কোরান সূরা হাশ্র আয়াত 7 তাফসীর
﴿مَّا أَفَاءَ اللَّهُ عَلَىٰ رَسُولِهِ مِنْ أَهْلِ الْقُرَىٰ فَلِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ وَلِذِي الْقُرْبَىٰ وَالْيَتَامَىٰ وَالْمَسَاكِينِ وَابْنِ السَّبِيلِ كَيْ لَا يَكُونَ دُولَةً بَيْنَ الْأَغْنِيَاءِ مِنكُمْ ۚ وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا ۚ وَاتَّقُوا اللَّهَ ۖ إِنَّ اللَّهَ شَدِيدُ الْعِقَابِ﴾
[ الحشر: 7]
আল্লাহ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রসূলকে যা দিয়েছেন, তা আল্লাহর, রসূলের, তাঁর আত্নীয়-স্বজনের, ইয়াতীমদের, অভাবগ্রস্তদের এবং মুসাফিরদের জন্যে, যাতে ধনৈশ্বর্য্য কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই পুঞ্জীভূত না হয়। রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা গ্রহণ কর এবং যা নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক এবং আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা। [সূরা হাশ্র: 7]
Surah Al-Hashr in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Hashr ayat 7
আল্লাহ্ তাঁর রসূলকে জনপদবাসীর নিকট থেকে যা-কিছু ফাও দিয়েছেন তা কিন্ত আল্লাহ্র জন্য, আর রসূলের জন্য, আর নিকট- আত্মীয়দের জন্য, আর এতীমদের ও নিঃস্বদের ও পথচারীদের জন্য, যাতে তা তোমাদের মধ্যেকার ধনীদের মধ্যেই ঘোরাঘুরির বস্তু না হয়। আর রসূল যা-কিছু তোমাদের দেন তা তবে গ্রহণ করো, আর যা-কিছু তিনি নিষেধ করেন তোমরা বিরত থাকো। আর আল্লাহ্কে ভয়ভক্তি করো, নিঃসন্দেহ আল্লাহ্ প্রতিফল দানে কঠোর।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৭. আল্লাহ কোনরূপ যুদ্ধ ব্যতিরেকে গ্রামবাসীর যে সম্পদ দ্বারা তদীয় রাসূলের উপর অনুগ্রহ করেছেন তা আল্লাহর। তিনি যার জন্য ইচ্ছা নির্ধারণ করতে পারেন। তা হলো রাসূল এবং তাঁর নিকটাত্মীয় বনু হাশিম ও বনু আব্দিল মুত্তালিবের মালিকানাধীন। তাদের জন্য এটি তাদের সাদাকা থেকে বঞ্চিত থাকার বদলা স্বরূপ। তেমনিভাবে তা হলো এতীম, দরিদ্র ও যে পথিকের সম্বল নিঃশেষিত হয়ে গিয়েছে তাদের জন্য। যাতে করে সম্পদ দরিদ্রদেরকে বাদ রেখে শুধু ধনীদের মাঝে আদান প্রদান না হয়। হে মু’মিন সম্প্রদায়! রাসূল তোমাদেরকে বিনা যুদ্ধে লব্ধ সম্পদ থেকে যা প্রদান করেন তা গ্রহণ করো এবং তিনি যা থেকে বারণ করেন তা থেকে বিরত থাকো। আর তোমরা আল্লাহর আদেশ-নিষেধ মান্য করার মাধ্যমে তাঁকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ কঠিন শাস্তিদাতা। তাই তোমরা তাঁর শাস্তিকে ভয় করো।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আল্লাহ এই জনপদবাসীদের নিকট হতে তাঁর রসূলকে ( বিনা যুদ্ধে ) যে সম্পদ দিয়েছেন, তা আল্লাহর, রসূলের, ( তাঁর ) আত্মীয়গণের এবং ইয়াতীম, অভাবগ্রস্ত ও মুসাফিরদের জন্য, যাতে তোমাদের মধ্যে যারা ধনবান শুধু তাদের মধ্যেই ধন-মাল আবর্তন না করে। আর রসূল তোমাদেরকে যা দেন, তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করেন, তা হতে বিরত থাক। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে কঠোর।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আল্লাহ্ জনপদবাসীদের কাছ থেকে তাঁর রাসূলকে 'ফায়’ হিসেবে যা কিছু দিয়েছেন তা আল্লাহ্র, রাসূলের, রাসূলের স্বজনদের, ইয়াতীমদের, মিসকীন ও পথচারীদের [ ১ ], যাতে তোমাদের মধ্যে যারা বিত্তবান শুধু তাদের মধ্যেই ঐশ্বর্য আবর্তন না করে। রাসূল তোমাদেরকে যা দেয় তা তোমারা গ্রহণ কর এবং যা থেকে তোমাদেরকে নিষেধ কর তা থেকে বিরত থাক [ ২ ] এবং তোমারা আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর; নিশ্চয় আল্লাহ্ শাস্তি দানে কঠোর। [ ১ ] أهل القرى বলে এ আয়াতে বনু নান্ধীর ও বনু কুরাইযা ইত্যাদি গোত্রকে বোঝানো হয়েছে। [ কুরতুবী, ফাতহুল কাদীরা ] [ ২ ] এ আয়াত দ্বারা সাহাবায়ে কিরাম সবসময়ই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাত যে অবশ্য পালনীয় তা বর্ণনা করতেন। আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহুর নিকট এক মহিলা এসে বলল, শুনেছি আপনিউন্ধি আঁকা ও পরচুলা ব্যবহার করা থেকে নিষেধ করেন? এটা কি আপনি আল্লাহর কিতাবে পেয়েছেন? নাকি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীসে পেয়েছেন? তিনি বললেন, অবশ্যই হ্যাঁ, আমি সেটা আল্লাহর কিতাব এবং রাসূলের সুন্নাত সব জায়গায়ই পেয়েছি। মহিলা বলল, আমি তো আল্লাহর কিতাব ঘেটে শেষ করেছি কিন্তু কোথাও পাইনি। তিনি বললেন, তবে কি তুমি তাতে وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا “ রাসূল তোমাদেরকে যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা থেকে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা থেকে বিরত থাক” এটা পাওনি? সে বললঃ হ্যাঁ, তারপর ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, পরচুলা ব্যবহারকারিনী, উল্কি অংকনকারীনী, ভ্ৰ ব্লাককারীনীর প্রতি আল্লাহ লা'নত করেছেন । [ দেখুন, বুখারী: ৪৮৮৬, ৪৮৮৭, মুসলিম: ২১২৫, আবুদাউদ: ৪১৬৯, তিরমিয়ী: ২৭৮২, নাসায়ী: ৫০৯৯, ইবনে মাজাহ: ১৯৮৯, মুসনাদে আহমাদ: ১/৪৩২ ] অনুরূপভাবে ইবনে উমর ও ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুম বলেন যে, “ তারা সাক্ষ্য দিচ্ছেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দুব্বা, হানতাম, নাকীর ও মুযাফফাত, ( এগুলো জাহেলী যুগের বিভিন্নপ্রকার মদ তৈরী করার পাত্ৰ বিশেষ ) এ কয়েক প্রকার পাত্ৰ ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন । তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজেই তিলাওয়াত করলেন, وَمَا آتَاكُمُ الرَّسُولُ فَخُذُوهُ وَمَا نَهَاكُمْ عَنْهُ فَانتَهُوا [ মুসলিমঃ ১৯৯৭, আবু দাউদঃ ৩৬৯০, নাসায়ীঃ ৫৬৪৩ ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৬-৭ নং আয়াতের তাফসীর:
ফায় কোন মালকে বলে, ওর বিশেষণ কি এবং হুকুম কি এসবের বর্ণনা এখানে দেয়া হচ্ছে। ফায় কাফিরদের ঐ মালকে বলা হয় যা তাদের সাথে যুদ্ধ করা ছাড়াই মুসলমানদের হস্তগত হয়। যেমন বানী নাযীরের ঐ মাল ছিল যার বর্ণনা উপরে গত হলো যে, মুসলমানরা ওর জন্যে তাদের অশ্বে কিংবা উষ্ট্রে আরোহণ করে যুদ্ধ করেনি। অর্থাৎ ঐ কাফিরদের সাথে সামনা-সামনি কোন যুদ্ধ হয়নি, বরং আল্লাহ তা'আলা তাদের অন্তরে ত্রাসের সঞ্চার করে দেন এবং তারা তাদের দূর্গ শূন্য করে দিয়ে মুসলমানদের কর্তৃত্বে চলে আসে। এটাকেই ফায় বলা হয়। তাদের মাল রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ )-এর দখলে এসে যায়। তিনি ইচ্ছামত ওগুলো ব্যয় করেন। সুতরাং তিনি পুণ্য ও ভাল কাজেই ওগুলো খরচ করেন, যার বর্ণনা এর পরবর্তী আয়াত এবং অন্য আয়াতে রয়েছে।তাই এখানে আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেন যে, আল্লাহ্ তা'আলা বানু নাযীরের নিকট হতে তাঁর রাসূল ( সঃ )-কে যে ফায় দিয়েছেন, তার জন্যে তোমরা ( মুসলমানরা ) অশ্বে কিংবা উষ্ট্রে আরোহণ করে যুদ্ধ করনি। আল্লাহ্ তো যার উপর ইচ্ছা তাঁর রাসূলদেরকে কর্তৃত্ব দান করে থাকেন। আল্লাহ্ সর্ববিষয়ে সর্বশক্তিমান। তাঁর উপর কারো কোন শক্তি নেই এবং কেউ তার কোন কাজে বাধাদান করারও ক্ষমতা রাখে না। বরং তিনিই সবারই উপর বিজয়ী এবং সবাই তাঁর আদেশ পালনে বাধ্য।এরপর আল্লাহ্ পাক বলেনঃ যে জনপদ এভাবে বিজিত হবে ওর মালের হুকুম এটাই যে, ওটা রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) নিজের দখলে নিয়ে নিবেন যার বর্ণনা এই আয়াতে এবং পরবর্তী আয়াতে রয়েছে। এটাই হলো ফায়-এর মালের খরচের স্থান এবং এর খরচের হুকুম। যেমন হাদীসে এসেছে যে, বানী নাযীরের মাল ফায় হিসেবে খাস করে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এরই হয়ে যায়। তা হতে তিনি স্বীয় পরিবারের লোকদেরকে সারা বছরের খরচ দিতেন এবং যা অবশিষ্ট থাকতো তা তিনি যুদ্ধাস্ত্র ও যুদ্ধের আসবাব-পত্র ক্রয়ের কাজে ব্যয় করতেন। ( এটা ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম ইবনে মাজাহ ( রঃ ) ছাড়া সুনানের অন্যান্য লেখকগণ তাদের কিতাবসমূহে এটা বর্ণনা করেছেন)হযরত মালিক ইবনে আউস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “ একদা বেলা কিছুটা উঠে যাওয়ার পর আমীরুল মুমিনীন হযরত উমার ইবনে খাত্তাব ( রাঃ ) আমাকে ডেকে পাঠান । আমি তার বাড়ীতে গিয়ে দেখি যে, তিনি একটি চৌকির উপর বসে আছেন যার উপর কাপড়, চাদর ইত্যাদি কিছুই নেই। আমাকে দেখে তিনি বলেনঃ “ তোমার কওমের কিছু লোক আমার কাছে এসেছিল । আমি তাদেরকে কিছু দিয়েছি। তুমি তা নিয়ে তাদের মধ্যে বন্টন করে দাও।” আমি বললামঃ জনাব! যদি এ কাজের দায়িত্ব অন্যের উপর অর্পণ করতেন তবে খুবই ভাল হতো। তিনি বললেনঃ “ না, তোমাকেই এ দায়িত্ব দেয়া হলো ।” আমি বললামঃ ঠিক আছে। ইতিমধ্যে ( তার দ্বাররক্ষী ) ইয়ারফা ( রাঃ ) এসে বললেনঃ “ হে আমীরুল মুমিনীন! হযরত উসমান উবনে আফফান ( রাঃ ), হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ ( রাঃ ), হযরত যুবায়ের ইবনে আওয়াম ( রাঃ ) এবং হযরত সা’দ ইবনে আবি ওয়াক্কাস ( রাঃ ) এসেছেন । তাঁদেরকে ভিতরে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছেন কি?” উত্তরে তিনি বললেনঃ “ হ্যাঁ, তাদেরকে আসতে বলো ।” তারা। আসলেন। আবার ইয়ারফা ( রাঃ ) এসে বললেনঃ “ হে আমীরুল মুমিনীন! হযরত আব্বাস ( রাঃ ) ও হযরত আলী ( রাঃ ) ভিতরে প্রবেশের অনুমতি চাচ্ছেন । হযরত উমার ( রাঃ ) বললেনঃ “ তাদেরকেও আসতে বলো ।” তাঁরা দু’জনও আসলেন। হযরত আব্বাস ( রাঃ ) বললেনঃ “ হে আমীরুল মুমিনীন! আমার মধ্যে ও এর ( হযরত আলীর রাঃ ) মধ্যে মীসাংসা করে দিন ।” পূর্বে যে চারজন বুযুর্গ ব্যক্তি এসেছিলেন তাদের মধ্য হতেও কোন একজন বললেনঃ “ হ্যাঁ, হে আমীরুল মুমিনীন! এ দুজনের মধ্যে ফায়সালা করে দিন এবং তাদের শান্তি দান করুন ।” ঐ সময় আমার ধারণা হলো যে, এই দুই বুযুর্গ ব্যক্তিই ঐ চারজন বুযুর্গ ব্যক্তিকে পূর্বে পাঠিয়েছেন। হযরত উমার ( রাঃ ) এই দু’জনকে বললেনঃ “ আপনারা থামুন ।” অতঃপর তিনি ঐ চারজন সম্মানিত ব্যক্তিকে সম্বোধন করে বলেন, যে আল্লাহর হুকুমে আকাশ ও পৃথিবী প্রতিষ্ঠিত রয়েছে। তাঁর কসম দিয়ে আমি আপনাদেরকে বলছি যে, আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) যে বলেছেনঃ ‘আমরা ( নবীরা ) কোন ওয়ারিশ রেখে যাই না, আমরা যা কিছু ( মাল-ধন ) ছেড়ে যাই তা সাদকারূপে গণ্য হয়। এটা কি আপনাদের জানা আছে?” তারা উত্তরে বললেনঃ “ হ্যাঁ ( আমাদের জানা আছে ) ।” অতঃপর তিনি হযরত আলী ( রাঃ ) ও হযরত আব্বাস ( রাঃ )-কে সম্বোধন করে বললেন, যে আল্লাহর হুকুমে আসমান ও যমীন কায়েম রয়েছে তাঁর কসম দিয়ে আমি আপনাদেরকে বলছি যে, “ আমরা কোন ওয়ারিশ রেখে যাই না, আমরা যা ছেড়ে যাই তা সাদকারূপে গণ্য হয় । রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ )-এর এ উক্তিটি আপনাদের জানা আছে কি?” তাঁরা জাবাবে বললেনঃ “ হ্যাঁ, আছে ।” তখন হযরত উমার ( রাঃ ) বললেনঃ “ আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর রাসূল ( সঃ )-এর জন্যে কিছু সম্পদ খাস করেছিলেন যা জনগণের মধ্যে কারো জন্যে খাস করেননি ।” অতঃপর তিনি ...
( আরবী )-এ আয়াতটি পাঠ করে বলেনঃ “ আল্লাহ্ তা'আলা বানী নাযীরের মাল স্বীয় রাসূল ( সঃ )-কে ফায় স্বরূপ দিয়েছিলেন । আল্লাহর কসম! না আমি এতে আপনাদের উপর অন্য কাউকেও প্রাধান্য দিয়েছি, না আমি নিজে সবই নিয়ে নিয়েছি। রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) এটা হতে তাঁর নিজের ও পরিবারবর্গের এক বছরের খরচ গ্রহণ করতেন এবং বাকীটা বায়তুল মালে জমা দিতেন। তারপর তিনি ঐ চারজন মহান ব্যক্তিকে অনুরূপভাবে আল্লাহর কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করেনঃ “ এটা কি আপনাদের জানা আছে?” তাঁরা ‘হ্যাঁ' বলে উত্তরে দেন । তারপর তিনি ঐ দুই সম্মানিত ব্যক্তিকে ঐ রূপ কসম দিয়ে জিজ্ঞেস করেন এবং তারাও উত্তরে ‘হ্যাঁ’ বলেন। অতঃপর হযরত উমার ( রাঃ ) বলেনঃ “ রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর ইন্তেকালের পর হযরত আবু বকর ( রাঃ ) খলীফা নির্বাচিত হন । তারপর আপনারা দুজন ( হযরত আলী রাঃ ও হযরত আব্বাস রাঃ ) তাঁর কাছে আসেন। হে আব্বাস ( রাঃ )! আপনি আত্মীয়তার দাবী জানিয়ে আপনার ভ্রাতুস্পুত্র ( সঃ )-এর মাল হতে আপনার মীরাস যাজ্ঞা করেন। আর ইনি অর্থাৎ হযরত আলী ( রাঃ ) নিজের প্রাপ্যের দাবী জানিয়ে স্বীয় স্ত্রী অর্থাৎ হযরত ফাতিমা ( রাঃ )-এর পক্ষ হতে তাঁর পিতা ( সঃ )-এর মালের মীরাস চেয়ে বসেন। জবাবে হযরত আবু বকর ( রাঃ ) আপনাদের দুজনকে বলেনঃ “ রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “আমরা কোন ওয়ারিশ রেখে যাই না । আমরা যা কিছু ছেড়ে যাই তা সাদকারূপে গণ্য হয়।” আল্লাহ্ তা'আলা খুব ভাল জানেন যে, হযরত আবু বকর ( রাঃ ) নিশ্চিতরূপে একজন সত্যবাদী, পুণ্যবান, হিদায়াতপ্রাপ্ত ও সত্যের অনুসারী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি যতদিন খলীফা ছিলেন ততদিন তিনি এ মালের জিম্মাদার ছিলেন। তাঁর ইন্তেকালের পর আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর খলীফা নির্বাচিত হয়েছি। তারপর ঐ মাল আমার জিম্মাদারীতে চলে আসে। এরপর এক পর্যায়ে আপনারা দু'জন আমার নিকট আগমন করেন এবং নিজেরা এই মালের জিম্মাদার হওয়ার প্রস্তাব ও দাবী জানান। জবাবে আমি আপনাদেরকে বলি যে, রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) যেভাবে এ মাল খরচ করতেন আপনারাও ঐ ভাবে খরচ করবেন এই শর্তে যদি আপনারা এই মালের জিম্মাদার হতে চান তবে আমি এটা আপনাদের হাতে সমর্পণ করতে পারি। আপনারা এটা স্বীকার করে নেন এবং আল্লাহ্ তা'আলাকে সাক্ষী রেখে আপনারা এ মালের জিম্মাদারী গ্রহণ করেন। অতঃপর এখন আপনারা আমার কাছে এসেছেন, তবে কি আপনারা এছাড়া অন্য কোন ফায়সালা চান? আল্লাহর কসম! কিয়ামত পর্যন্ত আমি এছাড়া অন্য কোন ফায়সালা করতে পারি না। হ্যাঁ, এটা হতে পারে যে, যদি আপনারা আপনাদের অঙ্গীকার অনুযায়ী এই মালের রক্ষণাবেক্ষণ ও খরচ করতে অপারগ হন তবে এর জিম্মাদারী আমাকে ফিরিয়ে দেন যাতে আমি নিজেই এটাকে ঐ রূপেই খরচ করি যেরূপে রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) খরচ করতেন এবং যেভাবে হযরত আবু বকর ( রাঃ )-এর খিলাফতের যুগে খরচ করা হতো এবং আজ পর্যন্ত হচ্ছে।” ( ইমাম আবু দাউদ (রঃ ) এটা বর্ণনা করেছেন)হযরত আনাস ইবনে মালিক ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “ জনগণ রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ )-কে তাদের গাছ ইত্যাদি প্রদান করতো । অবশেষে যখন বানী কুরাইযা ও বানী নাযীরের ধন-সম্পদ তার অধিকারভুক্ত হলো তখন রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) তাঁকে প্রদত্ত জনগণের মালগুলো তিনি জনগণকে ফিরিয়ে দিতে শুরু করলেন। তখন আমার পরিবারস্থ লোকগুলো আমাকে রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ )-এর নিকট এ কথা বলার জন্যে পাঠালো যে, তিনি যেন আমাদেরকেও আমাদের তাঁকে প্রদত্ত সম্পদগুলো ফিরিয়ে দেন। আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে একথা বললে তিনি ওগুলো আমাদেরকে ফিরিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তিনি ওগুলো তার পক্ষ হতে হযরত উম্মে আইমান ( রাঃ )-কে দিয়ে রেখেছিলেন। হযরত উম্মে আইমান ( রাঃ ) যখন জানতে পারলেন যে, এগুলো তাঁর নিকট হতে নিয়ে নেয়া হবে তখন তিনি আমার ঘাড়ের উপর কাপড় রেখে দিয়ে বললেনঃ “ যে আল্লাহ্ ছাড়া কোন মা'বূদ নেই তাঁর কসম! এগুলো আমি আপনাকে কখনই দিবো না । এগুলো তো রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) আমাকে দিয়ে রেখেছেন!” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন তাঁকে বললেনঃ “ হে উম্মে আইমান ( রাঃ )! এর বিনিময়ে আমি তোমাকে এতো এতো প্রদান করবে ( সুতরাং তোমার চিন্তার কোন কারণ নেই ) ।” কিন্তু তিনি মানলেন না, বরং ঐ কথাই বলতে থাকলেন। আবার রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) তাঁকে বললেনঃ “ তোমার জন্যে এতো এতো রয়েছে । এতেও তিনি সন্তুষ্ট হলেন না, বরং একই কথা বলতে থাকলেন। রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) পুনরায় বললেনঃ “ তোমাকে এই পরিমাণ, এই পরিমাণ দেয়া হবে । আমার ধারণা হয় যে, তিনি শেষ পর্যন্ত বললেনঃ “ তোমাকে যা দেয়া হয়েছে তার প্রায় দশগুণ দেয়া হবে, তখন তিনি খুশী হলেন এবং নীরবতা অবলম্বন করলেন । সুতরাং আমাদের মাল আমাদেরকে ফিরিয়ে দেয়া হলো।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ), ইমাম বুখারী ( রঃ ) এবং ইমাম মুসলিম ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন) ফায়-এর এই মাল যে পাঁচ জায়গায় খরচ করা হবে, গানীমতের মাল খরচ করার জায়গাও এই পাঁচটি। সূরায়ে আনফালে এর পূর্ণ তাত্রী ও তাওযীহ্ সহ পরিপূর্ণ তাফসীর আল্লাহ্ পাকের ফযল ও করমে গত হয়েছে। এ জন্যে এখানে আমরা আর এর পুনরাবৃত্তি করলাম না।এরপর মহান আল্লাহ বলেনঃ ফায়-এর মালের খরচের জায়গাগুলো আমি এজন্যেই স্পষ্টভাবে বর্ণনা করলাম যাতে তোমাদের মধ্যে যারা বিত্তবান শুধু তাদের মধ্যেই ঐশ্বর্য আবর্তন না করে। শুধু মালদারদের হাতে চলে গেলে তারা তাদের ইচ্ছামত তা খরচ করতো এবং দরিদ্রদের হাতে তা আসতো না।ইরশাদ হচ্ছেঃ আমার রাসূল ( সঃ ) তোমাদেরকে যে কাজ করতে বলে তা তোমরা কর এবং যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা হতে বিরত থাকো। তোমরা এ বিশ্বাস রাখো যে, রাসূল ( সঃ ) তোমাদেরকে যে কাজ করার আদেশ করে সেটা ভাল কাজই হয় এবং যে কাজ হতে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা নিঃসন্দেহে মন্দ কাজ।হযরত মাসরূক ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একজন মহিলা হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ )-এর নিকট এসে বলেঃ “ আমার নিকট এ খবর পৌছেছে যে, আপনি নারীদের উল্কি করা হতে ও চুলে চুল মিলিত করা হতে নিষেধ করে থাকেন, আচ্ছা বলুন তো, আপনি এটা আল্লাহর কিতাবে পেয়েছেন, অথবা রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) হতে শুনেছেন?” উত্তরে হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) বলেনঃ “হ্যাঁ, এটা আমি আল্লাহর কিতাবেও পেয়েছি এবং রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) হতেও শুনেছি ।” একথা শুনে মহিলাটি বলেঃ “ আমি গোটা কুরআন মাজীদ পাঠ করেছি, কিন্তু কোথাও তো এটা পাইনি!” তখন হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) বলেনঃ “তুমি তাতে ( আরবী ) ( রাসূল সঃ তোমাদেরকে যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ কর এবং যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা হতে বিরত থাকো ) এটা কি পাওনি?” মহিলাটি জবাবে বলেঃ “হ্যাঁ, তাতো পেয়েছি ।” তখন হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) বললেনঃ “ আমি শুনেছি যে, রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) উল্কি করা হতে, চুলে চুল মিলানো হতে এবং কপাল ও মুখমণ্ডলের চুল নূচা হতে নিষেধ করেছেন ।” মহিলাটি তখন বললোঃ “ জনাব! আপনার পরিবারের কোন কোন মহিলাও তো এরূপ করে থাকে?” তিনি তাকে বললেনঃ “তাহলে তুমি আমার বাড়ীর ভিতরে প্রবেশ করে দেখে এসো ।” সে। গেল এবং দেখে এসে বললোঃ “ জনাব! আমাকে ক্ষমা করুন! আমি ভুল বলেছি । উপরোক্তে কোন দোষ আপনার পরিবারের কোন মহিলার মধ্যে আমি দেখতে পেলাম না।” তখন হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) মহিলাটিকে বললেনঃ “ তুমি কি ভুলে গিয়েছে যে, আল্লাহর সৎ বান্দা ( হযরত আয়েব আঃ ) বলেছিলেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “আমি এটা চাই না যে, যা হতে আমি তোমাদেরকে বিরত রাখছি আমি নিজে তার বিপরীত করবে ।” ( ১১:৮৮ ) ( এটা ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত আলকামা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) বলেনঃ “ আল্লাহ্ তা'আলা অভিসম্পাত বর্ষণ করেন ঐ নারীদের উপর যারা উল্কি করায় ও যারা উল্কি করে, যারা তাদের কপালের চুল নূচে এবং যারা নিজেদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্যে তাদের সামনের দাঁতগুলোর প্রশস্ততা সৃষ্টি করে এবং আল্লাহর তৈরীকৃত সৃষ্টির পরিবর্তন ঘটায় ।” তার এ কথা শুনে বানী আসাদ গোত্রের উম্মে ইয়াকুব নাম্নী একটি মহিলা তাঁকে জিজ্ঞেস করেঃ “ আপনি কি এরূপ কথা বলেছেন?” উত্তরে তিনি বলেনঃ “আল্লাহর রাসূল ( সঃ ) যার উপর লা'নত করেছেন, আমি কেন তার উপর লা'নত করবে না? আর যা কুরআন কারীমে বিদ্যমান রয়েছে?” মহিলাটি বললোঃ “আমি কুরআন কারীমের প্রথম হতে শেষ পর্যন্ত সবই পাঠ করেছি, কিন্তু আমি কোথাও তো এ হুকুম পাইনি?” তিনি বললেনঃ “তুমি যদি বুঝে ও চিন্তা করে পাঠ করতে তবে অবশ্যই তা পেতে । আল্লাহ্ তা'আলার উক্তিটি কি তুমি কুরআন কারীমে পাওনি?” সে জবাবে বললোঃ “ হ্যাঁ, এটা তো পেয়েছি!” তারপর তিনি তাকে ঐ হাদীসটি শুনিয়ে দেন । তখন সে তাঁকে বললোঃ “ আমার ধারণা যে, আপনার পরিবারের লোকও এই রূপ করে থাকে ।” তিনি তাকে বললেনঃ “ তুমি ( আমার বাড়ীতে ) যাও এবং দেখে এসো!” সে গেল, কিন্তু সে যা ধারণা করেছিল তার কিছুই দেখলো না । সুতরাং সে ফিরে এসে বললোঃ “ আমি কিছুই দেখতে পেলাম না ।” তিনি তখন বললেনঃ “ যদি আমার গৃহিণী এরূপ করতো তবে অবশ্যই আমি তাকে ছেড়ে দিতাম ।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন এবং ইমাম বুখারী ( রঃ ) ও ইমাম মুসলিম( রঃ ) তাঁদের সহীহ গ্রন্থদ্বয়ে এটা তাখরীজ করেছেন)হযরত আবু হুরাইরা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আমি যখন তোমাদেরকে কোন নির্দেশ দিই তখন তোমরা তোমাদের সাধ্যমত তা পালন করবে এবং যখন তোমাদেরকে কোন কিছু হতে নিষেধ করি তখন তোমরা তা হতে বিরত থাকবে ।” ( এ হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ ) ও ইমাম মুসলিম ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত উমার ( রাঃ ) ও হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ্ ( সঃ ) কদুর খোলের তৈরী পাত্রে, সবুজ রং এর কলসে, আলকাতরার রঙ এ রঞ্জিত পাত্রে এবং কাঠে খোদাইকৃত পাত্রে নবীয তৈরী করতে অর্থাৎ খেজুর, কিসমিস্ ইত্যাদি ভিজিয়ে রাখতে নিষেধ করেছেন। অতঃর তাঁরা ( আরবী ) এই আয়াতটিই পাঠ করেন। ( এ হাদীসটি ইমাম নাসাঈ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)এরপর আল্লাহ্ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলেনঃ শাস্তি হতে রক্ষা পাওয়ার জন্যে তোমরা আল্লাহকে ভয় করতঃ তার নির্দেশাবলী মেনে চল এবং তাঁর নিষিদ্ধ বস্তুসমূহ হতে দূরে থাকো। জেনে রেখো যে, যারা তাঁর নাফরমানী ও বিরুদ্ধাচরণ করে এবং তিনি যা করতে নিষেধ করেছেন তা করে তাদেরকে তিনি কঠোর শাস্তি দেন এবং দুঃখের মার মারেন।
সূরা হাশ্র আয়াত 7 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- যেন তারা ইতস্ততঃ বিক্ষিপ্ত গর্দভ।
- তাদের অন্তরে যে ক্রোধ ছিল, আমি তা দূর করে দেব। তারা ভাই ভাইয়ের মত সামনা-সামনি
- কোন মানুষের জন্য এমন হওয়ার নয় যে, আল্লাহ তার সাথে কথা বলবেন। কিন্তু ওহীর মাধ্যমে
- সে প্রশ্ন করে-কেয়ামত দিবস কবে?
- তোমরা যে বিষয়েই মতভেদ কর, তার ফয়সালা আল্লাহর কাছে সোপর্দ। ইনিই আল্লাহ আমার পালনকর্তা আমি
- নিশ্চয় তাদের প্রত্যাবর্তন আমারই নিকট,
- আর আমি তোমাদেরকে বলি না যে, আমার কাছে আল্লাহর ভান্ডার রয়েছে এবং একথাও বলি না
- তাদের এই আর্তনাদ সব সময় ছিল, শেষ পর্যন্ত আমি তাদেরকে করে দিলাম যেন কর্তিত শস্য
- অতএব, আল্লাহর রহমতের ফল দেখে নাও, কিভাবে তিনি মৃত্তিকার মৃত্যুর পর তাকে জীবিত করেন। নিশ্চয়
- সেদিন তার কোন শক্তি থাকবে না এবং সাহায্যকারীও থাকবে না।
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হাশ্র ডাউনলোড করুন:
সূরা Al Hashr mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Hashr শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers