কোরান সূরা যুমার আয়াত 48 তাফসীর
﴿وَبَدَا لَهُمْ سَيِّئَاتُ مَا كَسَبُوا وَحَاقَ بِهِم مَّا كَانُوا بِهِ يَسْتَهْزِئُونَ﴾
[ الزمر: 48]
আর দেখবে, তাদের দুস্কর্মসমূহ এবং যে বিষয়ে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত, তা তাদেরকে ঘিরে নেবে। [সূরা যুমার: 48]
Surah Az-Zumar in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Zumar ayat 48
আর তারা যা অর্জন করেছিল তার মন্দ তাদের কাছে প্রকাশ হয়ে পড়বে, আর যা নিয়ে তারা বিদ্রূপ করত তা তাদের ঘিরে ফেলবে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৪৮. তাদের সামনে তাদের মন্দ কৃতকর্ম তথা শিরক ও পাপাচার প্রকাশ পাবে। তখন তাদেরকে এমন শাস্তি ঘেরাও করবে যে সম্পর্কে তাদেরকে দুনিয়াতে ভীতি প্রদর্শন করা হলে তারা এ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রƒপ করতো।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
ওদের কৃতকর্মের মন্দ ফল ওদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়বে[১] এবং ওরা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপ করত, তা ওদেরকে পরিবেষ্টন করবে।[২] [১] অর্থাৎ, দুনিয়ায় যেসব হারাম ও অন্যায় কার্যকলাপে তারা জড়িত ছিল, তার শাস্তি তাদের সামনে এসে যাবে। [২] সেই আযাব তাদেরকে ঘিরে ফেলবে, যাকে দুনিয়াতে তারা অসম্ভব মনে করত এবং যার কারণে সে ( আযাবের ) ব্যাপারে তারা ঠাট্টা-বিদ্রূপও করত।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর তারা যা অর্জন করেছিল তার মন্দ ফল তাদের কাছে প্ৰকাশ হয়ে পড়বে এবং তারা যা নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত তা তাদেরকে পরিবেষ্টন করবে।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৪৬-৪৮ নং আয়াতের তাফসীর:
মুশরিকদের যে তাওহীদের প্রতি ঘৃণা এবং শিরকের প্রতি ভালবাসা রয়েছে তা বর্ণনা করার পর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা স্বীয় নবী ( সঃ )-কে বলছেনঃ তুমি শুধু এক আল্লাহকেই ডাকতে থাকো যিনি আসমান ও যমীনের সৃষ্টিকর্তা এবং এগুলো তিনি ঐ সময় সৃষ্টি করেছেন যখন এগুলোর না কোন অস্তিত্ব ছিল এবং না এগুলোর কোন নমুনা ছিল। তিনি প্রকাশ্য ও গোপনীয় এবং উঘাটিত ও লুক্কায়িত সবই জানেন। এসব লোক যেসব বিষয় নিয়ে মতবিরোধ করছে তার ফায়সালা ঐ দিন হয়ে যাবে যেদিন তারা কবর হতে বের হয়ে হাশরের ময়দানে আসবে।হযরত আবু সালমা ইবনে আবদির রহমান ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি হযরত আয়েশা ( রাঃ )-কে জিজ্ঞেস করেনঃ “ রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাহাজ্জুদের নামায কোন দুআ দ্বারা শুরু করতেন?” হযরত আয়েশা ( রাঃ ) উত্তরে বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) যখন রাত্রে তাহাজ্জুদের নামাযে দাঁড়াতেন তখন তিনি নিমের দুআ দ্বারা নামায শুরু করতেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “হে আল্লাহ! হে জিবরাঈল ( আঃ ), মীকাঈল ( আঃ ) ও ইসরাফীল ( আঃ )-এর প্রতিপালক! হে আসমান ও যমীনকে বিনা নমুনায় সৃষ্টিকারী! হে দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা! আপনিই আপনার বান্দাদের মতবিরোধের ফায়সালাকারী, যে যে জিনিসের মধ্যে মত বিরোধ করা হয়েছে । আপনি আমাকে ঐ সব ব্যাপারে স্বীয় অনুগ্রহে সত্য ও সঠিক পথ প্রদর্শন করুন! আপনি যাকে ইচ্ছা করেন সরল-সঠিক পথ প্রদর্শন করে থাকেন।” ( এ হাদীসটি ইমাম মুসলিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেন, যে ব্যক্তি নিম্নের দু'আটি বলেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে আল্লাহ! আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞতা! আমি এই দুনিয়ায় আপনার নিকট এই অঙ্গীকার করছিঃ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই । আপনি এক। আপনার কোন অংশীদার নেই। আমি আরো সাক্ষ্য দান করছি যে, মুহাম্মাদ ( সঃ ) আপনার বান্দা এবং আপনার রাসূল। যদি আপনি আমাকে আমারই কাছে সঁপে দেন তবে আমি মন্দের নিকটবর্তী ও কল্যাণ হতে দূরবর্তী হয়ে যাবো। হে আল্লাহ! আমি শুধু আপনার রহমতের উপর ভরসা করি। সুতরাং আপনি আমার সাথে অঙ্গীকার করুন যা আপনি কিয়ামতের দিন পূর্ণ করবেন। নিশ্চয়ই আপনি অঙ্গীকার ভঙ্গ করেন না। তখন কিয়ামতের দিন আল্লাহ তা'আলা স্বীয় ফেরেশতাদেরকে বলবেনঃ “ আমার এই বান্দা আমার নিকট হতে অঙ্গীকার নিয়েছে, তোমরা আজ তা পূর্ণ কর ।” তখন তাকে জান্নাতে প্রবিষ্ট করা হবে। বর্ণনাকারী হযরত সুহাইল ( রঃ ) বলেনঃ আমি কাসিম ইবনে আবদির রহমান ( রঃ )-এর নিকট যখন বললাম যে, আউন ( রঃ ) এভাবে এ হাদীসটি বর্ণনা করে থাকেন তখন তিনি বলেনঃ ‘সুবহানাল্লাহ! আমাদের পর্দানশীন মেয়েদেরও তো এটা মুখস্থ আছে।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ( রাঃ ) একটি কাগজ বের করে বলেনঃ এতে লিখিত দু'আটি আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) শিখিয়েছেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ হে আল্লাহ, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা! আপনি প্রত্যেক জিনিসের প্রতিপালক, প্রত্যেকের মাবুদ । আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আপনি ছাড়া কোন মা'বুদ নেই। আপনি এক! আপনার কোন অংশীদার নেই। মুহাম্মাদ ( সঃ ) আপনার বান্দা ও রাসূল। ফেরেশতারাও এই সাক্ষ্য দিয়ে থাকেন। আমি শয়তান হতে ও তার শিরক হতে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আমি নিজে কোন পাপকার্য করি বা কোন মুসলমানকে কোন পাপকার্যের দিকে নিয়ে যাই এ থেকে আমি আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।” হযরত আবদুর রহমান ( রঃ ) বলেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এ দু'আটি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ( রাঃ )-কে শিখিয়েছিলেন এবং তিনি তা শয়নের সময় পাঠ করতেন। ( এ হাদীসটি মুসনাদে আহমাদে বর্ণিত হয়েছে )হযরত আবু রাশেদ হিবরানী ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর ( রঃ )-এর নিকট এসে তার কাছে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হতে একটি হাদীস শুনতে চাইলে তিনি তার সামনে একটি পুস্তিকা রেখে দিয়ে বলেনঃ “ দুআটি হলো এটাই যা আমাকে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) লিখিয়ে দিয়েছেন ।” হযরত আবু রাশেদ ( রঃ ) দেখেন যে, তাতে লিখিত আছেঃ হযরত আবু বকর ( রাঃ ) বলেন- “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! সকাল-সন্ধ্যায় আমি কি পাঠ করবো? উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেন, তুমি পাঠ করবেঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “হে আল্লাহ! আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা, দৃশ্য ও অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা! আপনি ছাড়া কোন মা'বুদ নেই । আপনি প্রত্যেক জিনিসের প্রতিপালক এবং ওর মালিক। আমি আমার নফসের অনিষ্ট এবং শয়তানের অনিষ্ট ও তার শিরক হতে আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি। আর আমি কোন পাপকার্যে লিপ্ত হয়ে পড়ি বা কাউকেও আমি কোন পাপকার্যের দিকে নিয়ে যাই এর থেকে আপনার নিকট আশ্রয় চাচ্ছি।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) ও ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম তিরমিযী( রঃ ) এটাকে হাসান গারীব বলেছেন)হযরত মুজাহিদ ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আবু বকর ( রাঃ ) বলেনঃ রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, আমি যেন সকালে ও সন্ধ্যায় এবং রাত্রে শয়নের সময় ...
( আরবী ) এ দু'আটি পাঠ করি।” ( এ হাদীসটিও ইমাম আহমাদ (রঃ ) স্বীয় মুসনাদ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)এখানে যালিম দ্বারা মুশরিকদেরকে বুঝানো হয়েছে। মহান আল্লাহ বলেনঃ যালিমদের অর্থাৎ মুশরিকদের যদি থাকে, দুনিয়ায় যা আছে তা সম্পূর্ণ এবং সমপরিমাণ সম্পদও, তবে কিয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি হতে মুক্তিপণ স্বরূপ সবকিছু তারা দিয়ে দিতে প্রস্তুত হয়ে যাবে, কিন্তু ঐদিন কোন মুক্তিপণ এবং বিনিময় গ্রহণ করা হবে না, যদিও তারা দুনিয়াপূর্ণ স্বর্ণও দিতে চায়। যেমন মহান আল্লাহ অন্য আয়াতে বলেছেন।এরপর মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ তাদের জন্যে আল্লাহর নিকট হতে এমন কিছু প্রকাশিত হবে যা তারা কল্পনাও করেনি। তাদের কৃতকর্মের মন্দ ফল তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়বে। দুনিয়ায় যে শাস্তির বর্ণনা শুনে তারা ঠাট্টা-বিদ্রুপ করতো তা তাদেরকে চতুর্দিক থেকে পরিবেষ্টন করবে।
সূরা যুমার আয়াত 48 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- মহা সংবাদ সম্পর্কে,
- বল, আচ্ছা নিজেই লক্ষ্য করে দেখ, যা কিছু আল্লাহ তোমাদের জন্য রিযিক হিসাবে অবতীর্ণ করেছেন,
- প্রাচুর্যের লালসা তোমাদেরকে গাফেল রাখে,
- তোমরা তোমাদের ধ্বংস স্তুপের উপর দিয়ে গমন কর ভোর বেলায়
- আর প্রত্যেক সম্প্রদায়ের একেকজন রসূল রয়েছে। যখন তাদের কাছে তাদের রসূল ন্যায়দন্ডসহ উপস্থিত হল, তখন
- প্রাচীরের ব্যাপার-সেটি ছিল নগরের দুজন পিতৃহীন বালকের। এর নীচে ছিল তাদের গুপ্তধন এবং তাদের পিতা
- শপথ সেই ফেরেশতাগণের, যারা ডুব দিয়ে আত্মা উৎপাটন করে,
- এটা তো বিশ্ববাসীর জন্যে এক উপদেশ মাত্র।
- তোমরা আল্লাহকে ছেড়ে নিছক কতগুলো নামের এবাদত কর, সেগুলো তোমরা এবং তোমাদের বাপ-দাদারা সাব্যস্ত করে
- পাঠ করুন, আপনার পালনকর্তা মহা দয়ালু,
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা যুমার ডাউনলোড করুন:
সূরা Zumar mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Zumar শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers