কোরান সূরা কাহ্ফ আয়াত 78 তাফসীর
﴿قَالَ هَٰذَا فِرَاقُ بَيْنِي وَبَيْنِكَ ۚ سَأُنَبِّئُكَ بِتَأْوِيلِ مَا لَمْ تَسْتَطِع عَّلَيْهِ صَبْرًا﴾
[ الكهف: 78]
তিনি বললেনঃ এখানেই আমার ও আপনার মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হল। এখন যে বিষয়ে আপনি ধৈর্য্য ধরতে পারেননি, আমি তার তাৎপর্য বলে দিচ্ছি। [সূরা কাহ্ফ: 78]
Surah Al-Kahf in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Kahf ayat 78
তিনি বললেন -- ''এইবার আমার মধ্যে ও তোমার মধ্যে ছাড়াছাড়ি। আমি এখন জানিয়ে দিচ্ছি তাৎপর্য যে সন্বন্ধে তুমি ধৈর্য ধরতে পারছিলে না।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৭৮. খাজির ( আলাইহিস-সালাম ) মূসা ( আলাইহিস-সালাম ) কে বললেন: দেয়াল দাঁড় করিয়ে মজুরি না নেয়ার ব্যাপারে অভিযোগ করাই হবে আমার ও আপনার মধ্যকার বিচ্ছিন্নতার কারণ। তবে আমার যে কর্মকাÐ দেখে আপনি ধৈর্য ধরতে পারেননি আমি আপনাকে অচিরেই সেগুলোর ব্যাখ্যা জানিয়ে দিচ্ছি।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
সে বলল, ‘এখানেই তোমার ও আমার মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হল;[১] ( তবে ) যে বিষয়ে তুমি ধৈর্যধারণ করতে পারনি আমি তার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করছি; [২] [১] খাযির ( আঃ ) বললেন, মূসা তুমি তৃতীয়বারও ধৈর্য্য ধারণ করতে পারলে না, এবার তোমার কথামত তোমাকে আমি সাথে নিতে অপারগ। [২] কিন্তু খাযির ( আঃ ) পৃথক হওয়ার আগে উক্ত তিনটি ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করা জরুরী মনে করলেন। যাতে মূসা ( আঃ ) বিভ্রান্তির শিকার না হন এবং বুঝতে পারেন যে, নবুঅতের জ্ঞান আলাদা যা তাঁকে দান করা হয়েছে এবং সৃষ্টিগত কিছু বিষয়ের জ্ঞান আলাদা যা আল্লাহর হিকমত ও ইচ্ছায় খাযিরকে দেওয়া হয়েছে। আর সেই অনুযায়ী তিনি এমন কিছু কাজ করেছেন, যা শরীয়তের দৃষ্টিতে নাজায়েয। যার কারণে মূসা ( আঃ )ও চুপ থাকতে পারেননি। উক্ত প্রকার সৃষ্টিগত কর্ম সম্পাদনের কারণেই কিছু বিদ্বানদের ধারণা যে, খাযির মানুষ ছিলেন না। আর এই জন্যই তাঁরা এ বিতর্কের ঝামেলায় যান না, তিনি রসূল ছিলেন, নবী ছিলেন, নাকি ওলী ছিলেন। কারণ এ সকল মর্যাদা কেবল মানুষের সাথে সম্পৃক্ত। তাঁরা বলেন, তিনি ফিরিশতা ছিলেন। কিন্তু যদি আল্লাহ কোন নবীকে সৃষ্টিগত কিছু বিষয়ের জ্ঞান দান করে ওই শ্রেণীর কোন কাজ করিয়ে নেন, তাহলে তা অসম্ভব কিছুই নয়। যখন অহীপ্রাপ্ত ব্যক্তি নিজেই তা পরিষ্কার করে দেন যে, আমি এটা আল্লাহর আদেশে করেছি। সুতরাং যদিও তা শরীয়ত-বিরোধী বলে মনে হয়, তবুও যেহেতু এর সম্পর্ক সৃষ্টিগত বিষয়ীভূত জ্ঞানের সাথে, সেহেতু জায়েয-নাজায়েযের বিতর্ক ওঠার কথা নয়। যেমন সৃষ্টিগত নিয়মানুসারে কেউ অসুস্থ হয়, কেউ মৃত্যু বরণ করে, কারো ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে যায়, কোন জাতির উপর আযাব আসে; এ সবের মধ্যে কিছু কিছু কাজ কোন কোন সময় আল্লাহর আদেশে ফিরিশতারা করে থাকেন। যেভাবে এ সমস্ত কাজ আজ পর্যন্ত কারো শরীয়ত-বিরোধী বলে মনে হয়নি, সেইভাবে খাযির দ্বারা সংঘটিত কাজগুলো শরীয়তের দাঁড়িপাল্লায় মাপা উচিত নয়। তবে বর্তমানে নবুঅত ও অহীর পরম্পরা শেষ হয়ে যাওয়ার পর কারো পক্ষে এ সমস্ত জিনিসের দাবী কোনক্রমেই সত্য বলে মেনে নেওয়ার মত নয়; যেমন খাযির কর্তৃক প্রমাণিত। কারণ খাযিরের কর্মসমূহ কুরআন হতে সাব্যস্ত; আর সেই কারণে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। কিন্তু এখন কেউ এ রকম কর্মকান্ড ঘটালে বা ঘটাবার দাবী করলে তার প্রতিবাদ করা জরুরী। কারণ তার দাবীর প্রমাণে সেই নিশ্চিত সত্য জ্ঞান আজ অবর্তমান; যার দ্বারা তার দাবীর বাস্তবিকতা প্রমাণ হতে পারে ।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
সে বলল, ‘এখানেই আমার এবং আপনার মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হল; যে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধারণ করতে পারেননি অচিরেই আমি সেগুলোর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করছি।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৭৭-৭৮ নং আয়াতের তাফসীর: মহান আল্লাহ বলেন যে, দু'বারের দুটি ঘটনার পর আবার তাঁরা দুজন চলতে শুরু করেন। চলতে চলতে তারা একটি গ্রামে গিয়ে পৌঁছেন। বর্ণিত আছে যে, ঐ গ্রামটির নাম ছিল ঈকা। তথাকার লোকেরা ছিল খুবই কৃপণ। তারা দু’জন ক্ষুধার্ত ব্যক্তি তাদের কাছে খেতে চাইলে তারা পরিষ্কারভাবে অস্বীকার করে। তারা সেখানে দেখতে পান যে, একটি দেয়াল পড়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে। ওটা স্বস্থান ছেড়ে দিয়ে সম্পূর্ণরূপে ঝুঁকে পড়েছে। দেয়ালটিকে ঐ অবস্থায় দেখা মাত্রই হযরত খিয়র ( আঃ ) কোমর কষে নিয়ে ওটা সুদৃঢ় করে দেন এবং ওটা সম্পূর্ণ ঠিক হয়ে যায়।পূর্বে হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত খিয়র ( আঃ ) পতনোন্মুখ দেয়ালটিকে স্বহস্তে ঠিক করে দেন এবং তা সুদৃঢ় হয়ে যায়। ঐ সময় হযরত মূসা কালীমূল্লাহ ( আঃ ) তাঁকে বলেনঃ “ সুবহানাল্লাহ! এ গ্রামের লোকেরা তো আমাদেরকে খাওয়া দাওয়ার কথা জিজ্ঞেস করলোই না, এমন কি আমরা তাদের কাছে খাবার চাওয়ার পরেও তারা আমাদেরকে খেতে দিতে অস্বীকার করলো । অথচ আপনি বিনা পারিশ্রমিকেই তাদের দেয়াল ঠিক করে দিলেন। আপনি ইচ্ছা করলে তো পারিশ্রমিক চাইতে পারতেন? এটা তো আপনার ন্যায্য পাওনা?” তার এই প্রশ্নের জবাবে হযরত খির ( আঃ ) তাকে বললেনঃ “ দেখুন! এখানেই আমার ও আপনার মধ্যে সম্পর্কচ্ছেদ হয়ে গেলো । কেননা, শিশুটিকে হত্যা করার সময় আপনি আমার ঐ কাজের প্রতিবাদ করলে আমি আপনাকে ভৎসনা করেছিলাম। ঐ সময় আপনি নিজেই বলেছিলেনঃ “ এর পর যদি আমি আপনার কোন কাজের প্রতিবাদ করি তবে আপনি আমাকে সঙ্গে রাখবেন না, বরং আমাকে পৃথক করে দিবেন । এখন যে বিষয়ে আপনি ধৈর্য ধারণ করতে পারেন নাই আমি তার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করছি।”
সূরা কাহ্ফ আয়াত 78 সূরা
| English | Türkçe | Indonesia |
| Русский | Français | فارسی |
| تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- এটি এমন একটি গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ণ করেছি, খুব মঙ্গলময়, অতএব, এর অনুসরণ কর এবং
- আর আমার হুকুম যখন এল, আমি শোয়ায়েব (আঃ) ও তাঁর সঙ্গী ঈমানদারগণকে নিজ রহমতে রক্ষা
- তাদের অন্তর যা গোপন করে এবং যা প্রকাশ করে, আপনার পালনকর্তা তা জানেন।
- তাদেরকে কালিমা আচ্ছন্ন করে রাখবে।
- অনন্তর শয়তান তাদের উভয়কে ওখান থেকে পদস্খলিত করেছিল। পরে তারা যে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল তা থেকে
- আল্লাহ মানুষের প্রাণ হরণ করেন তার মৃত্যুর সময়, আর যে মরে না, তার নিদ্রাকালে। অতঃপর
- এরপর আমি শুক্রবিন্দুকে জমাট রক্তরূপে সৃষ্টি করেছি, অতঃপর জমাট রক্তকে মাংসপিন্ডে পরিণত করেছি, এরপর সেই
- সেদিন মানুষকে অবহিত করা হবে সে যা সামনে প্রেরণ করেছে ও পশ্চাতে ছেড়ে দিয়েছে।
- তারা আরও বলবেঃ যদি আমরা শুনতাম অথবা বুদ্ধি খাটাতাম, তবে আমরা জাহান্নামবাসীদের মধ্যে থাকতাম না।
- হে আমাদের পালনকর্তা! আমরা সে বিষয়ের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছি যা তুমি নাযিল করেছ, আমরা
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা কাহ্ফ ডাউনলোড করুন:
সূরা Kahf mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Kahf শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers



