কোরান সূরা ক্বামার আয়াত 49 তাফসীর
﴿إِنَّا كُلَّ شَيْءٍ خَلَقْنَاهُ بِقَدَرٍ﴾
[ القمر: 49]
আমি প্রত্যেক বস্তুকে পরিমিতরূপে সৃষ্টি করেছি। [সূরা ক্বামার: 49]
Surah Al-Qamar in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Qamar ayat 49
নিঃসন্দেহ প্রত্যেকটি জিনিস -- আমরা এটি সৃষ্টি করেছি পরিমাপ অনুসারে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৪৯. আমি সৃষ্টিকুলের প্রত্যেকটি বস্তু আমার পূর্ব নির্ধারণ, জ্ঞান, ইচ্ছা ও লাওহে মাহফ‚যে লিখিত ফায়সালা অনুযায়ী সৃষ্টি করেছি।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
নিশ্চয় আমি প্রত্যেক বস্তুকে সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে।[১] [১] আহলে সুন্নাহর ইমামগণ এই আয়াত এবং এই ধরনের অন্যান্য আয়াতগুলোকে দলীল হিসাবে গ্রহণ করে ভাগ্য যে আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত সে কথা সাব্যস্ত করেছেন। যার অর্থ হল, মহান আল্লাহ সৃষ্টিকুলকে সৃষ্টি করার পূর্ব থেকেই তাদের ব্যাপারে জানতেন এবং ( সেই জানার আলোকে ) তিনি তাদের সকলের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করে দেন। এ আয়াতে সেই ফির্কা ক্বাদরিয়ার খন্ডন রয়েছে, যাদের আবির্ভাব ঘটে সাহাবাদের একেবারে শেষ যুগে। ( ইবনে কাসীর )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
নিশ্চয় আমরা প্রত্যেক কিছু সৃষ্টি করেছি নির্ধারিত পরিমাপে [ ১ ], [ ১ ] قدر বা ‘কদর’ শব্দের আভিধানিক অর্থ পরিমাপ করা, কোন বস্তু উপযোগিতা অনুসারে পরিমিতরূপে তৈরি করা। [ ফাতহুল কাদীর ] এছাড়া শরীআতের পরিভাষায় ‘কদার” শব্দটি মহান আল্লাহর তাকদীর তথা বিধিলিপির অর্থেও ব্যবহৃত হয়। অধিকাংশ তফসীরবিদ বিভিন্ন হাদীসের ভিত্তিতে আলোচ্য আয়াতে এই অর্থই নিয়েছেন। আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, কুরাইশ কাফেররা একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে তাকদীর সম্পর্কে বিতর্ক শুরু করলে আলোচ্য আয়াত অবতীর্ণ হয়। [ মুসলিম:২৬৫৬ ] তাকদীর ইসলামের একটি অকাট্য আকীদা-বিশ্বাস। যে একে সরাসরি অস্বীকার করে, সে কাফের। উপরোক্ত আয়াত ও তার শানে নুযুল থেকে আমরা এর প্রমাণ পাই। তাছাড়া পবিত্র কুরআনের অন্যত্রও তাকদীরের কথা এসেছে, মহান আল্লাহ বলেনঃ “ আর আল্লাহর নির্দেশ ছিল সুনির্ধারিত ।”। [ সূরা আল-আহযাবঃ ৩৮ ] অন্যত্র বলেন, “ তিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন তারপর নির্ধারণ করেছেন যথাযথ অনুপাতে” । [ সূরা আল-ফুরকানঃ ২ ] সহীহ মুসলিমে উমর ইবনে খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে, যা 'হাদীসে জিবরীল’ নামে বিখ্যাত, তাতে রয়েছেঃ জিবরীল আলাইহিস সালাম নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে জানতে চেয়ে বলেন যে, আমাকে ঈমান সম্পর্কে অবহিত করুন, তিনি বললেনঃ “ আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফিরিশতাগণের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমূহের প্রতি, তাঁর রাসূলগণ ও শেষ দিবসের প্রতি ঈমান আনা, আর তাকদীরের ভাল ও মন্দের প্রতি ঈমান আনা” । [ মুসলিম: ১ ] অনুরূপভাবে আব্দুল্লাহ ইবনে “ আমর ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেছেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছিঃ “আল্লাহ আসমান ও যমীন সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে সৃষ্টি জগতের তাকদীর লিখে রেখেছেন” । বললেনঃ “ আর তাঁর আরশ ছিল পানির উপর” । [ মুসলিম: ২৬৫৩ ] অনুরূপভাবে তাকদীরের উপর ঈমান আনা উম্মত তথা সাহাবা ও তাদের পরবর্তী সবার ইজমা’ বা ঐক্যমতের বিষয়। সহীহ মুসলিমে ত্বাউস থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “ আমি অনেক সাহাবীকে পেয়েছি যারা বলতেনঃ সব কিছু তাকদীর অনুসারে হয় ।’ আরো বলেনঃ আমি "আব্দুল্লাহ ইবনে উমরকে বলতে শুনেছিঃ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “ সবকিছুই তাকদীর মোতাবেক হয়, এমনকি অপারগতা ও সক্ষমতা, অথবা বলেছেনঃ সক্ষমতা ও অপারগতা” । [ মুসলিম:২৬৫৫ ] তাকদীরের স্তর বা পর্যায়সমূহ চারটি; যার উপর কুরআন ও সুন্নায় অসংখ্য দলীল-প্রমাণাদি এসেছে আর আলেমগণও তার স্বীকৃতি দিয়েছেন। প্রথম স্তরঃ অস্তিত্ব সম্পন্ন, অস্তিত্বহীন, সম্ভব এবং অসম্ভব সবকিছু সম্পর্কে আল্লাহর জ্ঞান থাকা এবং এ সবকিছু তাঁর জ্ঞানের আওতাভুক্ত থাকা। সুতরাং তিনি যা ছিল এবং যা হবে, আর যা হয় নি যদি হত তাহলে কি রকম হতো তাও জানেন। এর প্রমাণ আল্লাহর বাণীঃ “ যাতে তোমরা বুঝতে পার যে, আল্লাহ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান এবং জ্ঞানে আল্লাহ সবকিছুকে পরিবেষ্টন করে আছেন” ।[ সূরা আত্ তালাকঃ ১২ ] সহীহ বুখারী ও মুসলিমে ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমার হাদীসে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে মুশরিকদের সন্তানদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেনঃ “তারা কি কাজ করত ( জীবিত থাকলে ) তা আল্লাহই ভাল জানেন” । [ বুখারী: ১৩৮৪, মুসলিম: ২৬৫৯ ] দ্বিতীয় স্তরঃ ক্ৰিয়ামত পর্যন্ত যত কিছু ঘটবে সে সব কিছু মহান আল্লাহ কর্তৃক লিখে রাখা। মহান আল্লাহ বলেনঃ “ আপনি কি জানেন না যে, আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে আল্লাহ তা জানেন । এসবই এক কিতাবে আছে; নিশ্চয়ই তা আল্লাহর নিকট সহজ। [ সূরা আল—হাজ্জঃ ৭০ ] আল্লাহ তা'আলা আরো বলেনঃ “ আমরা তো প্রত্যেক জিনিস এক স্পষ্ট কিতাবে সংরক্ষিত করেছি” । সূরা ইয়াসীনঃ ১২] পূর্বে বর্ণিত ‘আব্দুল্লাহ ইবনে “ আমর ইবনুল আসের হাদীসে এ কথাও বলা হয়েছে যে, আল্লাহ আসমান ও যমীন সৃষ্টি করার পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে সৃষ্টি জগতের তাকদীর লিখে রেখেছেন । [ মুসলিম: ২৬৫৩ ] তাছাড়া অন্য হাদীসে এসেছে, ওলীদ ইবনে উবাদাহ বলেন, আমি আমার পিতাকে অসিয়ত করতে বললে তিনি বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, আল্লাহ যখন প্রথমে কলম সৃষ্টি করলেন তখন তাকে বললেন, লিখ। তখন থেকে কিয়ামত পর্যন্ত যা হবে সে মূহুর্ত থেকে কলম তা লিখতে শুরু করেছে।' হে প্রিয় বৎস! তুমি যদি এটার উপর ঈমান না এনে মারা যাও তবে তুমি জাহান্নামে যাবে। [ মুসনাদে আহমাদ:৫/৩১৭ ] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ঐ পর্যন্ত কেউ ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ চারটি বিষয়ের উপর ঈমান না আনবে, আল্লাহ ব্যতীত কোন হক্ক ইলাহ নেই এটার সাক্ষ্য দেয়া। আর আমি আল্লাহর রাসূল। আল্লাহ আমাকে হক সহ পাঠিয়েছে। অনুরূপভাবে সে মৃত্যুর উপর ঈমান আনবে। আরো ঈমান আনবে মৃত্যুর পরে পুনরুত্থানের। আরও ঈমান আনবে তাকদীরের ভাল-মন্দের উপর। [ তিরমিয়ী: ২১৪৪ ] তৃতীয় স্তরঃ আল্লাহর ইচ্ছঃ তিনি যা চান তা হয়, আর যা চান না তা হয় না। মহান আল্লাহ বলেনঃ “ তাঁর ব্যাপার শুধু এতটুকুই যে, তিনি যখন কোন কিছুর ইচ্ছা করেন, তিনি তখন তাকে বলেনঃ “হও”, ফলে তা হয়ে যায়” । সূরা ইয়াসীনঃ ৮২] মহান আল্লাহ আরো বলেনঃ “ সমগ্র সৃষ্টি জগতের প্রতিপালক আল্লাহর ইচ্ছা! ব্যতীত তোমরা কোন ইচ্ছাই করতে পার না” । [ সূরা আত-তাকওয়ীরঃ ২৯ ] হাদীসে নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “ তোমাদের কেউ যেন একথা কখনো না বলে যে, হে আল্লাহ! যদি আপনি চান আমাকে ক্ষমা করুন, হে আল্লাহ! যদি আপনি চান আমাকে দয়া করুন, বরং দোআ করার সময় দৃঢ়ভাবে কর; কেননা আল্লাহ যা ইচ্ছা তা-ই করেন, তাঁকে জোর করার কেউ নেই” । [ বুখারী: ৬৩৩৯, মুসলিম: ২৬৭৯ ] চতুর্থ স্তরঃ আল্লাহ কর্তৃক যাবতীয় বস্তু সৃষ্টি করা ও অস্তিত্বে আনা এবং এ ব্যাপারে তাঁর পূর্ণ ক্ষমতা থাকা। কেননা তিনিই সে পবিত্র সত্তা যিনি সমস্ত কর্মী ও তার কর্ম, প্রত্যেক নড়াচড়াকারী ও তার নড়াচড়া, এবং যাবতীয় স্থিরিকৃত বস্তু ও তার স্থিরতার সৃষ্টিকারক। মহান আল্লাহ বলেনঃ আল্লাহ সবকিছুর স্রষ্টা এবং তিনি সবকিছুর কর্মবিধায়ক”। সূরা আয-যুমারঃ ৬২] আল্লাহ তা'আলা আরো বলেনঃ “ প্রকৃতপক্ষে আল্লাহ তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং তোমরা যা কর তাও” । [ সূরা আস-সাফফাতঃ ৯৬ ] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “ একমাত্র আল্লাহ্ ছিলেন, তিনি ব্যতীত আর কোন বস্তু ছিলনা, আর তাঁর আরশ ছিল পানির উপর এবং তিনি সবকিছু লাওহে মাহফুজে লিখে রেখেছেন, আর আসমান ও যমীন সৃষ্টি করেছেন” । [ বুখারী: ৩১৯১ ] তাই তাকদীরের উপর ঈমান বিশুদ্ধ হওয়ার জন্য এ চারটি স্তরের উপর ঈমান আনা ওয়াজিব। যে কেউ তার সামান্যও অস্বীকার করে তাকদীরের উপর তার ঈমান পূর্ণ হবে না। তাকদীরের উপর ঈমানের উপকারিতা: তাকদীরের উপর ঈমান যথার্থ হলে মুমিনের জীবনের উপর তার যে বিরাট প্রভাব ও হিতকর ফলাফল অর্জিত হয়, তন্মধ্যে অন্যতম হচ্ছেঃ কার্যোদ্ধারের জন্য কোন উপায় বা কৌশল অবলম্বন করলেও কেবলমাত্ৰ আল্লাহর উপরই ভরসা করবে; কেননা তিনিই যাবতীয় কৌশল ও কৌশল্যকারীর নিয়ন্তা। যখন বান্দা এ কথা সত্যিকার ভাবে উপলব্ধি করতে পারবে যে, সবকিছুই আল্লাহর ফয়সালা ও তাকদীর অনুসারেই হয় তখন তার আত্মিক প্রশান্তি ও মানসিক প্ৰসন্নতা অর্জিত হয়। উদ্দেশ্য সাধিত হলে নিজের মন থেকে আত্মম্ভরিতা দূর করা সম্ভব হয়। কেননা আল্লাহ তার জন্য উক্ত কল্যাণ ও সফলতার উপকরণ নির্ধারণ করে দেয়ার কারণেই তার পক্ষে এ নেয়ামত অর্জন করা সম্ভব হয়েছে, তাই সে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ হবে এবং আতম্ভরিতা পরিত্যাগ করবে। উদ্দেশ্য সাধিত না হলে বা অপছন্দনীয় কিছু ঘটে গেলে মন থেকে অশান্তি ও পেরেশানীভাব দূর করা ( তাকদীরে ঈমানের কারণে ) সম্ভব হয়; কেননা এটা আল্লাহর ফয়সালা আর তাঁরই তাকদীরের ভিত্তিতে হয়েছে। সুতরাং সে ধৈর্য ধারণ করবে এবং সওয়াবের আশা করবে। [ উসুলুল ঈমান ফি দাওয়িল কিতাবি ওয়াস সুন্নাহ ]
সূরা ক্বামার আয়াত 49 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলের রাজত্ব আল্লাহরই। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি দেন।
- তাদের অধিকাংশের জন্যে শাস্তির বিষয় অবধারিত হয়েছে। সুতরাং তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না।
- হে আমাদের সম্প্রদায়, তোমরা আল্লাহর দিকে আহবানকারীর কথা মান্য কর এবং তাঁর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন
- হে আমাদের পালনকর্তা! এ থেকে আমাদেরকে উদ্ধার কর; আমরা যদি পুনরায় তা করি, তবে আমরা
- অতঃপর তোমাদের উপর শোকের পর শান্তি অবতীর্ণ করলেন, যা ছিল তন্দ্রার মত। সে তন্দ্রায় তোমাদের
- তারা লূতের (আঃ) কাছে তার মেহমানদেরকে দাবী করেছিল। তখন আমি তাদের চক্ষু লোপ করে দিলাম।
- যা চলত আমার দৃষ্টি সামনে। এটা তার পক্ষ থেকে প্রতিশোধ ছিল, যাকে প্রত্যখ্যান করা হয়েছিল।
- আর তোমাদের উপাস্য একইমাত্র উপাস্য। তিনি ছাড়া মহা করুণাময় দয়ালু কেউ নেই।
- যে না দেখে দয়াময় আল্লাহ তা’আলাকে ভয় করত এবং বিনীত অন্তরে উপস্থিত হত।
- আমি তো শুধু একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ক্বামার ডাউনলোড করুন:
সূরা Al Qamar mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Qamar শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers