কোরান সূরা ইবরাহীম আয়াত 48 তাফসীর
﴿يَوْمَ تُبَدَّلُ الْأَرْضُ غَيْرَ الْأَرْضِ وَالسَّمَاوَاتُ ۖ وَبَرَزُوا لِلَّهِ الْوَاحِدِ الْقَهَّارِ﴾
[ إبراهيم: 48]
যেদিন পরিবর্তিত করা হবে এ পৃথিবীকে অন্য পৃথিবীতে এবং পরিবর্তিত করা হবে আকাশ সমূহকে এবং লোকেরা পরাক্রমশালী এবং আল্লাহর সামনে পেশ হবে। [সূরা ইবরাহীম: 48]
Surah Ibrahim in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Ibrahim ayat 48
সেইদিন এ পৃথিবী বদলে হবে অন্য পৃথিবী, আর মহাকাশমন্ডলীও, আর তারা হাজির হবে আল্লাহ্র সামনে, যিনি একক, সর্বশক্তিমান।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৪৮. এ প্রতিশোধ কিয়ামতের দিন কাফিরদের থেকে নেয়া হবে। যখন এ জমিনকে অন্য আরেকটি পরিচ্ছন্ন ও পরিষ্কার জমিনে এবং এ আকাশগুলোকে অন্য আকাশে রূপান্তরিত করা হবে। আর মানুষ তাদের কবর থেকে নিজেদের শরীর ও আমল নিয়ে বের হয়ে একক ক্ষমতা ও মহত্তে¡র অধিকারী আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোর জন্য উপস্থিত হবে। যিনি অন্যকে অধীন করেন। কেউ তাঁকে অধীন করতে পারে না। যিনি সর্বদা জয়ী; কখনো পরাজিত নন।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
( স্মরণ কর, ) যেদিন এই পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবী হবে এবং আকাশমন্ডলীও।[১] আর মানুষ ( কবর থেকে ) বের হবে একক প্রতাপশালী আল্লাহর জন্য। [১] ইমাম শওকানী বলেন, আয়াতে দুটো সম্ভাবনাই রয়েছে যে, এই পরিবর্তন গুণগত দিক থেকেও হতে পারে এবং পদার্থগত দিক থেকেও হতে পারে। অর্থাৎ এই আকাশ ও পৃথিবী নিজ নিজ গুণগত দিক দিয়ে পরিবর্তিত হবে অথবা অনুরূপ পদার্থগত দিক থেকে তার পরিবর্তন আসবে, না এই পৃথিবী থাকবে আর না এ আকাশ। পৃথিবীও অন্য হবে এবং আকাশও অন্য। রসূল ( সাঃ ) বলেছেন, "কিয়ামতের দিন মানুষ সাদা ও লালচে সাদা রঙের ভূমিতে একত্রিত হবে, যা ময়দার রুটির মত হবে, তাতে কারো কোন ( মালিকানার ) চিহ্ন থাকবে না। ( মুসলিম, সিফাতুল কিয়ামাহ ) একদা আয়েশা ( রাঃ ) জিজ্ঞাসা করলেন, যখন এই আকাশ ও পৃথিবী পরিবর্তন হবে, তখন সেই দিন লোকেরা কোথায় অবস্থান করবে? উত্তরে নবী ( সাঃ ) বললেন, পুল সিরাতের উপর। ( সাবেক উদ্ধৃতি ) এক ইহুদীর প্রশ্নের উত্তরে নবী ( সাঃ ) বলেছিলেন, "সেই দিন লোকেরা পুলের নিকট অন্ধকারে অবস্থান করবে। ( মুসলিম, কিতাবুল হায়য )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
যেদিন এ যমীন পরিবর্তিত হয়ে অন্য যমীন হবে এবং আসমানসমূহও [ ১ ]; আর মানুষ উন্মুক্তভাবে উপস্থিত হবে এক, একচ্ছত্র অধিপতি আল্লাহ্র সামনে। [ ১ ] এখানে কেয়ামতের ভয়াবহ অবস্থা ও ঘটনাবলী বর্ণনা করা হয়েছেঃ “ কেয়ামতের দিন বর্তমান পৃথিবী পাল্টে দেয়া হবে এবং আকাশও । সবাই এক ও পরাক্রমশালী আল্লাহর সামনে হাজির হবে।" পৃথিবী ও আকাশ পাল্টে দেয়ার এরূপ অর্থও হতে পারে যে, তাদের আকার ও আকৃতি পাল্টে দেয়া হবে; যেমন কুরআনুল কারীমের অন্যান্য আয়াত ও হাদীসে আছে যে, সমগ্র ভূ-পৃষ্ঠকে একটি সমতল ভূমিতে পরিণত করে দেয়া হবে। এতে কোন গৃহের ও বৃক্ষের আড়াল থাকবে না এবং পাহাড়, টিলা, গর্ত, গভীরতা কিছুই থাকবে না। এ অবস্থা বর্ণনা প্রসঙ্গে আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ ( لَّا تَرٰى فِيْهَا عِوَجًا وَّلَآ اَمْتًا ) [ ত্বাহাঃ ১০৭ ] অর্থাৎ গৃহ ও পাহাড়ের কারণে বর্তমানে রাস্তা ও সড়ক বাঁক ঘুরে ঘুরে চলেছে। কোথাও উচ্চতা এবং কোথাও গভীরতা দেখা যায়। কেয়ামতের দিন এগুলো থাকবে না, বরং সব পরিস্কার ময়দান হয়ে যাবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ ‘কেয়ামতের দিন ময়দার রুটির মত পরিস্কার ও সাদা পৃথিবীর বুকে মানবজাতিকে পুনরুত্থিত করা হবে। এতে কারো কোন চিহ্ন ( গৃহ, উদ্যান, বৃক্ষ, পাহাড়, টিলা ইত্যাদি ) থাকবে না। [ বুখারীঃ ৬৫২১, মুসলিমঃ ২৭৯০ ] অন্য এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট এক ইয়াহুদী এসে প্রশ্ন করলঃ যেদিন পৃথিবী পরিবর্তন করা হবে, সেদিন মানুষ কোথায় থাকবে? তিনি বললেনঃ পুলসিরাতের নিকটে অন্ধকারে থাকবে।‘ [ মুসলিমঃ ৩১৫ ] অন্য বর্ণনায় আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করেছিলাম যে সেদিন মানুষ কোথায় থাকবে? তিনি বলেছিলেন, "সিরাতের উপর" [ মুসলিম: ২৭৯১ ] এ থেকে জানা যায় যে, বর্তমান পৃথিবী থেকে পুলসিরাতের মাধ্যমে মানুষকে অন্যদিকে স্থানান্তর করা হবে। ইবনে জারীর স্বীয় তাফসীর গ্রন্থে এ মর্মে একাধিক সাহাবী ও তাবেয়ীর উক্তি বর্ণনা করেছেন। বাস্তব অবস্থা আল্লাহ তা'আলাই ভাল জানেন।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৪৭-৪৮ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআলা নিজের প্রতিশ্রুতিকে প্রতিষ্ঠিত ও দৃঢ় করছেন যে, দুনিয়া ও আখেরাতে স্বীয় রাসূলদেরকে সাহায্য করার তিনি যে ওয়াদা করেছেন তার তিনি কখনো ব্যতিক্রম করবেন না। তাঁর উপর কেউ জয়যুক্ত নয়, তিনি সবার উপর জয়যুক্ত। তাঁর ইচ্ছা অপূর্ণ থাকে না। তিনি যা ইচ্ছা করেন তা হয়েই যায়, তিনি কাফিরদের উপর তাদের কুফরীর প্রতিশোধ গ্রহণ অবশ্যই করবেন। কিয়ামতের দিন তাদেরকে দুঃখ ও আফসোস করতে হবে। সে দিন যমীন হবে বটে, কিন্তু এটা নয়, বরং অন্যটা। অনুরূপভাবে আসমানও পরিবর্তিত হয়ে যাবে। হযরত সাহল ইবনু সা'দ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ এমন সাদা পরিষ্কার যমীনের উপর হাশর করা হবে যেমন ময়দার সাদা রুটী যার উপর কোন দাগ বা চিহ্ন থাকবে না । ( এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে )হযরত আয়েশা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনিই সর্বপ্রথম রাসূলুল্লাহকে ( সঃ ) এই আয়াত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহকে ( সঃ ) জিজ্ঞেস করেন। তিনি বলেনঃ “ আমি জিজ্ঞেস করলামঃ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! সে দিন লোকেরা কোথায় থাকবে?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “( তারা সেদিন ) পুলসিরাতের উপর থাকবে ।” অন্য একটি রিওয়াইয়াতে আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হযরত আয়েশাকে ( রাঃ ) তাঁর প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলেনঃ “ তুমি আমাকে এমন একটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছে যা আমার উম্মতের অন্য কেউ জিজ্ঞেস করেনি । ( জেনে রেখো যে, ঐ দিন লোকেরা পুলসিরাতের উপর থাকবে।” আর একটি বর্ণনায় আছে যে, হযরত আয়েশা (রাঃ ) রাসূলুল্লাহকে ( সঃ ) ( আরবি ) ( ৩৯:৬৭ ) এই আয়াতের ব্যাপারেও প্রশ্ন করেছিলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসুল! সেই দিন লোকেরা কোথায় থাকবে?” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন) উত্তরে তিনি বলেছিলেনঃ “সেদিন তারা জাহান্নামের পিঠের উপর ( অর্থাৎ পুলসিরাতের উপর ) থাকবে ।” রাসূলুল্লাহর ( সঃ ) আযাদকৃত ক্রীতদাস হযরত সাওবান ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “ একদা আমি রাসূলুল্লাহর ( সঃ ) নিকট দাড়িয়ে ছিলাম । এমন সময় একজন ইয়াহুদী লেম আগমন করে এবং বলেঃ “ হে মুহাম্মদ ( সঃ )! আসসালামু আলাইকা ( আপনার উপর শান্তি বর্ষিত হোক ) ।” আমি তখন তাকে এতো জোরে ধাক্কা মারি যে, সে পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। তখন সে আমাকে বলেঃ “ আমাকে ধাক্কা মারলে কেন?” আমি উত্তরে বলিঃ বে আদব! ‘হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) না বলে তার নাম নিলে? সে বললোঃ “তাঁর পরিবারের লোক তার যে নাম রেখেছে আমরা তো তাকে সেই নামেই ডাকবো ।” তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ আমার পরিবারের লোক আমার নাম মুহাম্মদই ( সঃ ) রেখেছে বটে।” ইয়াহূদী বললোঃ “ আমি আপনাকে একটি কথা জিজ্ঞেস করতে এসেছি ।” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন তাকে বলেনঃ “ আমার জবাবে তোমার কোন উপকার হবে কি?” সে উত্তরে বলেঃ “শুনে তো নিই ।” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হাতের যে একটি কুটা ( খড়কুটা ) ছিল তা মাটিতে ঘুরতে। ঘুরাতে তিনি বলেনঃ “ আচ্ছা, ঠিক আছে, জিজ্ঞেস কর ।” সে জিজ্ঞেস করলোঃ যখন আকাশ পরিবর্তিত হয়ে যাবে তখন লোকেরা কোথায় থাকবে?” তিনি জবাবে বলেনঃ “ পুলসিরাতের নিকট অন্ধকারের মধ্যে ।” সে আবার জিজ্ঞেস করলো “ সর্বপ্রথম পুলসিরাত দিয়ে পার হবে কে?” তিনি উত্তর দেনঃ “দরিদ্র মুহাজিরগণ ।” সে পুনরায় প্রশ্ন করেঃ “ তাদেরকে সর্বপ্রথম কি উপটৌকন দেয়া হবে?” তিনি জবাবে বলেনঃ “অধিক পরিমাণে মাছের কলিজা ।” সে আবার জিজ্ঞেস করেঃ “ এরপর তারা কি খাদ্য পাবে?” তিনি উত্তর দেনঃ “জান্নাতী বলদ যবাহ করা হবে, যেগুলি জান্নাতের আশে পাশে চরতো ।” সে পুনরায় জিজ্ঞেস করেঃ “ তারা পান করার জন্যে কি পাবে?” জবাবে তিনি বলেনঃ “সালসাবীল নামক জান্নাতী নহরের পানি ।” ইয়াহুদী তখন বললোঃ “ আপনার সমস্ত জবাবই সঠিক । আচ্ছা, আপনাকে আমি আর একটি কথা জিজ্ঞেস করবো যা শুধুমাত্র নবী জানেন এবং দুনিয়ার আর দু'একজন লোকে জানে।” তিনি বললেনঃ “ আমার জবাব তোমার কোন উপকারে আসবে কি?” সে জবাবে বললোঃ “কানে শুনে তো নিবো ।” অতঃপর সে বললোঃ “ সন্তান ( পুত্র সন্তান ও কন্যা সন্তান ) সম্পর্কে আপনার বক্তব্য কি? ( অর্থাৎ কখনো পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে এবং কখন কন্যা সন্তান জন্ম গ্রহণ করে )?" উত্তরে তিনি বলেনঃ “পুরুষের বিশেষ পানি ( বীর্য ) সাদা বর্ণের হয় এবং নারীর বিশেষ পানি ( বীর্য ) হলদে রং এর হয় । যখন এই দু’পানি একত্রিত হয় তখন যদি পুরুষের পানি ( বীর্য ) অধিক হয় তবে আল্লাহর হুকুমে পুত্র সন্তান জন্ম গ্রহণ করে থাকে। আর যদি নারীর পানি বেশী হয় তবে আল্লাহ তাআলার হুকুমে কন্যা সন্তান জন্মে।” এই উত্তর শুনে ইয়াহুদী বলে উঠলোঃ “ নিশ্চয় আপনি সত্য কথা বলেছেন এবং অবশ্যই আপনি নবী ।” অতঃপর ইয়াহূদী চলে যায়। তখন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ যখন এই ব্যক্তি আমাকে প্রশ্ন করে তখন আমার উত্তর জানা ছিল না । কিন্তু আল্লাহ তাআলা সাথে সাথে আমাকে উত্তর জানিয়ে দেন।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)হযরত আবু আইয়ুব আনসারী ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একজন ইয়াহূদী আলেম রাসূলুল্লাহকে ( সঃ ) জিজ্ঞেস করেঃ “ আচ্ছা বলুন তো, আল্লাহ তাআলা যে তার কিতাবে বলেন ( আরবি ) ( অর্থাৎ যে দিন এই পৃথিবী পরিবর্তিত হয়ে অন্য পৃথিবী হবে এবং আকাশমণ্ডলীও ), তাহলে সারা মাখলুকাত ঐ সময় কোথায় থাকবে?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “ঐ সময় সারা মাখলুকাত আল্লাহর মেহমান বা অতিথি হবে । সুতরাং তার কাছে যা কিছু রয়েছে তা তাদেরকে তাঁকে অসমর্থ করবে না ( অর্থাৎ ) তাঁর কোন কিছুরই অভাব হবে না।” ( এ হাদীসটি আবু জাফর ইবনু জারীর তাবারী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আমর ইবনু মায়মূন ( রাঃ ) বলেন, এই যমীন পরিবর্তিত হয়ে যাবে এবং তা হবে সাদা রূপার মত, যাতে থাকবে না কোন রক্তারক্তি এবং থাকবে কোন পাপ কর্ম। চক্ষুগুলি তেজ হবে এবং আহ্বানকারীর শব্দ তাদের কানে অসিবে। সবাই তারা শূন্য পায়ে ও উলঙ্গ দেহে দাঁড়িয়ে থাকবে যেমনভাবে তারা সৃষ্ট হয়েছিল এবং তাদের দেহের ঘর্ম বগার মত হয়ে যাবে ( অর্থাৎ তাদের নাক পর্যন্ত পৌঁছে যাবে।” (এ টা ইবনু আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত ইবনু মাসউদ ( রাঃ ) হতেও অনুরূপ বর্ণনা রয়েছে। একটি মার’ হাদীসে আছে যে, ঐ যমীন সাদা রং -এর হবে। তাতে খুনাখুনি ও কোন পাপের কাজ হবে না। ( এ হাদীসকে মারফু’কারী মাত্র একজন বর্ণনাকারী, অর্থাৎ জারীর ইবনু আইয়্যব (রাঃ ) তিনি সবল বর্ণনাকারীগণ)হযরত যায়েদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) ইয়াহদীদের কাছে তোক প্রেরণ করেন। অতঃপর তিনি সাহাবীদেরকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ আমি তাদের কাছে কেন লোক পাঠালাম তা তোমরা জান কি?” উত্তরে তারা বলেনঃ “আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলই ( সঃ ) ভাল জানেন ।” তিনি তখন বললেনঃ “ আমি তাদেরকে আল্লাহ পাকের ( আরবি ) এই উক্তি সম্পর্কে প্রশ্ন করার উদ্দেশ্যে তাদের কাছে লোক পাঠালাম । জেনে রেখো যে, সেদিন যমীন রৌপ্যের ন্যায় সাদা বর্ণ ধারণ করবে।” অতঃপর তারা তাঁর নিকট উপস্থিত হলে তিনি তাদেরকে এ ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে তারা উত্তরে বলেঃ ঐ দিন যমীন ময়দার ন্যায় সাদা হবে।” ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনু জারীর (রঃ ) স্বীয় তাফসীরে বর্ণনা করেছেন। পূর্ববর্তী গুরুজনদের আরো কয়েকজন হতে অনুরূপ রিওয়াইয়াত রয়েছে যে, সেদিন যমীন হবে রৌপ্যের)হযরত আলী ( রাঃ ) বলেন যে, সেই দিন যমীন হবে রৌপ্যের এবং আসমান হবে স্বর্ণের। হযরত উবাই ইবনু কা'ব ( রাঃ ) বলেন, সেই দিন আসমান বাগান হয়ে থাকবে। মুহাম্মদ ইবনু কায়েস ( রঃ ) বলেন, ঐ দিন যমীন রুটী হয়ে যাবে এবং মুমিনরা তাদের পায়ের নীচেই ওকে খাদ্য হিসেবে পাবে। হযরত সাঈদ ইবনু জবাইর ( রঃ ) অনরূপই বলেন যে, সেদিন যমীন রুটী হয়ে থাকবে। হযরত আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ ( রাঃ ) বলেন, কিয়ামতের দিন সারা যমীন আগুন হয়ে যাবে। এর পিছনে থাকবে জান্নাত, যার নিয়ামতরাশি বাইরে থেকেই দেখা যাবে। জনগণ ঘামের মধ্যে ডুবে থাকবে। তখন পর্যন্ত হিসাব-নিকাশ শুরু হয়নি। সেই দিনের ভয়াবহ দৃশ্য দেখে মানুষ এতো ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে যাবে যে, তাদের দেহের ঘাম প্রথমতঃ তাদের পায়ে থাকবে, অতঃপর ক্রমে ক্রমে বৃদ্ধি পেতে পেতে তাদের নাক পর্যন্ত পৌছে যাবে। হযরত কাতাদা ( রাঃ ) বলেন, আসমান ( সে দিন বাগানে রূপান্তরিত হবে, সমুদ্র আগুন হয়ে যাবে এবং যমীনও পরিবর্তিত হয়ে যাবে। সুনানে আবি দাউদে রয়েছেঃ “ সমুদ্রের সফর যেন শুধু মাত্র গাজী, হাজী এবং উমরাকারীই করে । কেননা, সমুদ্রের নীচে আগুন রয়েছে এবং আগুনের নীচে সমুদ্র রয়েছে।” সূরের (শিঙ্গার ) মাশহুর হাদীসে হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আল্লাহ তাআলা যমীনকে সমতল করে উকাযী চামড়ার মত টানবেন যাতে কোন উঁচু নীচু থাকবে না । তারপর একটি মাত্র আওয়াজের সাথে সাথে সমস্ত মাখলুক ঐ নতুন যমীনে ছড়িয়ে পড়বে।ইরশাদ হচ্ছেঃ “ সমস্ত মাখলূক ( কবর থেকে বেরিয়ে ) আল্লাহর সামনে হাযির হয়ে যাবে, যিনি এক ও পরাক্রমশালী । সবারই স্কন্ধ তাঁর সামনে অবনত থাকে এবং সবাই হয়ে যায় তাঁর অনুগত ও বাধ্য।
সূরা ইবরাহীম আয়াত 48 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তিনি বললেনঃ যদি আপনি আমার অনুসরণ করেনই তবে কোন বিষয়ে আমাকে প্রশ্ন করবেন না, যে
- সেদিন মিথ্যারোপকারীদের দুর্ভোগ হবে।
- যার জন্যে অনুমতি দেয়া হয়, তার জন্যে ব্যতীত আল্লাহর কাছে কারও সুপারিশ ফলপ্রসূ হবে না।
- অথবা (তাদের কর্ম) প্রমত্ত সমুদ্রের বুকে গভীর অন্ধকারের ন্যায়, যাকে উদ্বেলিত করে তরঙ্গের উপর তরঙ্গ,
- মুমিনগণ, যখন তোমাদের কাছে ঈমানদার নারীরা হিজরত করে আগমন করে, তখন তাদেরকে পরীক্ষা কর। আল্লাহ
- তারপর ঈমানদাররা আল্লাহর হুকুমে জালূতের বাহিনীকে পরাজিত করে দিল এবং দাউদ জালূতকে হত্যা করল। আর
- যখন তাদের কাছে কোরআন পাঠ করা হয়, তখন সেজদা করে না।
- আর না আছে তাদের উপর যারা এসেছে তোমার নিকট যেন তুমি তাদের বাহন দান কর
- তাদের অন্তর যা গোপন করে এবং যা প্রকাশ করে আপনার পালনকর্তা অবশ্যই তা জানেন।
- তারা যখন জাহান্নামের কাছে পৌঁছাবে, তখন তাদের কান, চক্ষু ও ত্বক তাদের কর্ম সম্পর্কে সাক্ষ্য
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ইবরাহীম ডাউনলোড করুন:
সূরা Ibrahim mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Ibrahim শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers