কোরান সূরা বাকারাহ্ আয়াত 61 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Baqarah ayat 61 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা বাকারাহ্ আয়াত 61 আরবি পাঠে(Baqarah).
  
   

﴿وَإِذْ قُلْتُمْ يَا مُوسَىٰ لَن نَّصْبِرَ عَلَىٰ طَعَامٍ وَاحِدٍ فَادْعُ لَنَا رَبَّكَ يُخْرِجْ لَنَا مِمَّا تُنبِتُ الْأَرْضُ مِن بَقْلِهَا وَقِثَّائِهَا وَفُومِهَا وَعَدَسِهَا وَبَصَلِهَا ۖ قَالَ أَتَسْتَبْدِلُونَ الَّذِي هُوَ أَدْنَىٰ بِالَّذِي هُوَ خَيْرٌ ۚ اهْبِطُوا مِصْرًا فَإِنَّ لَكُم مَّا سَأَلْتُمْ ۗ وَضُرِبَتْ عَلَيْهِمُ الذِّلَّةُ وَالْمَسْكَنَةُ وَبَاءُوا بِغَضَبٍ مِّنَ اللَّهِ ۗ ذَٰلِكَ بِأَنَّهُمْ كَانُوا يَكْفُرُونَ بِآيَاتِ اللَّهِ وَيَقْتُلُونَ النَّبِيِّينَ بِغَيْرِ الْحَقِّ ۗ ذَٰلِكَ بِمَا عَصَوا وَّكَانُوا يَعْتَدُونَ﴾
[ البقرة: 61]

আর তোমরা যখন বললে, হে মূসা, আমরা একই ধরনের খাদ্য-দ্রব্যে কখনও ধৈর্য্যধারণ করব না। কাজেই তুমি তোমার পালনকর্তার নিকট আমাদের পক্ষে প্রার্থনা কর, তিনি যেন আমাদের জন্যে এমন বস্তুসামগ্রী দান করেন যা জমিতে উৎপন্ন হয়, তরকারী, কাকড়ী, গম, মসুরি, পেঁয়াজ প্রভৃতি। মূসা (আঃ) বললেন, তোমরা কি এমন বস্তু নিতে চাও যা নিকৃষ্ট সে বস্তুর পরিবর্তে যা উত্তম? তোমরা কোন নগরীতে উপনীত হও, তাহলেই পাবে যা তোমরা কামনা করছ। আর তাদের উপর আরোপ করা হল লাঞ্ছনা ও পরমুখাপেক্ষিতা। তারা আল্লাহর রোষানলে পতিত হয়ে ঘুরতে থাকল। এমন হলো এ জন্য যে, তারা আল্লাহর বিধি বিধান মানতো না এবং নবীগনকে অন্যায়ভাবে হত্যা করত। তার কারণ, তারা ছিল নাফরমান সীমালংঘকারী। [সূরা বাকারাহ্: 61]

Surah Al-Baqarah in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Baqarah ayat 61


আর স্মরণ করো! তোমরা বলেছিলে -- “হে মূসা! আমরা একই খাবারে সন্তষ্ট থাকতে পারছি না, তাই তোমার প্রভুর কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা করো যাতে তিনি আমাদের জন্য উৎপন্ন করেন মাটি যা উৎপাদিত করে, যেমন তার সবজি ও তার শস্য ও তার মসূর ও তার পেয়াঁজ।” তিনি বললেন -- “তোমরা কি বদল করে নিতে চাও যা নিকৃষ্ট তার সঙ্গে যা উৎকৃষ্ট? নেমে যাও কোনো মিশরে, তাহলে তোমরা যা চাও তাই পাবে।” আর ওরা নিজেদের উপরে লাঞ্ছনা ও দুর্দশা ঘটালো, আর তারা আল্লাহ্‌র রোষ টেনে আনল তাই হলো, কারণ তারা আল্লাহ্‌র আয়াতসমূহে অবিশ্বাস করছিল, আর নবীদের অন্যায়ভাবে হত্যা করতে যাচ্ছিল। তাই হলো, কেননা তারা অবাধ্য হয়েছিল ও সীমালঙ্ঘন করেছিল।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৬১. আর সে সময়ের কথাও স্মরণ করো যখন তোমরা নিজেদের প্রতিপালকের নিয়ামতের প্রতি অকৃতজ্ঞ হয়েছিলে। তোমরা তাঁর নাযিল করা মধুর ন্যায় সুমিষ্ট পানীয় এবং সুস্বাদু গোস্তের ছোট কোয়েল পাখি খাওয়ার ব্যাপারে বিরক্তি প্রকাশ করে বললে: আমরা এক জাতীয় খাবার আর সহ্য করতে পারছি না। অতঃপর তোমরা মূসা ( আলাইহিস-সালাম ) এর নিকট আবেদন করে বললে: হে মূসা! আপনি আল্লাহ তা‘আলার নিকট দু‘আ করুন যেন তিনি জমিনের ফসল থেকে তোমাদের জন্য শাক-সবজি, শসা - যা ক্ষীরার ন্যায় তবে ক্ষীরার চেয়ে একটু বড় - ডাল, পিয়াজ ও দানা জাতীয় খাদ্যের ব্যবস্থা করেন। তখন মূসা ( আলাইহিস-সালাম ) তোমাদের আবেদনের প্রতি তিরস্কার করে বললেন: তোমরা কি এ নি¤œ ও অনুন্নত জিনিস দিয়ে উত্তম ও সম্মানজনক তথা মধুর ন্যায় সুমিষ্ট পানীয় এবং সুস্বাদু গোস্তের ছোট কোয়েল পাখিকে পরিবর্তন করতে চাও। অথচ তা তোমাদের নিকট বিনা কষ্ট ও পরিশ্রমে আসতো। তোমরা এখান থেকে যে কোন এলাকার দিকে বের হয়ে যাও। সেখানকার ক্ষেতে ও বাজারে তোমরা যা চেয়েছো তা পাবে। তবে নিজেদের প্রবৃত্তির অনুসরণ এবং আল্লাহর নির্বাচিত বস্তু থেকে তাদের বার বার মুখ ফিরিয়ে নেয়ার দরুন তাদেরকে দরিদ্রতা, লাঞ্ছনা ও দুরবস্থা দীর্ঘস্থায়ীভাবে পেয়ে বসেছে। উপরন্তু তারা আল্লাহর রোষানলে পতিত হয়েছে। কারণ, তারা তাঁর ধর্ম থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে, তাঁর আয়াতসমূহের সাথে কুফরি করেছে। এমনকি তাঁর নবীদেরকে জুলুম ও অত্যাচার করে হত্যা করেছে। বস্তুতঃ তারা আল্লাহর অবাধ্য হয়েছে এবং তাঁর দেয়া সীমাগুলো লঙ্ঘন করেছে।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


আর তোমরা যখন বলেছিলে, ‘হে মূসা! একই রকম খাদ্যে আমরা কখনো ধৈর্য ধারণ করব না, সুতরাং তুমি তোমার প্রতিপালকের নিকট আমাদের জন্য প্রার্থনা কর, তিনি যেন ভূমি জাত দ্রব্য শাক-সবজী, কাঁকুড়, গম, মসুর ও পিঁয়াজ উৎপাদন করেন। মূসা বলল, তোমরা কি উৎকৃষ্ট বস্তুকে নিকৃষ্ট বস্তুর সাথে বিনিময় করতে চাও? তবে কোন নগরে অবতরণ কর। তোমরা যা চাও, তা সেখানে আছে।’( ১ ) আর তারা লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্যগ্রস্ত হল এবং আল্লাহর ক্রোধের পাত্র হল। ( ২ ) এ জন্য যে তারা আল্লাহর নিদর্শন সকলকে অমান্য করত এবং ( প্রেরিত পুরুষ ) নবীদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা করত। ( ৩ ) অবাধ্যতা ও সীমালঙঘন করবার জন্যেই তাদের এই পরিণতি ঘটেছিল। ( ৪ ) ( ১ ) এ ঘটনাও ঐ তীহ্ প্রান্তরের। মিসর বলতে এখানে মিসর দেশ বুঝানো হয় নি, বরং কোন এক নগরীকে বুঝানো হয়েছে। অর্থ হল, এখান থেকে যে কোন নগরীতে চলে যাও এবং সেখানে চাষাবাদ ক'রে নিজেদের পছন্দমত শাক-সবজি, ডাল ইত্যাদি উৎপাদন ক'রে খাও। তাদের চাওয়া যেহেতু অকৃতজ্ঞতা এবং অহংকারের ভিত্তিতে ছিল, তাই ধমকের স্বরে তাদেরকে বলা হল, " তোমরা যা চাও, তা সেখানে আছে। " ( ২ ) কোথায় সেই পুরস্কার ও অনুগ্রহসমূহ যা পূর্বে উল্লেখ হয়েছে? আর কোথায় সেই লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্য যা পরে তাদের উপর নিপতিত হয়েছে? এবং যার কারণে তারা আল্লাহর গযবের শিকার হয়েছে। 'গযব' ( ক্রোধ )ও 'রহমত' ( দয়া )র মত আল্লাহর একটি গুণ বিশেষ। এর ব্যাখ্যা 'শাস্তি দেওয়ার ইচ্ছা' বা 'শাস্তি' করা ঠিক নয়, বরং বলতে হবে, আল্লাহ তাদের উপর ঐভাবেই ক্রোধান্বিত হয়েছেন, যেভাবে ক্রোধান্বিত হওয়া তাঁর গৌরবময় সত্তার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ( ৩ ) এখানে লাঞ্ছিত এবং আল্লাহর গযবের শিকার হওয়ার কারণ বর্ণনা করা হচ্ছে। অর্থাৎ, মহান আল্লাহর আয়াতকে অস্বীকার করা, তাঁর দ্বীনের প্রতি আহবানকারী আম্বিয়া ( আলাইহিমুস্ সালাম ) ও সত্যের সন্ধানদাতাদেরকে হত্যা করা ও তাঁদের অবমাননা করাই হল তাদের আল্লাহর গযবের শিকার হওয়ার কারণ। কাল এই কর্মে জড়িত হওয়ার কারণে ইয়াহুদীরা যদি অভিশপ্ত ও লাঞ্ছিত হয়ে থাকে, তবে আজ এই একই কাজ সম্পাদনকারীরা কিভাবে সম্মান ও শ্রদ্ধার পাত্র হতে পারে? তাতে তারা যারাই হোক এবং যেখানেই থাক? ( ৪ ) এটা ইয়াহুদীদের লাঞ্ছনা ও দরিদ্রতার দ্বিতীয় কারণ। عَصَوا ( অবাধ্যতা )র অর্থ হল, যে কাজ করতে তাদেরকে নিষেধ করা হত, তা তারা সম্পাদন করত এবং يَعتَدُون ( সীমালংঘন করা )র অর্থ হল, নির্দেশিত কাজগুলোর ব্যাপারে তারা বাড়াবাড়ি ও অতিরঞ্জন করত। অনুসরণ ও আনুগত্য হল, নিষেধাবলী থেকে বিরত থাকা এবং নির্দেশাবলীকে ঐভাবেই পালন করা, যেভাবে পালন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিজের পক্ষ থেকে কমবেশী করলে তা বাড়াবাড়ি ও সীমালংঘন হবে; যা আল্লাহর নিকট অতীব অপছন্দনীয়।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আর যখন তোমরা বলেছিলে, ‘হে মূসা ! আমারা একই রকম খাদ্যে কখনও ধৈর্য ধারণ করবো না। সুতরাং তুমি তোমার রব-এর কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর – তিনি যেন আমাদের জন্য ভূমিজাত দ্রব্য শাক-সবজি, কাঁকুড়, গম, মসুর ও পেঁয়াজ উৎপাদন করেন’। মূসা বললেন, ‘তোমরা কি উত্তম জিনিসের বদলে নিম্নমানের জিনিস চাও ? তবে কোন শহরে চলে যাও, তোমরা যা চাও, সেখানে তা আছে’ []। আর তাদের উপর লাঞ্ছনা ও দারিদ্র্য আপতিত হলো এবং তারা আল্লাহ্‌র গযবের শিকার হলো। এটা এ জন্য যে , তারা আল্লাহ্‌র আয়াতসমূহকে অস্বিকার করতো এবং নবীদের কে অন্যায়ভাবে হত্যা করতো []। অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘন করার জন্যই তাদের এ পরিণতি হয়েছিল []। [] তীহ্‌ উপত্যকায় ‘মান্না’ ও ‘সালওয়া’র প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়েই তারা ওসব শব্জী ও শস্যের জন্য আবেদন করলো। এ প্রান্তরের সীমান্তবর্তী এলাকায় একটি শহর ছিল। সেখানে গিয়ে চাষাবাদ করে উৎপন্ন ফসলাদি ভোগের নির্দেশ দেয়া হলো। আল্লাহ্ তাআলা মূসা ‘আলাইহিস সালাম-এর মাধ্যমে পূর্বেই তাদেরকে সাবধান করে দিয়েছিলেন যে, যদি নির্দেশ অমান্য কর, তবে চিরকাল তোমরা অন্য জাতির দ্বারা শাসিত হতে থাকবে। যেমন, বলা হয়েছে ( وَاِذْ تَاَذَّنَ رَبُّكَ لَيَبْعَثَنَّ عَلَيْهِمْ اِلٰي يَوْمِ الْقِيٰمَةِ مَنْ يَّسُوْمُهُمْ سُوْءَ الْعَذَابِ )আর সে সময়টি স্মরণ করুন, যখন আপনার রব জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, নিশ্চয় তিনি ইয়াহুদিদের উপর কেয়ামত পর্যন্ত এমন শাসক প্রেরণ করতে থাকবেন, যারা তাদের প্রতি কঠোর শাস্তি পৌছাতে থাকবে। [ সূরা আল-আরাফ: ১৬৭ ] [] হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ কিয়ামতের দিন সবচেয়ে বেশী আযাব হবে সে লোকের যাকে কোন নবী হত্যা করেছে, অথবা কোন নবীকে হত্যা করেছে আর ভ্রষ্ট ইমাম বা নেতা এবং ভাস্কর্য নির্মাণকারী। ” [ মুসনাদে আহমাদ: ৬/৪১৩,৪১৫ ] [] কাতাদাই এ আয়াতের তাফসীরে বলেন, তোমরা আল্লাহ্‌র অবাধ্যতা ও সীমালঙ্ঘন হতে নিজেদেরকে বাঁচিয়ে রাখ; কেননা পূর্বেকার লোকেরা এ দু'টির কারণেই ধ্বংস হয়েছিল। [ আত-তাফসীরুস সহীহ ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


এখানে বানী ইসরাঈলের অধৈর্য এবং আল্লাহ্ তা'আলার নিয়ামতের অমর্যাদা করার কথা বর্ণিত হচ্ছে। তারা মান্না ও সালওয়া'র মত পবিত্র আহার্যের উপরেও ধৈর্য ধারণ করতে পারেনি এবং তার পরিবর্তে নিকৃষ্ট বস্তুর জন্যে প্রার্থনা জানায়। একই খাদ্যের ভাবার্থ হচ্ছে এক প্রকারের খাদ্য, অর্থাৎ মান্না ও সালওয়া'। ( আরবি )-এর অর্থে মতভেদ আছে। ইবনে মাসউদের ( রাঃ ) পঠনে ( আরবি ) আছে। মুজাহিদ ( রঃ ) ( আরবি )-এর তাফসীর ( আরবি ) করেছেন, অর্থাৎ রসুন। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতেও এই তাফসীর বর্ণিত আছে। পরবর্তী অভিধানের পুস্তকগুলোতে ( আরবি ) র অর্থ হচ্ছে ( আরবি ) অর্থাৎ আমাদের জন্যে রুটি তৈরী কর। ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ ) বলেন যে, যদি এটা সঠিক হয় তবে এটা ( আরবি ) -এর অন্তর্ভুক্ত হবে। যেমন, ( আরবি )( আরবি ) এবং ( আরবি )( আরবি ) ইত্যাদি যাতে ( আরবি ) অক্ষরটি ( আরবি ) দ্বারা এবং ( আরবি ) অক্ষরটি ( আরবি ) অক্ষর দ্বারা পরিবর্তিত হয়েছে। কেননা, এ দু'টি অক্ষরের বের হওয়ার স্থান খুব কাছাকাছি। আল্লাহ্ই সবচেয়ে বেশী জানেন।কেউ কেউ বলেন যে, ( আরবি ) -এর অর্থ হচ্ছে গম। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতেও এ তাফসীর নকল করা হয়েছে। আহীহার কবিতাতেও ( আরবি ) শব্দটি গমের - অর্থে ব্যবহৃত হতো ( আরবি ) এর অর্থ রুটিও বলা হয়। কেউ কেউ শীষের অর্থও নিয়েছেন। হযরত কাতাদাহ ( রঃ ) এবং হযরত আতা ( রঃ ) বলেন যে, যে শস্যে রুটি তৈরী হয় তাকে ( আরবি ) বলে। কেউ কেউ বলেন যে, প্রত্যেক প্রকারের শস্যকেই ( আরবি ) বলা হয়। হযরত মূসা ( আঃ ) তাঁর সম্প্রদায়কে ধমক দিয়ে বলেনঃ ‘উৎকৃষ্ট বস্তুর পরিবর্তে নিকৃষ্ট বস্তু তোমরা কেন চাচ্ছ? অতঃপর বলেনঃ ‘তোমরা শহরে এসব জিনিস পাবে।' জমহুরের পঠনে ( আরবি ) ( মিসরান )ই আছে এবং সব পঠনেই এটাই লিখিত আছে।হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত মূসা ( আঃ ) তাদেরকে বলেনঃ 'তোমরা কোন এক শহরে চলে যাও। হযরত উবাই বিন কা'ব ( রাঃ ) এবং হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ )-এর কিরআতে ( আরবি ) ( মিসরা )ও আছে এবং এর তাফসীরে মিসর শহর বুঝানো হয়েছে। ( আরবি ) শব্দটি দ্বারাও নির্দিষ্ট ‘মিসর শহর ভাবার্থ নেয়া যেতে পারে ( আরবি ) -এর অর্থ সাধারণ শহর নেয়াই উত্তম। তাহলে ভাবার্থ দাঁড়াবে এইঃ “ তবে তোমরা যা চাচ্ছো তা খুব সহজ জিনিস । যে কোন শহরে গেলেই ওটা পেয়ে যাবে। দু'আরই বা প্রয়োজন। কি? তাদের একথা শুধুমাত্র অহংকার ও অবাধ্যতা হিসেবে ছিল বলে তাদেরকে কোন উত্তর দেয়া হয়নি। আল্লাহই সবচেয়ে বেশী জানেন।ভাবার্থ এই যে, তাদের উপর লাঞ্ছনা ও দারিদ্র চিরস্থায়ী করে দেয়া হয়। অপমান ও হীনতা তাদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়। তাদের নিকট হতে জিযিয়া কর আদায় করা হয়। তারা মুসলমানদের পদানত হয়। তাদেরকে উপবাস করতে হয় এবং ভিক্ষার ঝুলি কাঁধে নিতে হয়। তাদের উপর আল্লাহর ক্রোধ ও অভিশাপ বর্ষিত হয় ( আরবি ) এর অর্থ হচ্ছে তারা ফিরে গেল। কখনও ভালো অবস্থা এবং কখনও কখনও মন্দের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এখানে মন্দ বুঝানোর জন্য এসেছে। তাদের অহংকার, অবাধ্যতা, সত্য গ্রহণে অস্বীকৃতি, আল্লাহর আয়াতসমূহের প্রতি অবিশ্বাস এবং নবীগণ ও তাদের অনুসারীদেরকে অন্যায়ভাবে হত্যা ইত্যাদির কারণেই তাদের প্রতি এসব শাস্তি অবতীর্ণ হয়েছিল। আল্লাহর আয়াতসমূহকে অবিশ্বাস করা এবং তাঁর নবীগণকে অন্যায়ভাবে হত্যা করার চেয়ে বড় অপরাধ আর কী হতে পারে? রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেন যে, তাকাব্বরের অর্থ হচ্ছে সত্য গোপন করা এবং জনগণকে ঘৃণার চোখে দেখা। হযরত মালিক বিন মারারাহ্ রাহভী ( রাঃ ) একদা রাসূলুল্লাহ ( সাঃ )-এর নিকট আরজ করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমি একজন সুশ্রী লোক । আমি চাই না, কারও জুতার শুকতলাও আমার চেয়ে সুন্দর হয়, তবে কি এটাও অবাধ্যতা ও অহংকার হবে?” তিনি বলেনঃ “ না, বরং অহংকার ও অবাধ্যতা হচ্ছে সত্যকে প্রত্যাখ্যান করা এবং জনগণকে ঘৃণা করা ।”বানী ইসরাঈলের অহংকার, কুফরী এবং হত্যার কাজ নবীগণ পর্যন্তও পৌছে গিয়েছিল বলেই তাদের উপর আল্লাহর অভিশাপ অবধারিত হয়েছে। তারা ইহকালেও অভিশপ্ত এবং পরকালেও অভিশপ্ত। হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ ( রাঃ ) বলেন যে, বানী ইসরাঈল প্রত্যহ তিনশ' করে নবীকে হত্যা করতো। তারপরে বাজারে গিয়ে তাদের লেনদেনের কাজে লেগে যেত ( সুনান-ই-আবি দাউদ ও তায়ালেসী )রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ কিয়ামতের দিন যাদের সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে তারা হচ্ছে ওরাই যাদেরকে নবী হত্যা করেছেন অথবা তারা নবীকে হত্যা করেছে, পথভ্রষ্ট ইমাম এবং চিত্র শিল্পী ।” এগুলো তাদের অবাধ্যতা, যুলুম এবং সীমা অতিক্রমের প্রতিফল ছিল।

সূরা বাকারাহ্ আয়াত 61 সূরা

وإذ قلتم ياموسى لن نصبر على طعام واحد فادع لنا ربك يخرج لنا مما تنبت الأرض من بقلها وقثائها وفومها وعدسها وبصلها قال أتستبدلون الذي هو أدنى بالذي هو خير اهبطوا مصرا فإن لكم ما سألتم وضربت عليهم الذلة والمسكنة وباءوا بغضب من الله ذلك بأنهم كانوا يكفرون بآيات الله ويقتلون النبيين بغير الحق ذلك بما عصوا وكانوا يعتدون

سورة: البقرة - آية: ( 61 )  - جزء: ( 1 )  -  صفحة: ( 9 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. মুমিনদের বক্তব্য কেবল এ কথাই যখন তাদের মধ্যে ফয়সালা করার জন্যে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের
  2. লূত বললেনঃ তারা আমার মেহমান। অতএব আমাকে লাঞ্ছিত করো না।
  3. তিনিই ভুমন্ডলকে বিস্তৃত করেছেন এবং তাতে পাহাড় পর্বত ও নদ-নদী স্থাপন করেছেন এবং প্রত্যেক ফলের
  4. বস্তুতঃ আমাদের সাথে তোমার শত্রুতা তো এ কারণেই যে, আমরা ঈমান এনেছি আমাদের পরওয়ারদেগারের নিদর্শনসমূহের
  5. ইতিপূর্বে মূসা (আঃ) যেমন জিজ্ঞাসিত হয়েছিলেন, (মুসলমানগন, ) তোমরাও কি তোমাদের রসূলকে তেমনি প্রশ্ন করতে
  6. মেহমান ফেরেশতাগন বলল-হে লূত (আঃ) আমরা তোমাদের পালনকর্তার পক্ষ হতে প্রেরিত ফেরেশতা। এরা কখনো তোমার
  7. স্মরণ কর লূতের কথা, তিনি তাঁর কওমকে বলেছিলেন, তোমরা কেন অশ্লীল কাজ করছ? অথচ এর
  8. আর যারা কাফের তারা পারস্পরিক সহযোগী, বন্ধু। তোমরা যদি এমন ব্যবস্থা না কর, তবে দাঙ্গা-হাঙ্গামা
  9. এমনকি যখন পয়গম্বরগণ নৈরাশ্যে পতিত হয়ে যেতেন, এমনকি এরূপ ধারণা করতে শুরু করতেন যে, তাদের
  10. যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ তোমাদেরকে যা দিয়েছেন, তা থেকে ব্যয় কর। তখন কাফেররা মুমিনগণকে

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা বাকারাহ্ ডাউনলোড করুন:

সূরা Baqarah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Baqarah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত বাকারাহ্  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Wednesday, December 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers