কোরান সূরা আম্বিয়া আয়াত 91 তাফসীর
﴿وَالَّتِي أَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَنَفَخْنَا فِيهَا مِن رُّوحِنَا وَجَعَلْنَاهَا وَابْنَهَا آيَةً لِّلْعَالَمِينَ﴾
[ الأنبياء: 91]
এবং সেই নারীর কথা আলোচনা করুন, যে তার কামপ্রবৃত্তিকে বশে রেখেছিল, অতঃপর আমি তার মধ্যে আমার রূহ ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং তাকে তার পুত্রকে বিশ্ববাসীর জন্য নিদর্শন করেছিলাম। [সূরা আম্বিয়া: 91]
Surah Al-Anbiya in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Anbiya ayat 91
আর তাঁর ক্ষেত্রে, যিনি তাঁর সতীত্ব রক্ষা করেছিলেন, সেজন্য আমরা তার মধ্যে আমাদের কাছের আত্মা থেকে ফুঁকে দিয়েছিলাম, আর আমরা তাকে ও তার ছেলেকে একটি নিদর্শন বানিয়েছিলাম।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৯১. হে রাসূল! আপনি স্মরণ করুন মারইয়াম ( আলাইহাস-সালাম ) এর ঘটনার কথা যিনি নিজ লজ্জাস্থানকে ব্যভিচার থেকে হিফাযত করেছেন। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নিকট জিব্রীল ( আলাইহিস-সালাম ) কে পাঠালে জিব্রীল তাঁর মাঝে রূহ ফুঁকে দেয়ার পর তিনি ঈসা ( আলাইহিস-সালাম ) কে গর্ভধারণ করেন। বস্তুতঃ মারইয়াম ও তাঁর ছেলে ‘ঈসা ( আলাইহিস-সালাম ) মানুষের জন্য আল্লাহর অসীম ক্ষমতার সবিশেষ নিদর্শন। নিশ্চয়ই তাঁকে কোন জিনিসই অক্ষম করতে পারে না। তিনি পিতা ছাড়াই ‘ঈসা ( আলাইহিস-সালাম ) কে সৃষ্টি করেছেন।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
আর স্মরণ কর সেই নারী ( মারয়্যাম )এর কথা, যে নিজ সতীত্বকে রক্ষা করেছিল, অতঃপর তার মধ্যে আমি আমার রূহ্ ফুঁকে দিয়েছিলাম এবং তাকে ও তার পুত্রকে করেছিলাম বিশ্ববাসীর জন্য এক নিদর্শন। [১] [১] এখানে মারয়্যাম ও ঈসা ( আঃ )-এর আলোচনা, যা এর আগে ( সূরা মারয়্যামের ১৯:১৬-৩৪ নং আয়াতে ) পার হয়ে গেছে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
এবং স্মরণ করুন সে নারীকে [ ১ ], যে নিজ লজ্জাস্থানের হেফাজত করেছিল, অতঃপর তার মধ্যে আমরা আমাদের রূহ [ ২ ] ফুঁকে দিলাম এবং তাকে ও তার পুত্রকে করেছিলাম সৃষ্টিজগতের জন্য এক নিদর্শন। [ ১ ] এখানে মারইয়াম আলাইহাস সালামের কথা বলা হয়েছে। [ ইবন কাসীর ] [ ২ ] এখানে যেভাবে ঈসা আলাইহিসসালাম সম্পর্কে রূহ ফুঁকে দেয়ার কথা বলা হলো অন্যত্র তদ্রুপ আদম আলাইহিস সালাম সম্পর্কেও এসেছে, যেমন বলা হয়েছেঃ “ আমি মাটি থেকে একটি মানুষ তৈরী করছি । কাজেই যখন আমি তাকে পূর্ণরূপে তৈরী করে নেবো এবং তার মধ্যে নিজের রূহ ফুঁকে দেবো। তখন ( হে ফেরেশতারা ! ) তোমরা তার সামনে সিজদায় অবনত হয়ে যাবে।" [ সূরা সাদঃ ৭১-৭২ ] আদম আলাইহিসসালামের ব্যাপারে রূহ ফুঁকে দেয়ার কথা যেভাবে বলা হয়েছে তেমনিভাবে ঈসা সম্পর্কে বিভিন্ন স্থানে বলা হয়েছে। আল্লাহ বলেনঃ “ আল্লাহর রাসূল এবং তাঁর কালেমা, যা মারইয়ামের কাছে পাঠিয়েছিলেন এবং তার পক্ষ থেকে একটি রূহ । ” [ সূরা আন-নিসাঃ ১৭১ ] অন্যত্র বলা হয়েছেঃ “ আর ইমরানের মেয়ে মারইয়াম, যে নিজের লজ্জাস্থানের হেফাজত করেছিল, কাজেই ফুঁকে দিলাম আমরা তার মধ্যে আমাদের রূহ । ” [ সূরা আত-তাহরীমঃ ১২ ] এ সংগে এ বিষয়টিও সামনে থাকা দরকার যে, মহান আল্লাহ ঈসা আলাইহিসসালাম ও আদমের আলাইহিসসালামের জন্মকে পরস্পরের সদৃশ গণ্য করেন। তাই অন্য সূরায় আল্লাহ বলেনঃ “ ঈসার দৃষ্টান্ত আল্লাহর কাছে আদমের মতো, যাকে আল্লাহ মাটি থেকে তৈরী করেন তারপর বলেন, “হয়ে যাও” এবং সে হয়ে যায় । [ সূরা আলে ইমরানঃ ৫৯ ] এসব আয়াত নিয়ে চিন্তা-গবেষণা করলে একথা বুঝা যায় যে, স্বাভাবিক সৃষ্টি পদ্ধতির পরিবর্তে যখন আল্লাহ কাউকে নিজের হুকুমের সাহায্যে অস্তিত্বশীল করে জীবন দান করেন তখন একে “ নিজের রূহ থেকে ফুঁকে দিয়েছি” শব্দাবলীর সাহায্যে বিবৃত করেন । এ রূহের সম্পর্ক আল্লাহর সাথে সম্ভবত এ জন্য করা হয়েছে যে, এর ফুঁকে দেয়াটা অলৌকিক ধরনের। ফলে সম্মানসূচক এ রূহকে আল্লাহ্ তা'আলা তাঁর নিজের বলে সম্পর্কিত করেছেন, এটি সৃষ্ট রূহ।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
এভাবেই আল্লাহ তাআলা হযরত মারইয়াম ( আঃ ) ও হযরত ঈসার ( আঃ ) ঘটনা বর্ণনা করেছেন। কুরআন কারীমে প্রায়ই হযরত যাকারিয়া ( আঃ ) ও হযরত ইয়াহইয়ার ( আঃ ) ঘটনার সাথে সাথেই হযরত মারইয়াম ( আঃ ) ও হযরত ঈসার ( আঃ ) ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। কেননা, তাঁদের মধ্যে পুরোপুরি সম্পর্ক ও সম্বন্ধ রয়েছে। হযরত যাকারিয়্যা ( আঃ ) পূর্ণ বার্ধক্যে পদার্পণ করেছিলেন এবং তার স্ত্রীও ছিলেন বন্ধ্যা। আর তিনিও বার্ধক্যে উপনীত হয়েছিলেন, এমতাবস্থায় আল্লাহ তাআলা তাদেরকে সন্তান দান করেছিলেন। মহান আল্লাহ নিজের এই ক্ষমতা প্রদর্শনের পর স্বামী ছাড়াই শুধু স্ত্রী লোককে সন্তান দান করে তিনি নিজের আর এক ব্যাপক ক্ষমতা প্রকাশ করেছেন। সরায়ে আল-ইমরান ও সুরায়ে মারইয়ামেও এই শ্রেণী বিন্যাসই রয়েছে।‘যে নিজ সতীত্বকে রক্ষা করেছিল এই উক্তি দ্বারা হযরত মারইয়ামকে ( আঃ ) বুঝানো হয়েছে। যেমন মহামহিমান্বিত আল্লাহ সূরায়ে তাহরীমে বলেছেনঃ ( আরবী ) অর্থাৎ “ ( আরো দৃষ্টান্ত দিচ্ছেন ) ইমরান-তনয়া মারইয়ামের ( আঃ ) যে তার সতীত্ব রক্ষা করেছিল, ফলে আমি তার মধ্যে রূহ ফুকে দিয়েছিলাম ।” ( ৬৬:১২ ) আল্লাহ বলেনঃ আমি তাকে ও তার পুত্রকে করেছিলাম বিশ্ববাসীর জন্যে এক নিদর্শন। যাতে বিশ্ববাসী আল্লাহ তাআলার সর্বপ্রকারের ক্ষমতা, সৃষ্টি কৌশলের ব্যাপক অধিকার ও স্বাধীনতা সম্পর্কে অবহিত হতে পারে। হযরত ঈসা ( আঃ ) ছিলেন আল্লাহর কুদরতের এক উজ্জ্বল নিদর্শন। তিনি নিদর্শন ছিলেন দানব ও মানব উভয় জাতির জন্যেই।
সূরা আম্বিয়া আয়াত 91 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- সেদিন কোন কোন মুখ উজ্জ্বল হবে, আর কোন কোন মুখ হবে কালো। বস্তুতঃ যাদের মুখ
- যারা ঈমান আনে আর সৎকাজ করে তাদের জন্য রয়েছে নেয়ামতে ভরা জান্নাত।
- তারা কি আপনা-আপনিই সৃজিত হয়ে গেছে, না তারা নিজেরাই স্রষ্টা?
- যেদিন তা আসবে সেদিন আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কেউ কোন কথা বলতে পারে না। অতঃপর কিছু
- কালোমত ঘন সবুজ।
- যারা আল্লাহর তাঁর রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করে, তারা অপদস্থ হয়েছে, যেমন অপদস্থ হয়েছে তাদের পূর্ববর্তীরা। আমি
- সেদিন মানুষ না তার অপরাধ সম্পর্কে জিজ্ঞাসিত হবে, না জিন।
- নিশ্চয় আপনার পালনকর্তাই স্রষ্টা, সর্বজ্ঞ।
- অতঃপর আমি তাকে ও তার বাহিনীকে পাকড়াও করলাম, তৎপর আমি তাদেরকে সমু˦#2503;দ্র নিক্ষেপ করলাম। অতএব,
- আল্লাহ তাদেরকে নিজের অনুগ্রহে যা দান করেছেন তাতে যারা কৃপণতা করে এই কার্পন্য তাদের জন্য
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আম্বিয়া ডাউনলোড করুন:
সূরা Anbiya mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Anbiya শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers