কোরান সূরা লাইল আয়াত 11 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Lail ayat 11 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা লাইল আয়াত 11 আরবি পাঠে(Lail).
  
   

﴿وَمَا يُغْنِي عَنْهُ مَالُهُ إِذَا تَرَدَّىٰ﴾
[ الليل: 11]

যখন সে অধঃপতিত হবে, তখন তার সম্পদ তার কোনই কাজে আসবে না। [সূরা লাইল: 11]

Surah Al-Layl in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Lail ayat 11


আর তার ধনসম্পদ তার কোনো কাজে আসবে না যখন সে অধঃপাতে পড়বে।


Tafsir Mokhtasar Bangla


১১. সে যখন ধ্বংস হয়ে যাবে ও জাহান্নামে প্রবেশ করবে তখন এ সম্পদ তার কোন উপকারে আসবে না। যা ব্যয় করার ক্ষেত্রে সে কার্পণ্য করেছে।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


যখন সে ধ্বংস হবে, তখন তার সম্পদ তার কোনই কাজে আসবে না।[১] [১] অর্থাৎ, যখন সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে, তখন এই মাল-ধন, যা সে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করত না, তা সেদিন কোন কাজে আসবে না।

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আর তার সম্পদ তার কোন কাজে আসবে না, যখন সে ধ্বংস হবে []। [] تردى এর শাব্দিক অর্থ অধঃপতিত হওয়া ও ধ্বংস হওয়া। অর্থাৎ একদিন তাকে অবশ্যি মরতে হবে। তখন দুনিয়াতে যেসব ধন-সম্পদে কৃপণতা করেছিল তা তার কোনও কাজে আসবে না। [ মুয়াসসার ]

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


নবী করীম ( সঃ ) হযরত মুআযের ( রঃ ) প্রতি যে উক্তিটি করেছিলেন তা পূর্বেই গত হয়েছে। তাহলো “কেন তমি নামাযে ( আরবি ) এবং ( আরবি ) এই সূরাগুলো পাঠ কর না?” ১-১১ নং আয়াতের তাফসীর মুসনাদে আহমদে হযরত আলকামা ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, তিনি সিরিয়ায় আগমন করেন এবং দামেস্কের মসজিদে গিয়ে দুই রাকআত নামায পড়েন। অতঃপর দুআ করেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাকে একজন উত্তম সাথী দান করুন!” এরপর হযরত আবুদ দারদা'র ( রাঃ ) সাথে তাঁর সাক্ষাৎ হয়। হযরত আবুদ দারদা ( রাঃ ) তাঁকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ আপনি কোথাকার লোক? তিনি উত্তরে বলেনঃ “আমি একজন কুফার অধিবাসী । হযরত আবুদ দারদা ( রাঃ ) প্রশ্ন করলেনঃ “ আপনি ইবনে উমি আবৃদ ( রাঃ )-কে ( আরবি ) এ সূরাটি কিভাবে পড়তে শুনেছেন?” জবাবে হযরত আলকামা ( রাঃ ) বলেনঃ “তিনি পড়তেন ( আরবি )” তখন হযরত আবুদ দারদা ( রাঃ ) বললেনঃ “ আমিও রাসূলুল্লাহ( সঃ )-কে এ সূরাটি এ ভাবেই পড়তে শুনেছি । অথচ জনগণ আমাকে সন্দেহের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।” অতঃপর তিনি বললেনঃ “ আপনাদের মধ্যে কি বালিশ ওয়ালা ( অর্থাৎ সফরে যার কাছে রাসূলুল্লাহ্ (সঃ )-এর বিছানাপত্র থাকতো) এবং যিনি এমন কিছু গোপনীয় জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন যে জ্ঞান অন্য কারো ছিল না এবং হযরত মুহাম্মদ ( সঃ )-এর ভাষায় যিনি শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত ছিলেন অর্থাৎ হযরত আব্দুল্লাহ্ ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) নেই?”হযরত ইবরাহীম ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত আব্দুল্লাহ ( রাঃ )-এর সঙ্গী-সাথীগণ হযরত আবুদ দারদা ( রাঃ )-এর খোঁজে আগমন করেন । হযরত আবুদ দারদা ( রাঃ )ও তাদেরকে খোঁজ করতে করতে পেয়ে যান। অতঃপর তিনি তাঁদেরকে জিজ্ঞেস করেনঃ “ আপনাদের মধ্যে হযরত আব্দুল্লাহ ( রাঃ )-এর কিরআত অনুযায়ী কুরআন পাঠকারী কেউ আছেন কি? উত্তরে তারা বললেনঃ “আমরা সবাই ( তার কিরআতের অনুসারী )” তখন তিনি জিজ্ঞেস করলেনঃ “ আপনাদের মধ্যে হযরত আব্দুল্লাহর কিরআত অধিক স্মরণকারী কে আছেন?” তাঁরা জবাবে হযরত আলকামা ( রাঃ )-এর প্রতি ইঙ্গিত করলেন । তখন হযরত আবুদ দারদা ( রাঃ ) তাঁকে জিজ্ঞেস করলেনঃ “ আপনি হযরত আব্দুল্লাহ্ ( রাঃ )-কে ( আরবি ) এ সূরাটি কিভাবে পড়তে শুনেছেন? তিনি ( আরবি ) উত্তরে বললেন, “তিনি পাঠ করতেন । হযরত আবুদ দারদা ( রাঃ ) একথা শুনে বললেনঃ “ আমিও রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-কে এভাবেই পড়তে শুনেছি । অথচ জনগণ চায় যে, আমি যেন পাঠ করি। আল্লাহর কসম! তাদের কথা আমি মানব না’’’’ ( এ হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ ) ও ইমাম মুসলিম ( রঃ ) এভাবে বর্ণনা করেছেন) মোট কথা, হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) এবং হযরত আবুদ দারদা ( রাঃ )-এর কিরআত এরূপ। হযরত আবুদ দারদা এ বর্ণনাকে উসূলে হাদীসের পরিভাষায় মারফু বলেও উল্লেখ করেছেন। অন্যান্য জমহূরের কিরআত বর্তমানে কুরআনে উল্লিখিত কিরআতের অনুরূপ। আল্লাহ তা'আলা সমগ্র সৃষ্টি জগতের উপর ছেয়ে যাওয়া রাত্রির শপথ করছেন, সব কিছুকে আলোকমণ্ডিত করে দেয়া দিবসের শপথ করেছেন এবং সমস্ত নর-নারী, নর ও মাদী জীবসমূহের স্রষ্টা হিসেবে নিজের সত্ত্বার শপথ করেছেন। যেমন তিনি বলেছেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ আমি তোমাদেরকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছি ।( ৭৮:৮ ) আরো বলেছেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ আমি প্রত্যেক জিনিসের জোড়া সৃষ্টি করেছি ।( ৫১৪ ৪৯ ) এই শপথ করার পর আল্লাহ তাবারাকা ওয়া তা'আলা বলছেনঃ অবশ্যই তোমাদের কর্ম প্রচেষ্টা বিভিন্ন প্রকৃতির। অর্থাৎ তোমাদের প্রচেষ্টা এবং আমলসমূহ পরস্পরবিরোধী, একটি অন্যটির বিপরীত। যারা ভাল কাজ করছে তারাও আছে এবং যারা মন্দ কাজে লিপ্ত রয়েছে তারাও আছে।এরপর আল্লাহ তাআলা বলেনঃ যে ব্যক্তি দান করলো ও মুত্তাকী হলো অর্থাৎ আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী তার পথে খরচ করলো, মেপে মেপে পা বাড়ালো, প্রত্যেক কাজে আল্লাহর ভয় রাখলো আল্লাহর ওয়াদাকৃত পুরস্কারকে সত্য বলে জানলো এবং তাঁর পুণ্যের অঙ্গীকারের প্রতি বিশ্বাস করলো, আর যা উত্তম। গ্রহণ করলো, আমি তার জন্যে সহজ পথ সুগম করে দিবো।( আরবি ) শব্দের অর্থ ‘লাইলাহা ইল্লাল্লাহ, করা হয়েছে। কেউ কেউ এর অর্থ ‘নিয়ামত’ করেছেন। আবার কেউ কেউ এ কথাও বলেছেন যে, এর ভার্থ হলোঃ নামায, রোযা, যাকাত, সাদকা, সাদকায়ে ফিত্র এবং জান্নাত। মহান আল্লাহ বলে আমি তার জন্যে সহজ পথ সুগম করে দিবো। অর্থাৎ কল্যাণ, অত এ উত্তম বিনিময়ের পথ।পারে সে ব্যক্তি কার্পণ্য করলো এবং নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ মনে করলো এবং হুসন’ অর্থাৎ কিয়ামতের বিনিময়কে অবিশ্বাস করলো, তার জন্যে আমি সুগম করে দিবো কঠোর পরিণামের পথ। যেমন আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ আমি তাদের অন্তঃকরণ ও তাদের চক্ষু উল্টিয়ে দিবো, যেমন তারা প্রথমবার কুরআনের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেনি এবং তাদেরকে আমি অবাধ্যতায় বিভ্রান্তের ন্যায় ঘুরে বেড়াতে ছেড়ে দিবো ।" ( ৬৪১১০ ) প্রত্যেক আমলের বিনিময় যে সেই আমলের অনুরূপ হয়ে থাকে এ সম্পর্কিত আয়াত কুরআন কারীমের মধ্যে বহু রয়েছে। যে ভাল কাজ করতে চায় তাকে ভাল কাজ করার তাওফীক দান করা হয়। পক্ষান্তরে যে মন্দ কাজ করতে চায় তাকে মন্দ কাজ করার সামর্থ্য প্রদান করা হয়। এ অর্থের সমর্থনে বহু হাদীসও রয়েছে। একটি হাদীস এই যে, একবার হযরত আবু বকর সিদ্দীক ( রাঃ ) রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) কে জিজ্ঞেস করেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! আমাদের আমলসমূহ কি তকদীরের লিখন অনুযায়ী হয়ে থাকে?" রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) জবাবে বলেনঃ “হ্যা তকদীরের লিখন অনুযায়ীই আমল হয়ে থাকে ।” একথা শুনে হযরত আবু বকর ( রাঃ ) বললেনঃ “ হে আল্লাহর রাসুল ( সঃ ) তাহলে আমলের প্রয়োজন কি?” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন বললেনঃ “প্রত্যেক ব্যক্তির উপর সেই আমল সহজ হবে যে জন্যে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে ।( এ হাদীসটি মুসনাদে আহমদে বর্ণিত হয়েছে )হযরত আলী ইবনে আবী তালিব ( রাঃ ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “ আমরা বাকী’ গারকাদে রাসুলুল্লাহ ( সঃ )-এর সাথে এক জানাযায় শরীক ছিলাম । তিনি বললেনঃ “ জেনে রেখো যে তোমাদের প্রত্যেকের স্থানই জান্নাতে অথবা জাহান্নামে নির্ধারণ করা হয়েছে এবং লিপিবদ্ধ রয়েছে ।” একথা শুনে জনগণ বললেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! তাহলে আমরা তো সেই ভরসায় নিষ্ক্রীয় হয়ে থাকলেই পারি?” উত্তরে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বললেনঃ তোমরা আমল করে যাও, কারণ প্রত্যেক লোকের জন্য সেই আমলই সহজ করা হবে যে জন্যে তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে ।” অতঃপর তিনি ( আরবি ) হতে ( আরবি ) পর্যন্ত আয়াতগুলো পাঠ করলেন।” ( এ হাদীসটি ইমাম বুখারী (রঃ ) বর্ণনা করেছেন)এ বর্ণনাটিই অন্যভাবেও বর্ণিত হয়েছে যে, ঐ সময় রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর হাতে এক টুকরো কাঠি ছিল এবং মাথা নীচু করে তিনি তা এদিক ওদিক করছিলেন। শব্দের মধ্যে কিছু কম বেশীও রয়েছে। উপরে হযরত আবু বকর ( রাঃ )-এর প্রশ্ন সম্বলিত একটি হাদীস উল্লেখ করা হয়েছে। মুসনাদে আহমদে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর ( রাঃ )-এর একই ধরনের প্রশ্ন সম্বলিত একটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে এবং নবী করীমের ( সঃ ) উত্তরও প্রায় একই রকমের রয়েছে। ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ ) হযরত জাবির ( রাঃ ) হতেও একই ধরনের বর্ণনার উল্লেখ করেছেন। ইমাম ইবনে জারীরেরই ( রঃ ) অন্য একটি বর্ণনায় দু'জন যুবকের একই রকম প্রশ্ন এবং রাসূলুল্লাহ ( স )-এর একই রকম উত্তর বর্ণিত রয়েছে। তারপর সেই দুই যুবকের নিম্নের উক্তিও উল্লিখিত রয়েছেঃ “ হে আল্লাহর রাসুল ( সঃ )! আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় সৎ আমল করতে থাকবো । হযরত আবুদ দারদা ( রাঃ ) হতেও একইভাবে বর্ণিত আছে যে, রাসুলে কারীম ( সঃ ) বলেনঃ “ প্রতিদিন সূর্যাস্তের সময় সূর্যের উভয় পাশে দু’জন ফেরেশতা উপস্থিত হন এবং উচ্চস্বরে দু'আ করেন, যে দু’আ মানুষ ও জ্বিন ছাড়া সকল সৃষ্টি জীবই শুনতে পায় । তারা দু'আ করেনঃ “ হে আল্লাহ! দানশীলকে পূর্ণ বিনিময় প্রদান করুন এবং কৃপণের মাল ধ্বংস করে দিন ।” কুরআনে এ চারটি আয়াতের অর্থ এটাই।” হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) হতে বর্ণিত আছে যে, একটি লোকের একটি খেজুরের বাগান ছিল। ঐ বাগানের একটি খেজুর গাছের শাখা একটি দরিদ্রলোকের ঘরের উপর ঝুঁকেছিল। ঐ দরিদ্র লোকটি ছিল পুণ্যবান। তার সন্তান সন্ততিও ছিল। বাগানের মালিক খেজুর নামাতে এসে ঝুঁকে থাকা শাখার খেজুরও নির্দ্বিধায় নামিয়ে নিতো। নীচে দরিদ্র লোকটির আঙ্গিনায় পড়া খেজুরও সে কুড়িয়ে নিতো। এমনকি দরিদ্র লোকটির ছেলে মেয়েদের কেউ দু একটা খেজুর মুখে দিলে বাগানের ঐ মালিক তার মুখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে ঐ খেজুর বের করে নিতো। দরিদ্র লোকটি এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর কাছে অভিযোগ করলো। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তাকে বললেনঃ “ আচ্ছা, তুমি যাও ( আমি এর সুব্যবস্থা করছি )” অতঃপর তিনি বাগানের মালিকের সাথে দেখা করে বললেনঃ “ তোমার যেই খেজুর গাছের শাখা অমুক দরিদ্রলোকের ঘরের উপর ঝুঁকে আছে সেই খেজুর গাছটি আমাকে দিয়ে দাও, আল্লাহ তা'আলা তোমাকে সেই গাছের বিনিময়ে জান্নাতে একটি গাছ দিবেন ।” বাগানের মালিক বললোঃ “ ঠিক আছে, দিয়ে দিলাম । কিন্তু উক্ত গাছের খেজুর আমার নিকট অত্যন্ত পছন্দনীয়। আমার বাগানে বহু গাছ আছে, কিন্তু ঐ গাছের মত সুস্বাদু খেজুর গাছ আর একটিও নেই।” এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) চুপচাপ ফিরে আসলেন। একটি লোক গোপনে দাঁড়িয়ে রাসূলুল্লাহ ( সঃ )এবং ঐ লোকেটির কথােপকথন শুনছিলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ( সঃ ) নিকট এসে বললেনঃ “ হে আল্লাহর রাসূল ( সঃ )! ঐ গাছটি যদি আমার হয়ে যায় এবং আমি ওটা আপনাকে দিয়ে দিই তবে কি ঐ গাছের বিনিময়ে আমিও জান্নাতে একটি গাছ পেতে পারি?” রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) উত্তরে বললেনঃ “হা ( অবশ্যই ) লোকটি তখন বাগান মালিকের কাছে গেলেন। তার নিজেরও একটি বাগান ছিল। প্রথমোক্ত বাগান-মালিক তাকে বললোঃ রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাকে আমার অমুক খেজুর গাছের বিনিময়ে জান্নাতের একটি গাছ দিতে চেয়েছেন । আমি তাঁকে এই জবাব দিয়েছি। তার একথা শুনে আগন্তুক লোকটি তাকে বললেনঃ “ তুমি কি গাছটি বিক্রি করতে চাও?" উত্তরে লোকটি বললোঃ “না । তবে হ্যা, ইতি মূল্য কেউ যদি দেয় তবে ভেবে দেখতে পারি। কিন্তু কে দিবে সেই মূল্য?" তখন আগন্তুক লোকটি জিজ্ঞেস করলেনঃ “ কত মূল্য তুমি চাও?”বাগান মালিক জবাব দিলোঃ “এর বিনিময়ে আমি চল্লিশটি খেজুর গাছ চাই ।” আগন্তুক বললেনঃ “ এটা তো খুব বেশী হয়ে যায় । একটি গাছের বিনিময়ে চল্লিশটি গাছ।” তারপর উভয়ে অন্য প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা শুরু করলো। কিছুক্ষণ পর আগন্তুক তাকে বললেনঃ “ আচ্ছা ঠিক আছে, আমি তোমার ইপ্সিত মূল্যেই তোমার খেজুর গাছ ক্রয় করলাম ।" মালিক বললোঃ “ যদি তাই হয় তবে সাক্ষ্য প্রমাণ যোগাড় করে কথা পাকাপাকি করে নাও ।” সুতরাং কয়েকজন লোক ডেকে নিয়ে সাক্ষ্য প্রমাণ গ্রহণ করা হলো এবং এইভাবে ক্রয় বিক্রয়ের কাজ পাকাপাকি হয়ে গেল। কিন্তু এতেও বাগান-মালিকের খুৎ খুঁৎ মনোভাব কাটলো না। সে বললোঃ “ দেখো ভাই, আমরা এখান হতে পৃথক না হওয়া পর্যন্ত কিন্তু বেচা কেনা সিদ্ধ হবে না?” ক্রেতা বললেনঃ “ঠিক আছে, তাই হবে ।”বাগানের মালিক বললোঃ “ আমি সম্মত হয়ে গেলাম যে তুমি আমাকে আমার এই খেজুর গাছের বিনিময়ে তোমার চল্লিশটি খেজুর গাছ প্রদান করবে । কিন্তু ভাই গাছগুলো ঘনশাখা বিশিষ্ট হওয়া চাই।” ক্রেতা বললেনঃ “ আচ্ছা তা দিবো ।” তারপর সাক্ষ্য প্রমাণ নিয়ে এ বেচাকেনা সম্পন্ন হলো। তারপর তারা দুজন পৃথক হয়ে গেল ( ক্রেতা লোকটি তখন আনন্দিত চিত্তে রাসূলুল্লাহ (সঃ ) এর দরবারে হাযির হয়ে বললেনঃ “ হে আল্লাহর রাসুল ( সঃ ) আমি ঐ বৃক্ষের মালিকানা লাভ করেছি এবং ওটা আপনাকে দিয়ে দিলাম। রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) তখন ঐ দরিদ্র লোকটির নিকট গিয়ে বললেনঃ “ এই খেজুর গাছ তোমার এবং তোমার সন্তানদের মালিকানাভুক্ত হয়ে গেল । হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ) বলেন যে, এ সম্পর্কেই এ আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়। ( এ হাদীসটি ইমাম ইবনে আবি হাতিম (রঃ ) বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এটা অত্যন্ত গারীব বা দুর্বল হাদীস)ইমাম ইবনে জারীর ( রঃ ) বলেন যে, এ আয়াতসমূহ হযরত আবু বকর ( রাঃ ) সম্পর্কে নাযিল হয়। ইসলামের প্রাথমিক অবস্থায় তিনি বৃদ্ধ ও দুর্বল দাস-দাসীদেরকে মুসলমান হয়ে যাওয়ার পর আযাদ করে দিতেন। এ ব্যাপারে একবার তাঁর পিতা আবু কাহাফা ( তিনি তখনো মুসলমান হননি ) বলেনঃ “ তুমি দুর্বল ও বৃদ্ধদেরকে মুক্ত করছো, অথচ যদি সকল যুবকদেরকে মুক্ত করতে তবে তারা তোমার কাজে আসততা । তারা তোমাকে সাহায্য করতে পারতো এবং শত্রুদের সাথে লড়াই করতে পারতো।” একথা শুনে হযরত আবু বকর ( রাঃ ) বললেন “ আব্বাজান! ইহলৌকিক লাভালাভ আমার উদ্দেশ্য নয় । আমি শুধু আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টি প্রত্যাশা করি।" এরপর এখান হতে সূরা শেষ পর্যন্ত আয়াতগুলো অবতীর্ণ হয়।( আরবি ) শব্দের অর্থ হলো মৃত্যুবরণ করা এবং আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়া, এই উভয় অর্থ উল্লেখ করা হয়েছে।

সূরা লাইল আয়াত 11 সূরা

وما يغني عنه ماله إذا تردى

سورة: الليل - آية: ( 11 )  - جزء: ( 30 )  -  صفحة: ( 596 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. আর যারা ঈমান এনেছে, নিজেদের ঘর-বাড়ী ছেড়েছে এবং আল্লাহর রাহে জেহাদ করেছে এবং যারা তাদেরকে
  2. আর যারা কুফরের দিকে ধাবিত হচ্ছে তারা যেন তোমাদিগকে চিন্তাম্বিত করে না তোলে। তারা আল্লাহ
  3. যখন বৃক্ষটি দ্বারা আচ্ছন্ন হওয়ার, তদ্দ্বারা আচ্ছন্ন ছিল।
  4. হে নবী, আপনার জন্য এবং যেসব মুসলমান আপনার সাথে রয়েছে তাদের সবার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট।
  5. আর সন্তানবতী নারীরা তাদের সন্তানদেরকে পূর্ন দু’বছর দুধ খাওয়াবে, যদি দুধ খাওয়াবার পূর্ণ মেয়াদ সমাপ্ত
  6. আমি নূহ ও ইব্রাহীমকে রসূলরূপে প্রেরণ করেছি এবং তাদের বংশধরের মধ্যে নবুওয়ত ও কিতাব অব্যাহত
  7. তাড়াতাড়ি শিখে নেয়ার জন্যে আপনি দ্রুত ওহী আবৃত্তি করবেন না।
  8. আপনার পূর্বে যত রসূল প্রেরণ করেছি, তারা সবাই খাদ্য গ্রহণ করত এবং হাটে-বাজারে চলাফেরা করত।
  9. তাকে কেন স্বর্ণবলয় পরিধান করানো হল না, অথবা কেন আসল না তার সঙ্গে ফেরেশতাগণ দল
  10. তারা শ্রেণীবদ্ধ সিংহাসনে হেলান দিয়ে বসবে। আমি তাদেরকে আয়তলোচনা হুরদের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ করে দেব।

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা লাইল ডাউনলোড করুন:

সূরা Lail mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Lail শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত লাইল  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত লাইল  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত লাইল  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত লাইল  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত লাইল  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত লাইল  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত লাইল  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত লাইল  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত লাইল  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত লাইল  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত লাইল  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত লাইল  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত লাইল  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত লাইল  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত লাইল  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত লাইল  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত লাইল  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত লাইল  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত লাইল  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত লাইল  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত লাইল  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত লাইল  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত লাইল  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত লাইল  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত লাইল  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Sunday, November 17, 2024

Please remember us in your sincere prayers