কোরান সূরা আনআম আয়াত 127 তাফসীর
﴿۞ لَهُمْ دَارُ السَّلَامِ عِندَ رَبِّهِمْ ۖ وَهُوَ وَلِيُّهُم بِمَا كَانُوا يَعْمَلُونَ﴾
[ الأنعام: 127]
তাদের জন্যেই তাদের প্রতিপালকের কাছে নিরাপত্তার গৃহ রয়েছে এবং তিনি তাদের বন্ধু তাদের কর্মের কারণে। [সূরা আনআম: 127]
Surah Al-Anam in Banglaজহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Anam ayat 127
তাদের জন্য রয়েছে শান্তিনিকেতন তাদের প্রভুর কাছে, আর তারা যা করে থাকে সেজন্য তিনি তাদের রক্ষাকারী বন্ধু।
Tafsir Mokhtasar Bangla
১২৭. তাদের জন্য রয়েছে এমন এক আবাসস্থল যাতে তারা সকল অপছন্দনীয় ব্যাপার থেকে নিরাপদে থাকবে। আর তা হলো জান্নাত। আর তাদের নেক আমলের প্রতিদান স্বরূপ আল্লাহ তা‘আলা হবেন তাদের সাহায্যকারী ও মদদদাতা।
Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান
তাদের প্রতিপালকের নিকট তাদের জন্য রয়েছে শান্তির আলয় এবং তারা যা করত, তার কারণে তিনি হবেন তাদের অভিভাবক। [১] [১] অর্থাৎ, যেভাবে ঈমানদাররা দুনিয়াতে কুফরী ও ভ্রষ্টতার বক্রপথ ত্যাগ করে হিদায়াতের সরল-সঠিক পথের পথিক ছিল, সেইভাবে এখন আখেরাতেও তাদের জন্য শান্তি ও নিরাপত্তার ঘর রয়েছে এবং তাদের নেক আমলগুলোর কারণে আল্লাহও তাদের বন্ধু ও অভিভাবক।
Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স
তাদের রব-এর কাছে তাদের জন্য রয়েছে শস্তির আলয় [ ১ ] এবং তারা যা করত তার জন্য তিনিই তাদের অভিভাবক [ ২ ]। [ ১ ] অর্থাৎ উপরোক্ত ব্যক্তি, যারা মুক্ত মনে উপদেশ গ্রহণের অভিপ্রায়ে কুরআনের পয়গাম নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করে এবং এর অবশ্যম্ভাবী পরিণতিস্বরূপ কুরআনী নির্দেশ মেনে চলে, তাদের জন্য তাদের পালনকর্তার কাছে ‘দারুস-সালাম’-এর পুরস্কার সংরক্ষিত রয়েছে। এখানে ‘দার’ শব্দের অর্থ গৃহ এবং ‘সালাম’ শব্দের অর্থ যাবতীয় বিপদাপদ থেকে নিরাপত্তা। কাজেই ‘দারুস-সালাম’ এমন গৃহকে বলা যায়, যেখানে কষ্ট-শ্রম, দুঃখ, বিষাদ, বিপদাপদ ইত্যাদির সমাগম নেই। নিঃসন্দেহে এটা জান্নাতই হতে পারে। [ তাবারী; আত-তাহরীর ওয়াত তানওয়ীর ] অথবা দারুস সালাম এ জন্যই তাদের জন্য থাকবে, কারণ তারা সিরাতে মুস্তাকিমে চলার কারণে নিজেদেরকে নিরাপত্তায় রাখতে সামর্থ হয়েছে। সুতরাং তাদের প্রতিফল তো তা-ই হওয়া বাঞ্ছনীয় যা নিশ্চিন্দ্র নিরাপত্তার বেষ্টনীতে আবদ্ধ। [ ইবন কাসীর ] আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা বলেনঃ ‘সালাম’ আল্লাহ তা'আলার একটি নাম। দারুস সালাম অর্থ আল্লাহর গৃহ। আল্লাহর গৃহ বলতে শান্তি ও নিরাপত্তার স্থান বোঝায়। অতএব, সার অর্থ আবারো তাই হয় যে, এমন গৃহ যাতে শান্তি, সুখ, নিরাপত্তা ও প্রশান্তি বিদ্যমান। অর্থাৎ জান্নাত। তাবারী জান্নাতকে দারুস্-সালাম বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে যে, একমাত্র জান্নাতই এমন জায়গা, যেখানে মানুষ সর্বপ্রকার কষ্ট, উৎকণ্ঠা, উপদ্রব ও স্বভাব বিরুদ্ধ বস্তু থেকে পূর্ণরূপে ও স্থায়ীভাবে নিরাপদ থাকে। [ সা’দী ] এরূপ নিরাপত্তা জগতে কোন রাজাধিরাজ এবং নবী-রাসূলও কখনো লাভ করেন না। কেননা, ধ্বংসশীল জগত এরূপ পরিপূর্ণ ও স্থায়ী শান্তির জায়গাই নয়। [ ২ ] আয়াতে বলা হয়েছে যে, এসব সৌভাগ্যশালীর জন্য তাদের প্রতিপালকের কাছে দারুস-সালাম’ রয়েছে। প্রতিপালকের কাছে -এর অর্থ এই যে, এ দারুস-সালাম দুনিয়াতে নগদ পাওয়া যাবে না; কেয়ামতের দিন যখন তারা স্বীয় রব-এর কাছে যাবে, তখনই তা পাবে। দ্বিতীয় অর্থ এই যে, দারুস-সালামের ওয়াদা ভ্রান্ত হতে পারে না। রব নিজেই এর জামিন। তাঁর কাছে তা সংরক্ষিত রয়েছে। এতে এদিকেও ইঙ্গিত রয়েছে যে, এ দারুস-সালামের নেয়ামত ও আরাম আজ কেউ কল্পনাও করতে পারে না। যে প্রতিপালকের কাছে এ ভাণ্ডার সংরক্ষিত আছে, তিনিই তা জানেন। [ সা’দী ] আয়াতের শেষে বলা হয়েছে, তাদের সৎকর্মের কারণে আল্লাহ তা'আলা তাদের অভিভাবক। ইবন কাসীর দুনিয়াতে অভিভাবক হিসেবে তিনি তাদেরকে সঠিক পথের হিদায়াত দেন। আর আখেরাতে তাদেরকে উপযুক্ত প্রতিফল দেন। [ বাগভী ] আর আল্লাহ যাদের পৃষ্ঠপোষক ও সাহায্যকারী হয়ে যান, তাদের সব মুশকিল আসান হয়ে যায়।
Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর
১২৬-১২৭ নং আয়াতের তাফসীর: আল্লাহ তাআলা পথভ্রষ্টদের বর্ণনা দেয়ার পর এখন দ্বীন ও হিদায়াতের মর্যাদার বর্ণনা দিচ্ছেন। তিনি বলেনঃ তোমাদের প্রতিপালকের এটাই সরল সহজ পথ। ( আরবী ) শব্দটি ( আরবী )-এর ভিত্তিতে হয়েছে। অর্থাৎ হে মুহাম্মাদ ( সঃ )! এই দ্বীন, যা আমি তোমাকে প্রদান করেছি, সেই অহীর মাধ্যমে, যাকে কুরআন বলে, এটাই হচ্ছে সরল সঠিক পথ। যেমন হযরত আলী ( রাঃ ) কুরআনের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলেন যে, ওটা হচ্ছে সিরাতে মুসতাকীম, আল্লাহর দৃঢ় রঞ্জু এবং বিজ্ঞানময় বর্ণনা।( আরবী ) অর্থাৎ আমি কুরআনের আয়াতগুলোকে বিশদভাবে বর্ণনা করে দিয়েছি। এর দ্বারা ঐ লোকেরাই উপকৃত হবে যাদের জ্ঞান ও বিবেক রয়েছে। যারা আল্লাহ ও রাসূলুল্লাহ ( সঃ )-এর কথাগুলোকে গভীর মনোযোগের সাথে চিন্তা করে দেখে এবং ওগুলো বুঝবার চেষ্টা করে, তাদের জন্যে কিয়ামতের দিন জান্নাত ও শান্তির ঘর রয়েছে। জান্নাতকে দারুস সালাম বা শান্তির ঘর বলার কারণ এই যে, যেমন তারা দুনিয়ায় শান্তির পথে চলছে, তেমনই কিয়ামতের দিনেও তারা শান্তির ঘর লাভ করবে। আল্লাহ তাদের রক্ষক, সাহয্যকারী ও শক্তিদানকারী। কেননা, তারা ভাল আমল করে থাকে।
সূরা আনআম আয়াত 127 সূরা
English | Türkçe | Indonesia |
Русский | Français | فارسی |
تفسير | Urdu | اعراب |
বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত
- যাদের জ্ঞান ও ঈমান দেয়া হয়েছে, তারা বলবে আমরা আল্লাহর কিতাব মতে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত
- কিতাবীদের মধ্যে যারা কাফেরদের পৃষ্টপোষকতা করেছিল, তাদেরকে তিনি তাদের দূর্গ থেকে নামিয়ে দিলেন এবং তাদের
- এবং যে বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম করে তার জন্য প্রতিদান রয়েছে কল্যাণ এবং আমার
- আর আল্লাহ যখন নবীগনের কাছ থেকে অস্বীকার গ্রহন করলেন যে, আমি যা কিছু তোমাদের দান
- বরং তারা কেয়ামতকে অস্বীকার করে এবং যে কেয়ামতকে অস্বীকার করে, আমি তার জন্যে অগ্নি প্রস্তুত
- আমি ইতিপূর্বে আদমকে নির্দেশ দিয়েছিলাম। অতঃপর সে ভুলে গিয়েছিল এবং আমি তার মধ্যে দৃঢ়তা পাইনি।
- তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি তোমাদেরকে আমার নিকটবর্তী করবে না। তবে যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও
- যারা আমার আয়াতসমূহকে মিথ্যা বলবে এবং তা থেকে অহংকার করবে, তারাই দোযখী এবং তথায় চিরকাল
- যা থেকে তোমরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছ।
- অথচ তারা পূর্বে আল্লাহর সাথে অঙ্গীকার করেছিল যে, তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে না। আল্লাহর অঙ্গীকার
বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :
সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা আনআম ডাউনলোড করুন:
সূরা Anam mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Anam শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
আহমেদ আল-আজমি
ইব্রাহীম আল-আখদার
বান্দার বেলাইলা
খালিদ গালিলি
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
খলিফা আল টুনাইজি
সাদ আল-গামদি
সৌদ আল-শুরাইম
সালাহ বুখাতীর
আবদ এল বাসেট
আবদুল রশিদ সুফি
আব্দুল্লাহ্ বাস্ফার
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
আলী আল-হুদায়েফি
আলী জাবের
ফারেস আব্বাদ
মাহের আলমাইকুলই
মোহাম্মদ আইয়ুব
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মাদ জিব্রীল
আল-মিনশাবি
আল হোসারি
মিশারী আল-আফসী
নাসের আল কাতামি
ইয়াসের আল-দোসারি
لا تنسنا من دعوة صالحة بظهر الغيب