কোরান সূরা ফাতিহা আয়াত 5 তাফসীর

  1. Mokhtasar
  2. Ahsanul Bayan
  3. AbuBakr Zakaria
  4. Ibn Kathir
Surah Fatiha ayat 5 Bangla tafsir - তাফসীর ইবনে কাসীর - Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান - Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স - বাংলা ভাষায় নোবেল কোরআনের অর্থের অনুবাদ উর্দু ভাষা ও ইংরেজি ভাষা & তাফসীর ইবনে কাসীর : সূরা ফাতিহা আয়াত 5 আরবি পাঠে(Fatiha).
  
   

﴿إِيَّاكَ نَعْبُدُ وَإِيَّاكَ نَسْتَعِينُ﴾
[ الفاتحة: 5]

আমরা একমাত্র তোমারই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমারই সাহায্য প্রার্থনা করি। [সূরা ফাতিহা: 5]

Surah Al-Fatihah in Bangla

জহুরুল হক সূরা বাংলা Surah Fatiha ayat 5


“তোমারই আমরা এবাদত করি, এবং তোমারই কাছে আমরা সাহায্য প্রার্থনা করি।”


Tafsir Mokhtasar Bangla


৫. হে আল্লাহ! আমরা কেবল আপনার জন্যই যাবতীয় ইবাদত ও আনুগত্য করি। আপনার সাথে আর কাউকে শরীক করি না। আমাদের সকল ব্যাপারে কেবল আপনারই সাহায্য কামনা করি। আপনার হাতেই সকল কল্যাণ। আপনি ছাড়া আমাদের আর কোন সাহায্যকারী নেই।

Tafsir Ahsanul Bayan তাফসীরে আহসানুল বায়ান


আমরা কেবল তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য চাই। ইবাদতের অর্থ হল, কারো সন্তুষ্টি লাভের জন্য অত্যধিক কাকুতি-মিনতি এবং পূর্ণ নম্রতা প্রকাশ করা। আর ইবনে কাসীর ( রঃ ) এর উক্তি অনুযায়ী 'শরীয়তে পূর্ণ ভালবাসা, বিনয় এবং ভয়-ভীতির সমষ্টির নাম হল ইবাদত।' অর্থাৎ, যে সত্তার সাথে ভালবাসা থাকবে তাঁর অতিপ্রাকৃত মহাক্ষমতার কাছে অসামর্থ্য ও অক্ষমতার প্রকাশও হবে এবং প্রাকৃত ও অতিপ্রাকৃত শক্তি দ্বারা তাঁর পাকড়াও ও শাস্তির ভয়ও থাকবে। এই আয়াতে সরল বাক্য হল, [نَعْبُدُكَ وَنَسْتَعِيْنُكَ] ( আমরা তোমার ইবাদত করি এবং তোমার কাছে সাহায্য চাই। ) কিন্তু মহান আল্লাহ এখানে مفعول ( কর্মপদকে ) فعل ( ক্রিয়াপদ )-এর আগে এনে [إيَاكَ نَعْبُدَ وَإيَاكَ نَسْتَعِيْنُ] বলেছেন। আর এর উদ্দেশ্য বিশেষত্ব সৃষ্টি করা। ( যেহেতু আরবী ব্যকরণে যে পদ সাধারণতঃ পরে ব্যবহার হয় তা পূর্বে প্রয়োগ করা হলে বিশেষত্বের অর্থ দিয়ে থাকে। ) সুতরাং এর অর্থ হবে, 'আমরা কেবল তোমারই ইবাদত করি এবং কেবল তোমারই কাছে সাহায্য চাই।' এখানে স্পষ্ট যে, ইবাদত আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো জন্য জায়েয নয়, যেমন সাহায্য কামনা করাও তিনি ছাড়া অন্য কারো কাছে বৈধ নয়। এই বাক্য দ্বারা শির্কের পথ বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু যাদের অন্তরে শির্কের ব্যাধি সংক্রমণ করেছে, তারা লৌকিক সাহায্য প্রার্থনা ও অলৌকিক সাহায্য প্রার্থনার মধ্যে পার্থক্যকে দৃষ্টিচ্যুত ক'রে সাধারণ মানুষদেরকে বিভ্রান্তিতে ফেলেছে। তারা বলে, দেখুন! যখন আমরা অসুস্থ হই, তখন সুস্থতার জন্য ডাক্তারের নিকট সাহায্য চাই। অনুরূপ বহু কাজে স্ত্রী, চাকর, ড্রাইভার এবং অন্যান্য মানুষের কাছেও সাহায্য কামনা করি। এইভাবে তারা বুঝাতে চায় যে, আল্লাহ ব্যতীত অন্যের কাছেও সাহায্য কামনা করা জায়েয। অথচ প্রাকৃত বা লৌকিক সাহায্য একে অপরের নিকট চাওয়া ও করা সবই বৈধ; এটা শির্ক নয়। এটা তো মহান আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত এমন এক নিয়ম-নীতি, যাতে সমস্ত লৌকিক কার্য-কলাপ বাহ্যিক হেতুর ভিত্তিতেই হয়ে থাকে। এমন কি নবীরাও ( সাধারণ ) মানুষের কাছে সাহায্য চেয়েছেন। ঈসা ( আঃ ) বলেছিলেন, [ مَنْ أَنْصَارِي إِلَى اللهِ ] অর্থাৎ, কারা আছে যারা আল্লাহর পথে আমাকে সাহায্য করবে? ( সূরা আলে ইমরান ৩:৫২ আয়াত ) আর আল্লাহ তা'য়ালা মু'মিনদেরকে বলেন, [وَتَعَاوَنُوا عَلَى البِرِّ وَالتَّقْوَى] অর্থাৎ, তোমরা নেকী এবং আল্লাহভীতির কাজে একে অন্যের সাহায্য কর। ( সূরা মাইদাহ ৫:২ আয়াত ) বুঝা গেল যে, এ রকম সাহায্য ( চাওয়া ও করা ) নিষেধও নয় এবং শির্কও নয়। বরং তা বাঞ্ছনীয় ও প্রশংনীয় কাজ। পারিভাষিক শির্কের সাথে এর কি সম্পর্ক? শির্ক তো এই যে, এমন মানুষের কাছে সাহায্য কামনা করা যে বাহ্যিক হেতুর ভিত্তিতে কোন সাহায্য করতে পারবে না। যেমন, কোন মৃত ব্যক্তিকে সাহায্যের জন্য ডাকাডাকি করা, তাকে বিপদ থেকে মুক্তিদাতা এবং প্রয়োজন পূরণকারী মনে করা, তাকে ভাল-মন্দের মালিক ভাবা এবং বিশ্বাস করা যে, সে দূর এবং নিকট থেকে সকলের ফরিয়াদ শোনার ক্ষমতা রাখে। এর নাম হল, অলৌকিক পন্থায় সাহায্য চাওয়া এবং তাকে আল্লাহর গুণে গুণান্বিত করা। আর এরই নাম হল সেই শির্ক, যা দুর্ভাগ্যক্রমে অলী-আওলিয়াদের মহববতের নামে মুসলিম দেশগুলোতে ব্যাপকভাবে প্রচলিত রয়েছে। أعاذنا الله منه তাওহীদ তিন প্রকারের। এখানে মহান আল্লাহ আমাদেরকে তাঁর তাওহীদের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। তাই তাওহীদের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি প্রকারের কথা উল্লেখ করে দেওয়া সঙ্গত মনে হয়। এই প্রকারগুলো হলঃ তাওহীদুর রুবূবিয়্যাহ ( প্রতিপালকত্বের একত্ববাদ ), তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ ( উপাস্যত্বের একত্ববাদ ) এবং তাওহীদুল আসমা অসসিফাত ( নাম ও গুণাবলীর একত্ববাদ )। ১। তাওহীদুর রুবূবিয়্যাহর অর্থ হল, এই বিশ্বজাহানের স্রষ্টা, মালিক, রুযীদাতা, নিয়ন্তা ও পরিচালক একমাত্র আল্লাহ তাআলা। নাস্তিক ও জড়বাদীরা ব্যতীত সকল মানুষই এই তাওহীদকে স্বীকার করে। এমনকি মুশরিক ( অংশীবাদী )রাও এটা বিশ্বাস করতো এবং আজও করে। যেমন ক্বুরআন কারীমে মুশরিকদের এ তাওহীদকে স্বীকার করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ বলেছেন, " তুমি জিজ্ঞেস কর, কে রুযী দান করে তোমাদেরকে আসমান থেকে ও যমীন থেকে, কিংবা কে তোমাদের কান ও চোখের মালিক? কে জীবিতকে মৃতের ভিতর থেকে বের করেন এবং কেই বা মৃতকে জীবিতের মধ্য থেকে বের করেন? কে করেন কর্ম সম্পাদনের ব্যবস্থাপনা? তারা বলবে, আল্লাহ" ( অর্থাৎ, সমস্ত কর্ম সম্পাদনকারী হলেন আল্লাহ। ) ( সূরা ইউনুস ১০:৩১ ) অন্যত্র বলেছেন, " যদি তুমি তাদেরকে জিজ্ঞেস কর, আসমান ও যমীন কে সৃষ্টি করেছে? তাহলে তারা অবশ্যই বলবে, আল্লাহ" ( সূরা যুমার ৩৯:৩৮ ) তিনি আরো বলেছেন, "জিজ্ঞেস কর, এই পৃথিবী এবং এতে যা আছে তা কার, যদি তোমরা জানো ? তারা ত্বরিৎ বলবে, আল্লাহর; বল, তবুও কি তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করবে না ? জিজ্ঞেস কর, কে সপ্তাকাশ ও মহা আরশের অধিপতি ? তারা বলবে, আল্লাহ। বল, তবুও কি তোমরা সাবধান হবে না । জিজ্ঞেস কর, সব কিছুর কর্তৃত্ব কার হাতে; যিনি আশ্রয় দান করেন এবং যাঁর উপর আশ্রয়দাতা নেই, যদি তোমরা জানো ? তারা বলবে, আল্লাহর। ( সূরা মু'মিনুন ২৩:৮৪-৮৯ ) এ ছাড়াও আরো অনেক আয়াত আছে। ২। তাওহীদুল উলূহিয়্যাহর অর্থ হল, সর্ব প্রকার ইবাদতের যোগ্য একমাত্র আল্লাহকে মনে করা। আর ইবাদত সেই সব কাজকে বলা হয়, যা কোন নির্দিষ্ট সত্তার সন্তুষ্টি লাভের আশায় অথবা তাঁর অসন্তুষ্টির ভয়ে করা হয়। ( অন্য কথায়ঃ ইবাদত প্রত্যেক সেই গুপ্ত বা প্রকাশ্য কথা বা কাজের নাম, যা আল্লাহ পছন্দ করেন ও যাতে তিনি সন্তুষ্ট হন। ) সুতরাং কেবল নামায, যাকাত, রোযা, হজ্জই ইবাদত নয়, বরং কোন সত্তার নিকট দুআ ও আবেদন করা তার নামে মানত করা, তার সামনে হাত বেঁধে দাঁড়িয়ে থাকা, তার তাওয়াফ করা এবং তার কাছে আশা রাখা ও তাকে ভয় করা ইত্যাদিও ইবাদত। তাওহীদে উলূহিয়্যাহ হল ( উল্লিখিত ) সমস্ত কাজ কেবল মহান আল্লাহর জন্য সম্পাদিত হওয়া। কবরপূজার ব্যাধিতে আক্রান্ত আম-খাস বহু মানুষ তাওহীদে উলূহিয়্যাতে শির্ক করছে। উল্লিখিত ইবাদতসমূহের অনেক প্রকারই তারা কবরে সমাধিস্থ ব্যক্তিদের এবং মৃত বুযুর্গদের জন্য ক'রে থাকে যা সুস্পষ্ট শির্ক। ৩। তাওহীদুল আসমা অসসিফাত হল , মহান আল্লাহর যে গুণাবলী ক্বুরআন ও হাদীসে বর্ণিত হয়েছে, সেগুলিকে কোন রকমের অপব্যাখ্যা এবং বিকৃত করা ছাড়াই বিশ্বাস করা। আর এই গুণাবলীর অনুরূপ অধিকারী ( আল্লাহ ছাড়া ) অন্য কাউকে মনে না করা। যেমন, অদৃশ্য জগতের জ্ঞান ( গায়বী খবর ) রাখা তাঁর গুণ, দূর ও নিকট থেকে সকলের ফরিয়াদ শোনার শক্তি তিনি রাখেন, বিশ্বজাহানের নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার সব রকমের এখতিয়ার তাঁরই; এই ধরনের আরো যত ইলাহী গুণাবলী আছে আল্লাহ ব্যতীত কোন নবী, ওলী এবং অন্য কাউকেও এই গুণের অধিকারী মনে না করা। করলে তা শির্ক হয়ে যাবে। বড় দুঃখের বিষয় যে, কবরপূজারীদের মধ্যে এই প্রকারের শির্ক ব্যাপক। তারা আল্লাহর উল্লিখিত গুণে অনেক বুযুর্গদেরকে অংশীদার বানিয়ে রেখেছে। أَعَاذَنَا اللهُ مِنْهُ

Tafsir Abu Bakr Zakaria bangla কিং ফাহাদ কুরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্স


আমরা শুধু আপনারই ‘ইবাদাত করি, এবং শুধু আপনারই সাহায্য প্রার্থনা করি,

Tafsir ibn kathir bangla তাফসীর ইবনে কাসীর


আলোচ্য শব্দটি জমহুর ( আরবি ) পড়েছেন। কেউ কেউ ( আরবি ).
পড়েছেন এবং ( আরবি ) দ্বারাও একটা পঠনের কথা বর্ণিত আছে। যারা বলেন যে, বনী উজরাহ্ ও বনী কালবের পঠন এটাই। যেহেতু বান্দা প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করেছে এবং তার গুণাবলী বর্ণনা করেছে, সেহেতু এখন তার কর্তব্য হবে স্বীয় প্রয়োজন পূরণের জন্যে আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করা। যেমন পূর্বেই হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, আল্লাহ পাক বলেনঃ ‘অর্ধেক অংশ আমার ও অর্ধেক অংশ আমার বান্দর এবং আমার বান্দার জন্যে তাই রয়েছে যা সে চাইবে। একটু চিন্তা করলেই দেখা যাবে যে, ( আরবি )-এর মধ্যে কি পরিমাণ সূক্ষ্মতা ও প্রকৃষ্টতা রয়েছে। প্রথমে বিশ্ব প্রভুর যথোপযুক্ত প্রশংসা ও গুণকীর্তন, অতঃপর নিজের ও মুসলিম ভাইদের প্রয়োজন পূরণের জন্য আকুল প্রার্থনা। প্রার্থিত বস্তু লাভের এটাই উৎকৃষ্ট পন্থা। এ উত্তম পন্থা নিজে পছন্দ করেই মহান আল্লাহ এ পন্থা স্বীয় বান্দাদের বাতলিয়ে দিলেন। কখনও কখনও প্রার্থনার সময় প্রার্থী স্বীয় অবস্থা ও প্রয়োজন প্রকাশ করে থাকে। যেমন হযরত মূসা ( আঃ ) বলেছিলেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ হে আমার প্রভু! যে কোন মঙ্গলই আপনি আমার নিকট পাঠান, আমি তার প্রত্যাশী ও মুখাপেক্ষী।' ( ২৮:২৪ ) হযরত ইউনুস ( আঃ ) দু'আর সময় বলেছিলেনঃ ( আরবি ) অর্থাৎ আপনি ছাড়া আর কেউ উপাস্য নেই, আমি সর্বান্তঃকরণে আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছি এবং নিশ্চয় আমি অত্যাচারীগণের অন্তর্ভুক্ত হয়েছি।' ( ২১:৮৭ ) কোন কোন প্রার্থনায় প্রার্থী শুধুমাত্র প্রশংসা ও শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করেই নীরব থাকে। যেমন কবির কথাঃ ( আরবি )অর্থাৎ আমার প্রয়োজনের বর্ণনা দেয়ার তেমন কোন দরকার নেই, তোমার দয়াপূর্ণ দানই আমার জন্যে যথেষ্ট। আমি জানি যে, দান ও সুবিচার তোমার পবিত্র ও চিরাচরিত অভ্যাসের অন্তর্ভুক্ত। শুধু তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করে দেয়া, তোমার প্রশংসা ও গুণকীর্তন করাই আমার প্রয়োজন পূরণের জন্যে যথেষ্ট।এখানে হিদায়াতের অর্থ ইরশাদ ও তাওফীক অর্থাৎ সুপথ প্রদর্শন ও সক্ষমতা প্রদান। কখনও এই ‘হিদায়াত' শব্দটি নিজেই ( আরবি ) বা সকর্মক ক্রিয়া হয়ে থাকে, যেমন এখানে হয়েছে। তাহলে ( আরবি ) এ সবেরই অর্থ হবে আমাদেরকে প্রদান করুন। অন্যত্র রয়েছেঃ ( আরবি )অর্থাৎ আমি তাদেরকে ভাল ও মন্দ এ দুটি পথ দেখিয়েছি।' ( ৯০:১০ ) কখনও ‘হিদায়াত’ শব্দটি ( আরবি ) এর সঙ্গে ( আরবি )বা সকর্মক ক্রিয়া হয়ে থাকে। যেমন বলেছেনঃ ( আরবি ) ( ১৬:১২১ ) এবং অন্য জায়গায় বলেছেন ( আরবি ) ( ৩৭:২৩ ) এখানে হিদায়াতের অর্থ পথ প্রদর্শন ও রাস্তা বাতলান। এইরূপ ঘোষণা রয়েছেঃ ( আরবি ) অর্থাৎ “ তুমি অবশ্যই সরল পথ প্রদর্শন করেছে ।' ( ৪২:৫২ ) আবার কখনও ( আরবি ) শব্দটি ( আরবি ) এর সঙ্গে ( আরবি ) হয়ে থাকে। যেমন জ্বিন বা দানবের কথা কুরআন মাজীদের মধ্যে রয়েছেঃ ( আরবি )অর্থাৎ সেই আল্লাহর সমুদয় প্রশংসা যিনি আমাদেরকে এর জন্যে পথ দেখিয়েছেন।' ( ৭:৪৩ ) ( অর্থাৎ অনুগ্রহ পূর্বক সৎপথে পরিচালিত হওয়ার তাওফীক দান করেছেন ) ( আরবি ) এর কয়েকটি অর্থ আছে। ইমাম আবু জাফর ইবনে জারীর বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে সুস্পষ্ট, সরল ও পরিষ্কার রাস্তা যার কোন জায়গা বা কোন অংশই বাঁকা নয়। এ প্রসঙ্গে কবি জারীর বিন ' আতিয়া আল-খাতফী বলেনঃ ( আরবি )রূপক অর্থে ( আরবি ) এর ব্যবহার আরবীয়দের কাছে কথা এবং কাজের উপরও হয়ে থাকে। আবার ( আরবি ) এর বিশেষণ কখনও সোজা হয় এবং কখনও বাকা হয়। পূর্ববর্তী ও পরবর্তী মুফাসসিরগণ হতে এর বহু তাফসীর নকল করা হয়েছে এবং ওগুলোর সারাংশ প্রায় একই, আর তা হচ্ছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য। একটি মারফু হাদীসে আছে যে, ( আরবি ) হচ্ছে আল্লাহর কিতাব। ( মুসনাদ-ই-ইবনে আবি হাতিম ) ইবনে জারীরও ( রঃ ) এরূপই বর্ণনা করেছেন। কুরআন কারীমের ফযীলত সম্পর্কীয় হাদীসে ইতিপূর্বে বর্ণিত হয়েছে যে, আল্লাহর কিতাব এই কুরআন পাক হচ্ছে শক্ত রশি বা রঞ্জু, জ্ঞানপূর্ণ উপদেশ এবং সরল পথ বা সিরাতুম মুসতাকীম। ( মুসনাদ-ই-আহমাদ ও জামে তিরমিযী ) হযরত আলীরও ( রাঃ ) এটাই অভিমত। আল্লাহই এ ব্যাপারে সবচেয়ে ভাল জানেন। হযরত আবদুল্লাহ ( রাঃ ) হতে এটাই বর্ণিত আছে। হযরত ইবনে আব্বাসের ( রাঃ ) উক্তি রয়েছে যে, হযরত জিবরাঈল ( আঃ ) বলেছিলেনঃ “ হে মুহাম্মদ ( সঃ )! ( আরবি ) বলুন । অর্থাৎ আমাদেরকে হিদায়াত বিশিষ্ট পথের ইলহাম করুন এবং তা হলো আল্লাহর দ্বীন, যার মধ্যে কোন বক্রতা নেই। তার নিকট থেকে এ কথাও বর্ণিত আছে যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে ইসলাম। হযরত ইবনে আব্বাস ( রাঃ ), হযরত ইবনে মাসউদ ( রাঃ ) এবং আরও বহু সাহাবী ( রাঃ ) হতেও এ তাফসীরই নকল করা হয়েছে। হযরত জাবির ( রাঃ ) বলেন ( আরবি ) এর ভাবার্থ হচ্ছে ইসলাম যা আকাশ, পৃথিবী ও এতদুভয়ের মধ্যবর্তী সমুদয় বস্তু হতে প্রশস্ততম। ইবনে হানাফিয়্যাহ ( রঃ ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে আল্লাহর সেই দ্বীন যা ছাড়া অন্য দ্বীন গ্রহণীয় নয়। আবদুর রহমান বিন যায়েদ বিন আসলামের ( রঃ ) উক্তি এই যে, ( আরবি ) হচ্ছে ইসলাম। মুসনাদ-ই-আহমদের একটি হাদীসে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) বলেছেনঃ আল্লাহ তা'আলা ( আরবি ) এর একটা দৃষ্টান্ত বর্ণনা করেছেন। ( তা এই যে, ) সীরাতে মুসতাকীমের দুই দিকে দুইটি প্রাচীর রয়েছে। তাতে কয়েকটি খোলা দরজা আছে। দরজাগুলির উপর পর্দা লটকানো রয়েছে। সীরাতে মুসতাকীমের প্রবেশ দ্বারে সব সময়ের জন্যে একজন আহবানকারী নিযুক্ত রয়েছে। সে বলছে- হে জনমণ্ডলী! তোমরা সবাই এই সোজা পথ ধরে চলে যাও, আঁকা বাঁকা পথে যেওনা। ঐ রাস্তার উপরে একজন আহ্বানকারী রয়েছে। যে কেউ এ দরজাগুলির কোন একটি খুলতে চাচ্ছে সে বলছে-সাবধান, তা খোল , যদি খোল, তবে সোজা পথ থেকে সরে পড়বে। সীরাতে মুসতাকীম হচ্ছে ইসলাম, প্রাচীরগুলো আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়সমূহ, প্রবেশ দ্বারে আহ্বানকারী হচ্ছে কুরআন কারীম এবং রাস্তার উপরের আহ্বানকারী হচ্ছে আল্লাহর ভয় যা প্রত্যেক ঈমানদারের অন্তরে আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে উপদেষ্টা রূপে অবস্থান করে থাকে। এ হাদীসটি মুসনাদ-ই-ইবনে আবি হাতিম, তাফসীর-ইইবনে জারীর, জামে তিরমিযী এবং সুনান-ই-নাসাঈর মধ্যেও রয়েছে এবং এর ইসনাদ হাসান সহীহ। আল্লাহই এ ব্যাপারে সবচাইতে ভাল জানেন। মুজাহিদ ( রঃ ) বলেন যে, এর ভাবার্থ হচ্ছে ‘হক বা সত্য'। তাঁর এ কথাটিই সবচাইতে ব্যাপক এবং এসব কথার মধ্যে পারস্পরিক কোন বিরোধ নেই।হযরত আবুল আলিয়া ( রঃ ) বলেন যে, এর অর্থ হচ্ছে নবী ( সঃ ) ও তাঁর পরবর্তী দু’জন খলীফা ( রাঃ )। আবুল আলিয়া ( রঃ ) এ কথাটির সত্যতা ও উৎকৃষ্টতা অপকটে স্বীকার করেন। প্রকৃতপক্ষে এ সব মত সঠিক এবং একে অপরের সঙ্গে সম্পর্কিত ও সামঞ্জস্যপূর্ণ। নবী করীম ( সঃ ) এবং তাঁর দু'জন খলীফা হযরত আবু বকর সিদ্দীক ( রাঃ ) হযরত উমার ফারূকের ( রাঃ ) অনুসারীগণ ন্যায় ও সত্যের অনুসারী, যারা ইসলামের অনুসারী তারা পবিত্র কুরআনকে মান্যকারী এবং কুরআন আল্লাহর কিতাব, তাঁর সুদৃঢ় রঞ্জু এবং তার সোজা পথ। অতঃপর সীরাতে মুসতাকীমের তাফসীরের ব্যাপারে এ সমুদয় উক্তিই সঠিক এবং একে অপরের সত্যতা সমর্থনকারী। অতএব সমুদয় প্রশংসা একমাত্র আল্লাহরই জন্যে। হযরত আবদুল্লাহ ( রাঃ ) বলেনঃ সীরাতে মুসতাকীম সেই পুণ্য সনাতন পথ যার উপর রাসূলুল্লাহ ( সঃ ) আমাদেরকে ছেড়ে গিয়েছেন। ইমাম আবু জাফর ইবনে জারীরের ( রঃ ) ফায়সালা হচ্ছে এইঃ ‘আমার নিকট এ আয়াতের সর্বোত্তম তাফসীর এই যে, আমাদেরকে যেন এমন কাজের তাওফীক দেয়া হয় যা আল্লাহ তা'আলার ইঙ্গিত কাজ এবং যার উপর চললে আল্লাহ তাঁর বান্দার উপর সন্তুষ্ট হয়ে যান এবং তাকে পুরস্কৃত করেন। এটাই সীরাতে মুসতাকীম। কেননা, তাকে এমন দানে ভূষিত করা হবে যে দান দ্বারা আল্লাহর মনোনীত বান্দাদেরকে ভূষিত করা হয়েছিল। যাঁরা নবী, সিদ্দীক, শহীদ এবং সৎ প্রকৃতির লোক ছিলেন। যারা ইসলাম ও রাসূলগণের ( আঃ ) সত্যতা সর্বোতভাবে স্বীকার করেছিলেন এবং কুরআনকে হাতে দাঁতে দৃঢ়ভাবে ধারণ করেছিলেন, যারা আল্লাহর নির্দেশাবলী নতশিরে মেনে চলে ছিলেন ও আল্লাহর নিষিদ্ধ বিষয়াবলী হতে বিরত রয়েছিলেন। আর নবী করীম ( সঃ ), তাঁর চার খলীফা ( রাঃ ) ও সমস্ত সৎ বান্দার পথে চলবার তাওফীক দেয়া, এটাই হচ্ছে সীরাতে মুসতাকীম।”যদি প্রশ্ন করা হয় যে, মুমিনের তো পূর্বেই আল্লাহর পক্ষ থেকে হিদায়াত লাভ হয়ে গেছে, সুতরাং নামাযে বা বাইরে হিদায়াত চাওয়ার আর প্রয়োজন কি? তবে সেই প্রশ্নের উত্তর এই যে, এতে উদ্দেশ্য হচ্ছে হিদায়াতের উপর সদা প্রতিষ্ঠিত থাকার তাওফীক চাওয়া। কেননা, বান্দা প্রতিটি মুহূর্তে ও সর্বাবস্থায় প্রতিনিয়তই আল্লাহ তা'আলার আশাধারী ও মুখাপেক্ষী। সে নিজে স্বীয় জীবনের লাভ ক্ষতির মালিক নয়। বরং নিশিদিন সে আল্লাহরই প্রত্যাশী ও মুখাপেক্ষী। এ জন্যেই আল্লাহ পাক তাকে শিখিয়েছেন যে, সে যেন সর্বদা হিদায়াত প্রার্থনা করে এবং তার উপর সদা প্রতিষ্ঠিত থাকার তাওফীক চাইতে থাকে। ভাগ্যবান সেই ব্যক্তি যাকে আল্লাহ তাঁর দরজায় ভিক্ষুক করে নিয়েছেন। সে আল্লাহকে ডাকলে আল্লাহ তার ডাকে সাড়া দিয়ে তার আকুল প্রার্থনা মঞ্জুর করার গুরু দায়িত্ব স্কন্ধে নিয়েছেন। বিশেষ করে দরিদ্র, অসহায় ও মুহতাজ ব্যক্তি যখন দিনরাত আল্লাহকে ডাকতে থাকে এবং প্রয়োজন পূরণের প্রার্থনা জানায়, আল্লাহ তখন তার সেই আকুল প্রার্থনা কবুলের জিম্মাদার হয়ে যান। আল্লাহ পাক কুরআন মাজীদে বলেছেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর উপর, তাঁর রাসূলের উপর, সেই কিতাবের উপর যা তিনি তাঁর রাসূলের উপর অবতীর্ণ করেছেন এবং ঐ সমুদয় কিতাবের উপর যা ইতিপূর্বে অবতীর্ণ করেছেন, এ সব কিছুর উপর তোমরা বিশ্বাস স্থাপন কর ।' ( ৪:১৩৬ ) এ আয়াতে ঈমানদারগণকে ঈমান আনয়নের নির্দেশ দেয়া এমনই, যেমন হিদায়াত প্রাপ্তগণকে হিদায়াত চাওয়ার নির্দেশ দেয়া। এই দুই স্থানেই উদ্দেশ্য হচ্ছে তার উপরে অটল, অনড় ও দ্বিধাহীনচিত্তে স্থির থাকা। আর এমন কার্যাবলী সদা সম্পাদন করা যা উদ্দেশ্য লাভে সহায়তা করে। এর উপর এ প্রতিবাদ উঠতে পারে না যে, এ তো হলো ‘তাহসীলে হাসিল অর্থাৎ প্রাপ্ত জিনিসের পুনঃ প্রাপ্তিআল্লাহ এ সম্পর্কে সবচেয়ে ভাল জানেন। দেখুন মহান আল্লাহ তাঁর ঈমানদার বান্দাগণকে নিম্নের এ প্রার্থনা করারও নির্দেশ দিচ্ছেনঃ ( আরবি )অর্থাৎ “ হে আমাদের প্রভু! আপনি আমাদেরকে সুপথ প্রদর্শনের পর । আমাদের অন্তরসমূহ বাঁকা করবেন না এবং আমাদেরকে আপনার নিকট হতে করুণা প্রদান করুন, নিশ্চয় আপনি মহান দাতা।' ( ৩:৮ )এটাও বর্ণিত আছে যে, হযরত আবু বকর সিদ্দীক ( রাঃ ) মাগরিবের তৃতীয় রাকআতে সূরা-ই ফাতিহার পরে এ আয়াতটি নিম্ন স্বরে পড়তেন। সুতরাং ( আরবি ) এর অর্থ দাঁড়ালোঃ “ হে আল্লাহ! আমাদেরকে সরল ও সোজা পথের উপর অটল ও স্থির রাখুন । এবং তা হতে আমাদেরকে দূরে অপসারিত করে ফেলবেন না।”

সূরা ফাতিহা আয়াত 5 সূরা

إياك نعبد وإياك نستعين

سورة: الفاتحة - آية: ( 5 )  - جزء: ( 1 )  -  صفحة: ( 1 )


English Türkçe Indonesia
Русский Français فارسی
تفسير Urdu اعراب

বাংলায় পবিত্র কুরআনের আয়াত

  1. আপনি কি জানেন, পিষ্টকারী কি?
  2. আর যে, হতভাগা, সে তা উপেক্ষা করবে,
  3. আর তুমি যদি তাদেরকে সুপথে আহবান কর, তবে তারা তা কিছুই শুনবে না। আর তুমি
  4. আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত ফেরেশতাগণ একে প্রত্যক্ষ করে।
  5. যারা নিজেদের নামাযে বিনয়-নম্র;
  6. যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহ তাআলার যিনি সকল সৃষ্টি জগতের পালনকর্তা।
  7. যখন উভয় দল পরস্পরকে দেখল, তখন মূসার সঙ্গীরা বলল, আমরা যে ধরা পড়ে গেলাম।
  8. তিনিই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিন এবং সূর্য ও চন্দ্র। সবাই আপন আপন কক্ষপথে বিচরণ
  9. যার বাস্তবতায় কোন সংশয় নেই।
  10. হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদেরকে দাও, যা তুমি ওয়াদা করেছ তোমার রসূলগণের মাধ্যমে এবং কিয়ামতের দিন

বাংলায় কোরআনের সূরা পড়ুন :

সুরত আল বাক্বারাহ্ আলে ইমরান সুরত আন-নিসা
সুরত আল-মায়েদাহ্ সুরত ইউসুফ সুরত ইব্রাহীম
সুরত আল-হিজর সুরত আল-কাহফ সুরত মারইয়াম
সুরত আল-হাজ্জ সুরত আল-ক্বাসাস আল-‘আনকাবূত
সুরত আস-সাজদা সুরত ইয়াসীন সুরত আদ-দুখান
সুরত আল-ফাতহ সুরত আল-হুজুরাত সুরত ক্বাফ
সুরত আন-নাজম সুরত আর-রাহমান সুরত আল-ওয়াক্বি‘আহ
সুরত আল-হাশর সুরত আল-মুলক সুরত আল-হাক্কাহ্
সুরত আল-ইনশিক্বাক সুরত আল-আ‘লা সুরত আল-গাশিয়াহ্

সবচেয়ে বিখ্যাত কোরআন তেলাওয়াতকারীদের কণ্ঠে সূরা ফাতিহা ডাউনলোড করুন:

সূরা Fatiha mp3 : উচ্চ মানের সাথে সম্পূর্ণ অধ্যায়টি Fatiha শুনতে এবং ডাউনলোড করতে আবৃত্তিকারকে বেছে নিন
সুরত ফাতিহা  ভয়েস আহমেদ আল-আজমি
আহমেদ আল-আজমি
সুরত ফাতিহা  ভয়েস ইব্রাহীম আল-আখদার
ইব্রাহীম আল-আখদার
সুরত ফাতিহা  ভয়েস বান্দার বেলাইলা
বান্দার বেলাইলা
সুরত ফাতিহা  ভয়েস খালিদ গালিলি
খালিদ গালিলি
সুরত ফাতিহা  ভয়েস হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
হাতেম ফরিদ আল ওয়ার
সুরত ফাতিহা  ভয়েস খলিফা আল টুনাইজি
খলিফা আল টুনাইজি
সুরত ফাতিহা  ভয়েস সাদ আল-গামদি
সাদ আল-গামদি
সুরত ফাতিহা  ভয়েস সৌদ আল-শুরাইম
সৌদ আল-শুরাইম
সুরত ফাতিহা  ভয়েস সালাহ আবু খাতর
সালাহ বুখাতীর
সুরত ফাতিহা  ভয়েস আবদুল বাসিত আব্দুল সামাদ
আবদ এল বাসেট
সুরত ফাতিহা  ভয়েস আবদুল রশিদ সুফি
আবদুল রশিদ সুফি
সুরত ফাতিহা  ভয়েস আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
আব্দুল্লাহ্ বাস্‌ফার
সুরত ফাতিহা  ভয়েস আবদুল্লাহ আওওয়াদ আল-জুহানী
আবদুল্লাহ আল-জুহানী
সুরত ফাতিহা  ভয়েস আলী আল-হুদায়েফি
আলী আল-হুদায়েফি
সুরত ফাতিহা  ভয়েস আলী জাবের
আলী জাবের
সুরত ফাতিহা  ভয়েস ফারেস আব্বাদ
ফারেস আব্বাদ
সুরত ফাতিহা  ভয়েস মাহের আলমাইকুলই
মাহের আলমাইকুলই
সুরত ফাতিহা  ভয়েস মোহাম্মদ আইয়ুব
মোহাম্মদ আইয়ুব
সুরত ফাতিহা  ভয়েস মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
মুহাম্মদ আল-মুহাইসনি
সুরত ফাতিহা  ভয়েস মুহাম্মাদ জিব্রীল
মুহাম্মাদ জিব্রীল
সুরত ফাতিহা  ভয়েস মুহাম্মদ সিদ্দিক আল মিনশাবি
আল-মিনশাবি
সুরত ফাতিহা  ভয়েস আল হোসারি
আল হোসারি
সুরত ফাতিহা  ভয়েস আল-আফসী
মিশারী আল-আফসী
সুরত ফাতিহা  ভয়েস নাসের আল কাতামি
নাসের আল কাতামি
সুরত ফাতিহা  ভয়েস ইয়াসের আল-দোসারি
ইয়াসের আল-দোসারি


Tuesday, July 16, 2024

Please remember us in your sincere prayers