কোরান সূরা আলে-ইমরান আয়াত 77 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Al Imran ayat 77 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা আলে-ইমরান আয়াত 77 আরবি পাঠে(Al Imran).
  
   

﴿إِنَّ الَّذِينَ يَشْتَرُونَ بِعَهْدِ اللَّهِ وَأَيْمَانِهِمْ ثَمَنًا قَلِيلًا أُولَٰئِكَ لَا خَلَاقَ لَهُمْ فِي الْآخِرَةِ وَلَا يُكَلِّمُهُمُ اللَّهُ وَلَا يَنظُرُ إِلَيْهِمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلَا يُزَكِّيهِمْ وَلَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ﴾
[ آل عمران: 77]

যারা আল্লাহর নামে কৃত অঙ্গীকার এবং প্রতিজ্ঞা সামান্য মুল্যে বিক্রয় করে, আখেরাতে তাদের কেন অংশ নেই। আর তাদের সাথে কেয়ামতের দিন আল্লাহ কথা বলবেন না। তাদের প্রতি (করুণার) দৃষ্টিও দেবেন না। আর তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না। বস্তুতঃ তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব। [সূরা আলে-ইমরান: 77]

Surah Al Imran in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Al Imran ayat 77


নিঃসন্দেহ যারা আল্লাহ্‌র অঙ্গীকার ও তাদের প্রতি‌শ্রুতি স্বল্পমূল্যে বিক্রী করে দেয়, তারা -- পরকালে তাদের জন্য কোনো ভাগ থাকবে না, আর আল্লাহ্ তাদের সঙ্গে কথাও বলবেন না বা তাদের দিকে তাকাবেন না কিয়ামতের দিনে, আর তিনি তাদের শুদ্ধও করবেন না, আর তাদের জন্য থাকছে কঠোর যাতনা।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৭৭. নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান ও তাঁর রাসূলদের আদর্শ মানার ওসিয়ত এবং আল্লাহর অঙ্গীকার পূরণের শপথ ভঙ্গ করে দুনিয়া ভোগের কিছু বিনিময় গ্রহণ করেছে তাদের জন্য আখিরাতের সাওয়াবের কোন কিছুই নেই। না তাদের সাথে আল্লাহ তা‘আলা সন্তোষজনক কোন কথা বলবেন। না কিয়ামতের দিন তিনি তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টি দিবেন। বরং তাদের জন্য রয়েছে অপরিসীম যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


যারা আল্লাহর প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথকে স্বল্প মূল্যে বিক্রয় করে, পরকালে তাদের কোন অংশ নেই। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, আর তাদের দিকে চেয়ে দেখবেন না এবং তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।[১] [১] উল্লিখিত লোকদের বিপরীত যারা, তাদের অবস্থা বর্ণনা করা হচ্ছে। এরা হল দুই শ্রেণীর লোক। এক শ্রেণীর লোক এমন যারা আল্লাহর সাথে কৃত অঙ্গীকার এবং নিজেদের কসমের কোন পরোয়া না করে দুনিয়ার সামান্য স্বার্থের খাতিরে নবী করীম ( সাঃ )-এর উপর ঈমান আনেনি। আর দ্বিতীয় শ্রেণীর লোক হল এমন যারা মিথ্যা কসম খেয়ে নিজেদের মাল বিক্রি করে অথবা কারো মাল আত্মসাৎ করে। যেমন, হাদীসে নবী করীম ( সাঃ ) বলেছেন, " যে ব্যক্তি কারো সম্পদ আত্মসাৎ করার জন্য মিথ্যা কসম খায়, সে আল্লাহর সাথে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করবে যে, তিনি তার উপর ক্রোধান্বিত থাকবেন। " ( বুখারী ৭৪৪৫, মুসলিম ১৩৭নং ) অনুরূপ তিনি বলেছেন, " তিন ব্যক্তির সাথে মহান আল্লাহ কথা বলবেন না, তাদের প্রতি দৃষ্টিপাত করবেন না, তাদেরকে পবিত্র করবেন না এবং তাদের জন্য হবে কঠিন শাস্তি। তাদের মধ্যে একজন হল এমন ব্যক্তি যে মিথ্যা কসম দ্বারা নিজের পণ্যসামগ্রী বিক্রি করে। " ( মুসলিম ১০৬নং ) আরো বিভিন্ন হাদীসে এ কথা বর্ণিত হয়েছে। ( ইবনে কাসীর-ফাতহুল ক্বাদীর )

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


নিশ্চয় যারা আল্লাহ্‌র সাথে করা প্রতিশ্রুতি এবং নিজেদের শপথের বিনিময়ে তুচ্ছ মূল্য খরিদ করে, আখেরাতে তাদের কোন অংশ নেই []। আর আল্লাহ্‌ তাদের সাথে কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে তাকাবেন না কেয়ামতের দিন। আর তাদেরকে পরিশুদ্ধও করবেন না; এবং তাদের জন্য রয়েছে মর্মন্তুদ শাস্তি []। [] আব্দুল্লাহ ইবনে আবি আওফা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেনঃ এক ব্যক্তি তার পণ্য বিক্রির উদ্দেশ্যে বাজারে দাঁড়িয়ে শপথ করে বলল, ‘আল্লাহ্‌র শপথ! আমাকে এর চেয়ে বেশী মূল্য দিতে চেয়েছিল’ অথচ তা সত্য ছিল না, তার উদ্দেশ্য হচ্ছে, কোন মুসলিমকে বিভ্রান্ত করে তার পণ্য গ্রহণ করতে উদ্ধুদ্ধ করা। তখন এ আয়াত নাযিল হল। [ বুখারীঃ ২০৮৮ ] আব্দুল্লাহ ইবনে আবি আওফা বলেন, দালালমাত্রই সুদখোর ও খেয়ানতকারী। [ বুখারী ] অন্য বর্ণনায় এসেছে, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তিন শ্রেণীর লোকের প্রতি আল্লাহ্‌ কিয়ামতের দিন তাকাবেন না, তাদেরকে পবিত্রও করবেন না। আর তাদের জন্য রয়েছে মর্মম্ভদ শাস্তি। এক.
কোন লোকের অতিরিক্ত পানি থাকা সত্বেও কোন মুসাফিরকে দিতে নিষেধ করেছে। দুই.
কোন লোক রাষ্ট্রপ্রধানের হাতে কেবলমাত্র দুনিয়ালাভের জন্যই আনুগত্যের অঙ্গীকার করেছে। ফলে তাকে দুনিয়ার কোন সম্পদ দেয়া হলে সে সন্তুষ্ট থাকে, না দেয়া হলে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে। তিন.
ঐ ব্যক্তি যে আসরের পরে তার পণ্য বিক্রির জন্য বিছিয়ে নিয়েছে, তারপর বলতে থাকে যে, আল্লাহ্‌র শপথ! আমাকে ( পূর্বে ) এ পণ্যের জন্য এত এত দেয়ার কথা বলেছে ( অর্থাৎ লোকেরা এর দাম এত এত বলেছে )। আর এটা শুনে কোন লোক তাকে সত্যবাদী মনে করে নিয়েছে ( এবং তা ক্রয় করে নিয়েছে )। তারপর তিনি আলোচ্য আয়াত তেলাওয়াত করলেন। [ বুখারী: ২৩৫৮; মুসলিম: ১০৮ ] অন্য বর্ণনায় এসেছে, আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ্‌ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ কেউ যদি জেনে-বুঝে কোন মুসলিমের সম্পদ কুক্ষিগত করার মানসে মিথ্যা শপথ করে, সে আল্লাহ্‌র সাথে ক্রোধাম্বিত অবস্থায় সাক্ষাত করবে” তখন আল্লাহ্‌ তাঁর নবীর সত্যায়নের জন্য উপরোক্ত আয়াত নাযিল করেন। [ বুখারী: ৪৫৪৯, ৪৫৫০; মুসলিম: ১৩৩৮ ] [] আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দু পক্ষের মধ্যে যা সাব্যস্ত হয় এবং যা পূর্ণ করা উভয় পক্ষের জন্য জরুরী, এমন বিষয়কে অঙ্গীকার বলা হয়। ওয়াদা শুধু এক পক্ষ থেকৈ হয়। অতএব, অঙ্গীকার ব্যাপক এবং ওয়াদা সীমিত। কুরআন ও সুন্নায় অঙ্গীকার পূর্ণ করার প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। উপরোল্লেখিত আয়াতে অঙ্গীকার ভঙ্গকারীর বিরুদ্ধে পাঁচটি সতর্ক বাণী উচ্চারিত হয়েছেঃ ( এক ) জান্নাতের নেয়ামতসমূহে তার কোন অংশ নেই। ( দুই ) আল্লাহ্ তা’আলা তার সাথে অনুকম্পাসূচক কথা বলবেন না। ( তিন ) কেয়ামতের দিন আল্লাহ্ তা’আলা তাকে রহমতের দৃষ্টিতে দেখবেন না। ( চার ) আল্লাহ্ তা’আলা তার পাপ মার্জনা করবেন না। কেননা, অঙ্গীকার ভঙ্গের কারণে বান্দার হক নষ্ট হয়েছে। বান্দার হক নষ্ট করলে আল্লাহ্‌ মার্জনা করেন না। ( পাঁচ ) তাকে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি দেয়া হবে।

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


অর্থাৎ গ্রন্থধারীদের মধ্যে যারা আল্লাহর অঙ্গীকারের কোন ধার ধারে না, রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর অনুসরণ করে না, তার গুণাবলীর কথা জনগণের সামনে প্রকাশ করে না, তার সম্পর্কে কিছুই বর্ণনা করে না এবং মিথ্যা শপথ করে থাকে আর এসব জঘন্য কার্যের বিনিময়ে এ নশ্বর জগতে কিছু উপকার লাভ করে, তাদের জন্য পরকালে কোন অংশ নেই। আল্লাহ তা'আলা তাদের সাথে কোন ভালবাসাপূর্ণ কথা বলবেন না এবং তাদের প্রতি করুণার দৃষ্টিতে দেখবেন না। তাদেরকে তিনি পাপ হতে পবিত্রও করবেন না, রবং তাদেরকে জাহান্নামে প্রবেশ করিয়ে দেয়ার নির্দেশ দেবেন। তথায় তারা বেদনাদায়ক শাস্তি ভোগ করতে থাকবে। এ আয়াত সম্পর্কে বহু হাদীসও রয়েছে। ঐগুলোর মধ্যে সামান্য কয়েকটি হাদীস এখানে বর্ণনা করা হচ্ছেঃ( ১ ) মুসনাদ-ই-আহমাদের মধ্যে রয়েছে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ তিন প্রকারের লোক রয়েছে যাদের সঙ্গে আল্লাহ তাআলা না কথা বলবেন, না । তাদের দিকে করুণার দৃষ্টিতে তাকাবেন আর না তাদেরকে পবিত্র করবেন। একথা শুনে হযরত আবু যার ( রাঃ ) বলেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! এ লোকগুলো কে? এরা তো বড় ক্ষতির মধ্যে রয়েছে । রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তিনবার একথাই বলেন। অতঃপর তিনি উত্তর দেনঃ ১.
যে ব্যক্তি পায়ের গিটের নীচে কাপড় ঝুলিয়ে দেয়, ২.
মিথ্যা শপথ করে যে নিজের পণ্য বিক্রি করে এবং ৩, অনুগ্রহ করার পরে যে তা প্রকাশ করে। সহীহ মুসলিম প্রভৃতির মধ্যে এ হাদীসটি রয়েছে। ( ২ ) মুসনাদ-ই-আহমাদের মধ্যে হযরত আবু আহমাস ( রঃ ) হতে বর্ণিত আছে, তিনি বলেনঃ “ আমি হযরত আবু যার ( রাঃ )-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতঃ তাঁকে বলি-আমি শুনেছি যে, আপনি নাকি রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হতে একটি হাদীস বর্ণনা করে থাকেন? তিনি বলেন, জেনে রাখুন যে, আমি রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হতে যা শুনি সে ব্যাপারে আমি তার উপর মিথ্যা আরোপ করতে পারি না । বলুন, ঐ হাদীসটি কি? আমি বলি, ( তা হচ্ছে ) তিন প্রকারের লোককে আল্লাহ তা'আলা বন্ধুরূপে গ্রহণ করেন এবং তিন প্রকারের লোকের প্রতি শত্রুতা পোষণ করেন। তখন তিনি বলেনঃ হ্যা, এ হাদীসটি আমি বর্ণনাও করেছি এবং রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) হতে শুনেছিও বটে।' আমি জিজ্ঞেস করি, কোন কোন্ লোককে তিনি বন্ধুরূপে গ্রহণ করেন। তিনি বলেনঃ ‘প্রথম ঐ ব্যক্তি যে আল্লাহ তা'আলার শত্রুদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বীরত্বের সাথে যুদ্ধক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে যায়। অতঃপর হয় সে বক্ষ বিদীর্ণ করিয়ে দেয়, না হয় বিজয়ী বেশে ফিরে আসে। দ্বিতীয় ঐ ব্যক্তি যে কোন যাত্রী দলের সাথে সফররত হয়েছে। বহু রাত পর্যন্ত যাত্রী দল চলতে থাকে। যখন অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন এক জায়গায় অবতরণ করে। সবাই তো ঘুমিয়ে পড়ে কিন্তু ঐ লোকটি জেগে থাকে এবং নামাযে মশগুল হয়ে পড়ে। অতঃপর যাত্রার সময় সকলকে জাগিয়ে দেয়। তৃতীয় ঐ ব্যক্তি যার প্রতিবেশী তাকে কষ্ট দেয় এবং সে ধৈর্যধারণ করে, যে পর্যন্ত না মৃত্যু অথবা সফর তাদের মধ্যে বিচ্ছিন্নতা আনয়ন করে। আমি বলিঃ ঐ তিন ব্যক্তি কারা যাদের উপর আল্লাহ অসন্তুষ্ট? তিনি বলেনঃ ১.
খুব বেশী শপথকারী ব্যবসায়ী, ২.
অহংকারী দরিদ্র এবং ৩.
অনুগ্রহ প্রকাশকারী কৃপণ। এ হাদীসটি এ সনদে গারীব।( ৩ ) মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে যে, কিন্দা গোত্রের ইমরুল কায়েস নামক একটি লোকের সঙ্গে হায়রে মাউতের একটি লোকের জমিজমা নিয়ে বিবাদ ছিল। এটা রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সামনে পেশ করা হলে তিনি বলেনঃ “ হারামী ব্যক্তি প্রমাণ উপস্থিত করুক । তার নিকট কোন প্রমাণ ছিল না। তখন। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ ‘কিন্দী ব্যক্তি শপথ গ্রহণ করুক।' তখন হাযরামী লোকটি বলেঃ আপনি যখন তার শপথের উপরেই ফায়সালা করলেন তখন কা’বার প্রভুর শপথ করে আমি বলতে পারি যে, সে আমার জমি নিয়ে নেবে।' তিনি বলেনঃ “ যে ব্যক্তি মিথ্যা কসম খেয়ে কারও মাল নিজের করে নেবে সে যখন আল্লাহ তা'আলার সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে তখন আল্লাহ পাক তার প্রতি অসন্তুষ্ট হবেন । অতঃপর রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এ আয়াতটি পাঠ করেন। তখন ইমরুল কায়েস বলেঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! যদি কেউ তার দাবী ছেড়ে দেয় তবে সে তার কি প্রতিদান পাবে?' রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেন: ‘জান্নাত সে বলেঃ হে আল্লাহর রাসূল! আপনি সাক্ষী থাকুন যে, আমি তাকে সমস্ত ভূমি ছেড়ে দিলাম। এ হাদীসটি সুনান-ই-নাসাঈর মধ্যেও রয়েছে। ( ৪ ) “ যে ব্যক্তি কারও সম্পদ ছিনিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে মিথ্যা শপথ করে, সে যখন আল্লাহ পাকের সাথে সাক্ষাৎ করবে তখন আল্লাহ তাআলা তাঁর প্রতি অত্যন্ত ক্রোধান্বিত হবেন । হযরত আশআস ( রাঃ ) বলেনঃ আল্লাহর শপথ! এটা আমারই সম্বন্ধে। আমারও একজন ইয়াহূদীর মধ্যে ভাগে এক খণ্ড ভূমি ছিল। সে আমার অংশ অস্বীকার করে বসে। আমি ঘটনাটি রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর নিকট বর্ণনা করি। তিনি আমাকে বলেনঃ “ তোমার নিকট কোন প্রমাণ আছে কি? আমি বলিঃ না । তিনি ইয়াহূদীকে শপথ করতে বলেন। আমি বলিঃ হে আল্লাহর রাসূল! এ ব্যক্তি শপথ করে আমার মাল নিয়ে যাবে। তখন আল্লাহ তা'আলা এ আয়াত অবতীর্ণ করেন। এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের মধ্যেও রয়েছে।( ৫ ) মুসনাদ-ই-আহমাদের মধ্যে হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ যে ব্যক্তি কোন মুসলমানের মাল অন্যায়ভাবে গ্রহণ করবে সে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে এমন অবস্থায় সাক্ষাৎ করবে যে, আল্লাহ পাক তার প্রতি অসন্তুষ্ট থাকবেন । এমন সময় তথায় হযরত আশআস ইবনে কায়েস ( রাঃ ) আগমন করেন এবং বলেনঃ আবু আব্দির রহমান আপনার নিকট কি হাদীস বর্ণনা করেন? আমি দ্বিতীয় বার বর্ণনা করি। তখন তিনি বলেনঃ এ হাদীসটি রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমার ব্যাপারেই বর্ণনা করেছেন। আমার এবং আমার এক চাচাতো ভাইয়ের মধ্যে একটি কূপ নিয়ে বিবাদ ছিল। কূপটি তারই অধিকারে ছিল। রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সামনে আমরা এ মামলা নিয়ে গেলে তিনি আমাকে বলেনঃ তুমি প্রমাণ উপস্থিত কর যে, কূপটি তোমারই, নতুবা তার শপথের উপরেই ফায়সালা হবে। আমি বলিঃ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমার নিকট তো কোন প্রমাণ নেই, আর যদি তার শপথের উপরে নির্ভর করে মীমাংসা করা হয় তবে সে আমার কূপ নিয়ে নেবে। আমার প্রতিদ্বন্দ্বী তো দুশ্চরিত্র ব্যক্তি। সে সময় রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) এ হাদীসটি বর্ণনা করতঃ এ আয়াতটি পাঠ করেন।( ৬ ) মুসনাদ-ই-আহমাদে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা'আলার বান্দাদের মধ্যে কতক বান্দা এমনও রয়েছে যাদের সঙ্গে তিনি কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না এবং তাদের দিকে দেখবেন না । জিজ্ঞেস করা হয়ঃ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! তারা কে? তিনি বলেনঃ “ স্বীয় বাপ-মার প্রতি অসন্তোষ ও অনাগ্রহ প্রকাশকারী ছেলে, ছেলের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশকারী ও তার নিকট হতে বিচ্ছিন্নতা অবলম্বনকারী বাপ এবং ঐ ব্যক্তি যার উপর কোন গোত্রের অনুগ্রহ রয়েছে কিন্তু সে তা অস্বীকার করে এবং নিজেকে ওটা হতে মুক্ত মনে করতঃ তাদের দিক হতে চক্ষু ফিরিয়ে নেয় ।( ৭ ) মুসনাদ-ই-ইবনে আবি হাতিমে রয়েছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আবি আওফা ( রাঃ ) বর্ণনা করেনঃ “ একটি লোক স্বীয় পণ্য দ্রব্য বাজারে রেখে শপথ করে বলে যে, ঐ গুলোর এত এত দর দেয়া হতো । কিন্তু আসলে তা দেয়া হতো না। উদ্দেশ্যে ছিল যেন মুসলমানেরা তার ফাঁদে পড়ে যায়। তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। সহীহ বুখারীর মধ্যেও এটা বর্ণিত আছে।( ৮ ) মুসনাদ-ই-আহমাদের মধ্যে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেনঃ “ তিন ব্যক্তির সঙ্গে মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন কথা বলবেন না, তাদের দিকে দেখবেন না এবং তাদেরকে পবিত্র করবেন না, আর তাদের জন্যে রয়েছে বেদনাদায়ক শাস্তি । প্রথম ঐ ব্যক্তি যার নিকট প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি রয়েছে কিন্তু কোন মুসাফিরকে সে তা প্রদান করে না। দ্বিতীয় ঐ ব্যক্তি যে আসরের পরে মিথ্যা কসম খেয়ে স্বীয় মাল বিক্রি করে। তৃতীয় ঐ ব্যক্তি যে মুসলমান বাদশাহর হাতে বায়আত গ্রহণ করে, অতঃপর যদি বাদশাহ তাকে মাল প্রদান করেন তবে সে বায়আত পুরো করে এবং মাল না দিলে তা পুরো করে না। এ হাদীসটি সুনান-ই-আবি দাউদ এবং জামেউত্ তিরমিযীর মধ্যেও রয়েছে। ইমাম তিরমিযী ( রঃ ) এটাকে হাসান সহীহ বলেছেন।

সূরা আলে-ইমরান আয়াত 77 সূরা

إن الذين يشترون بعهد الله وأيمانهم ثمنا قليلا أولئك لا خلاق لهم في الآخرة ولا يكلمهم الله ولا ينظر إليهم يوم القيامة ولا يزكيهم ولهم عذاب أليم

سورة: آل عمران - آية: ( 77 )  - جزء: ( 3 )  -  صفحة: ( 59 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. হে আমার পিতা, আমার কাছে এমন জ্ঞান এসেছে; যা তোমার কাছে আসেনি, সুতরাং আমার অনুসরণ
  2. এরপর বলেছেঃ এতো লোক পরস্পরায় প্রাপ্ত জাদু বৈ নয়,
  3. তোমরা আমার এ জামাটি নিয়ে যাও। এটি আমার পিতার মুখমন্ডলের উপর রেখে দিও, এতে তাঁর
  4. তাদেরকে প্রত্যুষে নির্ধারিত শাস্তি আঘাত হেনেছিল।
  5. তোমাদের সামনে আল্লাহর কসম খায় যাতে তোমাদের রাযী করতে পারে। অবশ্য তারা যদি ঈমানদার হয়ে
  6. যদি তোমরা প্রকাশ্যে দান-খয়রাত কর, তবে তা কতইনা উত্তম। আর যদি খয়রাত গোপনে কর এবং
  7. এ সম্পর্কে তোমরা সন্দেহে পতিত ছিলে।
  8. আপনি জানেন বিচার দিবস কি?
  9. যখন খাঁটিভাবে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয়, তখন যারা পরকালে বিশ্বাস করে না, তাদের অন্তর
  10. যদি মুমিনদের দুই দল যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে পড়ে, তবে তোমরা তাদের মধ্যে মীমাংসা করে দিবে।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আলে-ইমরান ডাউনলোড করুন:

সূরা Al Imran mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Al Imran শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত আলে-ইমরান  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Saturday, May 18, 2024

لا تنسنا من دعوة صالحة بظهر الغيب