কোরান সূরা বাকারাহ্ আয়াত 92 তাফসীর
﴿۞ وَلَقَدْ جَاءَكُم مُّوسَىٰ بِالْبَيِّنَاتِ ثُمَّ اتَّخَذْتُمُ الْعِجْلَ مِن بَعْدِهِ وَأَنتُمْ ظَالِمُونَ﴾
[ البقرة: 92]
সুস্পষ্ট মু’জেযাসহ মূসা তোমাদের কাছে এসেছেন। এরপর তার অনুপস্থিতিতে তোমরা গোবৎস বানিয়েছ। বাস্তবিকই তোমরা অত্যাচারী। [সূরা বাকারাহ্: 92]
Surah Al-Baqarah in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Baqarah ayat 92
আর নিশ্চয়ই মূসা তোমাদের কাছে এসেছিলেন স্পষ্ট প্রমাণ নিয়ে, কিন্তু তোমরা বাছুরকে গ্রহণ করলে তাঁর, আর তোমরা হলে অন্যায়কারী।
Tafsir Mokhtasar Bangla
৯২. নিশ্চয়ই তোমাদের রাসূল মূসা ( আলাইহিস-সালাম ) তোমাদের নিকট সুস্পষ্ট নিদর্শন নিয়ে এসেছেন। যা তাঁর সত্যতা প্রমাণ করে। এরপরও তোমরা গো-বাছুরকে উপাস্য বানিয়ে নিলে। মূসা ( আলাইহিস-সালাম ) তাঁর প্রতিপালকের সাক্ষাতে যাওয়ার পর তোমরা যার পূজা করেছো। নিশ্চয়ই তোমরা আল্লাহর সাথে শিরক করে নিজেদের উপর অন্যায়-অবিচার করেছো। অথচ তিনিই হলেন ইবাদাতের একমাত্র উপযুক্ত; অন্য কেউ নয়।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
( হে বনী ইস্রাঈলগণ! ) নিশ্চয় মূসা তোমাদের নিকট সুস্পষ্ট প্রমাণসহ এসেছিল, ( কিন্তু তা সত্ত্বেও তার অনুপস্থিতিতে ) তোমরা সীমালংঘনকারী হয়ে গো-বৎসকে উপাস্যরূপে গ্রহণ করেছিলে। [১] [১] এটা তাদের অস্বীকৃতি ও শত্রুতার আরো একটি দলীল। মূসা ( আঃ ) সুস্পষ্ট নির্দশনসমূহ এবং অকাট্য প্রমাণাদি কেবল এই কথা সাব্যস্ত করার জন্য এনেছিলেন যে, তিনি আল্লাহর প্রেরিত রসূল এবং উপাস্য একমাত্র মহান আল্লাহ। কিন্তু তা সত্ত্বেও তোমরা মূসা ( আঃ )-এর সাথে সংকীর্ণতা সৃষ্টি করলে এবং এক আল্লাহকে বাদ দিয়ে গোবৎসকে উপাস্য বানিয়ে নিলে।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
অবশ্যই মূসা তোমাদের কাছে সুস্পষ্ট প্রমাণসহ [ ১ ] এসেছিলেন, তারপর তোমরা তার অনুপস্থিতিতে গো বৎস কে ( উপাস্যরুপে ) গ্রহন করেছিলে। বাস্তবিকই তোমরা যালিম [ ২ ]। [ ১ ] এ আয়াতে ‘স্পষ্ট প্রমাণ' কি তা ব্যাখ্যা করে বলা হয় নি। অন্য আয়াতে সেটা এসেছে। যেমন, বলা হয়েছে, “ তারপর আমরা তাদেরকে তুফান, পঙ্গপাল, উকুন, ভেক ও রক্ত দ্বারা ক্লিষ্ট করি । এগুলো স্পষ্ট নিদর্শন; কিন্তু তারা অহংকারীই রয়ে গেল, আর তারা ছিল এক অপরাধী সম্প্রদায়" [ সূরা আল-আরাফ: ১৩৩ ] আরও বলা হয়েছে, “তারপর মূসা তার হাতের লাঠি নিক্ষেপ করল এবং সাথে সাথেই তা এক অজগর সাপে পরিণত হল এবং তিনি তার হাত বের করলেন আর সাথে সাথেই তা দর্শকদের কাছে শুভ্র উজ্জ্বল দেখাতে লাগল" [ সূরা আল-আরাফঃ ১০৭-১০৮ ] আরও এসেছে, “ তারপর আমরা মূসার প্রতি ওহী করলাম যে, আপনার লাঠি দ্বারা সাগরে আঘাত করুন । ফলে তা বিভক্ত হয়ে প্রত্যেক ভাগ বিশাল পর্বতের মত হয়ে গেল” [ সূরা আশ-শু'আরা: ৬৩ ] অনুরূপ আরও কিছু আয়াতে। [ ২ ] ইয়াহুদীদের দাবীর খণ্ডনে আয়াতে বলা হয়েছে যে, তোমরা একদিকে ঈমানের দাবী কর, অন্যদিকে প্রকাশ্য শির্কে লিপ্ত হও। ফলে শুধু মূসা ‘আলাইহিস সালাম-কেই নয়, আল্লাহ্কেও মিথ্যা প্রতিপন্ন করে চলেছ। কুরআন নাযিলের সময় রাসূল সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর আমলে যেসব ইয়াহুদী ছিল, তারা গোবৎসকে উপাস্য নির্ধারণ করেনি সত্য; কিন্তু তারা নিজেদের পূর্ব-পুরুষদের সমর্থক ছিল। অতএব তারাও মোটামুটিভাবে এ আয়াতের লক্ষ্য। [ তাফসীরে মা'আরিফুল কুরআন ]
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
৯১-৯২ নং আয়াতের তাফসীর অর্থাৎ যখন তাদেরকে কুরআন কারীমের উপর ও শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ ( সঃ )-এর উপর ঈমান আনতে বলা হয় তখন তারা বলে- তাওরাতের উপর ঈমান আনাই আমাদের জন্যে যথেষ্ট। আল্লাহ তা'আলা বলেন যে, তারা তাদের এ কথায় মিথ্যাবাদী। কুরআন কারীম তো পূর্বের সমস্ত কিতাবের সত্যতা প্রতিপাদনকারী। আর স্বয়ং তাদের কিতাবেও রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর সত্যতা বিদ্যমান রয়েছে। যেমন পবিত্র কুরআনে আছেঃ “ আহলে কিতাব তাকে ( মুহাম্মদ সঃ কে ) এভাবেই চেনে যেমন চেনে তারা তাদের সন্তান সন্ততিকে । সুতরাং তাকে অস্বীকার করার ফলে তাওরাত ও ইঞ্জীলের উপরও তাদের ঈমান রইল। এ দলীল কায়েম করার পর অন্যভাবে দলীল কায়েম করা হচ্ছে যে, তারা যদি তাদের কথায় সত্যবাদী হয় তবে যে সব নবী নতুন কোন শরীয়ত ও কিতাবনা এনে পূর্ব নবীদেরই অনুসারী হয়ে তাদের নিকট এসেছিলেন, তারা তাদেরকে হত্যা করেছিল কেন? তাহলে প্রমাণিত হলো যে, তাদের ঈমান কুরআন মাজীদের উপরও নেই এবং পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের উপরও নেই।অতঃপর বলা হচ্ছে যে, হযরত মূসা ( আঃ ) হতে তো তারা বড় বড় মু'জেযা প্রকাশ পেতে দেখেছে, যেমন তুফান, ফড়িং, উকুন, ব্যাঙ, রক্ত ইত্যাদি তাঁর বদ দু'আর কারণে প্রকাশ পেয়েছে। তাছাড়া লাঠির সাপ হওয়া, হাত উজ্জ্বল চন্দ্রের ন্যায় হওয়া, মেঘের ছায়া করা, মান্না ও সালওয়া' অবতারিত হওয়া এবং পাথর হতে নদী প্রবাহিত হওয়া ইত্যাদি বড় বড় অলৌকিক ঘটনাবলী-যা হযরত মুসার ( আঃ ) নুবুওয়াতের ও আল্লাহর একত্ববাদের জ্বলন্ত প্রমাণ ছিল এবং ওগুলো তারা স্বচক্ষে দেখেছিল। অথচ হযরত মূসার ( আঃ ) তূর পাহাড়ে গমনের পরই তারা বাছুরকে তাদের উপাস্য বানিয়ে নেয়। তা হলে তাওরাতের উপর ও স্বয়ং হযরত মূসার ( আঃ ) উপর তাদের ঈমান থাকলে কোথায়? এসব অসৎ ও অপরাধমূলক কার্যের ফলে তারা কি অনাচারী ও অত্যাচারীরূপে প্রমাণিত হচ্ছে না? ( আরবি ) হতে ভাবার্থ হচ্ছে হযরত মূসার ( আঃ ) তুর পাহাড়ে যাওয়ার পর।' যেমন অন্যত্র রয়েছেঃ মূসার ( আঃ ) ভূরে যাওয়ার পর তার সম্প্রদায় বাছুরকে তাদের মা'বুদ বানিয়ে নিয়েছিল এবং ঐ গো পূজার কারণে তারা তাদের নফসের উপর স্পষ্ট জুলুম করেছিল। পরে এ অনুভূতি তাদেরও হয়েছিল। যেমন আল্লাহপাক বলেনঃ যখন তাদের জ্ঞান। ফিরলো তখন তারা লজ্জিত হলো এবং নিজেদের ভ্রান্তি অনুভব করলো। সে সময় তারা বললো- হে আল্লাহ! যদি আপনি আমাদের প্রতি সদয় না হন এবং আমাদের পাপ ক্ষমা না করেন তবে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো।
সূরা বাকারাহ্ আয়াত 92 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- তারা বলল, তুমি তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর, যেন সেটির রূপ বিশ্লেষণ করা
- অথচ তিনি তোমাদেরকে বিভিন্ন রকমে সৃষ্টি করেছেন।
- আল্লাহর নেয়ামত ও অনুগ্রহের জন্যে তারা আনন্দ প্রকাশ করে এবং তা এভাবে যে, আল্লাহ, ঈমানদারদের
- বললেন, আজ তোমাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। আল্লাহ তোমাদের কে ক্ষমা করুন। তিনি সব মেহেরবানদের
- তোমাদের ও তোমাদের চতুস্পদ জন্তুদের উপকারার্থে।
- আর তাদের উপর বর্ষণ করেছিলাম মুষলধারে বৃষ্টি। সেই সতর্ককৃতদের উপর কতই না মারাত্নক ছিল সে
- আপনি সেই চিরঞ্জীবের উপর ভরসা করুন, যার মৃত্যু নেই এবং তাঁর প্রশংসাসহ পবিত্রতা ঘোষণা করুন।
- অতঃপর তারা তাদের রশি ও লাঠি নিক্ষেপ করল এবং বলল, ফেরাউনের ইযযতের কসম, আমরাই বিজয়ী
- যারা কুফরী করে এবং আল্লাহর পথে বাধা সৃষ্টি করে, আল্লাহ তাদের সকল কর্ম ব্যর্থ করে
- যারা কুফুরী করে, তাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহর সামনে কখনও কাজে আসবে না। আর তারাই
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা বাকারাহ্ ডাউনলোড করুন:
সূরা Baqarah mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Baqarah শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
Please remember us in your sincere prayers