কোরান সূরা নাহল আয়াত 60 তাফসীর
﴿لِلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ بِالْآخِرَةِ مَثَلُ السَّوْءِ ۖ وَلِلَّهِ الْمَثَلُ الْأَعْلَىٰ ۚ وَهُوَ الْعَزِيزُ الْحَكِيمُ﴾
[ النحل: 60]
যারা পরকাল বিশ্বাস করে না, তাদের উদাহরণ নিকৃষ্ট এবং আল্লাহর উদাহরণই মহান, তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়। [সূরা নাহল: 60]
Surah An-Nahl in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Nahl ayat 60
যারা পরকালে বিশ্বাস করে না তাদের গুণবত্তা নিকৃষ্ট, আর আল্লাহ্র হচ্ছে সর্বোন্নত গুণাবলী। আর তিনি মহাশক্তিশালী, পরমজ্ঞানী।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৬০. যে কাফিররা পরকালে বিশ্বাস করে না তাদের মাঝে রয়েছে কিছু নিকৃষ্ট বৈশিষ্ট্য তথা ছেলে সন্তানের প্রয়োজনীয়তা, মূর্খতা ও কুফরি। আর আল্লাহর জন্য রয়েছে প্রশংসনীয় কিছু উঁচু মানের বৈশিষ্ট্যাবলী তথা মহিমা, পরিপূর্ণতা, সচ্ছলতা ও জ্ঞান। তিনি নিজ ক্ষমতায় পরাক্রমশালী। যাঁকে কেউ পরাজিত করতে পারে না। যিনি তাঁর সৃষ্টি, পরিকল্পনা ও আইন রচনায় অতি প্রজ্ঞাময়।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তাদের জন্য নিকৃষ্ট গুণ।[১] আর আল্লাহর জন্য রয়েছে উৎকৃষ্টতম গুণ এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।[২] [১] অর্থাৎ, যে কাফেরদের অসৎ কর্ম বর্ণিত হল, তাদের জন্যই নিকৃষ্ট উদাহরণ বা অসদগুণ, অর্থাৎ অজ্ঞতা ও কুফরীর খারাপ গুণ। অথবা এর অর্থ এই যে, আল্লাহর জন্য স্ত্রী ও সন্তান স্থির করা নিকৃষ্ট উদাহরণ, যা পরকালে অবিশ্বাসীরা আল্লাহর জন্য ব্যক্ত করে। [২] অর্থাৎ, তাঁর প্রত্যেক গুণ সৃষ্টির গুণের তুলনায় মহত্তর। যেমন তাঁর জ্ঞান অপরিসীম, তাঁর শক্তি অতুলনীয়, তাঁর দানশীলতা দৃষ্টান্তবিহীন, অনুরূপ সকল গুণাবলী। অথবা এর অর্থ হল, তিনি শক্তিশালী, সৃষ্টিকর্তা, রুযীদাতা, সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা ইত্যাদি ( তিনি সর্বগুণনিধি। ) ( ফাতহুল কাদীর ) অথবা নিকৃষ্ট উপমা বলতে ত্রুটি-বিচ্যুতি ও অসম্পূর্ণতা, আর উৎকৃষ্টতম উপমা বলতে সর্বতোমুখী পরিপূর্ণতা সর্বদিক দিয়ে আল্লাহর জন্যই। ( ইবনে কাসীর )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
যারা আখেরাতে ঈমান রাখে না যাবতীয় খারাপ উদাহরণ ( গুণাগুণ ) তাদেরই, আর আল্লাহ্র জন্যই যাবতীয় মহোত্তম গুণাগুণ [ ১ ] আর তিনিই পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময় [ ২ ]। [ ১ ] এ আয়াত থেকে প্রমাণিত হয় যে, আল্লাহর যাবতীয় নাম ও গুণই সুন্দর ও মহোত্তম। তাঁর জন্য কোন প্রকার খারাপ নাম ও গুণ সাব্যস্ত করা জায়েয নেই। তবে এতে অবশ্যই ঈমান রাখতে হবে যে, কুরআন ও সুন্নায় আল্লাহর জন্য যে সমস্ত নাম ও গুণাগুণ সাব্যস্ত করা হয়েছে তা অবশ্যই স্বীকৃতি দিতে হবে এবং তার প্রত্যেকটিই সুন্দর। [ দেখুন, উসাইমীনঃ আল-কাওয়া’য়িদুল মুসলা ] [ ২ ] আয়াতের শেষে আল্লাহর দুটি গুণবাচক নাম ব্যবহার করে এদিকে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণকে বিপদ ও অপমান মনে করা এবং মুখ লুকিয়ে রাখা আল্লাহ তা'আলার রহস্যের মোকাবেলা করার নামান্তর। কেননা, নর ও নারীর সৃষ্টি আল্লাহর একটি সাক্ষাত প্রজ্ঞাপূর্ণ বিধি। তিনি এমন প্রবল পরাক্রমশালী যে, তাঁকে কেউ পরাজিত করতে পারে না। সুতরাং তারা যতই তাঁর দিকে মিথ্যা কথা ও কাজ সম্পর্কযুক্ত করুক না কেন, এটা তাঁর কোন ক্ষতি করবে না। তিনি তাঁর প্রতিটি কাজ ও কথায় হিকমতপূর্ণ। [ ফাতহুল কাদীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৫৬-৬০ নং আয়াতের তাফসীর
আল্লাহ তাআলা মুশরিকদের অসদাচরণ ও নির্বুদ্ধিতার খবর দিচ্ছেন যে, সবকিছু দানকারী হচ্ছেন আল্লাহ, অথচ তারা অজ্ঞানতা বশতঃ তাদের মিথ্যা মাবুদদের অংশ তাতে সাব্যস্ত করছে। তারা বলেঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ এটা আল্লাহর জন্যে তাদের ধারণা অনুযায়ী এবং এটা আমাদের দেবতাদের জন্যে; যা তাদের দেবতাদের অংশ তা আল্লাহর কাছে পৌছায় না এবং যা আল্লাহর অংশ তা তাদের দেবতাদের কাছে পৌঁছায়, তারা যা মীমাংসা করে তা কতই না নিকৃষ্ট!” ( ৬:১৩৭ ) এই লোকদেরকে এর জবাবদিহি অবশ্যই করতে হবে । তাদের এই মিথ্যারোপের প্রতিফল অবশ্যই তারা পাবে এবং তা হবে জাহান্নামের আগুন। এরপর তাদের দ্বিতীয় অন্যায় ও বোকামির বর্ণনা দেয়া হচ্ছে যে, আল্লাহ তাআলার নৈকট্যলাভকারী ফেরেশতাগণ হচ্ছেন তাদের মতে আল্লাহর কন্যা ( নাঊযুবিল্লাহি মিন যালিক )। এই ভুল তো তারা করে, তদুপরি তাঁদের ইবাদতও তারা করে। এটা ভুলের উপর ভুল। এখানে তারা তিনটি অপরাধ করলো। ১.
তারা আল্লাহর সন্তান সাব্যস্ত করলো, অথচ তিনি তা থেকে সম্পূর্ণরূপে পবিত্র। ২.
সন্তানের মধ্যে আবার ঐ সন্তান আল্লাহর জন্যে নির্ধারণ করলো যা তারা নিজেদের জন্যেও পছন্দ করে না, অর্থাৎ কন্যা সন্তান। কি। উল্টো কথা? নিজেদের জন্যে নির্ধারণ করছে পুত্র সন্তান, আর আল্লাহ তাআলার জন্যে নির্ধারণ করছে কন্যা সন্তান! ৩, তাদের আবার তারা ইবাদত করছে। এটা তাদের সরাসরি অপবাদ ও মিথ্যারোপ ছাড়া কিছুই নয়। আল্লাহ তাআলার সন্তান হওয়া কি করে সম্ভব হতে পারে? তাও আবার এমন সন্তান যা তাদের নিজেদের কাছে খুবই নিকৃষ্ট ও হীন। কেমন বোকামি যে, আল্লাহ তাদেরকে দিবেন পুত্র সন্তান আর নিজের জন্যে রাখবেন মেয়ে সন্তান! আল্লাহ এর থেকে বরং সন্তান হতেই পবিত্র।যখন তাদেরকে খবর দেয়া হয় যে, তাদের মেয়ে সন্তান জন্ম গ্রহণ করেছে, তখন লজ্জায় তাদের মুখ কালো হয়ে যায় এবং মুখ দিয়ে কথা সরে না। তারা লোকদের কাছে আত্মগোপন করে থাকে। তারা চিন্তা করেঃ এখন কি করা যায়? যদি এ কন্যা সন্তানকে জীবিত রাখা যায়, তবে এটাতো খুবই লজ্জার কথা! সে তো উত্তরাধিকারিণীও হবে না এবং তাকে কিছু একটা মনে করাও হবে না। সুতরাং পুত্র সন্তানকেই এর উপর প্রাধান্য দেয়া হোক। মোট কথা তাকে জীবিত রাখলেও তার প্রতি অত্যন্ত অবহেলা প্রদর্শন করাহয়। অন্যথায় তাকে জীবন্তই কবর দিয়ে দেয়া হয়। এই অবস্থা তো তার নিজের। আবার আল্লাহর জন্যে এই জিনিসই সাব্যস্ত করে। সুতরাং তাদের এই মীমাংসা কতই নী জঘন্য! এই বন্টন কতই না নির্লজ্জতাপূর্ণ বন্টন! আল্লাহর জন্যে যা সাব্যস্ত করছে তা নিজের জন্যে কঠিন অপমানের কারণ মনে করছে! প্রকৃত ব্যাপার এই যে, তারা হচ্ছে অতি নিকৃষ্ট প্রকতির অধিকারী, আর আল্লাহ তো হচ্ছেন অতি মহৎ প্রকৃতির অধিকারী এবং তিনি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়, মহিমাময় ও মহানুভব।
সূরা নাহল আয়াত 60 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- হে জিন ও মানব! আমি শীঘ্রই তোমাদের জন্যে কর্মমুক্ত হয়ে যাব।
- তোমরা তোমাদের পালনকর্তার অভিমূখী হও এবং তাঁর আজ্ঞাবহ হও তোমাদের কাছে আযাব আসার পূর্বে। এরপর
- আমি তাদের নিকট দুজন রসূল প্রেরণ করেছিলাম, অতঃপর ওরা তাদেরকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করল। তখন আমি
- আবু লাহাবের হস্তদ্বয় ধ্বংস হোক এবং ধ্বংস হোক সে নিজে,
- হে ঈমানদারগণ, আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সাথে থাক।
- আর আমি কোন জনপদে কোন নবী পাঠাইনি, তবে (এমতাবস্থায়) যে পাকড়াও করেছি সে জনপদের অধিবাসীদিগকে
- এবং যারা তাদের পালনকর্তার শাস্তির সম্পর্কে ভীত-কম্পিত।
- সে বলবেঃ হে আমার পালনকর্তা আমাকে কেন অন্ধ অবস্থায় উত্থিত করলেন? আমি তো চক্ষুমান ছিলাম।
- নিঃসন্দেহে এটাই হলো সত্য ভাষণ। আর এক আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন ইলাহ নেই। আর আল্লাহ;
- ডান ও বামদিক থেকে দলে দলে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নাহল ডাউনলোড করুন:
সূরা Nahl mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Nahl শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers