কোরান সূরা নাস আয়াত 6 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah An Nas ayat 6 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা নাস আয়াত 6 আরবি পাঠে(An Nas).
  
   

﴿مِنَ الْجِنَّةِ وَالنَّاسِ﴾
[ الناس: 6]

জ্বিনের মধ্য থেকে অথবা মানুষের মধ্য থেকে। [সূরা নাস: 6]

Surah An-Nas in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah An Nas ayat 6


''জিনের অথবা মানুষের মধ্যে থেকে।’’


Tafsir Mokhtasar Bangla


৬. সে মানবরূপী হয়ে থাকে। আবার দানবরূপীও হয়।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


জ্বিন ও মানুষের মধ্য হতে। [১] [১] অর্থাৎ, এই কুমন্ত্রণাদাতা হল দুই শ্রেণীর। ( ১ ) শয়তান জ্বিনঃ শয়তান জ্বিনদেরকে মহান আল্লাহ মানুষকে ভ্রষ্ট করার ক্ষমতা দিয়ে রেখেছেন। এ ছাড়া প্রত্যেক মানুষের সাথে একজন শয়তান সাথী হিসাবে সদা বিদ্যমান থাকে; সেও তাকে ভ্রষ্ট করার প্রচেষ্টায় থাকে। হাদীসের মধ্যে বর্ণিত হয়েছে যে, যখন নবী ( সাঃ ) ঐ কথা লোকদেরকে বললেন, তখন সাহাবাগণ জিজ্ঞাসা করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনার সাথেও কি শয়তান বিদ্যমান থাকে। তিনি উত্তরে বললেন, " হ্যাঁ, আমার সাথেও থাকে। তবে আল্লাহ তাআলা তার বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য দান করেছেন; যার ফলে সে আমার অনুগত হয়ে গেছে। সে আমাকে মঙ্গল ব্যতীত কিছু আদেশ করে না। " ( সহীহ মুসলিম, কিয়ামতের বিবরণ অধ্যায় ) অনুরূপ অন্য হাদীসে এসেছে যে, একদা নবী ( সাঃ ) যখন ই'তিকাফ অবস্থায় ছিলেন তখন তাঁর পবিত্রা সহধর্মিণী স্বাফিয়্যাহ ( রাঃ ) তাঁর সাক্ষাতে ( মসজিদে ) এলেন। সময়টা রাত্রিবেলা ছিল। সাক্ষাতের পর তিনি তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য তাঁর সঙ্গে বের হলেন। রাস্তায় দুই আনসারী সাহাবী পার হচ্ছিলেন। তিনি তাঁদেরকে ডেকে বললেন, " এটি আমার স্ত্রী স্বাফিয়্যাহ বিন্তে হুয়াই। " তাঁরা আরজ করলেন যে, 'আপনার সম্পর্কে কি আমাদের কোন কুধারণা হতে পারে হে আল্লাহর রসূল?!' তিনি বললেন, " তা তো ঠিক কথা। কিন্তু শয়তান যে মানুষের রক্ত-ধমনীতে রক্তের মতই প্রবাহিত হয়। আমার আশঙ্কা হল যে, হয়তো বা সে তোমাদের মনে কোন সন্দেহ প্রক্ষিপ্ত করে দিতে পারে। " ( সহীহ বুখারী, আহকাম অধ্যায় ) ( ২ ) মানুষ শয়তানঃ মানুষের মধ্যে কিছু শয়তান আছে যারা উপদেষ্টা, হিতাকাঙ্ক্ষী ও দয়াবানরূপে এসে অপরকে ভ্রষ্ট হতে উদ্বুদ্ধ করে।কোন কোন উলামা বলেন, শয়তান যাদেরকে ভ্রষ্ট করে, তারা হল দুই শ্রেণীর। অর্থাৎ, শয়তান মানুষকে যেমন ভ্রষ্ট করে তেমনি জ্বিনকেও ভ্রষ্ট করে থাকে। তবে এখানে মানুষের অন্তরের উল্লেখ তার ভ্রষ্টতার তুলনামূলক আধিক্যের কারণে করা হয়েছে। নচেৎ জ্বিন সম্প্রদায়ও শয়তানের কুমন্ত্রণায় ভ্রষ্টতার শিকার হয়। কিছু সংখ্যক উলামা বলেন, কুরআনে জ্বিনদের জন্যও 'রিজাল' ( পুরুষ মানুষ ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। ( সূরা জিন ৭২:৬ নং আয়াত ) সুতরাং তারাও মানুষ শব্দে শামিল।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


জিনের মধ্য থেকে এবং মানুষের মধ্য থেকে []।’ [] এখানে দুটি অর্থ হতে পারে। প্রথমটি হল, শয়তান জিন ও মানুষ-উভয় প্রকার মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। এ অর্থে এখানে ناس বলে জিন ও মানুষ সকলকে বুঝানো হয়েছে। দ্বিতীয় মতটি হল: কুমন্ত্রণাদাতা শয়তান জিনদের মধ্য থেকেও হয়, মানুষের মধ্য থেকেও হয়। এমতটিই শক্তিশালী। [ ইবন কাসীর ] অতএব সারমর্ম এই দাঁড়াল যে, আল্লাহ্ তা‘আলা রাসূলকে তাঁর আশ্রয় প্রার্থনার শিক্ষা দিয়েছেন জিন-শয়তানের অনিষ্ট থেকে এবং মানুষ-শয়তানের অনিষ্ট থেকে। জিন-শয়তানের কুমন্ত্রণা হল অলক্ষ্যে থেকে মানুষের অন্তরে কোন কথা রাখা। শয়তান যেমন মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দেয়, তেমনিভাবে মানুষের নফসও মানুষকে কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে। এ কারণেই রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপন নফসের অনিষ্ট থেকেও আশ্রয় প্রার্থনা শিক্ষা দিয়েছেন। হাদীসে আছে, রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “ হে আল্লাহ্! আমি আপনার আশ্রয় চাই, আমার নফসের অনিষ্ট থেকে, শয়তানের অনিষ্ট থেকেও এবং তার শির্ক ( বা জাল ) থেকেও ।” [ আবু দাউদ: ৫০৬৭, তিরমিয়ী: ৩৩৯২, মুসনাদে আহমাদ: ১/৯ ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


১-৬ নং আয়াতের তাফসীর এ সূরায় মহা মহিমান্বিত আল্লাহর তিনটি গুণ বিবৃত হয়েছে। অর্থাৎ তিনি হলেন পালনকর্তা, শাহানশাহ এবং মা'বুদ বা পূজনীয়। সব কিছু তিনিই সৃষ্টি করেছেন, সবই তার মালিকানাধীন এবং সবাই তার আনুগত্য করছে। তিনি তার প্রিয় নবী ( সঃ )-কে নির্দেশ দিচ্ছেনঃ হে নবী ( সঃ )! তুমি বলে দাও, আমি আশ্রয় প্রার্থনা করছি মানুষের প্রতিপালকের, মানুষের অধিপতির এবং মানুষের মা'বুদের, পশ্চাদপসরণকারীর অনিষ্ট হতে যে মানুষের অন্তরসমূহে কুমন্ত্রণা ও প্ররোচনা দিয়ে থাকে। চাই সে জ্বিন হোক অথবা মানুষ হোক। অর্থাৎ যারা অন্যায় ও খারাপ কাজকে সৌন্দর্যমণ্ডিত করে চোখের সামনে হাজির করে পথভ্রষ্ট এবং বিভ্রান্ত করার কাজে যারা অতুলনীয়। আল্লাহর অনুগ্রহপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই শুধু তাদের অনিষ্ট হতে রক্ষা পেতে পারে।সহীহ হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমাদের প্রত্যেকের সাথে একজন করে শয়তান রয়েছে ।” সাহাবিগণ জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আপনার সাথেও কি শয়তান রয়েছে?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “হ্যা আমার সঙ্গেও শয়তান রয়েছে? কিন্তু আল্লাহ তাআলা ঐ শয়তানের মুকাবিলায় আমাকে সাহায্য করেছেন, কাজেই আমি নিরাপদ থাকি । সে আমাকে পুণ্য ও কল্যাণের শিক্ষা দেয়।” সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে হযরত আনাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর ই'তেকাফে থাকা অবস্থায় উম্মুল মু'মিনীন হযরত সফিয়া ( রাঃ ) তাঁর সাথে রাতের বেলায় দেখা করতে গিয়েছিলেন। তিনি ফিরে যাবার সময় রাসূলুল্লাহ( সঃ )ও তাঁকে এগিয়ে দেয়ার জন্যে তাঁর সঙ্গে সঙ্গে চলতে থাকেন। পথে দু’জন আনসারীর সাথে দেখা হলো। তারা রাসূলুল্লাহ( সঃ )-এর সাথে তাঁর স্ত্রীকে দেখে দ্রুতগতিতে হেঁটে যাচ্ছিলেন। রাসূলুল্লাহ( সঃ ) তাঁদেরকে থামালেন এবং বললেনঃ “ জেনে রেখো যে, আমার সাথে যে মহিলাটি রয়েছে এটা আমার স্ত্রী সফিয়া বিনতে হুইয়াই ( রাঃ )” তখন আনসারী দু’জন বললেনঃ আল্লাহ্ পবিত্র । হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )। এ কথা আমাদেরকে বলার প্রয়োজনই বা কি ছিল?” রাসূলুল্লাহ( সঃ ) উত্তরে বললেনঃ “ মানুষের রক্ত । প্রবাহের স্থানে শয়তান ঘোরাফেরা করে থাকে। সুতরাং আমি আশংকা করছিলাম যে, শয়তান তোমাদের মনে সন্দেহ সৃষ্টি করে দেয় না কি।”হযরত আনাস ইবনে মালিক ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ( সঃ ) বলেছেন “ শয়তান তার হাত মানুষের অন্তকরণের উপর স্থাপন করে রেখেছে । মানুষ যখন আল্লাহর ইবাদত করে তখন সে নিজের হাত মানুষের অন্তকরণ থেকে সরিয়ে নেয়। আর যখন মানুষ আল্লাহকে ভুলে যায় তখন শয়তান মানুষের অন্তকরণের উপর পূর্ণ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। এটাই শয়তানের কুমন্ত্রণা ও প্ররোচনা এবং এটাই ওয়াসওয়াসাতুল খান্নাস।” ( এ হাদীসটি হাফিয আবূইয়ালা মুসিলী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। কিন্তু হাদীসটি গারীব বা দুর্বল)মুসনাদে আহমাদে এমন একজন সাহাবী হতে বর্ণিত আছে যিনি গাধার পিঠে রাসূলুল্লাহ( সঃ )-এর পিছনে উপবিষ্ট ছিলেন। গাধা একটু হোঁচট খেলে ঐ সাহাবী বলে ওঠেনঃ “ শয়তান ধ্বংস হোক ।” তাঁর এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ( সঃ ) বলেনঃ “ এভাবে বলো না, এতে শয়তান আরো বড় হয়ে যায়, আরো এগিয়ে আসে এবং বলেঃ আমি নিজের শক্তি দ্বারা তাকে কাবু করেছি । আর যদি বিসমিল্লাহ বলো তবে সে ছোট হতে হতে মাছির মতে হয়ে যায়। এতে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহর স্মরণে শয়তান পরাজিত ও নিস্তেজ হয়ে যায়। আর আল্লাহকে বিস্মরণ হলে সে বড় হয়ে যায় ও জয়যুক্ত হয়।হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমাদের মধ্যে কেউ মসজিদে প্রবেশ করলে শয়তান তার কাছে যায় এবং আদর করে তার গায়ে হাত বুলাতে থাকে, যেমন মানুষ গৃহপালিত পশুকে আদর করে । ঐ আদরে লোকটি চুপ করে থাকলে শয়তান তার নাকে দড়ি বা মুখে লাগাম পরিয়ে দেয়।” হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) এ হাদীসটি বর্ণনা করে বলেনঃ “ তোমরা স্বয়ং নাকে দড়ি লাগানো এবং মুখে লাগাম পরিহিত লোককে দেখতে পাও । নাকে দড়ি লাগানো হলো ঐ ব্যক্তি যে এক দিকে ঝুঁকে দাঁড়িয়ে থাকে এবং আল্লাহকে স্মরণ করে না। আর মুখে লাগাম পরিহিত হলো ঐ ব্যক্তি যে মুখ খুলে রাখে এবং আল্লাহর যিক্র করে না।” হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) এ আয়াতের তাফসীরে বলেন যে, শয়তান আদম সন্তানের মনে তার থাবা বসিয়ে রাখে। মানুষ যেখানেই ভুল করে এবং উদাসীনতার পরিচয় দেয় সেখানেই সে কুমন্ত্রণা দিতে শুরু করে। আর যেখানে মানুষ আল্লাহকে স্মরণ করে সেখানে সে পশ্চাদপসরণ করে।অন্য বর্ণনায় আছে যে, সুখ-শান্তি এবং দুঃখ কষ্টের সময় শয়তান মানুষের মনে ছিদ্র করতে চায়। অর্থাৎ তাকে পথভ্রষ্ট ও বিভ্রান্ত করতে চেষ্টা করে। এ সময়ে যদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি আল্লাহকে স্মরণ করে তবে শয়তান পালিয়ে যায়। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, শয়তানকে মানুষ যেখানে প্রশ্রয় দেয় সেখানে সে মানুষকে অন্যায় অপকর্ম শিক্ষা দেয়, তারপর কেটে পড়ে। এরপর আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ মানব মণ্ডলীর অন্তর সমূহে কুমন্ত্রণা দেয়।( আরবি ) শব্দের অর্থ মানুষ। তবে এর অর্থ জ্বিনও হতে পারে। কুরআন কারীমের অন্যত্র রয়েছেঃ ( আরবি ) অর্থাৎ জ্বিনের মধ্য হতে কতকগুলো তোক। কাজেই জ্বিনসমূহকে শব্দের অন্তর্ভুক্ত করা অসঙ্গত নয়। মোটকথা, শয়তান। জ্বিন এবং মানুষের মনে কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে।( আরবি ) ( জ্বিনের মধ্য হতে অথবা মানুষের মধ্য হতে )। অর্থাৎ এরা কুমন্ত্রণা দিয়ে থাকে, চাই সে জ্বিন হোক অথবা মানুষ হোক। এর তাফসীর এরূপও করা হয়েছে। মানব ও দানব শয়তানরা মানুষের অন্তরে কুমন্ত্রণা দেয়। যেমন আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা অন্য এক জায়গায় বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ এভাবেই আমি মানবরূপী অথবা দানবরূপী শয়তানকে প্রত্যেক নবীর শত্রু বানিয়েছি । একজন অন্যজনের কানে ধোকা-প্রতারণামূলক কথা সাজিয়ে গুছিয়ে ব্যক্ত করে।” ( ৬:১১২ )।মুসনাদে আহমদে হযরত আবূ যার ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি একদা রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এর নিকট হাজির হন। ঐ সময় রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) মসজিদে অবস্থান করছিলেন। হযরত আবু যার ( রাঃ ) তার পাশে বসে পড়লেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আবু যার ( রাঃ )! তুমি নামায পড়েছো কি?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “জ্বী, না ।” তখন তিনি বললেনঃ “ তা হলে উঠে নামায পড়ে নাও । হযরত আবু যার ( রাঃ ) উঠে নামায পড়লেন। তারপর বসে পড়লেন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাকে বললেনঃ “ হে আবু যার ( রাঃ ) মানবরূপী শয়তান হতে এবং দানবরূপী শয়তান হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা কর । হযরত আবু যার ( রাঃ ) বললেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! মানুষের মধ্যেও কি শয়তান আছে? উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বললেনঃ “হ্যা”, হযরত আবু যার ( রাঃ ) জিজ্ঞেস । করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) নামায কি?" তিনি জবাবে বললেনঃ “নামায খুব ভাল কাজ । যার ইচ্ছা কম পড়তে পারে এবং যার ইচ্ছা বেশী পড়তে পারে।” হযরত আবু যার ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) রোযা কি?” তিনি জবাব দিলেনঃ “ যথেষ্ট হওয়ার মত একটি ফরজ কাজ । আল্লাহর কাছে এর জন্যে বহু পুরস্কার রয়েছে। হযরত আবু যার ( রাঃ ) প্রশ্ন করলেনঃ “ সাদকা কি?" তিনি উত্তরে বললেনঃ “সাদকা এমনই জিনিষ যার বিনিময় বহুগুণ বৃদ্ধি করে প্রদান করা হবে । হযরত আবু যার ( রাঃ ) আর করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) কোন সাদকা সবচেয়ে উত্তম?” রাসূলুল্লাহ( সঃ ) উত্তর দিলেনঃ “ সম্পদ কম থাকা সত্ত্বেও সাদকা করা, অথবা চুপে চুপে কোন ফকীর মিসকীন ও দুঃখী জনের সাথে উত্তম ব্যবহার করা । হযরত আবু যার ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! সর্বপ্রথম নবী কে ছিলেন?” তিনি জবাবে বললেনঃ “হযরত আদম ( আঃ ) ছিলেন প্রথম নবী । হযরত আবু যার ( রাঃ ) জিজ্ঞেস করলেনঃ হযরত আদম ( আঃ ) কি নবী ছিলেন?” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) জবাব দিলেনঃ “হ্যা, তিনি নবী ছিলেন, এবং এমন ব্যক্তি ছিলেন যার সঙ্গে আল্লাহ তা'আলা কথাবার্তা বলেছেন । হযরত আবু যার ( রাঃ ) প্রশ্ন করলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) রাসূল কত জন ছিলেন?” তিনি উত্তরে বললেনঃ “ তিনশত দশের কিছু বেশী, বলা যায় একটি বড় জামাআত ।” আবার এও বললেনঃ “ তিনশত পনেরো । হযরত আবু যার ( রাঃ ) বললেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আপনার প্রতি নাযিলকৃত আয়াতসমূহের মধ্যে সবচেয়ে বেশী বৈশিষ্ট্যপূর্ণ আয়াত কোনটি?” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) জবাব দিলেনঃ “আয়াতুল কুরসী অর্থাৎ,( আরবি ) এই আয়াতটি ।( এ হাদীসটি ইমাম নাসায়ীও (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। তাছাড়া ইমাম আবু হাতিম ইবনে হিব্বানও ( রঃ ) অন্য সনদে এ হাদীসটি দীর্ঘভাবে বর্ণনা করেছেন। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন)মুসনাদে আহমদে হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোক নবী ( সঃ )-এর নিকট এসে বললোঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমার মনে এমন সব চিন্তা আসে যেগুলো প্রকাশ করার চেয়ে আকাশ থেকে পড়ে যাওয়াই আমার নিকট বেশী পছন্দনীয় ( সুতরাং এ অবস্থায় আমি কি করবো? ) নবী ( সঃ ) উত্তরে বললেনঃ ( তুমি বলবে ): ( আরবি ) অর্থাৎ “আল্লাহ মহান, আল্লাহ মহান আল্লাহ তা'আলার জন্যেই সমস্ত প্রশংসা যিনি শয়তানের প্রতারণাকে ওয়াসওয়াসা অর্থাৎ শুধু কুমন্ত্রণার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রেখেছেন, বাস্তবে কার্যে পরিণত করেননি ।

সূরা নাস আয়াত 6 সূরা

من الجنة والناس

سورة: الناس - آية: ( 6 )  - جزء: ( 30 )  -  صفحة: ( 604 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. এরা বলেঃ সে আমাদের কাছে তার পালনকর্তার কাছ থেকে কোন নিদর্শন আনয়ন করে না কেন?
  2. এই দুই বাদী বিবাদী, তারা তাদের পালনকর্তা সম্পর্কে বিতর্ক করে। অতএব যারা কাফের, তাদের জন্যে
  3. আকাশ বিদীর্ণ হয়ে; তাতে বহু দরজা সৃষ্টি হবে।
  4. কেউ জানে না তার জন্যে কৃতকর্মের কি কি নয়ন-প্রীতিকর প্রতিদান লুক্কায়িত আছে।
  5. সুলায়মান বললেন, হে পরিষদবর্গ, তারা আত্নসমর্পণ করে আমার কাছে আসার পূর্বে কে বিলকীসের সিংহাসন আমাকে
  6. এভাবেই আমি সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি।
  7. এবং যারা বজায় রাখে ঐ সম্পর্ক, যা বজায় রাখতে আল্লাহ আদেশ দিয়েছেন এবং স্বীয় পালনকর্তাকে
  8. আপনি নিকটতম আত্মীয়দেরকে সতর্ক করে দিন।
  9. স্মরণ কর লূতের কথা, তিনি তাঁর কওমকে বলেছিলেন, তোমরা কেন অশ্লীল কাজ করছ? অথচ এর
  10. আমি যখন কোন কিছু করার ইচ্ছা করি; তখন তাকে কেবল এতটুকুই বলি যে, হয়ে যাও,।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নাস ডাউনলোড করুন:

সূরা An Nas mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি An Nas শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত নাস  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত নাস  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত নাস  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত নাস  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত নাস  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত নাস  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত নাস  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত নাস  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত নাস  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত নাস  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত নাস  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত নাস  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত নাস  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত নাস  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত নাস  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত নাস  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত নাস  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত নাস  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত নাস  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত নাস  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত নাস  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত নাস  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত নাস  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত নাস  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত নাস  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Monday, November 4, 2024

Please remember us in your sincere prayers