কোরান সূরা নিসা আয়াত 49 তাফসীর
﴿أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِينَ يُزَكُّونَ أَنفُسَهُم ۚ بَلِ اللَّهُ يُزَكِّي مَن يَشَاءُ وَلَا يُظْلَمُونَ فَتِيلًا﴾
[ النساء: 49]
তুমি কি তাদেকে দেখনি, যারা নিজেদেরকে পূত-পবিত্র বলে থাকে অথচ পবিত্র করেন আল্লাহ যাকে ইচ্ছা তাকেই? বস্তুতঃ তাদের উপর সুতা পরিমাণ অন্যায়ও হবে না। [সূরা নিসা: 49]
Surah An-Nisa in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Nisa ayat 49
তুমি কি তাদের দিকে চেয়ে দেখো নি যারা নিজেদের প্রতি পবিত্রতা আরোপ করে? না, আল্লাহ্ পবিত্র করেন যাদের তিনি পছন্দ করেন। আর তাদের অন্যায় করা হবে না খেজুর-বিচির-পাতলা-আবরণ পরিমাণেও।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৪৯. হে রাসূল! আপনি কি ওদের ব্যাপারে অবহিত নন যারা নিজেদের ও নিজেদের কর্মের পরিশুদ্ধতার প্রশংসা করে? বরং একমাত্র আল্লাহই তাঁর বান্দাদের যাদেরকে চান তাদের প্রশংসা করেন ও তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন। কারণ, তিনি নিশ্চয়ই অন্তরের লুক্কায়িত ব্যাপারসমূহ জানেন। বস্তুতঃ তাদের আমলসমূহের সাওয়াব কখনো কোন কিছুতেই ঘাটতি করা হবে না। যদিও তা খেজুরের দানার মধ্যকার সুতার সমপরিমাণ হোক না কেন।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
তুমি কি তাদেরকে দেখনি যারা নিজেদেরকে পবিত্র মনে করে? অথচ আল্লাহ যাকে ইচ্ছা পবিত্র করে থাকেন। আর তাদের প্রতি খেজুরের আঁটির ফাটলে সুতো বরাবর ( সামান্য পরিমাণ )ও যুলুম করা হবে না। [১] [১] ইয়াহুদীরা নিজ মুখেই নিজেদের বড়াই ও প্রশংসা করত। যেমন তারা বলত, আমরা আল্লাহর পুত্র এবং তাঁর প্রিয়পাত্র ইত্যাদি। আল্লাহ বললেন, কাউকে প্রশংসাভাজন ও পবিত্র করণের কাজও আল্লাহর এবং কে পবিত্র তা তিনিই জানেন।فَتِيْل খেজুরের আঁটির ফাটলে অতি সূক্ষ্ণ ও পাতলা সুতোর মত যে অংশ থাকে সেটাকেই 'ফাতীল' বলা হয়। অর্থাৎ, এইটুকু সামান্য পরিমাণ যুলুমও করা হবে না।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আপনি কি তাদেরকে দেখেননি, যারা নিজেদেরকে পবিত্র মনে করে? বরং আল্লাহ যাকে ইচ্ছে পবিত্র করেন [ ১ ]। আর তাদের উপর সূতা পরিমাণও যুলুম করা হবে না। [ ১ ] আয়াতের ভাষ্য হচ্ছে, নিজেকে কেউ যেন দোষ-ত্রুটির উর্ধ্বে মনে না করে। মূলত: আত্মপ্রশংসা এবং নিজেকে ক্রটিমুক্ত মনে করা বৈধ নয়। ইয়াহুদীরা নিজেদেরকে পবিত্র বলে বর্ণনা করত। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ তা’আলা এ আয়াতে তাদের নিন্দা করে বলেছেন, তাদের দিকে একটু লক্ষ্য করে দেখুন, যারা নিজেরাই নিজেদের পবিত্রতা বর্ণনা করে; তাদের ব্যাপারে বিস্মিত হওয়াই উচিত। এতে প্রতীয়মান হয় যে, কারো পক্ষে নিজের কিংবা অন্য কারো পবিত্রতা বর্ণনা করা জায়েয নয়। এই নিষিদ্ধতার কয়েকটি কারণ রয়েছে- অধিকাংশ ক্ষেত্রে আত্মপ্রশংসার কারণ হয়ে থাকে অহমিকা বা আত্মগৰ্ব। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘তোমরা পরস্পর প্রশংসা করা থেকে বেঁচে থাক। কেননা, তা হচ্ছে জবাই করা’। [ ইবন মাজাহঃ ৩৭৪৩ ] কাতাদা বলেন, এখানে ইয়াহুদীদেরকে উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। তারা নিজেদের প্রশংসায় কোন প্রকার কসুর করত না। তারা নিজেদেরকে আল্লাহর সন্তান-সন্তুতি ও তাঁর প্রিয়পাত্র বলে দাবী করত। [ তাবারী ] দ্বিতীয়তঃ শেষ পরিণতি সম্পর্কে শুধুমাত্র আল্লাহ্ তা’আলাই অবগত যে, তা পবিত্রতা কিংবা পরহেযগারীর মধ্যেই হবে কিনা। কাজেই নিজে নিজেকে পবিত্র বলে আখ্যায়িত করা তাকওয়ার পরিপন্থি। এক বর্ণনায় এসেছে, সালমা বিনতে যয়নব রাদিয়াল্লাহু আনহা তার মাতা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার নাম কি? তখন যেহেতু আমার নাম ছিল ( بَرَّة ) ( বার্রাহ্ বা পাপমুক্ত ), কাজেই আমি তাই বললাম। তাতে রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘তোমরা নিজেরা নিজেদেরকে পাপমুক্ত বলে বর্ণনা করো না। কারণ, একমাত্র আল্লাহ তা’আলাই জানেন, তোমাদের মধ্যে কে পবিত্র। অতঃপর বার্রাহ্ নামটি পাল্টিয়ে তিনি যয়নব রেখে দিলেন। [ বুখারীঃ ৫৮৩৯, মুসলিমঃ ২১৪১ ] নিষিদ্ধতার আরো এক কারণ এই যে, অধিকাংশ সময় এ ধরনের দাবী করতে গিয়ে মানুষের মনে এমন ধারণা সৃষ্টি হতে থাকে যে, সে লোক আল্লাহ্ তা’আলার দরবারে এজন্য প্রিয় যে, সে যাবতীয় দোষ-ত্রুটি থেকে মুক্ত। অথচ কথাটি সর্বৈব মিথ্যা। কারণ, মানুষের মধ্যে অসংখ্য ক্রটি-বিচূতি বিদ্যমান থাকে। নিষিদ্ধতার আরেক কারণ হল, মানুষ জানে না তার কৃত আমল আল্লাহর দরবারে কবুল হচ্ছে কিনা। কেননা, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, ‘যখন ( وَالَّذِيْنَ يُؤْتُوْنَ مَآ اٰتَوْا وَّقُلُوْبُهُمْ وَجِلَةٌ اَنَّهُمْ اِلٰى رَبِّهِمْ رٰجِعُوْنَ ) ‘আর যারা তাদেরকে যা দেয়া হয়েছে তা দেয় এমতাবস্থায় যে, তাদের অন্তর ভীত-সন্ত্রস্ত এজন্যে যে তারা তাদের রব এর কাছে প্রত্যাবর্তন করবে।’ [ সূরা আল-মু’মিনূনঃ ৬০ ] এ আয়াত নাযিল হল, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞেস করলাম তারা কি ঐ সম্প্রদায় যারা মদ খায় এবং চুরি করে? তিনি বললেন, না, হে সিদ্দিকের মেয়ে! তারা হল ঐ সমস্ত ব্যক্তি যারা সালাত-সাওম আদায় করে এবং ভয় করে যে তাদের থেকে কবুল করা হবে না।’ [ তিরমিযীঃ ৩১৭৫, ইবন মাজাহঃ ৪১৯৮, মুসনাদে আহমাদঃ ৬/১৫৯ ]
সূরা নিসা আয়াত 49 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- আল্লাহ তা’আলা তোমাদের জন্যে ভূমিকে করেছেন বিছানা।
- আমি সোলায়মানকে পরীক্ষা করলাম এবং রেখে দিলাম তার সিংহাসনের উপর একটি নিস্প্রাণ দেহ। অতঃপর সে
- আপনি তাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা দূরে রাখতে পারেন এবং যাকে ইচ্ছা কাছে রাখতে পারেন। আপনি
- আমার ভাই হারুণ, সে আমা অপেক্ষা প্রাঞ্জলভাষী। অতএব, তাকে আমার সাথে সাহায্যের জন্যে প্রেরণ করুন।
- মেপে দেয়ার সময় পূর্ণ মাপে দেবে এবং সঠিক দাঁড়িপালায় ওজন করবে। এটা উত্তম; এর পরিণাম
- তবে কোন সম্প্রদায়ের ধোঁকা দেয়ার ব্যাপারে যদি তোমাদের ভয় থাকে, তবে তাদের চুক্তি তাদের দিকেই
- এমনিভাবে আল্লাহ জ্ঞানহীনদের হৃদয় মোহরাঙ্কিত করে দেন।
- আর অবশ্যই যদি আমি মানুষকে আমার রহমতের আস্বাদ গ্রহণ করতে দেই, অতঃপর তা তার থেকে
- অতঃপর আমি তাদের কাছ থেকে প্রতিশোধ নিয়েছি। উভয় বস্তি প্রকাশ্য রাস্তার উপর অবস্থিত।
- আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে তারাই তাদের পালনকর্তার কাছে সিদ্দীক
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নিসা ডাউনলোড করুন:
সূরা Nisa mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Nisa শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers