কোরান সূরা আনআম আয়াত 69 তাফসীর
﴿وَمَا عَلَى الَّذِينَ يَتَّقُونَ مِنْ حِسَابِهِم مِّن شَيْءٍ وَلَٰكِن ذِكْرَىٰ لَعَلَّهُمْ يَتَّقُونَ﴾
[ الأنعام: 69]
এদের যখন বিচার করা হবে তখন পরহেযগারদের উপর এর কোন প্রভাব পড়বে না; কিন্তু তাদের দায়িত্ব উপদেশ দান করা যাতে ওরা ভীত হয়। [সূরা আনআম: 69]
Surah Al-Anam in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Anam ayat 69
আর যারা ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করে তাদের উপরে ওদের হিসাবপত্রের কোনো কিছুতে দায়িত্ব নেই, তবে স্মরণ করিয়ে দেয়া, যাতে ওরাও ধর্মপরায়ণতা অবলন্বন করে।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৬৯. যারা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে কেবল তাঁকেই ভয় করে এ জালিমদের বিষয়ে তাদেরকে কোন হিসাবই দিতে হবে না। তবে তাদের কর্তব্য হবে অসৎ কাজে লিপ্ত হওয়া থেকে ওদেরকে নিষেধ করা। যাতে তারা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মেনে কেবল তাঁকেই ভয় করতে শিখে।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
ওদের কর্মের জবাবদিহির দায়িত্ব তাদের নয়, যারা সাবধানতা অবলম্বন করে।[১] তবে উপদেশ দেওয়া তাদের কর্তব্য, যাতে ওরাও সাবধান হতে পারে। [২] [১] مِنْ حِسَابِهِمْ এর সম্পর্ক আল্লাহর আয়াতসমূহ নিয়ে ঠাট্টা-বিদ্রূপকারীদের সাথে। অর্থাৎ, যারা এই ধরনের মজলিসে শরীক হওয়া থেকে দূরে থাকবে, আল্লাহর আয়াতসমূহ নিয়ে উপহাস করার যে পাপ উপহাসকারীদের হবে, সে পাপ থেকে তারা সুরক্ষিত থাকবে। [২] অর্থাৎ, ( তাদের থেকে ) দূরে ও পৃথক থাকার সাথে সাথে সাধ্যানুযায়ী ওয়ায-নসীহত এবং ভাল কাজের আদেশ ও মন্দ কাজের নিষেধ প্রদানের দায়িত্ব পালন করবে। হতে পারে তারাও তাদের ঐ আচরণ থেকে ফিরে আসবে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আর তাদের [ ১ ] কাজের জবাবদিহির দায়িত্ব, যারা তাকওয়া অবলম্বন করে তাদের নয়। তবে উপদেশ দেয়া তাদের কর্তব্য, যাতে তারাও তাকওয়া অবলম্বন করে। [ ১ ] অর্থাৎ পূর্বোক্ত আয়াতে বর্ণিত লোকেরা যালিম। কিন্তু তাদের হিসাব-নিকাশ ও তাদের শাস্তি বিধান করা সাধারণ মুমিন মুত্তাকীদের কাজ নয়। তারা তাদেরকে কেবল নসীহত ও হক কথা জানিয়ে দেয়ার কাজই করবে। যাতে তারা বাতিল পথ পরিহার করে এবং তাকওয়ার পথ অবলম্বন করে। [ মুয়াসসার ] কিন্তু যদি তাদেরকে নসীহত করলে ক্ষতির পরিমাণ বেশী হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, তখন তাও পরিত্যাগ করতে হবে। [ সা'দী ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৬৬-৬৯ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তা'আলা স্বীয় রাসূল ( সঃ )-কে সম্বোধন করে বলছেন, তোমার কওম অর্থাৎ কুরায়েশরা তোমাকে মিথ্যা প্রতিপন্ন করছে, অথচ এটা ছাড়া সত্য আর কিছুই নেই।তুমি তাদেরকে বল-আমি তোমাদের রক্ষক ও জিম্মাদার নই। যেমন মহান আল্লাহ অন্য জায়গায় বলেনঃ “ ( হে মুহাম্মাদ সঃ )! তুমি বল-এটা তোমাদের প্রভুর পক্ষ থেকে সত্য, সুতরাং যার ইচ্ছা হবে সে ঈমান আনবে এবং যে ইচ্ছা করবে সে অমান্য করবে ।” অর্থাৎ আমার দায়িত্ব তো হচ্ছে শুধু প্রচার করে দেয়া, আর তোমাদের কাজ হচ্ছে শ্রবণ করা ও মেনে নেয়া । যে আমার কথা মান্য করবে সে দুনিয়া ও আখিরাতে উজ্জ্বল চেহারা বিশিষ্ট হবে এবং যে বিরুদ্ধাচরণ করবে সে উভয় জায়গাতেই হতভাগ্য হবে। এ জন্যেই ইরশাদ হচ্ছে - প্রত্যেক সংবাদের জন্যেই একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে, যদিও সেটা বিলম্বে হয়। যেমন অন্যত্র আল্লাহ পাক বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ অবশ্যই তোমরা ওর সংবাদ কিছুদিন পরে জানতে পারবে ।” ( ৩৮:৮৮ ) তিনি আরও বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ প্রত্যেক মৃত্যুর জন্যেই একটা নির্ধারিত সময় রয়েছে ।” ( ১৩:৩৮ ) এটা হচ্ছে ধমক ও ভীতি প্রদর্শন। এ জন্যেই মহান আল্লাহ বলেনঃ “ সত্বরই তোমরা জানতে পারবে ।”( আরবী ) -অর্থাৎ হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! যখন তুমি কাফিরদেরকে দেখবে যে, তারা মিথ্যা প্রতিপন্নতা ও বিদ্রুপের সঙ্গে আমার আয়াতসমূহ সম্পর্কে সমালোচনা করছে, তখন তুমি তাদের নিকট থেকে দূরে সরে যাবে যে পর্যন্ত না তারা অন্য কোন প্রসঙ্গে লিপ্ত হয়। আর যদি শয়তান তোমাকে এটা ভুলিয়ে দেয় তবে স্মরণ হওয়া মাত্রই তুমি এই অত্যাচারীদের সাথে আর বসবে না। ভাবার্থ এই যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর উম্মতের কোন লোকই যেন ঐ সব অবিশ্বাসকারী ও মিথ্যা প্রতিপন্নকারীর সাথে উঠা-বসা না করে যারা আল্লাহর আয়াতসমূহকে পরিবর্তন করে ফেলে এবং ওগুলোকে সঠিক ও প্রকাশমান ভাবার্থের উপর কায়েম রাখে না। এ জন্যেই হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আমার উম্মত ভুল বশতঃ বা বাধ্য হয়ে কোন কাজ করে বসলে তা ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে ।” ( হাদীসটি ইবনে মাজাহ (রঃ ) তাখরীজ করেছেন এবং তাঁর হাদীস গ্রন্থের ভাষা হচ্ছে নিম্নরূপঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ নিশ্চয়ই আল্লাহ আমার উম্মতের ভুলত্রুটি ক্ষমা করে দিয়েছেন) কুরআন কারীমের “যখন তোমরা শুনতে পাও যে, আল্লাহর আয়াতসমূহের সাথে কুফরী করা হচ্ছে এবং ওগুলোকে বিদ্রুপ করা হচ্ছে তখন তোমরা তাদের নিকট থেকে উঠে যাও যে পর্যন্ত না তারা অন্য প্রসঙ্গে নিমগ্ন হয়, নতুবা তোমরা তাদেরই সমতুল্য হয়ে যাবে” -এই আয়াতে ঐ দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে । মহান আল্লাহ বলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ যালিম লোকদের হিসাব নিকাশের দায়-দায়িত্ব মুত্তাকী লোকদের উপর কিছুমাত্র অর্পিত নয়। অর্থাৎ মুত্তাকী লোকেরা যখন ঐ সব কাফির ও যালিমের সাথে উঠাবসা করবে না, বরং তাদের নিকট থেকে উঠে যাবে তখন তারা তাদের দায়িত্ব পালন করলো। ফলে তারা তাদের সাথে পাপে জড়িত হবে না। সাঈদ ইবনে জুবাইর ( রাঃ ) এর ভাবার্থ বলেনঃ যদি ঐ যালিম ও কাফিররা আল্লাহর আয়াতসমূহকে ত্রুটিযুক্ত করার চেষ্টায় লেগে থাকে তবে এখন মুসলমানদের উপর কোন দায়িত্ব অর্পিত হবে না যদি তারা তাদের থেকে দূরে সরে থাকে। কিন্তু অন্যান্য আলেমগণ এর ভাবার্থ বর্ণনায় বলেছেনঃ মুসলমানরা ঐ যালিমদের সাথে উঠাবসা করলেও তাদের বিদ্রুপ করণের যিম্মাদারী তাদের উপর পড়বে না। তাঁদের ধারণায় এই আয়াতটি ( আরবী )-এর আয়াত দ্বারা মানসূখ হয়ে গেছে। আয়াতটি হচ্ছে ( আরবী ) অর্থাৎ ঐ অবস্থায় তোমরাও তাদের সমতুল্য হয়ে যাবে। ( ৪:১৪০ ) আয়াতের এই ব্যাখ্যা ( আরবী ) -এই আয়াতের সাথে সম্পর্কযুক্ত ছিল। এটা ছিল মুজাহিদ ( রঃ ), সুদ্দী ( রঃ ), ইবনে জুরাইজ ( রঃ ) প্রমুখ মনীষীর উক্তি। তাঁদের এই কথার ভিত্তিতে আল্লাহ পাকের ( আরবী )-এই উক্তির ভাবার্থ হবে নিম্নরূপঃ “ কিন্তু আমি তোমাদেরকে এরূপ অবস্থায় তাদের থেকে পরানুখ থাকার নির্দেশ দিয়েছি, যাতে ওটা তাদের জন্যে শিক্ষা ও উপদেশ হয়, হয়তো তারা এর ফলে সতর্ক হয়ে যাবে এবং ভবিষ্যতে আর এর পুনরাবৃত্তি করবে না ।
সূরা আনআম আয়াত 69 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- কাফেরদের জন্যে, যার প্রতিরোধকারী কেউ নেই।
- তারা সেখানে শান্ত মনে বিভিন্ন ফল-মূল আনতে বলবে।
- ঈমানদার ব্যক্তি কি অবাধ্যের অনুরূপ? তারা সমান নয়।
- তারা বলেছিলঃ আমরা কি আমাদেরই একজনের অনুসরণ করব? তবে তো আমরা বিপথগামী ও বিকার গ্রস্থরূপে
- এ কোরআন এমন গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ন করেছি; বরকতময়, পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং যাতে
- এবং তিনিই সৃষ্টি করেন যুগল-পুরুষ ও নারী।
- এ হল তারই প্রতিফল যা তোমরা ইতিপূর্বে নিজের হাতে পাঠিয়েছ। বস্তুতঃ আল্লাহ বান্দাদের প্রতি অত্যাচার
- তিনি ব্যতীত তারা যাদের পুজা করে, তারা সুপারিশের অধিকারী হবে না, তবে যারা সত্য স্বীকার
- তুমি যখন তাদের কাছে ফিরে আসবে, তখন তারা তোমাদের নিকট ছল-ছুতা নিয়ে উপস্থিত হবে; তুমি
- অতঃপর তার মৃত্যু ঘটান ও কবরস্থ করেন তাকে।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আনআম ডাউনলোড করুন:
সূরা Anam mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Anam শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers