কোরান সূরা সাবা আয়াত 50 তাফসীর
﴿قُلْ إِن ضَلَلْتُ فَإِنَّمَا أَضِلُّ عَلَىٰ نَفْسِي ۖ وَإِنِ اهْتَدَيْتُ فَبِمَا يُوحِي إِلَيَّ رَبِّي ۚ إِنَّهُ سَمِيعٌ قَرِيبٌ﴾
[ سبأ: 50]
বলুন, আমি পথভ্রষ্ট হলে নিজের ক্ষতির জন্যেই পথভ্রষ্ট হব; আর যদি আমি সৎপথ প্রাপ্ত হই, তবে তা এ জন্যে যে, আমার পালনকর্তা আমার প্রতি ওহী প্রেরণ করেন। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, নিকটবর্তী। [সূরা সাবা: 50]
Surah Saba in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Saba ayat 50
তুমি বলো -- ''যদি আমি বিপথে যাই তাহলে আমি তো আমার নিজেরই বিরুদ্ধে বিপথে গেছি, আর আমি যদি সৎপথে চলি তাহলে সেটি আমার প্রভু আমার কাছে যা প্রত্যাদেশ করেছিলেন তার জন্য। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, অতি নিকটবর্তী।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৫০. হে রাসূল! এসব অস্বীকারকারী মুশরিকদেরকে বলে দিন: আমি যদি তোমাদেরকে যে বার্তা শুনাচ্ছি তাতে বিপথগামী হয়ে থাকি তবে তার ক্ষয়-ক্ষতি কেবল আমারই হবে; তোমাদের নয়। পক্ষান্তরে আমি যদি সৎপথের সন্ধান পেয়ে থাকি তবে তা আমার মহান প্রতিপালকের ঐশী বাণীর মাধ্যমেই হয়েছে। তিনি স্বীয় বান্দাদের কথা শ্রবণকারী, নিকটবর্তী। আমার কথা শুনতে তাঁর কোন কষ্ট হয় না।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
বল, ‘আমি বিভ্রান্ত হলে বিভ্রান্তির পরিণাম আমাকেই ভোগ করতে হবে। আর যদি আমি সৎপথে থাকি তবে তা এ জন্য যে, আমার প্রতি আমার প্রতিপালক অহী ( প্রত্যাদেশ ) প্রেরণ করেন।[১] তিনি সর্বশ্রোতা, সন্নিকটবর্তী।’ [২] [১] অর্থাৎ সর্বপ্রকার মঙ্গল আল্লাহর পক্ষ থেকে। আল্লাহ তাআলা যে অহী ও স্পষ্ট সত্য অবতীর্ণ করেছেন, তাতে সঠিক পথ ও হিদায়াত নিহিত আছে। মানুষ তাতেই সঠিক পথের দিশা পায়। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি পথভ্রষ্ট হয়, তাতে মানুষের নিজের ত্রুটি এবং প্রবৃত্তির খেয়াল-খুশী থাকে। এই জন্য তার কুফলও তাকেই ভোগ করতে হবে। আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ ( রাঃ ) যখন কোন জিজ্ঞাসকের উত্তরে নিজের পক্ষ থেকে কিছু বর্ণনা করতেন, তখন বলতেন, এ ব্যাপারে আমি আমার নিজস্ব রায় বললাম। সুতরাং তা যদি সঠিক হয়, তাহলে তা আল্লাহর তরফ হতে, আর যদি তা বেঠিক হয়, তাহলে তা আমার ও শয়তানের তরফ হতে এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল তার সাথে সম্পর্কহীন। ( ইবনে কাসীর ) [২] যেমন হাদীসে এসেছে যে, একদা সাহাবীগণ জোরে-শোরে তকবীর পড়তে শুরু করলেন। তখন নবী ( সাঃ ) বললেন, হে লোক সকল! নিজেদের উপর কৃপা কর। নিশ্চয় তোমরা কোন বধির অথবা কোন ( দূরবর্তী ) অনুপস্থিতকে আহবান করছ না; বরং তোমরা সর্বশ্রোতা নিকটবর্তীকে আহবান করছ। তিনি ( তাঁর ইলমসহ ) তোমাদের সঙ্গে আছেন।" (বুখারী ৫ / ৭৫, মুসলিম ৪ / ২০৭৬)
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
বলুন, 'আমি বিভ্রান্ত হলে বিভ্রান্তির পরিণাম আমারই, পরিণাম আমারই, আর যদি আমি সৎপথে থাকি তবে তা এ জন্যে যে, আমার রব আমার প্রতি ওহী পাঠান। নিশ্চয় তিনি সর্বশ্রোতা, অতি নিকটবর্তী।'
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৪৭-৫০ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা স্বীয় রাসূল ( সঃ )-কে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তিনি যেন মুশরিকদেরকে বলেনঃ আমি তোমাদের মঙ্গল কামনা করি। তোমাদের কাছে আমি দ্বীনী আহকাম পৌছিয়ে দিচ্ছি। তোমাদেরকে উপদেশ ও পরামর্শ দিচ্ছি। এর জন্যে আমি তোমাদের কাছে কোন বিনিময় চাচ্ছি না। বিনিময় তো আমাকে আল্লাহ তাআলাই দিবেন। তিনি সবকিছুর রহস্য অবগত আছেন। আমার ও তোমাদের অবস্থা প্রকাশিত হয়ে আছে। নিম্নের আয়াতটিও এই আয়াতের অনুরূপ আয়াতঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আল্লাহ তা'আলা নিজের নির্দেশে হযরত জিবরাঈল ( আঃ )-কে স্বীয় বান্দাদের যার উপর ইচ্ছা নিজের অহীসহ পাঠিয়ে থাকেন ।”( ৪০:১৫ ) তিনি সত্যসহ ফেরেশতা অবতীর্ণ করেন। তিনি অদৃশ্যের পরিজ্ঞাতা। তাঁর কাছে আসমান যমীনের কিছুই গোপন নেই। আল্লাহর নিকট হতে হক এবং মুবারক শরীয়ত এসে গেছে। আর বাতিল ধ্বংস হয়ে গেছে। যেমন মহান আল্লাহ বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আমি বাতিলের উপর হককে নাযিল করে বাতিলকে উড়িয়ে বা মিটিয়ে দিই এবং তার তুষ উড়ে যায় ।”( ২১:১৮ )মক্কা বিজয়ের দিন রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বায়তুল্লাহর মধ্যে প্রবেশ করে তথাকার মূর্তিগুলোকে স্বীয় কামানের কাঠ দ্বারা ফেলে দিচ্ছিলেন এবং মুখে উচ্চারণ করছিলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ ( হে নবী সঃ )! তুমি বলে দাও যে, সত্য এসে গেছে এবং বাতিল দূরীভূত হয়েছে, আর বাতিল দূরীভূত হয়েই থাকে ।”( ১৭:৮১ )। ( এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে )কোন কোন তাফসীরকার হতে বর্ণিত আছে যে, এখানে বাতিল দ্বারা ইবলীসকে বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ সে না পূর্বে কাউকেও সৃষ্টি করেছে, না ভবিষ্যতে কাউকেও সৃষ্টি করতে পারবে। সে মৃতকেও জীবিত করতে পারে না এবং এ ধরনের কোন ক্ষমতাই তার নেই। কথা তো এটাও সত্য। কিন্তু এখানে উদ্দেশ্য তা নয়। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সবচেয়ে ভাল জানেন। আল্লাহ তাআলা সত্য সত্যই অহী পাঠিয়ে থাকেন। তাঁর হিদায়াত ও বর্ণনা খুবই সহজ ও সরল। যারা পথভ্রষ্ট হচ্ছে তারা নিজে থেকেই পথভ্রষ্ট হচ্ছে এবং তারা নিজেদেরই ক্ষতি সাধন করছে। যেমন হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ( রাঃ )-কে সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেনঃ “ আমি এটা আমার নিজের চিন্তা প্রসূত কথা বলছি । যদি তা সঠিক হয় তবে জানবে যে, এটা আল্লাহর পক্ষ হতে। আর যদি ভুল হয় তাহলে জানবে যে, এটা শয়তানের পক্ষ হতে। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ( সঃ ) এটা হতে সম্পূর্ণরূপে দায়িত্বমুক্ত। আল্লাহ তা'আলা স্বীয় বান্দাদের কথা শুনে থাকেন, তিনি খুব নিকটেই আছেন। আহ্বানকারীর আহ্বানে তিনি সদা সাড়া দিয়ে থাকেন। সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আবু মূসা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একদা রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) স্বীয় সাহাবীদেরকে বলেনঃ “ তোমরা কোন বধিরকেও ডাকছো না এবং কোন অনুপস্থিতকেও ডাকছো না, বরং তোমরা ডাকছো এমন সত্তাকে যিনি শ্রবণকারী, যিনি নিকটেই রয়েছেন এবং যিনি তোমাদের আহ্বানে সাড়া দানকারী এবং তোমাদের প্রার্থনা কবুলকারী ।”
সূরা সাবা আয়াত 50 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- যদি নবী তোমাদের সকলকে পরিত্যাগ করেন, তবে সম্ভবতঃ তাঁর পালনকর্তা তাঁকে পরিবর্তে দিবেন তোমাদের চাইতে
- সামুদ, লূতের সম্প্রদায় ও আইকার লোকেরা। এরাই ছিল বহু বাহিনী।
- গোনাহগার ব্যতীত কেউ এটা খাবে না।
- যারা আল্লাহর রসূলের সামনে নিজেদের কন্ঠস্বর নীচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে শিষ্টাচারের জন্যে শোধিত করেছেন।
- সুতরাং তা হল কেয়ামতের নিদর্শন। কাজেই তোমরা কেয়ামতে সন্দেহ করো না এবং আমার কথা মান।
- কখনও বিভ্রান্ত হয়ো না; বরং তোমরা দান-প্রতিদানকে মিথ্যা মনে কর।
- অতঃপর তার মৃত্যু ঘটান ও কবরস্থ করেন তাকে।
- অতএব, অবশ্য তারা সত্যকে মিথ্যা বলেছে যখন তা তাদের কাছে এসেছে। বস্তুতঃ অচিরেই তাদের কাছে
- স্মরণ কর, যখন ইব্রাহীম ও ইসমাঈল কা’বাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করছিল। তারা দোয়া করেছিলঃ পরওয়ারদেগার! আমাদের
- আর যখন তোমরা বললে, হে মূসা, কস্মিনকালেও আমরা তোমাকে বিশ্বাস করব না, যতক্ষণ না আমরা
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা সাবা ডাউনলোড করুন:
সূরা Saba mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Saba শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers