কোরান সূরা ইয়াসীন আয়াত 65 তাফসীর
﴿الْيَوْمَ نَخْتِمُ عَلَىٰ أَفْوَاهِهِمْ وَتُكَلِّمُنَا أَيْدِيهِمْ وَتَشْهَدُ أَرْجُلُهُم بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ﴾
[ يس: 65]
আজ আমি তাদের মুখে মোহর এঁটে দেব তাদের হাত আমার সাথে কথা বলবে এবং তাদের পা তাদের কৃতকর্মের সাক্ষ্য দেবে। [সূরা ইয়াসীন: 65]
Surah Ya-Sin in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Yasin ayat 65
সেইদিন আমরা তাদের মুখের উপর মোহর মেরে দেব, বরং তাদের হাত আমাদের সাথে কথা বলবে, আর তাদের পা সাক্ষ্য দেবে যা তারা অর্জন করত সে-সন্বন্ধে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৬৫. আজ আমি তাদের মুখে মোহর লাগিয়ে দেবো। তাতে তারা বোবা হয়ে পড়বে। ফলে তারা কুফরি ও পাপাচারের যে সব কথা বলত সেগুলো অস্বীকার করতে গেলে তারা কথা বলতে পারবে না। বরং দুনিয়ার জীবনে তাদের কৃতকর্ম সম্পর্কে আমার সাথে তাদের হাতগুলো কথা বলবে এবং তাদের পাগুলো তাদের কৃত পাপ ও তার প্রতি চলার ব্যাপারে সাক্ষী প্রদান করবে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আমি আজ এদের মুখে মোহর মেরে দেব, এদের হাত আমার সঙ্গে কথা বলবে এবং এদের পা এদের কৃতকর্মের সাক্ষী দেবে।[১] [১] এই মোহর লাগানোর প্রয়োজন এই জন্য হবে যে, কিয়ামতের দিন প্রথম দিকে মুশরিকরা মিথ্যা বলবে এবং বলবে, ( واللهِ رَبِّنَا مَا كُنَّا مُشْرِكِيْنَ ) অর্থাৎ, ঐ আল্লাহর শপথ যিনি আমাদের প্রভু, আমরা মুশরিক ছিলাম না। ( সূরা আনআম ৬:২৩ আয়াত ) সুতরাং আল্লাহ তাআলা তাদের মুখে মোহর লাগিয়ে দেবেন, ফলে তারা কথা বলার শক্তি থেকে বঞ্চিত হয়ে যাবে। তবে আল্লাহ তাআলা মানুষের শরীরের অন্য অঙ্গকে কথা বলার শক্তি প্রদান করবেন। সুতরাং হাত বলবে, 'আমার দ্বারা সে এই এই কর্ম করেছিল' এবং পা তার সাক্ষী দেবে। ঠিক এইভাবে স্বীকার ও সাক্ষী, উভয় পর্যায় পার হয়ে যাবে। এ ছাড়া কথা বলতে সক্ষম বস্তুর মোকাবেলায় কথা বলতে অক্ষম বস্তুর কথা বলে সাক্ষ্য দেওয়া, দলীল ও প্রমাণ হিসাবে অধিক প্রভাবশালী হয়; যেহেতু তাতে অলৌকিক বিষয় পাওয়া যায়। ( ফাতহুল ক্বাদীর ) মুখ ছাড়া অন্য অঙ্গের কথা বলার বিষয়টি হাদীসসমূহেও বর্ণিত হয়েছে। ( দেখুন সহীহ মুসলিমঃ কিতাবুয্ যুহদ )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আমরা আজ এদের মুখ মোহর করে দেব, এদের হাত কথা বলবে আমাদের সাথে এবং এদের পা সাক্ষ্য দেবে এদের কৃতকর্মের [ ১ ]।
[ ১ ] হাশরে হিসাব-নিকাশের জন্য উপস্থিতির সময় প্রথমে প্রত্যেকেই যা ইচ্ছা ওযর বর্ণনা করার স্বাধীনতা পাবে। মুশরিকরা সেখানে কসম করে কুফার ও শিরক অস্বীকার করবে। তারা বলবে, “ আল্লাহর শপথ আমরা মুশরিক ছিলাম না” [ সূরা আল-আন’আম: ২৩ ] তাদের কেউ বলবে, আমাদের আমলনামায় ফেরেশতা যা কিছু লিখেছে, আমরা তা থেকে মুক্ত । তখন আল্লাহ তাআলা তাদের মুখে মোহর এঁটে দেবেন, যাতে তারা কোন কিছুই বলতে না পারে। অতঃপর তাদেরই হাত, পা ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে রাজসাক্ষী করে কথা বলার যোগ্যতা দান করা হবে। তারা কাফেরদের যাবতীয় কার্যকলাপের সাক্ষ্য দেবে। আলোচ্য আয়াতে হাত ও পায়ের কথা উল্লিখিত হয়েছে। অন্য আয়াতে মানুষের কর্ণ, চক্ষু ও চার্মের সাক্ষ্য দানের উল্লেখিত রয়েছে। যেমন, [ সূরা ফুসসিলাত; ২১-২২, সূরা নূর: ২৪ ]।
এখানে এ প্রশ্ন দেখা দেয় যে, একদিকে আল্লাহ বলেন, আমি এদের কণ্ঠ রুদ্ধ করে দেব এবং অন্যদিকে সূরা নূরের আয়াতে বলেন, এদের কণ্ঠ সাক্ষ্য দেবে এ দু'টি বক্তব্যের মধ্যে কিভাবে সামঞ্জস্য বিধান করা যাবে ? এর জবাব হচ্ছে, কণ্ঠ রুদ্ধ করার অর্থ হলো, তাদের কথা বলার ক্ষমতা কেড়ে নেয়া। এরপর তারা স্বেচ্ছায় নিজেদের মর্জি মাফিক কথা বলতে পারবে না। আর কণ্ঠের সাক্ষ্যদানের অর্থ হচ্ছে, পাপিষ্ঠ লোকেরা তাদেরকে কোন কোন কাজে লাগিয়েছিল, তাদের মাধ্যমে কেমন সব কুফরী কথা বলেছিল, কোন ধরনের মিথ্যা উচ্চারণ করেছিল, কতপ্রকার ফিতনা সৃষ্টি করেছিল এবং কোন কোন সময় তাদের মাধ্যমে কোন কোন কথা বলেছিল সেসব বিবরণ তাদের কণ্ঠ স্বতস্ফূৰ্তভাবে দিয়ে যেতে থাকবে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বিভিন্ন হাদীসে এ ভয়াবহ অবস্থার বর্ণনা এসেছে। আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমরা একবার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে ছিলাম। এমন সময় তিনি এমনভাবে হাসলেন যে, তার মাড়ির দাঁত দেখা গেল। তারপর তিনি বললেন, তোমরা কি জানো আমি কেন হাসছি? আমরা বললাম: আল্লাহ ও তাঁর রাসূলই ভাল জানেন। তিনি বললেন: কিয়ামতের দিন বান্দা তার প্রভুর সাথে যে ঝগড়া করবে তা নিয়ে হাসছি। সে বলবে, হে রব, আমাকে কি আপনি যুলুম থেকে নিরাপত্তা দেননি? তিনি বলবেন, হ্যাঁ, তখন সে বলবে, আমি আমার বিরুদ্ধে নিজের ছাড়া অন্য কারও সাক্ষ্য গ্ৰহণ করবো না। তখন আল্লাহ্ বলবেন, তুমি নিজেই তোমার হিসেবের জন্য যথেষ্ঠ। আর সম্মানিত লেখকবৃন্দকে সাক্ষ্য বানাব। তারপর তার মুখের উপর মোহর মেরে দেয়া হবে এবং তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে কথা বলার নির্দেশ দেয়া হবে। ফলে সেগুলো তাদের কাজের বিবরণ দিবে। তারপর তাদেরকে কথা বলার অনুমতি দেয়া হবে তখন তারা বলবে, তোমাদের ধ্বংস হোক, তোমাদের জন্যই তো আমি প্রতিরোধ করছিলাম। [ মুসলিম: ২৯৬৯ ] অন্য হাদীসে এসেছে, তোমাদেরকে মূক করে ডাকা হবে। তারপর প্রথম তোমাদের উরু এবং দু’হাতকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। [ মুসনাদে আহমাদ: ৪/৪৪৬, ৪৪৭, ৫/৪-৫ ] অন্য হাদীসে এসেছে ...
তারপর তৃতীয় জনকে ডাকা হবে। আর তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে, তুমি কে? সে বলবে: আমি আপনার বান্দা, আপনার প্রতি ঈমান এনেছি এবং আপনার নবী ও কিতাবাদির প্রতিও। আর আপনার জন্য সালাত, সাওম, সাদাকাহ ইত্যাদি ভাল কাজের প্রশংসা করে তা আদায় করার দাবী করবে। তখন তাকে বলা হবে, আমরা কি তোমার জন্য আমাদের সাক্ষীকে উপস্থাপন করব না? তখন সে চিন্তা করবে যে, এমন কে আছে যে, তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেয়? আর তখনই তার মুখের উপর মোহর এঁটে দেয়া হবে এবং তার উরুকে বলা হবে, কথা বল। তখন তার উরু, গোস্ত, হাঁড় যা করেছে তার সাক্ষ্য দিবে। আর এটাই হলো মুনাফিক। এটা এজন্যই যাতে তিনি ( আল্লাহ ) নিজের ওজর পেশ করতে পারেন এবং তার উপরই আল্লাহ অসন্তুষ্ট। [ মুসলিম: ২৯৬৮ ]
সূরা ইয়াসীন আয়াত 65 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- নিশ্চয় যে অত্যাচারিত হওয়ার পর প্রতিশোধ গ্রহণ করে, তাদের বিরুদ্ধেও কোন অভিযোগ নেই।
- যারা মুসলমান, যারা ইহুদী, সাবেয়ী, খ্রীষ্টান, অগ্নিপুজক এবং যারা মুশরেক, কেয়ামতের দিন আল্লাহ অবশ্যই তাদের
- মেপে দেয়ার সময় পূর্ণ মাপে দেবে এবং সঠিক দাঁড়িপালায় ওজন করবে। এটা উত্তম; এর পরিণাম
- আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, দুনিয়ার বুকে দাঙ্গা-হাঙ্গামা সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলে,
- অতঃপর আমি তাদেরকে প্রকাশ্যে দাওয়াত দিয়েছি,
- আর যে কেউ সীমালঙ্ঘন কিংবা জুলুমের বশবর্তী হয়ে এরূপ করবে, তাকে খুব শীঘ্রই আগুনে নিক্ষেপ
- হে ঈমানদারগণ! তোমরা স্বীয় উপার্জন থেকে এবং যা আমি তোমাদের জন্যে ভূমি থেকে উৎপন্ন করেছি,
- ইব্রাহীম বললেন, তোমরা কি তাদের সম্পর্কে ভেবে দেখেছ, যাদের পূজা করে আসছ।
- তাদেরকে ঘুরে ফিরে পরিবেশন করা হবে স্বচ্ছ পানপাত্র।
- তোমরা তাদের মত হয়ো না, যারা আল্লাহ তা’আলাকে ভুলে গেছে। ফলে আল্লাহ তা’আলা তাদেরকে আত্ন
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ইয়াসীন ডাউনলোড করুন:
সূরা Yasin mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Yasin শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers