কোরান সূরা হাজ্জ আয়াত 70 তাফসীর
﴿أَلَمْ تَعْلَمْ أَنَّ اللَّهَ يَعْلَمُ مَا فِي السَّمَاءِ وَالْأَرْضِ ۗ إِنَّ ذَٰلِكَ فِي كِتَابٍ ۚ إِنَّ ذَٰلِكَ عَلَى اللَّهِ يَسِيرٌ﴾
[ الحج: 70]
তুমি কি জান না যে, আল্লাহ জানেন যা কিছু আকাশে ও ভুমন্ডলে আছে এসব কিতাবে লিখিত আছে। এটা আল্লাহর কাছে সহজ। [সূরা হাজ্জ: 70]
Surah Al-Hajj in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Hajj ayat 70
তুমি কি জান না যে মহাকাশে ও পৃথিবীতে যা-কিছু আছে সে-সবই আল্লাহ্ জানেন? নিঃসন্দেহ এটি আল্লাহর জন্যে সহজ ব্যাপার।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৭০. হে রাসূল! আপনি কি জানেন না যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা আকাশ ও জমিনের সবকিছুই জানেন। এগুলোর মধ্যকার কোন কিছুই তাঁর নিকট গোপন নয়। এর জ্ঞান লাওহে মাহফ‚যে তথা তাঁর সংরক্ষিত বালামে লিপিবদ্ধ আছে। এ সকলের জ্ঞান সত্যিই আল্লাহর নিকট অতি সহজ।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
তুমি কি জানো না যে, আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে আল্লাহ তা অবগত আছেন? এ সবই লিপিবদ্ধ আছে এক কিতাবে। অবশ্যই এটা আল্লাহর নিকট সহজ। [১] [১] এখানে মহান আল্লাহ নিজের জ্ঞানের পরিপূর্ণতা এবং তার মাধ্যমে সমস্ত সৃষ্টিকে বেষ্টন করার কথা বর্ণনা করেছেন। অর্থাৎ, তাঁর সৃষ্টি যে যা করবে তার জ্ঞান আল্লাহর পূর্ব হতেই ছিল। যে সব মানুষ স্বেচ্ছায় সৎপথ অবলম্বন করবে এবং যারা স্বেচ্ছায় পাপের পথে চলবে তা তিনি আগেই জানতেন। সুতরাং সেই জ্ঞান অনুসারে এ সমস্ত জিনিস তিনি আগেই লিখে রেখেছেন। আর মানুষের কাছে এ কথা যতই কঠিন মনে হোক না কেন, আল্লাহর জন্য তা একদম সহজ। আর এটিই হল ভাগ্যের বিষয়, যার উপর ঈমান আনা একান্ত জরুরী। যাকে হাদীসে এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে যে, মহান আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টির পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে যখন তাঁর আরশ ছিল পানির উপর তখন সৃষ্টিকুলের ভাগ্য লিপিবদ্ধ করেছেন। ( মুসলিম, তকদীর অধ্যায় ) আর সুনানের বর্ণনাগুলোতে এসেছে, রাসুলুল্লাহ ( সাঃ ) বলেছেন, " মহান আল্লাহ সর্বপ্রথম কলম সৃষ্টি করেন এবং বলেন, লেখ। কলম বলল, কি লিখব? মহান আল্লাহ বললেন, ( কিয়ামত পর্যন্ত ) যা কিছু ঘটবে সব কিছু লিখে ফেল। সুতরাং কলম আল্লাহর আদেশে কিয়ামত পর্যন্ত যা ঘটবে তা লিখে ফেলল। " ( আহমাদ ৫/৩১৭ আবূ দাঊদ, তিরমিযী )
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
আপনি কি জানেন না যে, আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে আল্লাহ্ তা জানেন। এসবই তো আছে এক কিতাবে [ ১ ]; নিশ্চয় তা আল্লাহ্র নিকট অতি সহজ। [ ১ ] আল্লাহ্ তা'আলা এখানে তাঁর সৃষ্টিকুল সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞানের কথা জানাচ্ছেন। আর এও জানাচ্ছেন যে, আসমান ও যমীনের সবকিছুকে তাঁর জ্ঞান ঘিরে আছে। তা থেকে ছোট কিংবা বড় সামান্যতম জিনিসও বাদ পড়ে না। তিনি সৃষ্টিকুলের সবকিছু সেগুলোর অস্তিত্বের আগ থেকেই জানেন। আর তিনি সেগুলো লাওহে মাহফূযে লিখে রেখেছেন। যেমন হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ আল্লাহ্ আসমান ও যমীন সৃষ্টি করার পঞ্চাশ হাজার বছর আগেই সৃষ্টিকুলের তাকদীর লিখে রেখেছেন । আর তখন তাঁর আরশ ছিল পানির উপর”। [ মুসলিমঃ ২৬৫৩ ] অন্য হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “ আল্লাহ্ যখন কলম সৃষ্টি করলেন, তখন তাকে বললেন, লিখ । কলম বলল, কি লিখব? আল্লাহ্ বললেন, যা হবে সবই লিখ। তখন কিয়ামত পর্যন্ত যা হবে তা লিখতে কলম চালু হল।” [ মুসনাদে আহমাদঃ ৫/৩১৭ ] এ সবই আল্লাহ্র পূর্ণ জ্ঞানের প্রমাণ যে, তিনি সবকিছু হওয়ার আগেই তা জানেন। আর তিনি সেটা নির্ধারণ করেছেন এবং লিখে রেখেছেন। সুতরাং বান্দারা যা করবে, কিভাবে করবে সেটা তাঁর জ্ঞানে পূর্ব থেকেই বিদ্যমান। সৃষ্টির আগেই জানেন যে, এ সৃষ্টি তার ইচ্ছা অনুসারে আমার আনুগত্য করবে, আর এ সৃষ্টি তার ইচ্ছা অনুসারে আমার অবাধ্য হবে। আর তিনি সেটা লিখে রেখেছেন এবং জ্ঞানে সবকিছু পরিবেষ্টন করে আছেন। এটা তাঁর জন্য সহজ ও অনায়াসসাধ্য। [ ইবন কাসীর ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
আল্লাহ তাআলা স্বীয় জ্ঞানের পূর্ণতার খবর দিচ্ছেন। আসমান ও যমীনের সমস্ত কিছু তাঁর জ্ঞানের পরিবেষ্টনের মধ্যে রয়েছে। এক অনুপরিমাণ জিনিসও এর বাইরে নেই। জগতের অস্তিত্বের পূর্বেই জগতের জ্ঞান তাঁর ছিল। এমন কি এটা তিনি লাওহে মাহফুজে লিখিয়ে নিয়েছিলেন।হযরত আবদুল্লাহ ইবনু আমর ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আল্লাহ তাআলা, আসমান ও যমীনকে সৃষ্টি করার পঞ্চাশ হাজার বছর পূর্বে, যখন তাঁর আশ পানির উপর ছিল, সৃষ্ট জীবের তকদীর তিনি লিখিয়ে নিয়েছিলেন ।” ( এ হাদীসটি সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে )সাহাবীদের একটি দল হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ আল্লাহ তাআলা সর্বপ্রথম কলম সৃষ্টি করেন । অতঃপর ওকে বলেনঃ “ লিখো ।” কলম জিজ্ঞেস করেঃ “ কি লিখবো?” উত্তরে আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “( আগামীতে ) যা কিছু হবে সবই লিখে নাও ।” তখন কিয়ামত পর্যন্ত যা কিছু হবার ছিল কলম তা সবই লিখে নেয়।” ( এ হাদীসটি বর্ণিত আছে সুনানের হাদীস গ্রন্থে )হযরত ইবনু আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ “ একশ’ বছরের পথে ( এক শ' বছরের পথের জায়গাব্যাপী ) আল্লাহ তাআলা লাওহে মাহফুজ সৃষ্টি করেন । আর মাখলুক সৃষ্টি করার পূর্বে যখন আল্লাহ তাআলার আরশ পানির উপর ছিল, কলমকে লিখার নির্দেশ দেন। কলম জিজ্ঞেস করে। “ কি লিখবো?” উত্তরে তিনি বলেনঃ কিয়ামত পর্যন্ত সমস্ত মাখলুক সম্পর্কে আমার যে ইলম বা জ্ঞান রয়েছে তা সবই লিপিবদ্ধ কর ।” তখন কল লিখতে শুরু করে এবং কিয়ামত পর্যন্ত যত কিছু সৃষ্ট হওয়ার আল্লাহর ইলমে ছিল তা সবই লিখে নেয়। এটাকেও মহান আল্লাহ স্বীয় নবীকে ( সঃ ) এই আয়াতে বলছেনঃ তুমি কি জান না যে, আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু রয়েছে আল্লাহ তা অবগত আছেন? এটা তাঁর জ্ঞানের পরিপূর্ণতা যে, জিনিসের অস্তিত্বের পূর্বেই ওটা সম্পর্কে তার পূর্ণ অবগতি ছিল এমন কি সবকিছু তিনি লিখেও নিয়েছেন। ঐ সব কিছুই বাস্তব ক্ষেত্রে হতে আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত হতে থাকবে। বান্দাদের সমস্ত আমলের অবগতি তাদের আমলের পূর্বেই আল্লাহর ছিল তারা যা কিছু করবে, তাদের করার পূর্বেই তিনি সম্যক অবগত ছিলেন। প্রত্যেক ফরমাবরদার ও নাফরমান তাঁর অবগতিতে ছিল। আর সবই ছিল তাঁর কিতাবে লিপিবদ্ধ। সবকিছুই তার জ্ঞানের আওতার মধ্যেই ছিল। তাঁর কাছে এটা মোটেই কঠিন ছিল না। এটা তার কাছে খুবই সহজ।
সূরা হাজ্জ আয়াত 70 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তারা জিজ্ঞাসা করে, কেয়ামত কবে হবে?
- আমি তোমাদের বিশ্বস্ত পয়গম্বর।
- অবশেষে তিনি যখন সুর্যের অস্তাচলে পৌছলেন; তখন তিনি সুর্যকে এক পঙ্কিল জলাশয়ে অস্ত যেতে দেখলেন
- তিনি যদি রিযিক বন্ধ করে দেন, তবে কে আছে, যে তোমাদেরকে রিযিক দিবে বরং তারা
- সে বলল, এই জনপদে তো লূতও রয়েছে। তারা বলল, সেখানে কে আছে, তা আমরা ভাল
- অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয়
- হা-মীম।
- যেদিন কেয়ামত সংঘটিত হবে, সেদিন মানুষ বিভক্ত হয়ে পড়বে।
- অতঃপর আল্লাহ যাকে পথ-প্রদর্শন করতে চান, তার বক্ষকে ইসলামের জন্যে উম্মুক্ত করে দেন এবং যাকে
- আর প্রীতি সঞ্চার করেছেন তাদের অন্তরে। যদি তুমি সেসব কিছু ব্যয় করে ফেলতে, যা কিছু
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা হাজ্জ ডাউনলোড করুন:
সূরা Hajj mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Hajj শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers