কোরান সূরা নাহল আয়াত 92 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Nahl ayat 92 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা নাহল আয়াত 92 আরবি পাঠে(Nahl).
  
   

﴿وَلَا تَكُونُوا كَالَّتِي نَقَضَتْ غَزْلَهَا مِن بَعْدِ قُوَّةٍ أَنكَاثًا تَتَّخِذُونَ أَيْمَانَكُمْ دَخَلًا بَيْنَكُمْ أَن تَكُونَ أُمَّةٌ هِيَ أَرْبَىٰ مِنْ أُمَّةٍ ۚ إِنَّمَا يَبْلُوكُمُ اللَّهُ بِهِ ۚ وَلَيُبَيِّنَنَّ لَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ مَا كُنتُمْ فِيهِ تَخْتَلِفُونَ﴾
[ النحل: 92]

তোমরা ঐ মহিলার মত হয়ো না, যে পরিশ্রমের পর কাটা সূতা টুকরো টুকরো করে ছিড়ে ফেলে, তোমরা নিজেদের কসমসমূহকে পারস্পরিক প্রবঞ্চনার বাহানা রূপে গ্রহণ কর এজন্যে যে, অন্য দল অপেক্ষা এক দল অধিক ক্ষমতাবান হয়ে যায়। এতদ্বারা তো আল্লাহ শুধু তোমাদের পরীক্ষা করেন। আল্লাহ অবশ্যই কিয়ামতের দিন প্রকাশ করে দেবেন, যে বিষয়ে তোমরা কলহ করতে। [সূরা নাহল: 92]

Surah An-Nahl in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Nahl ayat 92


আর সেই নারীর মতো হয়ো না যে তার সুতো খুলে ফেলে টুকরো টুকরো ক’রে তা মজবুত করে বোনার পরে। তোমাদের শপথগুলোকে তোমাদের মধ্যে ছলনার জন্যে তোমরা ব্যবহার করছ, যেন তোমাদের এক জাতি অন্য জাতির চাইতে ক্ষমতাশীল হতে পার। আল্লাহ্ অবশ্যই এর দ্বারা তোমাদের পরীক্ষা করছেন, আর যেন কিয়ামতের দিনে তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট করতে পারেন যে- বিষয়ে তোমরা মতভেদ করছিলে।


Tafsir Mokhtasar Bangla


৯২. তোমরা অঙ্গীকার ভঙ্গ করে সেই বোকা মহিলার ন্যায় বোকা ও নির্বোধ হতে যেও না যে সুতা বা পশমকে খুব কষ্ট করে শক্তভাবে পাকিয়ে সেটিকে আবার খুলে আগের ন্যায় বানিয়ে ফেলেছে। ফলে সে সুতা পাকাতে ও খুলতে গিয়ে ক্লান্ত হয়েছে ঠিকই কিন্তু তাতে তার কোন উদ্দেশ্য হাসিল হয়নি। বস্তুতঃ তোমরা নিজেদের অঙ্গীকারগুলোকে ধোঁকার মাধ্যম বানিয়েছো যেগুলোর মাধ্যমে তোমরা একে অপরকে ধোঁকা দিয়ে থাকো। যাতে তোমাদের পক্ষের লোকরা শত্রæপক্ষের লোকের চেয়ে বেশি ও শক্তিশালী হয়। বস্তুতঃ আল্লাহ তা‘আলা অঙ্গীকার পুরা করার বিষয়ে তোমাদেরকে পরীক্ষা করছেন, তোমরা কি তা পুরা করো, না ভেঙ্গে ফেলো? আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের দুনিয়ার দ্ব›দ্বপূর্ণ বিষয়গুলো কিয়ামতের দিন সুস্পষ্ট করতে চান। তিনি সেদিন সত্যপন্থীকে বাতিলপন্থী থেকে এবং সত্যবাদীকে মিথ্যাবাদী থেকে সুস্পষ্ট করতে চান।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


তোমরা সে নারীর মত হয়ো না, যে তার সুতা মজবুত করে পাকাবার পর ওর পাক খুলে নষ্ট করে দেয়;[১] তোমরা পরস্পরের মাঝে ধোঁকা স্বরূপ তোমাদের শপথকে ব্যবহার করে থাক;[২] যাতে একদল অন্যদল অপেক্ষা অধিক লাভবান হয়;[৩] আল্লাহ তো এটা দ্বারা শুধু তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন। আর তোমরা যে বিষয়ে মতভেদ করতে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তা নিশ্চয়ই স্পষ্টভাবে প্রকাশ করে দেবেন। [১] শপথ দ্বারা সুদৃঢ়কৃত প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা এমন, যেমন কোন নারী সুতা মজবুত করে পাকাবার পর তার পাক খুলে নষ্ট করে। এটি একটি উপমা মাত্র। [২] ধোঁকা ও প্রবঞ্চনা দেওয়ার জন্য ব্যবহার কর। [৩] أربى অর্থ অধিকতর। অর্থাৎ যখন তোমরা মনে কর যে, তোমাদের সংখ্যা বেশি হয়ে গেছে, আর এর কারণে তোমরা শপথ ভঙ্গ করে ফেল; যদিও শপথ ও প্রতিশ্রুতির সময় প্রতিপক্ষ দুর্বল ছিল। কিন্তু দুর্বল থাকা সত্ত্বেও তারা নিশ্চিন্ত ছিল যে, প্রতিশ্রুতি বা চুক্তির কারণে আমাদের কোন ক্ষতি করা হবে না। কিন্তু তোমরা বাহানা ও চুক্তিভঙ্গ করে ক্ষতি কর। জাহেলিয়াতের যুগে চারিত্রিক অবক্ষয়ের কারণে এরূপ চুক্তি ভঙ্গ করা ছিল সাধারণ ব্যাপার। মুসলিমদেরকে এই শ্রেণীর চারিত্রিক অবনতি থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আর তোমরা সে নারীর মত হয়ো না [], যে তার সূতা মজবুত করে পাকাবার পর সেটার পাক খুলে নষ্ট করে দেয়। তোমাদের শপথ তোমরা পরস্পরকে প্রবঞ্চনা করার জন্য ব্যবহার করে থাক, যাতে একদল অন্যদলের চেয়ে বেশী লাভবান হও। আল্লাহ্‌ তো এটা দিয়ে শুধু তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন []। আর অবশ্যই আল্লাহ্‌ কিয়ামতের দিন তা তোমাদের কাছে স্পষ্ট বর্ণনা করে দেবেন যাতে তোমরা মতভেদ করতে। [] আব্দুল্লাহ ইবনে কাসীর এবং সুদ্দী বলেনঃ এখানে মক্কার এমন এক বেঅকুফ নারীর কথা বলা হচ্ছে, যে কাপড় বুননের পর তা আবার খুলে ফেলত। মুজাহিদ, কাতাদা এবং ইবনে যায়েদ বলেনঃ এটা একটি উদাহরণ যা ঐ সমস্ত লোকদের ক্ষেত্রে পেশ করা হয়, যারা কোন পাকাপাকি শপথ করার পর তা ভঙ্গ করত। ইবনে কাসীর এ দ্বিতীয় মতটিকে প্রাধান্য দিয়েছেন। [] এখানে আল্লাহ তা'আলা সতর্ক করে দিয়ে বলছেন, প্রত্যেকটি অঙ্গীকার আসলে অঙ্গীকারকারী ব্যক্তি ও জাতির চরিত্র ও বিশ্বস্ততার পরীক্ষা স্বরূপ। আল্লাহ্ তাআলা অঙ্গীকার পূর্ণ করার কথা বলে মানুষদেরকে পরীক্ষায় ফেললেন। [ তাবারী ] সাঈদ ইবন জুবাইর বলেন, এখানে পরীক্ষার বিষয় হচ্ছে, বেশী লাভবান হতে দেখা। [ ইবন কাসীর ] কারণ, সাধারণত জাহেলী যুগে মানুষ বেশী লাভবান হওয়ার আশায় অঙ্গীকার ভঙ্গ করত। মোটকথা: আল্লাহ দেখতে চান কারা এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। যারা এ পরীক্ষায় ব্যর্থ হবে তারা আল্লাহর আদালতে জবাবদিহির হাত থেকে বাঁচতে পারবে না। আখেরাতের ময়দানে তিনি তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া মতবিরোধকে বর্ণনা করে, তাদের প্রত্যেককে তার আমল অনুসারে ভাল-মন্দ প্রতিফল দেবেন। [ ইবন কাসীর ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


৯১-৯২ নং আয়াতের তাফসীর আল্লাহ তাআলা মুসলমানদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে, তারা যেন তাদের অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির হিফাজত করে, কসম পুরো করে এবং তা ভঙ্গ না করে। এখানে আল্লাহ তাআলা কসম ভঙ্গ না করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছেন। অন্য আয়াতে আছেঃ “ তোমরা আল্লাহকে তোমাদের অঙ্গীকারের লক্ষ্যস্থল করো না ।”এর দ্বারাও কসমের হিফাজতের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করাই উদ্দেশ্য। আর এক আয়াতে রয়েছে “ ওটাই হচ্ছে তোমাদের কসম ভঙ্গ করার কাফফারা, যখন তোমরা কসম করবে এবং তোমরা তোমাদের কসমের হিফাযত কর ।” অর্থাৎ কাফফারা ছাড়া তা পরিত্যাগ করো না।সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমের হাদীসে রয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ আল্লাহর কসম! আমি যখন কোন কিছুর উপর শপথ করবো, অতঃপর ওর বিপরীত জিনিসে মঙ্গল দেখবো তখন ইনশাআল্লাহ আমি ঐ মঙ্গলজনক কাজটিই করবো এবং আমার কসমের কাফফারা আদায় । করবো।”এখন উল্লিখিত আয়াত ও হাদীসে যে বৈপরীত্ব রয়েছে এটা যেন মনে করা না হয়। সেই কসম ও অঙ্গীকার, যা পরষ্পরের চুক্তি ও ওয়াদা হিসেবে করা হবে তা পুরো করা তো নিঃসন্দেহে জরুরী ও অপরিহার্য কর্তব্য। আর যে কসম আগ্রহ উৎপাদন বিরত রাখার উদ্দেশ্যে মুখ থেকে বেরিয়ে যায় তা অবশ্যই কাফফারা আদায়ের মাধ্যমে ভঙ্গ করা যেতে পারে। যেমন হযরত জুবাইর ইবনু মুতইম ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ “ ইসলামে কোন শপথ নেই, শপথ ছিল জাহেলিয়াতের যুগে, ইসলাম এর দৃঢ়তা বৃদ্ধি করে ।( এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন। সহীহ মুসলিমে অনুরূপ বর্ণনা ইবনু আবি শায়বা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে) এর অর্থ এই যে, ইসলাম গ্রহণের পর এক দল অন্য দলের সাথে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে এবং একে অপরের সুখে- দুঃখে অংশ নেবে এইরূপ কসম করার কোন প্রয়োজনীয়তা নেই। কেননা, ইসলামী সম্পর্ক সমস্ত মুসলমানকে ভাই ভাই করে দেয়। পূর্ব ও পশ্চিমের সুসলমানরা একে অপরের দুঃখে সমবেদনা জ্ঞাপন করে থাকে। আর যে হাদীসটি হযরত আনাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেনঃ রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাদের বাড়ীতে আনসার ও মুহাজিরদের মধ্যে শপথ করিয়েছিলেন ।( এ হাদীসটি সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিমে বর্ণিত হয়েছে )এর ভাবার্থ এই যে, তিনি তাঁদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন করেছিলেন, এমন কি তারা একে অপরের মালের উত্তরাধিকারী হতেন। শেষ পর্যন্ত তা মানসূখ বা রহিত হয়ে যায়। এ সব ব্যাপারে আল্লাহ তাআলাই সর্বাধিক সঠিক জ্ঞানের অধিকারী। বলা হয়েছে যে, আল্লাহ তাআলার এই নির্দেশ দ্বারা তাঁর উদ্দেশ্য হচ্ছে ঐ মুসলসানদেরকে ইসলামের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকার হুকুম করা যারা রাসূলুল্লাহ( সঃ ) হাতে দীক্ষা গ্রহণ করে ইসলামের আহকাম মেনে চলার স্বীকারোক্তি করেছিলেন। তাদেরকে বলা হচ্ছেঃ “ এরূপ গুরুত্বপূর্ণ কসম ও পূর্ণ । অঙ্গীকারের পর এটা যেন না হয় যে, মুহাম্মদের ( সঃ ) দলের স্বল্পতা ও মুশরিকদের দলের আধিক্য দেখে তোমরা কসম ভেঙ্গে দাও।” হযরত নাফে’ ( রাঃ ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, জনগণ যখন ইয়াযীদ ইবনু মুআবিয়ার ( রাঃ ) বায়আত ভঙ্গ করতে থাকে তখন হযরত আবদুল্লাহ ইবনু উমার ( রাঃ ) তাঁর পরিবারের সমস্ত লোককে একত্রিত করেন এবং আল্লাহর প্রশংসাকীৰ্তন করতঃ ( আরবি ) বলার পর বলেনঃ “ আমরা এই লোকটির ( ইয়াযীদের হাতে বায়আত করেছি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের (সঃ ) বায়আতের উপর । আর আমি রাসূলুল্লাহকে ( সঃ ) বলতে শুনেছিঃ “ কিয়ামতের দিন প্রত্যেক বিশ্বাসঘাতকের জন্যে একটি পতাকা গেড়ে দেয়া হবে এবং ঘোষণা করা হবেঃ “এটা হচ্ছে অমুকের পুত্র অমুকের বিশ্বাসঘাতকতা । আল্লাহর সঙ্গে শিরক করার পরে সবচেয়ে বড় বিশ্বাসঘাতকতা হচ্ছে এই যে, আল্লাহ ও তাঁর। রাসূলের ( সঃ ) বায়আত কারো হাতে করার পর তা ভেঙ্গে দেয়া হয়। সুতরাং তোমাদের কেউ যেন এরূপ মন্দ কাজ না করে এবং সীমা ছাড়িয়ে না যায়, অন্যথায় আমার মধ্যে ও তার মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যাবে।” ( এ হাদীসটি ইমাম আহমদ (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)হযরত হুযাইফা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি রাসূলুল্লাহকে ( সঃ ) বলতে শুনেছেনঃ “ যে ব্যক্তি তার মুসলমান ভাই-এর কাছে এমন কোন শর্ত করে যা পুরো করার ইচ্ছা তার আদৌ থাকে না, সে ঐ ব্যক্তির মত যে তার প্রতিবেশীকে নিরাপত্তা দান করার পর আশ্রয়হীন অবস্থায় ছেড়ে দেয় ।( এ হাদীসটিও ইমাম আহমদ (রঃ ) স্বীয় মুসনাদে বর্ণনা করেছেন)এরপর আল্লাহ তাআলা তাদেরকে ধমকের সুরে বলেনঃ “ যারা অঙ্গীকার ও কসমের হিফাযত করে না তাদের এই কাজ সম্পর্কে আল্লাহ পূর্ণ ওয়াকিফহাল ।”মক্কায় একটি স্ত্রী লোক ছিল, যার মস্তিষ্ক বিকৃত হয়েছিল। সে সূতা কাটতো। সূতা কাটার পরে যখন তা ঠিকঠাক ও মযবুত হয়ে যেতো, তখন সে বিনা কারণে তা ছিড়ে ফেলতো এবং টুকরো টুকরো করে দিতো। এটা দৃষ্টান্ত হচ্ছে ঐ ব্যক্তির, যে অঙ্গীকার ও কসম মযবুত করার পর তা ভঙ্গ করে দেয়। এটাই হচ্ছে সঠিক কথা। এখন আসলে এই ঘটনার সাথে এরূপস্ত্রীলোক জড়িত ছিল কি না, তা জানার আমাদের কোন প্রয়োজন নেই। এখানে শুধুমাত্র দৃষ্টান্ত বর্ণনা করাই উদ্দেশ্য।এহাদীসটি এর অর্থ হচ্ছে টুকরা টুকরা। সম্ভবতঃ এটা ( আরবি ) এর ( আরবি ) হবে। আবার এটাও হতে পারে যে, ( আরবি ) এর ( আরবি ) এর ( আরবি ) হবে। অর্থাৎ তোমরা ( আরবি ) হয়ো না। এটা ( আরবি ) এর বহু বচন, ( আরবি ) হতে।অতঃপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ “ তোমরা তোমাদের কসমকে প্রবঞ্চনার মাধ্যম বানিয়ে নিয়ো না । এইভাবে যে, নিজের চেয়ে বড়দেরকে নিজের কসম দ্বারা শান্ত করে এবং ঈমানদারী ও নেকনামীর ছাঁচে নিজেকে ফেলে দিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা ও বেঈমানী করতে শুরু কর এবং তাদের সংখ্যাধিক্য দেখে তাদের সাথে সন্ধিস্থাপনের পর সুযোগ পেয়ে আবার যুদ্ধ শুরু করে দাও। খবরদার! এইরূপ করো না। সুতরাং ঐ অবস্থাতেও যখন চুক্তি ভঙ্গ করাহারাম, তখন নিজের বিজয় ও সংখ্যাধিকোর সময় তো আরো হারাম হবে। সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর যে, আমরা সূরায়ে আনফালে হযরত মুআবিয়ার ( রাঃ ) ঘটনা লিখে এসেছি। তা এই যে, তাঁর মধ্যে ও রোমক সম্রাটের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্যে সন্ধি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ঐ মেয়াদ শেষ হওয়ার সময় নিকটবর্তী হলে তিনি তার সেনাবাহিনীকে রোম সীমান্তে পাঠিয়ে দেন যে, তারা যেন শিবির সন্নিবেশ করে এবং মেয়াদ শেষ হওয়া মাত্রই অকস্মাৎ আক্রমণ চালিয়ে দেয়, যেন তারা প্রস্তুতি গ্রহণে সুযোগ না পায়। হযরত আমর ইবনু উৎবার ( রাঃ ) কানে যখন এই খবর পৌঁছে, তখন তিনি আমীরুল মু'মিনীন হযরত মুআবিয়ার ( রাঃ ) নিকট আসেন এবং তাঁকে বলেনঃ আল্লাহু আকবার! হে মুআবিয়া ( রাঃ ) ! অঙ্গীকার পূর্ণ করুন এবং বিশ্বাসঘাতকতা ও চুক্তি ভঙ্গের দোষ থেকে দূরে থাকুন । আমি রাসূলুল্লাহকে ( সঃ ) বলতে শুনেছিঃ যে কওমের সাথে চুক্তি হয়ে যায়, চুক্তির মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোন বন্ধন খোলার অনুমতি নেই ( অর্থাৎ তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা চলবে না।” একথা শুনা মাত্রই হযরত মুআবিয়া (রাঃ ) তার সেনাবাহিনীকে ফিরে আসতে বলেন।( আরবি ) শব্দের অর্থ হচ্ছে অধিক। এই বাক্যের অর্থ এটাও হতে পারেঃ “ যখন দেখলো সৈন্য সংখ্যা অধিক ও শক্তিশালী তখন সন্ধি করে নিলো এবং এই সন্ধিকে প্রবঞ্চনার মাধ্যম করে তাদেরকে অপ্রস্তুত করতঃ অকস্মাৎ আক্রমণ করে বসলো ।” আবার ভাবার্থ এও হতে পারেঃ “ এক কওমের সঙ্গে চুক্তি করলো । তারপর দেখলো যে, অপর কওম তাদের চেয়ে শক্তিশালী। তখন তাদের দলে ভিড়ে গেল এবং পূর্ববর্তী কওমের সঙ্গে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করে দিলো।” এসব নিষিদ্ধ। এই আধিক্য দ্বারা আল্লাহ তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন। কিংবা তিনি নিজের এই হুকুম দ্বারা অর্থাৎ অঙ্গীকার পালনের হুকুম দ্বারা তোমাদের পরীক্ষা করেন। আর কিয়ামতের দিন তিনি তোমাদের মধ্যে সঠিক ফায়সালা করবেন। প্রত্যেককে তিনি তার আমলের বিনিময় প্রদান করবেন, ভাল আমলকারীদেরকে ভাল বিনিময় এবং মন্দ আমলকারীদেরকে মন্দ বিনিময়।

সূরা নাহল আয়াত 92 সূরা

ولا تكونوا كالتي نقضت غزلها من بعد قوة أنكاثا تتخذون أيمانكم دخلا بينكم أن تكون أمة هي أربى من أمة إنما يبلوكم الله به وليبينن لكم يوم القيامة ما كنتم فيه تختلفون

سورة: النحل - آية: ( 92 )  - جزء: ( 14 )  -  صفحة: ( 277 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. আল্লাহ দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন একটি জনপদের, যা ছিল নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত, তথায় প্রত্যেক জায়গা থেকে
  2. হে ঈমানদারগণ! মুশরিকরা তো অপবিত্র। সুতরাং এ বছরের পর তারা যেন মসজিদুল-হারামের নিকট না আসে।
  3. তারা দৃঢ়ভাবে আল্লাহর কসম খেয়ে বলে যে, আপনি তাদেরকে আদেশ করলে তারা সবকিছু ছেড়ে বের
  4. তুমি কি দেখ না যে, আল্লাহর অনুগ্রহে জাহাজ সমুদ্রে চলাচল করে, যাতে তিনি তোমাদেরকে তাঁর
  5. আমি কোন জনপদ ধ্বংস করিনি; কিন্তু এমতাবস্থায় যে, তারা সতর্ককারী ছিল।
  6. আর যখন আমি মূসার সাথে ওয়াদা করেছি চল্লিশ রাত্রির অতঃপর তোমরা গোবৎস বানিয়ে নিয়েছ মূসার
  7. এবং কাফেরেরা চক্রান্ত করেছে আর আল্লাহও কৌশল অবলম্বন করেছেন। বস্তুতঃ আল্লাহ হচ্ছেন সর্বোত্তম কুশলী।
  8. আরও শপথ করি সেই মনের, যে নিজেকে ধিক্কার দেয়-
  9. তুমি কি দেখনি যে, আল্লাহ নভোমন্ডল ও ভুমন্ডল যথাবিধি সৃষ্টি করেছেন? যদি তিনি ইচ্ছা করেন,
  10. আর ভয়ঙ্কর গর্জন পাপিষ্ঠদের পাকড়াও করল, ফলে ভোর হতে না হতেই তারা নিজ নিজ গৃহসমূহে

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা নাহল ডাউনলোড করুন:

সূরা Nahl mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Nahl শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত নাহল  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত নাহল  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত নাহল  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত নাহল  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত নাহল  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত নাহল  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত নাহল  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত নাহল  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত নাহল  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত নাহল  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত নাহল  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত নাহল  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত নাহল  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত নাহল  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত নাহল  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত নাহল  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত নাহল  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত নাহল  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত নাহল  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত নাহল  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত নাহল  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত নাহল  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত নাহল  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত নাহল  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত নাহল  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Wednesday, December 18, 2024

Please remember us in your sincere prayers