبْلِكَ ۚ إِنَّ رَبَّكَ لَذُو مَغْفِرَةٍ وَذُو عِقَابٍ أَلِيمٍ﴾
[ فصلت: 43]
আপনাকে তো তাই বলা হয়, যা বলা হত পূর্ববর্তী রসূলগনকে। নিশ্চয় আপনার পালনকর্তার কাছে রয়েছে ক্ষমা এবং রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। [সূরা হা-মীম আস-সাজদা: 43]
Surah Fussilat in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Fussilat ayat 43
তোমার প্রতি এমন কিছু বলা হয়নি তা ব্যতীত যা বলা হতো তোমার পূর্ববর্তী রসূলগণের সন্বন্ধে। নিঃসন্দেহ তোমার প্রভু নিশ্চয়ই পরিত্রাণে ক্ষমতাবান, এবং কঠোর প্রতিফল দিতে সক্ষম।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৪৩. হে রাসূল! আপনাকে মিথ্যারোপমূলক যা বলা হচ্ছে তা আপনার পূর্বেকার রাসূলদেরকেও বলা হয়েছে। তাই আপনি ধৈর্য ধারণ করুন। কেননা, আপনার প্রতিপালক তাঁর তাওবাকারী বান্দাদের তাওবা কবুলকারী। পক্ষান্তরে যে নিজে বারংবার পাপে অভ্যস্ত ও তাঁর প্রতি তাওবা করে না তার জন্য তিনি কষ্টদায়ক শাস্তি প্রদানকারী।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
তোমার সম্বন্ধে তো তাই বলা হয়, যা বলা হত তোমার পূর্ববর্তী রসূলগণ সম্পর্কে।[১] তোমার প্রতিপালক অবশ্যই ক্ষমাশীল[২] এবং কঠিন শাস্তিদাতা।[৩] [১] অর্থাৎ, বিগত জাতিরা তাদের নবীদেরকে মিথ্যাবাদী মনে করার দরুন যাদুকর, পাগল এবং মিথ্যাবাদী ইত্যাদি যে ভাষা ব্যবহার করেছিল, মক্কার কাফেররাও তোমার ক্ষেত্রে সেই ভাষাই ব্যবহার করেছে। অর্থাৎ, নবীকে সান্ত্বনা দেওয়া হচ্ছে যে, তোমাকে তাদের মিথ্যাবাদী, যাদুকর এবং পাগল বলা কোন নতুন কথা নয়, বরং প্রত্যেক নবীর সাথে এই আচরণই হয়ে এসেছে। যেমন, অন্যত্র বলেছেন, ﴿كَذٰلِكَ مَآ اَتَى الَّذِيْنَ مِنْ قَبْلِهِمْ مِن رَّسُوْلٍ اِلاَّ قَالُوْا سَاحِرٌ أَوْ مَجْنُوْنٌ، اَتَوَاصَوْا بِهِ بَلْ هُمْ قَوْمٌ طَاغُوْنَ﴾ অর্থাৎ, এভাবে, তাদের পূর্ববর্তীদের নিকট যখনই কোন রসূল এসেছে, তখনই তারা বলেছে, ( তুমি তো এক ) যাদুকর, না হয় পাগল! তারা কি একে অপরকে এই মন্ত্রণাই দিয়ে এসেছে? বস্তুতঃ তারা এক সীমালংঘনকারী সম্প্রদায়। ( সূরা যারিয়াত ৫১:৫২-৫৩ ) এর দ্বিতীয় অর্থ হল, রসূল ( সাঃ )-কে তাওহীদ ও ইখলাসের ( আল্লাহর আনুগত্যে বিশুদ্ধচিত্ত হয়ে একনিষ্ঠভাবে তাঁর ইবাদত করার ) যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তা হল সেই কথাই, যা তাঁর পূর্বের নবীদেরকেও বলা হয়েছিল। কেননা, প্রত্যেক শরীয়ত এ বিষয়ে একমত ছিল। বরং প্রত্যেকের প্রাথমিক দাওয়াত তাওহীদ ও ইখলাসই ছিল। ( ফাতহুল ক্বাদীর ) [২] অর্থাৎ, সেই ঈমানদার ও তাওহীদবাদীদের জন্য, যারা ক্ষমা পাওয়ার যোগ্য।[৩] তাদের জন্য যারা কাফের এবং আল্লাহর নবীদের শত্রু। এই আয়াতও সূরা হিজরের ১৫:৪৯-৫০ আয়াত ﴿نَبِّئ عِبَادِيْ اَنِّي اَنَا الْغَفُوْرٌ الرَّحِيْمِ، وَاَنَّ عَذَابِيْ هُوَ الْعَذَابُ الْعَلِيْمِ﴾ এর মতই।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আপনাকে শুধু তা-ই বলা হয়, যা বলা হতো আপনার পূর্ববর্তী রাসূলগণকে। নিশ্চয় আপনার রব একান্তই ক্ষমাশীল এবং যন্ত্রণাদায়ক শাস্তিদাতা।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৪০-৪৩ নং আয়াতের তাফসীর: হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ )-এর বর্ণনামতে শব্দের অর্থ হলো কালামকে ওর জায়গা হতে সরিয়ে অন্য জায়গায় রেখে দেয়া। আর কাতাদা ( রঃ ) প্রমুখ গুরুজন এর অর্থ করেছেন কুফরী ও হঠকারিতা। মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ যারা আমার আয়াতসমূহকে বিকৃত করে তারা আমার অগোচর নয়। যারা আমার নাম ও গুণাবলীকে এদিক হতে ওদিকে করে দেয় তারা আমার দৃষ্টির মধ্যেই রয়েছে। তাদেরকে আমি কঠিন শাস্তি প্রদান করবো। যারা জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে এবং যারা ভয়-ভীতি ও বিপদাপদ হতে নিরাপদে থাকবে তারা কি কখনো সমান হতে পারে? কখনো নয়। পাপী, দূরাচার এবং কাফিররা যা ইচ্ছা আমল করে যাক। তাদের কোন আমলই আল্লাহ তা'আলার নিকট গোপন নেই। ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রতম জিনিসও তার চক্ষু এড়ায় না। তারা যা কিছু করে তিনি তার দ্রষ্টা। যহহাক ( রঃ ), সুদ্দী ( রঃ ) এবং কাতাদা ( রঃ )-এর উক্তি এই যে, এখানে যিকর দ্বারা কুরআন কারীমকে বুঝানো হয়েছে। এটা ইযযত ও মর্যাদাসম্পন্ন কিতাব। কোন মিথ্যা এতে অনুপ্রবেশ করবে না, অগ্র হতেও নয়, পশ্চাত হতেও নয়। কারো কালাম এর সমতুল্য হতে পারে না। এটা জগতসমূহের প্রতিপালকের নিকট হতে অবতারিত। যিনি তাঁর কথায় ও কাজে বিজ্ঞানময় ও নিপুণ। তাঁর সমুদয় হুকুম উত্তম ফলদায়ক।মহান আল্লাহ স্বীয় নবী ( সঃ )-কে বলেনঃ তোমার যুগের কাফিররা তোমাকে ঐ কথাই বলে যা তোমার পূর্ববর্তী যুগের কাফিররা তাদের রাসূলদেরকে বলেছিল। ঐ নবীরা যেমন ধৈর্যধারণ করেছিল তেমনই তুমিও ধৈর্যধারণ কর। যে ব্যক্তি আল্লাহর দিকে ফিরে, আল্লাহ তার প্রতি অবশ্যই ক্ষমাশীল। পক্ষান্তরে যে আল্লাহ হতে বিমুখ হয়, কুফরী ও হঠকারিতার উপর অটল থাকে, সত্যের বিরোধিতা এবং রাসূল ( সঃ )-কে অবিশ্বাস করা হতে বিরত থাকে না তাকে তিনি কঠিন শাস্তিদাতা।রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ যদি আল্লাহ তা'আলার মার্জনা ও ক্ষমা না থাকতো তবে একটি প্রাণীও বাঁচতো না । পক্ষান্তরে, যদি আল্লাহ তা'আলার পাকড়াও ও শাস্তি না হতো তবে প্রত্যেকেই প্রশান্তভাবে হেলান লাগিয়ে নির্ভয় হয়ে যেতো।" ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)
সূরা হা-মীম আস-সাজদা আয়াত 43 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আর উপাসনা কর আল্লাহর, শরীক করো না তাঁর সাথে অপর কাউকে। পিতা-মাতার সাথে সৎ ও
- যাতে আল্লাহ প্রত্যেককে তার কৃতকর্মের প্রতিদান দেন। নিশ্চয় আল্লাহ দ্রুত হিসাব গ্রহণকারী।
- আমি কোন আয়াত রহিত করলে অথবা বিস্মৃত করিয়ে দিলে তদপেক্ষা উত্তম অথবা তার সমপর্যায়ের আয়াত
- কখনও না, বরং তারা পরকালকে ভয় করে না।
- আমি তাদের এক বিশেষ গুণ তথা পরকালের স্মরণ দ্বারা স্বাতন্ত্র্য দান করেছিলাম।
- যে আল্লাহর নির্দেশের সামনে মস্তক অবনত করে সৎকাজে নিয়োজিত থাকে এবং ইব্রাহীমের ধর্ম অনুসরণ করে,
- অতঃপর তিনি গর্ভে সন্তান ধারণ করলেন এবং তৎসহ এক দূরবর্তী স্থানে চলে গেলেন।
- তারা পার্থিব জীবনের বাহ্যিক দিক জানে এবং তারা পরকালের খবর রাখে না।
- অনন্তর যারা অজ্ঞতাবশতঃ মন্দ কাজ করে, অতঃপর তওবা করে এবং নিজেকে সংশোধন করে নেয়, আপনার
- আল্লাহ ও রোজ কেয়ামতের প্রতি যাদের ঈমান রয়েছে তারা মাল ও জান দ্বারা জেহাদ করা
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হা-মীম আস-সাজদা ডাউনলোড করুন:
সূরা Fussilat mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Fussilat শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers