কোরান সূরা সাদ আয়াত 64 তাফসীর
﴿إِنَّ ذَٰلِكَ لَحَقٌّ تَخَاصُمُ أَهْلِ النَّارِ﴾
[ ص: 64]
এটা অর্থাৎ জাহান্নামীদের পারস্পরিক বাক-বিতন্ডা অবশ্যম্ভাবী। [সূরা সাদ: 64]
Surah Saad in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Sad ayat 64
এটিই তো আলবৎ সত্য, আগুনের বাসিন্দাদের বাদপ্রতিবাদ।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৬৪. আমি তোমাদের উদ্দেশ্যে কিয়ামত দিবসে কাফিরদের মাঝে যে বিবাদের কথা উল্লেখ করলাম তা কিন্তু চির সত্য। এতে কোন সন্দেহ নেই।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
জাহান্নামীদের বাদ-প্রতিবাদ; অবশ্যই এ সত্য ঘটবে। [১] [১] অর্থাৎ, তাদের পারস্পরিক বাক্-বিতন্ডা ও একে অপরকে দোষারোপ করা, একটি এমন সত্য, যা অবশ্যম্ভাবী।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
নিশ্চয় এটা বাস্তব সত্য--- জাহান্নামীদের এ পারস্পারিক বাদ-প্রতিবাদ।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৫৫-৬৪ নং আয়াতের তাফসীর:
আল্লাহ তা'আলা পূর্ববর্তী আয়াতগুলোতে সৎলোকদের অবস্থা বর্ণনা করেছেন। এখানে তিনি অসৎ ও পাপী লোকদের অবস্থার বর্ণনা দিচ্ছেন, যারা আল্লাহর হুকুম অমান্য করতো। তিনি বলেন যে, এই সব সীমালংঘনকারীর জন্যে রয়েছে জাহান্নাম এবং তা অতি নিকৃষ্টতম স্থান। সেখানে তাদেরকে আগুন চতুর্দিক থেকে পরিবেষ্টন করবে। সুতরাং ওটা খুবই নিকৃষ্ট বিশ্রামস্থল।( আরবী ) ঐ পানিকে বলা হয় যার উষ্ণতা ও তাপ শেষ সীমায় পৌঁছে গেছে। আর ( আরবী ) হলো এর বিপরীত। অর্থাৎ যার শীতলতা চরমে পৌঁছে গেছে। সুতরাং একদিকে আগুনের তাপের শাস্তি এবং অন্য দিকে শীতলতার শাস্তি! এই ধরনের নানা প্রকারের জোড়া জোড়া শাস্তি তারা ভোগ করবে যা একে অপরের বিপরীত হবে।হযরত আবু সাঈদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যদি এক বালতি গাসসাক দুনিয়ায় বইয়ে দেয়া হয় তবে সমস্ত দুনিয়াবাসী দুর্গন্ধময় হয়ে যাবে ।”( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত কা'ব আহবার ( রাঃ ) বলেন যে, গাসসাক নামক জাহান্নামে একটি নহর রয়েছে যাতে সর্প, বৃশ্চিক ইত্যাদির বিষ জমা হয় এবং ওগুলো গরম করা হয়। ওর মধ্যে জাহান্নামীদের ডুব দেয়ানো হবে। ফলে তাদের দেহের সমস্ত চামড়া ও গোশত অস্থি হতে খসে পড়বে এবং পদনালী পর্যন্ত লটকে যাবে। তারা তাদের ঐ চামড়া ও গোশতগুলোকে এমনভাবে হেঁচড়িয়ে টানতে থাকবে যেমনভাবে কেউ তার কাপড়কে হেঁচড়িয়ে টেনে থাকে। ( এটা ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন) মোটকথা ঠাণ্ডার শাস্তি আলাদাভাবে হবে এবং গরমের শাস্তি আলাদাভাবে হবে। কখনো গরম পানি পান করানো হবে এবং কখনো যাককুম বৃক্ষ ভক্ষণ করানো হবে। কখনো আগুনের পাহাড়ের উপর চড়ানো হবে, আবার কখনো আগুনের গর্তে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়া হবে।অতঃপর আল্লাহ তা'আলা জাহান্নামীদের পরস্পর ঝগড়া করার বর্ণনা দিচ্ছেন যে তারা একে অপরকে খারাপ বলবে ও তিরস্কার করবে। যেমন অন্য জায়গায় আল্লাহ্ তা'আলা বলেনঃ ...
( আরবী ) অর্থাৎ যখনই কোন দল জাহান্নামে প্রবেশ করবে তখন অপর দলকে তারা সালামের পরিবর্তে লানত দিবে। ( ৭:৩৮ ) এইভাবে এক দল অন্য দলের উপর দোষ চাপাবে। যে দলটি প্রথমে জাহান্নামে চলে গেছে ঐ দলটি দ্বিতীয় দলকে জাহান্নামের দারোগার সাথে আসতে দেখে দারোগাকে বলবেঃ “ তোমাদের সাথে যে দলটি রয়েছে তাদের জন্যে অভিনন্দন নেই, তারা তো জাহান্নামে জ্বলবে । তখন আগমনকারী অনুসারীরা বলবেঃ “ তোমাদের জন্যেও তো অভিনন্দন নেই । তোমরাই তো আমাদেরকে মন্দ কাজের দিকে আহ্বান করতে, যার ফল এই দাড়ালো? কত নিকৃষ্ট এই আবাসস্থল!'তারা আরো বলবেঃ “ হে আমাদের প্রতিপালক! যে এটা আমাদের সম্মুখীন করেছে জাহান্নামে, তার শাস্তি আপনি দ্বিগুণ বর্ধিত করুন!' যেমন অন্য জায়গায় মহান আল্লাহ বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “পরের দুষ্কর্মশীলরা পূর্বের দুষ্কর্মশীলদের সম্পর্কে আরয করবেঃ হে আমাদের প্রতিপালক! এরাই আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল, সুতরাং আপনি তাদেরকে দ্বিগুণ শাস্তি প্রদান করুন! আল্লাহ্ তা'আলা উত্তরে বলবেনঃ প্রত্যেকের জন্যে দ্বিগুণ শাস্তি রয়েছে, কিন্তু তোমরা জান না ।” ( ৭:৩৮ )কাফিররা জাহান্নামে মুমিনদেরকে দেখতে না পেয়ে পরস্পর বলাবলি করবেঃ ‘আমাদের কি হলো যে, আমরা যেসব লোককে মন্দ বলে গণ্য করতাম তাদেরকে দেখতে পাচ্ছি না?' হযরত মুজাহিদ ( রঃ ) বলেন যে, আবু জেহেল বলবেঃ “ বিলাল ( রাঃ ), আম্মার ( রাঃ ), সুহায়েব ( রাঃ ) প্রমুখ লোকগুলো কোথায়? তাদেরকে তো দেখতে পাচ্ছি না?” মোটকথা, প্রত্যেক কাফির এ কথাই বলবেঃ “আমাদের কি হলো যে, আমরা যাদেরকে মন্দ বলে গণ্য করতাম তাদেরকে দেখছি না? তবে কি আমরা তাদেরকে অহেতুক ঠাট্টা-বিদ্রুপের পাত্র মনে করতাম? না, বরং তাদের ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টি বিভ্রম ঘটেছে । তাদের সম্পর্কে আমাদের ধারণা ঠিকই ছিল। তারা জাহান্নামের মধ্যেই রয়েছে। কিন্তু এমন কোন দিকে রয়েছে যেখানে আমাদের দৃষ্টি পড়ছে না।” তৎক্ষণাৎ জান্নাতীদের পক্ষ থেকে উত্তর আসবে, যেমন মহা মহিমান্বিত আল্লাহ্ বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ জান্নাতবাসীরা জাহান্নামীদেরকে সম্বোধন করে বলবেঃ আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন আমরা তো তা সত্য পেয়েছি । তোমাদের প্রতিপালক তোমাদেরকে যা বলেছিলেন তোমরাও তা সত্য পেয়েছে। কি? তারা বলবেঃ হ্যা। অতঃপর জনৈক ঘোষণাকারী তাদের মধ্যে ঘোষণা করবেঃ আল্লাহর লানত যালিমদের উপর। ( ৭:৪৪-৪৯ ) এরপর মহান আল্লাহ্ বলেনঃ হে নবী ( সাঃ )! আমি যে তোমাকে খবর দিচ্ছি যে, জাহান্নামীরা পরস্পর ঝগড়া ও বাদ-প্রতিবাদ করবে এটা নিশ্চিত সত্য। এতে সন্দেহের কোন অবকাশই নেই।
সূরা সাদ আয়াত 64 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- নিশ্চয় যারা কোরআন আসার পর তা অস্বীকার করে, তাদের মধ্যে চিন্তা-ভাবনার অভাব রয়েছে। এটা অবশ্যই
- আমি কোন জনপদ ধ্বংস করিনি; কিন্তু এমতাবস্থায় যে, তারা সতর্ককারী ছিল।
- কাফেরগণ, তোমরা কিছুদিন খেয়ে নাও এবং ভোগ করে নাও। তোমরা তো অপরাধী।
- যারা কিছু জানে না, তারা বলে, আল্লাহ আমাদের সঙ্গে কেন কথা বলেন না? অথবা আমাদের
- নিশ্চয় আমি আপনাকে কাওসার দান করেছি।
- আমি আপনার প্রতি এ জন্যেই গ্রন্থ নাযিল করেছি, যাতে আপনি সরল পথ প্রদর্শনের জন্যে তাদের
- তোমাদেরকে আমার আয়াতসমূহ শোনানো হত, তখন তোমরা উল্টো পায়ে সরে পড়তে।
- যখন আকাশের আবরণ অপসারিত হবে,
- যখন বলা হত, আল্লাহর ওয়াদা সত্য এবং কেয়ামতে কোন সন্দেহ নেই, তখন তোমরা বলতে আমরা
- শুন, যে দিন এক আহবানকারী নিকটবর্তী স্থান থেকে আহবান করবে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা সাদ ডাউনলোড করুন:
সূরা Sad mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Sad শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers