কোরান সূরা মু'মিন আয়াত 60 তাফসীর
﴿وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُونِي أَسْتَجِبْ لَكُمْ ۚ إِنَّ الَّذِينَ يَسْتَكْبِرُونَ عَنْ عِبَادَتِي سَيَدْخُلُونَ جَهَنَّمَ دَاخِرِينَ﴾
[ غافر: 60]
তোমাদের পালনকর্তা বলেন, তোমরা আমাকে ডাক, আমি সাড়া দেব। যারা আমার এবাদতে অহংকার করে তারা সত্বরই জাহান্নামে দাখিল হবে লাঞ্ছিত হয়ে। [সূরা মু'মিন: 60]
Surah Ghafir in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Ghafir ayat 60
আর তোমাদের প্রভু বলেন -- ''তোমরা আমাকে আহ্বান করো, আমি তোমাদের প্রতি সাড়া দেব। নিঃসন্দেহ যারা আমাকে উপাসনা করার বেলা অহংকার বোধ করে তারা অচিরেই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত অবস্থায়।’’
Tafsir Mokhtasar Bangla
৬০. আর তোমাদের প্রতিপালক বলেছেন: হে লোক সকল! তোমরা আমাকে ইবাদাতে ও আহŸানে একক বলে মান্য করো। আমি তোমাদের দু‘আ কবুল করবো, পাপরাশি ক্ষমা করবো এবং তোমাদেরকে দয়া করবো। যারা ইবাদাতে আমাকে একক সাব্যস্ত করতে বড়ত্ব প্রদর্শন করে অচিরেই তারা অপমান ও অপদস্ত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
তোমাদের প্রতিপালক বলেন, ‘তোমরা আমাকে ডাক, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।[১] যারা অহংকারে আমার উপাসনায় বিমুখ, ওরা লাঞ্ছিত হয়ে জাহান্নামে প্রবেশ করবে।’[২] [১] ( অর্থাৎ, তোমরা আমার কাছে দু'আ কর, আমি তোমাদের দু'আ কবুল করব। ) পূর্বোক্ত আয়াতে যেহেতু মহান আল্লাহ কিয়ামত সংঘটিত হওয়ার কথা আলোচনা করেছেন, তাই এখন এই আয়াতে এমন পথের দিশা দেওয়া হচ্ছে, যা অবলম্বন করে মানুষ পরকালের সৌভাগ্য লাভ করতে পারে। আয়াতে উল্লিখিত 'দু'আ'র অর্থ অধিকাংশ মুফাসসেরগণ ইবাদত নিয়েছেন। অর্থাৎ, কেবল এক আল্লাহরই ইবাদত কর। যেমন, হাদীসেও 'দু'আ'কেই ইবাদত বলা হয়েছে। ( (الدُّعَاءُ هُوَ الْعِبَادَةُ )) ( مسند أحمد: ৪/২৭১، السنن الأربعة، مشكاة ২২৩০ ) এ ছাড়াও পরে উল্লিখিত يَسْتَكْبِرُوْنَ عَنْ عِبَادَتِي থেকেও পরিষ্কার হয়ে যায় যে, এর অর্থ ইবাদত। কেউ কেউ বলেছেন, 'দু'আ' বলতে, দু'আ করাই বুঝানো হয়েছে। অর্থাৎ, মঙ্গল অর্জন ও অমঙ্গল দূরীভূত করার জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা। কারণ, দু'আর ( আভিধানিক অর্থঃ ডাকা এবং ) শরীয়তী ও প্রকৃত অর্থ হল, চাওয়া। দ্বিতীয় অর্থে তার ব্যবহার রূপক। এ ছাড়াও দু'আর প্রকৃত অর্থের দিক দিয়ে এবং উল্লিখিত হাদীসের ভিত্তিতে তার অর্থ, ইবাদতই। কেননা, কারণ-ঘটিত নয় এমন অস্বাভাবিক কিছু কারো কাছে চাওয়া ও প্রার্থনা করাই হল তার ইবাদত করা। ( ফাতহুল ক্বাদীর ) উভয় অবস্থাতেই উদ্দেশ্য একটাই। আর তা হল, আল্লাহ ব্যতীত অন্য কাউকে প্রয়োজন পূরণ এবং সাহায্যের জন্য ডাকা জায়েয নয়। কেননা, কারণ-ঘটিত নয় এমন অস্বাভাবিক প্রয়োজন পূরণের জন্য কাউকে ডাকলে তা ইবাদত হয়। আর ইবাদত আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য জায়েয নয়। [২] এটা হল আল্লাহর ইবাদতকে যারা অস্বীকার করে, তা থেকে যারা মুখ ফিরিয়ে নেয় অথবা তাতে যারা অন্যদেরকেও শরীক করে তাদের পরিণাম।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর তোমাদের রব বলেছেন, 'তোমরা আমাকে ডাক [ ১ ], আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। নিশ্চয় যারা অহংকারবশে আমার 'ইবাদাত থেকে বিমুখ থাকে, তারা অচিরেই জাহান্নামে প্রবেশ করবে লাঞ্ছিত হয়ে [ ২ ]।'
[ ১ ] ‘দোআ’র শাব্দিক অর্থ ডাকা, অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিশেষ কোন প্রয়োজনে ডাকার অর্থে ব্যবহৃত হয়। কখনও যিকরকেও দোআ বলা হয়। যেমন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আরাফাতে আমার দো'আ ও পূর্ববর্তী সকল নবী-রাসূলগণের দোআ এই কলেমা:
لٰا إِلَهَ إِلَّااللّٰهُ وَحْلَهُ لٰا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمدُ وَهُوَ عَلٰى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ
এতে যিকরকে দোআ বলা হয়েছে। কারণ, দো'আ দু' প্রকারঃ ১.
প্রার্থনা বা কিছু পেতে দোআ করা ও ইবাদাতের মাধ্যমে দো'আ করা। চাওয়া বা প্রার্থনার দো'আ হল - আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ চাওয়া। এতে চাওয়া আছে, যাচঞা আছে। পক্ষান্তরে ইবাদাতের দো’আর মধ্যে চাওয়া নেই। শুধু নৈকট্য লাভের জন্য যা যা করা হয় তাই এ প্রকারের ইবাদত। নৈকট্য লাভের সকল প্রকাশ্য-অপ্ৰকাশ্য কাজ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; কেননা যে আল্লাহর ইবাদাত করে, সে স্বীয় কথা ও অবস্থার ভাষায় তার রবের কাছে উক্ত ইবাদাত কবুল করার এবং এর উপর সাওয়াব দেয়ার আবেদন করে থাকে। পবিত্র কুরআনে দো’আর যত নির্দেশ এসেছে, আর আল্লাহ ছাড়া অন্যের কাছে দো'আ করা থেকে যত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এবং দো'আকারীদের যত প্রশংসা করা হয়েছে, সে সবই প্রার্থনার দো'আ ও ইবাদাতের দো’আকে শামিল করে থাকে। যেমন, আল্লাহ বলেন,
فَادْعُوا اللَّهَ مُخْلِصِينَ لَهُ الدِّينَ
“ সুতরাং আল্লাহকে ডাক তাঁর আনুগত্যে একনিষ্ঠ হয়ে” । [ সূরা গাফিরঃ ১৪ ] আরও বলেন,
وَأَنَّ الْمَسَاجِدَ لِلَّهِ فَلَا تَدْعُوا مَعَ اللَّهِ أَحَدًا
“ আর মসজিদসমূহ আল্লাহরই জন্য । সুতরাং আল্লাহর সাথে তোমরা অন্য কাউকে ডেকো না”। [ সূরা আল-জ্বিনঃ ১৮ ] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার এক বাণীতে বলেছেন, ‘দো’আই ইবাদত। তারপর তিনি এ আয়াত পাঠ করলেন। [ আবু দাউদ: ১৪৭৯, তিরমিযি: ২৯৬৯, ইবন মাজাহ: ৩৮২৮ ] অর্থাৎ প্রত্যেক দো'আই ইবাদত এবং প্রত্যেক ইবাদতই দো'আ। কারণ এই যে, ইবাদত বলা হয় কারও সামনে চুড়ান্ত দীনতা অবলম্বন করাকে। বলাবাহুল্য, নিজেকে কারও মুখাপেক্ষী মনে করে তার সামনে সওয়ালের হস্ত প্রসারিত করা বড় দীনতা, যা ইবাদতের অর্থ। এমনিভাবে প্রত্যেক ইবাদতের সারমর্মও আল্লাহর কাছে মাগফেরাত ও জান্নাত তলব করা এবং দুনিয়া ও আখেরাতের নিরাপত্তা প্রার্থনা করা। আলোচ্য আয়াতেও “ দো’আ” ও “ইবাদত” শব্দ দু'টিকে সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে । কেননা, প্রথম বাক্যাংশে যে জিনিসকে দোআ শব্দ দ্বারা প্ৰকাশ করা হয়েছে দ্বিতীয় বাক্যাংশে সে জিনিসকেই ইবাদাত শব্দ দ্বারা প্ৰকাশ করা হয়েছে। এ দ্বারা একথা পরিষ্কার হয়ে গেল যে, দো’আই ইবাদাত আর ইবাদতই দো'আ। ঠিক এ বিষয়টিকে আমরা পবিত্র কুরআনের অন্য আয়াতে লক্ষ্য করতে পারি। সেখানে আল্লাহ বলেনঃ
وَمَنْ أَضَلُّ مِمَّن يَدْعُو مِن دُونِ اللَّهِ مَن لَّا يَسْتَجِيبُ لَهُ إِلَىٰ يَوْمِ الْقِيَامَةِ وَهُمْ عَن دُعَائِهِمْ غَافِلُونَ *وَإِذَا حُشِرَ النَّاسُ كَانُوا لَهُمْ أَعْدَاءً وَكَانُوا بِعِبَادَتِهِمْ كَافِرِينَ
“ সে ব্যক্তি অপেক্ষা অধিক বিভ্রান্ত কে, যে আল্লাহর পরিবর্তে এমন কিছুকে আহবান করে যা ক্বিয়ামত দিবস পর্যন্তও তার আহবানে সাড়া দিবে না? আর অবস্থা তো এরকম যে, এসব কিছু তাদের আহবান সম্পর্কে অবহিতও নয় । যখন ( কিয়ামতের দিন ) মানুষদেরকে একত্রিত করা হবে, তখন সে সকল কিছু হবে তাদের শত্রু এবং সেগুলো তাদের ইবাদাত অস্বীকার করবে”। [ সূরা আল-আহকাফঃ ৫-৬ ]
[ ২ ] উম্মতে মুহাম্মদীয়ার বিশেষ সম্মানের কারণে এই আয়াতে তাদেরকে দো'আ করার আদেশ করা হয়েছে এবং তা কবুল করারও ওয়াদা করা হয়েছে। আর যারা দো'আ করে না, তাদের জন্যে শাস্তিবাণী উচ্চারণ করা হয়েছে। আলোচ্য আয়াতে দো'আ অর্থ যদি ইবাদতের দো'আ বোঝানো হয় তবে দো'আ বর্জনকারী অবশ্যই গুনাহগার এমনকি কাফেরও হবে। আর সে হিসেবেই ইবাদত বর্জনকারীকে জাহান্নামের শাস্তিবাণী শোনানো হয়েছে। আর যদি দো'আ' বলে “ চাওয়া’ বা “যাচঞা করা” উদ্দেশ্য হয় তখন দোআ না করলে জাহান্নামের শাস্তিবাণী ঐ সময়ই শুধু হবে যখন সে অহংকারবশত: তা বর্জন করে । কেননা, অহংকারবশত: দো'আ বর্জন করা কুফরের লক্ষণ, তাই সে জাহান্নামের যোগ্য হয়ে যায়। নতুবা সাধারণ দো'আ ফরয বা ওয়াজিব নয়। দোআ না করলে গোনাহ হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, আল্লাহর কাছে দো'আ অপেক্ষা অধিক সম্মানিত কোন বিষয় নেই। তিরমিযি: ৩৩৭০] অন্য এক হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে তার প্রয়োজন প্রার্থনা করে না, আল্লাহ তার প্রতি রুষ্ট হন। [ তিরমিযি:৩৩৭৩ ]
উপরোক্ত আয়াতে ওয়াদা রয়েছে যে বান্দা আল্লাহর কাছে যে দো'আ করে, তা কবুল হয়। কিন্তু মানুষ মাঝে মাঝে দো'আ কবুল না হওয়াও প্রত্যক্ষ করে। এর জওয়াব দুটি। এক.
দো'আ কবুল হওয়ার উপায় তিনটি। তন্মধ্যে কোন না কোন উপায়ে দো'আ কবুল হয়। ( এক ) যা চাওয়া হয়, তাই পাওয়া ( দুই ) প্রার্থিত বিষয়ের পরিবর্তে আখেরাতের কোন সওয়াব ও পুরস্কার দান করা এবং ( তিন ) প্রার্থিত বিষয় না পাওয়া। কিন্তু কোন সম্ভাব্য আপদ-বিপদ সরে যাওয়া। সুতরাং এর যে কোন একটি হলেই দোআ কবুল হয়েছে ধরে নিতে হবে। দুই.
নির্ভরযোগ্য হাদীসমূহে কোন বিষয়কে দো'আ কবুলের পথে বাধা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। এসব বিষয় থেকে বেঁচে থাকা জরুরী। এক.
হারাম খাবার ও হারাম পরিধেয় পরিধান; হাদীসে রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কোন কোন লোক খুব সফর করে এবং আকাশের দিকে হাত তুলে ইয়া রব, ইয়া রব, বলে দো'আ করে; কিন্তু তাদের পানাহার ও পোশাক-পরিচ্ছেদ হারাম পস্থায় অর্জিত। এমতাবস্থায় তাদের দো'আ কিরূপে কবুল হবে? [ মুসলিম: ১০১৫ ] দুই.
অসাবধান বেপরোয়া ও অন্যমনস্কভাবে দো'আর বাক্যাবলী উচ্চারণ করলে তাও কবুল হয় না বলেও হাদীসে বর্ণিত আছে। [ তিরমিযি: ৩৪৭৯ ] তিন.
অন্যায় কোন দো'আ যেন না হয়। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, মুসলিম আল্লাহর কাছে যে দো”আই করে, আল্লাহ তা দান করেন, যদি তা কোন গোনাহ অথবা সম্পর্কচ্ছেদের দোআ না হয়। [ মুসলিম: ২৭৩৫ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা'আলার এই অনুগ্রহ ও দয়ার উপর আমাদের জীবনকে উৎসর্গ করা উচিত যে, তিনি আমাদেরকে তাঁর নিকট প্রার্থনা করার জন্যে হিদায়াত করছেন এবং তা কবূল করার ওয়াদা করছেন! হযরত সুফিয়ান সাওরী ( রঃ ) বলতেন:“ হে ঐ সত্তা, যাঁর কাছে ঐ বান্দা খুবই প্রিয়পাত্র হয় যে তার কাছে খুব বেশী প্রার্থনা করে এবং ঐ বান্দা খুবই মন্দ ও অপ্রিয় হয় যে তার কাছে প্রার্থনা করে না । হে আমার প্রতিপালক! এই গুণ তো একমাত্র আপনার মধ্যেই রয়েছে। কবি বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ আল্লাহর মাহাত্ম্য এই যে, যদি তুমি তার কাছে চাওয়া পরিত্যাগ কর তবে তিনি অসন্তুষ্ট হন, পক্ষান্তরে আদম সন্তানের কাছে যখন চাওয়া হয় তখন সে অসন্তুষ্ট হয় ।”হযরত কা'বুল আহ্বার ( রাঃ ) বলেন, উম্মতে মুহাম্মাদ ( সঃ )-কে এমন তিনটি জিনিস দেয়া হয়েছে যা পূর্ববর্তী কোন উম্মতকে দেয়া হয়নি। আল্লাহ তা'আলা যখন কোন নবী ( আঃ )-কে পাঠাতেন তখন তাকে বলতেনঃ “ তুমি তোমার উম্মতের উপর সাক্ষী থাকলে ।” আর তোমাদেরকে ( উম্মতে মুহাম্মাদী সঃ-কে ) তিনি সমস্ত লোকের উপর সাক্ষী করেছেন। পূর্ববর্তী প্রত্যেক নবী ( আঃ )-কে বলা হতোঃ “ দ্বীনের ব্যাপারে তোমার উপর কোন বাধ্য-বাধকতা নেই । পক্ষান্তরে এই উম্মতকে বলা হয়েছেঃ “ তোমাদের দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন বাধ্যবাধকতা নেই ।” পূর্ববর্তী প্রত্যেক নবী ( আঃ )-কে বলা হতোঃ “ তুমি আমাকে ডাকো, আমি তোমার ডাকে সাড়া দিবো ।” আর এই উম্মতকে বলা হয়েছেঃ “ তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দিবো ।” ( এটা ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আনাস ইবনে মালিক ( রাঃ ) নবী ( সঃ ) হতে বর্ণনা করেছেন যে, আল্লাহ তা'আলা তাঁকে বলেনঃ “ চারটি স্বভাব রয়েছে, যেগুলোর মধ্যে একটি আমার জন্যে, একটি তোমার জন্যে, একটি আমার ও তোমার মাঝে এবং একটি তোমার ও অন্যান্য বান্দাদের মাঝে । যা আমার জন্যে তা এই যে আমারই ইবাদত করবে এবং আমার সাথে অন্য কাউকেও শরীক করবে না। তোমার হক আমার উপর এই যে, আমি তোমাকে তোমার প্রতিটি ভাল কাজের পূর্ণ প্রতিদান প্রদান করবো। যা তোমার ও আমার মাঝে তা এই যে, তুমি আমার কাছে প্রার্থনা করবে এবং আমি তোমার প্রার্থনা কবুল করবো। আর যা তোমার এবং আমার অন্যান্য বান্দাদের মাঝে তা এই যে, তুমি তাদের জন্যে ওটাই পছন্দ করবে যা তুমি নিজের জন্যে পছন্দ কর।” ( এ হাদীসটি হাফিয আবু ইয়ালা (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) হযরত নুমান ইবনে বাশীর ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ দু'আ হলো ইবাদত ।” অতঃপর তিনি ...
( আরবী )-এই আয়াতটি পাঠ করেন। ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। সুনানের মধ্যে এ হাদীসটি রয়েছে। ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এটাকে হাসান সহীহ বলেছেন। ইবনে হিব্বান ( রঃ ) এবং হাকিমও ( রঃ ) এটা বর্ণনা করেছেন)হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যে ব্যক্তি মহামহিমান্বিত আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করে না তিনি তার প্রতি রাগান্বিত হন ।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত মুহাম্মাদ ইবনে মুসাল্লামা আনসারীর ( রাঃ ) মৃত্যুর পর তাঁর তরবারীর কোষ হতে এক টুকরা কাগজ বের হয়। তাতে লিখিত ছিলঃ “ তোমরা তোমাদের প্রতিপালকের রহমত লাভের সুযোগ অন্বেষণ করতে থাকো । খুব সম্ভব যে, তোমরা কল্যাণের দু'আ করবে, আর ঐ সময় আল্লাহর রহমত উচ্ছ্বসিত হয়ে উঠবে এবং তোমরা এমন সৌভাগ্য লাভ করবে যার পরে আর কখনো তোমাদেরকে দুঃখ ও আফসোস করতে হবে না।” ( এটা হাফিয আবু মুহাম্মদ হাসান ইবনে আবদির রহমান রামহারামযী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)এ আয়াতে ইবাদত দ্বারা দু'আ ও তাওহীদকে বুঝানো হয়েছে।হযরত আমর ইবনে শুআয়েব ( রাঃ ) তাঁর পিতা হতে এবং তিনি তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেছেন যে, নবী ( সঃ ) বলেছেনঃ “ কিয়ামতের দিন অহংকারী লোকদেরকে পিঁপড়ার আকারে একত্রিত করা হবে । ক্ষুদ্র হতে ক্ষুদ্রতম জিনিসও তাদের উপর থাকবে। তাদেরকে কূলাস নামক জাহান্নামের জেলখানায় নিক্ষেপ করা হবে। প্রজ্বলিত অগ্নি তাদের মাথার উপর থাকবে। তাদেরকে জাহান্নামীদের রক্ত, পুঁজ এবং প্রস্রাব-পায়খানা খেতে দেয়া হবে।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)অহীব ইবনুল অরদ ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তাঁকে একজন বুযুর্গ ব্যক্তি বলেছেন, রোমে আমি কাফিরদের হাতে বন্দী হয়েছিলাম। একদা আমি শুনতে পেলাম যে, এক অদৃশ্য আহ্বানকারী পর্বতের চূড়া হতে উচ্চস্বরে আহ্বান করে বলছেঃ “ হে আমার প্রতিপালক! ঐ ব্যক্তির জন্যে বিস্মিত হতে হয় যে আপনাকে চেনা জানা সত্ত্বেও অন্যের সাথে তার আশা-আকাঙ্ক্ষার সম্পর্ক রাখতে চায় । হে আমার প্রতিপালক! ঐ ব্যক্তির জন্যে বিস্ময়বোধ হয় যে আপনার পরিচয় লাভ করা সত্ত্বেও নিজের প্রয়োজন পুরো করবার জন্যে অন্যের কাছে গমন করে!” এরপর কিছুক্ষণ থেমে থেকে আরো উচ্চস্বরে বললোঃ “ আরো বেশী বিস্মিত হতে হয় ঐ ব্যক্তির জন্যে যে মহান আল্লাহর পরিচয় জানা সত্ত্বেও অন্যের সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে এমন কাজ করে যে কাজে আল্লাহ অসন্তুষ্ট হন ।” একথা শুনে আমি উচ্চস্বরে ডাক দিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলামঃ তুমি কি দানব, না মানব? সে উত্তরে বললোঃ “ মানব!” তারপর বললোঃ “ঐ সব কাজ হতে তুমি তোমার ধ্যান সরিয়ে নাও যাতে তোমার কোন উপকার নেই এবং যে কাজে তোমার উপকার আছে সেই কাজে মগ্ন হয়ে পড় ।” ( এটা ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)
সূরা মু'মিন আয়াত 60 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- এগুলো প্রজ্ঞাময় কিতাবের আয়াত।
- আমি প্রত্যেক মানুষের কর্মকে তার গ্রীবলগ্ন করে রেখেছি। কেয়ামতের দিন বের করে দেখাব তাকে একটি
- শপথ রাত্রির যখন তা গভীর হয়,
- আমি তাকে ও তার সম্প্রদায়কে দেখলাম তারা আল্লাহর পরিবর্তে সূর্যকে সেজদা করছে। শয়তান তাদের দৃষ্টিতে
- আর যখন তোমরা নামাযের জন্যে আহবান কর, তখন তারা একে উপহাস ও খেলা বলে মনে
- যে ব্যক্তি রাত্রিকালে সেজদার মাধ্যমে অথবা দাঁড়িয়ে এবাদত করে, পরকালের আশংকা রাখে এবং তার পালনকর্তার
- সুতরাং যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং সৎকর্ম করেছে, তাদের জন্যে আছে পাপ মার্জনা এবং সম্মানজনক
- তোমাদের জন্যে পৃথিবীতে যেসব রং-বেরঙের বস্তু ছড়িয়ে দিয়েছেন, সেগুলোতে নিদর্শন রয়েছে তাদের জন্যে যারা চিন্তা-ভাবনা
- যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সুন্দর করেছেন এবং কাদামাটি থেকে মানব সৃষ্টির সূচনা করেছেন।
- অতঃপর সে তার সম্প্রদায়কে বোকা বানিয়ে দিল, ফলে তারা তার কথা মেনে নিল। নিশ্চয় তারা
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা মু'মিন ডাউনলোড করুন:
সূরা Ghafir mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Ghafir শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers