কোরান সূরা নাস আয়াত 6 তাফসীর
﴿مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ﴾
[ الناس: 6]
জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে। [সূরা নাস: 6]
Surah An-Nas in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah An Nas ayat 6
''জিনের অথবা মানুষের মধ্যে থেকে।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৬. সে মানবরূপী হয়ে থাকে। আবার দানবরূপীও হয়।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
জ্বিন ও মানুষের মধ্য হতে। [১] [১] অর্থাৎ, এই কুমন্ত্রণাদাতা হল দুই শ্রেণীর। ( ১ ) শয়তান জ্বিনঃ শয়তান জ্বিনদেরকে মহান আল্লাহ মানুষকে ভ্রষ্ট করার ক্ষমতা দিয়ে রেখেছেন। এ ছাড়া প্রত্যেক মানুষের সাথে একজন শয়তান সাথী হিসাবে সদা বিদ্যমান থাকে; সেও তাকে ভ্রষ্ট করার প্রচেষ্টায় থাকে। হাদীসের মধ্যে বর্ণিত হয়েছে যে, যখন নবী ( সাঃ ) ঐ কথা লোকদেরকে বললেন, তখন সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার সাথেও কি শয়তান বিদ্যমান থাকে। তিনি উত্তরে বললেন, " হ্যাঁ, আমার সাথেও থাকে। তবে আল্লাহ তাআলা তার বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য দান করেছেন; যার ফলে সে আমার অনুগত হয়ে গেছে। সে আমাকে মঙ্গল ব্যতীত কিছু আদেশ করে না। " ( সহীহ মুসলিম, কিয়ামতের বিবরণ অধ্যায় ) অনুরূপ অন্য হাদীসে এসেছে যে, একদা নবী ( সাঃ ) যখন ই'তিকাফ অবস্থায় ছিলেন তখন তাঁর পবিত্রা সহধর্মিণী স্বাফিয়্যাহ ( রাঃ ) তাঁর সাক্ষাতে ( মসজিদে ) এলেন। সময়টা রাত্রিবেলা ছিল। সাক্ষাতের পর তিনি তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে বের হলেন। রাস্তায় দুই আনসারী সাহাবী পার হচ্ছিলেন। তিনি তাঁদেরকে ডেকে বললেন, " এটি আমার স্ত্রী স্বাফিয়্যাহ বিন্তে হুয়াই। " তাঁরা আরজ করলেন যে, 'আপনার সম্পর্কে কি আমাদের কোন কুধারণা হতে পারে হে আল্লাহর রসূল?!' তিনি বললেন, " তা তো ঠিক কথা। কিন্তু শয়তান যে মানুষের রক্ত-ধমনীতে রক্তের মতই প্রবাহিত হয়। আমার আশঙ্কা হল যে, হয়তো বা সে তোমাদের মনে কোন সন্দেহ প্রক্ষিপ্ত করে দিতে পারে। " ( সহীহ বুখারী, আহকাম অধ্যায় ) ( ২ ) মানুষ শয়তানঃ মানুষের মধ্যে কিছু শয়তান আছে যারা উপদেষ্টা, হিতাকাঙ্ক্ষী ও দয়াবানরূপে এসে অপরকে ভ্রষ্ট হতে উদ্বুদ্ধ করে।কোন কোন উলামা বলেন, শয়তান যাদেরকে ভ্রষ্ট করে, তারা হল দুই শ্রেণীর। অর্থাৎ, শয়তান মানুষকে যেমন ভ্রষ্ট করে তেমনি জ্বিনকেও ভ্রষ্ট করে থাকে। তবে এখানে মানুষের অন্তরের উল্লেখ তার ভ্রষ্টতার তুলনামূলক আধিক্যের কারণে করা হয়েছে। নচেৎ জ্বিন সম্প্রদায়ও শয়তানের কুমন্ত্রণায় ভ্রষ্টতার শিকার হয়। কিছু সংখ্যক উলামা বলেন, কুরআনে জ্বিনদের জন্যও 'রিজাল' ( পুরুষ মানুষ ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। ( সূরা জিন ৭২:৬ নং আয়াত ) সুতরাং তারাও মানুষ শব্দে শামিল।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
‘জিনের মধ্য থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকে [ ১ ]।’ [ ১ ] এখানে দুটি অর্থ হতে পারে। প্রথমটি হল, শয়তান জিন ও মানুষ-উভয় প্রকার মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। এ অর্থে এখানে ناس বলে জিন ও মানুষ সকলকে বুঝানো হয়েছে। দ্বিতীয় মতটি হল: কুমন্ত্রণাদাতা শয়তান জিনদের মধ্য থেকেও হয়, মানুষের মধ্য থেকেও হয়। এমতটিই শক্তিশালী। [ ইবন কাসীর ] অতএব সারমর্ম এই দাঁড়াল যে, আল্লাহ্ তা‘আলা রাসূলকে তাঁর আশ্রয় প্রার্থনার শিক্ষা দিয়েছেন জিন-শয়তানের অনিষ্ট থেকে এবং মানুষ-শয়তানের অনিষ্ট থেকে। জিন-শয়তানের কুমন্ত্রণা হল অলক্ষ্যে থেকে মানুষের অন্তরে কোন কথা রাখা। শয়তান যেমন মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয়, তেমনিভাবে মানুষের নফসও মানুষকে কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপন নফসের অনিষ্ট থেকেও আশ্রয় প্রার্থনা শিক্ষা দিয়েছেন। হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “ হে আল্লাহ্! আমি আপনার আশ্রয় চাই, আমার নফসের অনিষ্ট থেকে, শয়তানের অনিষ্ট থেকেও এবং তার শির্ক ( বা জাল ) থেকেও ।” [ আবু দাউদ: ৫০৬৭, তিরমিয়ী: ৩৩৯২, মুসনাদে আহমাদ: ১/৯ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১-৬ নং আয়াতের তাফসীর এ সূরায় মহা মহিমান্বিত আল্লাহর তিনটি গুণ বিবৃত হয়েছে। অর্থাৎ তিনি হলেন পালনকর্তা, শাহানশাহ এবং মা'বুদ বা পূজনীয়। সব কিছু তিনিই সৃষ্টি করেছেন, সবই তার মালিকানাধীন এবং সবাই তার আনুগত্য করছে। তিনি তার প্রিয় নবী ( সঃ )-কে নির্দেশ দিচ্ছেনঃ হে নবী ( সঃ )! তুমি বলে দাও, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের প্রতিপালকের, মানুষের অধিপতির এবং মানুষের মা'বুদের, পশ্চাদপসরণকারীর অনিষ্ট হতে যে মানুষের অন্তরসমূহে কুমন্ত্রণা ও প্ররোচনা দিয়ে থাকে। চাই সে জ্বিন হোক অথবা মানুষ হোক। অর্থাৎ যারা অন্যায় ও খারাপ কাজকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে চোখের সামনে হাজির করে পথভ্রষ্ট এবং বিভ্রান্ত করার কাজে যারা অতুলনীয়। আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই শুধু তাদের অনিষ্ট হতে রক্ষা পেতে পারে।সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমাদের প্রত্যেকের সাথে একজন করে শয়তান রয়েছে ।” সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আপনার সাথেও কি শয়তান রয়েছে?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “হ্যা আমার সঙ্গেও শয়তান রয়েছে? কিন্তু আল্লাহ তাআলা ঐ শয়তানের মুকাবিলায় আমাকে সাহায্য করেছেন, কাজেই আমি নিরাপদ থাকি । সে আমাকে পুণ্য ও কল্যাণের শিক্ষা দেয়।” সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আনাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর ই'তেকাফে থাকা অবস্থায় উম্মুল মু'মিনীন হযরত সফিয়া ( রাঃ ) তাঁর সাথে রাতের বেলায় দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিনি ফিরে যাবার সময় রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ )ও তাঁকে এগিয়ে দেয়ার জন্যে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে চলতে থাকেন। পথে দু’জন আনসারীর সাথে দেখা হলো। তারা রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ )-এর সাথে তাঁর স্ত্রীকে দেখে দ্রুতগতিতে হেঁটে যাচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) তাঁদেরকে থামালেন এবং বললেনঃ “ জেনে রেখো যে, আমার সাথে যে মহিলাটি রয়েছে এটা আমার স্ত্রী সফিয়া বিনতে হুইয়াই ( রাঃ ) ।” তখন আনসারী দু’জন বললেনঃ “ আল্লাহ্ পবিত্র । হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )। এ কথা আমাদেরকে বলার প্রয়োজনই বা কি ছিল?” রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) উত্তরে বললেনঃ “ মানুষের রক্ত । প্রবাহের স্থানে শয়তান ঘোরাফেরা করে থাকে। সুতরাং আমি আশংকা করছিলাম যে, শয়তান তোমাদের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করে দেয় না কি।”হযরত আনাস ইবনে মালিক ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) বলেছেন “ শয়তান তার হাত মানুষের অন্তকরণের উপর স্থাপন করে রেখেছে । মানুষ যখন আল্লাহর ইবাদত করে তখন সে নিজের হাত মানুষের অন্তকরণ থেকে সরিয়ে নেয়। আর যখন মানুষ আল্লাহকে ভুলে যায় তখন শয়তান মানুষের অন্তকরণের উপর পূর্ণ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এটাই শয়তানের কুমন্ত্রণা ও প্ররোচনা এবং এটাই ওয়াসওয়াসাতুল খান্নাস।” ( এ হাদীসটি হাফিয আবূইয়ালা মুসিলী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। কিন্তু হাদীসটি গারীব বা দুর্বল)মুসনাদে আহমাদে এমন একজন সাহাবী হতে বর্ণিত আছে যিনি গাধার পিঠে রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ )-এর পিছনে উপবিষ্ট ছিলেন। গাধা একটু হোঁচট খেলে ঐ সাহাবী বলে ওঠেনঃ “ শয়তান ধ্বংস হোক ।” তাঁর এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) বলেনঃ “ এভাবে বলো না, এতে শয়তান আরো বড় হয়ে যায়, আরো এগিয়ে আসে এবং বলেঃ আমি নিজের শক্তি দ্বারা তাকে কাবু করেছি । আর যদি বিসমিল্লাহ বলো তবে সে ছোট হতে হতে মাছির মতে হয়ে যায়। এতে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহর স্মরণে শয়তান পরাজিত ও নিস্তেজ হয়ে যায়। আর আল্লাহকে বিস্মরণ হলে সে বড় হয়ে যায় ও জয়যুক্ত হয়।হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমাদের মধ্যে কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে শয়তান তার কাছে যায় এবং আদর করে তার গায়ে হাত বুলাতে থাকে, যেমন মানুষ গৃহপালিত পশুকে আদর করে । ঐ আদরে লোকটি চুপ করে থাকলে শয়তান তার নাকে দড়ি বা মুখে লাগাম পরিয়ে দেয়।” হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) এ হাদীসটি বর্ণনা করে বলেনঃ “ তোমরা স্বয়ং নাকে দড়ি লাগানো এবং মুখে লাগাম পরিহিত লোককে দেখতে পাও । নাকে দড়ি লাগানো হলো ঐ ব্যক্তি যে এক দিকে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে থাকে এবং আল্লাহকে স্মরণ করে না। আর মুখে লাগাম পরিহিত হলো ঐ ব্যক্তি যে মুখ খুলে রাখে এবং আল্লাহর যিক্র করে না।” হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন যে, শয়তান আদম সন্তানের মনে তার থাবা বসিয়ে রাখে। মানুষ যেখানেই ভুল করে এবং উদাসীনতার পরিচয় দেয় সেখানেই সে কুমন্ত্রণা দিতে শুরু করে। আর যেখানে মানুষ আল্লাহকে স্মরণ করে সেখানে সে পশ্চাদপসরণ করে।অন্য বর্ণনায় আছে যে, সুখ-শান্তি এবং দুঃখ কষ্টের সময় শয়তান মানুষের মনে ছিদ্র করতে চায়। অর্থাৎ তাকে পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত করতে চেষ্টা করে। এ সময়ে যদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আল্লাহকে স্মরণ করে তবে শয়তান পালিয়ে যায়। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, শয়তানকে মানুষ যেখানে প্রশ্রয় দেয় সেখানে সে মানুষকে অন্যায় অপকর্ম শিক্ষা দেয়, তারপর কেটে পড়ে। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ মানব মণ্ডলীর অন্তর সমূহে কুমন্ত্রণা দেয়।( আরবি ) শব্দের অর্থ মানুষ। তবে এর অর্থ জ্বিনও হতে পারে। কুরআন কারীমের অন্যত্র রয়েছেঃ ( আরবি ) অর্থাৎ জ্বিনের মধ্য হতে কতকগুলো তোক। কাজেই জ্বিনসমূহকে শব্দের অন্তর্ভুক্ত করা অসঙ্গত নয়। মোটকথা, শয়তান। জ্বিন এবং মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে।( আরবি ) ( জ্বিনের মধ্য হতে অথবা মানুষের মধ্য হতে )। অর্থাৎ এরা কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে, চাই সে জ্বিন হোক অথবা মানুষ হোক। এর তাফসীর এরূপও করা হয়েছে। মানব ও দানব শয়তানরা মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। যেমন আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা অন্য এক জায়গায় বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ এভাবেই আমি মানবরূপী অথবা দানবরূপী শয়তানকে প্রত্যেক নবীর শত্রু বানিয়েছি । একজন অন্যজনের কানে ধোকা-প্রতারণামূলক কথা সাজিয়ে গুছিয়ে ব্যক্ত করে।” ( ৬:১১২ )।মুসনাদে আহমদে হযরত আবূ যার ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এর নিকট হাজির হন। ঐ সময় রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) মসজিদে অবস্থান করছিলেন। হযরত আবু যার ( রাঃ ) তার পাশে বসে পড়লেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আবু যার ( রাঃ )! তুমি নামায পড়েছো কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “জ্বী, না ।” তখন তিনি বললেনঃ “ তা হলে উঠে নামায পড়ে নাও ।” হযরত আবু যার ( রাঃ ) উঠে নামায পড়লেন। তারপর বসে পড়লেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাকে বললেনঃ “ হে আবু যার ( রাঃ ) মানবরূপী শয়তান হতে এবং দানবরূপী শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা কর ।” হযরত আবু যার ( রাঃ ) বললেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! মানুষের মধ্যেও কি শয়তান আছে? উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বললেনঃ “হ্যা”, হযরত আবু যার ( রাঃ ) জিজ্ঞেস । করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) নামায কি?" তিনি জবাবে বললেনঃ “নামায খুব ভাল কাজ । যার ইচ্ছা কম পড়তে পারে এবং যার ইচ্ছা বেশী পড়তে পারে।” হযরত আবু যার ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) । রোযা কি?” তিনি জবাব দিলেনঃ “ যথেষ্ট হওয়ার মত একটি ফরজ কাজ । আল্লাহর কাছে এর জন্যে বহু পুরস্কার রয়েছে। হযরত আবু যার ( রাঃ ) প্রশ্ন করলেনঃ “ সাদকা কি?" তিনি উত্তরে বললেনঃ “সাদকা এমনই জিনিষ যার বিনিময় বহুগুণ বৃদ্ধি করে প্রদান করা হবে ।” হযরত আবু যার ( রাঃ ) আর করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) । কোন সাদকা সবচেয়ে উত্তম?” রাসূলুল্লাহ। ( সঃ ) উত্তর দিলেনঃ “ সম্পদ কম থাকা সত্ত্বেও সাদকা করা, অথবা চুপে চুপে কোন ফকীর মিসকীন ও দুঃখী জনের সাথে উত্তম ব্যবহার করা ।” হযরত আবু যার ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! সর্বপ্রথম নবী কে ছিলেন?” তিনি জবাবে বললেনঃ “হযরত আদম ( আঃ ) ছিলেন প্রথম নবী ।” হযরত আবু যার ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হযরত আদম ( আঃ ) কি নবী ছিলেন?” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) জবাব দিলেনঃ “হ্যা, তিনি নবী ছিলেন, এবং এমন ব্যক্তি ছিলেন যার সঙ্গে আল্লাহ তা'আলা কথাবার্তা বলেছেন ।” হযরত আবু যার ( রাঃ ) প্রশ্ন করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) । রাসূল কত জন ছিলেন?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “ তিনশত দশের কিছু বেশী, বলা যায় একটি বড় জামাআত ।” আবার এও বললেনঃ “ তিনশত পনেরো ।” হযরত আবু যার ( রাঃ ) বললেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আপনার প্রতি নাযিলকৃত আয়াতসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বেশী বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আয়াত কোনটি?” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) জবাব দিলেনঃ “আয়াতুল কুরসী অর্থাৎ,( আরবি ) এই আয়াতটি ।” ( এ হাদীসটি ইমাম নাসায়ীও (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। তাছাড়া ইমাম আবু হাতিম ইবনে হিব্বানও ( রঃ ) অন্য সনদে এ হাদীসটি দীর্ঘভাবে বর্ণনা করেছেন। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন)মুসনাদে আহমদে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক নবী ( সঃ )-এর নিকট এসে বললোঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমার মনে এমন সব চিন্তা আসে যেগুলো প্রকাশ করার চেয়ে আকাশ থেকে পড়ে যাওয়াই আমার নিকট বেশী পছন্দনীয় ( সুতরাং এ অবস্থায় আমি কি করবো? ) । নবী ( সঃ ) উত্তরে বললেনঃ “ ( তুমি বলবে ): ( আরবি ) অর্থাৎ “আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান আল্লাহ তা'আলার জন্যেই সমস্ত প্রশংসা যিনি শয়তানের প্রতারণাকে ওয়াসওয়াসা অর্থাৎ শুধু কুমন্ত্রণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন, বাস্তবে কার্যে পরিণত করেননি ।”
সূরা নাস আয়াত 6 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- ফল এবং ঘাস
- পরন্তু যে বেপরোয়া,
- প্রবেশ কর তোমরা জাহান্নামের দরজা দিয়ে সেখানে চিরকাল বসবাসের জন্যে। কত নিকৃষ্ট দাম্ভিকদের আবাসস্থল।
- বিগত দিনে তোমরা যা প্রেরণ করেছিলে, তার প্রতিদানে তোমরা খাও এবং পান কর তৃপ্তি সহকারে।
- বস্তুতঃ যারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করেছে আমার আয়াতসমূহকে, আমি তাদেরকে ক্রমান্বয়ে পাকড়াও করব এমন জায়গা থেকে,
- উদ্যানসমূহের মধ্যে এবং ঝরণাসমূহের মধ্যে ?
- আর যখন কোরআন পাঠ করা হয়, তখন তাতে কান লাগিয়ে রাখ এবং নিশ্চুপ থাক যাতে
- আল্লাহর নিকট মানুষের মর্যাদা বিভিন্ন স্তরের আর আল্লাহ দেখেন যা কিছু তারা করে।
- অদ্য যেন কোন মিসকীন ব্যক্তি তোমাদের কাছে বাগানে প্রবেশ করতে না পারে।
- তিনিই তাঁর দাসের প্রতি প্রকাশ্য আয়াত অবতীর্ণ করেন, যাতে তোমাদেরকে অন্ধকার থেকে আলোকে আনয়ন করেন।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নাস ডাউনলোড করুন:
সূরা An Nas mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি An Nas শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers