কোরান সূরা ক্বাসাস আয়াত 82 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Qasas ayat 82 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা ক্বাসাস আয়াত 82 আরবি পাঠে(Qasas).
  
   

﴿وَأَصْبَحَ الَّذِينَ تَمَنَّوْا مَكَانَهُ بِالْأَمْسِ يَقُولُونَ وَيْكَأَنَّ اللَّهَ يَبْسُطُ الرِّزْقَ لِمَن يَشَاءُ مِنْ عِبَادِهِ وَيَقْدِرُ ۖ لَوْلَا أَن مَّنَّ اللَّهُ عَلَيْنَا لَخَسَفَ بِنَا ۖ وَيْكَأَنَّهُ لَا يُفْلِحُ الْكَافِرُونَ﴾
[ القصص: 82]

গতকল্য যারা তার মত হওয়ার বাসনা প্রকাশ করেছিল, তারা প্রত্যুষে বলতে লাগল, হায়, আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্যে ইচ্ছা রিযিক বর্ধিত করেন ও হ্রাস করেন। আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করলে আমাদেরকেও ভূগর্ভে বিলীন করে দিতেন। হায়, কাফেররা সফলকাম হবে না। [সূরা ক্বাসাস: 82]

Surah Al-Qasas in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Qasas ayat 82


আর আগের দিন যারা তার অবস্থার জন্য কামনা করত তারা সাত-সকালে বলতে লাগল -- ''আহা দেখো! আল্লাহ্ তাঁরে বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছা করেন তার প্রতি রিযেক প্রসারিত করেন এবং মেপেজোখে দেন। আল্লাহ্ যদি আমাদের উপরে সদয় না হতেন তবে আমাদেরও গ্রাস করাতেন। আহা দেখো! অবিশ্বাসীরা কখনো সফলকাম হয় না।’’


Tafsir Mokhtasar Bangla


৮২. আর যারা সে ধ্বসে যাওয়ার পূর্বে তার ন্যায় সম্পদ ও সাজ-সজ্জার আশা করছিলো তারা শিক্ষা গ্রহণ পূর্বক আফসোসের সাথে বলথে লাগলো, হায়, আমাদের কি এখনো এ বুঝ হয়নি যে, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা তাঁর বান্দাদের মধ্যকার যার জন্য চান তার রিযিক সম্প্রসারিত করেন আর তাদের মধ্যকার যার জন্য চান তার রিযিক সঙ্কীর্ণ করেন?! আল্লাহ তা‘আলা যদি আমাদের কথার দরুন আমাদেরকে শাস্তি না দিয়ে আমাদের উপর দয়া না করতেন তাহলে তিনি আমাদেরকে ধ্বসিয়ে দিতেন যেমনিভাবে কারূনকে ধ্বসিয়ে দিয়েছেন। বস্তুতঃ কাফিররা কখনো সফলকাম হয় না। না দুনিয়াতে, না আখিরাতে। বরং উভয় জাহানেই তাদের পরিণাম ও পরিণতি হলো ক্ষতিগ্রস্ততা।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


পূর্বদিন যারা তার ( মত ) মর্যাদা কামনা করেছিল তারা বলতে লাগল,[১] ‘দেখ, আল্লাহ তাঁর দাসদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছা তার রুযী বর্ধিত করেন এবং যার জন্য ইচ্ছা তা হ্রাস করেন। যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি অনুগ্রহ না করতেন, তবে আমাদেরকেও তিনি মাটিতে ধসিয়ে দিতেন।[২] দেখ, অকৃতজ্ঞরা সফলকাম হয় না।’ [৩] [১] مَكَان বলতে পার্থিব সম্মান ও মান-মর্যাদা, যা কোন ব্যক্তিকে পৃথিবীতে সাময়িকভাবে দেওয়া হয়ে থাকে; যেমন কারূনকে দেওয়া হয়েছিল। أَمْس গতকালকে বলা হয়। কিন্তু এখানে নিকটবর্তী সময় বুঝানো হয়েছে। وَيكَأَنَّ আসলে وَيلَكَ اعلَمُ أَنَّ ছিল। অর্থাৎ, আফসোস বা আশ্চর্য! তোমার জানা উচিত ছিল। কেউ কেউ বলেন, এটি أَلَم تَرَ এর অর্থে ব্যবহার হয়েছে। ( ইবনে কাসীর ) এর পূরো অর্থ হল কারূনের মত ধন-সম্পদ ও মান-মর্যাদার অভিলাষী ব্যক্তিরা যখন কারূনের শিক্ষণীয় করুণ পরিণতি দেখল, তখন তারা বলল, ধন-দৌলত এই কথার প্রমাণ নয় যে, ধনবান ব্যক্তির উপর আল্লাহ সন্তুষ্ট। তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহ কাউকে মাল বেশি দেন, আবার কাউকেও কম। এর সম্পর্ক সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর ইচ্ছার ও হিকমতের সাথে যা একমাত্র তিনি ছাড়া আর কেউ জানেন না। মালের আধিক্য তাঁর সন্তুষ্টির ও মাল না থাকা তাঁর অসন্তুষ্টির প্রমাণ বহন করে না। যেমন এসব মান-ইজ্জতের মাপকাঠিও নয়। [২] অর্থাৎ, আমাদের পরিণাম ঐরূপ হত, যেরূপ কারূনের হয়েছিল। [৩] অর্থাৎ, কারূন সম্পদ পেয়ে আল্লাহর কৃতজ্ঞ না হয়ে অকৃতজ্ঞতা ও পাপের পথ অবলম্বন করল। সুতরাং দেখ তার পরিণাম কি হল?

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আর আগের দিন যারা তার মত হওয়ার কামনা করেছিল, তারা বলতে লাগল, ‘দেখলে তো, আল্লাহ্‌ তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্য ইচ্ছে তার রিফিক বাড়িয়ে দেন এবং যার জন্য ইচ্ছে কমিয়ে দেন। যদি আল্লাহ্‌ আমাদের প্রতি সদয় না হতেন, তবে আমাদেরকেও তিনি ভূগর্ভে প্রোথিত করতেন। দেখলে তো ! কাফেররা সফলকাম হয় না []।’ [] অর্থাৎ আল্লাহ্‌র পক্ষ থেকে রিযিক প্রসারিত বা সংকুচিত করা যেটাই ঘটুক না কেন তা ঘটে তাঁর ইচ্ছাক্ৰমেই। এ ইচ্ছার মধ্যে তাঁর ভিন্নতর উদ্দেশ্য সক্রিয় থাকে। কাউকে বেশী রিযিক দেবার অর্থ নিশ্চিত ভাবে এ নয় যে, আল্লাহ্‌ তার প্রতি খুবই সন্তুষ্ট তাই তাকে পুরষ্কার দিচ্ছেন। অনেক সময় কোন ব্যাক্তি হয় আল্লাহ্‌র কাছে বড়ই ঘৃণিত ও অভিশপ্ত কিন্তু তিনি তাকে বিপুল পরিমাণ ধন-দৌলত দিয়ে যেতে থাকেন। এমনকি এ ধন শেষ পর্যন্ত তার উপর আল্লাহ্‌র কঠিন আযাব নিয়ে আসে। পক্ষান্তরে যদি কারো রিযিক সংকুচিত হয়, তাহলে নিশ্চিতভাবে তার এ অর্থ হয় না যে, আল্লাহ্‌ তার প্রতি নারাজ হয়ে গেছেন এবং তাকে শাস্তি দিচ্ছেন। অধিকাংশ সৎ লোক আল্লাহ্‌র প্রিয়পাত্র হওয়া সত্ত্বেও আর্থিক অভাব অনটনের মধ্যে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় এ অভাব অনটন তাঁদের জন্য আল্লাহ্‌র রহমতে পরিণত হয়েছে। এ সত্যটি না বোঝার ফলে যারা আসলে আল্লাহ্‌র গযবের অধিকারী হয় তাদের সমৃদ্ধিকে মানুষ ঈর্ষার দৃষ্টিতে দেখে।

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


৮১-৮২ নং আয়াতের তাফসীর উপরে কারূনের ঔদ্ধত্য ও বেঈমানীর বর্ণনা দেয়া হয়েছে। এখানে তার পরিণামের বর্ণনা দেয়া হচ্ছে।হযরত সালিম ( রাঃ ) তাঁর পিতা হতে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ একটি লোক তার লুঙ্গী লটকিয়ে গর্বভরে চলছিল, এমতাবস্থায় তাকে ভূ-গর্ভে প্রোথিত করা হয় । কিয়ামত পর্যন্ত সে প্রোথিত হতেই থাকবে।” ( এ হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ ) স্বীয় সহীহ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন)হযরত আবু সাঈদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ তোমাদের পূর্বে একটি লোক দু’টি সবুজ চাদরে নিজেকে আবৃত করে দম্ভভরে চলছিল, এমতাবস্থায় আল্লাহ তা'আলা যমীনকে নির্দেশ দিলেনঃ তাকে গিলে ফেল ।( এ রিওয়াইয়াতটি ইমাম আহমাদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হাফিয মুহাম্মাদ ইবনে মুনযির ( রঃ ) তাঁর কিতাবুল আজায়েবে বর্ণনা করেছেন যে, নওফল ইবনে মাসাহিক ( রঃ ) বলেন, নাজরানের মসজিদে আমি এক যুবককে দেখতে পাই। আমি তার দিকে চেয়ে থাকি এবং তার দেহের দৈর্ঘ্য, পূর্ণতা এবং সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়ে যাই। সে আমাকে জিজ্ঞেস করেঃ “ আপনি আমার দিকে তাকাচ্ছেন কেন?” আমি উত্তরে বলিঃ তোমার সৌন্দর্য ও পূর্ণতা দেখে আমি মুগ্ধ হয়ে গেছি । সে তখন বলেঃ “ স্বয়ং আল্লাহও আমার সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন । তার মুখের কথা মুখেই আছে, হঠাৎ সে ছোট হতে শুরু করে এবং ছোট ও খাটো হতেই থাকে। শেষ পর্যন্ত সে কনিষ্ঠাঙ্গুলী বরাবর হয়ে যায়। তখন তার একজন আত্মীয় তাকে ধরে তার জামার আস্তীনে ভরে নিয়ে চলে যায়।” এটাও বর্ণিত আছে যে, হযরত মূসা ( আঃ )-এর বদ দু'আর কারণেই কারূন ধ্বংস হয়েছিল। তার ধ্বংসের কারণের ব্যাপারে বহু মতভেদ রয়েছে।একটি কারণ এরূপ বর্ণিত আছে যে, অভিশপ্ত কারূন এক ব্যভিচারিণী নারীকে বহু মালধন দিয়ে এই কাজে উত্তেজিত করে যে, যখন মূসা ( আঃ ) বানী ইসরাঈলের জামাআতে দাঁড়িয়ে আল্লাহ তা'আলার কিতাব পাঠ করতে শুরু করবেন ঠিক ঐ সময়ে যেন সে জনসম্মুখে বলেঃ “ হে মূসা ( আঃ )! তুমি আমার সাথে এরূপ এরূপ করেছো ।” কারূনের এই কথামত ঐ স্ত্রীলোকটি তা-ই করে। অর্থাৎ কারূনের শিখানো কথাই বলে। তার একথা শুনে হযরত মূসা ( আঃ ) কেঁপে উঠেন এবং তৎক্ষণাৎ দু'রাকআত নামায আদায় করে ঐ স্ত্রীলোকটির দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলেনঃ “ আমি তোমাকে ঐ আল্লাহর কসম দিচ্ছি যিনি সমুদ্রের মধ্যে রাস্তা করে দিয়েছিলেন, তোমার কওমকে ফিরাউনের অত্যাচার হতে রক্ষা করেছেন এবং আরো বহু অনুগ্রহ করেছেন, সত্য ঘটনা যা কিছু রয়েছে সবই তুমি খুলে বল ।” স্ত্রীলোকটি তখন বললো: “ হে মূসা ( আঃ )! আপনি যখন আমাকে আল্লাহর কসমই দিলেন তখন আমি সত্য কথাই বলছি । কারূন আমাকে বহু টাকা-পয়সা দিয়েছে এই শর্তে যে, আমি যেন বলি আপনি আমার সাথে এরূপ এরূপ কাজ করেছেন। আমি আপনাকে তা-ই বলেছি। এজন্যে আমি আল্লাহর নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তার কাছে তাওবা করছি।” তার এ কথা শুনে হযরত মূসা ( আঃ ) পুনরায় সিজদায় পড়ে যান এবং কারূনের শাস্তি প্রার্থনা করেন। তখন আল্লাহ তা'আলার পক্ষ হতে তাঁর নিকট অহী আসেঃ “ আমি যমীনকে তোমার বাধ্য করে দিলাম । হযরত মূসা ( আঃ ) তখন সিজদা হতে মাথা উঠিয়ে যীমনকে বলেনঃ “ তুমি কারূন ও তার প্রাসাদকে গিলে ফেল ।” যমীন তা-ই করে।। কারূনের ধ্বংসের এ কারণটি হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হযরত সুদ্দী ( রঃ ) বর্ণনা করেছেন। দ্বিতীয় কারণ এই বলা হয়েছে যে, একদা কারূনের সওয়ারী অতি জাঁকজমকের সাথে চলতে শুরু করে। সে অত্যন্ত মূল্যবান পোশাক পরিহিত হয়ে একটি অতি মূল্যবান সাদা খচ্চরের উপর আরোহণ করে চলছিল। তার সাথে তার গোলামগুলোও ছিল, যারা সবাই রেশমী পোশাক পরিহিত ছিল। এইভাবে সে চলতেছিল। আর ওদিকে হযরত মূসা ( আঃ ) বানী ইসরাঈলের সমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। যখন কারূন তার দলবলসহ ঐ জনসমাবেশের পার্শ্ব দিয়ে গমন করে তখন হযরত মূসা ( আঃ ) তাকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ হে কারূন! আজ এমন শান-শওকতের সাথে গমনের কারণ কি?” সে উত্তরে বলেঃ “ব্যাপার এই যে, আল্লাহ তোমাকে একটি ফযীলত দান করেছেন এবং আমাকেও তিনি একটি ফযীলত দান করেছেন । যদি তিনি তোমাকে নবুওয়াত দান করে থাকেন তবে আমাকে তিনি দান করেছেন ধন-দৌলত ও মান-মর্যাদা। যদি আমার মর্যাদা সম্পর্কে তুমি সন্দেহ পোষণ করে থাকো তবে আমি প্রস্তুত আছি যে, চল, আমরা দু’জন আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করি, দেখা যাক আল্লাহ কার দু'আ কবুল করেন?” হযরত মূসা ( আঃ ) কারূনের এ প্রস্তাবে সম্মত হয়ে যান এবং তাকে সঙ্গে নিয়ে অগ্রসর হন। অতঃপর তিনি তাকে বলেনঃ “ হে কারূন! আমি প্রথমে প্রার্থনা করবো, না তুমি প্রথমে করবে?” সে জবাবে বলেঃ “আমিই প্রথমে দুআ করবো ।” একথা বলে সে দু'আ করতে শুরু করে এবং শেষও করে দেয়। কিন্তু তার দু'আ কবূল হলো না। হযরত মূসা ( আঃ ) তখন তাকে বললেনঃ “ তাহলে আমি এখন দু'আ করি?” সে উত্তরে বলেঃ “হ্যা, কর ।” অতঃপর হযরত মূসা ( আঃ ) আল্লাহ তা'আলার নিকট দু'আ করেনঃ “ হে আল্লাহ! আপনি যমীনকে নির্দেশ দিন যে, আমি তাকে যে হুকুম করবো তাই যেন সে পালন করে ।আল্লাহ তা'আলা তাঁর দু'আ কবুল করেন এবং তাঁর নিকট অহী অবতীর্ণ করেনঃ “ হে মূসা ( আঃ )! যমীনকে আমি তোমার হুকুম পালনের নির্দেশ দিলাম । হযরত মূসা ( আঃ ) তখন যমীনকে বললেনঃ “ হে যমীন! তুমি কারূন ও তার লোকদেরকে ধরে ফেল ।” তাঁর একথা বলা মাত্রই তাদের পাগুলো যমীনে প্রোথিত হয়। তিনি আবার বলেনঃ “ আরো ধরো ।” তখন তাদের হাঁটু পর্যন্ত প্রোথিত হয়ে যায়। পুনরায় তিনি বলেনঃ “ আরো পাকড়াও কর ।” ফলে তাদের কাঁধ পর্যন্ত প্রোথিত হয়। তারপর তিনি যমীনকে বলেনঃ “ তার মাল ও তার কোষাগারও পুঁতে ফেলো ।” তৎক্ষণাৎ তার সমস্ত ধন-ভাণ্ডার ও সম্পদ এসে গেল। কারূন সবগুলোই স্বচক্ষে দেখে নিলো। অতঃপর তিনি যমীনকে ইঙ্গিত করলেনঃ “ এগুলোসহ তাদেরকে তোমার ভিতরে করে নাও ।” সাথে সাথে কারূন তার দলবল, প্রাসাদ, ধন-দৌলত এবং কোষাগারসহ যমীনে প্রোথিত হয়ে গেল। এভাবে তার ধ্বংস সাধিত হলো। যমীন যেমন ছিল তেমনই হয়ে গেল। বর্ণিত আছে যে, সপ্ত যমীন পর্যন্ত তারা প্রোথিত হয়। একটি বর্ণনা এও আছে। যে, প্রত্যহ তারা এক মানুষ বরাবর নীচের দিকে প্রোথিত হতে রয়েছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত তারা এই শাস্তির মধ্যেই থাকবে। এখানে বানী ইসরাঈলের আরো বহু রিওয়াইয়াত রয়েছে। কিন্তু আমরা ওগুলো ছেড়ে দিলাম। কারূনের স্বপক্ষে এমন কোন দল ছিল না যে আল্লাহর শাস্তি হতে তাকে সাহায্য করতে পারতো এবং সে নিজেও আত্মরক্ষায় সক্ষম ছিল না। সে ধ্বংস হয়, নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় এবং তার মূলোৎপাটন করা হয়। আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করুন।মহামহিমান্বিত আল্লাহ বলেনঃ পূর্বদিন যারা তার মত হবার কামনা করেছিল তারা তার শোচনীয় অবস্থা দেখে বলতে লাগলো: আমরা ভুল বুঝেছিলাম। সত্যি ধন-দৌলত আল্লাহর সন্তুষ্টির নিদর্শন নয়। এটা তো আল্লাহর হিকমত বা নৈপুণ্য, তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যার জন্যে ইচ্ছা তার রিযক বর্ধিত করেন এবং যার জন্যে ইচ্ছা হ্রাস করেন। তাঁর হিকমত তিনিই জানেন। যেমন হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের মধ্যে চরিত্রকে ঐভাবে বন্টন করেছেন, যেমনিভাবে তোমাদের মধ্যে । রিযক বন্টন করেছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ যাকে ভালবাসেন তাকেও দুনিয়া ( অর্থাৎ ধন-দৌলত ) দান করেন এবং যাকে ভালবাসেন না তাকেও দান করেন। আর দ্বীন একমাত্র ঐ ব্যক্তিকে দান করেন যাকে তিনি ভালবাসেন।”কারূনের মত হওয়ার বাসনাকারীরা আরো বললো: যদি আল্লাহ আমাদের প্রতি সদয় না হতেন তবে আমাদেরও তিনি ভূ-গর্ভে প্রোথিত করতেন। সত্যি, কাফিররা কখনো সফলকাম হয় না। না তারা দুনিয়ায় কৃতকার্য হয়, না আখিরাতে তারা পরিত্রাণ পাবে।( আরবি )-এর অর্থ নিয়ে আরবী ব্যাকরণবিদদের মধ্যে মতানৈক্য রয়েছে। কেউ কেউ বলেন যে, এটা ( আরবি )-এর অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে। কিন্তু এটাকে( আরবি ) বা হালকা করে ( আরবি ) রয়ে গেছে এবং ( আরবি )-এর যবরটি শব্দ। বা উহ্য থাকার প্রতি ইঙ্গিত বহন করছে। কিন্তু এই উক্তিটিকে ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ ) দুর্বল বলেছেন। কিন্তু আমি বলি যে, এটাকে দুর্বল বলা ঠিক নয়। কুরআন কারীমে এর লিখন এক সাথে হওয়া ওর দুর্বল হওয়ার কারণ হতে পারে না। কেননা, ( আরবি )বা লিখনের পদ্ধতি তো পারিভাষিক আদেশ। যা প্রচলিত হয় তাই ধর্তব্য হয়ে থাকে। এর দ্বারা অর্থের উপর কোন ক্রিয়া হয় না। এসব ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলাই সবচেয়ে ভাল জানেন।অন্য উক্তি এই যে, এটা ( আরবি )-এর অর্থে ব্যবহৃত। আর একটি বর্ণনা এও আছে যে, এখানে দুটি শব্দ রয়েছে অর্থাৎ ( আরবি ) এবং ( আরবি ) শব্দটি বিস্ময় প্রকাশের জন্যে অথবা সতর্কতা প্রকাশের জন্যে। আর ( আরবি ) শব্দটি ( আরবি ) ( আমি ধারণা করি )-এর অর্থে ব্যবহৃত। এসব উক্তির মধ্যে সবল উক্তি হলো এটাই যে, ( আরবি ) এর অর্থে ব্যবহৃত। অর্থাৎ তুমি কি দেখনি? যেমন এটা হযরত কাতাদা ( রঃ )-এর উক্তি। আরবী কবিতাতেও এই অর্থই নেয়া হয়েছে।

সূরা ক্বাসাস আয়াত 82 সূরা

وأصبح الذين تمنوا مكانه بالأمس يقولون ويكأن الله يبسط الرزق لمن يشاء من عباده ويقدر لولا أن من الله علينا لخسف بنا ويكأنه لا يفلح الكافرون

سورة: القصص - آية: ( 82 )  - جزء: ( 20 )  -  صفحة: ( 395 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. তারা বলল, হে আমাদের সম্প্রদায়, আমরা এমন এক কিতাব শুনেছি, যা মূসার পর অবর্তীণ হয়েছে।
  2. কল্যাণের জন্যে প্রেরিত বায়ুর শপথ,
  3. সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর, যিনি নভোমন্ডলে যা আছে এবং ভূমন্ডলে যা আছে সব কিছুর মালিক এবং
  4. তাদের অর্থ ব্যয় কবুল না হওয়ার এছাড়া আর কোন কারণ নেই যে, তারা আল্লাহ ও
  5. আল্লাহ তোমাদের জন্যে কাজের কথা স্পষ্ট করে বর্ণনা করেন। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।
  6. এবং যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে
  7. এটা আল্লাহর সৃষ্টি; অতঃপর তিনি ব্যতীত অন্যেরা যা সৃষ্টি করেছে, তা আমাকে দেখাও। বরং জালেমরা
  8. হায়, আমার মৃত্যুই যদি শেষ হত।
  9. যারা ঈমান এনেছে, আল্লাহ তাদের অভিভাবক। তাদেরকে তিনি বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে।
  10. তারা আল্লাহ এবং ঈমানদারগণকে ধোঁকা দেয়। অথচ এতে তারা নিজেদেরকে ছাড়া অন্য কাউকে ধোঁকা দেয়

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ক্বাসাস ডাউনলোড করুন:

সূরা Qasas mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Qasas শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত ক্বাসাস  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Monday, November 4, 2024

Please remember us in your sincere prayers